
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, গত ২৬ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে কলামিস্টদের অনুষ্ঠানে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সঙ্গে মিডিয়ার হেডলাইনের কোনো সম্পর্ক নেই। হেডলাইনগুলো বলেছে, আমেরিকা যুদ্ধবাজ, অমুকতমুক, এসব কথা তার মুখে আসেনি। কিন্তু ১৭টি গণমাধ্যম এ ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক তথ্য দিয়েছে।
গতকাল শনিবার দুপুরে সাবেক রাষ্ট্রদূতদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ফরমার বিসিএস (এফএ) অ্যাম্বাসেডর্স (এওফা)-এর সদস্যদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে সাংবাদিকতা যারা করেন তাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে। এদের পরিপক্বতা দরকার। যারা এটা করেছেন তাদের জন্য এটা লজ্জার বিষয়। আর আপনাদের জন্য দুঃখের বিষয়। আপনাদের সহকর্মীরা এ ধরনের বানোয়াট কথা বলে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিকরা হয় বাংলা বোঝেন না হয় ইচ্ছা করে এ ধরনের মিথ্যা প্রচারণা করেছে। ফলে যেটা অসুবিধা হয়েছে তা হলো যুক্তরাষ্ট্র সরকার মনে করবে আমরা তাদের শত্রু। যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে শত্রু বানানোর জন্য প্রচারণা চালানো হয়েছে।
খুবই দুঃখজনক ও লজ্জাজনক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এই জন্য সাংবাদিকদের গবেষণা করা উচিত।’
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে সাবেক রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। পরে তারা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন, অ্যাসোসিয়েশন অব ফরমার বিসিএস (এফএ) অ্যাম্বাসেডর্স (এওফা)-এর প্রেসিডেন্ট শমসের মবিন চৌধুরী, সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হাসান এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাসহ গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মুন্সি আতিয়ার রহমান, জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল ।
চলতি বছর দেশের ডেঙ্গুজ¦রে আক্রান্ত মোট রোগীর অর্ধেকের বেশি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে অক্টোবর মাসে। গত ২৪ ঘণ্টায় (গত শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) এক দিনে আরও ৮৬৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ সময়ে মারা গেছে ৬ জন।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসের ২৯ দিনে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২০ হাজার ৩৯ জন। এ সময়ে মারা গেছে ৭৯ জন।
এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ৯ হাজার ৯১১ জন এবং মারা যায় ৩৪ জন। গত আগস্টে হাসপাতালে ৩ হাজার ৫২১ জন ভর্তি হয়েছিল এবং মারা গিয়েছিল ১১ জন। এ নিয়ে এ বছর এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৬ হাজার ১৩১ জন ভর্তি হয়েছে এবং মারা গেছে ১৩৪ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এক দিনে আরও ৮৬৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ সময়ে মারা গেছে ৬ জন। আর আগের দিন শুক্রবার হাসপাতালে রোগী ভর্তি হয়েছিল ৪৪০ জন। সেদিন মারা গেছে ৫ জন। এর আগে গত রবিবার এ বছরের সর্বোচ্চ ১ হাজার ৩৪ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সেদিন মারা গেছে আরও ১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে ৪৮১ জন ঢাকায় ও ৩৮৮ জন ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৩ হাজার ৫৯৭ জন ডেঙ্গু রোগী। তাদের মধ্যে ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে ২ হাজার ২২৭৯ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ১ হাজার ৩১৮ জন।
‘কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মূলমন্ত্র, শান্তি-শৃঙ্খলা সর্বত্র’ প্রতিপাদ্য নিয়ে গতকাল শনিবার দেশব্যাপী পালিত হয়েছে ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২২’। দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল র্যালি, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) হেডকোয়ার্টার্স থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। এটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে এসে শেষ হয়। পরে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
