ইঁদুরের শহর
রূপান্তর ডেস্ক | ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০
শহরের ফুটপাতঘেঁষা উঁচু দালানগুলোর একেবারে পাদদেশে গড়ে উঠেছে আরেক শহর। এক ফুট উচ্চতার বহুতল ভবন, আধা ফুট উচ্চতার রেস্টুরেন্ট, ফার্মেসি, বইয়ের দোকান কী নেই সেই খুদে শহরে! আলোক ঝলমলে ছোট ছোট সেই রেস্টুরেন্ট কিংবা বাড়িগুলোর সামনে পার্ক করা আছে ছোট্ট ছোট্ট গাড়িও। কোথাও আছে ফুটপাতে খুদে টেবিল-চেয়ার পাতা স্ট্রিট ফুডের দোকানও। বিনোদনের জন্য আছে শিশুপার্কসহ সিনেমা হলও। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, ইউরোপের বিভিন্ন শহরের রাস্তার পাশের এসব শহরগুলো তৈরি করা হয়েছে রাস্তার ইঁদুরদের জন্য!
সুইডেন, ব্রিটেন, ফ্রান্সসহ ইউরোপের অনেক বড় বড় শহরের ফুটপাত ঘেঁষে গড়ে ওঠা এসব খুদে শহরগুলো এখন ফটোগ্রাফারদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। দর্শনার্থীদের রহস্যের গন্ধও দিচ্ছে এ শহরগুলো। কে বা কারা ইঁদুরদের জন্য এ খুদে শহর গড়ছে তার কোনো হদিস নেই কারো কাছে।
এ ধরনের খুদে বাড়ি বা শহর প্রথম নজরে আসে গত বছর আগস্টে, সুইডেনের স্টকহোমের একটি রাস্তায়। এক ফটোগ্রাফার একদম নিখুঁত নকশার স্থাপনার ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে পোস্ট করলে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। এরপর এ ধরনের বাড়ির খোঁজ মেলে প্যারিস, লন্ডনসহ অঞ্চলটির আরও কয়েকটি শহরে। বিভিন্ন শহরে একই ধরনের স্থাপনাগুলো কারা তৈরি করেছে তার কোনো দিশা মেলেনি কোনো শহরেই। তবে যে বড় ভবনগুলোর পাশে খুদে ফার্মেসি বা রেস্টুরেন্ট গড়ে তোলা হয়েছে সেখানেই ইঁদুরের মাথার অনুকরণে একটি লোগো আছে। যার থেকে মনে করা হচ্ছে কোনো প্রাণী অধিকার রক্ষার গোষ্ঠী এ কাজ করেছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ইন্সটাগ্রাম অ্যানিনোমাস-এমএমএক্স নামের একটি আইডি থেকেও এসব খুদে শহরের ছবি দেওয়া হচ্ছে নিয়মিত। এ গ্রুপটির পক্ষ থেকে কিছুদিন আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে একটি ইমেইল পাঠিয়ে জানানো হয়, নিজেদের গোপনে রাখলে তাদের এ কাজের পেছনে কোনো গোপন উদ্দেশ্য নেই। তাদের এ উদ্যোগ একদিকে যেমন শিশুদের আনন্দ দেবে তেমনি প্রাণ-প্রকৃতির প্রতি সচেতনতা ও ভালোবাসার জন্ম দেবে।
একই কথা বলেছেন খুদে শহরগুলো দেখতে আসা বা ছবি তুলতে আশা লোকজনও। তারা বলছেন, এ উদ্যোগ আসলেই মানুষের মনের মধ্যে ছোট প্রাণীগুলোর জন্য অন্যরকম অনুভূতির জন্ম দেয়। মানুষের মতো অন্য প্রাণীদেরও যে বাঁচার অধিকার আছে তা বুঝতে শেখায়।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম হাফিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ধরনের উদ্যোগ ২০১৬ সালের দিকে শুরু হলেও করোনাকালেই বেশি কাজ করেছে গ্রুপটি। লকডাউনের ফাঁকা শহরের রাস্তার পাশে সহজেই কাজ করা গেছে নিজেদের পরিচয় আড়ালে রেখেই। গত আগস্টে স্টকহোমেই এমন ২৫টি স্থাপনার খোঁজ মেলে। অবশ্য এর মধ্যে অনেক স্থাপনাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা কোনোগুলো ভেঙে ফেলেছেন বড় বাড়ির মালিকরা! তবে গ্রুপটির আশা, এ উদ্যোগ আদতে দেখতে ইঁদুরের জন্য মনে হলেও আখেরে ছোট ছোট প্রাণীগুলোর প্রতি মানুষের ভালোবাসার জন্ম দেবে।
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০

শহরের ফুটপাতঘেঁষা উঁচু দালানগুলোর একেবারে পাদদেশে গড়ে উঠেছে আরেক শহর। এক ফুট উচ্চতার বহুতল ভবন, আধা ফুট উচ্চতার রেস্টুরেন্ট, ফার্মেসি, বইয়ের দোকান কী নেই সেই খুদে শহরে! আলোক ঝলমলে ছোট ছোট সেই রেস্টুরেন্ট কিংবা বাড়িগুলোর সামনে পার্ক করা আছে ছোট্ট ছোট্ট গাড়িও। কোথাও আছে ফুটপাতে খুদে টেবিল-চেয়ার পাতা স্ট্রিট ফুডের দোকানও। বিনোদনের জন্য আছে শিশুপার্কসহ সিনেমা হলও। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, ইউরোপের বিভিন্ন শহরের রাস্তার পাশের এসব শহরগুলো তৈরি করা হয়েছে রাস্তার ইঁদুরদের জন্য!
