
করোনা-পরবর্তী একাডেমিক চাপে শিক্ষার্থীরা মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৭৬ শতাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে ৪০৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ২৪২ জন। গতকাল শনিবার আঁচল ফাউন্ডেশনের ‘মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর একাডেমিক চাপের প্রভাব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা’ শীর্ষক ভার্চুুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও আঁচল ফাউন্ডেশনের গবেষক ড. এ ওহাব।
জরিপে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, ৭৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী করোনা-পরবর্তী একাডেমিক চাপের কারণে বিভিন্ন মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। ফলে অনেকে আত্মহত্যার পথ বেঁছে নিচ্ছেন। চলতি বছরের ৯ মাসে আত্মহত্যা করেছেন ৪০৪ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ৫৭, স্কুলের ২১৯, মাদ্রাসার ৪৪, কলেজপড়ুয়া ৮৪ জন। আর এদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ছিল ২৪২ ও পুরুষ শিক্ষার্থী ১৬২ জন।
জরিপে ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ৪৭টি বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ১ হাজার ৬৪০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন।
জরিপের ফলাফল ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আঁচল ফাউন্ডেশনের গবেষক ড. এ ওহাব বলেন, অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৭ দশমিক ৯৯ শতাংশই জানিয়েছেন যে নিজস্ব শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অতিরিক্ত ভয় ও উদ্বেগ তাদের জীবনকে প্রভাবিত করেছে। পাশাপাশি দৈনন্দিন আচার-আচরণ ও ব্যবহারে পরিবর্তন, যেমন মন খারাপ হওয়া, হঠাৎ ক্লান্তি আসা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে শিক্ষাজীবনে প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন ৮০ দশমিক ৭৯ শতাংশ শিক্ষার্থী।
করোনা-পরবর্তী সময়ে ১ হাজার ৬৪০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪০ জন বা ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আত্মহত্যার উপকরণ জোগাড় করেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। করোনা-পরবর্তী সময়ে আত্মহত্যা করার কথা মাথায় এসেছে ৩৪ দশমিক ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর।
সংস্থাটি তাদের প্রস্তাবনায় বলেছে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাভাবিক ও ইনফরমাল সম্পর্ক তৈরি করা, অতিরিক্ত সিলেবাস কমিয়ে যথাসময়ে পরীক্ষা সম্পন্ন করে সেশনজটমুক্ত করা, পড়াশোনাকে আনন্দময় ও বাস্তবমুখী করা, প্রথাগত সিলেবাসের পরিবর্তে চাকরির বাজারের উপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন, শিক্ষাঋণ চালু করা, নিজ নিজ ক্যাম্পাসে খণ্ডকালীন চাকরির ব্যবস্থা করা, ক্যারিয়ার গঠনে পরামর্শ ও সহায়তা পেতে বিভাগের উদ্যোগে অ্যালামনাইদের সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করা, বিশ^বিদ্যালয়গুলোতে মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে বিভিন্ন সভা-সেমিনারের আয়োজন করা।
প্রেস কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, করোনার সময়ে ও করোনা-পরবর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের আত্মহত্যার কারণ পড়াশোনা ও পরীক্ষার চাপ, সামাজিকতা, ব্যক্তিগত হতাশার মতো বিষয়। এসব নানা ব্যাপার শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার পেছনে নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে, আত্মহত্যার দিকে ঝুঁকে পড়ছে এবং এর প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন পথ খুঁজে বেরাচ্ছে।
আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানসেন রোজ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে পড়া নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। যে সমস্যাগুলো নিয়ে তারা ভুগে থাকেন তার অনেকগুলোরই চাইলে সমাধান করা যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পড়াশোনার সঠিক পরিবেশ নিশ্চিত করা, শিক্ষকদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি, মন খুলে কথা বলার মতো সামাজিক পরিবেশ তৈরি ইত্যাদির মাধ্যমেও তাদের এই সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব।
জীবন নিয়ে অনেকেরই অভিযোগ নিজের জীবন নিয়ে অসন্তুষ্ট ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। জীবন নিয়ে তারা পুরোপুরি হতাশ। এমনকি বেঁচে না থাকার আকাক্সক্ষাও ব্যক্ত করেছেন। হতাশ হয়েও ভালো কিছুর চেষ্টা করে যাচ্ছেন ২৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। ৫৩ দশমিক ৬০ শতাংশ জানান, সবকিছু ঠিকমতো না চললেও কিছু বিষয়ে তারা সন্তুষ্ট।