বিদায়ী ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কাজ হলো সমাজে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আগেই অপরাধীকে চিহ্নিত করা, অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা। আমরা এক্ষেত্রে শতভাগ সফল হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমের ফলে সমাজে বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং অনেক কমেছে। এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে আমাদের আরও কাজ করতে হবে। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সমাজকে কীভাবে আরও সুন্দর করা যায়, পরিচ্ছন্ন করা যায়, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একসময় গ্রামে বিচারব্যবস্থা ছিল, কমিউনিটি পুলিশিংয়ের লক্ষ্যও একই রকম। আমরা নিজেরা যদি নিজের সমস্যা সমাধান করতে পারি, সমাজে অপরাধ অনেকটা কমে যাবে। আর পুলিশ তো সবসময়ই রয়েছে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইজিপি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যেভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমন করা হয়েছে, তা বিশ্বব্যাপী আজ প্রশংসিত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, কমিউনিটি পুলিশের সদস্যদের সমন্বয়ে আমরা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সফলভাবে দমন করতে সক্ষম হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে “পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ” মূলমন্ত্রে আমরা একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। এখন প্রতি মাসে সারা দেশে প্রতি থানায় “ওপেন হাউজ ডে” পালন করা হয়। যেখানে সাধারণ মানুষ পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন, তাদের সমস্যা তুলে ধরেন। এতে করে সাধারণ মানুষ থানা থেকে কেমন সেবা পাচ্ছেন, ওই এলাকায় কী ধরনের অপরাধ বেশি ঘটছে, কেন ঘটছে তা আমরা জানতে পারি। সাধারণ মানুষের পরামর্শ নিয়ে পুলিশ সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিচ্ছে।’ বর্তমানে পুলিশের সব জেলা, রেলওয়ে, হাইওয়ে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ও মেট্রোপলিটন ইউনিটে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের চলমান কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশব্যাপী ৫৪ হাজার ৭১৮টি কমিটিতে ৯ লাখ ৪৭ হাজার ৭০১ জন কমিউনিটি পুলিশিং সদস্য কাজ করছেন বলেও জানান পুলিশপ্রধান।
মুখ্য আলোচক অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মূল কাজ সম্পর্ক স্থাপন, পার্টনারশিপ। পুলিশ সমাজের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সততার সঙ্গে, স্বচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলে সমাজে অপরাধ কমবে, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকবে। তরুণ প্রজন্মের কাছে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। কারণ তারাই ভবিষ্যতে দেশের নেতৃত্ব দেবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপির বিদায়ী কমিশনার বলেন, ‘ইভটিজিং, যৌতুক, মাদক ইত্যাদি সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে সমাজের সবাই মিলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সমাজের সবাইকে একসঙ্গে বসে সামাজিক সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
প্রতি বছর অক্টোবর মাসের শেষ শনিবার ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে’ পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিং ম্যানেজার ও সদস্যদের পুরস্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. আতিকুল ইসলাম, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এবং মিরপুর মডেল থানার কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি দেওয়ান আবদুল মান্নান। অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজিপি, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা এবং রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
‘ঢাকা শহরে ভোরের দিকে কুয়াশার মতো যা দেখি তা কুয়াশা নয়, এগুলো ধোঁয়াশা। কুয়াশা দেখা দিতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।’ শীতের আগমন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক এমনই কথা বলেন। তবে দেশের উত্তরাঞ্চলে শীতের আগমনী বার্তা শুরু হয়েছে, ঢাকাসহ দেশের মধ্যাঞ্চলে আগামী মাসের মাঝামাঝিতে এবং দক্ষিণাঞ্চলে আগামী মাসের শেষ কিংবা ডিসেম্বরের প্রথমে শুরু হতে পারে বলে আবহাওয়াবিদদের ধারণা।
আবহাওয়াবিদদের ধারণার সঙ্গে রেকর্ডকৃত উপাত্ত মিলিয়ে দেখা যায়, গতকাল শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) রেকর্ড হয়েছে রংপুরে। এর আগে বৃহস্পতিবারও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (১৭ দশমিক ৪) রেকর্ড হয়েছিল তেঁতুলিয়ায়। রংপুর কিংবা তেঁতুলিয়া নয়, উত্তরাঞ্চলে সবকটি আবহাওয়া স্টেশনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রেকর্ড হচ্ছে। অপরদিকে দেশের মধ্যাঞ্চল কিংবা দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রা বেশি রেকর্ড হচ্ছে। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে কুমিল্লায় ৩২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বৃহস্পতিবার খুলনায় ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। অর্থাৎ উত্তরাঞ্চলের তুলনায় মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রা বেশি রয়েছে। এদিকে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে শীতের আবহ শুরু হয়ে গেছে জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান গতকাল বিকেলে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমি এখন ঢাকা শহরের বাইরে শরীয়তপুরে অবস্থান করছি। সেখানে শীতের কিছুটা আমেজ থাকলেও ঢাকা শহরে পাইনি। ঢাকায় এই আবহ পেতে আগামী মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত লাগতে পারে।’
