ছেঁড়া থাকছে না ছেঁড়া দ্বীপ
রায়ান বণিক | ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
মূল ভূখ- থেকে বিচ্ছিন্ন দেশের সর্ব দক্ষিণের স্থান ছেঁড়া দ্বীপ আর বিচ্ছিন্ন থাকছে না। ভারতের উৎক্ষেপণ করা দক্ষিণ এশীয় স্যাটেলাইটের (সাস) মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ পেতে যাচ্ছে দ্বীপটি। সৌরশক্তি ব্যবহার করে দ্বীপটিতে ওয়াই-ফাই সংযোগ চালু করবে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএসসিএল)।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, কেবল ছেঁড়া দ্বীপই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে ওঠা ৪০টি বড় দ্বীপে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিসিএসসিএলের ব্যবস্থাপক হামেদ হাসান মুহাম্মদ মহিউদ্দিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে ৪০টি দ্বীপে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৪০টি দ্বীপ বাছাই করা হয়েছে। তবে এসব দ্বীপের তালিকায় পরিবর্তন আসতে পারে।
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশীয় স্যাটেলাইট ব্যবহার করে এসব দ্বীপে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হবে। এজন্য বাংলাদেশের চাহিদা ভারতকে জানানো হয়েছে। ভারতের কাছ থেকে আগামী এক মাসের মধ্যেই বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার পর কাজ শুরু হবে।
তিনি বলেন, যে ৪০টি দ্বীপ বাছাই করা হয়েছে, তার বেশিরভাগ গুলোতেই জনবসতি রয়েছে। ওইসব দ্বীপে অন্তত একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদের অফিস, প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ওয়াই-ফাই সংযোগের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হবে।
ছেঁড়া দ্বীপে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকরাও যাতে ইন্টারনেট সুবিধা পেতে পারেন, সে জন্য সেখানেও ওয়াই-ফাই স্থাপনের পরিকল্পনা আছে বিসিএসসিএলের। তবে সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার কারণে সৌর বিদ্যুতে যাতে মোবাইল ফোন সেটে ব্যবহার করার উপযোগী ওয়াই-ফাই সুবিধা দেওয়া যায়, সে জন্য ভারতের কাছে প্রযুক্তি সুবিধা চাওয়া হয়েছে। ছেঁড়া দ্বীপে ওয়াই-ফাই স্থাপন করার মতো কোনো স্থাপনা নেই। আবার, সরকার থেকে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা হলে তার নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার জন্য সেখানে অফিসও স্থাপন করতে হবে। না হলে সেন্টমার্টিনের যে অংশে ছেঁড়া দ্বীপ অবস্থিত, সে অংশে শক্তিশালী ওয়াই-ফাই প্রযুক্তি স্থাপন করে সেখানে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
কোন ৪০টি দ্বীপে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হবে, তা এখনো চূড়ান্ত করেনি বিসিএসসিএল। তবে নোয়াখালীর ভাষাণচর ও ভোলার চর কুকরী মুকরী ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার তালিকায় রয়েছে বলে জানান মুহাম্মদ মহিউদ্দিন।
তিনি বলেন, ভাষাণচরে এক লাখ রোহিঙ্গা স্থানান্তর করা হচ্ছে। সেখানে নৌবাহিনীর স্থাপনাও গড়ে উঠবে। বিদেশিরাও রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখার জন্য ভাষাণচরে যাবেন। তাই সেখানেও ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ‘অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক কো-অর্ডিনেশন কমিটি’র ৩০তম সভায় ৪০টি দ্বীপে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের দ্বীপগুলোতে সাসের মাধ্যমে দ্রুত ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়ার জন্য এরই মধ্যে ভারত সরকারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। বিসিএসসিএল দেশের ৪০টি দুর্গম দ্বীপে ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যার কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে।
শেয়ার করুন
রায়ান বণিক | ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

মূল ভূখ- থেকে বিচ্ছিন্ন দেশের সর্ব দক্ষিণের স্থান ছেঁড়া দ্বীপ আর বিচ্ছিন্ন থাকছে না। ভারতের উৎক্ষেপণ করা দক্ষিণ এশীয় স্যাটেলাইটের (সাস) মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ পেতে যাচ্ছে দ্বীপটি। সৌরশক্তি ব্যবহার করে দ্বীপটিতে ওয়াই-ফাই সংযোগ চালু করবে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএসসিএল)।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, কেবল ছেঁড়া দ্বীপই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে ওঠা ৪০টি বড় দ্বীপে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিসিএসসিএলের ব্যবস্থাপক হামেদ হাসান মুহাম্মদ মহিউদ্দিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে ৪০টি দ্বীপে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৪০টি দ্বীপ বাছাই করা হয়েছে। তবে এসব দ্বীপের তালিকায় পরিবর্তন আসতে পারে।
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশীয় স্যাটেলাইট ব্যবহার করে এসব দ্বীপে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হবে। এজন্য বাংলাদেশের চাহিদা ভারতকে জানানো হয়েছে। ভারতের কাছ থেকে আগামী এক মাসের মধ্যেই বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার পর কাজ শুরু হবে।
তিনি বলেন, যে ৪০টি দ্বীপ বাছাই করা হয়েছে, তার বেশিরভাগ গুলোতেই জনবসতি রয়েছে। ওইসব দ্বীপে অন্তত একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদের অফিস, প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ওয়াই-ফাই সংযোগের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হবে।
ছেঁড়া দ্বীপে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকরাও যাতে ইন্টারনেট সুবিধা পেতে পারেন, সে জন্য সেখানেও ওয়াই-ফাই স্থাপনের পরিকল্পনা আছে বিসিএসসিএলের। তবে সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার কারণে সৌর বিদ্যুতে যাতে মোবাইল ফোন সেটে ব্যবহার করার উপযোগী ওয়াই-ফাই সুবিধা দেওয়া যায়, সে জন্য ভারতের কাছে প্রযুক্তি সুবিধা চাওয়া হয়েছে। ছেঁড়া দ্বীপে ওয়াই-ফাই স্থাপন করার মতো কোনো স্থাপনা নেই। আবার, সরকার থেকে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা হলে তার নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার জন্য সেখানে অফিসও স্থাপন করতে হবে। না হলে সেন্টমার্টিনের যে অংশে ছেঁড়া দ্বীপ অবস্থিত, সে অংশে শক্তিশালী ওয়াই-ফাই প্রযুক্তি স্থাপন করে সেখানে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
কোন ৪০টি দ্বীপে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হবে, তা এখনো চূড়ান্ত করেনি বিসিএসসিএল। তবে নোয়াখালীর ভাষাণচর ও ভোলার চর কুকরী মুকরী ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার তালিকায় রয়েছে বলে জানান মুহাম্মদ মহিউদ্দিন।
তিনি বলেন, ভাষাণচরে এক লাখ রোহিঙ্গা স্থানান্তর করা হচ্ছে। সেখানে নৌবাহিনীর স্থাপনাও গড়ে উঠবে। বিদেশিরাও রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখার জন্য ভাষাণচরে যাবেন। তাই সেখানেও ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ‘অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক কো-অর্ডিনেশন কমিটি’র ৩০তম সভায় ৪০টি দ্বীপে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের দ্বীপগুলোতে সাসের মাধ্যমে দ্রুত ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়ার জন্য এরই মধ্যে ভারত সরকারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। বিসিএসসিএল দেশের ৪০টি দুর্গম দ্বীপে ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যার কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে।