নায়িকা শিমু হত্যায় রিমান্ডে স্বামীর তথ্য
স্ত্রীকে আগেও একাধিকবার পিটিয়েছেন নোবেল
ইমন রহমান | ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০
চলচ্চিত্র নায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুকে রাগের মাথায় হত্যা করেছেন দাবি করে অনুশোচনা প্রকাশ করেছেন তার স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল। শিমু হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর তিন দিনের পুলিশি রিমান্ডের প্রথম দিনে গতকাল বুধবার জিজ্ঞাসাবাদের সময় চরম হতাশ ছিলেন তিনি। স্ত্রী শিমুকে হত্যার আগে তাদের মধ্যে ঠিক কী কী ঘটেছিল তার বর্ণনাও দিয়েছেন জিজ্ঞাসাবাদকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে। এর আগেও দাম্পত্য কলহের জেরে শিমুকে একাধিকবার শারীরিক নির্যাতন করেন নোবেল। সংসারে সামান্য বিষয় নিয়েও তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হতো, যা পরে বড় আকার নিত। নোবেলকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের সময় সেখানে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত সোমবার দুপুরে ঢাকার কেরানীগঞ্জের হজরতপুর সেতুর কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশে ঝোপের ভেতর থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর লাশ উদ্ধার করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। পরে পুলিশ জানতে পারে, লাশটি চিত্রনায়িকা শিমুর। ওইদিনই পুলিশ শিমুর স্বামী নোবেলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার কথা শিকার করেন তিনি। পুলিশ বলছে, শিমুর লাশ কেরানীগঞ্জে ফেলে আসতে বাল্যবন্ধু এসএমওয়াই আবদুল্লাহ ফরহাদের সাহায্য নেন নোবেল। শিমু হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে লাশ উদ্ধারের দিনই নোবেল ও ফরহাদকে গ্রেপ্তার করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। এরপর গত মঙ্গলবার তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। শিমুর মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।
স্বজনরা জানান, নোবেল ভালোবেসে ১৮ বছর আগে বিয়ে করেছিলেন শিমুকে। এই দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে (১৬) ও-লেভেলে পড়ে। আর ছোট ছেলের বয়স চার বছর। নোবেল রাজধানীর গ্রিন রোডে নিজের একটি ফ্ল্যাটও লিখে দিয়েছিলেন স্ত্রীকে।
নোবেলকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে কী ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে জানতে চাইলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের সময় নোবেল শিমুকে হত্যার জন্য খুবই অনুতপ্ত হন। রাগের মাথায় সে শিমুকে হত্যা করে বলে দাবি করেছে। গত কয়েক মাস তাদের মধ্যে কলহ চলছিল। ঘটনার আগে তা চরম আকার ধারণ করে।’
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘নোবেল আগে নেশা করলেও বর্তমানে নেশা ছেড়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছে। ঘটনার সময় সে সুস্থ ছিল। কোনো ধরনের নেশা করে এ হত্যা করেনি বলে রিমান্ডে আমাদের জানিয়েছে।’
শিমু ও নোবেলের মধ্যে গত কয়েক মাস ধরে দাম্পত্য কলহ চলছিল জানিয়ে পুলিশের ঢাকা জেলার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) অতিরিক্ত সুপার সাহাবউদ্দিন কবীর গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ওইদিন ঠিক কী নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল এ বিষয়ে কিছু তথ্য আমরা পেয়েছি। তবে তদন্তের স্বার্থে বলা সম্ভব হচ্ছে না। রিমান্ড শেষে বিস্তারিত আদালতকে জানানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিমু-নোবেল দম্পতির বড় মেয়ে ও-লেভেলের শিক্ষার্থী। ঘটনার সময় সে বাসার বাইরে ছিল বলে জানতে পেরেছি। ছোট ছেলে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। চার বছর বয়সী ছেলেটি অত ভালো করে কথাও বলতে পারে না। আমরা তার সঙ্গেও অনেকবার কথা বলার চেষ্টা করেছি। বাচ্চাটি আসলে কিছু টের পায়নি।’
