শিবপুরে নৌকার এজেন্ট খুন এমপি সিরাজকে দুষছেন স্বজনরা
সুমন বর্মণ, নরসিংদী | ১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০
নরসিংদীর শিবপুরে নৌকা প্রতীকের এজেন্ট মিলন মিয়াকে (৪০) হত্যার জন্য আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লাকে দুষছেন নিহতের স্বজনরা। এ ঘটনায় এমপি সিরাজ ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানিয়েছেন মিলনের ছোট ভাই সাত্তার মিয়া। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এমপি সিরাজ মোল্লা বলেছেন, সংঘর্ষের সময় তিনি ওই ভোটকেন্দ্রে ছিলেন না, রাজনৈতিক কারণে পরিকল্পিতভাবে তাকে মামলায় জড়ানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ভোটের দিন রোববার বেলা ১২টার দিকে শিবপুর উপজেলার কুন্দারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশে নৌকা মার্কার এজেন্ট মিলনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। তিনি কুন্দারপাড়া বংপুর গ্রামের হযরত আলীর ছেলে। নরসিংদী সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে রাতেই মরদেহ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় কুন্দারপাড়া বাসস্ট্যান্ডের পাশে নিহতের জানাজায় নরসিংদী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত এমপি জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন, উপজেলা চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম মৃধাসহ অংশ নেন দলের নেতাকর্মীরা। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
পেশায় কাঠব্যবসায়ী মিলন সোহেল মিয়া (১৫) ও সাকিব মিয়া (৭) নামে দুই ছেলে ও মিতা আক্তার (১২) নামে এক মেয়ের জনক। তার স্ত্রী পারভিন বেগম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার স্বামী সারা জীবন নৌকার জন্য জানপ্রাণ ছিল। এ কারণেই উনাকে নৌকার এজেন্ট করা হয়। কিন্তু তা-ই কাল হলো। দুপুরে খবর পাই, আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি কখনো কারো ক্ষতি করেননি, যারা তাকে হত্যা করেছে আমি তাদের বিচার চাই।’
মিলনের ছোট ভাই সাত্তার মিয়া বলেন, ‘এমপি সিরাজ মোল্লা নিজে সিংহ প্রতীকের ব্যালটে সিল মারছিলেন, তা দেখে নৌকার এজেন্ট হিসেবে আমার ভাই বাধা দেয়। তখন এমপির লোকজন আমার ভাইকে ধাওয়া করে হত্যা করেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এমপি সিরাজের নির্দেশেই আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে; ওই সময় উনার ভাইরাও সাথে ছিল। তাই এমপি সিরাজসহ তার ভাইদের বিরুদ্ধে আমি বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এমপি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মিলন আমাকে বাধা দিবে তো দূরের কথা, আমি তাকে চিনিই না। আমি কেন্দ্র থেকে চলে আসার পর এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রাজনৈতিক কারণে পরিকল্পিতভাবে আমার ও ভাইদের মামলায় জড়ানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ও অডিও রেকর্ড আছে বলে শুনেছি। এগুলোই প্রমাণ করবে মিলনকে কে, কোন উদ্দেশ্যে হত্যা করেছে।’
শিবপুর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এখনো পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়নি। নিহত মিলন ভালো মানুষ ছিলেন। তার সাথে কারো শত্রুতার তথ্য আমরা পাইনি।’ এ ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি বলেও জানান তিনি।
শেয়ার করুন
সুমন বর্মণ, নরসিংদী | ১ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০

নরসিংদীর শিবপুরে নৌকা প্রতীকের এজেন্ট মিলন মিয়াকে (৪০) হত্যার জন্য আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লাকে দুষছেন নিহতের স্বজনরা। এ ঘটনায় এমপি সিরাজ ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানিয়েছেন মিলনের ছোট ভাই সাত্তার মিয়া। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এমপি সিরাজ মোল্লা বলেছেন, সংঘর্ষের সময় তিনি ওই ভোটকেন্দ্রে ছিলেন না, রাজনৈতিক কারণে পরিকল্পিতভাবে তাকে মামলায় জড়ানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ভোটের দিন রোববার বেলা ১২টার দিকে শিবপুর উপজেলার কুন্দারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশে নৌকা মার্কার এজেন্ট মিলনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। তিনি কুন্দারপাড়া বংপুর গ্রামের হযরত আলীর ছেলে। নরসিংদী সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে রাতেই মরদেহ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় কুন্দারপাড়া বাসস্ট্যান্ডের পাশে নিহতের জানাজায় নরসিংদী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত এমপি জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন, উপজেলা চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম মৃধাসহ অংশ নেন দলের নেতাকর্মীরা। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
পেশায় কাঠব্যবসায়ী মিলন সোহেল মিয়া (১৫) ও সাকিব মিয়া (৭) নামে দুই ছেলে ও মিতা আক্তার (১২) নামে এক মেয়ের জনক। তার স্ত্রী পারভিন বেগম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার স্বামী সারা জীবন নৌকার জন্য জানপ্রাণ ছিল। এ কারণেই উনাকে নৌকার এজেন্ট করা হয়। কিন্তু তা-ই কাল হলো। দুপুরে খবর পাই, আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি কখনো কারো ক্ষতি করেননি, যারা তাকে হত্যা করেছে আমি তাদের বিচার চাই।’
মিলনের ছোট ভাই সাত্তার মিয়া বলেন, ‘এমপি সিরাজ মোল্লা নিজে সিংহ প্রতীকের ব্যালটে সিল মারছিলেন, তা দেখে নৌকার এজেন্ট হিসেবে আমার ভাই বাধা দেয়। তখন এমপির লোকজন আমার ভাইকে ধাওয়া করে হত্যা করেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এমপি সিরাজের নির্দেশেই আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে; ওই সময় উনার ভাইরাও সাথে ছিল। তাই এমপি সিরাজসহ তার ভাইদের বিরুদ্ধে আমি বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এমপি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মিলন আমাকে বাধা দিবে তো দূরের কথা, আমি তাকে চিনিই না। আমি কেন্দ্র থেকে চলে আসার পর এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রাজনৈতিক কারণে পরিকল্পিতভাবে আমার ও ভাইদের মামলায় জড়ানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ও অডিও রেকর্ড আছে বলে শুনেছি। এগুলোই প্রমাণ করবে মিলনকে কে, কোন উদ্দেশ্যে হত্যা করেছে।’
শিবপুর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এখনো পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়নি। নিহত মিলন ভালো মানুষ ছিলেন। তার সাথে কারো শত্রুতার তথ্য আমরা পাইনি।’ এ ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি বলেও জানান তিনি।