পূর্ণ আবাসিক হচ্ছে যবিপ্রবি
সজিবুর রহমান, যবিপ্রবি | ১৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) হতে যাচ্ছে দেশের অন্যতম একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন দুটি হলের কাজ শেষ হলে কোনো শিক্ষার্থীকে আর ক্যাম্পাসের বাইরে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় থাকতে হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ বলছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই এ দুটি হলের নির্মাণকাজ শেষ করার প্রস্তুতি থাকলেও করোনা পরিস্থিতি ও বৃষ্টির জন্য তা কিছুটা পিছিয়েছে। তবে আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে হল দুটি চালুর মাধ্যমে পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে যবিপ্রবি। এছাড়া একই সময়ের মধ্যে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু অ্যাকাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজও শেষ হবে বলে আশাবাদী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, যশোর শহরের অদূরে আমবটতলা এলাকায় প্রায় ৩৫ একর এলাকা নিয়ে অবস্থান যবিপ্রবির। ২০০৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলেও পূর্ণরূপে এর কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৮ সালে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সাতটি অনুষদের ২৬টি বিভাগে অধ্যয়নরত রয়েছে প্রায় চার হাজার শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংখ্যা দুটি, ছাত্রছাত্রী উভয়ের জন্য একটি করে হল রয়েছে। এছাড়াও নির্মাণাধীন আছে আরও দুটি আবাসিক হল। এর কাজ শেষে আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে যবিপ্রবি। নতুন হল দুটিতে থাকছে পিএইচডিসহ বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা।
বর্তমানে যবিপ্রবিতে ছাত্রদের একমাত্র হল ‘শহীদ মসিয়ূর রহমান’ হল ২০১০ সালে স্থাপিত হয়। ২১১টি কক্ষবিশিষ্ট পাঁচতলার এ ছাত্রাবাসটির আসনসংখ্যা ৭৫৬টি। মুক্তিযুদ্ধে একমাত্র শহীদ সংসদ সদস্য আইনজীবী মসিয়ূর রহমানের নামানুসারে এ হলের নামকরণ করা হয়। হলটিতে ছাত্রদের জন্য রয়েছে টিভি রুম, রিডিং রুম ও ক্যান্টিনসহ একটি ব্যায়ামাগার। অন্যদিকে ছাত্রীদের একমাত্র হল ‘শেখ হাসিনা হল’ নির্মিত হয় ২০১০ সালে। পাঁচতলা এ হলটির আসনসংখ্যা ৫০০-এর বেশি। রিডিং রুম, সাইবার ক্যাফে, টিভি রুম, ক্যান্টিন ও ব্যায়ামাগার রয়েছে হলটিতে। এর বাইরে যবিপ্রবিকে পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় করতে নির্মাণ করা হচ্ছে মুনশি মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ হল ও বীরপ্রতিক তারামন বিবি হল নামে আরও দুটি আবাসিক হল।
যবিপ্রবির ছাত্রদের জন্য ২০১৮ সালে মুনশি মেহেরুল্লাহ হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন যবিপ্রবির উপাচার্য। ১০ তলা এ ভবনে আসনসংখ্যা হবে ১ হাজার ২০০-এর বেশি। হলটিতে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকবে রিডিং রুম, টিভি রুম, ক্যান্টিন ও ব্যায়ামাগারসহ প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা। অন্যদিকে ছাত্রীদের জন্য নির্মাণাধীন বীরপ্রতিক তারামন বিবি হলের আসনসংখ্যা হবে প্রায় এক হাজার। ১০ তলাবিশিষ্ট এ ভবনে থাকবে চারটি লিফট, রিডিং রুম, ব্যায়ামাগার ও টিভি রুমসহ প্রতি ফ্লোরে রান্না করার জায়গা। এছাড়া যুগের চাহিদা অনুযায়ী ছাত্রী হলে থাকবে একটি আধুনিক ‘প্রসাধন ও রূপসজ্জার’ কক্ষ। এছাড়াও উভয় হলে মাস্টার্স, পিএইচডি ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কক্ষ বরাদ্দ থাকবে।
পূর্ণাঙ্গ আবাসিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে ওঠার প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে আমরা নতুন দুটি হল এবং স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু অ্যাকাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করতে পারব বলে আশাবাদী। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি ও বৃষ্টির জন্য নির্মাণকাজে অনেক বিঘœ ঘটেছে। সেটা না হলে আমরা ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ করতে সক্ষম হতাম। হল দুটির কাজ শেষ হলে আমরা পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হব।’
নতুন দুটি হলে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা এবং পিএইচডি ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা কক্ষ বরাদ্দ থাকবে বলেও জানান উপাচার্য।
