অনলাইনে গুজব ঠেকাতে র্যাবের যাচাই কেন্দ্র
ইমন রহমান | ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
আজ শুক্রবার সকাল ৮টায় শেষ হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে ভোট চাইতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই প্রার্থীদের শেষ মুহূর্তের প্রচারে অনলাইনই ভরসা। এদিকে নির্বাচনী প্রচারে অনলাইনের মাধ্যমে কোনো গুজব ছড়ালে তা ঠেকাতে গতকাল থেকে ‘সাইবার সংবাদ যাচাই কেন্দ্র’ চালু করেছে র্যাব।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ফেইসবুকসহ অনলাইনভিত্তিক নির্বাচনী প্রচারে কোনো বাধা নেই।
এবারের নির্বাচনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। মানুষের হাতে হাতে এখন মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট। অধিকাংশ ভোটারের হাতে ফোন থাকায় বিষয়টিতে বেশি জোর দিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। ভোটের প্রচারের শেষ মুহূর্তে প্রার্থীদের নানা প্রতিশ্রুতি ভোটারের কাছে পৌঁছে দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে ফেইসবুক, টুইটার ও ইউটিউবের মতো মাধ্যম। ব্যবহারকারী বেশি হওয়ায় এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফেইসবুক। মানুষকে পক্ষে টানতে নিজ অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি এখানে পেইজ খুলেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা। ইউটিউবে ভিডিও বানিয়ে চলছে পক্ষে-বিপক্ষে জনমত গঠন। কোনো কোনো প্রার্থী সরব টুইটারেও। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে অনলাইনে মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ ছবি, ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগও উঠছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে অন্য রাজনৈতিক দলের নেতারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছেন। গতকালও প্রধানমন্ত্রী তার রাজধানীর নিজ বাসভবন সুধা সদন থেকে কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, যশোর, পাবনা ও পঞ্চগড় জেলায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি নিজস্ব ওয়েবসাইট, ইমেইল, মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচার। নিজেদের দল এবং প্রার্থীদের ইতিবাচক দিক তুলে ধরার পাশাপাশি বিরোধী মতের নেতিবাচক দিক তুলে ধরে ভোটারদের আকর্ষণের চেষ্টা চলছে। একাধিক ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোটারদের ই-মেইলে প্রার্থীদের ইতিবাচক দিক তুলে ধরে বার্তা পাঠানো হচ্ছে। প্রতিপক্ষের নেতিবাচক ব্যাপারেও বার্তা পাঠাচ্ছেন প্রার্থীরা। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরছে আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো সেবা
দিচ্ছে। পাশাপাশি এসএমএস পাঠানোর জন্য বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এরা ২০ পয়সা থেকে শুরু করে ৫০ পয়সায় বার্তা পাঠায়। সামাজিক মাধ্যম ঘেঁটে দেখা গেছে, ডিজিটাল প্রচারে এগিয়ে রয়েছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার অনেক আগে থেকেই প্রচার চালাচ্ছে দলটি। শেষ মুহূর্তেও তাদের প্রচার তুঙ্গে। টিভি বিজ্ঞাপন, মিউজিক ভিডিও এবং ডকুমেন্টারির মাধ্যমে চলছে প্রচার। দলটির ফেইসবুকে ভেরিফাইড পেইজ থেকে নিয়মিত বুস্টিংয়ের মাধ্যমে নৌকায় ভোট চাওয়া হচ্ছে। ভোটের প্রচারে অ্যান্ড্রয়েডভিত্তিক মোবাইল অ্যাপও তৈরি করেছে দলটি।
বিএনপি নিজেদের ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজের পাশাপাশি কমিউনিটিভিত্তিক বেশ কিছু গ্রুপ খুলেছে। রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগেও ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছেন আলোচিত প্রার্থীরা। তরুণ রাজনীতিক এবং প্রার্থীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে।
ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, ঢাকা-৬ আসনের প্রার্থী ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) সভাপতি ববি হাজ্জাজ, পটুয়াখালী-৩ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী গোলাম মাওলা রনি এবং নৌকা প্রতীকে ঢাকা-১০ আসনের প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস ডিজিটাল প্রচারে বেশ সক্রিয়।
র্যাবের সংবাদ যাচাই কেন্দ্র : র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাহিনীর অস্থায়ী মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘নির্বাচনের বাতাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অপপ্রচার ও গুজব শুরু হয়েছে। এসব প্রতিরোধে র্যাবের ‘সাইবার সংবাদ যাচাই কেন্দ্র’ কাজ করবে।’ অনলাইনে কোনো খবরের ব্যাপারে সন্দেহ হলে লিঙ্ক পাঠিয়ে যে কেউ এর সত্যতা যাচাই করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
