ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে পুলিশ সদস্যের আত্মহত্যা!
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৪ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০
রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) মাঠে গতকাল বৃহস্পতিবার শাহ আবদুল কুদ্দুস (৩১) নামে পুলিশের এক নায়েকের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেছে। তিনি মিরপুর-১৪ নম্বর পুলিশ লাইনে নায়েক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের হবিগঞ্জের রসুলপুর।
পুলিশ বলছে, গতকাল ভোর ৫টার দিকে কুদ্দুস নিজের নামে বরাদ্দ করা রাইফেল বুকে ঠেকিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেন। ফেইসবুকে তার পোস্ট করা স্ট্যাটাস দেখে মনে হচ্ছে, তিনি পারিবারিক অশান্তিতে ছিলেন। কাফরুল থানার ওসি মো. সেলিমুজ্জামান জানান, শাহ মোহাম্মদ কুদ্দুস পিওএম ব্যারাকে থাকতেন। গতকাল ভোরে অন্যদের মতো তারও পিওএমের বাইরে দায়িত্ব ছিল। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশের অন্য সদস্যরা তাদের নামে বরাদ্দ করা রাইফেল নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে গাড়িতে ওঠেন। ওই সময় কুদ্দুসকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে মাঠের এক কোনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ওসি আরও বলেন, শাহ মোহাম্মদ কুদ্দুসের ব্যবহৃত রাইফেলটি জব্দ করা হয়েছে। মৃত্যুর আগে তার ফেইসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, কুদ্দুস নিজেই এই স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি পারিবারিক অশান্তির কথা লিখেছেন।
মৃত্যুর আগে ফেইসবুকে তার দেওয়া স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলোÑ ‘আমার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করব না। আমার ভেতরের যন্ত্রণাগুলো বড় হয়ে গেছে, আমি আর সহ্য করতে পারছি না। প্রাণটা পালাই পালাই করছে। তবে অবিবাহিতদের প্রতি আমার আকুল আবেদন আপনারা পাত্রী পছন্দ করার আগে পাত্রীর মা ভালো কিনা তা আগে খবর নেবেন। কারণ পাত্রীর মা ভালো না হলে পাত্রী কখনই ভালো হবে না। ফলে আপনার সংসারটা হবে দোজখের মতো। সুতরাং সকল সম্মানিত অভিভাবকদের প্রতি আমার শেষ অনুরোধ, বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেবেন। আল্লাহ হাফেজ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, উত্তর বিভাগ (এসটিএফ), মিরপুর-১৪, ঢাকা।’ কুদ্দুসের মৃত্যুর খবরে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন কাফরুল থানার এসআই মোজাম্মেল হক। সুরতহাল প্রতিবেদনে কুদ্দুসের বুকে দুটি গুলির চিহ্নের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। এসআই মোজাম্মেল বলেন, ভোরে খবর পেয়ে মাঠে গিয়ে কুদ্দুসের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখি। এরপর ঘটনাস্থল কর্ডন করা হয়। কুদ্দুসের ডিউটি ছিল সকালে। এজন্য সে একটি ফুল লোডেড এসএমজি বন্দুক রিকুইজিশন নিয়েছিল। সেটি দিয়েই গুলি চালানো হয়েছে। তার বুকে দুটি ছিদ্র ছিল। ভেতরে কয়টি গুলি আছে তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। এ ঘটনায় কুদ্দুসের সহকর্মী ও তার কাছাকাছি কয়েকজন পুলিশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।ঈ
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৪ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০

রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) মাঠে গতকাল বৃহস্পতিবার শাহ আবদুল কুদ্দুস (৩১) নামে পুলিশের এক নায়েকের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেছে। তিনি মিরপুর-১৪ নম্বর পুলিশ লাইনে নায়েক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের হবিগঞ্জের রসুলপুর।
পুলিশ বলছে, গতকাল ভোর ৫টার দিকে কুদ্দুস নিজের নামে বরাদ্দ করা রাইফেল বুকে ঠেকিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেন। ফেইসবুকে তার পোস্ট করা স্ট্যাটাস দেখে মনে হচ্ছে, তিনি পারিবারিক অশান্তিতে ছিলেন। কাফরুল থানার ওসি মো. সেলিমুজ্জামান জানান, শাহ মোহাম্মদ কুদ্দুস পিওএম ব্যারাকে থাকতেন। গতকাল ভোরে অন্যদের মতো তারও পিওএমের বাইরে দায়িত্ব ছিল। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশের অন্য সদস্যরা তাদের নামে বরাদ্দ করা রাইফেল নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে গাড়িতে ওঠেন। ওই সময় কুদ্দুসকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে মাঠের এক কোনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ওসি আরও বলেন, শাহ মোহাম্মদ কুদ্দুসের ব্যবহৃত রাইফেলটি জব্দ করা হয়েছে। মৃত্যুর আগে তার ফেইসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, কুদ্দুস নিজেই এই স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি পারিবারিক অশান্তির কথা লিখেছেন।
মৃত্যুর আগে ফেইসবুকে তার দেওয়া স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলোÑ ‘আমার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করব না। আমার ভেতরের যন্ত্রণাগুলো বড় হয়ে গেছে, আমি আর সহ্য করতে পারছি না। প্রাণটা পালাই পালাই করছে। তবে অবিবাহিতদের প্রতি আমার আকুল আবেদন আপনারা পাত্রী পছন্দ করার আগে পাত্রীর মা ভালো কিনা তা আগে খবর নেবেন। কারণ পাত্রীর মা ভালো না হলে পাত্রী কখনই ভালো হবে না। ফলে আপনার সংসারটা হবে দোজখের মতো। সুতরাং সকল সম্মানিত অভিভাবকদের প্রতি আমার শেষ অনুরোধ, বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেবেন। আল্লাহ হাফেজ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, উত্তর বিভাগ (এসটিএফ), মিরপুর-১৪, ঢাকা।’ কুদ্দুসের মৃত্যুর খবরে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন কাফরুল থানার এসআই মোজাম্মেল হক। সুরতহাল প্রতিবেদনে কুদ্দুসের বুকে দুটি গুলির চিহ্নের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। এসআই মোজাম্মেল বলেন, ভোরে খবর পেয়ে মাঠে গিয়ে কুদ্দুসের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখি। এরপর ঘটনাস্থল কর্ডন করা হয়। কুদ্দুসের ডিউটি ছিল সকালে। এজন্য সে একটি ফুল লোডেড এসএমজি বন্দুক রিকুইজিশন নিয়েছিল। সেটি দিয়েই গুলি চালানো হয়েছে। তার বুকে দুটি ছিদ্র ছিল। ভেতরে কয়টি গুলি আছে তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। এ ঘটনায় কুদ্দুসের সহকর্মী ও তার কাছাকাছি কয়েকজন পুলিশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।ঈ