মন খারাপে কাউকে পাশে পাওয়া কঠিন
মন খারাপ হলে বা মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হলে সমস্যাগুলো কারও সঙ্গে শেয়ার করতে হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ৪৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থীই মনের অভিব্যক্তি প্রকাশ করার মতো কাউকে পাশে পান না। সমস্যাগুলো শেয়ার করতে না পারলে এটি ডিপ্রেশন কিংবা আত্মহত্যার মুখেও ঠেলে দিতে পারে।
আত্মহত্যার ভাবনা নিয়ে অশনিসংকেত
করোনা-পরবর্তী সময়ে ১ হাজার ৬৪০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪০ জন বা ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আত্মহত্যার উপকরণ জোগাড় করেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। করোনা-পরবর্তী সময়ে আত্মহত্যা করার কথা মাথায় এসেছে ৩৪ দশমিক ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন গত শুক্রবার ৭০ বছরে পা রেখেছেন। জন্মদিনে প্রতিবেশী ও মিত্রদের কাছ থেকে মজার কিছু উপহার পেয়েছেন পুতিন। এগুলোর মধ্যে আছে তাজিকিস্তানের তরমুজ এবং বেলারুশের ট্রাক্টর। জন্মদিন উপলক্ষে তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাহমুন পুতিনকে তরমুজ ও বাঙ্গি দিয়ে বানানো দুই পিরামিড উপহার দিয়েছেন। বিবিসির মস্কো প্রতিনিধি উইল ভার্নন টুইটারে পুতিনকে দেওয়া তাজিক প্রেসিডেন্টের তরমুজ পাহাড়ের ছবিও পোস্ট করেছেন।
রুশ প্রেসিডেন্টের বহুদিনের বন্ধু বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্দার লুকাশেঙ্কো। জন্মদিনে এবার পুতিনকে ট্রাক্টর উপহার দিয়েছেন তিনি। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পূর্ব ইউরোপের কয়েকটি দেশের সমন্বয়ে গঠিত আন্তঃসরকার সংস্থার সম্মেলন ছিল শুক্রবার। সম্মেলনে যোগ দিতে এদিন রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের কনস্ট্যানটিনোভস্কি প্রাসাদে গিয়েছিলেন লুকাশেঙ্কো। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকরা জন্মদিন উপলক্ষে পুতিনকে কী উপহার দিয়েছেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমি একটি ট্রাক্টর উপহার দিয়েছি। এটি খুবই চমৎকার, মজবুত, টেকসই এবং বেলারুশের সেরা ট্রাক্টরগুলোর একটি।’
পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে উপহার দেওয়া সেই ট্রাক্টরটির ছবিও প্রকাশ করে লুকাশেঙ্কোর দপ্তর। ট্রাক্টর নির্মাণে অবশ্য বেলারুশের খ্যাতি আছে। দেশটিতে উৎপাদিত ট্রাক্টর গুণ ও মানের দিক থেকে পৃথিবীর সেরা ট্রাক্টর বলে মনে করা হয়। ১৯৫০ সাল থেকে ট্রাক্টর তৈরি হচ্ছে বেলারুশে। বর্তমানে বিশ্বের একশটিরও বেশি দেশে ট্রাক্টর রপ্তানি করে বেলারুশ।
যে ট্রাক্টরটি পুতিনকে উপহার দেওয়া হয়েছে, সেটি জমি কর্ষণের পাশাপাশি বীজ বপনেও সক্ষমÑ উল্লেখ করে সাংবাদিকদের লুকাশেঙ্কো কৌতুকচ্ছলে বলেন, ‘পুতিন ও আমি এখানে জমি চাষ করব, ফসল ফলাব, এই ফসল পাকলে সেসব আমরা দুদার (পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেই দুদা) কাছে পাঠাব, যেন ইউরোপ অনাহারে না থাকে।’
যদিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের কেউ কেউ লুকাশেঙ্কোর এমন উপহারকে প্রতীকী হিসেবে দেখছেন। তারা বলছেন, এই ট্রাক্টর ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা প্রতিরোধের প্রাথমিক প্রতীক। কারণ পরিত্যক্ত সামরিক যানগুলোকে ইউক্রেনের কৃষকদের ট্রাক্টর দিয়ে টেনে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
নারায়ণগঞ্জের বহুল কাক্সিক্ষত শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিত ‘নাসিম ওসমান সেতু’র উদ্বোধন আগামীকাল সোমবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটির উদ্বোধন করবেন। এরপর জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। তিন দিকে নদীবেষ্টিত বন্দর উপজেলার সঙ্গে এই সেতুর মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের সেতুবন্ধ তৈরি হবে। সেইসঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ সহজ হবে। পদ্মা সেতু থেকে চট্টগ্রামগামী পরিবহনের প্রায় ৮ কিলোমিটার সময় বাঁচবে এই সেতু চালু হলে। পাল্টে যাবে বন্দরের চেহারা।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে অনেক কাজ চলছে। কাজগুলো হয়ে গেলে ঢাকাকে বলব, নারায়ণগঞ্জ এসে দেখে যান আমরা কারা। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশে ভালো কাজ করার মানুষ আছে আবার খারাপ কাজ করার লোকও আছে। আপনারা চিন্তা করবেন না। জানা গেছে, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। এরপর নানা সীমাবদ্ধতা ও সংকটের কারণে কাজ শুরু করতে ২ বছর লেগে যায়। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১ দশমিক ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর কাজ শুরু হয়। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীনে সেতু বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। সম্প্রতি সরকারি নির্দেশে ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতুটির নামকরণ করা হয় ‘নাসিম ওসমান সেতু’।
বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশীদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, নাসিম ওসমান সেতু বন্দরবাসীর স্বপ্নের সেতু। নারায়ণগঞ্জ শহরের সবচেয়ে সন্নিকটে হলেও শীতলক্ষ্যা নদীর কারণে দুভাগে বিভক্ত বন্দর উপজেলা। তিন দিকে নদীবেষ্টিত সম্ভাবনাময় বন্দর উপজেলা বরাবরই অবহেলিত একটি সেতুর অভাবে। সেই অভাবটি পূরণ করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে সরকারপ্রধানরা ওয়াদা করেও সেতু করেননি। অবশেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকন্যা উন্নয়নের জননী শেখ হাসিনার হাত ধরে এই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। সেতুটি চালু হলে অর্থনৈতিক সূতিকাগারে পরিণত হবে শীতলক্ষ্যা নদীর দুই তীর তথা বন্দর ও নারায়ণগঞ্জ। ইতিমধ্যেই সেতুকে ঘিরে অসংখ্য শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এখান থেকে সরাসরি চট্টগ্রাম যেতে কয়েক ঘণ্টা সময় বাঁচবে। তাই ব্যবসায়ীদের দৃষ্টি এখন নারায়ণগঞ্জ বন্দরকে ঘিরে।
প্রকল্পের সহকারী পরিচালক সিদ্দিকুর মাসুদ জানান, নারায়ণগঞ্জের সৈয়দপুর ও বন্দরের মদনগঞ্জ দিয়ে শীতলক্ষ্যা ৩য় সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। সৌদি আরবের সঙ্গে বর্তমান সরকারের যৌথ অর্থায়নে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।
কুইক রেন্টালের নামে সরকার বাজেটের সমপরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, ‘২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসে সরকারি সব আইনকানুন ভঙ্গ করে দল সমর্থক ব্যবসায়ী ও ব্যক্তিদের কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট বরাদ্দ দেয়। এরপর বরাদ্দ পাওয়া পাওয়ার প্ল্যান্টের মালিকদের ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বিদেশে টাকা পাচার করেছে।
গতকাল শনিবার ওলামা দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটের নসরুল হামিদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সকাল সাড়ে ১০টায় সভা শুরুর কিছুক্ষণ পর সেখানে লোডশেডিং শুরু হয়। লোডশেডিং ও তীব্র গরমের কারণে মিলনায়তন থেকে সামনে খোলা জায়গায় অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা। এক ঘণ্টা লোডশেডিং শেষে সভা শুরু হয়।
মির্জা ফখরুল ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, ‘সরকার বলে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন করে লোডশেডিংকে তারা জাদুঘরে পাঠিয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে সরকার আলোর উৎসব করেছে। অথচ এখন সারা দেশের জনগণ বিদ্যুৎ পায় না। জাদুঘর থেকে লোডশেডিং এনে সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছে। ঢাকাবাসী বিদ্যুৎ পেলেও সারা দেশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুৎ তৈরি করলেও তা ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশনের কোনো ব্যবস্থা করেনি। তাই এই সরকারের আমলে এ পর্যন্ত দুবার পাওয়ার গ্রিড ফেল করেছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে গণতন্ত্রের কথা বলেন। অথচ দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নেই, সংগঠন করার স্বাধীনতা নেই। মানুষের নিরাপত্তা নেই। মানুষ প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নামলে পুলিশ পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে আমরা একটি কঠিন সময় অতিক্রম করছি। আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, তাহলে এদের পরাজিত করা যাবে না। এরা একটি ফ্যাসিস্ট শক্তি। ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পরাজিত করা গণতান্ত্রিক দলের পক্ষে খুবই কঠিন। পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ প্রত্যেক জেলায় যারা বিএনপিতে সক্রিয়, যারা অর্থের জোগান দেয়, যারা লোকবল দেয় তাদের তালিকা করতে বলেছে। এই নামগুলো নিয়ে তারা তথ্য ভান্ডার তৈরি করবে এবং বিরোধী দল যেন কোনো কাজ করতে না পারে তার জন্য তাদের ওপর দমন-পীড়নের ব্যবস্থা করবে। এই যদি একটি দেশের চিত্র হয় এবং বলা হয়, এটি একটি গণতান্ত্রিক দেশ, তাহলে কি আমরা মেনে নিতে পারি? আমাদের সামনে পথ একটাই, এই সরকারকে সরিয়ে দেব। কারণ এই সরকার প্রমাণ করেছে তারা বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে।’
