সহস্রাধিক পুলিশ নজরদারিতে
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে গোপন সখ্যের অভিযোগে সহস্রাধিক পুলিশ সদস্যকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়াদের ওপর। তাদের মোবাইল ফোন নম্বর সার্বক্ষণিক ট্র্যাক করা হচ্ছে। এমনকি পরিবারের সদস্যদেরও নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তাদের ভাষ্য, নজরদারিতে থাকা পুলিশ সদস্যদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশ সুপার (এসপি), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি), ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), পরিদর্শক ও উপপরিদর্শক (এসআই) রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পাঁয়তারার অভিযোগ রয়েছে।
ওই কর্মকর্তারা জানান, সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিভিন্ন রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও এসপিদের কাছে বেশ কিছু দিকনির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। এসব দিকনির্দেশনায় সন্দেহে থাকা পুলিশ সদস্যদের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে-পরে সন্দেহে থাকা পুলিশ সদস্যদের নজরদারির আওতায় আনা হয়। পুলিশ সদর দপ্তরের গোয়েন্দা দলের কাছে তথ্য এসেছে, বাহিনীর কিছু সদস্যের সহায়তায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (প্রশাসন) হাবিবুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী; দেশের জনগণকে সেবা ও নিরাপত্তা দিতে বদ্ধপরিকর। পুলিশকে সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে একই আচরণ করতে হবে। তবে কেউ যদি কোনো উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে তার বদনাম হবে। আমাদের কাছে তথ্য এসেছে, লিয়াজোঁর নামে পুলিশের কিছু সদস্য বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এজন্য তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আশা করি, পুলিশ তার অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে।’
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পর পুলিশ সদর দপ্তর অনুসন্ধানে নেমে সত্যতা পায়। পরে অনুসন্ধানকারী দল প্রতিবেদন পাঠায় পুলিশ সদর দপ্তরে। সে প্রতিবেদনের আলোকে পুলিশ সদস্যদের নজরদারিতে আনা হয়। ওই পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি তাদের স্বজনদের মতাদর্শ জানার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি তাদের মোবাইল ফোনও ট্র্যাক করা হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ডিএমপির অন্তত ২২টি থানার ওসি, এসআই ও এএসআইকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তারা গোপনে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের বেশি সহায়তা করছেন, যার বিনিময়ে তাদের মোটা অঙ্কের অর্থ দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, থানা পুলিশের সঙ্গে আঁতাত করে জামায়াত নেতারা এলাকায় চলাফেরা করছেন।
একই অভিযোগ ফেনীর এক এসআইয়ের। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ফেনীতেও একই অবস্থা। বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের সঙ্গে জেলার বিভিন্ন থানা পুলিশের আঁতাত আছে।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে গোপন সখ্যের অভিযোগে সহস্রাধিক পুলিশ সদস্যকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়াদের ওপর। তাদের মোবাইল ফোন নম্বর সার্বক্ষণিক ট্র্যাক করা হচ্ছে। এমনকি পরিবারের সদস্যদেরও নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তাদের ভাষ্য, নজরদারিতে থাকা পুলিশ সদস্যদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশ সুপার (এসপি), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি), ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), পরিদর্শক ও উপপরিদর্শক (এসআই) রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পাঁয়তারার অভিযোগ রয়েছে।
ওই কর্মকর্তারা জানান, সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিভিন্ন রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও এসপিদের কাছে বেশ কিছু দিকনির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। এসব দিকনির্দেশনায় সন্দেহে থাকা পুলিশ সদস্যদের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে-পরে সন্দেহে থাকা পুলিশ সদস্যদের নজরদারির আওতায় আনা হয়। পুলিশ সদর দপ্তরের গোয়েন্দা দলের কাছে তথ্য এসেছে, বাহিনীর কিছু সদস্যের সহায়তায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (প্রশাসন) হাবিবুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী; দেশের জনগণকে সেবা ও নিরাপত্তা দিতে বদ্ধপরিকর। পুলিশকে সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে একই আচরণ করতে হবে। তবে কেউ যদি কোনো উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে তার বদনাম হবে। আমাদের কাছে তথ্য এসেছে, লিয়াজোঁর নামে পুলিশের কিছু সদস্য বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এজন্য তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আশা করি, পুলিশ তার অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে।’
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পর পুলিশ সদর দপ্তর অনুসন্ধানে নেমে সত্যতা পায়। পরে অনুসন্ধানকারী দল প্রতিবেদন পাঠায় পুলিশ সদর দপ্তরে। সে প্রতিবেদনের আলোকে পুলিশ সদস্যদের নজরদারিতে আনা হয়। ওই পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি তাদের স্বজনদের মতাদর্শ জানার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি তাদের মোবাইল ফোনও ট্র্যাক করা হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ডিএমপির অন্তত ২২টি থানার ওসি, এসআই ও এএসআইকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তারা গোপনে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের বেশি সহায়তা করছেন, যার বিনিময়ে তাদের মোটা অঙ্কের অর্থ দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, থানা পুলিশের সঙ্গে আঁতাত করে জামায়াত নেতারা এলাকায় চলাফেরা করছেন।
একই অভিযোগ ফেনীর এক এসআইয়ের। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ফেনীতেও একই অবস্থা। বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের সঙ্গে জেলার বিভিন্ন থানা পুলিশের আঁতাত আছে।