নোবেলের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবন সম্পর্কে জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, নোবেল গাড়ির পার্টসের ব্যবসা করতেন। পান্থপথে তার অটোমোবাইলের বিজনেস ছিল। পরে তার বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। উচ্চ ডায়াবেটিসের রোগী তিনি। ফলে গত কয়েক বছর ধরে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। তার ফিজিক্যাল ফিটনেস তেমন ভালো নয়। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তার কিডনির সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিন থেকে চার বছর ধরে তিনি বেকার। গ্রিন রোডের যে ফ্ল্যাটে ঘটনা ঘটেছে সেটি নোবেলের নামে ছিল। গত বছর স্ত্রী শিমুর নামে সেটি লিখে দিয়েছেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন তিনি।’
এদিকে লাশ উদ্ধারের পর বোন ফাতেমা নিশা শিমুর দাম্পত্য জীবনে কোনো কলহ থাকার তথ্য জানা নেই বলে সাংবাদিকদের জানালেও গতকাল তিনি বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নোবেল ভাই ও শিমু আপুর মধ্যে মাঝেমধ্যেই তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়া হতো। ধরেন আপু ডিম ভাজতে গিয়ে কুসুম গলে গেছে, এ নিয়ে ঝগড়া শুরু হতো। পরে সেটি বড় আকার ধারণ করত। আপু খুব চাপা স্বভাবের ছিল। সংসারের সমস্যার কথা আমাদের তেমন বলত না। নোবেল ভাই বেকার থাকলেও গ্রিন রোডের ওই ভবনের তিনটি ফ্ল্যাট তার ছিল। একটি আপুকে লিখে দিয়েছে। তারা দুজনে মিলেই সংসার চালাত। কখনো আর্থিক সমস্যায় পড়েছে এমন শুনিনি। নোবেল ভাইও কখনো আমাদের কাছে টাকা-পয়সা দাবি করেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নোবেল ভাই অনেক আগে থেকেই নেশা করত। গ্রিন রোডের বাসার আন্ডার গ্রাউন্ডে তার আলাদা রুম ছিল। সেখানেই বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিত, নেশা করত। এ বিষয়টি সকলের জানা ছিল।’
শিমু হত্যাকাণ্ড নিয়ে যখন নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে, তখন গত মঙ্গলবার পুলিশ সদর দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে শিমুকে হত্যা করেছেন নোবেল। গত রবিবার সকাল ৭টা-৮টার দিকে তিনি শিমুকে গলা টিপে হত্যা করেন। এরপর বন্ধু ফরহাদকে ফোন করে ডেকে নেন। পরে ফরহাদ ও নোবেল পরিকল্পনা করে বাইরে থেকে বস্তা এনে শিমুর লাশ লম্বালম্বিভাবে দুটি পাটের বস্তায় ভরে প্লাস্টিকের সুতা দিয়ে সেলাই করেন। এরপর বাড়ির দারোয়ানকে নাশতা আনতে বাইরে পাঠিয়ে নোবেলের গাড়ির পেছনের আসনে শিমুর লাশ নিয়ে বেরিয়ে যান দুজন। প্রথমে তারা মিরপুরের দিকে গিয়েছিলেন, কিন্তু সেখানে লাশ ফেলার উপযুক্ত পরিবেশ না পেয়ে আবার বাসায় ফেরেন। ওইদিনই সন্ধ্যায় আবার তারা লাশ গুম করতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা সেতু হয়ে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ইউনিয়নের কদমতলী এলাকার আলীপুর সেতুর ৩০০ গজ দূরে সড়কের পাশে ঝোপের ভেতর লাশটি ফেলে চলে যান। তখন ঘড়ির কাঁটায় রাত সাড়ে ৯টা। অভিনেত্রী শিমুর স্বামী নোবেল ও তার বন্ধু ফরহাদ মাদকাসক্ত ও বেকার বলেও পুলিশ সদর দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
