১০ বছরে সীমান্তহত্যা ২৯৪
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০
গত ১০ বছরে সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে ২৯৪ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তরকালে এ তথ্য জানান তিনি। আগের চেয়ে সীমান্তহত্যা অনেকটা কমে এসেছে বলেও দাবি করেন মন্ত্রী।
বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদের এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আরও জানান, সীমান্তে ২০০৯ সালে ৬৬ জন, ২০১০ সালে ৫৫ জন, ২০১১ সালে ২৪ জন, ২০১২ সালে ২৪ জন, ২০১৩ সালে ১৮ জন, ২০১৪ সালে ২৪ জন, ২০১৫ সালে ৩৮ জন, ২০১৬ সালে ২৫ জন, ২০১৭ সালে ১৭ জন এবং ২০১৮ সালে তিনজন হত্যার শিকার হয়েছেন। এসব তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সীমান্তে হত্যা কমে আসছে বলে সংসদে দাবি করেন আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে যেখানে হত্যা করা হয়েছিল ৬৬ জন, ২০১৮ সালে তা কমে দাঁড়ায় তিনজনে। সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা বন্ধের বিষয়ে বিজিবি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে এবং সরকার কূটনৈতিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
নেত্রকোনার সাংসদ অসীম কুমার উকিলের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সীমান্ত এলাকায় বিজিবি ও বিএসএফ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে সেসব স্থানে সমন্বিত টহল কার্যক্রমের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা হচ্ছে। এক বিওপি (সীমান্ত ফাঁড়ি) থেকে পার্শ্ববর্তী বিওপির মধ্যবর্তী দূরত্ব কমানোর জন্য ১২৮টি বর্ডার সেন্ট্রি পোস্ট (বিএসপি) নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিএসএফ সীমান্তের ৩১৮ কিলোমিটার এলাকাকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করে সেখানে আধুনিক ক্যামেরাসহ নজরদারির ব্যবস্থা করছে।
চট্টগ্রামের সাংসদ এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত সুন্দরবনে ৩২৮ জলদস্যু ও বনদস্যু ৪৬২টি অস্ত্র, ২২ হাজার ৫০৪টি গোলাবারুদ ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। ফেনীর সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, গত ১৪ বছরে দায়িত্ব পালন অবস্থায় ১ হাজার ৫০ পুলিশ নিহত ও ৪ হাজার ৪৪০ জন আহত হয়েছেন।
বিএনপির হারুনুর রশীদের লিখিত এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সব সংস্থা ২০১৮ সালে ১ লাখ ৬১ হাজার ৩২৩ জন মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৭৮টি মামলা করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্র্তৃক কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। চট্টগ্রামের আরেক সাংসদ দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত ১০ বছরে বিজিবি সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ৬ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকার মাদক ও চোরাচালান দ্রব্য এবং ৬৯৮ কোটি টাকার চোরাচালান দ্রব্য আটক করতে সক্ষম হয়েছে।
বিদেশে ৮৮৪৮ বাংলাদেশি কারাবন্দি : বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জেলে বা ডিটেনশন সেন্টারে ৮ হাজার
৮৪৮ জন বাংলাদেশি আটক রয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তরকালে তিনি এই তথ্য জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, অন্তত ৪৪টি দেশে এসব বাংলাদেশি আটক আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আটক রয়েছে ভারতে। দেশটিতে আটক আছে ২ হাজার ৪৯ জন। যার বড় অংশ ২ হাজার ৩১ জন কলকাতায় বাকি ১৮ জন আগরতলায়। এছাড়া অন্যান্য দেশের মধ্যে আবুধাবিতে ১ হাজার ১৫৬, বাহরাইনে ৬৯৩, মালয়েশিয়ায় ৫৭২, সৌদি আরবে ৭৬৮, ওমানে ৪৪২, কুয়েতে ৩১৬ ও তুরস্কে ৩২৭ জন আটক আছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিদেশি কারাগারে আটক বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যতম দায়িত্ব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দূতাবাসের সাহায্যে রুটিনমাফিক এ কাজ করে আসছে। সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়া, তিউনিসিয়া, লিবিয়া ও ভানুয়াতু থেকে আটকেপড়া অনেক বাংলাদেশি দূতাবাসের প্রচেষ্টায় ফিরে এসেছে। অনেকেই আসার প্রক্রিয়ায় আছে।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০

