তেঁতুলতলা মাঠ নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিল পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০
বহুল আলোচিত কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠ না ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে ওই জমির মালিকানা নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। মাঠ রক্ষায় আন্দোলন, মা-ছেলেকে থানায় আটকে রাখা এবং এ ঘটনায় তুমুল সমালোচনার মধ্যে সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাল পুলিশ।
তেঁতুলতলা মাঠ কীভাবে কলাবাগান থানা ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে গতকাল সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ডিএমপি। এতে বলা হয়েছে, ‘কলাবাগান থানা নির্মাণের জন্য দেশের প্রচলিত সব আইনকানুন মেনে বরাদ্দ নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে ডিএমপি কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার জমিতে বেআইনিভাবে থানা ভবন নির্মাণ করছে না।’
পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কলাবাগান থানার জন্য ধানমণ্ডি মৌজায় শূন্য দশমিক ২০ একর জমি (তেঁতুলতলা) ‘জনস্বার্থে’ অধিগ্রহণ করা হয়েছে, যা গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন।
থানা ভবন নির্মাণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদনের পর রাজউকের অনাপত্তিপত্র পাওয়ার কথাও বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। এতে বলা হয়, ‘জায়গাটির প্রস্তাবিত ভূমি ব্যবহার আরবান রেসিডেনসিয়াল জোন হিসেবে চিহ্নিত আছে মর্মে নগর উন্নয়নের ছাড়পত্র পাওয়া যায়। সরকারের প্রচলিত আইন ও নীতি অনুসরণে অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনাপত্তিপত্র পাওয়া যায়।’
এলাকাবাসীর ‘নিরাপত্তার সুবিধায়’ কলাবাগান থানা স্থাপনের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছিল বলেও পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ওই জমি ব্যবহারের জন্য জেলা প্রশাসককে জমির ক্ষতিপূরণ মূল্য দিয়ে ২৭ কোটি ৫৪ লাখ ৪১ হাজার ৭১০ টাকা চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয় বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। এরপর গত ২৭ মার্চ জমির নামজারি ও জমাভাগের পর সেখানে নির্মাণকাজে হাত দেয় পুলিশ।
ওই জমিতে থানা ভবন নির্মাণের বিরোধিতাকারী রতœা ও তার ছেলেকে ১৩ ঘণ্টা আটকে রাখার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন আইনজীবী ও পরিবেশবাদীরা। তবে এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে কিছু বলা হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিকল্প খেলার মাঠ ব্যবস্থার বিষয়টি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এখতিয়ারভুক্ত নয়। প্রস্তাবিত থানার জায়গা তেঁতুলতলা মাঠ থেকে কিছু দূরে কলাবাগান মাঠ রয়েছে। সেখানে বাচ্চাদের খেলাধুলাসহ সামাজিক অনুষ্ঠান করার সুযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজধানীর কলাবাগান আবাসিক এলাকায় (পান্থপথের দক্ষিণ পাশে) তেঁতুলতলা মাঠে এলাকার শিশু-কিশোররা যেমন খেলে, তেমনি নানা সামাজিক অনুষ্ঠানও চলে। ওই মাঠটি পুলিশ কলাবাগান থানা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ নিলে তার প্রতিবাদে নামে ওই এলাকার বাসিন্দারা, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন উদীচীর সদস্য সৈয়দা রত্না।
নানা কর্মসূচি উপেক্ষা করে গত রবিবার পুলিশ ওই মাঠে প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করলে সৈয়দা রত্না তার ছেলেকে নিয়ে সেখানে গিয়ে ফেইসবুক লাইভ শুরু করেন। তাদের ধরে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর মধ্যরাতে আর আন্দোলন করবেন না এমন মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০

বহুল আলোচিত কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠ না ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে ওই জমির মালিকানা নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। মাঠ রক্ষায় আন্দোলন, মা-ছেলেকে থানায় আটকে রাখা এবং এ ঘটনায় তুমুল সমালোচনার মধ্যে সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাল পুলিশ।
তেঁতুলতলা মাঠ কীভাবে কলাবাগান থানা ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে গতকাল সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ডিএমপি। এতে বলা হয়েছে, ‘কলাবাগান থানা নির্মাণের জন্য দেশের প্রচলিত সব আইনকানুন মেনে বরাদ্দ নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে ডিএমপি কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার জমিতে বেআইনিভাবে থানা ভবন নির্মাণ করছে না।’
পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কলাবাগান থানার জন্য ধানমণ্ডি মৌজায় শূন্য দশমিক ২০ একর জমি (তেঁতুলতলা) ‘জনস্বার্থে’ অধিগ্রহণ করা হয়েছে, যা গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন।
থানা ভবন নির্মাণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদনের পর রাজউকের অনাপত্তিপত্র পাওয়ার কথাও বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। এতে বলা হয়, ‘জায়গাটির প্রস্তাবিত ভূমি ব্যবহার আরবান রেসিডেনসিয়াল জোন হিসেবে চিহ্নিত আছে মর্মে নগর উন্নয়নের ছাড়পত্র পাওয়া যায়। সরকারের প্রচলিত আইন ও নীতি অনুসরণে অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনাপত্তিপত্র পাওয়া যায়।’
এলাকাবাসীর ‘নিরাপত্তার সুবিধায়’ কলাবাগান থানা স্থাপনের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছিল বলেও পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ওই জমি ব্যবহারের জন্য জেলা প্রশাসককে জমির ক্ষতিপূরণ মূল্য দিয়ে ২৭ কোটি ৫৪ লাখ ৪১ হাজার ৭১০ টাকা চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয় বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। এরপর গত ২৭ মার্চ জমির নামজারি ও জমাভাগের পর সেখানে নির্মাণকাজে হাত দেয় পুলিশ।
ওই জমিতে থানা ভবন নির্মাণের বিরোধিতাকারী রতœা ও তার ছেলেকে ১৩ ঘণ্টা আটকে রাখার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন আইনজীবী ও পরিবেশবাদীরা। তবে এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে কিছু বলা হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিকল্প খেলার মাঠ ব্যবস্থার বিষয়টি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এখতিয়ারভুক্ত নয়। প্রস্তাবিত থানার জায়গা তেঁতুলতলা মাঠ থেকে কিছু দূরে কলাবাগান মাঠ রয়েছে। সেখানে বাচ্চাদের খেলাধুলাসহ সামাজিক অনুষ্ঠান করার সুযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজধানীর কলাবাগান আবাসিক এলাকায় (পান্থপথের দক্ষিণ পাশে) তেঁতুলতলা মাঠে এলাকার শিশু-কিশোররা যেমন খেলে, তেমনি নানা সামাজিক অনুষ্ঠানও চলে। ওই মাঠটি পুলিশ কলাবাগান থানা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ নিলে তার প্রতিবাদে নামে ওই এলাকার বাসিন্দারা, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন উদীচীর সদস্য সৈয়দা রত্না।
নানা কর্মসূচি উপেক্ষা করে গত রবিবার পুলিশ ওই মাঠে প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করলে সৈয়দা রত্না তার ছেলেকে নিয়ে সেখানে গিয়ে ফেইসবুক লাইভ শুরু করেন। তাদের ধরে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর মধ্যরাতে আর আন্দোলন করবেন না এমন মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।