
সারা দেশের নির্বাচনী পরিস্থিতি তুলে ধরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে গত শনিবার রাতেই ভোট জালিয়াতি করা হয়েছে। আর দিনের বেলা নির্বাচনের নামে তামাশা করছে। এ নির্বাচন সাজানো। গতকাল রবিবার বিকেলে নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত তৃতীয় দফা সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পদদলিত করে ক্ষমতার মসনদে থাকবেন শেখ হাসিনা। চেতনার সন্ত্রাস করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ভূলুণ্ঠিত করে রক্তাক্ত নির্বাচন করছে। এ ভয়ংকর পরিস্থিতির অবসান করবে জনগণ।
তিনি বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের আসনে ৯৫ ভাগ কেন্দ্র দখল করা হয়েছে। নোয়াখালী তিন এর ১২৯টি কেন্দ্রের ১২৭টি কেন্দ্রই দখল করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। প্রার্থীর এজেন্টদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের বিভিন্ন আসনের প্রার্থীদের ভোট বর্জনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রিজভী বলেন, এ বিষয়ে দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রীয়ভাবে এমন কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।
এর আগে দুপুরে রিজভী অভিযোগ করে বলেন, সকাল থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত সারা দেশের প্রায় ২০ শতাংশ ভোটকেন্দ্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় ক্ষমতাসীনরা দখল করেছে। ধানের শীষের এজেন্টদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না এবং ধানের শীষের ভোটারদের ভোট দিতে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
রিজভী বলেন, এত কিছু করার পরও মানুষ ভোটকেন্দ্রে গেছে। জনগণ এসব প্রতিহত করার চেষ্টা করছেন। জনগণের শক্তি নিয়ে আমরা এগোচ্ছি, জুলুম মানব না, এদের পতন হবেই। আন্দোলনের অংশ হিসেবে অংশ নেওয়া এ নির্বাচনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত থাকব।
সারা দেশে ভোটের অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। তার কেন্দ্রের আশপাশে বোমা ফুটছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানের আসনের সব কেন্দ্র দখল করে ফেলেছে। ভোলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনী গ্রেপ্তারের হুমকি দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার ক্ষমতায় নির্বাচন উৎসবমুখর হবে, আনন্দঘন হবে সেটা ভাবার কোনো কারণ নেই। তার প্রমাণ আজ নির্বাচনে বিএনপির দুজন নেতা হত্যা করা হয়েছে। তারপরও ভোটাররা ভোট দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে জানান তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ প্রমুখ।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজের ভোটটি দিতে না পারার আক্ষেপ ঝরেছে অনেকের কণ্ঠে। গতকাল রবিবার ভোট দিতে গিয়ে বাধাসহ নানা সমস্যার মুখে পড়েছেন তারা। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ভোটাররা এমন অভিযোগ জানিয়েছেন। এসব ভোটারের মধ্যে কেন্দ্রে গিয়েও অনেকে ভোট দিতে পারেননি। কারণ, তাদের ভোট আগেই দেওয়া হয়ে গেছে। আবার কাউকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ভোটার স্লিপ না পেয়েও ভোট দিতে পারেননি অনেকে। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
ঢাকা-৭ আসনে লালবাগের রহমতুল্লাহ উচ্চ বালক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সুমাইয়া হাসান নামে এক তরুণী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমি এবারই প্রথম ভোটার। জার্মানি থেকে ভোট দিতে এসেছি। কিন্তু আমাকে ও আমার আম্মুকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম। ব্যর্থ হয়ে বাসায় ফিরে যাচ্ছি।’
ঢাকা-১২ আসনের ভোটার চাকরিজীবী জেসিকা জাহিন। এবারই প্রথম ভোট দিতে কেন্দ্রে গেলেও পারেননি। প্রিসাইডিং অফিসার জানিয়েছেন, তার সিরিয়াল নাম্বারে আরেক নারী ভোট দিয়ে চলে গেছেন।
চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসনে ইভিএমে ভোটদানে বহিরাগতদের বাধার অভিযোগ করেন ভোটাররা। এখানে বেশিরভাগ কেন্দ্রে ইভিএম পাহারা দিচ্ছিল বহিরাগতরা। তাদের সামনেই ভোটারদের ব্যালটে সিল দিতে বাধ্য করা হয়। পোলিং ও প্রিসাইডিং অফিসাররা ছিলেন নিতান্ত অসহায়। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে এ চিত্র চোখে পড়ে। ভোট দিতে গিয়ে এত তিক্ত অভিজ্ঞতা আগে কখনো হয়নি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. গোলাম মোস্তফার। কখনো ভাবতে পারেননি, সন্তানের বয়সী কেউ তাকে বলবে, ‘ভোট দিলে দাও, নইলে বেরিয়ে যাও।’ নগরীর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার তিনি।
বরিশাল-৫ (সদর) আসনের বীণাপাণি কেন্দ্রের ভোটার মাহবুব আলম অভিযোগ করেছেন, কেউ তার ভোট আগেই দিয়ে ফেলেছে। একই কেন্দ্রের ভোটার অধ্যাপক শাহ আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমি ভোট দিতে ব্যালট পেপার নিয়ে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের কর্মীরা তা কেড়ে নিয়ে নৌকায় সিল দিয়েছে।’
সিলেট-১ (মহানগর-সদর) আসনে পাঠানটুলা জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের প্রধান ফটকে দুপুর ২টার দিকে দেখা যায়, একজন ভোটার টোকেন হাতে নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছেন। তিনি ভোট দেওয়ার জন্য ভেতরে যেতে চান, তবে দায়িত্বরত পুলিশ তার পথ আগলে বলছেন, ‘আর ভোট দেওয়া লাগবে না, ভোট শেষ।’ একই সঙ্গে ওই পুলিশ সদস্য তার সঙ্গীদের বলেন, কোনো ভোটারকে যেন আর ভেতরে ঢুকতে দেওয়া না হয়।
ঢাকা-১৯ (সাভার) আসনে সকাল সাড়ে ৮টায় কলকাকলী শিক্ষালয় কেন্দ্রে গেলেও ভোট দিতে পারেননি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রতন মিয়া। তিনি অভিযোগ করেন, ভোটার স্লিপ নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করলে স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মীরা তার হাত থেকে স্লিপ কেড়ে নেয় এবং ‘ভোট হয়ে গেছে’ জানিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ সবার সামনে এমন ঘটনা ঘটলেও কেউ ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ রতনের।
