ভোটের উত্তাপ বাজারেও
জান্নাতুল ফেরদৌসী | ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
ভোটের আগ মুহূর্তে সরবরাহ কম থাকায় রাজধানীতে নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঢাকার বাইরে থেকে জোগান কম আসছে বলে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। নির্বাচনের কারণে সামনের দুদিন মূল্য আরো বাড়তে পারে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে সব থেকে দামি সবজির তালিকায় রয়েছে করলা। বাজার ও মানভেদে করলার কেজি বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কাঁচামরিচের দাম হঠাৎ করে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে গিয়ে ঠেকেছে। অবশ্য কারওয়ান বাজারে ৫০ টাকা কেজিতেও বিক্রি হয়েছে কাঁচামরিচ। আর শিমের দাম বেড়ে কেজিতে বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা করে।
ফুলকপি বাজার ও মানভেদে পাওয়া যাচ্ছে ১০ থেকে ৩০ টাকায়। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা করে। এ ছাড়ার মুলার কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকা; পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৫-১৫ টাকায়। লাল ও সবুজ শাক বিক্রি হচ্ছে ৫-১০ টাকা আটিতে। লাউশাক পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়। গত সপ্তাহে এ সবজিগুলোর দাম পাঁচ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কম ছিল।
তবে গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে বেড়ে যাওয়া বেগুনের দাম কিছুটা কমেছে। মানভেদে বেগুনের কেজি বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৫০ টাকা। বেগুনের মতো কিছুটা দাম কমেছে পাকা টমেটোর। মানভেদে পাকা টমেটো বিক্রি হয়েছে ১৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া গাজরের দাম কিছুটা কমে ৩০ থেকে ৪০ টাকা হয়েছে। নতুন আলু বিক্রি হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।
পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। আগের সপ্তাহের মতো পুরাতন দেশি পেঁয়াজের কেজি ২৫ টাকা এবং নতুন দেশি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে গতকাল।
কারওয়ান বাজারের সবজি ব্যবসায়ী সানোয়ার হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে কাঁচাপণ্য বাজারে ঢুকছে কম। এ কারণে পণ্যের দামও বেড়ে গেছে। নির্বাচনের আগে এ দাম কমবে না; বরং বাড়তে পারে।
রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়েছে ডিমের দামও। সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা করে। কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শুধু ডিম বিক্রি করেন এমন ব্যবসায়ীরা এক ডজন ডিম বিক্রি করছেন ১০০ থেকে ১০৫ টাকায়। এক হালি ডিমের দাম রাখা হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৫ টাকা। আর এক খাঁচি ডিম বিক্রি করছেন ২০০ থেকে ২২০ টাকা। এর আগের সপ্তাহে ডিমের খাঁচি ছিল ১৯০ থেকে ২১০ টাকা।
হঠাৎ ডিমের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জানান, নির্বাচন ঘিরে অনেক পণ্যের মূল্য বেড়েছে। অন্য কোনো কারণ তার জানা নেই। তবে পণ্য সরবরাহ কম বলেই হয়তো দাম বেড়েছে। তারা আড়ত থেকে বেশি দামে কিনছেন। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
তবে সবজির দাম কিছুটা বাড়লেও বর্তমানে মাংসের বাজার দর স্থিতিশীল রয়েছে। গতকাল গরুর মাংস প্রতি কেজি ৪৭০ টাকা থেকে ৪৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১২৫ টাকা থেকে ১৩০ টাকা এবং দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৩৮০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি রুই ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। গতকাল মাঝারি আকারের রুই ২২০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি আর বড় আকারেরগুলো ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
মাছ ব্যবসায়ী আবদুল আওয়াল বলেন, ‘সাধারণত রুই মাছ বিক্রি করি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি। বাজারে মাছ কম থাকায় সারা দিন মাছ বিক্রি করছি ২২০-২৮০ টাকা কেজিতে। কাল-পরশু আরো দাম বাড়তে পারে। কারণ দুই দিন যানবাহন বন্ধ থাকবে।’
