
গ্রাম ছেড়ে শহরমুখী হচ্ছে মানুষ। কেবল বাংলাদেশেই নয়, গ্রাম ছাড়ার এই প্রবণতা অনেক দেশের মানুষেরই। কিন্তু গ্রাম ছাড়তে ছাড়তে একেবারে জনমানবহীন হয়ে যাওয়া বিরল। তাও আবার ইউরোপের কোনো ছিমছাম সাজানো-গোছানো গ্রাম! বাস্তবতা হলো এরকমই একটি জনমানবশূন্য গ্রাম উত্তর-পশ্চিম স্পেনের সালতো দে কাস্ত্রো। তিন দশকে বাসিন্দাদের সবাই চলে গেছেন এই গ্রাম ছেড়ে। বাসিন্দাদের অভাবে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে গ্রামটি। অথচ বসবাসের জন্য সব সুবিধাই আছে সেখানে। রাজধানী মাদ্রিদ থেকে মাত্র তিন ঘণ্টার দূরত্বে পর্তুগাল সীমান্তে জামোড়া প্রদেশের এ গ্রামে ছোট ছোট অনেক ভবনও আছে। ছোট্ট শহরও বলা চলে গ্রামটিকে। ৪৪টি বাড়ি, একটি হোটেল, একটি গির্জা, একটি স্কুল, একটি সুইমিং পুল এমনকি সিভিল গার্ডের জন্য জায়গাও আছে সেখানে। এই স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রামটিই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে তাও মাত্র দুই লাখ ৬০ হাজার ইউরোতে, বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় পৌনে তিন কোটির মতো। বিশ্বের যে কেউই এই গ্রাম কিনে গড়তে পারবেন নতুন জনবসতি। এই পরিমাণ অর্থ দিয়ে বার্সেলোনা ও মাদ্রিদের মতো জায়গায় কেনা যাবে সর্বোচ্চ এক বেডরুমের বাসা। অবশ্য ২০০০ সালের শুরুর দিকে গ্রামটি কিনে নেন এক ব্যক্তি। একটি পর্যটনকেন্দ্র বানানোর পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। তবে ইউরোজোন সংকটে পড়ে দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ঘাটতি ও বিদেশি মুদ্রার অভাবে তার সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। গ্রামটির মালিকানা সংস্থা রয়্যাল ইনভেস্টের কর্মকর্তা রনি রদ্রিগেজ বলেছেন, মালিকের এখানে একটি হোটেল করার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু এটি হয়নি। তিনি এখনো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে চান। আর প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে গ্রামের মালিক বলেছেন, আমি শহরে থাকি। গ্রামটি দেখাশোনা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই এটা বিক্রি করতে হচ্ছে। কর্র্তৃপক্ষ জানিয়েছে রাশিয়া, ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও যুক্তরাজ্যসহ বেশ কিছু দেশ থেকে ৩০০ জনের বেশি মানুষ এই গ্রাম কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছে। এরই মধ্যে একজন কিছু অর্থ অগ্রিম দিয়ে এর বুকিংও দিয়েছেন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের (২৩) কিলিং মিশনটি ছিল ৩০ মিনিটের। ৪ নভেম্বর রাত ২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া বস্তিতে মারপিট করে হত্যা করা হয় ফারদিনকে। পরে লাশ ফেলা হয় বস্তিসংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীতে। তবে ফারদিন চনপাড়া বস্তিতে কীভাবে গেলেন, কারা তাকে সেখানে নিলেন, কারাইবা মারপিট করলেনএসব বিষয় এখনো স্পষ্ট নয়। সন্দেহভাজন চনপাড়া বস্তির পাঁচ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে খুঁজছে তদন্তকারী সংস্থাগুলো। তাদের আটক করতে পারলে ফারদিন হত্যায় জড়িতদের বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
ফারদিন হত্যাকান্ড নিয়ে তদন্তকারী পুলিশের একটি সংস্থার শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। তিনি বলেন, বুয়েটের একটি প্রজেক্ট রয়েছে রূপগঞ্জ এলাকায়। ফারদিন এর আগে আরও তিনবার রূপগঞ্জের চনপাড়া বস্তির আশপাশে গিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার কারণ ছিল তার একাডেমিক সার্ভে (জরিপ)। তবে কখনোই রাতে সেখানে যাননি।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, চনপাড়া বস্তির অপরাধ জগৎ মাদক কারবার ঘিরে। অপরাধীরা নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে অপহরণ করে এ বস্তি এলাকায় নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ আদায় করে। মাঝেমধ্যেই হত্যার ঘটনাও ঘটে সেখানে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট আরেকটি সূত্রটি বলছে, অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত চনপাড়া বস্তিতে ছিনতাইকারী, অজ্ঞানপার্টি, খরপার্টি, অপহরণ ও মাদক কারবারিরা দাপিয়ে বেড়ায়। ৬টি গ্রুপ বস্তির অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের আটক করতে চনপাড়া বস্তিতে দফায় দফায় অভিযান চালাচ্ছে তদন্তকারীরা। ৬ গ্রুপের একটির প্রধান ছিলেন শাহিনুর রহমান ওরফে সিপি শাহিন। গত বৃহস্পতিবার তিনি র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এর পরই আত্মগোপনে চলে গেছে অন্যান্য গ্রুপের সন্ত্রাসীরা।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, চনপাড়া বস্তির অপর একটি গ্রুপের প্রধান রায়হানকে গতকাল বরিশালের বানারীপাড়া থেকে আটক করেছে র্যাব ৬-এর একটি দল। এ বিষয়ে জানতে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সাড়া দেননি।
এদিকে শীর্ষ সন্ত্রাসী রায়হানকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও (ডিবি) খুঁজছিল বলে দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন ডিবির এক তদন্ত কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আমরা রায়হানের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে আটকের জন্য রওনা হই। তবে এর মধ্যে অন্য একটি বাহিনী তাকে আটক করে ফেলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা চনপাড়া বস্তিতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। সেখানেই হত্যার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে আমরা মনে করছি। তবে কোনো কিছুই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কারণ ফারদিন রামপুরা থেকে কোথায় গেছেন, তার কোনো সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা যায়নি। এ ছাড়া চনপাড়া বস্তির আশপাশে কোথাও কোনো সিসিটিভি নেই। ফলে আমরা সব দিক বিবেচনায় রেখে তদন্ত করছি।’
ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, বুয়েটশিক্ষার্থী ফারদিনকে ঢাকা শহরের কোনো এক জায়াগায় খুন করা হতে পারে।
ফারদিন হত্যা মামলার তদন্তের মূল দায়িত্বে থাকা ডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, ৪ নভেম্বর রামপুরা থেকে চনপাড়া বস্তিতে যাওয়ার আগে মোবাইল ফোনে ছয়জনের সঙ্গে কথা বলেন ফারদিন। সর্বশেষ কথা হয় তার সিনিয়র শিক্ষার্থী শীর্ষ সংশপ্তকের সঙ্গে। রাত ১০টা ৫২ মিনিট, ১০টা ৫৩ মিনিট ও ১১টা ৩ মিনিটে ফারদিন শীর্ষকে ফোন করেন। শীর্ষর সঙ্গে প্রতিবারই ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড করে কথা বলেন ফারদিন। সেই ভয়েস রেকর্ড সংগ্রহের পর দেখা গেছে, ডিবেটিং নিয়ে তাদের মধ্যে কথা হয়। তবে ফোনের হোয়াটস অ্যাপে অন্যদের সঙ্গে কথোপকথনের তথ্য পেলেও কী কথা হয়েছে, তা জানতে পারেনি ডিবি।
ডিবি মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রাজীব আল মাসুদ গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এখনো ফারদিন হত্যাকা-ের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ আমরা সংগ্রহ করতে পারিনি। নিখোঁজের তিন দিন পর লাশ উদ্ধার হওয়ায় তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ফারদিনের বিভিন্ন স্থানের অবস্থানের সঠিক তথ্য পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। আমাদের সব কটি টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি দ্রুততম সময়ে রহস্য উদঘাটন করতে।’
ডিএমপির রামপুরা থানায় ফারদিনের বাবা কাজী নূরউদ্দিন রানার করা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ফারদিনের বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরা রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনেও হত্যাকা-ের বিষয়ে কোনো তথ্য জানাতে পারেননি বলে জানান ডিসি রাজীব আল মাসুদ।
তিনি বলেন, ‘বুশরার সঙ্গে ফারদিনের দুই বছরের চ্যাটিং হিস্ট্রি আমরা বের করেছি। সেখানে অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায়নি। তাদের বেশির ভাগ আলোচনা পড়ালেখা আর ডিবেটিং বিষয়ক। এমনকি তাদের মধ্যে কোনো প্রেমের সম্পর্ক থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
গতকাল শনিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সস্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, ‘বুয়েটশিক্ষার্থী ফারদিনের মোবাইলের ডেটা অ্যানালাইসিস ও বিভিন্ন জায়গায় তিনি যার সঙ্গে কথা বলেছেন, সবকিছু মিলিয়ে আমার কাছে মনে হচ্ছে, ঢাকা শহরের কোনো এক জায়াগায় খুন হতে পারেন তিনি। মোবাইলের লোকেশনে আমরা নারায়ণগঞ্জও পেয়েছি। সবকিছু মিলিয়ে তদন্তের স্বার্থে কংক্রিট কিছু বলতে পারছি না।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে ফারদিন যেখানে যেখানে গিয়েছিলেন, আমরা বিভিন্ন টেকনিক্যাল মাধ্যম ব্যবহার করে সেসব স্থান খুঁজে বের করেছি।’
বুয়েটশিক্ষার্থী ফারদিন ৪ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পরদিন রাজধানীর রামপুরা থানায় নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা কাজী নূরউদ্দিন। ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। ৯ নভেম্বর রাতে ফারদিনের বান্ধবী বুশরাসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে ‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার অভিযোগে রামপুরা থানায় মামলা করেন ফারদিনের বাবা।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের চুকনগরের ভদ্র নদীর পাড়ে নতুন কিছু আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে নদীর তীর ভরাট শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। তবে এক বছর আগেই খননের মাটি দিয়ে নদী ভরাট করায় উষ্মা প্রকাশ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। শঙ্কা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, এভাবে ঘর তৈরি করলে একদিকে যেমন ভাঙনের ঝুঁকি আছে অন্যদিকে পাউবোর জায়গা হওয়ায় পরে সরিয়ে নেওয়ার চাপও পড়তে পারে। অথচ সরকারি নির্দেশনায় রয়েছে, কোনো অবস্থাতেই নতুন ভরাট করা মাটি, নরম মাটি, খাল-জলাশয় ও নদীর তীর এবং নিচু জায়গায় আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণ করা যাবে না।
ডুমুরিয়া উপজেলার প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, গৃহহীন মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া বাড়িগুলো আরও মজবুত ও টেকসই করতে এবার দেওয়া হয়েছে বেশকিছু নির্দেশনা। প্রতিটি বাড়ি নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতিটি বাড়ির ফাউন্ডেশন, পিলার-বারান্দার কলামেও এসেছে পরিবর্তন।
