মেয়েদের গোপন স্কুল
রূপান্তর ডেস্ক | ১৯ মে, ২০২২ ০০:০০
তালেবানরা ফের আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে দেশটির নারী শিক্ষা নিয়ে। গোষ্ঠীটি নারীদের শিক্ষায় আরও আধুনিক চিন্তা-চেতনার কথা বললেও, বাস্তবতা ভিন্ন। শুরুতে স্কুল খুলে দেওয়ার কথা বলা হলেও, পরে তা বন্ধ করে দেয় তালেবান প্রশাসন। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নানামুখী চাপেও নারীনীতি বদলাচ্ছে না। কিন্তু থেমে নেই আফগান নারীরা। শহরতলিতে গোপনে স্কুল খুলে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে অনেক আফগান মেয়ে।
এই গোপন স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে রয়েছে ব্যাপক ঝুঁকি। ওই মেয়েরা জানে, যেকোনো দিন তালেবানের রোষানলে পড়তে পারে তারা। তবু সব জেনে- বুঝেও ঝুঁকি নিতে চাইছে তারা। এমন একটি গোপন স্কুলে গিয়েছিলেন বিবিসির সাংবাদিক সেকুনদার কেরমানি। সেখানে তিনি ওই স্কুলের এক শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলেন। ওই শিক্ষিকা সেকুনদারকে বলেন, ‘যতটা গোপনে ক্লাস চালিয়ে নেওয়া যায়, তা আমরা করছি। কিন্তু তারা আমাকে গ্রেপ্তার করে মারধর করতে পারে। দুই মাসের বেশি সময় স্কুল খুলছে না। এতে অনেক উদ্বেগ কাজ করছে।’
গত মার্চে মেয়েদের জন্য স্কুল খুলে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাত্র এক ঘণ্টার জন্য স্কুল খোলার পরেই তালেবান নেতৃত্ব আবার স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তালেবানের ওই সিদ্ধান্তে হতাশ হয়ে পড়ে আফগান মেয়ে শিক্ষার্থীরা। সেকুনদারকে গোপন স্কুলের এক শিক্ষার্থী আফগানিস্তানের অন্য মেয়েদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সাহসী হও। তোমরা সাহসী হলে কেউ তোমাদের থামাতে পারবে না।’ আফগানিস্তানে সব দলের কাছেই সম্মানীয় ব্যক্তি আলেম শেখ রহিমুল্লাহ হাক্কানি।
তালেবানরাও তাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করে। সম্প্রতি তিনি পেশোয়ার থেকে কাবুলে গিয়েছিলেন তালেবান নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। সেখানে তিনি তালেবানের নারীনীতির সরাসরি সমালোচনা না করলেও কৌশলে অনেক কথাই বলেছেন। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘শরিয়তে এমন কোনো কথা নেই যে মেয়েদের শিক্ষার অধিকার দেওয়া যাবে না। এর কোনো যুক্তি নেই। ধর্মীয় সব বইয়েই নারী শিক্ষার কথা বলা হয়েছে। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মতো ইসলামিক পরিবেশে যদি কোনো নারী অসুস্থ হয়ে যায়, তাহলে তার চিকিৎসা দরকার। তাকে যদি কোনো নারী চিকিৎসক চিকিৎসা দিতে পারেন, তবে সেটাই হবে সবচেয়ে ভালো সমাধান।’
শেয়ার করুন
রূপান্তর ডেস্ক | ১৯ মে, ২০২২ ০০:০০

তালেবানরা ফের আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে দেশটির নারী শিক্ষা নিয়ে। গোষ্ঠীটি নারীদের শিক্ষায় আরও আধুনিক চিন্তা-চেতনার কথা বললেও, বাস্তবতা ভিন্ন। শুরুতে স্কুল খুলে দেওয়ার কথা বলা হলেও, পরে তা বন্ধ করে দেয় তালেবান প্রশাসন। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নানামুখী চাপেও নারীনীতি বদলাচ্ছে না। কিন্তু থেমে নেই আফগান নারীরা। শহরতলিতে গোপনে স্কুল খুলে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে অনেক আফগান মেয়ে।
এই গোপন স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে রয়েছে ব্যাপক ঝুঁকি। ওই মেয়েরা জানে, যেকোনো দিন তালেবানের রোষানলে পড়তে পারে তারা। তবু সব জেনে- বুঝেও ঝুঁকি নিতে চাইছে তারা। এমন একটি গোপন স্কুলে গিয়েছিলেন বিবিসির সাংবাদিক সেকুনদার কেরমানি। সেখানে তিনি ওই স্কুলের এক শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলেন। ওই শিক্ষিকা সেকুনদারকে বলেন, ‘যতটা গোপনে ক্লাস চালিয়ে নেওয়া যায়, তা আমরা করছি। কিন্তু তারা আমাকে গ্রেপ্তার করে মারধর করতে পারে। দুই মাসের বেশি সময় স্কুল খুলছে না। এতে অনেক উদ্বেগ কাজ করছে।’
গত মার্চে মেয়েদের জন্য স্কুল খুলে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাত্র এক ঘণ্টার জন্য স্কুল খোলার পরেই তালেবান নেতৃত্ব আবার স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তালেবানের ওই সিদ্ধান্তে হতাশ হয়ে পড়ে আফগান মেয়ে শিক্ষার্থীরা। সেকুনদারকে গোপন স্কুলের এক শিক্ষার্থী আফগানিস্তানের অন্য মেয়েদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সাহসী হও। তোমরা সাহসী হলে কেউ তোমাদের থামাতে পারবে না।’ আফগানিস্তানে সব দলের কাছেই সম্মানীয় ব্যক্তি আলেম শেখ রহিমুল্লাহ হাক্কানি।
তালেবানরাও তাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করে। সম্প্রতি তিনি পেশোয়ার থেকে কাবুলে গিয়েছিলেন তালেবান নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। সেখানে তিনি তালেবানের নারীনীতির সরাসরি সমালোচনা না করলেও কৌশলে অনেক কথাই বলেছেন। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘শরিয়তে এমন কোনো কথা নেই যে মেয়েদের শিক্ষার অধিকার দেওয়া যাবে না। এর কোনো যুক্তি নেই। ধর্মীয় সব বইয়েই নারী শিক্ষার কথা বলা হয়েছে। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মতো ইসলামিক পরিবেশে যদি কোনো নারী অসুস্থ হয়ে যায়, তাহলে তার চিকিৎসা দরকার। তাকে যদি কোনো নারী চিকিৎসক চিকিৎসা দিতে পারেন, তবে সেটাই হবে সবচেয়ে ভালো সমাধান।’