অন্য সংস্থার অনুমোদিত ইমারতে রাজউকের নজরদারি নেই!
তোফাজ্জল হোসেন রুবেল | ১৭ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০
রাজধানীর ১৫২৮ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ইমারত নির্মাণের অনুমোদন দেওয়ার জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) একমাত্র সরকারি সংস্থা। আইন অনুযায়ী এ নির্ধারিত সীমানার মধ্যে অন্য কোনো সংস্থার ইমারত নির্মাণে নকশা অনুমোদনের সুযোগ নেই। তবুও সরকারি কয়েকটি সংস্থা তাদের নিজেদের ইমারত নির্মাণে রাজউকের অনুমোদন নেয় না। তাদের দাবি, নিয়ম মেনেই তারা নিজেদের ইমারতের নকশা নিজেরা অনুমোদন করে থাকে। চলতি বছরের মাঝামাঝি রাজউকের পরিদর্শনে ১ হাজার ৮১৮টি ভবনের মধ্যে অন্যান্য সংস্থা থেকে অনুমোদিত ২০৭টি ভবন রয়েছে বলে তথ্য মিলেছে। এর মধ্যে সরকারি ৪৪টি ভবন ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। ৬৬টি ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে উন্মুক্ত স্থান রাখেনি। বাকি ভবনগুলোর ক্ষেত্রে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায়ও দেখা গেছে নানা অসংগতি। রাজউক বলছে, সরকারের যে অন্য সংস্থা নকশা অনুমোদন দেয় তাদের নেই নিজস্ব তদারকি ব্যবস্থা। ফলে নকশা অনুমোদন দিয়ে দায়িত্ব শেষ তাদের। এমতাবস্থায় সরকারি সংস্থার ভবনগুলোর নির্মাণে নিয়মের ব্যত্যয়ের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থাও নিতে পারছে না রাজউক।
জানতে চাইলে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর জেনেছি। এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করব।’
রাজউক কর্মকর্তারা বলছেন, আইন অনুযায়ী ঢাকা শহরের প্রায় ১৫২৮ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ইমারত নির্মাণের জন্য নকশা অনুমোদন প্রয়োজন। নকশা অনুমোদনের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) সেই ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারি এই সিদ্ধান্ত মানছে না খোদ সরকারের অন্যসব প্রতিষ্ঠান। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি), শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান যাদের প্রকৌশল বিভাগ রয়েছে তারা রাজউক থেকে ইমারত নির্মাণের নকশা
অনুমোদন নিতে অনীহা দেখায়।
কর্মকর্তারা আরও বলছেন, ‘রাজউক সরকারি অনুমোদন অনুযায়ী বৃহত্তর ঢাকার প্রায় ১৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ইমারতের নকশা অনুমোদনের জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত। এ এলাকার সীমানা উত্তরে গাজীপুর পৌরসভা, দক্ষিণে কেরানীগঞ্জ উপজেলার অংশবিশেষসহ ধলেশ্বরী নদী, পূর্বে শীতলক্ষ্যা ও মেঘনা নদী এবং সোনারগাঁ থানার অংশবিশেষ, পশ্চিমে বংশী নদী। ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন, নারায়ণগঞ্জ, কদমরসুল, সিদ্ধিরগঞ্জ, তারাব, সাভার, টঙ্গী ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকা এর অন্তর্ভুক্ত। টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্ট-১৯৫৩, বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন অ্যাক্ট-১৯৫২ ও ঢাকা মহানগর ইমারত (নির্মাণ, উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও অপসারণ) বিধিমালা-২০০৮ অনুসারে রাজউক উপযুক্ত এলাকাগুলোতে নকশা অনুমোদনে ক্ষমতাপ্রাপ্ত।’
রাজউকের পরিচালক (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তানজিলা খানম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘চলতি বছরে রাজউক থেকে পরিচালিত ১ হাজার ৮১৮টি বহুতল ভবন পরিদর্শনে দেখা গেছে, বিপুলসংখ্যক স্থাপনা সরকারের অন্য সংস্থা থেকে নকশা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি। এখন মন্ত্রণালয় পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে।’
রাজউকের দাবি, সরকারি সংস্থা রাজউকের কাছ থেকে ভবন নির্মাণের অনুমোদন নেয় না। ফলে তাদের ভবন নির্মাণের তথ্য বা নিয়ম তদারক করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। যে সংস্থা স্থাপনা নির্মাণের অনুমোদন দেয় তাদের তদারকি করার মতো কোনো কারিগরি জনবলও নেই। কিন্তু এসব ভবনে যদি কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে তাহলে এর দায়ভার এসে রাজউকের ওপর পড়বে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘অভিবক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সব ইমারতের নকশা অনুমোদনের জন্য প্রধান প্রকৌশলীকে অথরাইজড অফিসার হিসেবে ক্ষমতা দেওয়া হয়। ২০০৯ সালের ২৯ মার্চ স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সিনিয়র সহকারী সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে জারি হওয়া পত্রের বলেই ইমারত নির্মাণের নকশার অনুমোদন নিজেরাই করে থাকি।’