পৌর এলাকার জামসিং মহল্লার ভোটার জহির উদ্দিন জানান, ভোটকক্ষে কয়েক যুবক তার হাত থেকে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল দেয়। তিনি বলেন, আমি নৌকায় ভোট দিতে গিয়েছিলাম, কিন্তু নিজের ভোট নিজে না দিতে পারায় কষ্ট পেয়েছি। সাভারের মজিদপুর মহল্লার সান ফ্লাওয়ার মডেল স্কুল কেন্দ্রের মূল ফটক লাগিয়ে রাখতে দেখা যায়। আশুলিয়ার ইয়ারপুর, ঘোষবাগ, নরসিংহপুর, জামগড়া এলাকায়ও একই চিত্র লক্ষ করা যায়। ভোটাররা বাধা পাওয়ায় দুপুর ১২টার মধ্যে ওই এলাকার কেন্দ্রগুলো ফাঁকা হয়ে যায়।
মুন্সীগঞ্জ-৩ (সদর-গজারিয়া) আসনে শহরের মুন্সীগঞ্জ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে নিজের ভোট দিতে না পারায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান শাহিদা বেগম। তিনি অভিযোগ করেন, সকাল ৯টার দিকে ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষে ব্যালটে সিল দিতে গেলে নৌকা প্রতীকের এজেন্ট তা ছিনিয়ে নেয় এবং জোরপূর্বক নৌকা প্রতীকে সিল দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্ষুব্ধ শাহিদা এ সময় নৌকা প্রতীকের এজেন্টকে এমন আচরণের কারণ জানতে চান। ১০ মিনিট ধরে ঘটনার প্রতিবাদ জানান। তবে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার হালিমা খাতুন এমন কিছু ঘটেনি বলে দাবি করেন।
ঢাকা-১৩ আসনে জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দা ইমরান। এ কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট গ্রহণ চলছিল। কিন্তু ভোটার স্লিপ না পেয়ে তিনি ভোট দিতে পারেননি। পরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘সূক্ষ্মভাবে ভোট চুরি করতেই ইভিএমের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ এ আসনে বিএনপির এজেন্ট ছিলেন সুফিয়া। তিনি অভিযোগ করেন, তাকে সকালেই কেন্দ্র থেকে মারধর করে বের করে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘একজন নারী হয়েও মারধরের শিকার হওয়ায় আমি লজ্জিত। আমাকে ভোটও দিতে দেওয়া হয়নি।’
ঢাকা-৯ আসনভুক্ত পূর্ব বাসাবোর বাসিন্দা হাফসা শারমিন। দুপুর ১২টার সময় মা রহিমা আক্তারকে নিয়ে কদমতলা পূর্ব বাসাবো স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিতে যান। তাদের বাসায় কোনো প্রার্থীর পক্ষ থেকে ভোটার নম্বর ও কেন্দ্রের নামসংবলিত ভোটার স্লিপ পৌঁছানো হয়নি। জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে গেলে তাদের বলা হয় ভোটার স্লিপ লাগবে। কেন্দ্রের বাইরে নৌকা প্রার্থীর প্রতিনিধিরা তালিকা থেকে ভোটার নম্বর বের করে দিচ্ছিলেন। মা-মেয়ে তাদের কাছে ভোটার নম্বর চাইলে তারা দেওয়ার কথা বলে আধঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পরে উপায় না পেয়ে মা-মেয়ে ভোট না দিয়েই চলে যান। ভোট দিতে না পেরে আক্ষেপ করে হাফসা বলেন, অনেক আশার ভোটটি দেওয়া হলো না। তাদের বাসার এক ভাড়াটিয়াও একই কারণে ভোট দিতে পারেননি বলে জানান তিনি।
ভোটের আগের রাতেই কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট পেপারে সিল মারার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। গতকাল রোববার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসেনি। ৮টায় ভোট শুরু হয়েছে। ভোটগ্রহণ শুরুর কিছু নিয়মকানুন আছে। পোলিং এজেন্ট, প্রিসাইডিং অফিসার ও কেন্দ্রের দায়িত্বে যারা আছে তারা সে বিষয়ে নিশ্চিত না হয়ে ভোটগ্রহণ শুরু করেনি।’
বিভিন্ন জেলায় ভোটের আগের রাতে ব্যালটে সিল মেরে বাক্সভর্তি করার অভিযোগ তোলেন ধানের শীষের প্রার্থীরা। তাদের পোলিং এজেন্টদের পুলিশ হয়রানি করেছে বলেও দাবি করেন।
গতকাল ভিকারুননিসা নূন স্কুল ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশপ্রধান। কোনো পোলিং এজেন্টকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, মামলার আসামি ও পরোয়ানা থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এফআইআরে যাদের নাম নেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তদন্তে নাম আসায়।
শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে মন্তব্য করে আইজিপি বলেন, ‘এখানে কানাডীয়, ভারতীয় ও নেপালি পর্যবেক্ষক ছিল। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে এবং জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পারছে।’ বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়া ও গ্রেপ্তার নিয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পুলিশের এ শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘মাহবুব তালুকদার কিসের ভিত্তিতে বলেছেন সেটা আমি জানি না। আমি যেসব কেন্দ্রে গিয়েছি, সেখানে সব দলের পোলিং এজেন্ট পেয়েছি। পুলিশ কোনো পোলিং এজেন্ট বা অন্য কাউকে অ্যারেস্ট করেনি।’ তিনি আরো বলেন, পোলিং এজেন্ট বের করে দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। যারা এসেছে তাদের বসতে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশ নিয়েছে। যারা আসেনি তাদের খুঁজে নিয়ে আসার দায়-দায়িত্ব পুলিশের নয়।
মামলা বা চার্জশিটে নাম না থাকলেও বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার বিষয়ে জানতে চাইলে আইজিপি বলেন, ‘প্রিভেন্টিভ অ্যারেস্ট’ বলে একটা বিষয় আছে। তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে নাম আসায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ভোটের দিনের অবস্থা জানিয়ে জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘দু-একটা জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সমস্ত বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে। চট্টগ্রামের দুটি কেন্দ্রে গ-গোল হয়েছে। এর মধ্যে একটি কেন্দ্রে পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। দুটি অস্ত্র লুট করে নেওয়া হয়েছে। ময়মনসিংহে একটি অস্ত্র লুট করা হয়েছে। ভৈরবে একটি কেন্দ্রে পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে। নোয়াখালীতে গ-গোল ও ব্যালট লুট করার চেষ্টা করেছিল। আমরা সেটা রোধ করেছি।’ তিনি বলেন, ‘৩০০ আসনে ৪২ হাজারের বেশি কেন্দ্র রয়েছে। আমি মাত্র কয়েকটির কথা বললাম। এর পার্সেন্টেজ নিলে তা পয়েন্ট জিরোর কাছে হবে। বাকিগুলোতে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ হয়েছে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ালে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, র্যাব ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের মাধ্যমে গুজব রটনাকারীদের আটক করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে অনেকদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। গতকাল রবিবার বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব গণমাধ্যমেই এই নির্বাচন নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। নি¤েœ শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরা হলো।
