হাতির সমান সরীসৃপ!
রূপান্তর ডেস্ক | ১৫ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০
কোটি কোটি বছর আগের ডায়নোসরের ইতিহাস মোটামুটি সবারই জানা। কিন্তু সমসাময়িক সরীসৃপের কথা হয়তো অনেকেই জানেন না। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, বিশাল আকৃতির সব ডাইনোসরের সঙ্গে তখনকার পরিবেশে ঘুরে বেড়াতো হরেক রকম সরীসৃপও। আবার এক একটি সরীসৃপের আকৃতি ছিল ধারণার চেয়েও বৃহৎ। সম্প্রতি ২০ কোটি বছর আগের এমনই এক সরীসৃপের ফসিল খুঁজে পেয়েছেন একদল বিজ্ঞানী। সুইডেন ও পোল্যান্ডের ওই গবেষণা দলটির দাবি, ‘লিসোভিৎসিয়া’ নামে ওই তৃণভোজী সরীসৃপটির আকার ছিল একটি হাতির মতো।
‘সায়েন্স’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০ কোটি বছর আগের ট্রায়াসিক যুগে ডায়নোসরের সঙ্গে হাতির সমান এসব সরীসৃপও ঘুরে বেড়াতো। যা দেখতে অনেকটা গণ্ডারের মতো। চারপেয়ে এই প্রাণীটির ফসিল বা জীবাশ্ম পাওয়া গেছে পোল্যান্ডের লিসোভিৎসে শহরের পাশে। তাই শহরের নামের সঙ্গে মিল রেখে প্রাণীটির নাম ‘লিসোভিৎসিয়া বোজানি’ রাখা হয়েছে।
এর আগে ‘ডাইসাইনোডন্ট’ প্রজাতির প্রাণীদের কথা বৈজ্ঞানিক মহলে আলোচিত হয়েছে। নতুন সন্ধান পাওয়া লিসোভিৎসিয়ার মতো ডাইসাইনোডন্ট প্রজাতির সরীসৃপও তৃণভোজী ও অন্যান্য দিক দিয়ে স্তন্যপায়ী জীবের কাছাকাছি ছিল। কিন্তু আকারের দিক থেকে লিসোভিৎসিয়া ডাইসাইনোডন্টের চেয়েও কয়েকগুণ বড়।
বিজ্ঞানীরা জানান, মূলত তৃণভোজী ওই প্রাণীটির শরীর গণ্ডারের মতো হলেও ঠোঁট
অবিকল কচ্ছপের মতো ছিল। হাতির সমান এক একটি লিসোভিৎসিয়ার দৈর্ঘ্য ছিল সাড়ে ৪ মিটার। ওজন ছিল ১০ টনের মতো। এর বিপরীতে ডাইসাইনোডন্টের আকার ইঁদুর বা বড়জোর একটি যাঁড়ের সমান ছিল বলে ধারণা তাদের।
গবেষক দলের একজন টমাস সুলেজ বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটি একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার। কারণ এর মাধ্যমে ডাইসাইনোডন্ট বিষয়ে বর্তমান গবেষণার ধারা বদলে যেতে পারে। পাশাপাশি ডায়নোসরের বিশাল আকার নিয়েও অনেক অজানা তথ্য জানাবে এই লিসোভিৎসিয়া।’
বিজ্ঞানীরা আরও জানান, প্রায় আড়াই কোটি বছর আগে পৃথিবীর তখনকার প্রায় ৯০ শতাংশ প্রজাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয় কোনো এক অজানা মহামারী। কিন্তু অনুসন্ধানে পাওয়া লিসোভিৎসিয়ার ফসিল থেকে জানা যায়, মহামারীর বেশ কিছু সময় পর, আনুমানিক ২০৫ থেকে ২১০ মিলিয়ন বছর আগে ডায়নোসরের সঙ্গে পৃথিবীতে আসে তারা। এতদিন ইতিহাসের যে অধ্যায়কে শুধু ডায়নোসরের সময় হিসেবেই বিবেচনা করা হতো, সেই ধারণাকে পুরোপুরি বদলে দিতে পারে নতুন করে খুঁজে পাওয়া এই প্রাণীটির ফসিল।
