বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ
রশিদ আল রুহানী | ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) নিয়ম ভেঙে দুই শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, গত সোমবার সন্ধ্যায় হঠাৎ বোর্ড মিটিং ডেকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে দুজন শিক্ষক নিয়োগ দেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার উপাচার্যের মোবাইলে ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিনাত হুদা এই শিক্ষক নিয়োগ অবৈধ দাবি করে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টির সিন্ডিকেট বরাবর চিঠি পাঠান। অবৈধ নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে ১৭ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবরও একটি চিঠি দিয়েছিলেন তিনি।
সিন্ডিকেট সদস্যদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১৫ নভেম্বর বশেমুরবিপ্রবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক নিয়োগ বোর্ডের দিন ধার্য ছিল। কয়েকজন প্রার্থীর অনার্স ও মাস্টার্সের ফল ভালো থাকা সত্ত্বেও তুলনামূলক কম যোগ্যতাসম্পন্ন এবং জামায়াত-শিবিরের একাধিক প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন উপাচার্য। কিন্তু নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের প্রতিবাদের কারণে তিনি সফল হননি। এই বোর্ড বসার আগেই উপাচার্যের পছন্দের জামায়াত-শিবিরের এক প্রার্থীকে খণ্ডকালীন প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর ওই শিক্ষককে খণ্ডকালীন হিসেবে নেওয়া হয়েছে, যা আইন পরিপন্থি।
চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, নিয়োগ বোর্ডের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের কাছে কোনো অফিশিয়াল চিঠি না দিয়েই ১৭ ডিসেম্বর নিয়োগ বোর্ড বসানো হয়। ১৬ তারিখ বিকেলে হঠাৎ ফোন করে বিষয় বিশেষজ্ঞদের উপাচার্য জানান, সন্ধ্যায় নিয়োগ বোর্ড বসবে। কিন্তু অফিশিয়াল চিঠি ছাড়া এবং বোর্ড বসার মাত্র এক দিন আগে ঢাকা ও সিলেটে অবস্থানরত দুজন বিষয় বিশেষজ্ঞকে গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে যেতে বলা রীতিমতো অযৌক্তিক। তা ছাড়া বোর্ড বসলেও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতেই শিক্ষক নিয়োগ চূড়ান্ত করার বিধি রয়েছে। অথচ আমাদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। এ ছাড়া নিয়োগ বোর্ড বসার আগে প্রার্থীদের যোগ্যতা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তাদের সিভি পাঠানো হয়নি। চিঠিতে বর্তমান উপাচার্যের শিক্ষক নিয়োগে স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে জিনাত হুদা দেশ রূপান্তরকে বলেন, বোর্ড বসার এক দিন আগে আমাকে ও সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল গণিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে বলা হয়। আমরা সেখানে যেতে ব্যর্থ হই। আমরা দুজন বিষয় বিশেষজ্ঞ বোর্ডে অনুপস্থিত ছিলাম। অথচ আমাদের মতামত না নিয়েই উপাচার্য অনিয়ম করে দুজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, এর আগেও উপাচার্য আরো কয়েকটি বিভাগের নিয়োগে অনিয়ম করতে চেয়েছিলেন। পরে একটি সিন্ডিকেট মিটিংয়ে তা বাতিল হয়েছিল।
তবে এই নিয়োগ বোর্ডের অন্য সদস্য ও বশেমুরবিপ্রবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মনজুর রশিদ বলেন, বিষয় বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত না থাকলেও অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। এই নিয়োগের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ থাকলে প্রয়োজনে সিন্ডিকেট সেটি দেখবে।
শেয়ার করুন
রশিদ আল রুহানী | ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) নিয়ম ভেঙে দুই শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, গত সোমবার সন্ধ্যায় হঠাৎ বোর্ড মিটিং ডেকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে দুজন শিক্ষক নিয়োগ দেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার উপাচার্যের মোবাইলে ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিনাত হুদা এই শিক্ষক নিয়োগ অবৈধ দাবি করে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টির সিন্ডিকেট বরাবর চিঠি পাঠান। অবৈধ নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে ১৭ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবরও একটি চিঠি দিয়েছিলেন তিনি।
সিন্ডিকেট সদস্যদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১৫ নভেম্বর বশেমুরবিপ্রবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক নিয়োগ বোর্ডের দিন ধার্য ছিল। কয়েকজন প্রার্থীর অনার্স ও মাস্টার্সের ফল ভালো থাকা সত্ত্বেও তুলনামূলক কম যোগ্যতাসম্পন্ন এবং জামায়াত-শিবিরের একাধিক প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন উপাচার্য। কিন্তু নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের প্রতিবাদের কারণে তিনি সফল হননি। এই বোর্ড বসার আগেই উপাচার্যের পছন্দের জামায়াত-শিবিরের এক প্রার্থীকে খণ্ডকালীন প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর ওই শিক্ষককে খণ্ডকালীন হিসেবে নেওয়া হয়েছে, যা আইন পরিপন্থি।
চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, নিয়োগ বোর্ডের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের কাছে কোনো অফিশিয়াল চিঠি না দিয়েই ১৭ ডিসেম্বর নিয়োগ বোর্ড বসানো হয়। ১৬ তারিখ বিকেলে হঠাৎ ফোন করে বিষয় বিশেষজ্ঞদের উপাচার্য জানান, সন্ধ্যায় নিয়োগ বোর্ড বসবে। কিন্তু অফিশিয়াল চিঠি ছাড়া এবং বোর্ড বসার মাত্র এক দিন আগে ঢাকা ও সিলেটে অবস্থানরত দুজন বিষয় বিশেষজ্ঞকে গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে যেতে বলা রীতিমতো অযৌক্তিক। তা ছাড়া বোর্ড বসলেও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতেই শিক্ষক নিয়োগ চূড়ান্ত করার বিধি রয়েছে। অথচ আমাদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। এ ছাড়া নিয়োগ বোর্ড বসার আগে প্রার্থীদের যোগ্যতা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তাদের সিভি পাঠানো হয়নি। চিঠিতে বর্তমান উপাচার্যের শিক্ষক নিয়োগে স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে জিনাত হুদা দেশ রূপান্তরকে বলেন, বোর্ড বসার এক দিন আগে আমাকে ও সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল গণিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে বলা হয়। আমরা সেখানে যেতে ব্যর্থ হই। আমরা দুজন বিষয় বিশেষজ্ঞ বোর্ডে অনুপস্থিত ছিলাম। অথচ আমাদের মতামত না নিয়েই উপাচার্য অনিয়ম করে দুজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, এর আগেও উপাচার্য আরো কয়েকটি বিভাগের নিয়োগে অনিয়ম করতে চেয়েছিলেন। পরে একটি সিন্ডিকেট মিটিংয়ে তা বাতিল হয়েছিল।
তবে এই নিয়োগ বোর্ডের অন্য সদস্য ও বশেমুরবিপ্রবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মনজুর রশিদ বলেন, বিষয় বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত না থাকলেও অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। এই নিয়োগের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ থাকলে প্রয়োজনে সিন্ডিকেট সেটি দেখবে।