‘জয় বাংলা’ স্লোগানে না প্রধান শিক্ষকের!
রাজবাড়ী প্রতিনিধি | ২৪ জুন, ২০২২ ০০:০০
বিদ্যালয়ের প্রাত্যহিক সমাবেশে (অ্যাসেম্বলি) ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে নিষেধ করার অভিযোগ উঠেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আকতার জাহান নামে ওই শিক্ষক বকচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে উপজেলা শিক্ষা অফিস। বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা চঞ্চল শেখ স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর ওই নোটিসটি গত ২২ জুন প্রধান শিক্ষক আকতার জাহানকে পাঠানো হয়। কারণ দর্শানোর নোটিসে বলা হয়েছে, গত ২২ জুন তিনি (উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা চঞ্চল শেখ) বকচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন গত ২০ জুন বিদ্যালয়ের সমাবেশ পরিচালনাকারী পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র অনিক বিশ্বাস শপথ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে যাওয়ার সময় প্রধান শিক্ষক আকতার জাহান তাকে বাধা দেন। এরপর থেকে বিদ্যালয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়া বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের ক্ষুব্ধ করেছে।
এ প্রসঙ্গে বকচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জেসমিন আক্তার দেশ রূপান্তরকে বলেন, “আমাদের বিদ্যালয়ে প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের সমাবেশ হয়। জয় বাংলা সেøাগান দিয়ে সমাবেশ শেষ করা হয়। কিন্তু ওই দিন সমাবেশে শিক্ষার্থীরা যখন জয় বাংলা বলেছে তখনই আমাদের প্রধান শিক্ষক বলে, ‘জয় বাংলা আর বলবা না সমাবেশে’। তারপর থেকে সমাবেশে স্লোগান দেওয়া বন্ধ রয়েছে।”
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা চঞ্চল শেখ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জয় বাংলা এখন রাষ্ট্রের এবং সবার স্লোগান। স্লোগানে বাধা দেওয়া গর্হিত অপরাধ। বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে বিষয়টি জানার পর প্রধান শিক্ষকের কাছে মৌখিকভাবে এর ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রধান শিক্ষক যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট হতে পারিনি। এ কারণে তাকে লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। নোটিসটি বৃহস্পতিবার প্রধান শিক্ষক গ্রহণও করেছেন।’
এর আগে ছাত্রকে বেত্রাঘাতের অপরাধে প্রধান শিক্ষক আকতার জাহানকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছিল বলেও জানান শিক্ষা কর্মকর্তা।
জয় বাংলা স্লোগান দিতে নিষেধ করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আকতার জাহান বলেন, ‘আমি আসলে ওইভাবে নিষেধ করেনি। জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে সমাবেশ শেষ করত শিক্ষার্থীরা। আমি বলেছি, সমাবেশ শেষে আর স্লোগান দিবা না। আমি অফিস থেকে শুনে আসি স্লোগান কখন দিতে হবে। কারণ আমাদের উল্লেখ করা নেই সমাবেশের প্রথমে না শেষে সেøাগান দিতে হবে। তাই জয় বাংলা স্লোগান দিতে নিষেধ করেছি।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২ মার্চ ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তার আগে ২০২০ সালের ১০ মার্চ হাইকোর্ট এক রায়ে ‘জয় বাংলা’কে দেশের জাতীয় স্লোগান করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছিল।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাত্যহিক সমাবেশ (অ্যাসেম্বলি) শেষে এবং সভা-সেমিনারে বক্তব্যের শেষে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ‘জয় বাংলা’ সেøাগান উচ্চারণ করবে।
শেয়ার করুন
রাজবাড়ী প্রতিনিধি | ২৪ জুন, ২০২২ ০০:০০

বিদ্যালয়ের প্রাত্যহিক সমাবেশে (অ্যাসেম্বলি) ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে নিষেধ করার অভিযোগ উঠেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আকতার জাহান নামে ওই শিক্ষক বকচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে উপজেলা শিক্ষা অফিস। বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা চঞ্চল শেখ স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর ওই নোটিসটি গত ২২ জুন প্রধান শিক্ষক আকতার জাহানকে পাঠানো হয়। কারণ দর্শানোর নোটিসে বলা হয়েছে, গত ২২ জুন তিনি (উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা চঞ্চল শেখ) বকচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন গত ২০ জুন বিদ্যালয়ের সমাবেশ পরিচালনাকারী পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র অনিক বিশ্বাস শপথ শেষে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে যাওয়ার সময় প্রধান শিক্ষক আকতার জাহান তাকে বাধা দেন। এরপর থেকে বিদ্যালয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়া বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের ক্ষুব্ধ করেছে।
এ প্রসঙ্গে বকচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জেসমিন আক্তার দেশ রূপান্তরকে বলেন, “আমাদের বিদ্যালয়ে প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের সমাবেশ হয়। জয় বাংলা সেøাগান দিয়ে সমাবেশ শেষ করা হয়। কিন্তু ওই দিন সমাবেশে শিক্ষার্থীরা যখন জয় বাংলা বলেছে তখনই আমাদের প্রধান শিক্ষক বলে, ‘জয় বাংলা আর বলবা না সমাবেশে’। তারপর থেকে সমাবেশে স্লোগান দেওয়া বন্ধ রয়েছে।”
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা চঞ্চল শেখ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জয় বাংলা এখন রাষ্ট্রের এবং সবার স্লোগান। স্লোগানে বাধা দেওয়া গর্হিত অপরাধ। বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে বিষয়টি জানার পর প্রধান শিক্ষকের কাছে মৌখিকভাবে এর ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রধান শিক্ষক যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট হতে পারিনি। এ কারণে তাকে লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। নোটিসটি বৃহস্পতিবার প্রধান শিক্ষক গ্রহণও করেছেন।’
এর আগে ছাত্রকে বেত্রাঘাতের অপরাধে প্রধান শিক্ষক আকতার জাহানকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছিল বলেও জানান শিক্ষা কর্মকর্তা।
জয় বাংলা স্লোগান দিতে নিষেধ করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আকতার জাহান বলেন, ‘আমি আসলে ওইভাবে নিষেধ করেনি। জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে সমাবেশ শেষ করত শিক্ষার্থীরা। আমি বলেছি, সমাবেশ শেষে আর স্লোগান দিবা না। আমি অফিস থেকে শুনে আসি স্লোগান কখন দিতে হবে। কারণ আমাদের উল্লেখ করা নেই সমাবেশের প্রথমে না শেষে সেøাগান দিতে হবে। তাই জয় বাংলা স্লোগান দিতে নিষেধ করেছি।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২ মার্চ ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তার আগে ২০২০ সালের ১০ মার্চ হাইকোর্ট এক রায়ে ‘জয় বাংলা’কে দেশের জাতীয় স্লোগান করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছিল।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাত্যহিক সমাবেশ (অ্যাসেম্বলি) শেষে এবং সভা-সেমিনারে বক্তব্যের শেষে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ‘জয় বাংলা’ সেøাগান উচ্চারণ করবে।