বাজেট নিয়ে আলোচনা
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ১৫% করের বিরোধিতা সংসদে
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৫ জুন, ২০২১ ০০:০০
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল শিক্ষার ওপর ১৫ শতাংশ করারোপ প্রস্তাবের সমালোচনা হয়েছে সংসদে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য খাতেরও কঠোর সমালোচনাসহ করোনার টিকা আসার অনিশ্চয়তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে সংসদে। গতকাল সোমবার সংসদে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী এসব সমালোচনা করেন।
রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘শিক্ষা খাতের ১৫.৭ শতাংশ বরাদ্দের ৪ শতাংশই প্রযুক্তি খাতে। বিপর্যস্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় ছুটিই বাড়ছে, লেখাপড়ার বিকল্প ব্যবস্থার কথা বলা হচ্ছে না। এদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেখানে ৫ লাখ ছেলেমেয়ের লেখাপড়া করাচ্ছে, তাদের ওপর ১৫ শতাংশ কর চাপানো হয়েছে, যা শেষ বিচারে শিক্ষার্থীদের ওপর পড়বে।’
জাসদের শিরীন আখতার বলেন, ‘কর নির্ভরশীলতা গরিববিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল বৈষম্যমূলক রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়া। বেসরকারি শিক্ষার ক্ষেত্রে করের প্রস্তাবে জাসদ বিরোধিতা করছে।’
জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘বাজেটে ন্যক্কারজনকভাবে বেসরকারি শিক্ষার ওপর ১৫ শতাংশ করারোপ করা হয়েছে। এ সম্পর্কে একজন শিক্ষার্থী বলেছেন, অন্য দেশের সরকার শিক্ষায় ভর্তুকি দেয়, আর আমরা করারোপ করি। বেসরকারিতে পড়া স্টুডেন্টরা আম নাকি যে দেখলেই পারতে মন চাইবে?’
সংসদে বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন স্বাস্থ্য খাতের কঠোর সমালোচনা করে আরও বলেন, ‘কভিড-১৯ মোকাবিলায় জীবন ও জীবিকা রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী যে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, তা বিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়েছে। কিন্তু দেশে অতিধনী সামরিক-বেসামরিক আমলাগোষ্ঠী ও দুর্নীতিবাজদের পাকচক্রে প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রয়াস অনেকখানিই নিষ্ফল হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন ‘মানুষের জীবন রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা স্বাস্থ্য খাতের অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা, আমলাতান্ত্রিক খবরদারিত্বে বাস্তবে রূপ নিতে পারেনি। করোনা রোধে স্বাস্থ্য খাত বিশেষজ্ঞদের পরিবর্তে আমলাতান্ত্রিক নির্দেশে পরিচালিত হওয়ায় কী ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল, তা আমরা দেখেছি। চোখের সামনে দেখেছি মাস্ক, পিপিই, করোনা টেস্ট নিয়ে জাল-জালিয়াতি। একজন শাহেদ, একজন সাবরিনা গ্রেপ্তার হয়েছে, কিন্তু যারা সচিত্র চুক্তি সই করল, কাজ দিল, তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। বাংলাদেশ প্রথমেই টিকা সংগ্রহ করে সফলভাবে গণটিকা কার্যক্রম শুরু করেছিল। কিন্তু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে টিকা সরবরাহের পরিণতি আমরা দেখছি। আগামী মাসগুলোতে টিকা আসবে তার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না। দেশের ১২ কোটি মানুষের জন্য টিকার ব্যবস্থা করতে না পারলে করোনা সংক্রমণ রোধ হবে না।’
মেনন বলেন, ‘করোনাকালে আড়াই কোটি মানুষ যারা দরিদ্র হয়ে গেলেন, বাজেট তাদের জন্য কিছু করেনি। করোনায় প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্রস্তাবের ৩৫ শতাংশ অর্থ বিতরণ হয়নি। যে গরিব মানুষের জন্য দুই দফায় ২৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে, তার এক-তৃতীয়াংশ অব্যয়িত, তারা পায়নি। অর্থনীতির ড্রাইভিং সিটে ব্যক্তিখাতকে বসাবেন বলে যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা সংবিধানবিরোধী। জিয়া-এরশাদ যা করতে পারেননি, অর্থমন্ত্রী সে কথাই জোর গলায় বললেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অর্থনীতি সংবিধানের উল্টো পথে চলছে। তাহলে বরং খোলামেলাই ঘোষণা দিন বঙ্গবন্ধু প্রবর্তিত এই সংবিধান অচল।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনাকালে ভারতের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ যেখানে ১৩৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, আমাদের বাজেটে বাড়ানো হয়েছে ১৩ শতাংশ, যা জিডিপির ১ শতাংশের কিছু বেশি। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় যেখানে বেশি, সেখানে মাথাপিছু স্বাস্থ্যব্যয়ে বাংলাদেশ পাকিস্তানেরও পেছনে। বর্তমান বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের ৩৫ শতাংশ ব্যয় হয়নি। গবেষণার ১০০ কোটি টাকা পুরোটাই রয়ে গেছে। স্বাস্থ্যক্রয়ে দুর্নীতির কথা বলে সংসদকে ভারাক্রান্ত করতে চাই না।’
