মানববন্ধনে ফখরুল
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ফের সংকটাপন্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলটির চেয়ারপারসন খালদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আবারও সংকটাপন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, গত সোমবার রাতেও তার রক্তক্ষরণ হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি। কারণ, তার লিভার সিরোসিস এখন যে পর্যায়ে আছে, সেই পর্যায়ের উন্নত চিকিৎসা দেশে নেই। চিকিৎসকরা এ কথা বলছেন। কিন্তু গুরুত্ব সরকার দিচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকরা বলছেন অবিলম্বে যেন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু সরকার প্রথম থেকেই পুরোপুরিভাবে এ বিষয়টাতে একটা নেতিবাচক অবস্থান নিয়েছে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে না। চেয়ারপারসন সুস্থ অবস্থায় হেঁটে কারাগারে গিয়েছিলেন। এ কয়েক বছরে কারাগারে ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার কারণে তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। গত ২৬ দিন ধরে তিনি আইসিইউতে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়া যখন কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন, তখন তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। বারবার বলার পরে চিকিৎসার জন্য বোর্ড গঠন করা হয়। সেই বোর্ডও খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি। পরে ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা সেখানে যান এবং তাদের সুপারিশক্রমে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে আনা হয়। যতক্ষণে হাসপাতালে আনা হয়, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এর কারণ একটাই। খালেদা জিয়া হচ্ছেন একমাত্র রাজনীতিবিদ, যিনি এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বর পক্ষে কথা বলেন। এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বর জন্য জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন তিনি। তিনি একমাত্র রাজনীতিবিদ, যিনি গণতন্ত্রের জন্য তার সমস্ত জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না। তিনি সুস্থ না হলে আমরা সুস্থ হব না। সরকারের কাছে আবারও আহ্বান জানাচ্ছি, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর সব ব্যবস্থা করুন।’
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আইনের কথা বলেন, কেন মানুষকে বোকা বানাতে চান? ৪০১ ধারার যে আইনে তাকে আটকে রেখেছেন, সেই ধারায় শর্ত দিয়েছেন তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। ওই শর্তটা আপনারাই তুলতে পারেন, আর কেউ তুলতে পারবে না। ওই শর্ত তুলে নেন এবং তাকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দেন।’
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার পাসপোর্টের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে পাসপোর্ট দিয়ে খালেদাকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে, কোনো অঘটন ঘটলে এর সমস্ত দায়দায়িত্ব¡ সরকারকে নিতে হবে।’
বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, কেন্দ্রীয় নেতা কাদের গণি চৌধুরী, মো. শামীমুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোরশেদ আলমসহ সংগঠনের নেতারা।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলটির চেয়ারপারসন খালদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আবারও সংকটাপন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, গত সোমবার রাতেও তার রক্তক্ষরণ হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি। কারণ, তার লিভার সিরোসিস এখন যে পর্যায়ে আছে, সেই পর্যায়ের উন্নত চিকিৎসা দেশে নেই। চিকিৎসকরা এ কথা বলছেন। কিন্তু গুরুত্ব সরকার দিচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকরা বলছেন অবিলম্বে যেন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু সরকার প্রথম থেকেই পুরোপুরিভাবে এ বিষয়টাতে একটা নেতিবাচক অবস্থান নিয়েছে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে না। চেয়ারপারসন সুস্থ অবস্থায় হেঁটে কারাগারে গিয়েছিলেন। এ কয়েক বছরে কারাগারে ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার কারণে তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। গত ২৬ দিন ধরে তিনি আইসিইউতে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়া যখন কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন, তখন তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। বারবার বলার পরে চিকিৎসার জন্য বোর্ড গঠন করা হয়। সেই বোর্ডও খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি। পরে ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা সেখানে যান এবং তাদের সুপারিশক্রমে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে আনা হয়। যতক্ষণে হাসপাতালে আনা হয়, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এর কারণ একটাই। খালেদা জিয়া হচ্ছেন একমাত্র রাজনীতিবিদ, যিনি এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বর পক্ষে কথা বলেন। এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বর জন্য জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন তিনি। তিনি একমাত্র রাজনীতিবিদ, যিনি গণতন্ত্রের জন্য তার সমস্ত জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না। তিনি সুস্থ না হলে আমরা সুস্থ হব না। সরকারের কাছে আবারও আহ্বান জানাচ্ছি, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর সব ব্যবস্থা করুন।’
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আইনের কথা বলেন, কেন মানুষকে বোকা বানাতে চান? ৪০১ ধারার যে আইনে তাকে আটকে রেখেছেন, সেই ধারায় শর্ত দিয়েছেন তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। ওই শর্তটা আপনারাই তুলতে পারেন, আর কেউ তুলতে পারবে না। ওই শর্ত তুলে নেন এবং তাকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দেন।’
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার পাসপোর্টের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে পাসপোর্ট দিয়ে খালেদাকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে, কোনো অঘটন ঘটলে এর সমস্ত দায়দায়িত্ব¡ সরকারকে নিতে হবে।’
বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, কেন্দ্রীয় নেতা কাদের গণি চৌধুরী, মো. শামীমুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোরশেদ আলমসহ সংগঠনের নেতারা।