উত্তরবঙ্গে শুরু ও ঢাকায় দেরিতে কেন? : ভৌগোলিক কারণে উত্তরবঙ্গে শীত আগে পড়ে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘হিমালয় থেকে সবার আগে বাতাস প্রবেশ করে উত্তরবঙ্গ দিয়ে। পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে মধ্যবঙ্গ হয়ে দেশের দক্ষিণ প্রান্তে প্রবাহিত হয়। আর তাই উত্তরবঙ্গে সবার আগে ও দেশের অন্যান্য এলাকায় ধীরে ধীরে শীত ছড়িয়ে পড়ে।’
একই মন্তব্য করেন অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ^বিদ্যালয়ের স্কুল অব আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্সের অধ্যাপক ড. আশরাফ দেওয়ান। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘হিমালয় থেকে আসা বায়ু শীতল হয়ে থাকে। আর এই বাতাসের কারণে দেশে শীতের আগমন ঘটে। মৌসুমি বায়ু বিদায় নিলে শীতের এই বাতাস প্রবেশ করে থাকে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং প্রভাব শেষ হয়ে যাওয়ার পর শীতের আগমন শুরু হয়েছে।’
ড. আশরাফ আরও বলেন, সবার শেষে শীত অনুভব হবে দেশের দক্ষিণবঙ্গে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায়। সাগরের কারণে ওই এলাকায় তাপমাত্রা বেশি থাকে। তাই শীতল বাতাস ওই এলাকায় যেতে একটু সময় নেয়।
এদিকে মৌসুমি বায়ু কবে বিদায় নিয়েছে জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ১৫ অক্টোবর দেশের উত্তরবঙ্গ থেকে, ঢাকা থেকে ১৭ অক্টোবর ও টেকনাফ থেকে ২০ অক্টোবর বিদায় নিয়েছে। এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদরা জানান, দেশের টেকনাফ অঞ্চল দিয়ে সাগর থেকে জলীয় বাষ্প নিয়ে মৌসুমি বায়ু প্রবেশের পর সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং বৃষ্টি শুরু হয়। একইভাবে অক্টোবরে এই বাতাস ফেরত চলে যাওয়ার পর হিমালয় থেকে শীতল বাতাস উত্তরবঙ্গ দিয়ে দেশে প্রবেশ করে এবং শীত শুরু হয়।
কুয়াশা ও ধোঁয়াশা কী? : বর্তমান সময়ে ঢাকার আকাশে দেখা যাওয়া কুয়াশার মতো যা দেখা যায় সেগুলো কুয়াশা নয় বলে মন্তব্য করেন আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বায়ুমণ্ডলে ভাসমান ধূলিকণাগুলোই হলো ধোঁয়াশা। এগুলো বেশি ভারী হওয়ায় উপরে উঠতে না পেরে ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি ভাসছে।’ অপরদিকে কুয়াশা হলো ভাসমান জলীয় বাষ্প। এই জলীয় বাষ্প তুলনামূলকভাবে কম ভারী হওয়ায় তা ভূপৃষ্ঠ ও বায়ুম-লের মধ্যে ভাসমান থাকে। যা দেখতে ঝাপসা লাগে। ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গসহ শহরের বাইরে গ্রামীণ এলাকায় তা দেখা যাচ্ছে।
ঢাকা শহরকে হিট চেম্বার উল্লেখ করে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘এখানকার ভবনগুলো তাপমাত্রা ধরে রাখে। তাই এখানকার বাতাস এমনিতেই গরম থাকে। ইট-পাথরের কারণে ঢাকা শহর এখন হিট চেম্বার। এখানে অন্য এলাকা থেকে গড়ে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেশি থাকবে। তাই শহরে শীত অনুভূত না হলেও গ্রামে ঠিকই শীত অনুভব হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, মৌসুমি বায়ু বিদায় নেওয়ার পর শীত শুরু হয়ে থাকে। এবার মৌসুমি বায়ু বিদায়ের সময় ঘূর্ণিঝড় হওয়ায় দ্রুত শীত মৌসুম সক্রিয় হচ্ছে। তবে পুরোপুরি শীত শুরু হতে আগামী মাসের শেষ নাগাদ পর্যন্ত সময় লাগবে। শীতের সময়ে কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ এবং ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়।
আজ রবিবার বসছে চলতি একাদশ জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশন। বিকেল সাড়ে ৪টায় এ অধিবেশন শুরু হবে। এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টায় সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এ অধিবেশনের মেয়াদকালসহ অন্যান্য সিদ্ধান্ত হবে। এ অধিবেশন দুই সপ্তাহের মতো চলতে পারে বলে সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে গত ১২ অক্টোবর এ অধিবেশন আহ্বান করেন।
সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এবারের অধিবেশনে ১৭টি বিল রয়েছে। এসব বিলের মধ্যে কমিটিতে পরীক্ষাধীন ৮টি, পাসের অপেক্ষায় দুটি এবং উত্থাপনের অপেক্ষায় ৭টি।