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে হেফাজতের তাণ্ডবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেখেছি কীভাবে তারা কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের ব্যবহার করে একটা অভ্যুত্থান ঘটাতে চেয়েছিল। তারা যে বিএনপির সমর্থন পেয়েছিল, এটা এখন দলের মহাসচিবের কথায় স্পষ্ট। কওমি মাদ্রাসাকে শিক্ষার মূলধারায় নিয়ে আসার বিষয়ে সংসদে বলেছিলাম আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, আমরা ‘বিষবৃক্ষ’ লালন করছি কিনা। তার প্রতিক্রিয়ায় হেফাজত মিছিল করে আমার ফাঁসি চেয়েছে। এই সংসদে জাতীয় পার্টির এমপি আমি ‘ধান ভানতে শিবের গীত’ গেয়েছি বলে উপহাস করেছিলেন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী হেফাজতের সমর্থনে তাদের ভারতের দেওবন্দের অনুসারী বলে বর্ণনা করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা বলে বাবুনগরী পাকিস্তানি মাদ্রাসার ছাত্র।’
পররাষ্ট্রনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মার্কিন অথবা অন্য কারও নেতৃত্বাধীন জোটে যোগদান, আমাদের সংবিধান সমর্থন করে না। আর যুক্তরাষ্ট্র যার বন্ধু, তার শত্রুর প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়টি ফিলিস্তিন সম্পর্কে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু আমল থেকে অনুসৃত নীতির বিপরীত। ভুল বার্তা দেয়। পররাষ্ট্রনীতির ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কীভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, সেই ব্যাখ্যা তাদের দিতে হবে। ওয়ার্কার্স পার্টির তরফ থেকে ফিলিস্তিনের স্বাধীন অস্তিত্বের পক্ষে অবস্থান পুনরুক্তি করছি।’
‘গার্ড অব অনার’ নিয়ে নারী ইউএনওদের বিরোধিতার বিষয়ে সংসদীয় কমিটির বিরোধিতার সমালোচনা করে মেনন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সংসদীয় কমিটি মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার দেওয়ায় নারী কর্মকর্তাদের না রাখতে বলেছেন। এটা নাকি ধর্মবিরোধী কাজ। জানাজায় মাহিলারা অংশগ্রহণ করতে পারেন না বলে ফতোয়াও দিয়েছে। এই ফতোয়া দেওয়ার যোগ্যতা তারা রাখেন না। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীকে বলব এই বিষয়ে যেন কোনোরকম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা না হয়। এটা হলে তা হবে মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কাজ।’
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৫ জুন, ২০২১ ০০:০০

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল শিক্ষার ওপর ১৫ শতাংশ করারোপ প্রস্তাবের সমালোচনা হয়েছে সংসদে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য খাতেরও কঠোর সমালোচনাসহ করোনার টিকা আসার অনিশ্চয়তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে সংসদে। গতকাল সোমবার সংসদে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী এসব সমালোচনা করেন।
রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘শিক্ষা খাতের ১৫.৭ শতাংশ বরাদ্দের ৪ শতাংশই প্রযুক্তি খাতে। বিপর্যস্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় ছুটিই বাড়ছে, লেখাপড়ার বিকল্প ব্যবস্থার কথা বলা হচ্ছে না। এদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেখানে ৫ লাখ ছেলেমেয়ের লেখাপড়া করাচ্ছে, তাদের ওপর ১৫ শতাংশ কর চাপানো হয়েছে, যা শেষ বিচারে শিক্ষার্থীদের ওপর পড়বে।’
জাসদের শিরীন আখতার বলেন, ‘কর নির্ভরশীলতা গরিববিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল বৈষম্যমূলক রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়া। বেসরকারি শিক্ষার ক্ষেত্রে করের প্রস্তাবে জাসদ বিরোধিতা করছে।’
জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘বাজেটে ন্যক্কারজনকভাবে বেসরকারি শিক্ষার ওপর ১৫ শতাংশ করারোপ করা হয়েছে। এ সম্পর্কে একজন শিক্ষার্থী বলেছেন, অন্য দেশের সরকার শিক্ষায় ভর্তুকি দেয়, আর আমরা করারোপ করি। বেসরকারিতে পড়া স্টুডেন্টরা আম নাকি যে দেখলেই পারতে মন চাইবে?’