গত ১০ বছরে সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে ২৯৪ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তরকালে এ তথ্য জানান তিনি। আগের চেয়ে সীমান্তহত্যা অনেকটা কমে এসেছে বলেও দাবি করেন মন্ত্রী।
বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদের এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আরও জানান, সীমান্তে ২০০৯ সালে ৬৬ জন, ২০১০ সালে ৫৫ জন, ২০১১ সালে ২৪ জন, ২০১২ সালে ২৪ জন, ২০১৩ সালে ১৮ জন, ২০১৪ সালে ২৪ জন, ২০১৫ সালে ৩৮ জন, ২০১৬ সালে ২৫ জন, ২০১৭ সালে ১৭ জন এবং ২০১৮ সালে তিনজন হত্যার শিকার হয়েছেন। এসব তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সীমান্তে হত্যা কমে আসছে বলে সংসদে দাবি করেন আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে যেখানে হত্যা করা হয়েছিল ৬৬ জন, ২০১৮ সালে তা কমে দাঁড়ায় তিনজনে। সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা বন্ধের বিষয়ে বিজিবি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে এবং সরকার কূটনৈতিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
নেত্রকোনার সাংসদ অসীম কুমার উকিলের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সীমান্ত এলাকায় বিজিবি ও বিএসএফ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে সেসব স্থানে সমন্বিত টহল কার্যক্রমের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা হচ্ছে। এক বিওপি (সীমান্ত ফাঁড়ি) থেকে পার্শ্ববর্তী বিওপির মধ্যবর্তী দূরত্ব কমানোর জন্য ১২৮টি বর্ডার সেন্ট্রি পোস্ট (বিএসপি) নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিএসএফ সীমান্তের ৩১৮ কিলোমিটার এলাকাকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করে সেখানে আধুনিক ক্যামেরাসহ নজরদারির ব্যবস্থা করছে।
চট্টগ্রামের সাংসদ এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত সুন্দরবনে ৩২৮ জলদস্যু ও বনদস্যু ৪৬২টি অস্ত্র, ২২ হাজার ৫০৪টি গোলাবারুদ ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। ফেনীর সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, গত ১৪ বছরে দায়িত্ব পালন অবস্থায় ১ হাজার ৫০ পুলিশ নিহত ও ৪ হাজার ৪৪০ জন আহত হয়েছেন।
বিএনপির হারুনুর রশীদের লিখিত এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সব সংস্থা ২০১৮ সালে ১ লাখ ৬১ হাজার ৩২৩ জন মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৭৮টি মামলা করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্র্তৃক কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। চট্টগ্রামের আরেক সাংসদ দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত ১০ বছরে বিজিবি সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ৬ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকার মাদক ও চোরাচালান দ্রব্য এবং ৬৯৮ কোটি টাকার চোরাচালান দ্রব্য আটক করতে সক্ষম হয়েছে।
বিদেশে ৮৮৪৮ বাংলাদেশি কারাবন্দি : বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জেলে বা ডিটেনশন সেন্টারে ৮ হাজার
৮৪৮ জন বাংলাদেশি আটক রয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তরকালে তিনি এই তথ্য জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, অন্তত ৪৪টি দেশে এসব বাংলাদেশি আটক আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আটক রয়েছে ভারতে। দেশটিতে আটক আছে ২ হাজার ৪৯ জন। যার বড় অংশ ২ হাজার ৩১ জন কলকাতায় বাকি ১৮ জন আগরতলায়। এছাড়া অন্যান্য দেশের মধ্যে আবুধাবিতে ১ হাজার ১৫৬, বাহরাইনে ৬৯৩, মালয়েশিয়ায় ৫৭২, সৌদি আরবে ৭৬৮, ওমানে ৪৪২, কুয়েতে ৩১৬ ও তুরস্কে ৩২৭ জন আটক আছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিদেশি কারাগারে আটক বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যতম দায়িত্ব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দূতাবাসের সাহায্যে রুটিনমাফিক এ কাজ করে আসছে। সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়া, তিউনিসিয়া, লিবিয়া ও ভানুয়াতু থেকে আটকেপড়া অনেক বাংলাদেশি দূতাবাসের প্রচেষ্টায় ফিরে এসেছে। অনেকেই আসার প্রক্রিয়ায় আছে।