বিলগুলো হচ্ছে পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট সিস্টেমস বিল-২০২২, বৈষম্যবিরোধী বিল-২০২২, বাংলাদেশ গ্যাস, তেল ও খনিজসম্পদ করপোরেশন বিল-২০২২, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২২, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২২, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ বিল-২০২২, সরকারি চাকরি (সংশোধন) বিল-২০২২, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২২, এভিডেন্স (সংশোধন) বিল-২০২২, জাকাত তহবিল ব্যবস্থাপনা বিল-২০২২, চট্টগ্রাম শাহি জামে মসজিদ বিল-২০২২, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন বিল-২০২২, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট বিল-২০২২, উন্নয়ন বোর্ড আইনসমূহ (রহিতকরণ) বিল-২০২২, বাংলাদেশ শিল্প নকশা বিল-২০২২ এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন বিল-২০২২।
প্রথম দিনের কার্যক্রম : সংসদ সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে গতকাল ২০তম অধিবেশনের প্রথম দিনের কার্যসূচি আপলোড করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, প্রথমে সভাপতিমণ্ডলীর মনোনয়ন ও এরপর শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। পরে প্রশ্নোত্তর ও ৭১ বিধির নোটিস নিষ্পত্তির বিষয় রয়েছে। তবে চলতি সংসদের কোনো সংসদ সদস্য মারা গেলে সংসদে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করে সংসদের বৈঠক মুলতবি করা হয়।
চলতি সংসদের সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী গত ১১ সেপ্টেম্বর এবং সংরক্ষিত আসনের সদস্য এ্যানি রহমান গত ১১ অক্টোবর মারা যান। ফলে প্রথম দিনের বৈঠকে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শেষে অন্যান্য কার্যক্রম স্থগিত করে বৈঠক মুলতবি হবে। তবে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হবে।
এদিন জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষাসেবা বিভাগ, পরিকল্পনা বিভাগ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওপর প্রশ্নোত্তর রয়েছে।
এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর চলতি সংসদের ১৯তম অধিবেশন শেষ হয়। ২৮ আগস্ট শুরু হওয়া অধিবেশন চলে ৫ কার্যদিবস। শুরুর দিন নতুন ডেপুটি স্পিকার হিসেবে শামসুল হক টুকুকে নির্বাচিত করে সংসদ।
সংবিধান অনুযায়ী, একটি অধিবেশন শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে আরেকটি অধিবেশন আহ্বানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সপরিবারে ঢাকা সফরে এসেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়াত সিনেটর অ্যাডওয়ার্ড এম কেনেডির ছেলে ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাতিজা অ্যাডওয়ার্ড এম কেনেডি জুনিয়রসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে আট দিনের সফরে তারা দেশের বেশ কয়েকটি স্থান পরিদর্শন করবেন।
গতকাল শনিবার কেনেডি পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় পৌঁছেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। এর আগে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস জানায়, ২৯ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর কেনেডি পরিবারের সদস্যরা ঢাকা সফর করবেন। এম কেনেডি জুনিয়রের সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন তার স্ত্রী ড. ক্যাথরিন কিকি কেনেডি, মেয়ে ড. কাইলি কেনেডি, ছেলে টেডি কেনেডি, ভাতিজি গ্রেস কেনেডি অ্যালেন এবং ভাতিজা ম্যাক্স অ্যালেন।
বাংলাদেশ সফরে এম কেনেডি জুনিয়র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। যুদ্ধবন্ধু কেনেডি পরিবারের সম্মানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন একটি ভোজের আয়োজন করবেন, তারা সেই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। এছাড়া নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, মার্কিন সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত শিক্ষা বিনিময় কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সাবেক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তারা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্পিকারস প্রোগ্রামের পৃষ্ঠপোষকতায় জুনিয়র অ্যাডওয়ার্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বক্তৃতা দেবেন। সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ের একজন সমর্থক হিসেবে তার পিতার ভূমিকার কথা তুলে ধরবেন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ সাবেক সিনেটর অ্যাডওয়ার্ড কেনেডির রোপণ করা বটগাছটিও পরিদর্শন করবেন তিনি। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা এ আইনজীবী ঢাকার অ্যাডওয়ার্ড এম কেনেডি সেন্টার ফর পাবলিক সার্ভিস অ্যান্ড দ্য আর্টসে প্রতিবন্ধী অধিকারের ওপরও একটি বক্তৃতা দেবেন। বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন কেনেডি পরিবারের সদস্যরা।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ও তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার পাকিস্তানকে মদদ দেন। তবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের জোরালো সমর্থন ছিল সিনেটর টেড কেনেডি হিসেবে পরিচিত অ্যাডওয়ার্ড এম কেনেডির। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা রাজ্য সফরে বাংলাদেশের শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলে পাকিস্তানি বাহিনী যে সাম্প্রতিক মানব ইতিহাসের ভয়াবহ নৃশংসতা চালিয়েছিল, সে সম্পর্কে অবহিত হয়েছিলেন।