সরেজমিনে গত শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দেখা গেছে, নদীর পাড় ধরে দৈর্ঘ্য প্রায় ১০০ গজ ও প্রস্থে প্রায় ১০ গজের মতো জায়গা ভরাট করা হয়েছে। সে সময় এলাকাবাসী দেশ রূপান্তরকে জানান, ভদ্র নদীটি গত বছর খনন করা হয়েছে। সে কারণে নদীর স্রোতের গতিও বেড়েছে। দুই বছর আগে এই স্থান থেকে আধা কিলোমিটার পশ্চিমে চুকনগর বাজার এলাকায় ভদ্র নদীর পাশে নির্মাণ করা হয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর আওতায় বেশ কিছু ঘর। গত বছর নদী খননের সময় মাটি চলে গেছে অনেক ঘরের মধ্যে। সেখানে বসবাস করা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। একই ভুল এখানে করা হচ্ছে।
স্কেভেটর দিয়ে মাটি ভরাটের কাজ করা ইসমাইল হোসেন বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশে পাঁচ দিন ধরে কাজ করছি। প্রতিদিন ১০/১২ ঘণ্টা করে কাজ হচ্ছে। ঘণ্টাপ্রতি গাড়ি ভাড়া ১৫০০ টাকা দিচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল ইসলাম বলেন, এখানে ঘর করার জন্য ইউএনও ও এ্যাসিল্যান্ড প্রায় আসছেন। গত বছর এই নদী খনন করা হয়েছিল। খননের পরে নদীর পাড় ভেঙে চলে গিয়েছিল। তাছাড়া নদীর তীর কমবেশি ভাঙতে থাকে। এভাবে নদীর তীরে ঘর করা হলে তা টিকবে না।
চুকনগর বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সরদার ওহিদুল ইসলাম বলেন, এখানে আশ্রয়ণ প্রকল্প করার জন্য নদী কেটে যে মাটি পাড়ে রাখা হয়েছিল সেই মাটি আবার নদীতে ফেলা হচ্ছে। যদি অতিবৃষ্টি বা বন্যা হয় তাহলে পানির চাপে ঘর নদীতে চলে যাবে। এ জায়গা তো পুরো চর জেগে ওঠা। এভাবে নদী দখল করে ঘর নির্মাণ করা হলে নদী খননের দরকার কী?
খুলনার নদী বাঁচাও আন্দোলনের নেতা ও কেন্দ্রীয় পানি কমিটির সভাপতি এবিএম শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা। সেই ভালো প্রোগ্রামটা এখন খারাপের দিকে যাচ্ছে। মাটি কেটে নদীর ভেতরে ফেলছে। এভাবে নদী ভরাট করে ঘর নির্মাণ করলে একদিন তো নদী থাকবে না।
পাউবো ডুমুরিয়ার উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ওই স্থানে তো আশ্রয়ণ প্রকল্প হবে না। ওই মাটি কেটে দিলে নদীই ভরাট হয়ে যাবে। আমি এই বিষয়টি নিয়ে ইউএনও স্যারের সঙ্গে কথা বলব।
ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফ আসিফ রহমানের মোবাইল ফোনে গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
তবে খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা রয়েছে নদীর তীরে কোনোভাবে ঘর নির্মাণ করা যাবে না। আমি বিষয়টি এখন আপনার মাধ্যমে জানলাম। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি।
মিরপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচলকারী সব যাত্রী বাসে আজ রবিবার থেকে ই-টিকিট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। আর আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ঢাকার সব এলাকার বাসই ই-টিকেটিংয়ের আওতায় আসবে। গতকাল শনিবার রাজধানীর ঢাকা সড়ক মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘গণপরিবহনে ই-টিকেটিং’ চালুর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান সংগঠনটির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ।
এনায়েত উল্লাহ বলেন, ই-টিকেটিংয়ের আওতায় সবাইকে আসতে হবে। ই-টিকেটিংয়ে অসম প্রতিযোগিতা থাকবে না। চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চলাচল বন্ধ হবে। পরিবহন শ্রমিকরা বেতন সিস্টেমের আওতায় চলে আসবেন। যত্রতত্র গাড়ি থামানো এবং প্রতিযোগিতা বন্ধে সেন্ট্রাল মনিটরিং সেল গঠন করা হবে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের শহরতলিসহ মোট ৯৭টি কোম্পানির গাড়ি ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ই-টিকেটিংয়ের আওতায় আসবে। তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ অভিযোগ পেয়ে আসছি। সেগুলো দূর করার জন্য ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি কাজ করে আসছে। বর্তমানে ঢাকা শহর এবং শহরতলিতে মোট ৯৭টি বাস কোম্পানি বাস পরিচালনা করে। তাদের নিয়ে আমরা বিভিন্ন সময় সভা করেছি। বিভিন্ন সময় মোট ২১টি সার্কুলার দিয়েছি। ৯টি ভিজিল্যান্স টিম গঠন করে রাস্তায় মাসের পর মাস ডিউটি করিয়েছি এবং আমি নিজেও মাঠে ছিলাম দীর্ঘ সময়; বিশেষ করে অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়টি আমরা বিগত দিনে সমাধান করতে পারিনি। দীর্ঘ সময় পরে গেটলক সার্ভিস, সিটিং সার্ভিস এগুলো আমরা বন্ধ করতে পেরেছি। কিন্তু তারপরও অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়টি আমাদের অভিযোগে বারবার আসছিল। তাই গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে ই-টিকেটিং পদ্ধতি চালু করা হয়। ওই সময় মিরপুরের ৮টি বাস কোম্পানিতে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে এটি চালু করা হয়েছিল।’
পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে জানিয়ে এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘দুজন কর্মকর্তা এটি সমন্বয় করবেন। এর জন্য আমরা একটি হটলাইন তৈরি করেছি, যেখানে তিনটি নম্বর রয়েছে। নম্বরগুলো হচ্ছে : ০১৬১৮৯৩৩৫৩১, ০১৬১৮৯৩৬১৮৫ এবং ০১৮৭০১৪৬৪২২।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং পরিবেশবিদ ড. হাছান মাহমুদ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে দেশের পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন অবকাঠামোর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ক্ষয়ক্ষতি মেটাতে বিশ্ব জলবায়ু তহবিল থেকে আলাদাভাবে অর্থ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন।