বিবিসি
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি ‘বাংলাদেশ ইলেকশনস : ডেডলি ক্ল্যাসেস মার ভোট’ শীর্ষক শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের বরাত দিয়ে বলা হয়, দেশে ভোট কারচুপির অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং তা তদন্ত করে দেখা হবে। বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জেলায় সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে এবং এবারের নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জয় পেতে পারেন বলা হয় প্রতিবেদনে। চট্টগ্রামের একটি ভোটকেন্দ্রের উদাহরণ দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ভোট শুরুর কয়েক মিনিট আগে একটি কেন্দ্রে বিবিসির প্রতিনিধি ব্যালটভর্তি বাক্স দেখতে পান। যদিও প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
সিএনএন
‘ভায়োলেন্স এরাপ্টস ডিউরিং বাংলাদেশ ইলেকশন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম সিএনএন নির্বাচনী সহিংসতায় ১৫ জনের মৃত্যুর সংবাদটি সামনে নিয়ে আসে। স্থানীয় এক পুলিশের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিভাগে রবিবারের নির্বাচন কেন্দ্র করে নয়জন নিহত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ থাকলেও তিনিই তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসতে পারেন।
আলজাজিরা
কাতারভিত্তিক মিডিয়া আলজাজিরায় ‘বাংলাদেশ ইলেকশনস মারড বাই ডেডলি ক্ল্যাসেস’ শিরোনামে প্রতিবেদনেও সহিংসতায় মৃত্যুর বিষয়টি জায়গা পায়। দেশের বিভিন্ন স্থানে রবিবার সহিংসতার খবর পাওয়া গেলেও রাজধানী ঢাকা তুলনামূলক শান্ত ছিল। মিডিয়াটি বাংলাদেশের স্থানীয় মিডিয়া দ্য ডেইলি স্টারের বরাত দিয়ে দেশের কোন কোন স্থানে সহিংসতায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তা প্রকাশ করে।
এনডিটিভি
ভারতীয় মিডিয়া এনডিটিভি ‘ভোটারস এলিজ বিং বারড ফ্রম পোলিং বুথস ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বিভিন্ন নির্বাচনী কেন্দ্রে সাংবাদিকসহ বিরোধীদলীয় এজেন্টদের প্রবেশ করতে না দেওয়া ও ভোট কারচুপির বিষয়টি জায়গা পায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় সাংবাদিকের বরাত দিয়ে মিডিয়াটি জানায়, ‘তারা জানায় আমাদের ভোটকেন্দ্রের ভেতরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আমাদের ভোট এরই মধ্যেই দেওয়া হয়ে গেছে।’ আওয়ামী লীগ ভোট কারচুপি করেছে বলে বিরোধী দল বিএনপির কয়েকজন নেতা অভিযোগ করেন।
রয়টার্স
বার্তা সংস্থা রয়টার্সও নির্বাচনে সহিংসতাকে তুলে ধরে। ‘বাংলাদেশ প্রোবস ভোট রিগিং অ্যালিগেশনস ইন ইলেকশন হিট বাই ভায়োলেন্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের বরাত দিয়ে বলা হয়, নির্বাচনে কারচুপির বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। এ ছাড়া পুলিশের বরাত দিয়ে আওয়ামী লীগ এবং বিরোধীদের সমর্থকদের মধ্যকার সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন নিহত ও ২০ জন আহতের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। রাজধানী ঢাকায় বিএনপির প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদের ওপর হামলার বিষয়টি পরিষ্কার নয় বলে পুলিশের বরাত দিয়ে জানায় রয়টার্স।
দ্য গার্ডিয়ান
‘বাংলাদেশ ইলেকশন মারড বাই ডেডলি ভায়োলেন্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে গত এক দশকের মধ্যে এই নির্বাচনকে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বলে অভিহিত করে দ্য গার্ডিয়ান। চট্টগ্রামের বাঁশখালীর একটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে একজন নিহতের সংবাদটি পুলিশপ্রধান মোহাম্মদ কামাল হোসেনের বরাতে জানানো হয়। ভোটকেন্দ্রে হামলা ঠেকাতে পুলিশ গুলি চালালে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয় বলে জানায় পুলিশ কর্র্তৃপক্ষ।
ভয়েস অব আমেরিকা
ক্ষমতাসীন পার্টি এবং বিরোধীদলীয় সমর্থকদের মধ্যকার সহিংসতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের ভোটাররা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বলে জানায় ভয়েস অব আমেরিকা। ‘ডেডলি ক্ল্যাসেস অ্যাজ বাংলাদেশ ভোটেড ইন জেনারেল ইলেকশন’ শিরোনামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় যেতে পারেন এমন সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হয়।
দ্য টেলিগ্রাফ
ব্রিটিশ মিডিয়া দ্য টেলিগ্রাফে ‘টু ডেড ইন বাংলাদেশ ইলেকশন ডে ক্ল্যাসেস ফলোয়িং ভায়োলেন্ট ক্যাম্পেইন’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে একজন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ভোটকেন্দ্রে নিহতের কারণ তুলে ধরা হয়। বিরোধীদলীয় সমর্থকরা ভোটকেন্দ্রে হানা দিলে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুড়লে এক ব্যক্তি নিহত হয় বলে স্থানীয় পুলিশপ্রধান মোহাম্মদ কামাল হোসেনের বরাত দিয়ে জানায় টেলিগ্রাফ।