পরে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে মার্কিন সিনেটে ‘দক্ষিণ এশিয়ার সংকট’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন। ওই প্রতিবেদনে তিনি বলেছিলেন, পাকিস্তানি বাহিনী আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর মানবিক দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে। পাকিস্তানি বাহিনী ২৫ মার্চ রাতে পরিকল্পিতভাবে চরম আতঙ্কের বিস্তার ঘটিয়েছিল এবং গণহত্যা চালিয়েছিল, যার প্রমাণ পাওয়া যায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার দুই মাস পরই ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিনেটর অ্যাডওয়ার্ড এম কেনেডি বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন।
অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া এবং শরীরচর্চার অভাবের বেশির ভাগ মানুষেরই হার্ট খারাপ হচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে 'খারাপ' কোলেস্টেরল— এ সব মানুষের নিত্যসঙ্গী। তবে রক্তের বিভিন্ন উপাদানের মাত্রা যদি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে যায়, তা হলে ওষুধ তো খেতেই হবে। সঙ্গে পছন্দের প্রায় সব খাবারেই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যাবে। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, রোজকার খাবারে কিছু পরিবর্তন আনলেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই হার্টের যাবতীয় সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
বিরিয়ানি হোক বা পোলাও সঙ্গে মাটনের কোনো পদ ছাড়া জমে না। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, এ ধরনের 'লাল' মাংস খেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাই খাসির বদলে মুরগির মাংস খাওয়া তুলনায় স্বাস্থ্যকর।
অনেক চেষ্টা করেও ভাজাভুজি খাবারের লোভ সামলাতে পারছেন না। এই অভ্যাসের ফলেই কিন্তু অজান্তেই বেশির ভাগ মানুষের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে চলেছে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ভাজার বদলে যদি বেকড খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা যায়, তবে এই সমস্যা অনেকটাই ঠেকিয়ে রাখা যেতে পারে।
সকালের নাশতায় পাউরুটি খান অনেকেই। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, পাউরুটির ওপর মাখন দেওয়ার অভ্যাস ছাড়তে হবে। শুধু পাউরুটি খেতে যদি সমস্যা হয়, তবে ডিম ফেটিয়ে তার মধ্যে পাউরুটি ডুবিয়ে, তা বেক করে নিন। স্বাদ এবং স্বাস্থ্য দুই-ই থাকবে।
মন খারাপ হলে মাঝে মধ্যেই আইসক্রিম খেয়ে ফেলেন। তৎক্ষণাৎ মন ভালো করতে এই টোটকা সত্যিই কার্যকর। কিন্তু সমস্যা হলো আইসক্রিম খাওয়ার অভ্যাসে রক্তে বাড়তে থাকে কোলেস্টেরল। পরবর্তীতে যা হৃদরোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গরমে তেষ্টা মেটাতে বার বার ঠাণ্ডা পানীয়তে চুমুক দিচ্ছেন। কিন্তু এ পানীয়ে থাকা কৃত্রিম শর্করা যে হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করছে, টের পেয়েছেন কী? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এই তেষ্টা মেটাতে এবং স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে নরম পানীয় না খেয়ে ফল থেকে তৈরি রস খেতে পারেন।
পাকিস্তানের প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলে নয়, এশিয়া কাপ হবে একটি দেশে। আর সেটা শ্রীলংকা। পাকিস্তান তাতে অংশ না নিতে চাইলে তাদেরকে ছাড়াই হবে এশিয়া কাপ।
ভারতের তরফ থেকে পাকিস্তানকে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে কলকাতাভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক দা টেলিগ্রাফ।
বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ যিনি এসিসিরও প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে বলেছেন, শ্রীলংকায় এশিয়া কাপ খেলতে রাজি আছে ভারতসহ চার পূর্ণ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে এসিসির নির্বাহী সভায় আলোচনা করা হবে। পাকিস্তান রাজি না হলে ৫ দল নিয়েই হবে এশিয়া কাপ।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচ অন্য কোনো দেশে আয়োজনে পিসিবি চেয়ারম্যান নাজমা শেঠির দাবিও নাকচ করে দিয়েছেন জয় শাহ। টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে ভারতেই খেলতে হবে, না হলে না খেলবে। এ বার্তা পিসিবি এবং আইসিসির দুই কর্মকর্তা যারা সম্প্রতি পাকিস্তান সফর করেন তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।
রিয়াল মাদ্রিদের সংগে ১৪ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলছেন। ৪০ কোটি ইউরো চুক্তিতে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আলো ইত্তিহাদে যোগ দিচ্ছেন।
ক'দিন ধরে এমন কথা শোনা যাচ্ছিল করিম বেনজেমাকে নিয়ে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন -এমন কথাও চাউর হয় স্পেনের সংবাদ মাধ্যমে।
