এনআইডি স্বরাষ্ট্রে গেলে সুষ্ঠু নির্বাচন বিনষ্ট হবে : ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৫ জুন, ২০২১ ০০:০০
জাতীয় পরিচয়পত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গেলে সুষ্ঠু নির্বাচন বিনষ্ট হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেওয়ার ঘটনা উদ্বেগের। এ ঘটনা অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ন্যূনতম সম্ভাবনাটুকু বিনষ্ট করবে। অবিলম্বে এহেন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে বিএনপি।’ গতকাল সোমবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি মনে করে, জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যাবলি ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক পরিচালিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে যারা কমিশনের দায়িত্ব পালন করছেন তারা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হলেও কমিশন সংবিধান অনুযায়ী একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতার সঙ্গেই দায়িত্ব পালন করার কথা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারের অধীনে মন্ত্রণালয়।’
তিনি বলেন, ‘বিগত এক যুগের অভিজ্ঞতায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারের ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করছে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কর্তৃত্ব হস্তান্তর করা হলে তা স্বাধীন নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ন্যূনতম সম্ভাবনাটুকুও বিনষ্ট করবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে, এ ধরনের সিদ্ধান্ত হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হলে তা ভবিষ্যতে গণতন্ত্রের ন্যূনতম পরিসরকেও ধ্বংস করবে এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াকে চিরতরে ধ্বংস করবে।’
‘বিদেশনির্ভর বিএনপির রাজনীতি এখন শেকড় থেকে বিচ্ছিন্ন’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপির শেকড় আছে বলেই বিএনপি টিকে আছে। এত নির্যাতন, গুম-খুন, হাজার হাজার মামলার পরও বিএনপি টিকে আছে শুধু এই দলের “ডিপ রুট”, মানুষের হৃদয়ের অনেক গভীর চলে গেছে বিএনপি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি অতিমাত্রায় ঋণনির্ভর হয়ে পড়েছে যা এখন শেষ সীমায় পৌঁছে যাচ্ছে। অর্থনীতিতে গত এক যুগ ধরে সরকারের ভ্রান্ত অর্থনৈতিক নীতির বাস্তবায়ন চলছে। যার প্রভাবে এক ধরনের মন্দাভাব চলছে, উৎপাদন খাত শ্লথ হয়ে পড়েছে। ফলে রাজস্ব আয় কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না। ভ্যাট, শুল্ক ও আয়কর সব ক্ষেত্রে আদায় কম। আয় কমে যাওয়ায় খুব স্বাভাবিকভাবেই খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। তাছাড়া একগুচ্ছ বৃহৎ মেগা প্রকল্প, আছে দৈনন্দিন খরচ। বছরের পর বছর ধরে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করে ব্যয় অযৌক্তিকভাবে বাড়াচ্ছে সরকার। সব মিলিয়ে ব্যয় বেড়েই চলেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমার ফেইসবুক, টুইটার এগুলোর রহস্য আমি খুব উদ্বিগ্ন। আমি অনেকবার বলেছি। আমি ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার চিঠি দিয়েছি, উকিল নোটিস দিয়েছি। তারপরও দেখি যে, আমার নামে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট খোলা আছে।’
গত শনিবার অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। অংশ নেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৫ জুন, ২০২১ ০০:০০

জাতীয় পরিচয়পত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গেলে সুষ্ঠু নির্বাচন বিনষ্ট হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেওয়ার ঘটনা উদ্বেগের। এ ঘটনা অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ন্যূনতম সম্ভাবনাটুকু বিনষ্ট করবে। অবিলম্বে এহেন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে বিএনপি।’ গতকাল সোমবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি মনে করে, জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যাবলি ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক পরিচালিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে যারা কমিশনের দায়িত্ব পালন করছেন তারা নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হলেও কমিশন সংবিধান অনুযায়ী একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতার সঙ্গেই দায়িত্ব পালন করার কথা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারের অধীনে মন্ত্রণালয়।’
তিনি বলেন, ‘বিগত এক যুগের অভিজ্ঞতায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারের ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করছে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কর্তৃত্ব হস্তান্তর করা হলে তা স্বাধীন নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ন্যূনতম সম্ভাবনাটুকুও বিনষ্ট করবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে, এ ধরনের সিদ্ধান্ত হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হলে তা ভবিষ্যতে গণতন্ত্রের ন্যূনতম পরিসরকেও ধ্বংস করবে এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াকে চিরতরে ধ্বংস করবে।’
‘বিদেশনির্ভর বিএনপির রাজনীতি এখন শেকড় থেকে বিচ্ছিন্ন’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপির শেকড় আছে বলেই বিএনপি টিকে আছে। এত নির্যাতন, গুম-খুন, হাজার হাজার মামলার পরও বিএনপি টিকে আছে শুধু এই দলের “ডিপ রুট”, মানুষের হৃদয়ের অনেক গভীর চলে গেছে বিএনপি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি অতিমাত্রায় ঋণনির্ভর হয়ে পড়েছে যা এখন শেষ সীমায় পৌঁছে যাচ্ছে। অর্থনীতিতে গত এক যুগ ধরে সরকারের ভ্রান্ত অর্থনৈতিক নীতির বাস্তবায়ন চলছে। যার প্রভাবে এক ধরনের মন্দাভাব চলছে, উৎপাদন খাত শ্লথ হয়ে পড়েছে। ফলে রাজস্ব আয় কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না। ভ্যাট, শুল্ক ও আয়কর সব ক্ষেত্রে আদায় কম। আয় কমে যাওয়ায় খুব স্বাভাবিকভাবেই খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। তাছাড়া একগুচ্ছ বৃহৎ মেগা প্রকল্প, আছে দৈনন্দিন খরচ। বছরের পর বছর ধরে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করে ব্যয় অযৌক্তিকভাবে বাড়াচ্ছে সরকার। সব মিলিয়ে ব্যয় বেড়েই চলেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমার ফেইসবুক, টুইটার এগুলোর রহস্য আমি খুব উদ্বিগ্ন। আমি অনেকবার বলেছি। আমি ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার চিঠি দিয়েছি, উকিল নোটিস দিয়েছি। তারপরও দেখি যে, আমার নামে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট খোলা আছে।’
গত শনিবার অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। অংশ নেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।