
কক্সবাজারের উখিয়ার পার্শ্ববর্তী ঘুমধুম-তমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে গোলাগুলির শব্দ কমে এসেছে। গত দুই দিনে আগের মতো মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পায়নি সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। গতকাল রবিবার ওই এলাকার পরিবেশ তুলনামূলক শান্ত ছিল। তবে স্থানীয়দের শঙ্কা, হঠাৎ করে গোলাগুলি কমিয়ে দেওয়া মিয়ানমারের নতুন কোনো কৌশল হতে পারে।
গত কয়েক দিন ধরেই বাংলাদেশ- মিয়ানমার সীমান্তের নাইক্ষ্যংছড়ি সদর থেকে ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে নিয়মিত গোলাগুলি হচ্ছিল। কয়েকটি গুলি ও গোলা বাংলাদেশে এসেও পড়ে। এ নিয়ে সীমান্ত এলাকায় বাড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। তবে গতকাল কোনো শব্দই শোনেনি স্থানীয়রা।
গতকাল তমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম শাওন বলেন, আজ সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত। গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। স্থানীয়দের মনে স্বস্তি ফিরেছে এতে।
তমব্রু বাজারের ব্যবসায়ী শফিউল আলম জানান, শনিবার ভোর থেকে রবিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মাত্র দুইটা বিস্ফোরণের আওয়াজ মিয়ানমার থেকে এসেছে।
বিগত প্রায় ৪৩ দিন ধরে চলে আসা মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং সে দেশের বিদ্রোহী সংগঠন আরকান আর্মির মাঝে চলা সংঘর্ষে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. আলম বলেন, বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত। সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসকারী মানুষজনের মনে কিছুটা স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। তবে সেটি তাদের কৌশল কি না এখনই বলা যাচ্ছে না।
ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত আছে। গত দুই দিনে গোলাগুলি হয়নি বললেই চলে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই শিশুখাদ্যের দামও লাফিয়ে বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে কোম্পানিভেদে গুঁড়োদুধ ও অন্যান্য খাদ্যের দাম বেড়েছে অন্তত ২০ টাকা। গত দেড় মাসে সর্বোচ্চ বেড়েছে ৭০ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত তিন মাস ধরে গড়ে প্রতি মাসে একবার করে শিশুখাদ্যের দাম বেড়েছে। তারা বলছেন, কোম্পানি দাম বাড়ালে তাদের তো কিছু করার নেই।
গতকাল রবিবার মহাখালী ও আশপাশ এলাকার দোকান ঘুরে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে মানভেদে সব ধরনের শিশুখাদ্যে ২০ টাকার বেশি বেড়েছে। ৩৫০ গ্রামের ল্যাকটোজেনের কৌটা (চার বছর বয়সীদের উপযোগী) এখন ৪৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ছিল ৪৭০ টাকা। দেড় মাস আগে ৩৭০-৩৮০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতেন ব্যবসায়ীরা।
নিডো (৩-৫) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা। যা এক মাস আগেও ছিল ৩৭৫, নিডো (১-৩) গত সপ্তাহের তুলনায় ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৭০, নান ৮৯০ টাকা, যা দেড় মাস আগে ছিল ৮৬০; বায়োমিল(১) ৫১০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৯০। ল্যাকটোজেন (২) এক সপ্তাহে ৫০০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫২০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে ১৫ টাকা বেড়ে কমপ্লেন বিক্রি হচ্ছে ৩৭৫ টাকা। বেবিকেয়ার ৭০০, যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৬৭০ টাকা। মাদারপ্লাস এক সপ্তাহ আগের দাম ৫৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪০০ টাকার হরলিক্স সপ্তাহের ব্যবধানে ৪২০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
মহাখালী স্টোরের স্বত্বাধিকারী জাহিদুর ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘চার মাস আগে ৩৩০ টাকায় বিক্রি করা হরলিক্সের দাম বেড়ে এখন ৪২০ টাকা। একইভাবে সব ধরনের শিশুখাদ্যের দাম বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো। এতে করে আমাদের বিক্রি অনেক কমেছে।’
খোকন জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দিনের পর দিন সব পণ্যের দাম বাড়ছে। সরকারের বাজার তদারকি সংস্থাগুলো সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে না বলেই আজকের বাজার পরিস্থিতির বেহাল অবস্থা।’
এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) পরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের টিম সবসময় মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের বাইরেও আরও ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। তারা তাদের সঠিক দায়িত্ব পালন করলে ভোক্তা হয়রানি অনেকাংশে কমে আসবে বলে বিশ্বাস করি।’
বনানীর একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন শ্যামলীর বাসিন্দা আশরাফ হোসেন। বাসায় যাওয়ার পথে মহাখালী বাজারে এসেছেন তার দেড় বছরের ছেলের জন্য ল্যাকটোজেন ও সেরিলাক কিনতে। সপ্তাহের ব্যবধানে এ দুই শিশুখাদ্যের বাড়তি দেখে অবাক হন তিনি। জানতে চাইলে আশরাফ হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বাচ্চার পুষ্টি ঘাটতি মেটাতে এ বাড়িত খাবার। কিন্তু দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে কতদিন সেরিলাক বা ল্যাকটোজেন খাওয়াতে পারব, সেটাই ভাবছি।’
আকলিমা খাতুনের মেয়ে লাবিবার বয়স চার বছর। তার জন্য তিনি প্রতি মাসে গুঁড়োদুধ বা হরলিক্স জাতীয় খাবার কেনেন। আকলিমা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নিত্যপণ্যের পাশাপাশি শিশুখাদ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে আমরা অনেক সমস্যায় পড়েছি। আগে মাসে হাজার দুই-একের মধ্যে বাচ্চার খাবারের খরচ হয়ে যেত। কিন্তু এখন এক হাজার টাকার বেশি বাড়তি লাগে। গত কয়েক মাসে সংসার খরচ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। অথচ আয় বাড়েনি।’
খুব সম্ভবত এটা বিশ্বের সবচেয়ে অদ্ভুত জাদুঘর, আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও বিখ্যাত-কুখ্যাত ব্যক্তিদের স্মৃতিস্মারকে ঠাসা এটি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, বিশ্বের আর সব জাদুঘর দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত হলেও এ জাদুঘরে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ! এটি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর জাদুঘর এবং এর অবস্থান গোয়েন্দা সংস্থাটির সদর দপ্তরের ভেতর। যতই গোপনীয় হোক, বিশ্বরাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতি তো আর একেবারেই লুকিয়ে রাখা যায় না। তাই সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার ল্যাংলেতে সিআইএর প্রধান কার্যালয়ে এ জাদুঘর ঘুরে দেখার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন বিবিসি, গার্ডিয়ানসহ নামকরা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কয়েকজন সাংবাদিক। সিআইএর ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এ সুযোগ পেয়েছিলেন সাংবাদিকরা। তাদের চোখেই না হয় দেখা যাক কী কী আছে এ টপ সিক্রেট বা অতি গোপনীয় জাদুঘরে। সেখান থেকে ঘুরে আসা বিবিসির প্রতিরক্ষাবিষয়ক প্রতিনিধি গর্ডন করেরার বর্ণনা অনুযায়ী, জাদুঘরে ১৯৪৭ থেকে শুরু করে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়ের ৬০০-এরও বেশি ঐতিহাসিক উপকরণ আছে। কী আছে এসবের মধ্যে জিজ্ঞাসা করার চেয়ে বরং বলা ভালো কী নেই এখানে! স্নায়ুযুদ্ধের সময়কার গুপ্তচরসামগ্রী যেমন গোপন বার্তা রেখে দেওয়ার পেটকাটা মরা ইঁদুর, সিগারেটের প্যাকেট কিংবা কবুতরের ছদ্মবেশে থাকা গোপন ক্যামেরা, বিস্ফোরক মদের গ্লাস রাখা আছে এখানে। আশির দশকের এসবের সামগ্রীর চেয়েও বেশি আকর্ষণীয় হলো সিআইএর সাম্প্রতিক কয়েকটি বিখ্যাত অপারেশনের ডামি এবং ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা উপকরণ। এসবের মধ্যে আছে আফগানিস্তানের কাবুলে আল-কায়েদাপ্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরিকে হত্যার মিশনে নামার আগে তার বাড়ির তৈরি করা নমুনা, জাওয়াহিরির পোশাকও পাশেই। আরও আছে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার জন্য ‘অপারেশন নেপচুন স্পিয়ার’-এর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তৈরি করা লাদেনের বাড়িটির একটি মডেল, এর ঠিক পাশেই রাখা আছে লাদেনের একে-৪৭ রাইফেলটি। কাছাকাছি আছে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনে ক্ষমতাচ্যুত ইরাকি নেতা সাদ্দাম হোসেনের জ্যাকেট ও তার শখের দুটি স্বর্ণের রাইফেল। সফল এসব মিশনের সঙ্গে ব্যর্থতাও মনে করিয়ে দেয় জাদুঘরের আরেকটি কর্নার। এখানে আছে কিউবার নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রোকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সিআইএর চরম ব্যর্থ মিশন ‘বে অব পিগস’-এর স্মৃতিস্মারক।