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ১৫ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০

কোটি কোটি বছর আগের ডায়নোসরের ইতিহাস মোটামুটি সবারই জানা। কিন্তু সমসাময়িক সরীসৃপের কথা হয়তো অনেকেই জানেন না। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, বিশাল আকৃতির সব ডাইনোসরের সঙ্গে তখনকার পরিবেশে ঘুরে বেড়াতো হরেক রকম সরীসৃপও। আবার এক একটি সরীসৃপের আকৃতি ছিল ধারণার চেয়েও বৃহৎ। সম্প্রতি ২০ কোটি বছর আগের এমনই এক সরীসৃপের ফসিল খুঁজে পেয়েছেন একদল বিজ্ঞানী। সুইডেন ও পোল্যান্ডের ওই গবেষণা দলটির দাবি, ‘লিসোভিৎসিয়া’ নামে ওই তৃণভোজী সরীসৃপটির আকার ছিল একটি হাতির মতো।
‘সায়েন্স’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০ কোটি বছর আগের ট্রায়াসিক যুগে ডায়নোসরের সঙ্গে হাতির সমান এসব সরীসৃপও ঘুরে বেড়াতো। যা দেখতে অনেকটা গণ্ডারের মতো। চারপেয়ে এই প্রাণীটির ফসিল বা জীবাশ্ম পাওয়া গেছে পোল্যান্ডের লিসোভিৎসে শহরের পাশে। তাই শহরের নামের সঙ্গে মিল রেখে প্রাণীটির নাম ‘লিসোভিৎসিয়া বোজানি’ রাখা হয়েছে।
এর আগে ‘ডাইসাইনোডন্ট’ প্রজাতির প্রাণীদের কথা বৈজ্ঞানিক মহলে আলোচিত হয়েছে। নতুন সন্ধান পাওয়া লিসোভিৎসিয়ার মতো ডাইসাইনোডন্ট প্রজাতির সরীসৃপও তৃণভোজী ও অন্যান্য দিক দিয়ে স্তন্যপায়ী জীবের কাছাকাছি ছিল। কিন্তু আকারের দিক থেকে লিসোভিৎসিয়া ডাইসাইনোডন্টের চেয়েও কয়েকগুণ বড়।
বিজ্ঞানীরা জানান, মূলত তৃণভোজী ওই প্রাণীটির শরীর গণ্ডারের মতো হলেও ঠোঁট
অবিকল কচ্ছপের মতো ছিল। হাতির সমান এক একটি লিসোভিৎসিয়ার দৈর্ঘ্য ছিল সাড়ে ৪ মিটার। ওজন ছিল ১০ টনের মতো। এর বিপরীতে ডাইসাইনোডন্টের আকার ইঁদুর বা বড়জোর একটি যাঁড়ের সমান ছিল বলে ধারণা তাদের।
গবেষক দলের একজন টমাস সুলেজ বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটি একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার। কারণ এর মাধ্যমে ডাইসাইনোডন্ট বিষয়ে বর্তমান গবেষণার ধারা বদলে যেতে পারে। পাশাপাশি ডায়নোসরের বিশাল আকার নিয়েও অনেক অজানা তথ্য জানাবে এই লিসোভিৎসিয়া।’
বিজ্ঞানীরা আরও জানান, প্রায় আড়াই কোটি বছর আগে পৃথিবীর তখনকার প্রায় ৯০ শতাংশ প্রজাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয় কোনো এক অজানা মহামারী। কিন্তু অনুসন্ধানে পাওয়া লিসোভিৎসিয়ার ফসিল থেকে জানা যায়, মহামারীর বেশ কিছু সময় পর, আনুমানিক ২০৫ থেকে ২১০ মিলিয়ন বছর আগে ডায়নোসরের সঙ্গে পৃথিবীতে আসে তারা। এতদিন ইতিহাসের যে অধ্যায়কে শুধু ডায়নোসরের সময় হিসেবেই বিবেচনা করা হতো, সেই ধারণাকে পুরোপুরি বদলে দিতে পারে নতুন করে খুঁজে পাওয়া এই প্রাণীটির ফসিল।