রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ভিসির বাসভবনে তালা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের
রাবি প্রতিনিধি | ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চাকরির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা। এ দাবিতে গত সোমবার রাতে উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানের বাসভবনের প্রধান ফটকে তালা দেন তারা। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সারারাত অবস্থানও করেন এসব চাকরিপ্রত্যাশী। তবে গতকাল মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা লাগিয়ে দিয়ে তারা চাকরিপ্রত্যাশী নয়, ১৯৭৩-এর অ্যাক্ট অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দাবিতে তাদের আন্দোলন বলে দাবি করেন। অবশ্য এটাকে চাকরিপ্রত্যাশীদের কৌশল বলে মনে করছেন সবাই।
জানা গেছে, গতকাল সকাল ৯টায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে সরে এসে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তার কিছুক্ষণ পর আন্দোলনকারীদের ছয় সদস্যের একটি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও অধ্যাপক চৌধুরী মুহম্মদ জাকারিয়া, রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম ও প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমানের সঙ্গে আলোচনায় বসে। আলোচনা শেষে বেরিয়ে এসে আন্দোলনকারীরা জানান, প্রশাসনের সঙ্গে তাদের আলোচনা ‘ফলপ্রসূ’ হয়নি। আজ বুধবার দুপুর ১২টায় উপাচার্য তাদের সঙ্গে আবার বসতে চেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের মৃত্যুর খবরে গতকালের মতো আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।
আন্দোলনকারীদের দাবি, তারা ক্যাম্পাসে চাকরির দাবিতে আন্দোলন করছেন না, বরং ৭৩-এর অ্যাক্ট অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় যেন পরিচালিত হয় সেই দাবিতে তাদের আন্দোলন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মাহাফুজ আলামীন বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৩-এর অ্যাক্ট বলবৎ করতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগের বিষয়ে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাহলে এটা প্রশাসন মানবে কেন? এ বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এটাকে তার নিয়মে চলতে দিতে হবে।’
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের একটি দল আমাদের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেছে। তারা মূলত আমাদের বলেছে, তারা এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছে। পড়াশোনা শেষে চাকরির জন্য আবেদনও করেছে। কিন্তু কেন তাহলে তাদের চাকরি হচ্ছে না।’
জানা গেছে, গত সোমবার দুপুরে অফিস চলাকালে রেজিস্ট্রার দপ্তরে অ্যাডহক ভিত্তিতে জালাল নামে একজন প্রতিবন্ধীর চাকরি নিশ্চিত হলে সন্ধ্যার দিকে অন্য চাকরিপ্রত্যাশীরা উপাচার্য ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন। কিছুক্ষণ অবস্থানের পর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার নেতৃত্বে ছয়জনের একটি দল উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে। উপাচার্য তাদের চাকরি নিশ্চিতের বিষয়ে আশ্বস্ত না করায় তারা উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। রাতভর তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনেই অবস্থান করেন।
শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘২০১৭ সাল থেকে উপাচার্য আশ্বাস দিলেও নানা অজুহাতে ছাত্রলীগের ছেলেদের চাকরি দিচ্ছেন না। এরই মধ্যে অ্যাডহকে একজন নিয়োগের খবরে বিক্ষুব্ধরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।’
এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের চিঠি পেয়ে প্রতিবন্ধী ছেলেটিকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় রাবি ক্যাম্পাসে সব ধরনের নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ফলে আমার পক্ষে কাউকে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়।’
শেয়ার করুন
রাবি প্রতিনিধি | ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চাকরির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা। এ দাবিতে গত সোমবার রাতে উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানের বাসভবনের প্রধান ফটকে তালা দেন তারা। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সারারাত অবস্থানও করেন এসব চাকরিপ্রত্যাশী। তবে গতকাল মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা লাগিয়ে দিয়ে তারা চাকরিপ্রত্যাশী নয়, ১৯৭৩-এর অ্যাক্ট অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দাবিতে তাদের আন্দোলন বলে দাবি করেন। অবশ্য এটাকে চাকরিপ্রত্যাশীদের কৌশল বলে মনে করছেন সবাই।
জানা গেছে, গতকাল সকাল ৯টায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে সরে এসে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তার কিছুক্ষণ পর আন্দোলনকারীদের ছয় সদস্যের একটি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও অধ্যাপক চৌধুরী মুহম্মদ জাকারিয়া, রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম ও প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমানের সঙ্গে আলোচনায় বসে। আলোচনা শেষে বেরিয়ে এসে আন্দোলনকারীরা জানান, প্রশাসনের সঙ্গে তাদের আলোচনা ‘ফলপ্রসূ’ হয়নি। আজ বুধবার দুপুর ১২টায় উপাচার্য তাদের সঙ্গে আবার বসতে চেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের মৃত্যুর খবরে গতকালের মতো আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।
আন্দোলনকারীদের দাবি, তারা ক্যাম্পাসে চাকরির দাবিতে আন্দোলন করছেন না, বরং ৭৩-এর অ্যাক্ট অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় যেন পরিচালিত হয় সেই দাবিতে তাদের আন্দোলন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মাহাফুজ আলামীন বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৩-এর অ্যাক্ট বলবৎ করতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগের বিষয়ে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাহলে এটা প্রশাসন মানবে কেন? এ বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এটাকে তার নিয়মে চলতে দিতে হবে।’
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের একটি দল আমাদের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেছে। তারা মূলত আমাদের বলেছে, তারা এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছে। পড়াশোনা শেষে চাকরির জন্য আবেদনও করেছে। কিন্তু কেন তাহলে তাদের চাকরি হচ্ছে না।’
জানা গেছে, গত সোমবার দুপুরে অফিস চলাকালে রেজিস্ট্রার দপ্তরে অ্যাডহক ভিত্তিতে জালাল নামে একজন প্রতিবন্ধীর চাকরি নিশ্চিত হলে সন্ধ্যার দিকে অন্য চাকরিপ্রত্যাশীরা উপাচার্য ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন। কিছুক্ষণ অবস্থানের পর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার নেতৃত্বে ছয়জনের একটি দল উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে। উপাচার্য তাদের চাকরি নিশ্চিতের বিষয়ে আশ্বস্ত না করায় তারা উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। রাতভর তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনেই অবস্থান করেন।
শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘২০১৭ সাল থেকে উপাচার্য আশ্বাস দিলেও নানা অজুহাতে ছাত্রলীগের ছেলেদের চাকরি দিচ্ছেন না। এরই মধ্যে অ্যাডহকে একজন নিয়োগের খবরে বিক্ষুব্ধরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।’
এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের চিঠি পেয়ে প্রতিবন্ধী ছেলেটিকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় রাবি ক্যাম্পাসে সব ধরনের নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ফলে আমার পক্ষে কাউকে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়।’