প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়ার নামে প্রতারণা
প্রতারকচক্রের পেটে ১৫০ পরিবারের ৩ কোটি টাকা
ওমর ফারুক, সাভার | ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে বাড়ি ও নলকূপ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঢাকার সাভারের বিরুলিয়া ও আশুলিয়ার প্রায় দেড়শ পরিবারের কাছ থেকে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে। ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ (যার জমি আছে ঘর নেই, তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ) সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের এই সেøাগানকে পুঁজি করে ‘বঙ্গবন্ধু পক্ষাঘাত ও পেশাজীবী পরিষদ’ নামে একটি ভুঁইফোঁড় সংগঠনের কথিত মহাসচিব আল-আমিন ওই টাকা আত্মসাতের পর আত্মগোপন করেছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। আর আল-আমিনকে টাকা হাতাতে বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এবং আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের দুই নারী সদস্যসহ স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ও ক্ষমতাসীন দলের নারী নেত্রীরা সহায়তা করেছেন বলেও দাবি তাদের।
এদিকে ‘বঙ্গবন্ধু পক্ষাঘাত ও পেশাজীবী পরিষদের’ মাধ্যমে সরকারের ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ঘর ও নলকূপ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে সংগঠনটির মহাসচিব আল-আমিনের প্রতারণার বিষয়টি অবহিত করে সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর সম্প্রতি একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন একই সংগঠনের সভানেত্রী ঝুমা খান।
ওই অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ঘর তৈরি করে দেওয়ার কথা বলে সাভারের বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধি, নারী নেত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নারী নেত্রীদের নিয়ে একটি প্রতারকচক্র গড়ে তুলেছেন সাভার ডিবি কার্যালয় ভবনের নিচতলায় অবস্থিত ‘বিট ফেয়ার ফ্যাশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আল-আমিন। তিনি নিজেকে ‘বঙ্গবন্ধু পক্ষাঘাত ও পেশাজীবী পরিষদ’-এর মহাসচিব পরিচয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ঘর তৈরি করে দেওয়ার কথা বলে প্রতারকচক্রের অন্য সদস্যদের মাধ্যমে সাভারের বিরুলিয়া ও আশুলিয়া এলাকার দেড়শ হতদরিদ্র পরিবারের কাছ থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এর মধ্যে বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য সেলিনা বেগম এবং আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য সালমা বেগম প্রায় ৪০টি পরিবারের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা মূল্যের ঘর তৈরি করে দেওয়ার কথা বলে পরিবারপ্রতি ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেন। কাউকে বলা হয়েছে এনজিও থেকে, আবার কাউকে বলা হয়েছে সরকারের ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ থেকে দেওয়া হবে এসব ঘর। কিন্তু জনপ্রতিনিধিদের কথামতো নিজেদের সারাজীবনের কষ্টার্জিত শেষ সম্বলটুকু তাদের হাতে তুলে দিয়েও মেলেনি কাক্সিক্ষত ঘর। প্রতারকচক্রটির সদস্যদের চাহিদামাফিক টাকা দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে ঘর বুঝে না পেয়ে এখন অন্যের জমিতে ভাঙা ঘরে বসবাস করছেন ভুক্তভোগীরা। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার ঘরের জন্য দেওয়া টাকার বিষয়ে জানতে গিয়ে প্রতারকচক্রের সদস্যদের কাছে লাঞ্ছিতও হয়েছেন।
ভুক্তভোগী বয়োবৃদ্ধ মালেক হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দুটি পাকা ঘরের জন্য ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিছি সেলিনা মেম্বারকে। দুই মাসের মধ্যে ঘর দেওয়ার কথা থাকলেও প্রায় ছয় মাস পার হয়ে গেছে। একদিন কিছু লোক আমার ঘরটি সরিয়ে নিতে বলে ঘরের জন্য লেয়ার (ভিত) কেটে চার হাজার ইট দিয়ে পিড়া (ঘরের নিচের দেয়াল) দিয়ে চলে যায়। এখন নিজের ভালো ঘরটিও নতুন ঘরের জন্য সরিয়ে অন্যের জমিতে কোনোরকমে থাকলেও তারা জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। ছয় মাস পার হয়ে গেলে ঘরের বিষয়ে জানতে মেম্বারের কাছে গেলেও সে লাঞ্ছিত করে তারিয়ে দেয়। এখন কোথায় যাব? কী করব? আর কার কাছে এ বিচার চাইব? তাও জানি না।’