সংগঠনের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরফত আলী সপু, তাঁতি দলের আবুল কালাম আজাদ, ওলামা দলের মাওলানা কাজী মো. সেলিম রেজা প্রমুখ।
সুরক্ষা অ্যাপস এবং জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির সার্ভার প্রতারণা চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলেন, একরাম হোসেন, জাহিদুল হাসান, আব্বাস উদ্দীন এবং সানোয়ার কবির।
দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুক এবং হোয়াটস অ্যাপসসহ বিভিন্ন গ্রুপে প্রচারণা চালিয়ে এনআইডি, জš§ সনদ এবং করোনাভাইরাসের টিকাদানের সনদ বিতরণ করছিল একাধিক চক্র। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অগোচরে চক্রের সদস্যরা হাতিয়ে নিচ্ছিল মোটা অঙ্কের টাকা।
গত শুক্রবার সুনামগঞ্জের তাহিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে একরাম হোসেন, কানাইঘাট থেকে আব্বাস উদ্দীন এবং ময়মনসিংহের কালাইঘাট থেকে সানোয়ার কবিরকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। এর আগের দিন রাজধানীর কামরাঙ্গীর চর থেকে একরাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, রিমান্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে একরাম হোসেন এনআইডি, করোনা ভ্যাকসিন এবং জš§নিবন্ধন প্রতারণার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। জাহিদুল ইসলাম এনআইডি প্রতারণায় জড়িত বলে জানিয়েছে। আব্বাস উদ্দীন এনআইডি এবং করোনা ভ্যাকসিন প্রতারণায় জড়িত বলে স্বীকার করেছে। সানোয়ার হোসেন এনআইডি নম্বরের বিপরীতে সবধরনের তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করে বলে ডিবির কাছে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।
একরাম ফেইসবুক ও হোয়াটস অ্যাপসে এনআইডি তথ্য সরবরাহ, করোনা ভ্যাকসিন আপডেট ও জš§নিবন্ধন তথ্য পরিবর্তনের বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহক সংগ্রহ করত। এ ছাড়া ভ্যাকসিন সুরক্ষা অ্যাপস সার্ভারে প্রবেশের অ্যাকসেস থাকায় একরাম নিজেই অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে ভ্যাকসিন আপডেট করত। গ্রাহকদের কাছ থেকে এনআইডি কার্ডের অর্ডার নিত জাহিদুল। ২০০ থেকে ২৫০টি সংগ্রহের পর তা আব্বাসের কাছে দিত। ৮০০ থেকে ১০০০ অর্ডার সংগ্রহের পর তা সানোয়ারের কাছে পাঠাত আব্বাস। সানোয়ার এনআইডি নিবন্ধনকারী কম্পিউটার অপারেটর হওয়ায় সার্ভারে তার একসেস রয়েছে। ওই একসেসকে কাজে লাগিয়ে অর্থের বিনিময়ে এনআইডি কার্ড সরবরাহ করতেন তিনি।
ডিবি জানায়, একরাম ও আব্বাস দুই বছর ধরে এবং জাহিদুল ও সানোয়ার তিন বছর ধরে এ ধরনের প্রতারণায় জড়িত আছেন। গত ছয় মাসে প্রতারণার মাধ্যমে একরাম হোসেন সাড়ে ৩৭ লাখ, জাহিদুল হাসান ৪৫ লাখ, আব্বাস উদ্দীন ৬১ লাখ এবং সানোয়ার কবির ১৪ লাখ টাকার বেশি উপার্জন করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এবং ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, সুরক্ষা অ্যাপস ও এনআইডি সার্ভার প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করলেও সারা দেশেই চক্রের নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। আমরা এ নেটওয়ার্ক গুঁড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি। মানুষ কেন প্রতারক চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে এসব সেবা নিচ্ছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, হারিয়ে যাওয়া এনআইডি কার্ডের কপি নিতে হলে সরকারি ফি দিতে হয় ২০০ টাকা। এ ছাড়া থানায় জিডি করতে হয়। কিন্তু এ চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে নিতে হলে কোনো জিডির প্রয়োজন হয় না। ১০০ টাকার বিনিময়েই তারা কার্ড দিয়ে দিচ্ছে। সময়ও কম লাগছে।
তিনি বলেন, করোনার টিকা দেওয়া ছাড়া বৈধভাবে টিকা সনদ পাওয়া সুযোগ নেই। কিন্তু বিদেশ গমনসহ জরুরি কাজে অনেকের টিকা সনদের প্রয়োজন হয়। তাই দ্রুত সনদ পেতে তারা এ চক্রের দ্বারস্থ হচ্ছে।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (গত শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ২৯৯ জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ সময় কেউ মারা যায়নি। এর আগের দিন গত শুক্রবার রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৪৯১ জন। সে দিন পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছিল। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২০ লাখ ২৯ হাজার ৩১৪ জন হয়েছে। মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৩৮০।
