আফতাবনগর হাট নিয়ে দুই সিটির টানাটানি
তামজিদ হাসান তুরাগ | ২২ জুন, ২০১৯ ০০:০০
ঈদুল আজহার বাকি এখনো দেড় মাসের বেশি। এরই মধ্যে রাজধানীর আফতাবনগর হাট নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া শুরু হয়েছে দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে। দুই করপোরেশনের মধ্যে পড়ায় এবারও কে পাবে এই হাট পরিচালনার দায়িত্ব, তা নিয়ে দুই করপোরেশনের মধ্যে চিঠি চালাচালি চলছে। গতবার একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে সংঘর্ষ এড়াতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এই হাটের দায়িত্ব নেয়। কিন্তু এবার ইতিমধ্যেই উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটি করপোরেশনই এই হাটের ইজারার জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে।
করপোরেশনের কর্মকর্তারা দেশ রূপান্তরকে জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ১২টি ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ১৪টি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাটের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে। ডিএনসিসির ১২টির মধ্যে ২টি হাট নতুন ও ১০টি পুরনো। দক্ষিণের অস্থায়ী কোরবানি পশুর হাট ইজারার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন ২টি ও ১০টি পুরনো হাট। এর মধ্যে আফতাবনগর হাটও রয়েছে।
আফতাবনগর হাট প্রসঙ্গে দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা হাটের এলাকা তাদের সীমানায় পড়েছে বলে দাবি করেছেন। তারা জানান, মূলত জায়গাটি দুই সিটি করপোরেশনের সীমান্ত এলাকায় পড়েছে। সামনের জায়গা ডিএনসিসির এবং পেছনের জায়গা ডিএসসিসির। বিভক্তির পর থেকে ওই স্থানে ডিএনসিসি হাট ইজারা দিলেও গত ঈদে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হতে পারেÑএমন আশঙ্কা থেকে হাট ইজারা দেয়নি সংস্থাটি। তবে ঈদের কয়েক দিন আগে তড়িঘড়ি করে ডিএসসিসি ওই স্থানে হাট বসানোর অনুমতি দেয়। আর এবারের প্রেক্ষাপট পুরোপুরি আলাদা। কারণ এবারের হাট ইজারা নিতে হবে দুই সিটি থেকেই।
এ প্রসঙ্গে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সীমানা অনুযায়ী যেখানে আফতাবনগর হাট বসানো হয়, তার ৪ ভাগের ৩ ভাগ ডিএসসিসির আওতাভুক্ত। এ জন্য আমরা এবার ডিএনসিসিকে ওই স্থানে হাট ইজারা না দেওয়ার অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা শোনেনি। তারাও দরপত্র আহ্বান করেছে। আমরাও পত্রিকার মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করেছি। প্রয়োজনে দুই সীমানা অনুযায়ী পৃথকভাবে হাট বসানো হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে তারা তাদের দায়িত্ব পালন করলে সুষ্ঠুভাবে হাট চলবে।’
তবে ডিএসসিসির এই দাবি নাকচ করে দিয়ে ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, আফতাবনগর হাট বহু বছর ধরে ডিএনসিসি ইজারা দিচ্ছে। গত বছর বিশেষ কারণে ডিএনসিসি বরাদ্দ দেয়নি। তবে এবার দরপত্র আহ্বান করেছি। আফতাবনগরে ডিএসসিসির হাট ইজারা দেওয়া নিয়ে আমরা তাদের (ডিএসসিসিকে) একটি চিঠিও দিয়েছি।’
এবার রাজধানীতে ২৬টি পশুর হাট বসছে : এর মধ্যে ডিএনসিসির যে ১২টি স্থানে হাট বসবে সেগুলো হলোÑউত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর ব্রিজের পশ্চিম অংশে এবং ২ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমে গোলচত্বর পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশের ফাঁকা জায়গা, মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী সড়কসংলগ্ন (বছিলা) পুলিশ লাইনসের খালি জায়গা, মিরপুর সেকশন-৬, ওয়ার্ড-৬-এর (ইস্টার্ন হাউজিং) খালি জায়গা, খিলক্ষেত বনরূপা আবাসিক প্রকল্পের খালি জায়গা, খিলক্ষেত ৩০০ ফুট সড়কসংলগ্ন উভয় পাশের বসুন্ধরা হাউজিংয়ের খালি জায়গা, ভাটারা (সাইদনগর) পশুর হাট, মিরপুর