আরেক ভুক্তভোগী মো. হাফিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমি লোন করে সেলিনা মেম্বারকে একটি ঘরের জন্য ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা তুলে দিই। কথা ছিল দুটি শয়নকক্ষ, একটি রান্নাঘর, একটি গেস্টরুম ও একটি শৌচাগার নির্মাণ করে দেওয়ার। কিন্তু সেলিনা শুধু তিন গাড়ি ইট আর এক গাড়ি খোয়া দেয়। পরে আমি নিজে আরও ইট আর বালু দিই। এভাবে দেয়াল নির্মাণ সম্পন্ন হলেও বাকি কাজ করে দিচ্ছে না সে। এ অবস্থায় আমি খুব কষ্টে পরিবার নিয়ে অন্যের জায়গায় বসবাস করছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য সদস্য সেলিনা আক্তার বলেন, ‘আমার পাশেই আশুলিয়া ইউপির মহিলা সদস্য সালমা আক্তার এনজিও থেকে কয়েকজনকে টাকা নিয়ে দিয়েছে বলে জানতে পারি। সামনে নির্বাচন, যদি অল্প টাকায় আমিও গরিব দুঃখীদের ভালো ঘর করে দিতে পারি সেজন্য সালমার সঙ্গে যোগাযোগ করি। সালমা বলেন, ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে একটি বিদেশি সংস্থা ঘর দিচ্ছে, তুমিও চাইলে নিতে পারো। তার কথায় চারজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করি। পরে তিনি (সালমা) আরও প্রায় ১৬টি ঘর নেওয়ার কথা বলেন। আমিও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সালমাকে দিই। এখন সালমা আর কাজও করছেন না, টাকাও দিচ্ছেন না।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য সালমা আক্তার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমি চারজনের কাছ থেকে ৩০ হাজার করে টাকা নিয়ে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছি। কিন্তু সেলিনা মেম্বার আমাকে ঘর নির্মাণের জন্য কোনো টাকা দেয়নি।’
অন্যদিকে ‘বঙ্গবন্ধু পক্ষাঘাত ও পেশাজীবী পরিষদ’-এর মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগকারী ঝুমা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘৬০টি ঘর ও নলকূপের জন্য আল-আমিন আমার কাছ থেকে ৭০ লাখ টাকা নেয়। এর মধ্যে আটটি ঘর ও ১০টি নলকূপ দেওয়ার পর থেকে সে আত্মগোপনে চলে গেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে ঝুমা খানের কাছ থেকে নেওয়া প্রতারকচক্রের প্রধান আল-আমিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। আর সরকারের ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ঘর ও নলকূপ দেওয়ার কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম আরা নীপা বলেন, ‘আমরা বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখব। এখানে আর্থিক অনিয়ম পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শেয়ার করুন
ওমর ফারুক, সাভার | ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে বাড়ি ও নলকূপ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঢাকার সাভারের বিরুলিয়া ও আশুলিয়ার প্রায় দেড়শ পরিবারের কাছ থেকে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে। ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ (যার জমি আছে ঘর নেই, তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ) সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের এই সেøাগানকে পুঁজি করে ‘বঙ্গবন্ধু পক্ষাঘাত ও পেশাজীবী পরিষদ’ নামে একটি ভুঁইফোঁড় সংগঠনের কথিত মহাসচিব আল-আমিন ওই টাকা আত্মসাতের পর আত্মগোপন করেছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। আর আল-আমিনকে টাকা হাতাতে বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এবং আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের দুই নারী সদস্যসহ স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ও ক্ষমতাসীন দলের নারী নেত্রীরা সহায়তা করেছেন বলেও দাবি তাদের।
এদিকে ‘বঙ্গবন্ধু পক্ষাঘাত ও পেশাজীবী পরিষদের’ মাধ্যমে সরকারের ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ঘর ও নলকূপ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে সংগঠনটির মহাসচিব আল-আমিনের প্রতারণার বিষয়টি অবহিত করে সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর সম্প্রতি একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন একই সংগঠনের সভানেত্রী ঝুমা খান।