একইভাবে ২০০৮ সালে জারি হওয়া পরিপত্র অনুযায়ী গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে কোনো স্থাপনা নির্মিত হলে তা প্রধান স্থপতির কাছ থেকে নকশা অনুমোদন নেওয়ার বিধান রয়েছে। গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. শাহাদাত হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ও প্রধান স্থপতি অথরাইজড অফিসারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত। এ দুই পদে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা ইমারতে নকশা অনুমোদন দিতে পারেন।’ তারা ইমারত আইনের বিধিবিধান মেনে ভবন নির্মাণ করেন কি না এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা যেসব স্থাপনার নকশা অনুমোদন করে থাকি তা সব নিয়ম মেনেই করা হয়।’
এ প্রসঙ্গে নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীকে অনেক আগে অথরাইজড অফিসারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রায় তিন-চার বছর আগে এই বিধান বাতিল করা হয়েছে। ফলে সিটি করপোরেশনকে এখন তাদের নিজস্ব ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজউক থেকে নকশা অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে। রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে সরকারের কোনো সংস্থার এই নিয়ম ভঙ্গ করা উচিত হবে না।’
গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদউল্লা খন্দকার গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আইন অনুযায়ী রাজউকের সীমানায় অন্য কোনো সংস্থা ইমারত নির্মাণের অনুমোদন দিতে পারে না। আমরা ইতিমধ্যেই রাজউক থেকে এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে আইনের ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। এরপর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে এ বিষয়ে দাপ্তরিক চিঠি দেওয়া হবে।’
শেয়ার করুন
তোফাজ্জল হোসেন রুবেল | ১৭ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০

রাজধানীর ১৫২৮ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ইমারত নির্মাণের অনুমোদন দেওয়ার জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) একমাত্র সরকারি সংস্থা। আইন অনুযায়ী এ নির্ধারিত সীমানার মধ্যে অন্য কোনো সংস্থার ইমারত নির্মাণে নকশা অনুমোদনের সুযোগ নেই। তবুও সরকারি কয়েকটি সংস্থা তাদের নিজেদের ইমারত নির্মাণে রাজউকের অনুমোদন নেয় না। তাদের দাবি, নিয়ম মেনেই তারা নিজেদের ইমারতের নকশা নিজেরা অনুমোদন করে থাকে। চলতি বছরের মাঝামাঝি রাজউকের পরিদর্শনে ১ হাজার ৮১৮টি ভবনের মধ্যে অন্যান্য সংস্থা থেকে অনুমোদিত ২০৭টি ভবন রয়েছে বলে তথ্য মিলেছে। এর মধ্যে সরকারি ৪৪টি ভবন ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। ৬৬টি ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে উন্মুক্ত স্থান রাখেনি। বাকি ভবনগুলোর ক্ষেত্রে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায়ও দেখা গেছে নানা অসংগতি। রাজউক বলছে, সরকারের যে অন্য সংস্থা নকশা অনুমোদন দেয় তাদের নেই নিজস্ব তদারকি ব্যবস্থা। ফলে নকশা অনুমোদন দিয়ে দায়িত্ব শেষ তাদের। এমতাবস্থায় সরকারি সংস্থার ভবনগুলোর নির্মাণে নিয়মের ব্যত্যয়ের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থাও নিতে পারছে না রাজউক।
জানতে চাইলে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর জেনেছি। এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করব।’
রাজউক কর্মকর্তারা বলছেন, আইন অনুযায়ী ঢাকা শহরের প্রায় ১৫২৮ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ইমারত নির্মাণের জন্য নকশা অনুমোদন প্রয়োজন। নকশা অনুমোদনের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) সেই ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারি এই সিদ্ধান্ত মানছে না খোদ সরকারের অন্যসব প্রতিষ্ঠান। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি), শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান যাদের প্রকৌশল বিভাগ রয়েছে তারা রাজউক থেকে ইমারত নির্মাণের নকশা