গতকাল শনিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ১৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশে। এর আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ১০ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৯ হাজার ৮০১টি। পরীক্ষা বিবেচনায় সার্বিক শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া এবং শরীরচর্চার অভাবের বেশির ভাগ মানুষেরই হার্ট খারাপ হচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে 'খারাপ' কোলেস্টেরল— এ সব মানুষের নিত্যসঙ্গী। তবে রক্তের বিভিন্ন উপাদানের মাত্রা যদি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে যায়, তা হলে ওষুধ তো খেতেই হবে। সঙ্গে পছন্দের প্রায় সব খাবারেই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যাবে। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, রোজকার খাবারে কিছু পরিবর্তন আনলেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই হার্টের যাবতীয় সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
বিরিয়ানি হোক বা পোলাও সঙ্গে মাটনের কোনো পদ ছাড়া জমে না। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, এ ধরনের 'লাল' মাংস খেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাই খাসির বদলে মুরগির মাংস খাওয়া তুলনায় স্বাস্থ্যকর।
অনেক চেষ্টা করেও ভাজাভুজি খাবারের লোভ সামলাতে পারছেন না। এই অভ্যাসের ফলেই কিন্তু অজান্তেই বেশির ভাগ মানুষের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে চলেছে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ভাজার বদলে যদি বেকড খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা যায়, তবে এই সমস্যা অনেকটাই ঠেকিয়ে রাখা যেতে পারে।
সকালের নাশতায় পাউরুটি খান অনেকেই। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, পাউরুটির ওপর মাখন দেওয়ার অভ্যাস ছাড়তে হবে। শুধু পাউরুটি খেতে যদি সমস্যা হয়, তবে ডিম ফেটিয়ে তার মধ্যে পাউরুটি ডুবিয়ে, তা বেক করে নিন। স্বাদ এবং স্বাস্থ্য দুই-ই থাকবে।
মন খারাপ হলে মাঝে মধ্যেই আইসক্রিম খেয়ে ফেলেন। তৎক্ষণাৎ মন ভালো করতে এই টোটকা সত্যিই কার্যকর। কিন্তু সমস্যা হলো আইসক্রিম খাওয়ার অভ্যাসে রক্তে বাড়তে থাকে কোলেস্টেরল। পরবর্তীতে যা হৃদরোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গরমে তেষ্টা মেটাতে বার বার ঠাণ্ডা পানীয়তে চুমুক দিচ্ছেন। কিন্তু এ পানীয়ে থাকা কৃত্রিম শর্করা যে হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করছে, টের পেয়েছেন কী? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এই তেষ্টা মেটাতে এবং স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে নরম পানীয় না খেয়ে ফল থেকে তৈরি রস খেতে পারেন।
পাকিস্তানের প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলে নয়, এশিয়া কাপ হবে একটি দেশে। আর সেটা শ্রীলংকা। পাকিস্তান তাতে অংশ না নিতে চাইলে তাদেরকে ছাড়াই হবে এশিয়া কাপ।
ভারতের তরফ থেকে পাকিস্তানকে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে কলকাতাভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক দা টেলিগ্রাফ।
বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ যিনি এসিসিরও প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে বলেছেন, শ্রীলংকায় এশিয়া কাপ খেলতে রাজি আছে ভারতসহ চার পূর্ণ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে এসিসির নির্বাহী সভায় আলোচনা করা হবে। পাকিস্তান রাজি না হলে ৫ দল নিয়েই হবে এশিয়া কাপ।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচ অন্য কোনো দেশে আয়োজনে পিসিবি চেয়ারম্যান নাজমা শেঠির দাবিও নাকচ করে দিয়েছেন জয় শাহ। টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে ভারতেই খেলতে হবে, না হলে না খেলবে। এ বার্তা পিসিবি এবং আইসিসির দুই কর্মকর্তা যারা সম্প্রতি পাকিস্তান সফর করেন তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।
রিয়াল মাদ্রিদের সংগে ১৪ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলছেন। ৪০ কোটি ইউরো চুক্তিতে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আলো ইত্তিহাদে যোগ দিচ্ছেন।
ক'দিন ধরে এমন কথা শোনা যাচ্ছিল করিম বেনজেমাকে নিয়ে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন -এমন কথাও চাউর হয় স্পেনের সংবাদ মাধ্যমে।
কিন্তু সব কিছুতে জল ঢাললেন ব্যালন ডি অর জয়ী। স্পেনের গণমাধ্যম মার্কার দেয়া মার্কা লিজেন্ড এওয়ার্ড নিতে গিয়ে বললেন, 'আমি যখন রিয়ালেই আছি তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে কেনো বলবো। ইন্টারনেটে যা প্রচার হচ্ছে তা ঠিক না। আমি এখানে ভালো আছি। শনিবার রিয়ালের ম্যাচ আছে, সব ফোকাস আমার সেই ম্যাচকে নিয়ে।'
ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে তাকে রিয়ালে আনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বেনজেমা বলেন, '২১ বছরের আমি এই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলাম। এই ক্লাবে খেলার মতো আর কিছু হয় না, সান্তিয়াগো বার্নাবু দারুন এক জায়গা।'