ওই অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ঘর তৈরি করে দেওয়ার কথা বলে সাভারের বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধি, নারী নেত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নারী নেত্রীদের নিয়ে একটি প্রতারকচক্র গড়ে তুলেছেন সাভার ডিবি কার্যালয় ভবনের নিচতলায় অবস্থিত ‘বিট ফেয়ার ফ্যাশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আল-আমিন। তিনি নিজেকে ‘বঙ্গবন্ধু পক্ষাঘাত ও পেশাজীবী পরিষদ’-এর মহাসচিব পরিচয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ঘর তৈরি করে দেওয়ার কথা বলে প্রতারকচক্রের অন্য সদস্যদের মাধ্যমে সাভারের বিরুলিয়া ও আশুলিয়া এলাকার দেড়শ হতদরিদ্র পরিবারের কাছ থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এর মধ্যে বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য সেলিনা বেগম এবং আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য সালমা বেগম প্রায় ৪০টি পরিবারের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা মূল্যের ঘর তৈরি করে দেওয়ার কথা বলে পরিবারপ্রতি ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেন। কাউকে বলা হয়েছে এনজিও থেকে, আবার কাউকে বলা হয়েছে সরকারের ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ থেকে দেওয়া হবে এসব ঘর। কিন্তু জনপ্রতিনিধিদের কথামতো নিজেদের সারাজীবনের কষ্টার্জিত শেষ সম্বলটুকু তাদের হাতে তুলে দিয়েও মেলেনি কাক্সিক্ষত ঘর। প্রতারকচক্রটির সদস্যদের চাহিদামাফিক টাকা দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে ঘর বুঝে না পেয়ে এখন অন্যের জমিতে ভাঙা ঘরে বসবাস করছেন ভুক্তভোগীরা। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার ঘরের জন্য দেওয়া টাকার বিষয়ে জানতে গিয়ে প্রতারকচক্রের সদস্যদের কাছে লাঞ্ছিতও হয়েছেন।
ভুক্তভোগী বয়োবৃদ্ধ মালেক হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দুটি পাকা ঘরের জন্য ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিছি সেলিনা মেম্বারকে। দুই মাসের মধ্যে ঘর দেওয়ার কথা থাকলেও প্রায় ছয় মাস পার হয়ে গেছে। একদিন কিছু লোক আমার ঘরটি সরিয়ে নিতে বলে ঘরের জন্য লেয়ার (ভিত) কেটে চার হাজার ইট দিয়ে পিড়া (ঘরের নিচের দেয়াল) দিয়ে চলে যায়। এখন নিজের ভালো ঘরটিও নতুন ঘরের জন্য সরিয়ে অন্যের জমিতে কোনোরকমে থাকলেও তারা জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। ছয় মাস পার হয়ে গেলে ঘরের বিষয়ে জানতে মেম্বারের কাছে গেলেও সে লাঞ্ছিত করে তারিয়ে দেয়। এখন কোথায় যাব? কী করব? আর কার কাছে এ বিচার চাইব? তাও জানি না।’
আরেক ভুক্তভোগী মো. হাফিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমি লোন করে সেলিনা মেম্বারকে একটি ঘরের জন্য ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা তুলে দিই। কথা ছিল দুটি শয়নকক্ষ, একটি রান্নাঘর, একটি গেস্টরুম ও একটি শৌচাগার নির্মাণ করে দেওয়ার। কিন্তু সেলিনা শুধু তিন গাড়ি ইট আর এক গাড়ি খোয়া দেয়। পরে আমি নিজে আরও ইট আর বালু দিই। এভাবে দেয়াল নির্মাণ সম্পন্ন হলেও বাকি কাজ করে দিচ্ছে না সে। এ অবস্থায় আমি খুব কষ্টে পরিবার নিয়ে অন্যের জায়গায় বসবাস করছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য সদস্য সেলিনা আক্তার বলেন, ‘আমার পাশেই আশুলিয়া ইউপির মহিলা সদস্য সালমা আক্তার এনজিও থেকে কয়েকজনকে টাকা নিয়ে দিয়েছে বলে জানতে পারি। সামনে নির্বাচন, যদি অল্প টাকায় আমিও গরিব দুঃখীদের ভালো ঘর করে দিতে পারি সেজন্য সালমার সঙ্গে যোগাযোগ করি। সালমা বলেন, ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে একটি বিদেশি সংস্থা ঘর দিচ্ছে, তুমিও চাইলে নিতে পারো। তার কথায় চারজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করি। পরে তিনি (সালমা) আরও প্রায় ১৬টি ঘর নেওয়ার কথা বলেন। আমিও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সালমাকে দিই। এখন সালমা আর কাজও করছেন না, টাকাও দিচ্ছেন না।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য সালমা আক্তার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমি চারজনের কাছ থেকে ৩০ হাজার করে টাকা নিয়ে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছি। কিন্তু সেলিনা মেম্বার আমাকে ঘর নির্মাণের জন্য কোনো টাকা দেয়নি।’
অন্যদিকে ‘বঙ্গবন্ধু পক্ষাঘাত ও পেশাজীবী পরিষদ’-এর মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগকারী ঝুমা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘৬০টি ঘর ও নলকূপের জন্য আল-আমিন আমার কাছ থেকে ৭০ লাখ টাকা নেয়। এর মধ্যে আটটি ঘর ও ১০টি নলকূপ দেওয়ার পর থেকে সে আত্মগোপনে চলে গেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে ঝুমা খানের কাছ থেকে নেওয়া প্রতারকচক্রের প্রধান আল-আমিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। আর সরকারের ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ঘর ও নলকূপ দেওয়ার কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম আরা নীপা বলেন, ‘আমরা বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখব। এখানে আর্থিক অনিয়ম পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’