শ্বশুরবাড়িতে যুবকের লাশ
পরিবারের দাবি হত্যা, স্ত্রী বলছেন আত্মহত্যা
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি | ২৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০
ঢাকার কেরানীগঞ্জে মো. মনির (২৭) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়েছে। রবিবার মধ্যরাতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার বাহেরচর এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মনিরের স্ত্রী বলছেন, আত্মহত্যা করেছেন তার স্বামী। তবে স্বজনদের দাবি, মনিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মনিরের বাড়ি শরীয়তপুরের সূর্বহাটের পূর্বচরসন্ধি গ্রামে। পেশায় তিনি শ্রমিক ছিলেন। মনিরের স্ত্রী মেহেরুন নেসা জানান, আট বছর আগে মনিরের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের দুই মেয়ে রয়েছে এবং বর্তমানে তিনি অন্তঃসত্ত্বা। মনির যেখানে কাজ করতেন ১৫ দিন আগে সেখানে কোনো একটা বিষয় নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল। এরপর থেকে মনির নিয়মিত কাজেও যেতেন না। ১০-১২ দিন আগে শ্যালকের মোবাইল ফোন নিয়ে নিলে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। তখন তিনি রাগ করে বাবার বাড়ি চলে আসেন। দুদিন পর আবার চলে যান তার বাসায়। এরপর চার-পাঁচ দিন আগে দুজনে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি তার বাবার বাড়িতে থাকবেন এবং মনির নিয়মিত কাজ করে স্ত্রী-সন্তানের জন্য খরচ পাঠাবেন। ওইদিনই স্বামীর সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা হয় এবং তিনি বাবার বাড়িতে চলে আসেন।
মেহেরুন নেসা আরও বলেন, গত কয়েক দিন মনিরের কোনো খোঁজখবর ছিল না। গত রবিবার সকালে মনির তার শ্বশুরবাড়ির সামনে এসে মেয়েকে ডেকে তার ভোটার আইডি কার্ডটি চান। মেহেরুন নেসা মেয়েকে দিয়ে ভোটার আইডি কার্ডটি পাঠিয়ে দিলে মনির কারও সঙ্গে দেখা না করেই চলে যান। পরে রাতে খাওয়াদাওয়া করে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে রাত ১টার দিকে মেহেরুন নেসা প্রকৃতির ডাকে বের হলে ঘরের বাইরে আড়ার সঙ্গে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মনিরের লাশ দেখতে পান। তার চিৎকারে সবাই সজাগ হয়ে মনিরের লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়।
এদিকে মনিরের বোনসহ তাদের পরিবারের অন্য সদস্যরা বলছেন, পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে তা আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চাইছে মনিরের শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
বোন নুরুন নাহার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার ভাই নিরীহ প্রকৃতির ছিল। ফাঁসি দেওয়া লাশ পুলিশ নামাবে, কিন্তু পুলিশ আসার আগে তারা নিজেরাই নাকি লাশ নামিয়েছে। তারা কেন লাশ নামাবে? আর আমার ভাইয়ের লাশের কান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে দেখলাম। এটা ফাঁসি হতে পারে না। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাই।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার এসআই মো. খাইরুল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করি। সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’
শেয়ার করুন
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি | ২৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০

ঢাকার কেরানীগঞ্জে মো. মনির (২৭) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়েছে। রবিবার মধ্যরাতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার বাহেরচর এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মনিরের স্ত্রী বলছেন, আত্মহত্যা করেছেন তার স্বামী। তবে স্বজনদের দাবি, মনিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মনিরের বাড়ি শরীয়তপুরের সূর্বহাটের পূর্বচরসন্ধি গ্রামে। পেশায় তিনি শ্রমিক ছিলেন। মনিরের স্ত্রী মেহেরুন নেসা জানান, আট বছর আগে মনিরের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের দুই মেয়ে রয়েছে এবং বর্তমানে তিনি অন্তঃসত্ত্বা। মনির যেখানে কাজ করতেন ১৫ দিন আগে সেখানে কোনো একটা বিষয় নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল। এরপর থেকে মনির নিয়মিত কাজেও যেতেন না। ১০-১২ দিন আগে শ্যালকের মোবাইল ফোন নিয়ে নিলে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। তখন তিনি রাগ করে বাবার বাড়ি চলে আসেন। দুদিন পর আবার চলে যান তার বাসায়। এরপর চার-পাঁচ দিন আগে দুজনে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি তার বাবার বাড়িতে থাকবেন এবং মনির নিয়মিত কাজ করে স্ত্রী-সন্তানের জন্য খরচ পাঠাবেন। ওইদিনই স্বামীর সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা হয় এবং তিনি বাবার বাড়িতে চলে আসেন।
মেহেরুন নেসা আরও বলেন, গত কয়েক দিন মনিরের কোনো খোঁজখবর ছিল না। গত রবিবার সকালে মনির তার শ্বশুরবাড়ির সামনে এসে মেয়েকে ডেকে তার ভোটার আইডি কার্ডটি চান। মেহেরুন নেসা মেয়েকে দিয়ে ভোটার আইডি কার্ডটি পাঠিয়ে দিলে মনির কারও সঙ্গে দেখা না করেই চলে যান। পরে রাতে খাওয়াদাওয়া করে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে রাত ১টার দিকে মেহেরুন নেসা প্রকৃতির ডাকে বের হলে ঘরের বাইরে আড়ার সঙ্গে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মনিরের লাশ দেখতে পান। তার চিৎকারে সবাই সজাগ হয়ে মনিরের লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়।
এদিকে মনিরের বোনসহ তাদের পরিবারের অন্য সদস্যরা বলছেন, পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে তা আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চাইছে মনিরের শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
বোন নুরুন নাহার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার ভাই নিরীহ প্রকৃতির ছিল। ফাঁসি দেওয়া লাশ পুলিশ নামাবে, কিন্তু পুলিশ আসার আগে তারা নিজেরাই নাকি লাশ নামিয়েছে। তারা কেন লাশ নামাবে? আর আমার ভাইয়ের লাশের কান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে দেখলাম। এটা ফাঁসি হতে পারে না। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাই।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার এসআই মো. খাইরুল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করি। সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’