রিয়ালের সংগে চুক্তির মেয়াদ এ মাসেই শেষ হচ্ছে বেনজেমার।
পলিথিন বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, বিভিন্ন ধরনের পলিথিনজাত মিনিপ্যাকের উৎপাদন, ব্যবহার ও এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সবগুলোই সমস্যা। পলিথিন উৎপাদন ও এর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে বাতাসে যেমন কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায়, অন্যদিকে এর ব্যবহার প্রাণিকুল ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত। প্লাস্টিকের কণা এখন মানুষের রক্তে, মায়ের দুধে, সামুদ্রিক মাছে। শুধু ব্যবহার সম্পর্কিত সমস্যা না, পলিথিনের মাধ্যমে সৃষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও বেশি সমস্যাসংকুল। কারণ এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, কৃষির উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে, শহরের নর্দমা বন্ধ করে দিচ্ছে তা আবার রোগ-ব্যাধি ছড়াচ্ছে, জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে এবং সবশেষে শহরকে বসবাসের অনুপযোগী করে দিচ্ছে।
এতসব সত্ত্বেও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ না করা বা বন্ধ করতে না পারার সংকট কোথায় সেটা বুঝতে আমাদের সমস্যা হয়। পলিথিন বন্ধে আইন আছে, নানা ধরনের প্যাকেজিংয়ে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাও অনেক দিন হলো। অন্যদিকে বেশ কিছুদিন ধরে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু তা সহসাই হচ্ছে না। ‘সোনালি ব্যাগ’ নিয়ে অনেক ঢাকঢোল পেটানো হয়েছে কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সেই সোনালি স্বপ্ন কেমন জানি ফ্যাকাশে হয়ে আসছে এতদিনে।
পলিথিনের ব্যবহার শহরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি যার অনেকটাই অভ্যাসগত কারণে। শহরের মানুষের পলিথিনের ওপর অভ্যস্ততা যেমন বেশি, তেমনি তারা ভুক্তভোগীও বেশি। রাস্তাঘাট, ড্রেন নোংরা হয়ে তো থাকেই, বাড়তি পাওনা দুর্গন্ধ, তৈরি হয় জলজট ও ডেঙ্গুর মতো রোগবালাই। বাসাবাড়িতে পলিথিনের ব্যবহার তো আছেই, পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য, বেকারিজাত পণ্যের পলিথিনের ব্যবহার ও পলিথিনের মোড়ক যত্রতত্র নিক্ষেপই এই অবস্থার জন্য দায়ী। শুধু ঢাকা নয় অন্যান্য ছোট-বড় সব শহরে প্রায় একই অবস্থা। আর এগুলোই হচ্ছে পলিথিন নির্ভর অর্থনীতির অনুষঙ্গ কিন্তু এর অনর্থনীতি হচ্ছে পলিথিনের কারণে পরিবেশদূষণ ও জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি। সাধারণভাবে পলিথিন ব্যবহারের ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক মূল্যমান নির্ধারণ করা হয় না। তবে দূষণের মাত্রা এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে তাতে পলিথিনের অর্থনীতির থেকে এর ক্ষয়ক্ষতির অর্থনীতি যে অনেক বড় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আসছে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হবে। জলবায়ুর পরিবর্তনের পেছনে অন্যতম অনুঘটক হচ্ছে পরিবেশ দূষণ। অর্থমন্ত্রী তার এবারের বাজেট (২০২৩-২৪) বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় অভিযোজন ও প্রশমন উভয় ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলেছেন, পরিবেশ সংরক্ষণে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ এর উল্লেখ করেছেন কিন্তু পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে দৃশ্যমান কোনো রূপকল্প এবারের বাজেটে উল্লেখ করতে সমর্থ হননি। এবারের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধানে শামিল হই সকলে’। গত বছরের এই দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘একটাই পৃথিবী’। পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের যত্রতত্র ব্যবহার আমাদের এই একমাত্র পৃথিবীকে দূষণের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে আইন হয়েছে ২০০২-এ এবং আজ ২০২৩ সাল, এই দীর্ঘ ২১ বছরেও এই আইনের বাস্তবায়ন করা যায়নি। যদিও এবারের বাজেট বক্তৃতায় প্লাস্টিকের তৈরি টেবিলওয়্যার এর মূল্য সংযোজন কর বৃদ্ধি করে ৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানে পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্ল্যাস্টিক সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। ধরেই নেওয়া যায় শুল্ক বৃদ্ধির এই হার কোনোভাবে পলিথিন নিরুৎসাহিত করার জায়গা থেকে না বরঞ্চ কিছুটা বাড়তি কর আদায়ের চিন্তা থেকে।
পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি সস্তা পলিথিনের ব্যবহার টেকসই ভোগের ধারণার জন্যও কোনোভাবে সহায়ক না। বরঞ্চ এটা এমন এক ধরনের মনস্তত্ত্ব তৈরি করে যা শুধু পরিবেশকেই ধ্বংস করে। যদিও বিশ্বব্যাপী টেকসই ভোগের ধারণার ওপর ভিত্তি করে এখন ‘সার্কুলার অর্থনীতির’ ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সার্কুলার অর্থনীতি শুধু অপচয় কমায় না, প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা, দূষণরোধ, বর্জ্য থেকে তৈরি পরিবেশদূষণ ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে। তাই পরিবেশগত ঝুঁকি, কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের অর্থনীতিকে সার্কুলার অর্থনীতিতে রূপান্তরের জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। অন্যদিকে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলা এবং এ সংশ্লিষ্ট অভীষ্ট ২০৩০ সমূহ অর্জনে সার্কুলার অর্থনীতি অন্যতম হাতিয়ার।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা শহরে রাস্তায় কোনো পেট বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায় না। এর কারণ হচ্ছে এখন পেট বোতলের প্রায় শতভাগ রিসাইকেল করা হয় এবং পেট বোতল সংগ্রহের জন্য অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে হলেও একটি সংগ্রহ-লাইন তৈরি হয়েছে। কিন্তু পলিথিনের ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায় না। তবে পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার সার্কুলার ইকোনমির ধারণার সঙ্গেও একেবারে মানানসই না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রযুক্তিগতভাবে একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন রিসাইকেল করা অসম্ভব না হলেও এটি একটি জটিল এবং অর্থনৈতিকভাবে ব্যয়বহুল যে কারণে পেট বোতলের মতো রাস্তা থেকে পলিথিন সংগ্রহ করতে কাউকে দেখা যায় না উলটো রাস্তাঘাটে এখানে সেখানে পলিথিন পড়ে থাকে।
পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের অনর্থনীতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখন প্রথম দরকার এর ব্যবহার বন্ধ করা, এর ব্যবহারকে অনেক বেশি দামি করে ফেলতে হবে আর এর প্রতিফলন থাকতে হবে বাজেটে। দ্বিতীয়ত, সার্কুলার অর্থনৈতিক চর্চার উৎসাহিত করার জন্য পরিকল্পনা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি, পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগের মতো উদ্যোগগুলোকে সরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ ও বেসরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় উৎসাহ ও প্রণোদনা প্রদান করতে হবে। সরকার প্রতি বছর বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবেশ দিবস পালন করে কিন্তু দিবস পালন শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলেই হবে না এর উদ্যোগ কতটুকু বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে তার ওপরও নজর দিতে হবে। তা নাহলে পলিথিনের অর্থনীতির নামে শুধু অনর্থনীতিকে বাড়িয়ে তোলা হবে, আর সেটা হবে টেকসই অর্থনীতি তৈরির সম্ভাবনার অপমৃত্যু।
লেখক : উন্নয়নকর্মী ও কলামিস্ট
গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। এমন অবস্থায় প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না কেউ। তাই বলে গরমের ভয়ে ঘরে বসে থাকলে তো আর জীবন চলবে না। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যেতে হবে। আর কর্মজীবীদের অফিস ও অন্যান্য কর্মস্থলে। অনেকেরই এই গরমেও কাজের প্রয়োজনে সারাদিন কেটে যায় বাইরে ঘুরে ঘুরেই। গরমকে মোকাবিলা করতে সঙ্গে এই প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো রাখলেই গরমের কাছে নিজেকে হার মানতে হবে না।
পানি পান
গরমের সময় শরীর থেকে স্বাভাবিক ভাবে অনেক বেশি ঘাম বের হয়ে থাকে। যার ফলে দেখা দিতে পারে পানি শূন্যতা। শরীরের মধ্যে যদি পানির পরিমাণ কমে যায় তাহলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। পানি শূন্যতা দূর করতে হলে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে।
বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার পাশাপাশি ফলের জুস কিংবা কচি ডাবের পানি খেতে পারেন। দেহের ত্বককে ভালো রাখতে পানি, শরবত বা জুস পানের বিকল্প নেই। গরমে সময় প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লিটার বিশুদ্ধ পানি খেলে ডিহাইড্রেশন এবং পানি শূণ্যতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
খাবার স্যালাইন
গরমের সময় ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণ বের হতে থাকে যার ফলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়। এ থেকে মুক্তি পেতে খাবার স্যালাইন খেতে পারেন। বিকেল বেলা খাবার স্যালাইন খেলে অতিরিক্ত গরমেও শরীরে সতেজতা ফিরে আসে। আবার অনেকেই স্বাদযুক্ত স্যালাইন খান যেমন, টেস্টি স্যালাইন। ভুল করেও এসব খাবেন না। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হলো ওরস্যালাইন । তবে আপনাদের মধ্যে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা খাবার স্যালাইন খাওয়ার আগে ভালো কোনো ডাক্তারের মতামত নেওয়া উচিত।