ভোটগ্রহণ ঘিরে প্রায় ২৭ ঘণ্টা বন্ধ রেখে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা চালু করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আবার তা বন্ধ করতে বলেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। রবিবার ভোট শেষ হওয়ার দুই ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির নির্দেশনা পেয়ে মোবাইল ফোন অপারেটররা সব ধরনের মোবাইল ইন্টারনেট চালু করে। একটি অপারেটরের এক কর্মকর্তা বলেন, বিটিআরসির নির্দেশনা পাওয়ার পর থেকে ফোর-জি, থ্রি-জি ও টু-জি ইন্টারনেট সেবা পেতে শুরু করেন গ্রাহকরা। এরপর রাত ৯টার পর আবার ফোর-জি ও থ্রি-জি ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করার নির্দেশনা আসে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন কানাডার পর্যবেক্ষক তানিয়া ফস্টার। গতকাল রবিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিভিন্ন কেন্দ্র পর্যবেক্ষণের সময় তিনি সাংবাদিকদের এ সন্তুষ্টির কথা জানান। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে আরো জানান, তিনি ভোটকেন্দ্রে সব দলের প্রতিনিধিদের দেখেছেন। সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের আওতায় তানিয়া ফস্টারসহ বেশ কয়েকজন বিদেশি পর্যবেক্ষক এ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। তানিয়া ফস্টার বলেন, আমি পাঁচটি ভোটকেন্দ্র ঘুরেছি। বাংলাদেশের এ নির্বাচনের সাক্ষী হতে পেরে আমি গর্বিত। প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটারদের অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ভোট প্রয়োগ করতে দেখেছি। সত্যিকারে এটা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। বিদেশে প্রথমবারের মতো নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসা তানিয়া জানান, নির্বাচনের উৎসবমুখর পরিবেশ দেখে তিনি মুগ্ধ।
পর্যবেক্ষক দলের আরেক প্রতিনিধি ভারতের নাগরিক ড. গৌতম ঘোষ বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ভারতের নির্বাচনের মতো। দুই দেশের নির্বাচনের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। সবাই দীর্ঘ লাইন ধরে ভোটের জন্য অপেক্ষা করছেন। খুবই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সবাই ভোট দিচ্ছেন।
সংক্ষিপ্ত সফরে নেপাল হয়ে বিকেলে ঢাকায় এসেছেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন ইসমাইল। আজ শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনা মো. হাশিম।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি শ্রমবাজারের জটিলতা নিয়ে আলাপ করবেন। কিভাবে দেশটিতে আমরা সহজে কর্মী পাঠাতে পারি; সেগুলো আলোচনায় উঠে আসবে। আমাদেরও কিছু প্রস্তাব রয়েছে। আমাদের কর্মীদের স্বার্থ আগে আমরা চাই, সবার জন্য বাজার খুলে দেওয়া হোক। নিয়োগকর্তার পছন্দমতো রিক্রুটিং এজেন্সি নিয়োগ— এটা আমরা চাই না। অভিবাসন ব্যয়
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার গত কয়েক বছর ধরে অস্থির। দেশটিতে প্রত্যাশিত শ্রমিক পাঠাতে পারছে না বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমবাজারটির জটিলতা নিরসনে আলোচনা করতে সংক্ষিপ্ত সফরে নেপাল হয়ে ঢাকায় আসছেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন ইসমাইল।
তার সফরে শ্রমবাজারটি গতিশীল করতে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) পরিবর্তন, অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় কমানোসহ দেশের সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য বাজার উন্মুক্ত করার প্রস্তাব দেবে ঢাকা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ২৪ ঘণ্টার সফরে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পাশাপাশি তিনি সেনাকল্যাণ সংস্থার সঙ্গেও একটি বৈঠক করবেন।
'পাঠান' মুক্তির আগে থেকেই অনুরাগীদের সঙ্গে শাহরুখের যোগাযোগের একটাই মাধ্যম, টুইটার। শনিবার ফের টুইটারে 'আস্ক এসআরকে' সেশনে ধরা দিলেন শাহরুখ। হালকা মেজাজে, খোলামেলা আড্ডায় মাতলেন অনুরাগীদের সঙ্গে। অনুরাগীদের প্রশ্ন উত্তর দিলেন। সেখানেই একজন টুইটার ব্যবহারকারীর উপদেশ- বয়স অনুযায়ী চরিত্রে অভিনয়ের করার। পাল্টা জবাব দেন শাহরুখও। বলেন, 'তিনি হিরো ছিলেন, আছেন, থাকবেন'।
অনুরাগীরা যেমন রয়েছেন, তেমনই ট্রোল করার লোকের সংখ্যাও কম নয় শাহরুখের সোশালে। বছর সাতান্নর 'তরুণ' এই অভিনেতাকে একজনের প্রশ্ন, 'আপনি কি এভাবেই হিরোর চরিত্রেই অভিনয় করবেন, নাকি কোনো দিন নায়ক-নায়িকার বাবার চরিত্র করার পরিকল্পনাও রয়েছে?' তাতে শাহরুখ যা জবাব দিয়েছেন, তা রীতিমত ছড়িয়ে পড়েছে সোশালে।
এমনিতেই রসিক মানুষ শাহরুখ। তবে কোন কথায় কাকে কী উত্তর দেবেন, তা ভালোই জানা তার। বাদশাহ লেখেন, 'তুই বাপ হ… আমি হিরোর চরিত্রেই ঠিক আছি।'
শনিবারের 'আস্ক এসআরক'-এ সেশনে, শাহরুখের কাছে জানতে চাওয়া হয় 'পাঠান'-এর মোট আয়ের পরিসংখ্যান। তাকেও ফেরাননি শাহরুখ। উত্তর দিয়ে লেখেন, 'ভালোবাসা ৫ হাজার কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে, ৩ হাজার কোটি প্রশংসা, ৩২৫০ কোটি হাগ, ২০০০ কোটি হাসি এখনও গণণা চলছে। তোমার অ্যাকাউন্ট্যান্ট কী বলছেন?'
'পাঠান' ঘিরে উন্মাদনা নজিরবিহীন। প্রেক্ষাগৃহের বাইরে এই ছবি দেখার ঢল। শাহরুখ অভিনীত ছবিটি লম্বা রেসের ঘোড়া, বলেছেন সিনেমা বিশেষজ্ঞরা। ৪ বছর পর শাহরুখ পর্দায় ফিরেছেন বলেই শুধু নয়, ৭ দিনে বক্স অফিসে ৭০০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে 'পাঠান', যা বলিউডে বছরের সেরা ব্লকবাস্টার হিসাবে গণ্য হতে চলেছে।
দুঃসময় পিছু ছাড়ছে না লিভারপুলের। প্রিমিয়ার লিগে টানা তিন ম্যাচে জয়হীন থেকে মাঠে নেমেছিল তারা। ভাঙতে চেয়েছিল ব্যর্থতার বৃত্ত। কিন্তু পারেনি, উল্টো উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সের ধরাশায়ী হয়েছে তারা। পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা দল হেরে গেছে বড় ব্যবধানে।
নিজেদের মাঠে শনিবার ৩-০ গোলে জিতেছে উলভস। লিভারপুলের বিপক্ষে লিগে আগের ১১ ম্যাচে হারের পর জয়ের স্বাদ পেয়েছে তারা।
শুরুর ১২ মিনিটে দুই গোল হজম করে দিশেহারা লিভারপুল ঘুরে দাঁড়ানোর পথই খুঁজে পায়নি। দ্বিতীয়ার্ধে হজম করেছে আরও একটি গোল। তার আগেই ছিটকে যায় ম্যাচ থেকে। দারুণ জয়ে উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন উলভসের ফুটবলাররা।
শুরু থেকে একের পর এক আক্রমণে লিভারপুলের রক্ষণ কাঁপাতে থাকে উলভস। দলটির সমর্থকরা আনন্দে মেতে ওঠার উপলক্ষ পেয়ে যায় পঞ্চম মিনিটে। আত্মঘাতী গোল করে লিভারপুল। বাইলাইনের কাছাকাছি গিয়ে হাং হি-চান শট নেওয়ার পরিস্থিতি না দেখে তিনি বক্সে বাড়ান বল, জোয়েল মাতিপের পায়ে লেগে বল পোস্ট ছুঁয়ে গোললাইন পেরিয়ে যায়। আলিসনের প্রাণপণ চেষ্টা যায় বিফলে।
