করোনা মহামারীর বিধিনিষেধে দুই বছরের বেশি ঘরে বসে কাজের সুযোগ দেয় অফিস। মহামারীর প্রকোপ আগের মতো না থাকায় অফিসে ফেরার নির্দেশ দিতেই দুই মাসে আট শতাধিক কর্মী চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।

ভারতীয় শিক্ষা-প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান হোয়াইটহ্যাট জুনিয়রে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়া ডটকম। ২০২০ সালে আরেক ভারতীয় কোম্পানি বাইজু প্রতিষ্ঠানটি অধিগ্রহণ করে।

গত ১৮ মার্চ হোয়াইটহ্যাট জুনিয়র কর্র্তৃপক্ষ তাদের কর্মীদের ই-মেইল করে মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, গুরুগাঁওয়ের মতো বিভিন্ন অফিসে ফেরার নির্দেশ দেয়। ওই নির্দেশ মেনে অফিসে ফিরতে পারবেন না জানিয়ে দুই মাসে একে একে প্রতিষ্ঠানটির ৮০০ কর্মী পদত্যাগ করেছেন।

প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের একাংশ অবশ্য বলছেন, ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আরও অনেক কর্মী পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন। পদত্যাগী কর্মীদের অভিযোগ, বাইজুর অধিগ্রহণ ও হোয়াইটহ্যাট জুনিয়রের প্রতিষ্ঠাতা করণ বাজাজ প্রতিষ্ঠানটি ছাড়ার পর থেকেই অনেক কিছু বদলে যেতে শুরু করে। করণ বাজাজ থাকা পর্যন্ত সবই ঠিক চলছিল। ২০২০ সালে ৩০ কোটি ডলার মূল্যে প্রতিষ্ঠানটি কিনে নেয় বাইজু। এরপর ২০২১ সালের আগস্টে প্রতিষ্ঠানটি ছাড়েন করণ বাজাজ।

কর্মীরা এমন অভিযোগ করলেও কর্র্তৃপক্ষ বলছে অন্য কথা। এক বিবৃতিতে হোয়াইটহ্যাট জুনিয়র বলেছে, আমরা আবার আমাদের কর্মীদের কাজে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এরই অংশ হিসেবে সেলস ও সাপোর্ট বিভাগের কর্মীদের গত ১৮ এপ্রিল থেকে মুম্বাই ও গুরুগাঁও অফিসে ফিরতে বলা হয়েছিল। তবে এর ব্যতিক্রমও ছিল। যেমন যেসব কর্মী অসুস্থ কিংবা ব্যক্তিগত সমস্যায় ছিলেন, তাদের অন্য স্থানে পাঠানো হয়। এ ছাড়া আমাদের শিক্ষকদের ঘরে বসেই কাজ করার কথা বলা হয়েছিল।

অবশ্য করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ভারতের মতো অন্য দেশেও এমন ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল তাদের কর্মীদের সপ্তাহে তিন দিন অফিসে বসে কাজ করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু এমন নির্দেশ পছন্দ না হওয়ায় এর প্রতিবাদে অ্যাপলের মেশিন লার্নিং বিভাগের প্রধান ইয়ান গুডফেলো পদত্যাগ করেছেন।

চলতি বছরের ১৩ থেকে ১৯ এপ্রিলের মধ্যে অ্যাপলের ৬৫২ কর্মী ব্লাইন্ড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের করা সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক-সংক্রান্ত জরিপে অংশ নেন। এতে দেখা যায়, জরিপে অংশ নেওয়া অ্যাপলের ৭৫ শতাংশ কর্মী প্রতিষ্ঠানটির অফিসে ফেরার নীতিতে সন্তুষ্ট নন।