মিসরে শারম আল শেখ অবকাশ কেন্দ্রে চলমান ২৭তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে মূল সম্মেলনের সমান্তরালে স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াটার এইড আয়োজিত ‘বাংলাদেশের পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন অবকাঠামোর দুর্যোগজনিত ক্ষয়ক্ষতির ওপর আলোকপাত’ সেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ দাবি তোলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি প্রথমে অনেকে স্বীকারই করতে চায়নি। অথচ বাংলাদেশসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা অনেক দেশের জনজীবনে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক। পরিবেশ পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো বা অভিযোজনের জন্য বরাদ্দ থেকে অর্থায়ন নয়, এই ক্ষয়ক্ষতি পূরণ ও নিরসনের জন্য আলাদা খাত তৈরি করে পৃথকভাবে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে।
কপ-২৭-এ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিশ্বনেতাদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত আশাপ্রদ বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই এখানে ভালো ভালো কথা বলছি, কিন্তু যুদ্ধ যদি বন্ধ না হয়, তাহলে জলবায়ু অর্থায়নের কী হবে? অর্থাৎ আমরা যদি সত্যিই পৃথিবীকে রক্ষা করতে চাই, তাহলে অবিলম্বে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে।’
বাংলাদেশের পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশনের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিকর প্রভাবের মধ্যে সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা ও পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অসময়ে বৃষ্টিপাত, খরা ও উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ত জলের হানা বেড়ে যাওয়া, নদীতীর ক্ষয়, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের প্রকোপ, শহরাঞ্চল ও জলাধার সন্নিকট এলাকায় চকিত বন্যায় সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির কথা তুলে ধরেন বেলজিয়ামের লিম্বুর্গ ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাম থেকে পরিবেশ রসায়নের গবেষক ড. হাছান মাহমুদ।
দেশে গত ১৫ বছরের ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে ২০০৭ সালে সিডরে ২.৩১ বিলিয়ন ডলার, ২০০৯ সালের আইলায় ১ বিলিয়ন, ২০১৬ সালে রোয়ানুতে ১২৭ মিলিয়ন, ২০১৯ সালে ফণিতে ৬৩.৬ মিলিয়ন, ২০২০ সালে আম্পানে ১৩ মিলিয়ন, ২০২১ সালে ইয়াসে খুলনাতে ৭ লাখ ডলারসহ ২০২২ সালের অশনি ও বিভিন্ন সময়ে বন্যা ও অন্যান্য দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক বিবরণ তুলে ধরেন বক্তারা।
ওয়াটার এইডের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি পরিবেশবিদ সেলিম উল হক, জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ কলিন ম্যাককুইস্টান, পরিবেশ গবেষক মো. শামস-উদ-দোহা, ওয়াটার এইড বাংলাদেশের পরিচালক পার্থ হাফেজ শাইখ এবং সিনিয়র অ্যাডভোকেসি অফিসার আদনান কাদের এ সেশনে বক্তব্য রাখেন। বাসস
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস মিয়ানমারে অবিলম্বে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য দেশটির জান্তার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সম্মেলনে যোগ দিয়ে এ আহ্বান জানান তিনি।
গুতেরেস বলেন, ‘মিয়ানমারের পরিস্থিতি জনগণের জন্য এক অন্তহীন দুঃস্বপ্ন এবং অঞ্চলটির শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি। আমি মিয়ানমার কর্র্তৃপক্ষকে আহ্বান করছি, তারা যেন তাদের জনগণের কথা শোনে, রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেয় এবং অবিলম্বে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তন করে। এটিই স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ।’
আসিয়ান নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের গুতেরেস বলেন, শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আসিয়ানের সঙ্গে জান্তার যে সমঝোতা হয়েছে তা কার্যকর হওয়া জরুরি। মিয়ানমারে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্বিচার হামলাকে ভয়ংকর ও হৃদয়বিদারক বলে উল্লেখ করেন তিনি।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে রাতারাতি ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এরপরই দেশটির বহু রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিকসহ বহু মানুষকে কারাগারে পাঠায় জান্তা। ক্ষমতা আঁকড়ে ধরা সামরিকদের দূর করতে দেশজুড়ে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে মিয়ানমারের জনগণ। কিন্তু বিরোধীদের দমাতে সম্প্রতি হত্যাযজ্ঞ তীব্র করেছে জান্তা। এই পরিস্থিতিতে এবারের আসিয়ান সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো শান্তি প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়ায় অসন্তেুাষ প্রকাশ করেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে আসিয়ানের পাঁচ দফার আলোকে সুনির্দিষ্ট, বাস্তবসম্মত ও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জনে আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকাসহ সারা দেশে তীব্র দাবদাহ চলছে। দফায় দফায় বিদ্যুৎ থাকছে না বাসা-বাড়ি, অফিস আদালত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে।
বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে একটি মহল পরিস্থিতি ঘোলা করার চেষ্টায় আছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য এসেছে। আর ওই তথ্য পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তর নড়েচড়ে বসেছে। পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ শীর্ষ কর্তারা বৈঠক করেছেন। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সোমবার পুলিশের সব রেঞ্জ অফিস ও ইউনিট প্রধানদের কাছে বিশেষ নির্দেশনা পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
বিশেষ বার্তা পেয়ে ইউনিট প্রধান, রেঞ্জ ডিআইজি ও ৬৪ জেলার পুলিশ সুপাররা আলাদাভাবে বৈঠক করেছেন। বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তা দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছে পুলিশ।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিদ্যুতের সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে সরকার নানাভাবে চেষ্টা করছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি। এরই মধ্যে যেকোনো পরিস্থিতি এড়াতে আমরা সতর্ক আছি। বিদ্যুৎ স্টেশনগুলো নিরাপত্তার আওতায় আনা হচ্ছে। এই জন্য আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সোমবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পুলিশের সব ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও পুলিশ সুপারদের কাছে বিদ্যুৎ স্টেশনে নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি নজরদারি বাড়াতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। একটি মহল লোডশেডিংয়ের অজুহাতে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। যেসব এলাকায় বেশি বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে তারও একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
কয়েকটি জেলার পুলিশ সুপার দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন, পুলিশ সদর দপ্তরের চিঠি পাওয়ার পর আমরা বিশেষ বৈঠক করছি। এলাকায় বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে তা সত্য। এ জন্য আমরা বেশ সতর্ক আছি। বিদ্যুৎ অফিস ও স্টেশনগুলোর বিষয়ে থানার ওসিদের দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা দেশ রূপান্তরকে বলেন, লোডশেডিংয়ের অজুহাত তুলে বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে একটি বিশেষ মহল। প্রতিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাড়তি পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে থানার ওসিদের নানা দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন জেলার পুলিশ সুপাররা। এমনকি বাড়তি ফোর্সও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তা ছাড়া রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোও নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।
বিদ্যুৎ অফিসের পাশাপাশি ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তুলতে ৫০ থানার ওসিদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
খন্দকার গোলাম ফারুক দেশ রূপান্তরকে জানান, বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে যাতে কেউ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে সে জন্য আমরা সতর্ক আছি। বিদ্যুৎ স্টেশনগুলোর পাশাপাশি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো বাড়তি নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে সবাইকে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎসহ যেকোনো সমস্যা নিয়ে কোন মহল যাতে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে। আশা করি বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটবে না। তারপরও পুলিশ সতর্ক আছে।
সূত্র জানায়, লোডশেডিংকে পুঁজি করে কেউ যাতে অপ্রীতিকর কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ নিতে না পারে, সে বিষয়ে নজর রাখতে বলা হয়েছে। নির্দেশনার পর সারা দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র, বিদ্যুৎ অফিস, সাবস্টেশনসহ কেপিআই স্থাপনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের চেয়ে বৃদ্ধি করা হয়েছে। গোয়েন্দা কার্যক্রম ও পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা সমিতি বা কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকেও পুলিশকে চিঠি দিয়ে বাড়তি নিরাপত্তাও চাওয়া হয়েছে।
বছরে ৪০ কোটি ডলার পারিশ্রমিকের প্রস্তাব নিয়ে লিওনেল মেসির সংগে যোগাযোগ করছে আলো হিলাল। তারা মংগলবার চুক্তির ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে বলে জানিয়ে রেখেছে। কিন্তু মেসি তাদেরকে ২০২৪ পর্যন্ত প্রস্তাবটা পিছিয়ে দিতে বলেছেন বলে খবর দিয়েছে ফুটবল বিষয়ক ওয়েব পোর্টাল গোল ডটকম।
তবে সৌদি ক্লাব এ-ই প্রস্তাব এখনই গ্রহন না করলে আগামী বছর তা একই রকম থাকবে না বলে জানিয়েছে।
মেসি আসলে তার শৈশবের ক্লাবে আরো অন্তত এক বছর খেলতে চান। তাতে তার পারিশ্রমিক সৌদি ক্লাবের প্রস্তাবের ধারে কাছে না হলেও ক্ষতি নেই। জানা গেছে, বার্সা তাকে এক বছরে ১৩ মিলিয়েন ডলার পারিশ্রমিক প্রস্তাব করতে যাচ্ছে।
লা লিগা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়ায় মেসিকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেবে বার্সা। ধারনা করা হচ্ছে বুধ-বৃহস্পতিবারের মধ্যে এ ব্যাপারে একটা স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে।
সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে প্রেম এরপর বিয়ে। দেড় বছরের দাম্পত্য জীবনে আট মাস ধরে চিত্রনায়িকা পরীমণি ও শরিফুল রাজের বনিবনা হচ্ছে না বলেই শোনা যাচ্ছে। চলছে টানাপোড়েন এবং সেই সংসার এখন ভাঙনের পথে। রাজের ফেসবুক থেকে অভিনেত্রী তানজিন তিশা, নাজিফা তুষি ও সুনেরাহ বিনতে কামালের কিছু ছবি ও ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর রাজের সঙ্গে পরীমণির মতপার্থক্য প্রকাশ্যে আসে। সব ছাপিয়ে যা এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
রবিবার একটি গণমাধ্যমের ‘লাইভ’ অনুষ্ঠানে এসে শরিফুল রাজ জানান, আপাতত তারা সেপারেশনে আছেন এবং তাদের আর একসাথে হওয়ার কোন সুযোগ নেই। পরীকে তিনি শ্রদ্ধা করেন জানিয়ে সবশেষে পরীমণির উদ্দেশ্যে রাজ বলেন, ‘বেবি, আই লাভ ইউ। যা-ই হোক না কেন, আনন্দে থেকো। আমরা আমাদের সন্তানকে ভালো রাখব।’
রাজের এমন মন্তব্যের উত্তর দিতে সোমবার রাতে গণমাধ্যমটির লাইভে এসে রাজের উদ্দেশ্যে পরীমণি বলেন, ‘গরু মেরে জুতা দান করার কোনো দরকার নেই। কেউ রেসপেক্ট করলে সেটা তার কার্যকলাপ দেখেই বোঝা যায়, মুখ ফুটে বলতে হয় না। আমাকে পাবলিকলি অপমান করে এরপর রেসপেক্ট দেখানোর কোনো দরকার নেই। আর আমার বাচ্চাকে নিয়ে এসব ইমোশনালি কোনো কথা শুনতে চাই না। এসব ইমোশনালি কথা মানুষকে গিলিয়ে লাভ নেই। মানুষ বুঝে।’
ফাঁস হওয়া ভিডিওগুলো পরী বলেন, ‘এত বছর ধরে তারা বন্ধু অথচ আমি জানতাম না। এসব সামনে আসার পর জানতে পারলাম। আর রাজ যতটা তার বন্ধুদের ইমেজ নিয়ে কনসার্ন তার পরিবার নিয়ে এতটাও কনসার্ন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি এমনিতে অনেক শান্তশিষ্ট। অনেকটা সাপের মতো, লেজে পাড়া না দিলে চুপচাপ থাকি কিন্তু আমার লেজে পাড়া দিলেই আমি ফুঁস করে উঠি আর তখন কামড় দিবই।’
সবশেষে পরী বলেন, ‘আমি চাই এসবের শেষ হোক। আমি আজকে এখানে এসে এসব বলতাম না। তুমিই (রাজ) আমাকে বাধ্য করেছ। এরকম অসুস্থ মানুষের সঙ্গে আমি আর থাকতে চাই না। আমি চাই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজ আমাকে ডিভোর্স দিক।’
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য নতুন অর্থবছরে (২০২৩-২৪) ৩৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে ৩৩ হাজার ৮২৫ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং জ্বালানি খাতে ৯৯৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা নতুন বাজেটে এই বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে বরাদ্দ ছিল ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে সংশোধিত বাজেটে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৭ হাজার ৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ নতুন অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ছে ৭ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বাজেট বক্তৃতায় বলেন, উৎপাদন ও বিতরণ সক্ষমতা সম্প্রসারণের ফলে দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠী বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২০০৯ সালে ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট থেকে বর্তমানে ২৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। জ্বালানির ব্যবহার বহুমুখীকরণের জন্য গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পাশাপাশি কয়লা, তরল জ্বালানি, দ্বৈত জ্বালানি, পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, রামপালে কয়লাভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিট ও পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। মাতারবাড়ীতে ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা-সুপার ক্রিটিক্যাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে মোট ১২ হাজার ৯৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৩৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন এবং ২ হাজার ৪১৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়া, ১০ হাজার ৪৪৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরও ৩৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে পাশর্^বর্তী দেশগুলো থেকে প্রায় ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে ভারত থেকে ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পাশাপাশি ঝাড়খ-ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৭৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। নেপালের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য বাংলাদেশ, ভুটান ও ভারতের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক সই হতে যাচ্ছে শিগগিরই। তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে পারব বলে আশা করছি।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ শতাংশ পরিচ্ছন্ন জ্বালানি থেকে সংগ্রহ করতে চাই। এরসঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, ৬০ লাখ সোলার সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে অফ গ্রিড এলাকায় বসবাসকারী জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে ডিজেলচালিত পাম্পের জায়গায় সৌরচালিত পাম্প স্থাপন করার অংশ হিসেবে সেচকাজে ইতিমধ্যে ২ হাজার ৫৭০টি পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৮৯৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। সর্বোপরি, রাশিয়ার সহায়তায় রূপপুরে ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।’