দ্বাদশ মিনিটে আবারও গোল হজম করে বসে লিগে ধুঁকতে থাকা লিভারপুল। ইংলিশ ডিফেন্ডার ক্রেইগ ডসনের পায়ের জোরাল শটে বল খুঁজে নেয় জাল। উলভসের হয়ে অভিষেকেই গোল পেয়ে যান তিনি। ২-০ গোলের ব্যবধান নিয়ে বিরতিতে যায় উলভস।
বিরতির পরও চলে আক্রমণ আর পালটা আক্রমণ। ৭১তম মিনিটে মাঝমাঠে জো গোমেজ ও স্তেফান বাইচেতিস আটকাতে পারেননি জোয়াও মৌতিনিয়োকে। এই পর্তুগিজ মিডফিল্ডারের পাস ধরে বক্সে আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান আদামা ত্রাওরো। নিখুঁত টোকায় বাকি কাজ সারেন রুবেন নেভেস। ম্যাচের ভাগ্যও লেখা হয়ে যায় অনেকটাই।
এই হারে লিগ টেবিলে সেরা চারে থাকার পথটা আরও কঠিন হয়ে গেল লিভারপুলের। ২০ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে দশম স্থানে আছে ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। তাদের চেয়ে ১০ পয়েন্ট বেশি নিয়ে চার নম্বরে নিউক্যাসল ইউনাইটেড। ২১ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে ১৫তম স্থানে উঠে এসেছে উলভস।
ছবি মুক্তির ১০ দিন পার। এখনও বক্স অফিসে 'পাঠান' রাজ। শুধু দেশের মাটিতেই নয়, বিদেশেও অব্যাহত 'পাঠান' ঝড়। বিশ্বজুড়ে ৭০০ কোটির বেশি ব্যবসা ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে শাহরুখ খানের এই ছবি। এমনকি, ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানেও 'পাঠান' জ্বরে ভুগছেন আমজনতা। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সে দেশে প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হলো 'পাঠান'। খালি রইল না প্রেক্ষাগৃহের একটি আসনও, হাউসফুল সেই শো।
অন্য ভারতীয় ছবির মতোই পাকিস্তানে মুক্তির ছাড়পত্র পায়নি সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত ছবি 'পাঠান'। তবে সে দেশের সিন্ধ সেন্সর বোর্ডের সেই নিষেধাজ্ঞাকে একপ্রকার বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শন করল শাহরুখের ছবি। কানায় কানায় ভর্তি প্রেক্ষাগৃহ দেখল রুপালি পর্দায় 'বাদশাহ ম্যাজিক'।
পাকিস্তানি মুদ্রায় ৯০০ টাকার টিকিটেও হাউসফুল 'পাঠান'-এর শো। নিষেধাজ্ঞা থাকায় বেআইনিভাবেই জোগাড় করে দেখানো হলো 'ওয়াইআরএফ স্পাই ইউনিভার্স'-এর এই ছবি।
পাকিস্তানের 'ফায়ারওয়ার্ক ইভেন্ট' নামক এক সংস্থা আয়োজন করে 'পাঠান' ছবির প্রদর্শনের। ছবির টিকিটমূল্য রাখা হয় পাকিস্তানি মুদ্রায় ৯০০ টাকা। তাতেই ছবির টিকিট পাওয়ার জন্য কাউন্টারের বাইরে লম্বা লাইন পড়ে সিনেপ্রেমীদের। অল্প সময়ের মধ্যেই শো হাউসফুল ঘোষণা করে দেওয়া হয়। তবে পাকিস্তানি সেন্সর বোর্ডের কানে এ খবর যেতেই নড়েচড়ে বসে তারা। 'ফায়ারওয়ার্ক ইভেন্ট'কে অবিলম্বে 'পাঠান'-এর সব প্রদর্শন বন্ধের নির্দেশ দিয়ে বিবৃতি জারি করে সিন্ধ সেন্সর বোর্ড। কেউ যদি এর পরেও বেআইনিভাবে 'পাঠান' প্রদর্শন করে, তাহলে অপরাধের শাস্তিস্বরূপ তার ১ লাখ টাকা জরিমানা থেকে ৩ বছরের জেল পর্যন্ত হতে পারে, হুঁশিয়ারি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
সাভারের আশুলিয়ায় মহাসড়কের পাশের একটি ডোবা থেকে মো. ইমাম হোসেন (৪৬) নামে এক ব্যক্তির ভাসমান লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের পার্শ্ববর্তী ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পশ্চিম পাশের ডোবা থেকে নিহতের ক্ষতবিক্ষত মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত ইমাম হোসেন জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার ভালুকগড়ি গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে আশুলিয়ার জিরাবো পুকুরপাড় এলাকার ভাড়া বাসায় থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
থানা পুলিশ জানায়, স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে সন্ধ্যায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী একটি ডোবা থেকে লুঙ্গি এবং জ্যাকেট পরিহিত অজ্ঞাত এক ব্যক্তির ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পিবিআইকে খবর দেওয়া হলে তারা এসে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে।
নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল-মামুন কবির বলেন, ইমাম হোসেন বৃহস্পতিবার অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। মরদেহটি উদ্ধারের খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা থানায় এসে লাশ শনাক্ত করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে গেছে এবং নিহতের মরদেহটি ডোবার মধ্যে ফেলে গেছে।
মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আশুলিয়া থানায় মামলা দায়েরের পাশাপাশি হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এবং গায়েব হওয়া অটোরিকশাটি উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
শ্রম পরিদর্শক পদে যোগ দেওয়ার ৩৪ বছর পর পদোন্নতি পেলেন মাহমুদুল হক। স্বপ্ন দেখতেন পদোন্নতির সিঁড়ি বেয়ে একসময় প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদে যাবেন। সেই স্বপ্ন আট বছরেই লুটিয়ে পড়ল জ্যেষ্ঠতার তালিকায়।
১৯৮৮ সালে যোগ দেওয়ায় ’৯৫ সালেই পদোন্নতি পাওয়ার কথা ছিল মাহমুদুল হকের। কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর প্রতিষ্ঠানপ্রধানের অদূরদর্শিতা সে স্বপ্ন শুরুতেই বাধা পেল। এন্ট্রি পোস্টে যোগ দেওয়ার পর তার মতো অন্য কর্মচারীরা যখন পদোন্নতির স্বপ্নে বিভোর, তখন তাতে গা-ই করলেন না সেই সময়ের প্রতিষ্ঠানপ্রধান।
মাহমুদুল অপেক্ষায় রইলেন পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্য। সেই পরিবর্তন আসতে আসতে চাকরিতে কেটে গেল আঠারো বছর। আঠারোতে মানুষ প্রাপ্তবয়স্ক হয়। তিনিও ভাবলেন আঠারোতে তিনি না হয় ‘জব ম্যাচিউরিটি’তে পৌঁছালেন। চাকরির আঠারো বছরে পদোন্নতি পেলেও মন্দ হয় না।
কিন্তু অবাক ব্যাপার, কর্তৃপক্ষ পদোন্নতি দিল, তবে মাহমুদুলকে ছাড়া। পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনে কোথাও তার নাম নেই। হতাশায় মুষড়ে পড়লেন তিনি। জুনিয়র কর্মকর্তারদের নাম আছে, অথচ তার নাম নেই। প্রতিষ্ঠানের নীতি-নির্ধারকদের দরজায় দরজায় ঘুরলেন ন্যায়বিচারের আশায়। কিন্তু তারা পাত্তাই দিলেন না বিষয়টি।
