কসবায় বিক্রয়কর্মীকে খুন করে লাখ টাকা লুট
রূপান্তর ডেস্ক | ১৭ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় এক বিক্রয়কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার সকালে কসবা পশ্চিম ইউনিয়নের আকছিনা গ্রামের একটি নির্মাণাধীন ভবনের সামনে থেকে আসাদ মিয়া (২৭) নামের ওই বিক্রয়কর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, আসাদের কাছে থাকা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লুট করতেই দুর্বৃত্তরা খুন করেছে তাকে। একই দিন ঝালকাঠিতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে এক বৃদ্ধকে এবং শরীয়তপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ঝালকাঠির ঘটনায় এক নারী ও শরীয়তপুরে ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
দেশ রূপান্তরের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত- পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কসবায় নিহত আসাদ মিয়া কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার কাজলা গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে প্রাণ কোম্পানির পরিবেশক দিদারুল আলমের অধীনে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কসবা পৌর শহরের সাহাপাড়া এলাকায় বসবাস করতেন তিনি। গত শনিবার কসবা পৌর শহরের পুরাতন ও নতুন বাজার এলাকায় মালামাল বিতরণ করেন ও প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন। সন্ধ্যার দিকে মালামালের গাড়ির চালককে দোকানে পাঠিয়ে দেন। এর কিছু সময় পরে তিনি দিদারুল আলমকে জানান টাকা তুলতে আরও সময় লাগবে। এর ঘণ্টাখানেক পর থেকে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে রাতে দিদারুল আলম কসবা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
গতকাল সকালে কসবা-নয়নপুর সড়কের আকছিনা গ্রামের একটি নির্মাণাধীন ভবনের পাশে আসাদের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা কসবা থানায় খবর দেন।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আলমগীর ভূইয়া বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। দুর্বৃত্তরা বিক্রয়কর্মী আসাদ মিয়াকে খুন করে টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। নিহত আসাদের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার গলায় মাফলার পেঁচানো ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে ঝালকাঠি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জেলার নলছিটিতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে চাচতো ভাইয়ের হামলায় খোকন চন্দ্র শীল (৬৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নে মালুহার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত খোকন চন্দ্র শীল একই গ্রামের মৃত মাধব চন্দ্র শীলের ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের চাচাতো ভাই সঞ্জয় চন্দ্র শীলের স্ত্রী লিপিকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ।
খোকন শীলের ছেলে সঞ্জীব চন্দ্র শীল জানান, তাদের একটি যৌথ মালিকানার পুকুরে সঞ্জয় চন্দ্র শীল মাছ ধরার জন্য পুকুর সেচ করছিলেন। তিনি তাকে নিষেধ করলে সঞ্জয় ও তার স্ত্রী লিপি তাকে মারধর করতে শুরু করেন। তখন তার বাবা এগিয়ে এলে তাকেও মারধর করেন তারা। তখন তার বাবা অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নলছিটি থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল তৈরির পর দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করলেও বাদীপক্ষ এখনো কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে এক যুবককে শাবল দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সকাল ৮টার দিকে সখিপুর থানার ডিএমখালী ইউনিয়নের হাওলাদার কান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মিন্টু মাঝি (৩৮) হাওলাদার ওই গ্রামের আমান উল্লাহ মাঝির ছেলে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় আহত আরও দুইজন ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয়রা জানান, একটি জমি নিয়ে মিন্টু মাঝি ও সুমন হাওলাদারদের সঙ্গে ঝামেলা চলছে। সম্প্রতি সেই জমিতে বেড়া দেন মিন্টু। গতকাল সকালে সেই বেড়া ভাঙতে যান সুমন হাওলাদারসহ কয়েকজন। তখন মিন্টু বাধা দিলে তাকে শাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করেন সুমনরা। পরে তাকে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সখিপুর থানার ওসি আসাদুজ্জামান হাওলাদার জানান, এ ঘটনায় দেলোয়ার হাওলাদার (৫০), আবুল কালাম (৪৫) ও সুমনের মাকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। মিন্টুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ১৭ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় এক বিক্রয়কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার সকালে কসবা পশ্চিম ইউনিয়নের আকছিনা গ্রামের একটি নির্মাণাধীন ভবনের সামনে থেকে আসাদ মিয়া (২৭) নামের ওই বিক্রয়কর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, আসাদের কাছে থাকা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লুট করতেই দুর্বৃত্তরা খুন করেছে তাকে। একই দিন ঝালকাঠিতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে এক বৃদ্ধকে এবং শরীয়তপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ঝালকাঠির ঘটনায় এক নারী ও শরীয়তপুরে ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
দেশ রূপান্তরের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত- পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কসবায় নিহত আসাদ মিয়া কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার কাজলা গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে প্রাণ কোম্পানির পরিবেশক দিদারুল আলমের অধীনে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কসবা পৌর শহরের সাহাপাড়া এলাকায় বসবাস করতেন তিনি। গত শনিবার কসবা পৌর শহরের পুরাতন ও নতুন বাজার এলাকায় মালামাল বিতরণ করেন ও প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন। সন্ধ্যার দিকে মালামালের গাড়ির চালককে দোকানে পাঠিয়ে দেন। এর কিছু সময় পরে তিনি দিদারুল আলমকে জানান টাকা তুলতে আরও সময় লাগবে। এর ঘণ্টাখানেক পর থেকে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে রাতে দিদারুল আলম কসবা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
গতকাল সকালে কসবা-নয়নপুর সড়কের আকছিনা গ্রামের একটি নির্মাণাধীন ভবনের পাশে আসাদের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা কসবা থানায় খবর দেন।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আলমগীর ভূইয়া বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। দুর্বৃত্তরা বিক্রয়কর্মী আসাদ মিয়াকে খুন করে টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। নিহত আসাদের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার গলায় মাফলার পেঁচানো ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে ঝালকাঠি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জেলার নলছিটিতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে চাচতো ভাইয়ের হামলায় খোকন চন্দ্র শীল (৬৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নে মালুহার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত খোকন চন্দ্র শীল একই গ্রামের মৃত মাধব চন্দ্র শীলের ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের চাচাতো ভাই সঞ্জয় চন্দ্র শীলের স্ত্রী লিপিকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ।
খোকন শীলের ছেলে সঞ্জীব চন্দ্র শীল জানান, তাদের একটি যৌথ মালিকানার পুকুরে সঞ্জয় চন্দ্র শীল মাছ ধরার জন্য পুকুর সেচ করছিলেন। তিনি তাকে নিষেধ করলে সঞ্জয় ও তার স্ত্রী লিপি তাকে মারধর করতে শুরু করেন। তখন তার বাবা এগিয়ে এলে তাকেও মারধর করেন তারা। তখন তার বাবা অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নলছিটি থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল তৈরির পর দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করলেও বাদীপক্ষ এখনো কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে এক যুবককে শাবল দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সকাল ৮টার দিকে সখিপুর থানার ডিএমখালী ইউনিয়নের হাওলাদার কান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মিন্টু মাঝি (৩৮) হাওলাদার ওই গ্রামের আমান উল্লাহ মাঝির ছেলে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় আহত আরও দুইজন ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয়রা জানান, একটি জমি নিয়ে মিন্টু মাঝি ও সুমন হাওলাদারদের সঙ্গে ঝামেলা চলছে। সম্প্রতি সেই জমিতে বেড়া দেন মিন্টু। গতকাল সকালে সেই বেড়া ভাঙতে যান সুমন হাওলাদারসহ কয়েকজন। তখন মিন্টু বাধা দিলে তাকে শাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করেন সুমনরা। পরে তাকে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সখিপুর থানার ওসি আসাদুজ্জামান হাওলাদার জানান, এ ঘটনায় দেলোয়ার হাওলাদার (৫০), আবুল কালাম (৪৫) ও সুমনের মাকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। মিন্টুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।