উৎপাদিত বিদ্যুৎ জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে গত ১৪ বছরে ৬ হাজার ৬৪৪ সার্কিট কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সঞ্চালন লাইন ১৪ হাজার ৬৪৪ কিলোমিটারে উন্নীত হয়েছে। এছাড়া বিতরণ লাইন ৩ লাখ ৬৯ হাজার থেকে ৬ লাখ ৬৯ হাজার কিলোমিটারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিদ্যুতের সিস্টেমলস ১৪ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৭ দশমিক ৭ শতাংশে। ২০৩০ সালের মধ্যে সঞ্চালন লাইনের পরিমাণ ২৮ হাজার কিলোমিটারে সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুতের অপব্যবহার রোধের লক্ষ্যে গত ৫ বছরে প্রায় ৫৩ লাখ প্রি-পেইড স্মার্ট মিটার স্থাপন করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী কামাল বলেন, ২০০৯ সালের তুলনায়, জ্বালানি তেলের মজুদ ক্ষমতা ৮ লাখ ৯৪ হাজার মেট্রিক টন থেকে বৃদ্ধি করে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ লাখ ৬০ হাজার টন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এই মজুদ ক্ষমতা ৩০ দিনের পরিবর্তে ৬০ দিনে বাড়ানোর বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি উদ্বোধন করা ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইনের মাধ্যমে আমদানি করা জ্বালানি তেল (ডিজেল) দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় এবং সৈয়দপুরে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ‘একমাত্র তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারির পরিশোধন ক্ষমতা ১৫ লাখ টন থেকে ৪৫ লাখ টনে উন্নীত করার চেষ্টা চলছে। পায়রা সমুদ্রবন্দর এলাকায় একটি বৃহৎ সমন্বিত তেল শোধনাগার স্টোরেজ ট্যাংক নির্মাণের সিদ্ধান্ত আছে। সম্প্রতি ভোলার ইলিশা গ্যাসক্ষেত্রে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুদ আবিষ্কৃত হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার সময় প্রতিদিন গ্যাসের উৎপাদন ছিল ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়ানোর পর দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ৯৮৪ মিলিয়ন ঘনফুট বেড়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে আরও ৪৬টি কূপ খনন করা হবে। এতে অতিরিক্ত ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মুস্তাফা কামাল বলেন, ‘সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন হওয়ায় আমরা বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি। ক্রমবর্ধমান জ্বালানির চাহিদা মেটাতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি এবং স্পট মার্কেট থেকেও কেনা হচ্ছে। এছাড়া কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে প্রতিদিন ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন ল্যান্ড বেইজড এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
বাজেট বক্তৃতায় আরও বলা হয়, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ১৫৮ কিলোমিটার গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের উত্তরাঞ্চল ও অন্যান্য এলাকায় ২১৪ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের কাজ চলছে। ২০২৬ সালের মধ্যে পায়রা ও ভোলা থেকে গ্যাস সঞ্চালনের জন্য আরও ৪২৫ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি অপচয় রোধে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের কাজও চলছে।
চলতি অর্থবছরের চেয়ে আগামী অর্থবছরের সামগ্রিক বাজেট আকারে ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ বড় হলেও আগামী বছরের শিক্ষা-বাজেট দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে। তবে টাকার অঙ্কে শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ৬ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা বেড়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে মোট বাজেটের ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। শুধু শিক্ষা খাত হিসাব করলে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষায় বরাদ্দ ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। টাকার অঙ্কে তা ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি। চলতি অর্থবছরে শিক্ষায় বরাদ্দ ছিল ১২ দশমিক ০১ শতাংশ বা ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা।
ইউনেস্কো, শিক্ষাবিদ বা অংশীজনরা অনেক দিন ধরেই শিক্ষায় জিডিপির কমপক্ষে ৪ শতাংশ বরাদ্দের কথা বলছেন। এটাকে তারা বরাদ্দ হিসেবে না দেখে আগামী দিনের বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে বলছেন। গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষায় বরাদ্দ ১২ শতাংশের আশপাশে ঘুরপাক খাচ্ছিল। জিডিপির হিসাবে তা ছিল ২ শতাংশের কাছাকাছি। চলতি অর্থবছরে শিক্ষা খাতে মোট বরাদ্দ জিডিপির ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২ দশমিক ০৮ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়াচ্ছে জিডিপির ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগামী বাজেটে যে লক্ষ্য ধরা হয়েছে, তার সঙ্গে শিক্ষায় বরাদ্দের সংগতি নেই। বাজেটে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছে। এজন্য দক্ষ ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠী প্রয়োজন। কিন্তু এ জনগোষ্ঠী তৈরির জন্য প্রয়োজন শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ। বরাবরের মতো এবারও শুভংকরের ফাঁকি লক্ষ করছি। শিক্ষার সঙ্গে প্রযুক্তি মিলিয়ে আকার বড় করা হলেও চলতি অর্থবছরের চেয়েও বরাদ্দ কমেছে। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নেও বাজেটে দিকনির্দেশনা দেখছি না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘শিক্ষায় জিডিপির ২ শতাংশের নিচে বরাদ্দ কাক্সিক্ষত নয়। আগামী অর্থবছরে অন্তত ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ বরাদ্দ দিলে ভালো হতো। কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষায় আরও বেশি নজর দেওয়া উচিত ছিল। সেটা আগামী অর্থবছরের বাজেটে দেখা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘আগামী বছরের বাজেটে মিড ডে মিলের জন্য বরাদ্দ রাখার কথা বলা হয়েছে, যা খুবই ভালো। যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ ও তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণে জোর দিতে হবে। শিক্ষায় বরাদ্দের সঠিক ব্যবহারের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।’
আগামী অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৩৪ হাজার ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে তা ছিল ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৪২ হাজার ৮৩৮ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ১০ হাজার ৬০২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার।
বাজেট ঘিরে প্রতি বছরই বেসরকারি শিক্ষকদের অন্যতম দাবি থাকে শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণ, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়া ও শতভাগ উৎসব-ভাতা প্রদান। নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণের প্রক্রিয়া চলমান রাখাও তাদের অন্যতম দাবি। কিন্তু সেসব বিষয়ে বাজেটে স্পষ্ট কিছু উল্লেখ নেই। তবে এমপিওভুক্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে আগামী অর্থবছরে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
স্বাস্থ্য খাতে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে এই খাতে এবার বরাদ্দ ১ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়লেও মোট বাজেটের তুলনায় তা কমেছে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে খাতটিতে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। আগামী বাজেটে তা ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সংসদে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ খাতে ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৯ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় মাত্র ১৫০ কোটি টাকা বেশি। এর মধ্যে পরিচালন ব্যয় ১৭ হাজার ২২১ কোটি টাকা ও উন্নয়ন ব্যয় ১২ হাজার ২১০ কোটি টাকা। এছাড়া স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ৮ হাজার ৬২১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই বরাদ্দ থেকেই নতুন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যয় নির্বাহ করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, এবার টাকার অঙ্কে গত বছরের তুলনায় (বর্তমান ২০২২-২৩ অর্থবছর) ১ হাজার একশ কোটির মতো বেড়েছে। কিন্তু বাজেট শেয়ারে সেটা কমেছে। সামগ্রিক বাজেটের গ্রোথ বা বৃদ্ধি ১২ শতাংশ, কিন্তু স্বাস্থ্যের বাজেটের বৃদ্ধি ৩ শতাংশ। তারমানে রাষ্ট্রীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের গুরুত্ব কমেছে। সেই কারণে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
এই স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ বলেন, এবার কমার যৌক্তিক কারণ আছে। সেটা হলো স্বাস্থ্য বিভাগের সেক্টর প্রোগ্রামে উন্নয়ন বাজেট থেকে অর্থ আসে। সেই সেক্টর প্রোগ্রাম এই অর্থবছরে শেষ হয়ে প্রস্তাবিত অর্থবছর থেকে নতুন সেক্টর প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চলমান সেক্টর প্রোগ্রাম সময়মতো বাস্তবায়ন করতে না পারায় সেটার সময় আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। এই এক বছরের জন্য নতুন বাজেট থাকে না, পুরনো বাজেট থেকেই ব্যয় করতে হয়। ফলে বরাদ্দ না বাড়িয়ে পাঁচ বছরের বাজেট যদি ছয় বছরে গিয়ে ঠেকে, তাহলে প্রতি বছর টাকা কমে যায়। মূলত এ কারণে এবার টাকা কমে গেছে।
সরকার স্বাস্থ্য খাতে এবারও কিছু থোক বরাদ্দ রাখতে পারত বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অর্থনীতির এই শিক্ষক। তিনি বলেন, কভিড ছাড়াও আমাদের অনেক জরুরি খাত আছে। এখন ডেঙ্গু চলছে। এটি ইমার্জেন্সি হয়ে যাবে। ফলে এটার জন্য যে ফান্ড দেওয়া আছে হাসপাতালে, রোগী বাড়লে সেটা দিয়ে হবে না। এরকম ইমার্জেন্সি আরও আসতে পারে। এরকম একটা থোক বরাদ্দ রাখলে স্বাস্থ্যের ইমার্জেন্সিতে সেখান থেকে ব্যয় করা যেত। কিন্তু সেটাও নেই। তার মানে কভিডের শিক্ষা থেকে আমরা কিছুই শিখিনি। প্রস্তাবিত বাজেটে সেটার প্রতিফলন নেই।
সামগ্রিকভাবে বাজেটে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবার খরচ বেড়ে যাবে বলেও মনে করছেন এই স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, এতে স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধসহ সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।
যদিও এবারের বাজেটে ওষুধ, চিকিৎসাসামগ্রী ও স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসা আরও সুলভ করার জন্য ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ, আইভি ক্যানুলা উৎপাদনের অন্যতম প্রধান উপাদান সিলিকন টিউবসহ আরও কিছু বিদ্যমান ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। তামাক জাতীয় পণ্য যেমন তরল নিকোটিন, ট্রান্সডারমাল ইউস নিকোটিন পণ্যের বিপরীতে ১৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।