রেড মিট পরিহার করুন
অতিরিক্ত গরমের সময় গরু-ছাগলের মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ গরমের সময় বা অতিরিক্ত গরমের সময় গরুর মাংস খেলে শরীরের তাপমাত্রা অনেকাংশে বেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গরু-ছাগলের মাংস ছেড়ে মাছ খেতে পারেন। আর অতিরিক্ত গরমে অবশ্যই অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন।
সবুজ শাক সবজি
গরমের সময় শরীরকে সুস্থ রাখতে বেশি বেশি করে সবুজ শাক সবজি খেতে পারেন। সবুজ শাক সবজিতে অধিক পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল এবং খনিজ উপাদান থাকে। এতে করে অতিরিক্ত গরমেও শরীর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।তাছাড়াও খেতে পারেন তরমুজ যা শরীরে এনার্জি দিতে পারে।
টক জাতীয় ফল
প্রচুর গরমে সুস্থ থাকার উপায় হিসেবে টক জাতীয় ফল খেতে পারেন। যেমন: কামরাঙ্গা, লেবু, তেতুল, আমরা ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে অতিরিক্ত টক ফল খাওয়া ঠিক নয়। যদি কারো এসিডিটির সমস্যা থেকে থাকে তবে টক জাতীয় ফল খাওয়া হতে বিরত থাকুন। টক জাতীয় ফল খালি পেটে খাওয়া যাবে না। এতে করে আরো বেশী অসুস্থ হয়ে পারতে পাবেন।
টক দই
অতিরিক্ত গরমে সুস্থ থাকতে হলে টক দই খেতে পারেন। যারা করা রোদে কাজ করেন বিশেষ করে তাদের জন্য অনেক উপকারী হলো টক দই। রোদের প্রচুর তাপ থেকে শরীরকে কিছুটা হলেও রক্ষা করবে টক দই। টক দই শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে অনেকাংশে সাহায্য করে।
প্রতিদিন গোসল করুন
গরমের সময় প্রতিদিন এক বার করে হলেও গোসল করতে হবে। যদি পারেন তবে দিনে ২ বার গোসল করতে পারেন। গোসল করার ক্ষেত্রে একটু সাবধান থাকতে হবে। বাহির থেকে এসে সাথে সাথে গোসল করতে যাবেন না। একটু বিশ্রাম নিয়ে তারপর গোসল করতে যাবেন। কারণ হঠাৎ করে গরম থেকে এসে গোসল করলে ঠাণ্ডা লাগতে পারে।
ঘরেই অবস্থান করুন
অতিরিক্ত গরমে বিশেষ কোনো প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বাহিরে যাবেন না । যদিও বিভিন্ন কারণে বাহিরে যেতে হয়। সেক্ষেত্রে রোদ থেকে বাঁচতে প্রয়োজনে ছাতা ব্যবহার করতে পারেন। যতটুকু সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার চেষ্টা করুন।
শারীরিক পরিশ্রম কম করুন
গরমের সময় অনেকেই আছে অতিরিক্ত ব্যায়াম করে থাকেন এমনটি করা যাবে না কারণ অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা একটু বেশি হয়ে থাকে।
পাতলা সুতি কাপড় পরিধান করা
গরমের সময় পাতলা সুতি কাপড় পরা দরকার। কারণ সাদা কাপড় তাপ শোষণ করতে পারে না বরং তাপের প্রতিফলন ঘটায় ও গরম কম লাগে।
পারফিউম ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
অতিরিক্ত গরমে ঘামের গন্ধ থেকে বেচে থাকার জন্য অনেকেই সুগন্ধি ব্যবহার করে থাকে। তবে অতিরিক্ত গরমে পারফিউম ব্যবহার না করাটাই উত্তম কাজ। কারণ, পারফিউম গরম লাগা বৃদ্ধি করে দেয়।
যদিও ব্যবহার করতে হয় তাহলে হালকা গন্ধের সুগন্ধি ব্যবহার করতে পাবেন। বাজারে কিছু সুগন্ধি পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করলে ঠাণ্ডা লাগে। সেগুলো ব্যবহার করলে আরো ভালো হয়।
ধূমপান পরিত্যাগ করা
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা কিনা ধূমপান করে থাকি। ধূমপান করলে শরীরের তাপমাত্রা তুলনামূলক ভাবে বেড়ে যায়। তাই প্রচন্ত গরমে সুস্থ থাকতে হলে ধূমপান পরিত্যাগ করতে হবে। যদিও এই অভ্যাসটি সহজে পরিত্যাগ করা যায় না। তাই যতটুকু পারেন ধূমপান কম করার চেষ্টা করুন।
চা কফি পরিত্যাগ করুন
চা, কফি বা অ্যালকোহল খেলে শরীরের তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। আর যদি অতিরিক্ত গরমে চা, কফি বা অ্যালকোহল খেয়ে থাকেন তাহলে শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাবে যার ফলে হতে পারে হিটস্ট্রোক। তাই গরমের সময় চা কফি বা অ্যালকোহল খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
শান্ত থাকুন
মন মেজাজ গরম থাকলে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। রাগের কারণে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং অতিরিক্ত গরমের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় আর দুই তাপমাত্রা এক সঙ্গে হলে কি অবস্থা হতে পারে একবার হলেও সেটা ভেবে দেখবেন।
বিশেষজ্ঞরা অতিরিক্ত গরমে শান্ত থাকার জন্য মতামত দিয়ে থাকে। বিশেষ করে যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য শান্ত থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।