সুইডেন, ব্রিটেন, ফ্রান্সসহ ইউরোপের অনেক বড় বড় শহরের ফুটপাত ঘেঁষে গড়ে ওঠা এসব খুদে শহরগুলো এখন ফটোগ্রাফারদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। দর্শনার্থীদের রহস্যের গন্ধও দিচ্ছে এ শহরগুলো। কে বা কারা ইঁদুরদের জন্য এ খুদে শহর গড়ছে তার কোনো হদিস নেই কারো কাছে।
এ ধরনের খুদে বাড়ি বা শহর প্রথম নজরে আসে গত বছর আগস্টে, সুইডেনের স্টকহোমের একটি রাস্তায়। এক ফটোগ্রাফার একদম নিখুঁত নকশার স্থাপনার ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে পোস্ট করলে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। এরপর এ ধরনের বাড়ির খোঁজ মেলে প্যারিস, লন্ডনসহ অঞ্চলটির আরও কয়েকটি শহরে। বিভিন্ন শহরে একই ধরনের স্থাপনাগুলো কারা তৈরি করেছে তার কোনো দিশা মেলেনি কোনো শহরেই। তবে যে বড় ভবনগুলোর পাশে খুদে ফার্মেসি বা রেস্টুরেন্ট গড়ে তোলা হয়েছে সেখানেই ইঁদুরের মাথার অনুকরণে একটি লোগো আছে। যার থেকে মনে করা হচ্ছে কোনো প্রাণী অধিকার রক্ষার গোষ্ঠী এ কাজ করেছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ইন্সটাগ্রাম অ্যানিনোমাস-এমএমএক্স নামের একটি আইডি থেকেও এসব খুদে শহরের ছবি দেওয়া হচ্ছে নিয়মিত। এ গ্রুপটির পক্ষ থেকে কিছুদিন আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে একটি ইমেইল পাঠিয়ে জানানো হয়, নিজেদের গোপনে রাখলে তাদের এ কাজের পেছনে কোনো গোপন উদ্দেশ্য নেই। তাদের এ উদ্যোগ একদিকে যেমন শিশুদের আনন্দ দেবে তেমনি প্রাণ-প্রকৃতির প্রতি সচেতনতা ও ভালোবাসার জন্ম দেবে।
একই কথা বলেছেন খুদে শহরগুলো দেখতে আসা বা ছবি তুলতে আশা লোকজনও। তারা বলছেন, এ উদ্যোগ আসলেই মানুষের মনের মধ্যে ছোট প্রাণীগুলোর জন্য অন্যরকম অনুভূতির জন্ম দেয়। মানুষের মতো অন্য প্রাণীদেরও যে বাঁচার অধিকার আছে তা বুঝতে শেখায়।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম হাফিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ধরনের উদ্যোগ ২০১৬ সালের দিকে শুরু হলেও করোনাকালেই বেশি কাজ করেছে গ্রুপটি। লকডাউনের ফাঁকা শহরের রাস্তার পাশে সহজেই কাজ করা গেছে নিজেদের পরিচয় আড়ালে রেখেই। গত আগস্টে স্টকহোমেই এমন ২৫টি স্থাপনার খোঁজ মেলে। অবশ্য এর মধ্যে অনেক স্থাপনাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা কোনোগুলো ভেঙে ফেলেছেন বড় বাড়ির মালিকরা! তবে গ্রুপটির আশা, এ উদ্যোগ আদতে দেখতে ইঁদুরের জন্য মনে হলেও আখেরে ছোট ছোট প্রাণীগুলোর প্রতি মানুষের ভালোবাসার জন্ম দেবে।