কিন্তু সব কিছুতে জল ঢাললেন ব্যালন ডি অর জয়ী। স্পেনের গণমাধ্যম মার্কার দেয়া মার্কা লিজেন্ড এওয়ার্ড নিতে গিয়ে বললেন, 'আমি যখন রিয়ালেই আছি তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে কেনো বলবো। ইন্টারনেটে যা প্রচার হচ্ছে তা ঠিক না। আমি এখানে ভালো আছি। শনিবার রিয়ালের ম্যাচ আছে, সব ফোকাস আমার সেই ম্যাচকে নিয়ে।'
ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে তাকে রিয়ালে আনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বেনজেমা বলেন, '২১ বছরের আমি এই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলাম। এই ক্লাবে খেলার মতো আর কিছু হয় না, সান্তিয়াগো বার্নাবু দারুন এক জায়গা।'
রিয়ালের সংগে চুক্তির মেয়াদ এ মাসেই শেষ হচ্ছে বেনজেমার।
পলিথিন বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, বিভিন্ন ধরনের পলিথিনজাত মিনিপ্যাকের উৎপাদন, ব্যবহার ও এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সবগুলোই সমস্যা। পলিথিন উৎপাদন ও এর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে বাতাসে যেমন কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায়, অন্যদিকে এর ব্যবহার প্রাণিকুল ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত। প্লাস্টিকের কণা এখন মানুষের রক্তে, মায়ের দুধে, সামুদ্রিক মাছে। শুধু ব্যবহার সম্পর্কিত সমস্যা না, পলিথিনের মাধ্যমে সৃষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও বেশি সমস্যাসংকুল। কারণ এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, কৃষির উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে, শহরের নর্দমা বন্ধ করে দিচ্ছে তা আবার রোগ-ব্যাধি ছড়াচ্ছে, জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে এবং সবশেষে শহরকে বসবাসের অনুপযোগী করে দিচ্ছে।
এতসব সত্ত্বেও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ না করা বা বন্ধ করতে না পারার সংকট কোথায় সেটা বুঝতে আমাদের সমস্যা হয়। পলিথিন বন্ধে আইন আছে, নানা ধরনের প্যাকেজিংয়ে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাও অনেক দিন হলো। অন্যদিকে বেশ কিছুদিন ধরে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু তা সহসাই হচ্ছে না। ‘সোনালি ব্যাগ’ নিয়ে অনেক ঢাকঢোল পেটানো হয়েছে কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সেই সোনালি স্বপ্ন কেমন জানি ফ্যাকাশে হয়ে আসছে এতদিনে।
পলিথিনের ব্যবহার শহরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি যার অনেকটাই অভ্যাসগত কারণে। শহরের মানুষের পলিথিনের ওপর অভ্যস্ততা যেমন বেশি, তেমনি তারা ভুক্তভোগীও বেশি। রাস্তাঘাট, ড্রেন নোংরা হয়ে তো থাকেই, বাড়তি পাওনা দুর্গন্ধ, তৈরি হয় জলজট ও ডেঙ্গুর মতো রোগবালাই। বাসাবাড়িতে পলিথিনের ব্যবহার তো আছেই, পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য, বেকারিজাত পণ্যের পলিথিনের ব্যবহার ও পলিথিনের মোড়ক যত্রতত্র নিক্ষেপই এই অবস্থার জন্য দায়ী। শুধু ঢাকা নয় অন্যান্য ছোট-বড় সব শহরে প্রায় একই অবস্থা। আর এগুলোই হচ্ছে পলিথিন নির্ভর অর্থনীতির অনুষঙ্গ কিন্তু এর অনর্থনীতি হচ্ছে পলিথিনের কারণে পরিবেশদূষণ ও জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি। সাধারণভাবে পলিথিন ব্যবহারের ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক মূল্যমান নির্ধারণ করা হয় না। তবে দূষণের মাত্রা এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে তাতে পলিথিনের অর্থনীতির থেকে এর ক্ষয়ক্ষতির অর্থনীতি যে অনেক বড় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আসছে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হবে। জলবায়ুর পরিবর্তনের পেছনে অন্যতম অনুঘটক হচ্ছে পরিবেশ দূষণ। অর্থমন্ত্রী তার এবারের বাজেট (২০২৩-২৪) বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় অভিযোজন ও প্রশমন উভয় ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলেছেন, পরিবেশ সংরক্ষণে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ এর উল্লেখ করেছেন কিন্তু পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে দৃশ্যমান কোনো রূপকল্প এবারের বাজেটে উল্লেখ করতে সমর্থ হননি। এবারের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধানে শামিল হই সকলে’। গত বছরের এই দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘একটাই পৃথিবী’। পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের যত্রতত্র ব্যবহার আমাদের এই একমাত্র পৃথিবীকে দূষণের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে আইন হয়েছে ২০০২-এ এবং আজ ২০২৩ সাল, এই দীর্ঘ ২১ বছরেও এই আইনের বাস্তবায়ন করা যায়নি। যদিও এবারের বাজেট বক্তৃতায় প্লাস্টিকের তৈরি টেবিলওয়্যার এর মূল্য সংযোজন কর বৃদ্ধি করে ৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানে পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্ল্যাস্টিক সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। ধরেই নেওয়া যায় শুল্ক বৃদ্ধির এই হার কোনোভাবে পলিথিন নিরুৎসাহিত করার জায়গা থেকে না বরঞ্চ কিছুটা বাড়তি কর আদায়ের চিন্তা থেকে।
পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি সস্তা পলিথিনের ব্যবহার টেকসই ভোগের ধারণার জন্যও কোনোভাবে সহায়ক না। বরঞ্চ এটা এমন এক ধরনের মনস্তত্ত্ব তৈরি করে যা শুধু পরিবেশকেই ধ্বংস করে। যদিও বিশ্বব্যাপী টেকসই ভোগের ধারণার ওপর ভিত্তি করে এখন ‘সার্কুলার অর্থনীতির’ ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সার্কুলার অর্থনীতি শুধু অপচয় কমায় না, প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা, দূষণরোধ, বর্জ্য থেকে তৈরি পরিবেশদূষণ ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে। তাই পরিবেশগত ঝুঁকি, কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের অর্থনীতিকে সার্কুলার অর্থনীতিতে রূপান্তরের জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। অন্যদিকে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলা এবং এ সংশ্লিষ্ট অভীষ্ট ২০৩০ সমূহ অর্জনে সার্কুলার অর্থনীতি অন্যতম হাতিয়ার।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা শহরে রাস্তায় কোনো পেট বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায় না। এর কারণ হচ্ছে এখন পেট বোতলের প্রায় শতভাগ রিসাইকেল করা হয় এবং পেট বোতল সংগ্রহের জন্য অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে হলেও একটি সংগ্রহ-লাইন তৈরি হয়েছে। কিন্তু পলিথিনের ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায় না। তবে পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার সার্কুলার ইকোনমির ধারণার সঙ্গেও একেবারে মানানসই না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রযুক্তিগতভাবে একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন রিসাইকেল করা অসম্ভব না হলেও এটি একটি জটিল এবং অর্থনৈতিকভাবে ব্যয়বহুল যে কারণে পেট বোতলের মতো রাস্তা থেকে পলিথিন সংগ্রহ করতে কাউকে দেখা যায় না উলটো রাস্তাঘাটে এখানে সেখানে পলিথিন পড়ে থাকে।
পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের অনর্থনীতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখন প্রথম দরকার এর ব্যবহার বন্ধ করা, এর ব্যবহারকে অনেক বেশি দামি করে ফেলতে হবে আর এর প্রতিফলন থাকতে হবে বাজেটে। দ্বিতীয়ত, সার্কুলার অর্থনৈতিক চর্চার উৎসাহিত করার জন্য পরিকল্পনা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি, পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগের মতো উদ্যোগগুলোকে সরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ ও বেসরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় উৎসাহ ও প্রণোদনা প্রদান করতে হবে। সরকার প্রতি বছর বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবেশ দিবস পালন করে কিন্তু দিবস পালন শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলেই হবে না এর উদ্যোগ কতটুকু বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে তার ওপরও নজর দিতে হবে। তা নাহলে পলিথিনের অর্থনীতির নামে শুধু অনর্থনীতিকে বাড়িয়ে তোলা হবে, আর সেটা হবে টেকসই অর্থনীতি তৈরির সম্ভাবনার অপমৃত্যু।
লেখক : উন্নয়নকর্মী ও কলামিস্ট
গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। এমন অবস্থায় প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না কেউ। তাই বলে গরমের ভয়ে ঘরে বসে থাকলে তো আর জীবন চলবে না। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যেতে হবে। আর কর্মজীবীদের অফিস ও অন্যান্য কর্মস্থলে। অনেকেরই এই গরমেও কাজের প্রয়োজনে সারাদিন কেটে যায় বাইরে ঘুরে ঘুরেই। গরমকে মোকাবিলা করতে সঙ্গে এই প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো রাখলেই গরমের কাছে নিজেকে হার মানতে হবে না।
পানি পান
গরমের সময় শরীর থেকে স্বাভাবিক ভাবে অনেক বেশি ঘাম বের হয়ে থাকে। যার ফলে দেখা দিতে পারে পানি শূন্যতা। শরীরের মধ্যে যদি পানির পরিমাণ কমে যায় তাহলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। পানি শূন্যতা দূর করতে হলে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে।
বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার পাশাপাশি ফলের জুস কিংবা কচি ডাবের পানি খেতে পারেন। দেহের ত্বককে ভালো রাখতে পানি, শরবত বা জুস পানের বিকল্প নেই। গরমে সময় প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লিটার বিশুদ্ধ পানি খেলে ডিহাইড্রেশন এবং পানি শূণ্যতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
খাবার স্যালাইন