যে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশ রাষ্ট্র রচিত হয়েছে সেই ভিত্তি মজবুত করতে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
গতকাল রবিবার রাজধানীর বনানী পূজামন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার সূচনাপর্ব শুভ মহালয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান। এদিন ভোর ৬টা ২ মিনিটে মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন অতিথি ও আয়োজকরা। শিল্পী মনোজ সেনগুপ্তের সঞ্চালনায় ফাউন্ডেশনের সভাপতি পান্না লাল দত্ত, সাধারণ সম্পাদক প্রাণকৃষ্ণ ঘোষ ও শিল্পী লাল দত্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
নিরবচ্ছিন্নভাবে বনানীতে পূজা আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ইসলাম সব ধর্মের মূল মর্মবাণী মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি স্থাপন এবং মানুষের কল্যাণকে চেতনায় ধারণ ও অনুশীলন করলে দেশ, সমাজ, পৃথিবী অনেক শান্তিময় হতো, ধর্মের ভিত্তিতে হানাহানি থাকত না। আমাদের দেশে যে অপশক্তি সাম্প্রদায়িকতা ছড়াতে চায়, মাঝেমধ্যে ফণা তুলে দাঁড়াতে চায়, ছোবল মারতে চায় সেই অপশক্তিকে সবাই মিলে দমন করতে হবে। তাহলেই যে চেতনার ভিত্তিতে রাষ্ট্র রচিত হয়েছে সেই রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভিত আমরা আরও মজবুত করতে পারব।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশ রচিত হয়েছে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার মিলিত সংগ্রাম এবং মিলিত রক্তের স্রোতের বিনিময়ে। সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনার জন্যই আমরা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই একযোগে লড়াই করেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, যার নেতৃত্বে এ দেশ রচিত হয়েছে সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ৭৫ সালে হত্যা করার পর যে চেতনার ভিত্তিতে দেশ রচিত হয়েছিল সেই চেতনায় আঘাত হানা হয়েছে, ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। রাষ্ট্রকে আবার সাম্প্রদায়িক বানানোর অপচেষ্টা চালানো হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার রাষ্ট্রের যে মূল চেতনার ওপর আঘাত হানা হয়েছিল, সেটিকে পুনরুদ্ধার করে মূল চেতনায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছে উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘যারা এ রাষ্ট্রকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে চেয়েছে তারা এখনো সাম্প্রদায়িক হানাহানি ছড়ায়, সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়ায় এবং তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সরকার কঠোর ব্যবস্থা সবসময় গ্রহণ করেছে। দেশে একটি রাজনৈতিক পক্ষ আছে যারা সাম্প্রদায়িকতাকে নিয়ে অপরাজনীতি করে। তাদের ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা লক্ষ করুন, আমাদের দেশে প্রতি বছর পূজাম-পের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এটির কারণ হচ্ছে, মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে, মানুষের সামর্থ্য আছে এবং একই সঙ্গে সরকার আপনাদের পাশে আছে। এ তিনটি কারণে প্রতি বছর পূজামন্ডপের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। গত বছর বিভিন্ন জায়গায় পূজার সময় গন্ডগোল করার চেষ্টা করা হয়েছিল, এরপরও গত বছরের তুলনায় এ বছর পূজামন্ডপের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক।’
এ বছর অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে পুরো দেশে পূজা উদযাপন এবং প্রতিমা বিসর্জন হবে, দুর্গা উৎসবের আনন্দ সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ুক, সেই আনন্দ সারা বছর জাগরূক থাকুক এবং আপনাদের আনন্দের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ আনন্দময় হোক, শান্তিময় হোকÑ আশাপ্রকাশ করেন তথ্যমন্ত্রী।