সংসদে বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন স্বাস্থ্য খাতের কঠোর সমালোচনা করে আরও বলেন, ‘কভিড-১৯ মোকাবিলায় জীবন ও জীবিকা রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী যে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, তা বিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়েছে। কিন্তু দেশে অতিধনী সামরিক-বেসামরিক আমলাগোষ্ঠী ও দুর্নীতিবাজদের পাকচক্রে প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রয়াস অনেকখানিই নিষ্ফল হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন ‘মানুষের জীবন রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা স্বাস্থ্য খাতের অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা, আমলাতান্ত্রিক খবরদারিত্বে বাস্তবে রূপ নিতে পারেনি। করোনা রোধে স্বাস্থ্য খাত বিশেষজ্ঞদের পরিবর্তে আমলাতান্ত্রিক নির্দেশে পরিচালিত হওয়ায় কী ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল, তা আমরা দেখেছি। চোখের সামনে দেখেছি মাস্ক, পিপিই, করোনা টেস্ট নিয়ে জাল-জালিয়াতি। একজন শাহেদ, একজন সাবরিনা গ্রেপ্তার হয়েছে, কিন্তু যারা সচিত্র চুক্তি সই করল, কাজ দিল, তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। বাংলাদেশ প্রথমেই টিকা সংগ্রহ করে সফলভাবে গণটিকা কার্যক্রম শুরু করেছিল। কিন্তু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে টিকা সরবরাহের পরিণতি আমরা দেখছি। আগামী মাসগুলোতে টিকা আসবে তার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না। দেশের ১২ কোটি মানুষের জন্য টিকার ব্যবস্থা করতে না পারলে করোনা সংক্রমণ রোধ হবে না।’
মেনন বলেন, ‘করোনাকালে আড়াই কোটি মানুষ যারা দরিদ্র হয়ে গেলেন, বাজেট তাদের জন্য কিছু করেনি। করোনায় প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্রস্তাবের ৩৫ শতাংশ অর্থ বিতরণ হয়নি। যে গরিব মানুষের জন্য দুই দফায় ২৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে, তার এক-তৃতীয়াংশ অব্যয়িত, তারা পায়নি। অর্থনীতির ড্রাইভিং সিটে ব্যক্তিখাতকে বসাবেন বলে যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা সংবিধানবিরোধী। জিয়া-এরশাদ যা করতে পারেননি, অর্থমন্ত্রী সে কথাই জোর গলায় বললেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অর্থনীতি সংবিধানের উল্টো পথে চলছে। তাহলে বরং খোলামেলাই ঘোষণা দিন বঙ্গবন্ধু প্রবর্তিত এই সংবিধান অচল।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনাকালে ভারতের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ যেখানে ১৩৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, আমাদের বাজেটে বাড়ানো হয়েছে ১৩ শতাংশ, যা জিডিপির ১ শতাংশের কিছু বেশি। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় যেখানে বেশি, সেখানে মাথাপিছু স্বাস্থ্যব্যয়ে বাংলাদেশ পাকিস্তানেরও পেছনে। বর্তমান বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের ৩৫ শতাংশ ব্যয় হয়নি। গবেষণার ১০০ কোটি টাকা পুরোটাই রয়ে গেছে। স্বাস্থ্যক্রয়ে দুর্নীতির কথা বলে সংসদকে ভারাক্রান্ত করতে চাই না।’
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে হেফাজতের তাণ্ডবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেখেছি কীভাবে তারা কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের ব্যবহার করে একটা অভ্যুত্থান ঘটাতে চেয়েছিল। তারা যে বিএনপির সমর্থন পেয়েছিল, এটা এখন দলের মহাসচিবের কথায় স্পষ্ট। কওমি মাদ্রাসাকে শিক্ষার মূলধারায় নিয়ে আসার বিষয়ে সংসদে বলেছিলাম আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, আমরা ‘বিষবৃক্ষ’ লালন করছি কিনা। তার প্রতিক্রিয়ায় হেফাজত মিছিল করে আমার ফাঁসি চেয়েছে। এই সংসদে জাতীয় পার্টির এমপি আমি ‘ধান ভানতে শিবের গীত’ গেয়েছি বলে উপহাস করেছিলেন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী হেফাজতের সমর্থনে তাদের ভারতের দেওবন্দের অনুসারী বলে বর্ণনা করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা বলে বাবুনগরী পাকিস্তানি মাদ্রাসার ছাত্র।’
পররাষ্ট্রনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মার্কিন অথবা অন্য কারও নেতৃত্বাধীন জোটে যোগদান, আমাদের সংবিধান সমর্থন করে না। আর যুক্তরাষ্ট্র যার বন্ধু, তার শত্রুর প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়টি ফিলিস্তিন সম্পর্কে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু আমল থেকে অনুসৃত নীতির বিপরীত। ভুল বার্তা দেয়। পররাষ্ট্রনীতির ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কীভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, সেই ব্যাখ্যা তাদের দিতে হবে। ওয়ার্কার্স পার্টির তরফ থেকে ফিলিস্তিনের স্বাধীন অস্তিত্বের পক্ষে অবস্থান পুনরুক্তি করছি।’
‘গার্ড অব অনার’ নিয়ে নারী ইউএনওদের বিরোধিতার বিষয়ে সংসদীয় কমিটির বিরোধিতার সমালোচনা করে মেনন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সংসদীয় কমিটি মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার দেওয়ায় নারী কর্মকর্তাদের না রাখতে বলেছেন। এটা নাকি ধর্মবিরোধী কাজ। জানাজায় মাহিলারা অংশগ্রহণ করতে পারেন না বলে ফতোয়াও দিয়েছে। এই ফতোয়া দেওয়ার যোগ্যতা তারা রাখেন না। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীকে বলব এই বিষয়ে যেন কোনোরকম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা না হয়। এটা হলে তা হবে মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কাজ।’