‘জনতার দরবারে’ ৪ প্রার্থী
সাবেরের প্রতিশ্রুতি, সালামের অভিযোগ, হুদার আশা
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
‘মানুষের সাথে ভালো কাজে পাশে’ এই মন্ত্রে কাজ করে যাচ্ছেন দাবি করে ঢাকা-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচিত হই বা না হই আমার দল কখনো সংসদ বর্জন করবে না। আওয়ামী লীগ সংসদে মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলবে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসি আয়োজিত ‘জনতার দরবার’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা-১৩ আসনের প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ভয় পেলে তুমি শেষ, সাহস করে দাঁড়ালে তুমিই বাংলাদেশ।’ অনুষ্ঠানে আরো অংশ নেন ঢাকা-১৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা এবং ঢাকা-১২ আসনের বামজোটের প্রার্থী জোনায়েদ সাকি।
শারমিন চৌধুরীর উপস্থাপনায় উন্মুক্ত আলোচনায় সাবের হোসেন আরো বলেন, ‘আমার এলাকায় বিএনপি ছাড়া সব দলের পোস্টার আছে, মিছিল-মিটিং আছে। বিএনপির কোনো পোস্টার বা মিছিল-মিটিং আমি দেখিনি। তারা ভোটার স্লিপও বিতরণ করেনি। তবে তারা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে পোস্টার না লাগানো বা মিছিল-মিটিং না করা আমার প্রতিপক্ষের কৌশল হতে পারে। তারা কৌশল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছে।’ সাবের হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনী এলাকায় সবার জন্য শিক্ষার সমান অধিকার নিশ্চিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মান উন্নয়নের চেষ্টা করছে। কারিগরি শিক্ষার দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’ ঘরে ঘরে চাকরির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তার সরকার এজন্য কাজ করে যাচ্ছে। এটা অনেক কঠিন। কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে।’
আবদুস সালাম বলেন, বিএনপি নির্বাচনের মাঠে আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত হয়নি। তার দলের নেতাকর্মীরা ঘরে থাকতে পারছে না। প্রশাসন বা নির্বাচন কমিশন কেউই নির্বাচনী আচরণবিধির তোয়াক্কা করছে না। তিনি আরো বলেন, ‘আচরণবিধিতে বলা আছে এক ওয়ার্ডে একটা অফিস হবে অথচ আওয়ামী লীগ এক ওয়ার্ডে ১০০টা অফিস করে রেখেছে। এসব দেখার কেউ নেই। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়েও কাজ হয় না। আমি হামলা ও গ্রেপ্তার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিতে গেলাম। আসার সময় গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই আমার থানা সভাপতিকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেল। কমিশন সচিবকে বিষয়টি জানিয়েও লাভ হয়নি।’ এ সময় তিনি যেকোনো ভয় দূরে ঠেলে দিয়ে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ জানান। দর্শকদের এক প্রশ্নে আবদুস সালাম বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হলে জয়-পরাজয় যাই হোক মেনে নিয়ে দেশের জন্য কাজ করব।’
অনুষ্ঠানে ঢাকা-১৭ আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জানিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হুদা বলেন, তিনি নৌকা প্রতীকে সমর্থন জানালেও জাতীয় পার্টির ভোটাররা আমাকে ভোট দেবে। গণতন্ত্র, স্বাধীন বিচার বিভাগ ও সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে বড় দুই দলের হানাহানি বাদ দিয়ে ঢাকা-১৭ আসনের মানুষ আমার স্বতন্ত্র প্রতীক বেছে নেবে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভয় তারা নিরাপদে ভোট দিতে পারবেন তো? আওয়ামী লীগের মধ্যে ভয় তারা ক্ষমতা থেকে গেলে হামলার শিকার হবে। এই নির্বাচন নিয়ে সর্বমহল একটা ভয়ের মধ্যে আছে। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। সংবিধান সংস্কার করে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে।
দেশে চারজনের একজন বেকার, শিক্ষিত মানুষের আড়াই জনে একজন বেকার দাবি করে তিনি বলেন, ‘এই অবস্থায় দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকারত্ব দূর করতে হবে। প্রশাসনকে কোনো দলের লেজুড়বৃত্তি না করে জবাবদিহির সঙ্গে কাজ করতে হবে।’
