‘ভোট আর কী, নৌকা পাস’
ফিরোজ মিয়াজী | ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টায় আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়েছে। রাত পোহালেই ভোট। প্রার্থী নির্বাচন করতে পছন্দের প্রতীকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ভোটাররা। কেমন হবে ভোটগ্রহণ? কী ভাবছেন ভোটাররা? সম্প্রতি নির্বাচনী সহিংসতা নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে যেমন শঙ্কা রয়েছে, তেমনি উৎসবের আমেজও কম নয়।
গতকাল বেলা ১১টা। বাসাবো এলাকায় দোকানে বসে আছেন চা বিক্রেতা নাসির উদ্দিন। সেখানে উপস্থিত সবার মধ্যে চায়ের চুমুকের সঙ্গে চলছে ভোটের আলাপ। চা বিক্রেতা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ভোট আর কী ভাই, নৌকা পাস। আর কেউ তো মাঠে নাই।’
এ সময় দোকানে বসে থাকা একজন নিজেকে বিএনপিকর্মী পরিচয় দিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘দুই মাসের জেল, দশবার সাক্ষাৎ, কত টাকা খরচ হইছে ভাবেন? ভোট কেন্দ্রে যামু, কিন্তু ‘না’ ভোট দিমু।’
দুপুর সাড়ে ১২টা। বাসাবো এলাকার রাস্তার পাশে রোদে বসে পত্রিকা পড়ছিলেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ বাবুল আহমেদ। জানতে চাইলে তিনি বলছিলেন, ‘এখনকার রাজনীতি তো পকেট রাজনীতি। কিন্তু শেখ হাসিনার রাজনীতি হলো দেশের জন্য। তিনি সবসময় ভাবেন দেশকে কী দিতে পেরেছেন।’ নৌকার জয়ের ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত বাবুল আহমেদ। তিনি আরো বলেন, ‘বাকস্বাধীনতা নেই কে বলেছে? টিভিতে টকশোতে সবাই কথা বলছে, কাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে?’
রিকশাচালক আবু আহমেদ সবুজবাগ এলাকার ভোটার। জানতে চাইলে তিনি আওয়ামী লীগের একটি ক্লাব দেখিয়ে দিয়ে বলেন, ‘ওখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন। নৌকার লোকেরা আমাদের মন পাবে না। উন্নয়ন হয়েছে শুধু বড়লোকের, আমাদের কিছুই হয়নি।’
গেন্ডারিয়ার বাসিন্দা সালেহ আরিফ। তিনি বলছিলেন, ‘পুলিশ আর ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের দাপটে বিএনপির লোকজন এলাকাতেই থাকতে পারে না। মানুষ ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যায় কি না সন্দেহ।’
ক্যান্টনমেন্টের কচুক্ষেত এলাকায় চায়ের দোকানে বসে ছিলেন কয়েকজন ভোটার। তাদের একজন বলেন, ‘ভোট হয় কি না কে জানে। বিএনপি ভোট বর্জনও করতে পারে।’ আরেকজনের শঙ্কা, ‘ভোটের দিন মারামারি হবে অনেক। বিএনপি সেদিন কিছু একটা করতে পারে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য মাস্টার্স পাস করা আলী আকবরও চা পান করছিলেন সেখানেই। তিনি বলেন, ‘আমি চাঁদপুরের ভোটার। তবে ভোট দিতে যাব না। ১ তারিখে নতুন চাকরিতে জয়েন করতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভোট দেওয়া অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু বাড়ি গেলে ফিরতে পারি কি না তার ঠিক নেই। গাড়ি তো বন্ধ থাকবে। রিস্ক নিতে চাই না। ভোটের চেয়ে চাকরি বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
শেয়ার করুন
ফিরোজ মিয়াজী | ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টায় আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়েছে। রাত পোহালেই ভোট। প্রার্থী নির্বাচন করতে পছন্দের প্রতীকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ভোটাররা। কেমন হবে ভোটগ্রহণ? কী ভাবছেন ভোটাররা? সম্প্রতি নির্বাচনী সহিংসতা নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে যেমন শঙ্কা রয়েছে, তেমনি উৎসবের আমেজও কম নয়।
গতকাল বেলা ১১টা। বাসাবো এলাকায় দোকানে বসে আছেন চা বিক্রেতা নাসির উদ্দিন। সেখানে উপস্থিত সবার মধ্যে চায়ের চুমুকের সঙ্গে চলছে ভোটের আলাপ। চা বিক্রেতা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ভোট আর কী ভাই, নৌকা পাস। আর কেউ তো মাঠে নাই।’
এ সময় দোকানে বসে থাকা একজন নিজেকে বিএনপিকর্মী পরিচয় দিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘দুই মাসের জেল, দশবার সাক্ষাৎ, কত টাকা খরচ হইছে ভাবেন? ভোট কেন্দ্রে যামু, কিন্তু ‘না’ ভোট দিমু।’
দুপুর সাড়ে ১২টা। বাসাবো এলাকার রাস্তার পাশে রোদে বসে পত্রিকা পড়ছিলেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ বাবুল আহমেদ। জানতে চাইলে তিনি বলছিলেন, ‘এখনকার রাজনীতি তো পকেট রাজনীতি। কিন্তু শেখ হাসিনার রাজনীতি হলো দেশের জন্য। তিনি সবসময় ভাবেন দেশকে কী দিতে পেরেছেন।’ নৌকার জয়ের ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত বাবুল আহমেদ। তিনি আরো বলেন, ‘বাকস্বাধীনতা নেই কে বলেছে? টিভিতে টকশোতে সবাই কথা বলছে, কাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে?’
রিকশাচালক আবু আহমেদ সবুজবাগ এলাকার ভোটার। জানতে চাইলে তিনি আওয়ামী লীগের একটি ক্লাব দেখিয়ে দিয়ে বলেন, ‘ওখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন। নৌকার লোকেরা আমাদের মন পাবে না। উন্নয়ন হয়েছে শুধু বড়লোকের, আমাদের কিছুই হয়নি।’
গেন্ডারিয়ার বাসিন্দা সালেহ আরিফ। তিনি বলছিলেন, ‘পুলিশ আর ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের দাপটে বিএনপির লোকজন এলাকাতেই থাকতে পারে না। মানুষ ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যায় কি না সন্দেহ।’
ক্যান্টনমেন্টের কচুক্ষেত এলাকায় চায়ের দোকানে বসে ছিলেন কয়েকজন ভোটার। তাদের একজন বলেন, ‘ভোট হয় কি না কে জানে। বিএনপি ভোট বর্জনও করতে পারে।’ আরেকজনের শঙ্কা, ‘ভোটের দিন মারামারি হবে অনেক। বিএনপি সেদিন কিছু একটা করতে পারে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য মাস্টার্স পাস করা আলী আকবরও চা পান করছিলেন সেখানেই। তিনি বলেন, ‘আমি চাঁদপুরের ভোটার। তবে ভোট দিতে যাব না। ১ তারিখে নতুন চাকরিতে জয়েন করতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভোট দেওয়া অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু বাড়ি গেলে ফিরতে পারি কি না তার ঠিক নেই। গাড়ি তো বন্ধ থাকবে। রিস্ক নিতে চাই না। ভোটের চেয়ে চাকরি বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’