শেয়ার করুন
সজিবুর রহমান, যবিপ্রবি | ১৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) হতে যাচ্ছে দেশের অন্যতম একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন দুটি হলের কাজ শেষ হলে কোনো শিক্ষার্থীকে আর ক্যাম্পাসের বাইরে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় থাকতে হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ বলছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই এ দুটি হলের নির্মাণকাজ শেষ করার প্রস্তুতি থাকলেও করোনা পরিস্থিতি ও বৃষ্টির জন্য তা কিছুটা পিছিয়েছে। তবে আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে হল দুটি চালুর মাধ্যমে পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে যবিপ্রবি। এছাড়া একই সময়ের মধ্যে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু অ্যাকাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজও শেষ হবে বলে আশাবাদী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, যশোর শহরের অদূরে আমবটতলা এলাকায় প্রায় ৩৫ একর এলাকা নিয়ে অবস্থান যবিপ্রবির। ২০০৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলেও পূর্ণরূপে এর কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৮ সালে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সাতটি অনুষদের ২৬টি বিভাগে অধ্যয়নরত রয়েছে প্রায় চার হাজার শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংখ্যা দুটি, ছাত্রছাত্রী উভয়ের জন্য একটি করে হল রয়েছে। এছাড়াও নির্মাণাধীন আছে আরও দুটি আবাসিক হল। এর কাজ শেষে আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে যবিপ্রবি। নতুন হল দুটিতে থাকছে পিএইচডিসহ বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা।
বর্তমানে যবিপ্রবিতে ছাত্রদের একমাত্র হল ‘শহীদ মসিয়ূর রহমান’ হল ২০১০ সালে স্থাপিত হয়। ২১১টি কক্ষবিশিষ্ট পাঁচতলার এ ছাত্রাবাসটির আসনসংখ্যা ৭৫৬টি। মুক্তিযুদ্ধে একমাত্র শহীদ সংসদ সদস্য আইনজীবী মসিয়ূর রহমানের নামানুসারে এ হলের নামকরণ করা হয়। হলটিতে ছাত্রদের জন্য রয়েছে টিভি রুম, রিডিং রুম ও ক্যান্টিনসহ একটি ব্যায়ামাগার। অন্যদিকে ছাত্রীদের একমাত্র হল ‘শেখ হাসিনা হল’ নির্মিত হয় ২০১০ সালে। পাঁচতলা এ হলটির আসনসংখ্যা ৫০০-এর বেশি। রিডিং রুম, সাইবার ক্যাফে, টিভি রুম, ক্যান্টিন ও ব্যায়ামাগার রয়েছে হলটিতে। এর বাইরে যবিপ্রবিকে পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় করতে নির্মাণ করা হচ্ছে মুনশি মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ হল ও বীরপ্রতিক তারামন বিবি হল নামে আরও দুটি আবাসিক হল।
যবিপ্রবির ছাত্রদের জন্য ২০১৮ সালে মুনশি মেহেরুল্লাহ হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন যবিপ্রবির উপাচার্য। ১০ তলা এ ভবনে আসনসংখ্যা হবে ১ হাজার ২০০-এর বেশি। হলটিতে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকবে রিডিং রুম, টিভি রুম, ক্যান্টিন ও ব্যায়ামাগারসহ প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা। অন্যদিকে ছাত্রীদের জন্য নির্মাণাধীন বীরপ্রতিক তারামন বিবি হলের আসনসংখ্যা হবে প্রায় এক হাজার। ১০ তলাবিশিষ্ট এ ভবনে থাকবে চারটি লিফট, রিডিং রুম, ব্যায়ামাগার ও টিভি রুমসহ প্রতি ফ্লোরে রান্না করার জায়গা। এছাড়া যুগের চাহিদা অনুযায়ী ছাত্রী হলে থাকবে একটি আধুনিক ‘প্রসাধন ও রূপসজ্জার’ কক্ষ। এছাড়াও উভয় হলে মাস্টার্স, পিএইচডি ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কক্ষ বরাদ্দ থাকবে।
পূর্ণাঙ্গ আবাসিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে ওঠার প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে আমরা নতুন দুটি হল এবং স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু অ্যাকাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করতে পারব বলে আশাবাদী। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি ও বৃষ্টির জন্য নির্মাণকাজে অনেক বিঘœ ঘটেছে। সেটা না হলে আমরা ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ করতে সক্ষম হতাম। হল দুটির কাজ শেষ হলে আমরা পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হব।’
নতুন দুটি হলে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা এবং পিএইচডি ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা কক্ষ বরাদ্দ থাকবে বলেও জানান উপাচার্য।