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

‘মানুষের সাথে ভালো কাজে পাশে’ এই মন্ত্রে কাজ করে যাচ্ছেন দাবি করে ঢাকা-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচিত হই বা না হই আমার দল কখনো সংসদ বর্জন করবে না। আওয়ামী লীগ সংসদে মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলবে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসি আয়োজিত ‘জনতার দরবার’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা-১৩ আসনের প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ভয় পেলে তুমি শেষ, সাহস করে দাঁড়ালে তুমিই বাংলাদেশ।’ অনুষ্ঠানে আরো অংশ নেন ঢাকা-১৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা এবং ঢাকা-১২ আসনের বামজোটের প্রার্থী জোনায়েদ সাকি।
শারমিন চৌধুরীর উপস্থাপনায় উন্মুক্ত আলোচনায় সাবের হোসেন আরো বলেন, ‘আমার এলাকায় বিএনপি ছাড়া সব দলের পোস্টার আছে, মিছিল-মিটিং আছে। বিএনপির কোনো পোস্টার বা মিছিল-মিটিং আমি দেখিনি। তারা ভোটার স্লিপও বিতরণ করেনি। তবে তারা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে পোস্টার না লাগানো বা মিছিল-মিটিং না করা আমার প্রতিপক্ষের কৌশল হতে পারে। তারা কৌশল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছে।’ সাবের হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনী এলাকায় সবার জন্য শিক্ষার সমান অধিকার নিশ্চিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মান উন্নয়নের চেষ্টা করছে। কারিগরি শিক্ষার দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’ ঘরে ঘরে চাকরির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তার সরকার এজন্য কাজ করে যাচ্ছে। এটা অনেক কঠিন। কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে।’
আবদুস সালাম বলেন, বিএনপি নির্বাচনের মাঠে আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত হয়নি। তার দলের নেতাকর্মীরা ঘরে থাকতে পারছে না। প্রশাসন বা নির্বাচন কমিশন কেউই নির্বাচনী আচরণবিধির তোয়াক্কা করছে না। তিনি আরো বলেন, ‘আচরণবিধিতে বলা আছে এক ওয়ার্ডে একটা অফিস হবে অথচ আওয়ামী লীগ এক ওয়ার্ডে ১০০টা অফিস করে রেখেছে। এসব দেখার কেউ নেই। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়েও কাজ হয় না। আমি হামলা ও গ্রেপ্তার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিতে গেলাম। আসার সময় গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই আমার থানা সভাপতিকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেল। কমিশন সচিবকে বিষয়টি জানিয়েও লাভ হয়নি।’ এ সময় তিনি যেকোনো ভয় দূরে ঠেলে দিয়ে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ জানান। দর্শকদের এক প্রশ্নে আবদুস সালাম বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হলে জয়-পরাজয় যাই হোক মেনে নিয়ে দেশের জন্য কাজ করব।’
অনুষ্ঠানে ঢাকা-১৭ আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জানিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হুদা বলেন, তিনি নৌকা প্রতীকে সমর্থন জানালেও জাতীয় পার্টির ভোটাররা আমাকে ভোট দেবে। গণতন্ত্র, স্বাধীন বিচার বিভাগ ও সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে বড় দুই দলের হানাহানি বাদ দিয়ে ঢাকা-১৭ আসনের মানুষ আমার স্বতন্ত্র প্রতীক বেছে নেবে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভয় তারা নিরাপদে ভোট দিতে পারবেন তো? আওয়ামী লীগের মধ্যে ভয় তারা ক্ষমতা থেকে গেলে হামলার শিকার হবে। এই নির্বাচন নিয়ে সর্বমহল একটা ভয়ের মধ্যে আছে। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। সংবিধান সংস্কার করে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে।
দেশে চারজনের একজন বেকার, শিক্ষিত মানুষের আড়াই জনে একজন বেকার দাবি করে তিনি বলেন, ‘এই অবস্থায় দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকারত্ব দূর করতে হবে। প্রশাসনকে কোনো দলের লেজুড়বৃত্তি না করে জবাবদিহির সঙ্গে কাজ করতে হবে।’