তারা আমলে না নিলেও মাহমুদুলের স্বপ্ন তো সেখানেই থেমে যাওয়ার নয়। সেই স্বপ্ন পুঁজি করে তিনি গেলেন আদালতে। সেই ভিন্ন জগৎটাও কম চ্যালেঞ্জিং ছিল না। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল তার পক্ষে রায় দিল। মাহমুদুল আনন্দে আত্মহারা হলেন। কিন্তু সেই আনন্দ বেশি দিন স্থায়ী হলো না। সরকার আপিল করল প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে। মামলার ফল উল্টে গেল। হতাশায় ভেঙে না পড়ে তিনি গেলেন উচ্চ আদালতে। আপিল বিভাগে সিভিল আপিল মামলা করলে প্রশাসনিক আপিল আদালতের রায় বাতিল হয়। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল থাকে।
জলে নেমে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করার মতো মাহমুদুল হকও যেন সরকারের সঙ্গে লড়াই করতে নামলেন। আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন করল সরকারপক্ষ। একপর্যায়ে সরকার বুঝতে পারল কোনোভাবেই তারা এ মামলায় জিততে পারবে না। সরকারপক্ষে রিভিউ পিটিশন প্রত্যাহার করা হলো। আদালত সরকারের পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনকে আইনের কর্তৃত্ববহির্ভূত বলে ঘোষণা করল। জুনিয়র কর্মকর্তাকে যেদিন থেকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে এবং যতবার পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, একইভাবে মাহমুদুল হককে পদোন্নতি দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। বকেয়া বেতন-ভাতাসহ সব পাওনা কড়ায়-গ-ায় পরিশোধের নির্দেশনা আসে।
আদালতের এই নির্দেশনা দেওয়া হয় ২০১৮ সালে। এরপর আদেশ বাস্তবায়ন করতে সরকারের লেগে যায় প্রায় চার বছর। ২০২২ সালের ১১ মে তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ৩৪ বছর পর পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন পেয়ে স্তম্ভিত হয়ে গেলেন মাহমুদুল হক। আবারও তাকে ঠকিয়েছে সরকার। জুনিয়র কর্মকর্তা যুগ্ম মহাপরিদর্শক হলেও তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয় তার দুই ধাপ নিচের সহকারী মহাপরিদর্শক পদে। উপমহাপরিদর্শক ও যুগ্ম মহাপরিদর্শক আরও ওপরের পদ। আদালতের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
কখনোই প্রজ্ঞাপন মাহমুদুল হকের জন্য ভালো বার্তা বয়ে আনেনি। পুরো চাকরিজীবন আদালতের বারান্দায় ঘুরে তিনি পৌঁছেছেন অবসরের প্রান্তসীমায়। আর তিন মাস পরে তিনি অবসরে যাবেন। যৌবন ও মধ্য বয়সের দিনগুলোতে আদালতে ঘুরে বেড়ানোর শক্তি ও সাহস থাকলেও মাহমুদুল হক এখন সেই সাহস দেখাতে দ্বিতীয়বার চিন্তা করছেন। পারবেন তো শেষ সময়ে এসে সরকারের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপসহীন মনোভাব দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে?
মাহমুদুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন, তিনি আদালতের কাছেই জানতে চাইবেন, আদালতের বিচার না মানার শাস্তি কী।
পুরো ঘটনা শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা শুনিয়ে জানতে চাইলেন, কতজনের পক্ষে মাহমুদুল হকের মতো লড়াকু মনোভাব দেখানো সম্ভব?
সীমাহীন আনন্দ নিয়ে মানুষ সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়। এরপরই তার মধ্যে যে স্বপ্নটি দানা বাঁধে তা হচ্ছে পদোন্নতি। কার কীভাবে পদোন্নতি হবে তা আইনকানুন, নিয়ম-নীতি দিয়ে পোক্ত করা। পুরো বিষয়টি কাচের মতো স্বচ্ছ। এরপরও পদোন্নতি হয় না। দিন, মাস, বছর পার হয়ে যায়, কাক্সিক্ষত পদোন্নতির দেখা মেলে না।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) ২৬টি ক্যাডারের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি ক্যাডারে নিয়মিত পদোন্নতি হয়। বাকি ক্যাডারে হতাশা। তার চেয়েও কঠিন পরিস্থিতি নন-ক্যাডারে। ক্যাডার কর্মকর্তারা নিজের পদোন্নতির ষোলো আনা বুঝে নিয়ে ঠেকিয়ে দেন নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি। সংখ্যায় বেশি হওয়ায় নন-ক্যাডাররা একজন আরেকজনকে নানা ইস্যুতে আটকাতে গিয়ে পুরো প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করেন। সরকারের মোট কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রায় তিন-চতুর্থাংশ কর্মচারী। সেই হিসেবে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনবলের পদোন্নতি হয় না। পে-কমিশন হলেই কর্মচারীদের পদোন্নতির জন্য করুণা উথলে ওঠে। এমনকি ব্লকপোস্টে যারা আছেন, তাদের জন্যও পদোন্নতির বিকল্প সুবিধা বাতলে দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কর্মচারীদের পদোন্নতি উপেক্ষিতই থাকে।
যখন সময়মতো পদোন্নতি হয় না, তখন নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। এসব সমস্যা সংশ্লিষ্ট দপ্তর-অধিদপ্তরের চৌহদ্দি পেরিয়ে আমজনতাকেও প্রভাবিত করে। নন-ক্যাডার কর্মকর্তা আর সঙ্গে কর্মচারীরা যখন বুঝতে পারেন পদোন্নতির আশা তাদের নেই, তখন তারা দুহাতে টাকা কামানোর ধান্দায় মেতে ওঠেন। এতে করে ঘুষের সংস্কৃতি সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। অকার্যকর পথে হাঁটে রাষ্ট্র। সাধারণ মানুষ টাকা ছাড়া তাদের কাছ থেকে কোনো সেবা পায় না, ব্যবসায়ীরা নতুন কোনো আইডিয়া নিয়ে ব্যবসায় আসেন না, ব্যবসাবান্ধব পরিস্থিতি না থাকায় মুখ ফিরিয়ে নেন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। প্রধানমন্ত্রীর বারবার আহ্বানেও বিনিয়োগকারীরা সাড়া দেন না। সাধারণ মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে সেবা দেওয়ার বাণীতেও উদ্বুদ্ধ হন না সংশ্লিষ্টরা।
এই পরিস্থিতিতে অনিয়ম আটকে রাখার সব কৌশলই ব্যর্থ হচ্ছে। যথাযথ তদারকি না থাকায় বিভাগীয় ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে গেছে। ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৩৫০টি অডিট আপত্তি ঝুলে থাকায় অডিট প্রতিষ্ঠানগুলোও আগ্রহ হারিয়ে নিজেরাই জড়িয়ে পড়ছে অনিয়মে। দন্তহীন বাঘে পরিণত হওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের জানান দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান নিজেই।
