আংশিক অচল ট্রাম্পের সরকার
রূপান্তর ডেস্ক | ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
চলতি বছরে তৃতীয়বারের মতো আংশিক অচলাবস্থার (শাটডাউন) কবলে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবার রাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ৫০০ কোটি ডলারের বাজেট সিনেট অনুমোদন না দেওয়ায় এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এবারের অচলাবস্থা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে বলে এরই মধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। বিরোধিতার মুখে প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান ট্রাম্প।
তার অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে শক্তিশালী দেয়াল নির্মাণ। দেয়াল নির্মাণের অর্থ তিনি মেক্সিকোর কাছ থেকে আদায় করবেন এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু মেক্সিকো ওই খরচ দিতে অস্বীকৃতি জানালে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বাজেট থেকে দেয়াল নির্মাণের অর্থ দিতে হয়।
সিনেটে প্রস্তাব পাসে ব্যর্থ হয়ে এক ভিডিওবার্তায় ট্রাম্প বলেন, ‘এই শাটডাউন নিয়ে রিপাবলিকান দলের কিছুই করার নেই। সমস্যা সমাধানে ডেমোক্র্যাটদের ভোট দেওয়ার দরকার ছিল। এটাকে ডেমোক্র্যাট শাটডাউন বলুন। এটাকে যাই বলুন না কেন, বাজেট অনুমোদন করতে আমাদের তাদের ভোট দরকার ছিল।’
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের মতে, সিনেটে বাজেট পাস না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় এক-চতুর্থাংশ সংস্থা বাজেট ঘাটতিতে পড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রথম অচলাবস্থা হয় দেশটিতে। এরপর ফেব্রুয়ারিতে আবার অচলাবস্থার কবলে পড়ে দেশটি। প্রথমবার তিন দিনের এবং দ্বিতীয়বার নয় ঘণ্টার মাথায় অচলাবস্থা থেকে বের হয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু পরপর দুইবার অচলাবস্থায় দেশটির শেয়ারবাজার ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। যার ফলে এখনো ডলারের মূল্যমান অবনমনের ভেতর দিয়েই যাচ্ছে।
তৃতীয় এই অচলাবস্থার কবলে পড়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র দপ্তর, পরিবহন, কৃষি, অঙ্গরাজ্য এবং বিচার বিভাগ। পাশাপাশি বন্ধ থাকবে ফেডারেল ন্যাশনাল পার্ক ও বনাঞ্চল। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই অচলাবস্থার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের আট লাখ সরকারি কর্মচারীকে বেতন ছাড়াই আগামী বড়দিন কাটাতে হতে পারে। অবশ্য অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠার আগ পর্যন্ত এই কর্মচারীদের কর্মক্ষেত্র থেকে ছুটিও দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বৈদেশিক বাণিজ্য এবং বিভিন্ন দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া ফান্ডেও এর প্রভাব পড়বে। শুক্রবার মধ্যরাতের অমীমাংসিত ফলাফলের পর বিদেশি ফান্ড এক-তৃতীয়াংশ কমে যেতে পারে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এই ঘটনায় এরই মধ্যে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট শিবির থেকে সমালোচনা শুরু হয়েছে। সিনিয়র ডেমোক্র্যাটরা এই ঘটনার জন্য প্রেসিডেন্টের ‘আচরণ’কে দায়ী করেন।
গত বুধবার ট্রাম্পের প্রস্তাবনায় একটি মধ্যবর্তী বাজেট পাস হয়, যেখানে আগামী ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটির কেন্দ্রীয় দপ্তরগুলোকে খোলা রাখতে বলা হয়। কট্টরপন্থী রিপাবলিকান ও সমর্থক সিনেটররা ওই বাজেটে অনুমোদন দেননি। এ পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, সীমান্ত দেয়াল নির্মাণের বাজেট পাস না হলে বাজেট অনুমোদন করবেন না তিনি। কারণ সিনেটে পাস হওয়া কোনো বাজেট কার্যকর করতে হলে প্রেসিডেন্টের অনুমোদন লাগে।