টেলিফোন শিল্প সংস্থার (টেশিস) ‘দোয়েল’ ল্যাপটপ উৎপাদনে প্রকল্প ব্যর্থ হওয়ার কারণ জানতে চেয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তির কথাও বলেন তিনি। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এ ব্যাপারে একমত পোষণ করে সচিবকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল রবিবার সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ওই কার্যবিবরণী অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটির আগের বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে প্রথমে জুনাইদ আহমেদ পলক জানতে চান দোয়েল প্রকল্প কেন ব্যর্থ হলো? সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির কথাও বলেন তিনি। পলক বলেন, দোয়েল প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেছেন। এ প্রকল্প ব্যর্থ হওয়া মানে সেই গর্বের জায়গাটা নষ্ট হওয়া। এটা বিব্রত করা হলো। তাই এর সুষ্ঠু তদন্ত দরকার।
তারা আরও জানায়, প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বৈঠক থেকেই সচিবকে দ্রুত বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেন। মোস্তাফা জব্বার বলেন, দোয়েলের প্রথম চালান থেকে শুরু করে প্রকল্পের শেষ পর্যন্ত সবকিছু দেখতে হবে। টেশিসকে ডিজিটাল ডিভাইস কারখানা হিসেবে গড়ে তোলার ব্যাপারে একটি জরিপ পরিচালিত হচ্ছে, প্রতিষ্ঠানটিকে রক্ষা করার জন্য। ২০১১ সালে সাশ্রয়ী ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ দোয়েল তৈরি শুরু করে টেশিস। কিন্তু কিছু ল্যাপটপ তৈরির পর সেগুলোর মান নিয়ে নানা অভিযোগ ওঠে। পরে প্রকল্পটি আর সফলতার মুখ দেখেনি।
বৈঠক সূত্র আরও জানিয়েছে, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সব সদস্যকে গতকাল বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে উৎপাদিত নোকিয়া ব্র্যান্ডের মোবাইল সেট উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের ১৪ হাজার টাকা দামের এ হ্যান্ডসেট দেওয়া হয়।
কমিটির সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটি সদস্য তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, নুরুল আমিন, মনিরা সুলতানা ও অপরাজিতা হক বৈঠকে অংশ নেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার রাত ১১টার দিকে বাবর রোডের তিনতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে স্বামী নোমান ও স্ত্রী শামীমার লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে ওই বাসার অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা দরজা ভেঙে তাদের মৃতদেহ দেখতে পেয়ে খবর দেয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। নোমান বিদেশে থাকতেন বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের মৃত্যুর কারণ জানাতে পারেনি পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বাসার ভেতর ফ্লোরের বিছানায় পড়েছিল স্ত্রীর লাশ। চাদরে মোড়ানো ছিল তার নিথর শরীর। আর ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল স্বামীর লাশ। তার হাতে রক্ত জমাট বেঁধে লাল হয়ে ছিল। গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছিল।
ঘটনাস্থলে থাকা ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শেখ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নোমান ও শামীমা নামে এক দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কীভাবে মৃত্যু হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত নই।’
তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. মুজিব পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা ৯৯৯-এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। এসে দেখি স্বামী ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে এবং স্ত্রী বিছানার ওপর মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। নোমান সৌদি আরব প্রবাসী।’ তিনি আরও বলেন, ‘এক বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক থেকে দুজন বিয়ে করেন। পারিবারিকভাবে সেটা মেনে নেওয়া হয়নি। সে কারণে তারা আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। দুজনের বাড়ি ভোলার লালমোহন থানা এলাকায়। তদন্ত চলছে, বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।