রোহিঙ্গাদের ভেতর থেকে জঙ্গির উত্থান হতে পারে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গার ভেতর থেকেও জঙ্গির উত্থান হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। গতকাল শুক্রবার ঢাকার শিল্পকলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছিলাম। এখন দেখছি রোহিঙ্গারাও জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকছে। তাদের নিজেদের মধ্যে রক্তপাত চলছে। যদিও আমরা সতর্ক রয়েছি, যদিও তারা আমাদের বেড়াজালের মধ্যে আছে, তারপরও আপনারা দেখছেন, তারা নিজেরা নিজেরা ক্যাম্পে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীকে উদ্দেশ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতীয় হাই কমিশনার এখানে আছেন, তারা আমাদের সহযোগিতা করছেন জানি, আমরা এটুকু বলতে চাইএই যে ১১ লাখ রোহিঙ্গা, এখান থেকেও জঙ্গির উত্থান হতে পারে।’
২০০৮ সালে ২৬ নভেম্বর ভারতের মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার ত্রয়োদশ বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা এবং তিন দিনব্যাপী আলোকচিত্র ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। এই আয়োজনে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতি। অনুষ্ঠানে ‘উপমহাদেশের জঙ্গি মৌলবাদী সন্ত্রাস দমন : সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতার পেছনে ‘পাকিস্তানের ভূমিকার’ প্রসঙ্গ তুলে ধরে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘পাকিস্তান সবসময় আমাদের দেশের ওপর, ওদের ইন্টেলিজেন্স যেটা, আইএসআই, এটার মাধ্যমে তারা নানানভাবে আমাদের বিব্রত করার প্রচেষ্টা নিয়েছে। আমরা সে ব্যাপারে সবসময় খেয়াল রাখছি। যাতে করে তারা আর এই ধরনের ঘটনা না ঘটাতে পারে, সেজন্য আমরা সবসময় তাদের গতিবিধির ওপর লক্ষ রাখছি।’
সারা বিশ্বেই জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু ভারত নয়, ইউরোপেও এমন হামলা হয়েছে। ২০০১ সালের পর আমাদের দেশে এটি প্রকট হয়ে উঠেছিল। বাংলা ভাই নামের জঙ্গি তখন প্রভাব বিস্তার করতে চাচ্ছিল। আমরা সেটি দমন করতে সক্ষম হয়েছি।’
অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ‘২৬ নভেম্বরের হামলা আমাদের দুঃসহ স্মৃতি। তারা কমান্ডো স্টাইলে হামলা চালিয়েছিল। কাপুরুষের মতো তারা নিরীহ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এটা এমন ঘটনা, যা ভোলারও নয়, ক্ষমা করারও নয়।
অতিথির বক্তব্যে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘পাকিস্তান এই ভারতীয় উপমহাদেশের জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাকিস্তান এখন এই অঞ্চলে জঙ্গিবাদ ছড়াতে কাজ করে যাচ্ছে।’
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সংসদ সদস্য ও সমাজকর্মী আরমা দত্ত, ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট, ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশীদ বক্তব্য দেন।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গার ভেতর থেকেও জঙ্গির উত্থান হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। গতকাল শুক্রবার ঢাকার শিল্পকলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছিলাম। এখন দেখছি রোহিঙ্গারাও জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকছে। তাদের নিজেদের মধ্যে রক্তপাত চলছে। যদিও আমরা সতর্ক রয়েছি, যদিও তারা আমাদের বেড়াজালের মধ্যে আছে, তারপরও আপনারা দেখছেন, তারা নিজেরা নিজেরা ক্যাম্পে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীকে উদ্দেশ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতীয় হাই কমিশনার এখানে আছেন, তারা আমাদের সহযোগিতা করছেন জানি, আমরা এটুকু বলতে চাইএই যে ১১ লাখ রোহিঙ্গা, এখান থেকেও জঙ্গির উত্থান হতে পারে।’
২০০৮ সালে ২৬ নভেম্বর ভারতের মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার ত্রয়োদশ বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা এবং তিন দিনব্যাপী আলোকচিত্র ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। এই আয়োজনে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতি। অনুষ্ঠানে ‘উপমহাদেশের জঙ্গি মৌলবাদী সন্ত্রাস দমন : সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতার পেছনে ‘পাকিস্তানের ভূমিকার’ প্রসঙ্গ তুলে ধরে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘পাকিস্তান সবসময় আমাদের দেশের ওপর, ওদের ইন্টেলিজেন্স যেটা, আইএসআই, এটার মাধ্যমে তারা নানানভাবে আমাদের বিব্রত করার প্রচেষ্টা নিয়েছে। আমরা সে ব্যাপারে সবসময় খেয়াল রাখছি। যাতে করে তারা আর এই ধরনের ঘটনা না ঘটাতে পারে, সেজন্য আমরা সবসময় তাদের গতিবিধির ওপর লক্ষ রাখছি।’
সারা বিশ্বেই জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু ভারত নয়, ইউরোপেও এমন হামলা হয়েছে। ২০০১ সালের পর আমাদের দেশে এটি প্রকট হয়ে উঠেছিল। বাংলা ভাই নামের জঙ্গি তখন প্রভাব বিস্তার করতে চাচ্ছিল। আমরা সেটি দমন করতে সক্ষম হয়েছি।’
অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ‘২৬ নভেম্বরের হামলা আমাদের দুঃসহ স্মৃতি। তারা কমান্ডো স্টাইলে হামলা চালিয়েছিল। কাপুরুষের মতো তারা নিরীহ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এটা এমন ঘটনা, যা ভোলারও নয়, ক্ষমা করারও নয়।
অতিথির বক্তব্যে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘পাকিস্তান এই ভারতীয় উপমহাদেশের জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাকিস্তান এখন এই অঞ্চলে জঙ্গিবাদ ছড়াতে কাজ করে যাচ্ছে।’
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সংসদ সদস্য ও সমাজকর্মী আরমা দত্ত, ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট, ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশীদ বক্তব্য দেন।