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

চলতি বছরে তৃতীয়বারের মতো আংশিক অচলাবস্থার (শাটডাউন) কবলে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবার রাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ৫০০ কোটি ডলারের বাজেট সিনেট অনুমোদন না দেওয়ায় এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এবারের অচলাবস্থা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে বলে এরই মধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। বিরোধিতার মুখে প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান ট্রাম্প।
তার অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে শক্তিশালী দেয়াল নির্মাণ। দেয়াল নির্মাণের অর্থ তিনি মেক্সিকোর কাছ থেকে আদায় করবেন এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু মেক্সিকো ওই খরচ দিতে অস্বীকৃতি জানালে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বাজেট থেকে দেয়াল নির্মাণের অর্থ দিতে হয়।
সিনেটে প্রস্তাব পাসে ব্যর্থ হয়ে এক ভিডিওবার্তায় ট্রাম্প বলেন, ‘এই শাটডাউন নিয়ে রিপাবলিকান দলের কিছুই করার নেই। সমস্যা সমাধানে ডেমোক্র্যাটদের ভোট দেওয়ার দরকার ছিল। এটাকে ডেমোক্র্যাট শাটডাউন বলুন। এটাকে যাই বলুন না কেন, বাজেট অনুমোদন করতে আমাদের তাদের ভোট দরকার ছিল।’
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের মতে, সিনেটে বাজেট পাস না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় এক-চতুর্থাংশ সংস্থা বাজেট ঘাটতিতে পড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রথম অচলাবস্থা হয় দেশটিতে। এরপর ফেব্রুয়ারিতে আবার অচলাবস্থার কবলে পড়ে দেশটি। প্রথমবার তিন দিনের এবং দ্বিতীয়বার নয় ঘণ্টার মাথায় অচলাবস্থা থেকে বের হয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু পরপর দুইবার অচলাবস্থায় দেশটির শেয়ারবাজার ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। যার ফলে এখনো ডলারের মূল্যমান অবনমনের ভেতর দিয়েই যাচ্ছে।
তৃতীয় এই অচলাবস্থার কবলে পড়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র দপ্তর, পরিবহন, কৃষি, অঙ্গরাজ্য এবং বিচার বিভাগ। পাশাপাশি বন্ধ থাকবে ফেডারেল ন্যাশনাল পার্ক ও বনাঞ্চল। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই অচলাবস্থার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের আট লাখ সরকারি কর্মচারীকে বেতন ছাড়াই আগামী বড়দিন কাটাতে হতে পারে। অবশ্য অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠার আগ পর্যন্ত এই কর্মচারীদের কর্মক্ষেত্র থেকে ছুটিও দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বৈদেশিক বাণিজ্য এবং বিভিন্ন দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া ফান্ডেও এর প্রভাব পড়বে। শুক্রবার মধ্যরাতের অমীমাংসিত ফলাফলের পর বিদেশি ফান্ড এক-তৃতীয়াংশ কমে যেতে পারে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এই ঘটনায় এরই মধ্যে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট শিবির থেকে সমালোচনা শুরু হয়েছে। সিনিয়র ডেমোক্র্যাটরা এই ঘটনার জন্য প্রেসিডেন্টের ‘আচরণ’কে দায়ী করেন।
গত বুধবার ট্রাম্পের প্রস্তাবনায় একটি মধ্যবর্তী বাজেট পাস হয়, যেখানে আগামী ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটির কেন্দ্রীয় দপ্তরগুলোকে খোলা রাখতে বলা হয়। কট্টরপন্থী রিপাবলিকান ও সমর্থক সিনেটররা ওই বাজেটে অনুমোদন দেননি। এ পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, সীমান্ত দেয়াল নির্মাণের বাজেট পাস না হলে বাজেট অনুমোদন করবেন না তিনি। কারণ সিনেটে পাস হওয়া কোনো বাজেট কার্যকর করতে হলে প্রেসিডেন্টের অনুমোদন লাগে।