শেয়ার করুন
ইমন রহমান | ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০

চলচ্চিত্র নায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুকে রাগের মাথায় হত্যা করেছেন দাবি করে অনুশোচনা প্রকাশ করেছেন তার স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল। শিমু হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর তিন দিনের পুলিশি রিমান্ডের প্রথম দিনে গতকাল বুধবার জিজ্ঞাসাবাদের সময় চরম হতাশ ছিলেন তিনি। স্ত্রী শিমুকে হত্যার আগে তাদের মধ্যে ঠিক কী কী ঘটেছিল তার বর্ণনাও দিয়েছেন জিজ্ঞাসাবাদকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে। এর আগেও দাম্পত্য কলহের জেরে শিমুকে একাধিকবার শারীরিক নির্যাতন করেন নোবেল। সংসারে সামান্য বিষয় নিয়েও তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হতো, যা পরে বড় আকার নিত। নোবেলকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের সময় সেখানে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত সোমবার দুপুরে ঢাকার কেরানীগঞ্জের হজরতপুর সেতুর কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশে ঝোপের ভেতর থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর লাশ উদ্ধার করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। পরে পুলিশ জানতে পারে, লাশটি চিত্রনায়িকা শিমুর। ওইদিনই পুলিশ শিমুর স্বামী নোবেলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার কথা শিকার করেন তিনি। পুলিশ বলছে, শিমুর লাশ কেরানীগঞ্জে ফেলে আসতে বাল্যবন্ধু এসএমওয়াই আবদুল্লাহ ফরহাদের সাহায্য নেন নোবেল। শিমু হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে লাশ উদ্ধারের দিনই নোবেল ও ফরহাদকে গ্রেপ্তার করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। এরপর গত মঙ্গলবার তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। শিমুর মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।
স্বজনরা জানান, নোবেল ভালোবেসে ১৮ বছর আগে বিয়ে করেছিলেন শিমুকে। এই দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে (১৬) ও-লেভেলে পড়ে। আর ছোট ছেলের বয়স চার বছর। নোবেল রাজধানীর গ্রিন রোডে নিজের একটি ফ্ল্যাটও লিখে দিয়েছিলেন স্ত্রীকে।
নোবেলকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে কী ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে জানতে চাইলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের সময় নোবেল শিমুকে হত্যার জন্য খুবই অনুতপ্ত হন। রাগের মাথায় সে শিমুকে হত্যা করে বলে দাবি করেছে। গত কয়েক মাস তাদের মধ্যে কলহ চলছিল। ঘটনার আগে তা চরম আকার ধারণ করে।’
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘নোবেল আগে নেশা করলেও বর্তমানে নেশা ছেড়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছে। ঘটনার সময় সে সুস্থ ছিল। কোনো ধরনের নেশা করে এ হত্যা করেনি বলে রিমান্ডে আমাদের জানিয়েছে।’
শিমু ও নোবেলের মধ্যে গত কয়েক মাস ধরে দাম্পত্য কলহ চলছিল জানিয়ে পুলিশের ঢাকা জেলার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) অতিরিক্ত সুপার সাহাবউদ্দিন কবীর গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ওইদিন ঠিক কী নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল এ বিষয়ে কিছু তথ্য আমরা পেয়েছি। তবে তদন্তের স্বার্থে বলা সম্ভব হচ্ছে না। রিমান্ড শেষে বিস্তারিত আদালতকে জানানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিমু-নোবেল দম্পতির বড় মেয়ে ও-লেভেলের শিক্ষার্থী। ঘটনার সময় সে বাসার বাইরে ছিল বলে জানতে পেরেছি। ছোট ছেলে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। চার বছর বয়সী ছেলেটি অত ভালো করে কথাও বলতে পারে না। আমরা তার সঙ্গেও অনেকবার কথা বলার চেষ্টা করেছি। বাচ্চাটি আসলে কিছু টের পায়নি।’
