টিভি দেখে পত্রিকা পড়ে সময় কাটবে খালেদা জিয়ার
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
অনেকটা গত নির্বাচনের দিনের মতোই। প্রার্থীও নন, ভোটও দিতে পারবেন না বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারের চার দেয়ালে সময় পার করবেন তিনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তিনি ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি। সর্বশেষ গত ১৬ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের কাছ থেকেই তিনি নির্বাচনের সর্বশেষে খোঁজ-খবর নেন। এছাড়া কারাবিধি অনুযায়ী তিনি যে পত্রিকাটি পান সেটি পড়ে নির্বাচনের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পর থেকে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থার কোনো তথ্য আমরা পাইনি। চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের অনুমতি চেয়ে বারবার আবেদন করা হলেও কারা কর্র্তৃপক্ষ কোনো অনুমতি দেয়নি। ১৫ দিন ধরে বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদেরও কারাগারে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।’
কারারক্ষীসহ বিভিন্ন সূত্র তথ্যে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের সময় কাটে বিটিভি দেখে, পত্রিকা পড়ে। কারারক্ষীদের সহায়তা নিয়ে ফাতেমা তাকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে বারান্দায় ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়ান। ডিভিশন পাওয়া বন্দি হিসেবে কারাবিধি অনুযায়ী সুবিধা তিনি পাচ্ছেন। পুরোনো কারাগারের ভেতরই তার জন্য বিশেষভাবে রান্নার ব্যবস্থা করা হয়। একজন নারী উপ-কারা তত্ত্বাবধায়ক সেটি তদারকি করেন। মাছ, মাংস, ডাল, সবজি ও ভাত-রুটি রান্না করা হয় তার জন্য। বাইরে থেকে কোনো খাবারই সরবরাহ করার সুযোগ নেই। রান্না করা খাবার চিকিৎসকের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর খালেদা জিয়াকে দেওয়া হয়। তিন বেলাই এই নিয়ম অনুসরণ করা হয়। তবে খাওয়া নিয়ে বেগম জিয়ার বিশেষ কোনো চাহিদাও নেই। হালকা লাউ-সবজি, রুটি, মুরগির মাংস বা অল্প ভাত খান খালেদা জিয়া।
গত শুক্রবার সকালে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে গিয়ে দেখা গেছে পরিত্যক্ত কারাগারটি নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। ভোট সামনে রেখে আরো নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বিপুলসংখ্যক কারারক্ষী ছাড়াও বাইরে সবসময় চকবাজার থানা-পুলিশের একটি দলকে টহল দিতে দেখা যায়। কারাগারের মূল ফটকের প্রায় ১৫ গজ দূরে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া। ওই বাউন্ডারির ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। ভেতরে তার পাহারায় থাকেন চারজন নারী কারারক্ষী। এছাড়া বাইরে থাকেন সশস্ত্র কারারক্ষীরা।
কারাগারে দায়িত্বরত এক কারারক্ষী বলেন, খালেদা জিয়া খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটেন। মাঝে মধ্যে কারারক্ষীদের সহযোগিতায় তাকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে ভবনের বারান্দায় ঘোরানো হয়। কোনো কারারক্ষী খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান না।
বিএনপির সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘চেয়ারপারসন কেমন আছেন তার সঠিক চিত্র আমরা জানতে পারছি না। তিনি হাঁটুর ব্যথা, আর্থ্রাইটিস বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত। তার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে চিকিৎসক টিম গঠন করা জরুরি। বারবার অনুরোধ ও আদালতের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা থাকার পরও সেটা করা হচ্ছে না। তবে সরকারি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, চেয়ারপারসনের অবস্থা স্থিতিশীল। তিনি ভালো আছেন।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

অনেকটা গত নির্বাচনের দিনের মতোই। প্রার্থীও নন, ভোটও দিতে পারবেন না বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারের চার দেয়ালে সময় পার করবেন তিনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তিনি ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি। সর্বশেষ গত ১৬ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের কাছ থেকেই তিনি নির্বাচনের সর্বশেষে খোঁজ-খবর নেন। এছাড়া কারাবিধি অনুযায়ী তিনি যে পত্রিকাটি পান সেটি পড়ে নির্বাচনের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পর থেকে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থার কোনো তথ্য আমরা পাইনি। চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের অনুমতি চেয়ে বারবার আবেদন করা হলেও কারা কর্র্তৃপক্ষ কোনো অনুমতি দেয়নি। ১৫ দিন ধরে বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদেরও কারাগারে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।’
কারারক্ষীসহ বিভিন্ন সূত্র তথ্যে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের সময় কাটে বিটিভি দেখে, পত্রিকা পড়ে। কারারক্ষীদের সহায়তা নিয়ে ফাতেমা তাকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে বারান্দায় ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়ান। ডিভিশন পাওয়া বন্দি হিসেবে কারাবিধি অনুযায়ী সুবিধা তিনি পাচ্ছেন। পুরোনো কারাগারের ভেতরই তার জন্য বিশেষভাবে রান্নার ব্যবস্থা করা হয়। একজন নারী উপ-কারা তত্ত্বাবধায়ক সেটি তদারকি করেন। মাছ, মাংস, ডাল, সবজি ও ভাত-রুটি রান্না করা হয় তার জন্য। বাইরে থেকে কোনো খাবারই সরবরাহ করার সুযোগ নেই। রান্না করা খাবার চিকিৎসকের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর খালেদা জিয়াকে দেওয়া হয়। তিন বেলাই এই নিয়ম অনুসরণ করা হয়। তবে খাওয়া নিয়ে বেগম জিয়ার বিশেষ কোনো চাহিদাও নেই। হালকা লাউ-সবজি, রুটি, মুরগির মাংস বা অল্প ভাত খান খালেদা জিয়া।
গত শুক্রবার সকালে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে গিয়ে দেখা গেছে পরিত্যক্ত কারাগারটি নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। ভোট সামনে রেখে আরো নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বিপুলসংখ্যক কারারক্ষী ছাড়াও বাইরে সবসময় চকবাজার থানা-পুলিশের একটি দলকে টহল দিতে দেখা যায়। কারাগারের মূল ফটকের প্রায় ১৫ গজ দূরে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া। ওই বাউন্ডারির ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। ভেতরে তার পাহারায় থাকেন চারজন নারী কারারক্ষী। এছাড়া বাইরে থাকেন সশস্ত্র কারারক্ষীরা।
কারাগারে দায়িত্বরত এক কারারক্ষী বলেন, খালেদা জিয়া খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটেন। মাঝে মধ্যে কারারক্ষীদের সহযোগিতায় তাকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে ভবনের বারান্দায় ঘোরানো হয়। কোনো কারারক্ষী খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান না।
বিএনপির সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘চেয়ারপারসন কেমন আছেন তার সঠিক চিত্র আমরা জানতে পারছি না। তিনি হাঁটুর ব্যথা, আর্থ্রাইটিস বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত। তার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে চিকিৎসক টিম গঠন করা জরুরি। বারবার অনুরোধ ও আদালতের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা থাকার পরও সেটা করা হচ্ছে না। তবে সরকারি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, চেয়ারপারসনের অবস্থা স্থিতিশীল। তিনি ভালো আছেন।