ডিওএইচএসের উত্তর পাশের সেতু প্রপ্রার্টি ও সংলগ্ন খালি জায়গার অস্থায়ী পশুর হাট, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট খেলার মাঠ, উত্তরখান মৈনারটেক শহিদনগর হাউজিংয়ের খালি জায়গা, বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং (আফতাবনগর) ব্লক-ই, আফতাবনগর সেকশন-৩-এর খালি জায়গা, কাওলা-শিয়ালডাঙ্গাসংলগ্ন খালি জায়গা ও উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের উত্তরার সøুইসগেট থেকে কামারপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত ফাঁকা জায়গা।
অন্যদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যেসব স্থানে ১২টি পশুর হাট বসবে সেগুলো হলোÑউত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘের মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ঝিগাতলা-হাজারীবাগ মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, লালবাগের রহমতগঞ্জ খেলার মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, শ্যামপুর বালুর মাঠসহ আশপাশের খালি জায়গা, মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন আশপাশ এলাকার খালি জায়গা, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সামসাবাদ মাঠসংলগ্ন আশপাশ এলাকার খালি জায়গা, লিটিল ফ্রেন্ডস ক্লাবসংলগ্ন গোপীবাগ বালুর মাঠ ও কমলাপুর স্টেডিয়ামসংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা, শনির আখড়া ও দনিয়া মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধূপখোলা মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউয়ারটেক মাঠসংলগ্ন আশপাশ এলাকার খালি জায়গা, আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা এবং দাওকান্দি ইন্দুলিয়া ভাগাপুরনগর (আফতাবনগর ইস্টার্ন হাউজিং মেরাদিয়া মৌজার সেকশন-১ ও ২) লোহারপুলের পূর্ব অংশ এবং খোলা মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা।
শেয়ার করুন
তামজিদ হাসান তুরাগ | ২২ জুন, ২০১৯ ০০:০০

ঈদুল আজহার বাকি এখনো দেড় মাসের বেশি। এরই মধ্যে রাজধানীর আফতাবনগর হাট নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া শুরু হয়েছে দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে। দুই করপোরেশনের মধ্যে পড়ায় এবারও কে পাবে এই হাট পরিচালনার দায়িত্ব, তা নিয়ে দুই করপোরেশনের মধ্যে চিঠি চালাচালি চলছে। গতবার একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে সংঘর্ষ এড়াতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এই হাটের দায়িত্ব নেয়। কিন্তু এবার ইতিমধ্যেই উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটি করপোরেশনই এই হাটের ইজারার জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে।
করপোরেশনের কর্মকর্তারা দেশ রূপান্তরকে জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ১২টি ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ১৪টি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাটের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে। ডিএনসিসির ১২টির মধ্যে ২টি হাট নতুন ও ১০টি পুরনো। দক্ষিণের অস্থায়ী কোরবানি পশুর হাট ইজারার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন ২টি ও ১০টি পুরনো হাট। এর মধ্যে আফতাবনগর হাটও রয়েছে।
আফতাবনগর হাট প্রসঙ্গে দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা হাটের এলাকা তাদের সীমানায় পড়েছে বলে দাবি করেছেন। তারা জানান, মূলত জায়গাটি দুই সিটি করপোরেশনের সীমান্ত এলাকায় পড়েছে। সামনের জায়গা ডিএনসিসির এবং পেছনের জায়গা ডিএসসিসির। বিভক্তির পর থেকে ওই স্থানে ডিএনসিসি হাট ইজারা দিলেও গত ঈদে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হতে পারেÑএমন আশঙ্কা থেকে হাট ইজারা দেয়নি সংস্থাটি। তবে ঈদের কয়েক দিন আগে তড়িঘড়ি করে ডিএসসিসি ওই স্থানে হাট বসানোর অনুমতি দেয়। আর এবারের প্রেক্ষাপট পুরোপুরি আলাদা। কারণ এবারের হাট ইজারা নিতে হবে দুই সিটি থেকেই।