নন-ক্যাডার কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদোন্নতির বড় একটা অংশ আটকে রাখে মন্ত্রণালয়গুলো। এই আটকে রাখার কারণ হচ্ছে মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকদের স্বার্থ। বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তরে নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিলে নিয়ম অনুযায়ী পদোন্নতিপ্রাপ্তদের ওপরের পদে বসাতে হবে। এতে মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকদের এককালীন লাভ; অর্থাৎ টাকার বিনিময়ে একবার পদোন্নতি দেওয়া যাবে। কিন্তু পদোন্নতি না দিয়ে সংশ্লিষ্টদের চলতি দায়িত্ব দিলে বছরজুড়ে টাকা আয় করতে পারেন নীতিনির্ধারকরা। দপ্তর, অধিদপ্তরে বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়। চলতি দায়িত্বপ্রাপ্তদের আয় অনুসারে নীতিনির্ধারকদের মাসোহারা দিতে হয়। নন-ক্যাডারদের পদোন্নতি দেওয়া হলে মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকদের নিয়মিত আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে আইন বা বিধি-বিধানের ফাঁকফোকর গলিয়ে নন-ক্যাডার এবং কর্মচারীদের পদোন্নতি আটকে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়।
সরকারি কর্মচারী সংহতি পরিষদের সভাপতি নিজামুল ইসলাম ভূঁইয়া মিলন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সচিবালয় এবং সারা দেশের সরকারি কর্মচারীদের পদোন্নতির মধ্যে একটু পার্থক্য আছে। নন-ক্যাডারের কিছু বিষয় ছাড়া সচিবালয়ের কর্মচারীরা সময়মতো পদোন্নতি পায়। কিন্তু সচিবালয়ের বাইরে পদোন্নতি হয় না বললেই চলে। সচিবালয়ে মাত্র ১০ হাজার কর্মচারী আছেন। সচিবালয়ের বাইরে আছেন ১০ লাখের বেশি। এসব কর্মচারীর পদোন্নতি নিয়ে বহু বছর ধরে চেষ্টা করছি। কিন্তু কোনো ফল পাইনি। সর্বশেষ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সমস্যা নিয়ে কাজ করার জন্য একটি কমিটি করে দিয়েছে। কমিটি কিছু সুপারিশ করেছে। ব্যস, ওই পর্যন্তই। এরপর এর কোনো অগ্রগতি নেই। যেখানে সরকারপ্রধান বলেন, চাকরিজীবনে সবাই যেন কমপক্ষে একটি পদোন্নতি পায়। সেখানে বহু কর্মচারী কোনো পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে যাচ্ছেন। সরকারপ্রধানের নির্দেশনা উপেক্ষা করেন আমলারা। তাদের আগ্রহ কেনা-কাটায়, বিদেশ ভ্রমণে, নতুন জনবল নিয়োগে। এসব করলে তাদের লাভ। কর্মচারী পদোন্নতি দিতে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। এর নিশ্চয়ই একটা শেষ আছে। বৈষম্যের পরিণতি কী হয়, তা অনেক দাম দিয়ে বিডিআর বিদ্রোহে আমরা দেখেছি।’
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নন-ক্যাডারদের পদোন্নতি ঝুলছে বছরের পর বছর। এই অধিদপ্তরের কয়েক শ কর্মকর্তা পাঁচ বছর আগেই পদোন্নতির যোগ্য হয়েছেন। নানা কায়দা-কানুন করে তাদের পদোন্নতি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক সংশ্লিষ্টদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করে তাদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া এগিয়ে নিলেও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় নতুন করে জ্যেষ্ঠতার তালিকা করার নামে সময়ক্ষেপণ করছে। জ্যেষ্ঠতার তালিকা করার পর এখন তাদের পারিবারিক সদস্যদের তথ্য যাচাই-বাছাই করার জন্য একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই সংস্থা নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদেরও তথ্য তালাশ করছে। তাদের আত্মীয়দের মধ্যে কে কোন দলের সমর্থক তার তথ্য নিচ্ছেন সংস্থার কর্মকর্তারা।
গত মাসে শেষ হওয়া জেলা প্রশাসক সম্মেলনে দায়িত্ব পালন করছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের সুরম্য ভবনে দায়িত্ব পালন করলেও ওই নন-ক্যাডার কর্মকর্তার মনের অবস্থাটা মনোহর ছিল না। কেমন আছেন জানতে চাইলে ওই নন-ক্যাডার কর্মকর্তা বলেন, ‘ভালো নেই। চাকরি করছি, পদোন্নতি নেই। ২০১৫ সালের আগে পদোন্নতি না পেলেও টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড ছিল। তাও তুলে দেওয়া হয়েছে। তুলে দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল সময়মতো পদোন্নতি হবে, ব্লকপোস্টধারীদের দেওয়া হবে বিশেষ আর্থিক সুবিধা। এসবের কোনোটাই হয়নি।’
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে একটি প্রশাসনিক আদেশ খুবই পরিচিত। সেই প্রশাসনিক আদেশ ১৬/২০১৮ অনুযায়ী ৭০ ভাগ কর্মকর্তা সরাসরি নিয়োগ হবে। আর ৩০ ভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হয়। ৭০ ভাগ কর্মকর্তা সরাসরি নিয়োগের ফলে বিমানে বর্তমানে প্রয়োজনের তুলনায় কর্মকর্তা বেশি। নীতিনির্ধারকদের নতুন জনবল নিয়োগে আগ্রহ বেশি। পুরনোদের পদোন্নতি দিয়ে ওপরের পদ পূরণের চেয়ে তারা নতুন নিয়োগে যান। ফলে কারও চাকরিজীবনে একবারও পদোন্নতি হয় না। নামমাত্র যে পদোন্নতি হয় তা অনিয়মে ভরপুর।
নন-ক্যাডার ছাড়াও ১৩তম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেড পর্যন্ত পদোন্নতি হয় না বললেই চলে। প্রতিটি দপ্তরে এসব গ্রেডের পদোন্নতি আটকে আছে। অথচ এসব গ্রেডেই বেশি লোক চাকরি করছেন। সরকারের মোট জনবল প্রায় ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৯২৭ জন। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ২৩ শতাংশ পদের মধ্যেও নন-ক্যাডার রয়েছেন। এ ছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৭৭ শতাংশ পদই ১৩তম থেকে তার পরের গ্রেডের। এতে করে সহজেই বোঝা যায় সরকারের জনবলের বড় অংশই পদোন্নতির চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে। সরকারের জনবলের এই বিশাল অংশ যখন পদোন্নতি নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভোগেন, তখন তারা নানা অনিয়মে ঝুঁকে পড়েন।
বেশির ভাগ দপ্তর, অধিদপ্তর পরিচালনা করেন বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তারা। তারা তাদের প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় থেকে প্রেষণে ক্যাডার কর্মকর্তাদের দপ্তর, অধিদপ্তরে পাঠান। প্রেষণে গিয়ে অনেক কর্মকর্তা শুধু রুটিন কাজটুকুই করতে চান। শূন্যপদে জনবল নিয়োগ বা পদোন্নতি রুটিন কাজ না হওয়ায় তা উপেক্ষিত থাকে। তা ছাড়া পদোন্নতি দিতে গিয়ে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়; বিশেষ করে মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রী বা সচিব তাদের পছন্দের লোককে পদোন্নতি দেওয়ার জন্য সংস্থার প্রধানকে চাপ দেন। এই চাপ উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ না থাকায় অযোগ্য লোককে পদোন্নতি দিতে হয় সংস্থার প্রধানকে। এই জটিলতা থেকে দূরে থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের পদোন্নতি দেওয়া থেকেও দূরে থাকেন সংস্থার প্রধানরা।