গরমের সময় ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণ বের হতে থাকে যার ফলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়। এ থেকে মুক্তি পেতে খাবার স্যালাইন খেতে পারেন। বিকেল বেলা খাবার স্যালাইন খেলে অতিরিক্ত গরমেও শরীরে সতেজতা ফিরে আসে। আবার অনেকেই স্বাদযুক্ত স্যালাইন খান যেমন, টেস্টি স্যালাইন। ভুল করেও এসব খাবেন না। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হলো ওরস্যালাইন । তবে আপনাদের মধ্যে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা খাবার স্যালাইন খাওয়ার আগে ভালো কোনো ডাক্তারের মতামত নেওয়া উচিত।
রেড মিট পরিহার করুন
অতিরিক্ত গরমের সময় গরু-ছাগলের মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ গরমের সময় বা অতিরিক্ত গরমের সময় গরুর মাংস খেলে শরীরের তাপমাত্রা অনেকাংশে বেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গরু-ছাগলের মাংস ছেড়ে মাছ খেতে পারেন। আর অতিরিক্ত গরমে অবশ্যই অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন।
সবুজ শাক সবজি
গরমের সময় শরীরকে সুস্থ রাখতে বেশি বেশি করে সবুজ শাক সবজি খেতে পারেন। সবুজ শাক সবজিতে অধিক পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল এবং খনিজ উপাদান থাকে। এতে করে অতিরিক্ত গরমেও শরীর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।তাছাড়াও খেতে পারেন তরমুজ যা শরীরে এনার্জি দিতে পারে।
টক জাতীয় ফল
প্রচুর গরমে সুস্থ থাকার উপায় হিসেবে টক জাতীয় ফল খেতে পারেন। যেমন: কামরাঙ্গা, লেবু, তেতুল, আমরা ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে অতিরিক্ত টক ফল খাওয়া ঠিক নয়। যদি কারো এসিডিটির সমস্যা থেকে থাকে তবে টক জাতীয় ফল খাওয়া হতে বিরত থাকুন। টক জাতীয় ফল খালি পেটে খাওয়া যাবে না। এতে করে আরো বেশী অসুস্থ হয়ে পারতে পাবেন।
টক দই
অতিরিক্ত গরমে সুস্থ থাকতে হলে টক দই খেতে পারেন। যারা করা রোদে কাজ করেন বিশেষ করে তাদের জন্য অনেক উপকারী হলো টক দই। রোদের প্রচুর তাপ থেকে শরীরকে কিছুটা হলেও রক্ষা করবে টক দই। টক দই শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে অনেকাংশে সাহায্য করে।
প্রতিদিন গোসল করুন
গরমের সময় প্রতিদিন এক বার করে হলেও গোসল করতে হবে। যদি পারেন তবে দিনে ২ বার গোসল করতে পারেন। গোসল করার ক্ষেত্রে একটু সাবধান থাকতে হবে। বাহির থেকে এসে সাথে সাথে গোসল করতে যাবেন না। একটু বিশ্রাম নিয়ে তারপর গোসল করতে যাবেন। কারণ হঠাৎ করে গরম থেকে এসে গোসল করলে ঠাণ্ডা লাগতে পারে।
ঘরেই অবস্থান করুন
অতিরিক্ত গরমে বিশেষ কোনো প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বাহিরে যাবেন না । যদিও বিভিন্ন কারণে বাহিরে যেতে হয়। সেক্ষেত্রে রোদ থেকে বাঁচতে প্রয়োজনে ছাতা ব্যবহার করতে পারেন। যতটুকু সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার চেষ্টা করুন।
শারীরিক পরিশ্রম কম করুন
গরমের সময় অনেকেই আছে অতিরিক্ত ব্যায়াম করে থাকেন এমনটি করা যাবে না কারণ অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা একটু বেশি হয়ে থাকে।
পাতলা সুতি কাপড় পরিধান করা
গরমের সময় পাতলা সুতি কাপড় পরা দরকার। কারণ সাদা কাপড় তাপ শোষণ করতে পারে না বরং তাপের প্রতিফলন ঘটায় ও গরম কম লাগে।
পারফিউম ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
অতিরিক্ত গরমে ঘামের গন্ধ থেকে বেচে থাকার জন্য অনেকেই সুগন্ধি ব্যবহার করে থাকে। তবে অতিরিক্ত গরমে পারফিউম ব্যবহার না করাটাই উত্তম কাজ। কারণ, পারফিউম গরম লাগা বৃদ্ধি করে দেয়।
যদিও ব্যবহার করতে হয় তাহলে হালকা গন্ধের সুগন্ধি ব্যবহার করতে পাবেন। বাজারে কিছু সুগন্ধি পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করলে ঠাণ্ডা লাগে। সেগুলো ব্যবহার করলে আরো ভালো হয়।
ধূমপান পরিত্যাগ করা
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা কিনা ধূমপান করে থাকি। ধূমপান করলে শরীরের তাপমাত্রা তুলনামূলক ভাবে বেড়ে যায়। তাই প্রচন্ত গরমে সুস্থ থাকতে হলে ধূমপান পরিত্যাগ করতে হবে। যদিও এই অভ্যাসটি সহজে পরিত্যাগ করা যায় না। তাই যতটুকু পারেন ধূমপান কম করার চেষ্টা করুন।
চা কফি পরিত্যাগ করুন
চা, কফি বা অ্যালকোহল খেলে শরীরের তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। আর যদি অতিরিক্ত গরমে চা, কফি বা অ্যালকোহল খেয়ে থাকেন তাহলে শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাবে যার ফলে হতে পারে হিটস্ট্রোক। তাই গরমের সময় চা কফি বা অ্যালকোহল খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
শান্ত থাকুন
মন মেজাজ গরম থাকলে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। রাগের কারণে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং অতিরিক্ত গরমের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় আর দুই তাপমাত্রা এক সঙ্গে হলে কি অবস্থা হতে পারে একবার হলেও সেটা ভেবে দেখবেন।
বিশেষজ্ঞরা অতিরিক্ত গরমে শান্ত থাকার জন্য মতামত দিয়ে থাকে। বিশেষ করে যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য শান্ত থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।