নোবেলের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবন সম্পর্কে জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, নোবেল গাড়ির পার্টসের ব্যবসা করতেন। পান্থপথে তার অটোমোবাইলের বিজনেস ছিল। পরে তার বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। উচ্চ ডায়াবেটিসের রোগী তিনি। ফলে গত কয়েক বছর ধরে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। তার ফিজিক্যাল ফিটনেস তেমন ভালো নয়। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তার কিডনির সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিন থেকে চার বছর ধরে তিনি বেকার। গ্রিন রোডের যে ফ্ল্যাটে ঘটনা ঘটেছে সেটি নোবেলের নামে ছিল। গত বছর স্ত্রী শিমুর নামে সেটি লিখে দিয়েছেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন তিনি।’
এদিকে লাশ উদ্ধারের পর বোন ফাতেমা নিশা শিমুর দাম্পত্য জীবনে কোনো কলহ থাকার তথ্য জানা নেই বলে সাংবাদিকদের জানালেও গতকাল তিনি বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নোবেল ভাই ও শিমু আপুর মধ্যে মাঝেমধ্যেই তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়া হতো। ধরেন আপু ডিম ভাজতে গিয়ে কুসুম গলে গেছে, এ নিয়ে ঝগড়া শুরু হতো। পরে সেটি বড় আকার ধারণ করত। আপু খুব চাপা স্বভাবের ছিল। সংসারের সমস্যার কথা আমাদের তেমন বলত না। নোবেল ভাই বেকার থাকলেও গ্রিন রোডের ওই ভবনের তিনটি ফ্ল্যাট তার ছিল। একটি আপুকে লিখে দিয়েছে। তারা দুজনে মিলেই সংসার চালাত। কখনো আর্থিক সমস্যায় পড়েছে এমন শুনিনি। নোবেল ভাইও কখনো আমাদের কাছে টাকা-পয়সা দাবি করেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নোবেল ভাই অনেক আগে থেকেই নেশা করত। গ্রিন রোডের বাসার আন্ডার গ্রাউন্ডে তার আলাদা রুম ছিল। সেখানেই বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিত, নেশা করত। এ বিষয়টি সকলের জানা ছিল।’
শিমু হত্যাকাণ্ড নিয়ে যখন নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে, তখন গত মঙ্গলবার পুলিশ সদর দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে শিমুকে হত্যা করেছেন নোবেল। গত রবিবার সকাল ৭টা-৮টার দিকে তিনি শিমুকে গলা টিপে হত্যা করেন। এরপর বন্ধু ফরহাদকে ফোন করে ডেকে নেন। পরে ফরহাদ ও নোবেল পরিকল্পনা করে বাইরে থেকে বস্তা এনে শিমুর লাশ লম্বালম্বিভাবে দুটি পাটের বস্তায় ভরে প্লাস্টিকের সুতা দিয়ে সেলাই করেন। এরপর বাড়ির দারোয়ানকে নাশতা আনতে বাইরে পাঠিয়ে নোবেলের গাড়ির পেছনের আসনে শিমুর লাশ নিয়ে বেরিয়ে যান দুজন। প্রথমে তারা মিরপুরের দিকে গিয়েছিলেন, কিন্তু সেখানে লাশ ফেলার উপযুক্ত পরিবেশ না পেয়ে আবার বাসায় ফেরেন। ওইদিনই সন্ধ্যায় আবার তারা লাশ গুম করতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা সেতু হয়ে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ইউনিয়নের কদমতলী এলাকার আলীপুর সেতুর ৩০০ গজ দূরে সড়কের পাশে ঝোপের ভেতর লাশটি ফেলে চলে যান। তখন ঘড়ির কাঁটায় রাত সাড়ে ৯টা। অভিনেত্রী শিমুর স্বামী নোবেল ও তার বন্ধু ফরহাদ মাদকাসক্ত ও বেকার বলেও পুলিশ সদর দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।