শেয়ার করুন
ইমন রহমান | ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

আজ শুক্রবার সকাল ৮টায় শেষ হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে ভোট চাইতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই প্রার্থীদের শেষ মুহূর্তের প্রচারে অনলাইনই ভরসা। এদিকে নির্বাচনী প্রচারে অনলাইনের মাধ্যমে কোনো গুজব ছড়ালে তা ঠেকাতে গতকাল থেকে ‘সাইবার সংবাদ যাচাই কেন্দ্র’ চালু করেছে র্যাব।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ফেইসবুকসহ অনলাইনভিত্তিক নির্বাচনী প্রচারে কোনো বাধা নেই।
এবারের নির্বাচনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। মানুষের হাতে হাতে এখন মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট। অধিকাংশ ভোটারের হাতে ফোন থাকায় বিষয়টিতে বেশি জোর দিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। ভোটের প্রচারের শেষ মুহূর্তে প্রার্থীদের নানা প্রতিশ্রুতি ভোটারের কাছে পৌঁছে দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে ফেইসবুক, টুইটার ও ইউটিউবের মতো মাধ্যম। ব্যবহারকারী বেশি হওয়ায় এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফেইসবুক। মানুষকে পক্ষে টানতে নিজ অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি এখানে পেইজ খুলেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা। ইউটিউবে ভিডিও বানিয়ে চলছে পক্ষে-বিপক্ষে জনমত গঠন। কোনো কোনো প্রার্থী সরব টুইটারেও। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে অনলাইনে মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ ছবি, ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগও উঠছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে অন্য রাজনৈতিক দলের নেতারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছেন। গতকালও প্রধানমন্ত্রী তার রাজধানীর নিজ বাসভবন সুধা সদন থেকে কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, যশোর, পাবনা ও পঞ্চগড় জেলায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি নিজস্ব ওয়েবসাইট, ইমেইল, মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচার। নিজেদের দল এবং প্রার্থীদের ইতিবাচক দিক তুলে ধরার পাশাপাশি বিরোধী মতের নেতিবাচক দিক তুলে ধরে ভোটারদের আকর্ষণের চেষ্টা চলছে। একাধিক ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোটারদের ই-মেইলে প্রার্থীদের ইতিবাচক দিক তুলে ধরে বার্তা পাঠানো হচ্ছে। প্রতিপক্ষের নেতিবাচক ব্যাপারেও বার্তা পাঠাচ্ছেন প্রার্থীরা। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরছে আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো সেবা
দিচ্ছে। পাশাপাশি এসএমএস পাঠানোর জন্য বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এরা ২০ পয়সা থেকে শুরু করে ৫০ পয়সায় বার্তা পাঠায়। সামাজিক মাধ্যম ঘেঁটে দেখা গেছে, ডিজিটাল প্রচারে এগিয়ে রয়েছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার অনেক আগে থেকেই প্রচার চালাচ্ছে দলটি। শেষ মুহূর্তেও তাদের প্রচার তুঙ্গে। টিভি বিজ্ঞাপন, মিউজিক ভিডিও এবং ডকুমেন্টারির মাধ্যমে চলছে প্রচার। দলটির ফেইসবুকে ভেরিফাইড পেইজ থেকে নিয়মিত বুস্টিংয়ের মাধ্যমে নৌকায় ভোট চাওয়া হচ্ছে। ভোটের প্রচারে অ্যান্ড্রয়েডভিত্তিক মোবাইল অ্যাপও তৈরি করেছে দলটি।
বিএনপি নিজেদের ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজের পাশাপাশি কমিউনিটিভিত্তিক বেশ কিছু গ্রুপ খুলেছে। রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগেও ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছেন আলোচিত প্রার্থীরা। তরুণ রাজনীতিক এবং প্রার্থীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে।
ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, ঢাকা-৬ আসনের প্রার্থী ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) সভাপতি ববি হাজ্জাজ, পটুয়াখালী-৩ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী গোলাম মাওলা রনি এবং নৌকা প্রতীকে ঢাকা-১০ আসনের প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস ডিজিটাল প্রচারে বেশ সক্রিয়।
র্যাবের সংবাদ যাচাই কেন্দ্র : র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাহিনীর অস্থায়ী মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘নির্বাচনের বাতাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অপপ্রচার ও গুজব শুরু হয়েছে। এসব প্রতিরোধে র্যাবের ‘সাইবার সংবাদ যাচাই কেন্দ্র’ কাজ করবে।’ অনলাইনে কোনো খবরের ব্যাপারে সন্দেহ হলে লিঙ্ক পাঠিয়ে যে কেউ এর সত্যতা যাচাই করতে পারবেন বলে জানান তিনি।