ফখরুল বললেন
সরকারের স্বার্থেই খালেদাকে বিদেশে পাঠানো দরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের স্বার্থে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো দরকার। কেননা আল্লাহ না করুক, তার যদি কোনো ক্ষতি হয়, এই দেশের জনগণ আপনাদের রেহাই দেবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ করে দেওয়ার দাবিতে ‘জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দল’ আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দলের’ নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কালবিলম্ব না করে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ করুন। অন্যথায় তার কিছু হয়ে গেলে আপনারা এর জন্য সর্বাংশে দায়ী থাকবেন। কারণ আইনে সুযোগ থাকলেও শুধু রাজনৈতিক কারণে আপনারা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাচ্ছেন না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় ২ জুলাই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে দুই শিশুপুত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। ১৬ ডিসেম্বর যখন দেশ স্বাধীন হয় তখন তিনি মুক্তি পেয়েছিলেন। অথচ স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আবার বর্তমান সরকার খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছে। তিনি অসুস্থ হলেও তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হচ্ছে না। তিনি স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী। এই স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য বর্তমানে যেসব নেতা-নেত্রী আছেন, তাদের সবার চেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন খালেদা জিয়া।’
‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হবেন’আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার আবারও ভোটের আগের রাতে সমস্ত বিরোধীদলকে পিটিয়ে রাজনীতির মাঠ থেকে বের করে দেবে। নিজেরা মাঠ দখল করে নির্বাচনের ফলাফল দখল করে নেবে। দেশে আবারও ২০১৮ নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি করতে চাইছে সরকার।’
পরিবহনে ‘হাফ ভাড়া’র দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার দাবি যৌক্তিক। প্রয়োজন হলে সরকারকে ভর্তুকি দিয়ে হলেও শিক্ষার্থীদের হাফ পাসের ব্যবস্থা করতে হবে।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে সবাইকে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখানে মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত হয়েছেন, তাদের রাইফেল একবার গর্জে উঠেছিল ১৯৭১ সালে, আরেকবার রাজপথে আন্দোলনের মধ্যদিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। ফ্যাসিবাদী সরকারকে বাধ্য করব পদত্যাগ করে সত্যিকার অর্থে একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী অন্য কাউকে খোঁজেননি। তারা হন্যে হয়ে খালেদা জিয়াকে খুঁজেছিলেন। গ্রেপ্তার এড়াতে খালেদা জিয়া চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় চলে এসেছিলেন। একাধিক বাড়িতে হানা দিয়ে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করে রেখেছিল তারা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তি পেয়েছিলেন খালেদা জিয়া। আজকে দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় স্বাধীনতার ৫০ বছর পর বর্তমান সরকার খালেদা জিয়াকে আবার বন্দি করেছে।’
মুক্তিযোদ্ধা দলের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি কাজী আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাদেক হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীরপ্রতীক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক কর্নেল (অব.) জয়নাল আবেদীন, বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের স্বার্থে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো দরকার। কেননা আল্লাহ না করুক, তার যদি কোনো ক্ষতি হয়, এই দেশের জনগণ আপনাদের রেহাই দেবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ করে দেওয়ার দাবিতে ‘জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দল’ আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দলের’ নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কালবিলম্ব না করে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ করুন। অন্যথায় তার কিছু হয়ে গেলে আপনারা এর জন্য সর্বাংশে দায়ী থাকবেন। কারণ আইনে সুযোগ থাকলেও শুধু রাজনৈতিক কারণে আপনারা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাচ্ছেন না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় ২ জুলাই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে দুই শিশুপুত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। ১৬ ডিসেম্বর যখন দেশ স্বাধীন হয় তখন তিনি মুক্তি পেয়েছিলেন। অথচ স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আবার বর্তমান সরকার খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছে। তিনি অসুস্থ হলেও তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হচ্ছে না। তিনি স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী। এই স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য বর্তমানে যেসব নেতা-নেত্রী আছেন, তাদের সবার চেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন খালেদা জিয়া।’
‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হবেন’আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার আবারও ভোটের আগের রাতে সমস্ত বিরোধীদলকে পিটিয়ে রাজনীতির মাঠ থেকে বের করে দেবে। নিজেরা মাঠ দখল করে নির্বাচনের ফলাফল দখল করে নেবে। দেশে আবারও ২০১৮ নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি করতে চাইছে সরকার।’
পরিবহনে ‘হাফ ভাড়া’র দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার দাবি যৌক্তিক। প্রয়োজন হলে সরকারকে ভর্তুকি দিয়ে হলেও শিক্ষার্থীদের হাফ পাসের ব্যবস্থা করতে হবে।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে সবাইকে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখানে মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত হয়েছেন, তাদের রাইফেল একবার গর্জে উঠেছিল ১৯৭১ সালে, আরেকবার রাজপথে আন্দোলনের মধ্যদিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। ফ্যাসিবাদী সরকারকে বাধ্য করব পদত্যাগ করে সত্যিকার অর্থে একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী অন্য কাউকে খোঁজেননি। তারা হন্যে হয়ে খালেদা জিয়াকে খুঁজেছিলেন। গ্রেপ্তার এড়াতে খালেদা জিয়া চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় চলে এসেছিলেন। একাধিক বাড়িতে হানা দিয়ে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করে রেখেছিল তারা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তি পেয়েছিলেন খালেদা জিয়া। আজকে দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় স্বাধীনতার ৫০ বছর পর বর্তমান সরকার খালেদা জিয়াকে আবার বন্দি করেছে।’
মুক্তিযোদ্ধা দলের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি কাজী আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাদেক হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীরপ্রতীক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক কর্নেল (অব.) জয়নাল আবেদীন, বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।