অনুমোদন নিতে অনীহা দেখায়।
কর্মকর্তারা আরও বলছেন, ‘রাজউক সরকারি অনুমোদন অনুযায়ী বৃহত্তর ঢাকার প্রায় ১৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ইমারতের নকশা অনুমোদনের জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত। এ এলাকার সীমানা উত্তরে গাজীপুর পৌরসভা, দক্ষিণে কেরানীগঞ্জ উপজেলার অংশবিশেষসহ ধলেশ্বরী নদী, পূর্বে শীতলক্ষ্যা ও মেঘনা নদী এবং সোনারগাঁ থানার অংশবিশেষ, পশ্চিমে বংশী নদী। ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন, নারায়ণগঞ্জ, কদমরসুল, সিদ্ধিরগঞ্জ, তারাব, সাভার, টঙ্গী ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকা এর অন্তর্ভুক্ত। টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্ট-১৯৫৩, বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন অ্যাক্ট-১৯৫২ ও ঢাকা মহানগর ইমারত (নির্মাণ, উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও অপসারণ) বিধিমালা-২০০৮ অনুসারে রাজউক উপযুক্ত এলাকাগুলোতে নকশা অনুমোদনে ক্ষমতাপ্রাপ্ত।’
রাজউকের পরিচালক (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তানজিলা খানম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘চলতি বছরে রাজউক থেকে পরিচালিত ১ হাজার ৮১৮টি বহুতল ভবন পরিদর্শনে দেখা গেছে, বিপুলসংখ্যক স্থাপনা সরকারের অন্য সংস্থা থেকে নকশা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি। এখন মন্ত্রণালয় পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে।’
রাজউকের দাবি, সরকারি সংস্থা রাজউকের কাছ থেকে ভবন নির্মাণের অনুমোদন নেয় না। ফলে তাদের ভবন নির্মাণের তথ্য বা নিয়ম তদারক করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। যে সংস্থা স্থাপনা নির্মাণের অনুমোদন দেয় তাদের তদারকি করার মতো কোনো কারিগরি জনবলও নেই। কিন্তু এসব ভবনে যদি কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে তাহলে এর দায়ভার এসে রাজউকের ওপর পড়বে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘অভিবক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সব ইমারতের নকশা অনুমোদনের জন্য প্রধান প্রকৌশলীকে অথরাইজড অফিসার হিসেবে ক্ষমতা দেওয়া হয়। ২০০৯ সালের ২৯ মার্চ স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সিনিয়র সহকারী সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে জারি হওয়া পত্রের বলেই ইমারত নির্মাণের নকশার অনুমোদন নিজেরাই করে থাকি।’
একইভাবে ২০০৮ সালে জারি হওয়া পরিপত্র অনুযায়ী গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে কোনো স্থাপনা নির্মিত হলে তা প্রধান স্থপতির কাছ থেকে নকশা অনুমোদন নেওয়ার বিধান রয়েছে। গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. শাহাদাত হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ও প্রধান স্থপতি অথরাইজড অফিসারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত। এ দুই পদে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা ইমারতে নকশা অনুমোদন দিতে পারেন।’ তারা ইমারত আইনের বিধিবিধান মেনে ভবন নির্মাণ করেন কি না এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা যেসব স্থাপনার নকশা অনুমোদন করে থাকি তা সব নিয়ম মেনেই করা হয়।’
এ প্রসঙ্গে নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীকে অনেক আগে অথরাইজড অফিসারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রায় তিন-চার বছর আগে এই বিধান বাতিল করা হয়েছে। ফলে সিটি করপোরেশনকে এখন তাদের নিজস্ব ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজউক থেকে নকশা অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে। রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে সরকারের কোনো সংস্থার এই নিয়ম ভঙ্গ করা উচিত হবে না।’
গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদউল্লা খন্দকার গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আইন অনুযায়ী রাজউকের সীমানায় অন্য কোনো সংস্থা ইমারত নির্মাণের অনুমোদন দিতে পারে না। আমরা ইতিমধ্যেই রাজউক থেকে এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে আইনের ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। এরপর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে এ বিষয়ে দাপ্তরিক চিঠি দেওয়া হবে।’