বরফের ডিম
রূপান্তর ডেস্ক | ৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০
ফিনল্যান্ডের হাইলোটো দ্বীপের মারজানিয়েমি সমুদ্রসৈকত ছেয়ে গেছে ডিমাকৃতির হাজার হাজার বরফের গোলায়। প্রকৃতির বিশেষ অবস্থায় বরফ জমে এমন আকার ধারণ করে, যা খুবই বিরল বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।
ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের মাঝে হাইলোটো নামের একটি দ্বীপে বরফের ডিমে আবৃত একটি সৈকতের দৃশ্যের ছবি প্রথম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেন শৌখিন আলোকচিত্রী রিস্তো মাতিলা। গত রবিবার তিনি ও তার স্ত্রী সৈকত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বিরল এই দৃশ্য দেখতে পান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিরল এক আবহাওয়া প্রক্রিয়ায় বরফের ছোট ছোট কুচি যুক্ত হয়ে ডিমের আকৃতি নিয়েছে। বাতাস এবং পানির ধাক্কায় বরফের কুচিগুলো একটি আরেকটির সঙ্গে মিশে ডিমের আকৃতি নিয়েছে।
এমন দৃশ্য জীবনেও দেখিনি বলে দ্য গার্ডিয়ানকে মাতিলা বলেন, ‘স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মারজানিয়েমি বিচে গিয়েছিলাম। রোদ ছিল, কিন্তু তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কেরও ১ ডিগ্রি নিচে। জোর বাতাস বইছিল। সৈকতজুড়ে বরফের কুচির ওপর সারি সারি বরফের ডিম। জলের গোড়া পর্যন্ত বিস্তৃত।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় ১০০ ফুট এলাকাজুড়ে হাজার হাজার বরফের ডিম পড়ে ছিল। সবচেয়ে ছোটটি ছিল ডিমের আকৃতির। সবচেয়ে বড়গুলো ছিল ফুটবলের সমান আকৃতির। এ অঞ্চলে আমি ২৫ বছর ধরে বসবাস করছি। কখনো এমনটা দেখিনি।’
বরফ বিশেষজ্ঞ জুনি ভাইনিও জানান, এমন ঘটনা সাধারণ কোনো বিষয় নয়। সঠিক তাপমাত্রা পেলে বছরে একবার এমন ঘটনা ঘটতে পারে। এক্ষেত্রে আপনার দরকার হবে বাতাস ও পানির সঠিক তাপমাত্রা, অগভীর ও আলতো বালুকাময় সৈকত যেখানে খুব সামান্য ঢেউ থাকবে।
আবহাওয়াবিদ জর্জ গুডফেলো বলেন, সাগরে ঠাণ্ডার সঙ্গে সঙ্গে বাতাস বইলে এ ধরনের বরফের বল তৈরি হতে পারে। বরফের কুচিগুলো ঢেউয়ের ধাক্কায় একসঙ্গে মিশে বড় হতে থাকে। তারপর ঠাণ্ডায় সাগরের পানি জমে সেগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে গোলার আকৃতি নেয়। ওইসব বরফের বল সাগরের পানির ধাক্কায় মসৃণ হতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, ভাটায় পানি নেমে গেলে বরফের গোলাকৃতি ওই পিণ্ডগুলো সাগরতীরে পড়ে থাকে। অনেক সময় ঢেউয়ের ধাক্কায় সেগুলো তীরে চলে আসে। এর আগে রাশিয়া এবং শিকাগোর মিশিগান লেকে এ ধরনের বরফের ডিম দেখা গিয়েছিল।
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০

ফিনল্যান্ডের হাইলোটো দ্বীপের মারজানিয়েমি সমুদ্রসৈকত ছেয়ে গেছে ডিমাকৃতির হাজার হাজার বরফের গোলায়। প্রকৃতির বিশেষ অবস্থায় বরফ জমে এমন আকার ধারণ করে, যা খুবই বিরল বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।
ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের মাঝে হাইলোটো নামের একটি দ্বীপে বরফের ডিমে আবৃত একটি সৈকতের দৃশ্যের ছবি প্রথম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেন শৌখিন আলোকচিত্রী রিস্তো মাতিলা। গত রবিবার তিনি ও তার স্ত্রী সৈকত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বিরল এই দৃশ্য দেখতে পান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিরল এক আবহাওয়া প্রক্রিয়ায় বরফের ছোট ছোট কুচি যুক্ত হয়ে ডিমের আকৃতি নিয়েছে। বাতাস এবং পানির ধাক্কায় বরফের কুচিগুলো একটি আরেকটির সঙ্গে মিশে ডিমের আকৃতি নিয়েছে।
এমন দৃশ্য জীবনেও দেখিনি বলে দ্য গার্ডিয়ানকে মাতিলা বলেন, ‘স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মারজানিয়েমি বিচে গিয়েছিলাম। রোদ ছিল, কিন্তু তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কেরও ১ ডিগ্রি নিচে। জোর বাতাস বইছিল। সৈকতজুড়ে বরফের কুচির ওপর সারি সারি বরফের ডিম। জলের গোড়া পর্যন্ত বিস্তৃত।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় ১০০ ফুট এলাকাজুড়ে হাজার হাজার বরফের ডিম পড়ে ছিল। সবচেয়ে ছোটটি ছিল ডিমের আকৃতির। সবচেয়ে বড়গুলো ছিল ফুটবলের সমান আকৃতির। এ অঞ্চলে আমি ২৫ বছর ধরে বসবাস করছি। কখনো এমনটা দেখিনি।’
বরফ বিশেষজ্ঞ জুনি ভাইনিও জানান, এমন ঘটনা সাধারণ কোনো বিষয় নয়। সঠিক তাপমাত্রা পেলে বছরে একবার এমন ঘটনা ঘটতে পারে। এক্ষেত্রে আপনার দরকার হবে বাতাস ও পানির সঠিক তাপমাত্রা, অগভীর ও আলতো বালুকাময় সৈকত যেখানে খুব সামান্য ঢেউ থাকবে।
আবহাওয়াবিদ জর্জ গুডফেলো বলেন, সাগরে ঠাণ্ডার সঙ্গে সঙ্গে বাতাস বইলে এ ধরনের বরফের বল তৈরি হতে পারে। বরফের কুচিগুলো ঢেউয়ের ধাক্কায় একসঙ্গে মিশে বড় হতে থাকে। তারপর ঠাণ্ডায় সাগরের পানি জমে সেগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে গোলার আকৃতি নেয়। ওইসব বরফের বল সাগরের পানির ধাক্কায় মসৃণ হতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, ভাটায় পানি নেমে গেলে বরফের গোলাকৃতি ওই পিণ্ডগুলো সাগরতীরে পড়ে থাকে। অনেক সময় ঢেউয়ের ধাক্কায় সেগুলো তীরে চলে আসে। এর আগে রাশিয়া এবং শিকাগোর মিশিগান লেকে এ ধরনের বরফের ডিম দেখা গিয়েছিল।