ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা
ছুটির দিনে উপচেপড়া ভিড় বাড়াচ্ছে সংক্রমণের ঝুঁকি
আতাউর রহমান সানী, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) | ২২ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০
দেশে করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারিভাবে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন নির্দেশনা। করোনা সংক্রমণ রোধে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলাও। খোলা জায়গায় ১০০ জনের বেশি জনসমাগমেও আছে নিষেধাজ্ঞা। তবে সবকিছুকে পাশ কাটিয়ে চলছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। মেলায় হাজার হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হচ্ছে প্রতিদিন। ছুটির দিনে তা বাড়ছে আরও কয়েকগুণ। দর্শনার্থী ও বিক্রেতাদের বেশিরভাগই মানছেন না কোনো স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক ছাড়াই ঘুরছেন বেশিরভাগ মানুষ। এই অবস্থায় বাণিজ্যমেলার মাধ্যমে সংক্রমণ আরও ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, মেলার ভেতরে ও বাইরে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে দর্শনার্থীরা। মেলার প্রধান গেটে প্রবেশের সময় কর্তৃপক্ষ দর্শনার্থীদের মাস্ক পরার ব্যাপারে কঠোর হলেও ভেতরে তা আর মানছে কেউই। গতকাল মেলায় আসা দর্শনার্থীদের প্রায় ৫০ ভাগ মানুষের মাস্ক ছিল থুতনির নিচে। ২০ ভাগ মানুষকে মাস্কই পরতে দেখা যায়নি। বাকি ৩০ ভাগ মানুষকেও ভালোভাবে মাস্ক পরতে দেখা যায়। মেলা কর্র্তৃপক্ষকে দর্শনার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক পরার ব্যাপারে মাইকিং ও প্রচার চালাতে দেখা যায়। দর্শনার্থীদের পাশাপাশি মেলার বিক্রেতাদেরও মাস্ক ছাড়াই বেচাকেনা করতে দেখা গেছে। মেলার ভেতরে ও বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য টহল অবস্থায় থাকলেও তাদের মানুষকে মাস্ক পরার ব্যাপারে বলতে দেখা যায়নি।
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের কারণে বিশ্বে সংক্রমণের ফের উল্লম্ফন হয়েছে। অনেক দেশের অবস্থাই খারাপ। আমাদের দেশেও করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে ব্যাপক হারে। করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার স্বাস্থ্যবিধি মানা, মাস্ক পরার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।। গণপরিবহনে আসনের সমান সংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলাচলের কথা বলা হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। অফিস-আদালতগুলোতে অর্ধেক জনবল নিয়ে কাজ করতে বলা হচ্ছে। ১০০ জনের বেশি মানুষের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অবস্থায় বাণিজ্যমেলার ভিড় উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। তারা বলছেন, মেলা যদি দ্রুত বন্ধ না করা হয় তাহলে সংক্রমণ অনেক বেড়ে যেতে পারে। মেলাই হয়ে উঠতে পারে দেশে মহামারীর নতুন কেন্দ্র। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেলা চালু না রাখা গেলে তারা মেলা বন্ধ করে দিতে বলেছেন।
ব্যবসায়ীরাও বলছেন, দিন যত যাচ্ছে দর্শনার্থী ও ক্রেতার সংখ্যা তত বাড়ছে। বিক্রিও হচ্ছে অনেক ভালো। তবে সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে। তা না হলে অবস্থা ভয়াবহ হবে। তবে তারা মেলা বন্ধের পক্ষে না।
তারা বলছেন, দেশের শপিং মলগুলোও কিন্তু খোলা রয়েছে। ৬টি নির্দেশনার মাঝে বলা হয়েছে শপিং মল, দোকানপাট স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে।
বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্যমেলার পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, মেলা বন্ধ হবে কি না এটির সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় নেবে। মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত দেবে তা আমরা মেনে চলব। তবে সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরার ব্যাপারে আমরা মাইকে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। মেলায় প্রবেশের সময় মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
শেয়ার করুন
আতাউর রহমান সানী, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) | ২২ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০

দেশে করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারিভাবে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন নির্দেশনা। করোনা সংক্রমণ রোধে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলাও। খোলা জায়গায় ১০০ জনের বেশি জনসমাগমেও আছে নিষেধাজ্ঞা। তবে সবকিছুকে পাশ কাটিয়ে চলছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। মেলায় হাজার হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হচ্ছে প্রতিদিন। ছুটির দিনে তা বাড়ছে আরও কয়েকগুণ। দর্শনার্থী ও বিক্রেতাদের বেশিরভাগই মানছেন না কোনো স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক ছাড়াই ঘুরছেন বেশিরভাগ মানুষ। এই অবস্থায় বাণিজ্যমেলার মাধ্যমে সংক্রমণ আরও ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, মেলার ভেতরে ও বাইরে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে দর্শনার্থীরা। মেলার প্রধান গেটে প্রবেশের সময় কর্তৃপক্ষ দর্শনার্থীদের মাস্ক পরার ব্যাপারে কঠোর হলেও ভেতরে তা আর মানছে কেউই। গতকাল মেলায় আসা দর্শনার্থীদের প্রায় ৫০ ভাগ মানুষের মাস্ক ছিল থুতনির নিচে। ২০ ভাগ মানুষকে মাস্কই পরতে দেখা যায়নি। বাকি ৩০ ভাগ মানুষকেও ভালোভাবে মাস্ক পরতে দেখা যায়। মেলা কর্র্তৃপক্ষকে দর্শনার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক পরার ব্যাপারে মাইকিং ও প্রচার চালাতে দেখা যায়। দর্শনার্থীদের পাশাপাশি মেলার বিক্রেতাদেরও মাস্ক ছাড়াই বেচাকেনা করতে দেখা গেছে। মেলার ভেতরে ও বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য টহল অবস্থায় থাকলেও তাদের মানুষকে মাস্ক পরার ব্যাপারে বলতে দেখা যায়নি।
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের কারণে বিশ্বে সংক্রমণের ফের উল্লম্ফন হয়েছে। অনেক দেশের অবস্থাই খারাপ। আমাদের দেশেও করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে ব্যাপক হারে। করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার স্বাস্থ্যবিধি মানা, মাস্ক পরার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।। গণপরিবহনে আসনের সমান সংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলাচলের কথা বলা হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। অফিস-আদালতগুলোতে অর্ধেক জনবল নিয়ে কাজ করতে বলা হচ্ছে। ১০০ জনের বেশি মানুষের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অবস্থায় বাণিজ্যমেলার ভিড় উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। তারা বলছেন, মেলা যদি দ্রুত বন্ধ না করা হয় তাহলে সংক্রমণ অনেক বেড়ে যেতে পারে। মেলাই হয়ে উঠতে পারে দেশে মহামারীর নতুন কেন্দ্র। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেলা চালু না রাখা গেলে তারা মেলা বন্ধ করে দিতে বলেছেন।
ব্যবসায়ীরাও বলছেন, দিন যত যাচ্ছে দর্শনার্থী ও ক্রেতার সংখ্যা তত বাড়ছে। বিক্রিও হচ্ছে অনেক ভালো। তবে সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে। তা না হলে অবস্থা ভয়াবহ হবে। তবে তারা মেলা বন্ধের পক্ষে না।
তারা বলছেন, দেশের শপিং মলগুলোও কিন্তু খোলা রয়েছে। ৬টি নির্দেশনার মাঝে বলা হয়েছে শপিং মল, দোকানপাট স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে।
বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্যমেলার পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, মেলা বন্ধ হবে কি না এটির সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় নেবে। মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত দেবে তা আমরা মেনে চলব। তবে সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরার ব্যাপারে আমরা মাইকে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। মেলায় প্রবেশের সময় মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।