শেয়ার করুন
জান্নাতুল ফেরদৌসী | ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

ভোটের আগ মুহূর্তে সরবরাহ কম থাকায় রাজধানীতে নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঢাকার বাইরে থেকে জোগান কম আসছে বলে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। নির্বাচনের কারণে সামনের দুদিন মূল্য আরো বাড়তে পারে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে সব থেকে দামি সবজির তালিকায় রয়েছে করলা। বাজার ও মানভেদে করলার কেজি বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কাঁচামরিচের দাম হঠাৎ করে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে গিয়ে ঠেকেছে। অবশ্য কারওয়ান বাজারে ৫০ টাকা কেজিতেও বিক্রি হয়েছে কাঁচামরিচ। আর শিমের দাম বেড়ে কেজিতে বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা করে।
ফুলকপি বাজার ও মানভেদে পাওয়া যাচ্ছে ১০ থেকে ৩০ টাকায়। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা করে। এ ছাড়ার মুলার কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকা; পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৫-১৫ টাকায়। লাল ও সবুজ শাক বিক্রি হচ্ছে ৫-১০ টাকা আটিতে। লাউশাক পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়। গত সপ্তাহে এ সবজিগুলোর দাম পাঁচ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কম ছিল।
তবে গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে বেড়ে যাওয়া বেগুনের দাম কিছুটা কমেছে। মানভেদে বেগুনের কেজি বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৫০ টাকা। বেগুনের মতো কিছুটা দাম কমেছে পাকা টমেটোর। মানভেদে পাকা টমেটো বিক্রি হয়েছে ১৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া গাজরের দাম কিছুটা কমে ৩০ থেকে ৪০ টাকা হয়েছে। নতুন আলু বিক্রি হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।
পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। আগের সপ্তাহের মতো পুরাতন দেশি পেঁয়াজের কেজি ২৫ টাকা এবং নতুন দেশি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে গতকাল।
কারওয়ান বাজারের সবজি ব্যবসায়ী সানোয়ার হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে কাঁচাপণ্য বাজারে ঢুকছে কম। এ কারণে পণ্যের দামও বেড়ে গেছে। নির্বাচনের আগে এ দাম কমবে না; বরং বাড়তে পারে।
রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়েছে ডিমের দামও। সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা করে। কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শুধু ডিম বিক্রি করেন এমন ব্যবসায়ীরা এক ডজন ডিম বিক্রি করছেন ১০০ থেকে ১০৫ টাকায়। এক হালি ডিমের দাম রাখা হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৫ টাকা। আর এক খাঁচি ডিম বিক্রি করছেন ২০০ থেকে ২২০ টাকা। এর আগের সপ্তাহে ডিমের খাঁচি ছিল ১৯০ থেকে ২১০ টাকা।
হঠাৎ ডিমের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জানান, নির্বাচন ঘিরে অনেক পণ্যের মূল্য বেড়েছে। অন্য কোনো কারণ তার জানা নেই। তবে পণ্য সরবরাহ কম বলেই হয়তো দাম বেড়েছে। তারা আড়ত থেকে বেশি দামে কিনছেন। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
তবে সবজির দাম কিছুটা বাড়লেও বর্তমানে মাংসের বাজার দর স্থিতিশীল রয়েছে। গতকাল গরুর মাংস প্রতি কেজি ৪৭০ টাকা থেকে ৪৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১২৫ টাকা থেকে ১৩০ টাকা এবং দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৩৮০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি রুই ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। গতকাল মাঝারি আকারের রুই ২২০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি আর বড় আকারেরগুলো ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
মাছ ব্যবসায়ী আবদুল আওয়াল বলেন, ‘সাধারণত রুই মাছ বিক্রি করি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি। বাজারে মাছ কম থাকায় সারা দিন মাছ বিক্রি করছি ২২০-২৮০ টাকা কেজিতে। কাল-পরশু আরো দাম বাড়তে পারে। কারণ দুই দিন যানবাহন বন্ধ থাকবে।’