এ প্রসঙ্গে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সীমানা অনুযায়ী যেখানে আফতাবনগর হাট বসানো হয়, তার ৪ ভাগের ৩ ভাগ ডিএসসিসির আওতাভুক্ত। এ জন্য আমরা এবার ডিএনসিসিকে ওই স্থানে হাট ইজারা না দেওয়ার অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা শোনেনি। তারাও দরপত্র আহ্বান করেছে। আমরাও পত্রিকার মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করেছি। প্রয়োজনে দুই সীমানা অনুযায়ী পৃথকভাবে হাট বসানো হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে তারা তাদের দায়িত্ব পালন করলে সুষ্ঠুভাবে হাট চলবে।’
তবে ডিএসসিসির এই দাবি নাকচ করে দিয়ে ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, আফতাবনগর হাট বহু বছর ধরে ডিএনসিসি ইজারা দিচ্ছে। গত বছর বিশেষ কারণে ডিএনসিসি বরাদ্দ দেয়নি। তবে এবার দরপত্র আহ্বান করেছি। আফতাবনগরে ডিএসসিসির হাট ইজারা দেওয়া নিয়ে আমরা তাদের (ডিএসসিসিকে) একটি চিঠিও দিয়েছি।’
এবার রাজধানীতে ২৬টি পশুর হাট বসছে : এর মধ্যে ডিএনসিসির যে ১২টি স্থানে হাট বসবে সেগুলো হলোÑউত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর ব্রিজের পশ্চিম অংশে এবং ২ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমে গোলচত্বর পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশের ফাঁকা জায়গা, মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী সড়কসংলগ্ন (বছিলা) পুলিশ লাইনসের খালি জায়গা, মিরপুর সেকশন-৬, ওয়ার্ড-৬-এর (ইস্টার্ন হাউজিং) খালি জায়গা, খিলক্ষেত বনরূপা আবাসিক প্রকল্পের খালি জায়গা, খিলক্ষেত ৩০০ ফুট সড়কসংলগ্ন উভয় পাশের বসুন্ধরা হাউজিংয়ের খালি জায়গা, ভাটারা (সাইদনগর) পশুর হাট, মিরপুর ডিওএইচএসের উত্তর পাশের সেতু প্রপ্রার্টি ও সংলগ্ন খালি জায়গার অস্থায়ী পশুর হাট, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট খেলার মাঠ, উত্তরখান মৈনারটেক শহিদনগর হাউজিংয়ের খালি জায়গা, বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং (আফতাবনগর) ব্লক-ই, আফতাবনগর সেকশন-৩-এর খালি জায়গা, কাওলা-শিয়ালডাঙ্গাসংলগ্ন খালি জায়গা ও উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের উত্তরার সøুইসগেট থেকে কামারপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত ফাঁকা জায়গা।
অন্যদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যেসব স্থানে ১২টি পশুর হাট বসবে সেগুলো হলোÑউত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘের মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ঝিগাতলা-হাজারীবাগ মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, লালবাগের রহমতগঞ্জ খেলার মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, শ্যামপুর বালুর মাঠসহ আশপাশের খালি জায়গা, মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন আশপাশ এলাকার খালি জায়গা, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সামসাবাদ মাঠসংলগ্ন আশপাশ এলাকার খালি জায়গা, লিটিল ফ্রেন্ডস ক্লাবসংলগ্ন গোপীবাগ বালুর মাঠ ও কমলাপুর স্টেডিয়ামসংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা, শনির আখড়া ও দনিয়া মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধূপখোলা মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউয়ারটেক মাঠসংলগ্ন আশপাশ এলাকার খালি জায়গা, আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা এবং দাওকান্দি ইন্দুলিয়া ভাগাপুরনগর (আফতাবনগর ইস্টার্ন হাউজিং মেরাদিয়া মৌজার সেকশন-১ ও ২) লোহারপুলের পূর্ব অংশ এবং খোলা মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা।