রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড
‘ফেল’ থেকে এ-প্লাস পেল ১৮ শিক্ষার্থী!
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী | ২৩ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নামোশঙ্করবাটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় সাদিকুন নাহার। সব পরীক্ষায় অংশগ্রহণ শেষে ভালো ফলাফলের আশা করেছিল। কারণ সব পরীক্ষাই ভালো হয়েছিল তার। কিন্তু যেদিন পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়, সেদিন কাঁদতে হয় সাদিকুনকে। ভালো ফল আসা তো দূরের কথা, প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী পাসই করতে পারেনি সে।
সাদিকুনকে অকৃতকার্য দেখানো হয় পদার্থবিজ্ঞানে। এ ফল সে কোনোভাবেই মানতে পারেনি। আবেদন করে খাতা পুনঃনিরীক্ষার। পুনঃনিরীক্ষা শেষে তার বিশ্বাসই ঠিক প্রমাণ হয়েছে। ভালো ফলাফলই করেছে। জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
পাবনার সাবসার উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী সরিদুল ইসলাম ও রাজশাহীর পুঠিয়ার ধোপাপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী জুলি খাতুনের ‘ফেল’ করার গল্পও একইরকম। তারা দুজন অকৃতকার্য হয়েছিল পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়ে। তবে খাতা পুনঃনিরীক্ষায় তাদের দুজনেরই ফল বদলে গেছে সাদিকুনের মতো। দুজনই অকৃতকার্য থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে তাদের মতো ১৮ জন ‘ফেল’ করা পরীক্ষার্থী খাতা পুনঃনিরীক্ষার পর পেয়েছে জিপিএ-৫।
গত শুক্রবার রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড খাতা পুনঃনিরীক্ষার ফল প্রকাশ করে। এবার ১১৬ শিক্ষার্থীর ১২০টি বিষয়ে ফলাফল পরিবর্তন হয়েছে। অকৃতকার্য দেখানো ৭৯ শিক্ষার্থী ফল পুনঃনিরীক্ষায় পাস করেছে। এদের মধ্যে ১৮ জন পেয়েছে সর্বোচ্চ এ-প্লাস নম্বর বা জিপিএ-৫।
পুনঃনিরীক্ষার প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, এ-গ্রেড থেকে ফল পাল্টে এ-প্লাস পেয়েছে ২২ জন। এ-মাইনাস থেকে উচ্চতর গ্রেড পেয়েছে ১২ এবং বি-গ্রেড থেকে ৭ জনের ফল পাল্টে উচ্চতর গ্রেড হয়েছে।
বোর্ড থেকে পাওয়া তথ্যমতে, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে এবার এসএসসি পরীক্ষার ৯ হাজার ৪৪৩টি খাতা পুনঃনিরীক্ষার আবেদন জমা পড়ে। এ আবেদন করে ৮ হাজার ৩৮৭ পরীক্ষার্থী। সবচেয়ে বেশি পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন পড়ে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে। এ বিষয়ে আবেদন জমা হয় ৩ হাজার ৪৭৭টি।
এ প্রসঙ্গে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এ বছর ১১৬ জনের ১২০টি বিষয়ে পরীক্ষার ফল পাল্টেছে। মূলত নম্বর পোস্টিংয়ে ভুল ছিল। একজন হয়তো ৮০ শতাংশ নম্বর পাবে। তবে পরীক্ষকের ভুলে এটি ফেল হয়ে গেছে। টোটাল নম্বর যোগ ও বৃত্ত ভরাটের ভুল হয়েছে। বরাবর এরকম ভুল পাওয়া যায়। এরকম দুয়েকটি ফেল থেকে এ-প্লাসও পেয়ে থাকে। আমরা এগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থাও নিয়ে থাকি। কিন্তু আমাদেরও কিছুটা সীমাবদ্ধতা থাকে। এরকম ভুল করার দায়ে আমরা পরীক্ষককে পরীক্ষাসংক্রান্ত কাজ থেকে দুই বছর বা তার বেশি বছর বিরত রাখতে পারি।’
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী | ২৩ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নামোশঙ্করবাটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় সাদিকুন নাহার। সব পরীক্ষায় অংশগ্রহণ শেষে ভালো ফলাফলের আশা করেছিল। কারণ সব পরীক্ষাই ভালো হয়েছিল তার। কিন্তু যেদিন পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়, সেদিন কাঁদতে হয় সাদিকুনকে। ভালো ফল আসা তো দূরের কথা, প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী পাসই করতে পারেনি সে।
সাদিকুনকে অকৃতকার্য দেখানো হয় পদার্থবিজ্ঞানে। এ ফল সে কোনোভাবেই মানতে পারেনি। আবেদন করে খাতা পুনঃনিরীক্ষার। পুনঃনিরীক্ষা শেষে তার বিশ্বাসই ঠিক প্রমাণ হয়েছে। ভালো ফলাফলই করেছে। জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
পাবনার সাবসার উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী সরিদুল ইসলাম ও রাজশাহীর পুঠিয়ার ধোপাপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী জুলি খাতুনের ‘ফেল’ করার গল্পও একইরকম। তারা দুজন অকৃতকার্য হয়েছিল পৌরনীতি ও নাগরিকতা বিষয়ে। তবে খাতা পুনঃনিরীক্ষায় তাদের দুজনেরই ফল বদলে গেছে সাদিকুনের মতো। দুজনই অকৃতকার্য থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে তাদের মতো ১৮ জন ‘ফেল’ করা পরীক্ষার্থী খাতা পুনঃনিরীক্ষার পর পেয়েছে জিপিএ-৫।
গত শুক্রবার রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড খাতা পুনঃনিরীক্ষার ফল প্রকাশ করে। এবার ১১৬ শিক্ষার্থীর ১২০টি বিষয়ে ফলাফল পরিবর্তন হয়েছে। অকৃতকার্য দেখানো ৭৯ শিক্ষার্থী ফল পুনঃনিরীক্ষায় পাস করেছে। এদের মধ্যে ১৮ জন পেয়েছে সর্বোচ্চ এ-প্লাস নম্বর বা জিপিএ-৫।
পুনঃনিরীক্ষার প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, এ-গ্রেড থেকে ফল পাল্টে এ-প্লাস পেয়েছে ২২ জন। এ-মাইনাস থেকে উচ্চতর গ্রেড পেয়েছে ১২ এবং বি-গ্রেড থেকে ৭ জনের ফল পাল্টে উচ্চতর গ্রেড হয়েছে।
বোর্ড থেকে পাওয়া তথ্যমতে, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে এবার এসএসসি পরীক্ষার ৯ হাজার ৪৪৩টি খাতা পুনঃনিরীক্ষার আবেদন জমা পড়ে। এ আবেদন করে ৮ হাজার ৩৮৭ পরীক্ষার্থী। সবচেয়ে বেশি পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন পড়ে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে। এ বিষয়ে আবেদন জমা হয় ৩ হাজার ৪৭৭টি।
এ প্রসঙ্গে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এ বছর ১১৬ জনের ১২০টি বিষয়ে পরীক্ষার ফল পাল্টেছে। মূলত নম্বর পোস্টিংয়ে ভুল ছিল। একজন হয়তো ৮০ শতাংশ নম্বর পাবে। তবে পরীক্ষকের ভুলে এটি ফেল হয়ে গেছে। টোটাল নম্বর যোগ ও বৃত্ত ভরাটের ভুল হয়েছে। বরাবর এরকম ভুল পাওয়া যায়। এরকম দুয়েকটি ফেল থেকে এ-প্লাসও পেয়ে থাকে। আমরা এগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থাও নিয়ে থাকি। কিন্তু আমাদেরও কিছুটা সীমাবদ্ধতা থাকে। এরকম ভুল করার দায়ে আমরা পরীক্ষককে পরীক্ষাসংক্রান্ত কাজ থেকে দুই বছর বা তার বেশি বছর বিরত রাখতে পারি।’