নন-ক্যাডার কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের পদোন্নতি না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের ১৪ গ্রেডের একজন কর্মচারী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বাইরের লোকের ইচ্ছাটাই জাগে না আমাদের পদোন্নতি দিতে। আমাদের দপ্তরপ্রধান মহাপরিচালক প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। অতিরিক্ত মহাপরিচালকও অনেক সময় প্রশাসন ক্যাডার থেকে প্রেষণে আসেন। তাদের কেন ইচ্ছা জাগবে আমাদের পদোন্নতি নিয়ে। যদি এসব পদে ফুড ক্যাডারের কর্মকর্তা থাকতেন, তাহলে তারা খাদ্য বিভাগের সমস্যা বুঝতেন। তা ছাড়া নিয়োগ বিধি সংশোধনের নামে আমরা দীর্ঘদিন একই পদে আটকে আছি।’
গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে এক আবেদনে জানান, ‘বর্তমানে সচিবালয়ে প্রায় দুই হাজারের বেশি প্রশাসনিক ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা কর্মরত। এর বিপরীতে ক্যাডারবহির্ভূত সংরক্ষিত পদের সংখ্যা ২৬৭টি, যা খুবই নগণ্য। ফলে একই পদে ২০-২২ বছরের বেশি সময় কর্মরত থাকার পরও অনেকে পদোন্নতি পাচ্ছেন না। পদোন্নতি না পাওয়ায় সৃষ্ট হতাশার ফলে কর্মস্পৃহা নষ্ট হচ্ছে।’
সরকার এ সমস্যা থেকে কীভাবে বের হতে পারে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এসব সমস্যা সমাধানে সরকার সব সময়ই কাজ করে। কিন্তু এ চেষ্টা জটিলতার তুলনায় কম। এ বিষয়ে আরও এফোর্ট দিতে হবে।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে বেসরকারিভাবে ১১২ কেন্দ্রের ফলাফলে ৯৫১ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন বহুল আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। একতারা প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ১৯ হাজার ৪৮৬ ভোট। এ আসনে জয় পেয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ (ইনু) সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম তানসেন। মশাল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ২০ হাজার ৪৩৭ ভোট।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বগুড়ার দুইটিসহ মোট ৬ আসনে উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির এমপিরা পদত্যাগের ঘোষণা দিলে এ আসনগুলো শূন্য হয়।
তখন, বগুড়া-৬ (সদর) এবং বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেন হিরো আলম। নির্বাচন কমিশন একদফা তার প্রার্থিতা বাতিল করলেও পরে আদালতে গিয়ে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি।
নাগরিকত্ব বিষয়ক জটিলতার জেরে সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে দেশের উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ ও পার্লামেন্টে আসন হারিয়েছেন নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রী রবি লামিছানে। শুক্রবারের রায়ে আদালত জানিয়েছে, এই মুহূর্তে নেপালের নাগরিকত্বও নেই তার।
সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র বিমল পৌদেল বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায় অনুযায়ী, ২০২২ সালের জাতীয় নির্বাচনে নাগরিকত্ব বিষয়ক আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া গেছে রবি লামিছানের বিরুদ্ধে। এ কারণে এখন থেকে আর পার্লামেন্টের সদস্য নন তিনি।’
নেপালের এক সময়ের জনপ্রিয় টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব রবি লামিছানে দেশটির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল ইনডিপেনডেন্ট পার্টির শীর্ষ নেতা। ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর নেপালের পার্লামেন্ট প্রতিনিধিসভার নির্বাচনে তার দল ২০টি আসনে জয়ী হয়েছে। তারপর গত ডিসেম্বরে ক্ষমতাসীন জোট সরকারে নিজের দলসহ যোগ দিয়ে নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন লামিছান।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিত্ব ছিল লামিছানের; কিন্তু নেপালের সংবিধানে দ্বৈত নাগরিকত্ব স্বীকৃত না হওয়ায় ২০১৮ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব ত্যাগ করে নির্বাচন করেছিলেন তিনি। শুক্রবারের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, নিয়ম অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর নেপালের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার কথা ছিল লামিছানের; কিন্তু তা করেননি তিনি। ফলে এই মুহূর্তে নেপালের নাগরিকও নন লামিছান। এদিকে, শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর লামিছানের প্রতিক্রিয়া জানতে তার মন্ত্রণালয়ের দপ্তরে গিয়েছিলেন সাংবাদিকরা; কিন্তু লামিছানে তাদের বলেন, ‘যেহেতু এই মুহূর্তে আমি কোনো দেশেরই নাগরিক নই, তাই আদালতের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো মন্তব্য করা আমার পক্ষে উচিত নয়, সম্ভবও নয়।’
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন হিরো আলম বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘সদরের কেন্দ্র সব দখল হয়্যা গ্যাছে। ডিসি-এসপিক কয়্যাও কোনো কাম হচ্চে না। সদরের আশা সব শ্যাষ। কাহালু-নন্দীগামের অনেক কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে দেকছি। ভোট খুব সুষ্ঠু হচ্চে। মাঠের অবস্থা ভালো। কাহালু-নন্দীগ্রামে নিশ্চিত এমপি হচ্চি।’
এর আগে, সকালে সদর উপজেলার এরুলিয়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে যান তিনি। ভোট দেওয়ার পর হিরো আলম বলেন, ‘বগুড়া-৬ আসনে আগে থেকেই গোলযোগের আশঙ্কা করেছিলাম, সেটাই সত্যি হয়েছে। নির্বাচনি এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তবে বগুড়া-৪ আসনে ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে। এভাবে সুষ্ঠু ভোট হলে এই আসনে আমিই বিজয়ী হবো।’
এদিকে বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে নৌকা প্রার্থীর এজেন্ট বাদে অন্য এজেন্টদের ভোটকক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ সকালে হিরো আলমসহ তিনজন প্রার্থী এ অভিযোগ করেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করা হয়।