
গবাদিপশুর টিকা উৎপাদনে রেকর্ড হয়েছে। আগের রেকর্ড ভেঙে গত অর্থবছরে (২০২১-২২) ৩২ কোটির বেশি টিকা উৎপাদন করেছে সরকারের প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান। আগের অর্থবছরে টিকা উৎপাদন করতে পেরেছিল ৩১ কোটির কিছু বেশি। প্রতিষ্ঠার পর প্রতিষ্ঠানটি কোনো অর্থবছরেই এত টিকা উৎপাদন করতে পারেনি।
প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, গবাদিপশুর ১৭ ধরনের টিকা উৎপাদন করা হচ্ছে। গরু, ছাগল, মহিষ, হাঁস, মুরগি প্রভৃতি পশুপাখির বিভিন্ন রোগের জন্য আরডিভি, বিসিআরডিভি, ফাউল পক্স, পিজিয়ন পক্স, ফাউল কলেরা, গামবোরা, ডাক-প্লেগ, মারেক্স, সালমোনেলা, তড়কা, গলাফোলা, বাদলা, ক্ষুরারোগ, পিপিআর, জলাতঙ্ক (এইপি), জলাতঙ্ক (এইচইপি) ও গোটপক্স টিকা প্রয়োগ করে সাফল্যও পাওয়া গেছে।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, প্রত্যেক উপজেলা থেকে টিকার চাহিদা আসে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সেই চাহিদা মূল্যায়ন করে রাজধানীর মহাখালীর প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পাঠায়। প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান টিকা উৎপাদন করে পূর্বনির্ধারিত চাহিদা অনুসারে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে।
প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক ড. অমলেন্দু ঘোষ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গবাদিপশুর ১৭ ধরনের টিকা উৎপাদন করে প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান। আমাদের গবেষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরলস প্রচেষ্টার ফলে এ পরিমাণ উৎপাদন হয়েছে। টিকার উৎপাদন কীভাবে আরও বাড়ানো যায় সেই লক্ষ্যে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে গবাদিপশুর টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩২ কোটি ডোজ; টিকা উৎপাদিত হয়েছে ৩২ কোটি ৪ লাখ ৭২ হাজার ২৭৪ ডোজ। ২০২০-২১ অর্থবছরে টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮ কোটি ৫০ লাখ; উৎপাদিত হয়েছে ৩১ কোটি ২ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৭ ডোজ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮ কোটি ৫০ লাখ; উৎপাদিত হয়েছে ২৭ কোটি ৭৪ লাখ ৮৪ হাজার ১৮০ ডোজ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭ কোটি; উৎপাদিত হয়েছে ২৭ কোটি ২৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬৯৮ ডোজ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ কোটি ২০ লাখ; উৎপাদিত হয়েছে ২৪ কোটি ৬২ লাখ ৬৩ হাজার ৫১ ডোজ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ কোটি ১৭ লাখ ৮৮ হাজার; উৎপাদিত হয়েছে ২৫ কোটি ৩৭ লাখ ৩৩ হাজার ৪৬০ ডোজ।
প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৭ ধরনের টিকা উৎপাদিত হয়েছে ৩২ কোটি ৪ লাখ ৭২ হাজার ২৭৪ ডোজ। আরডিভি টিকার চাহিদা ছিল ৮ কোটি ৭০ লাখ; উৎপাদিত হয়েছে ৮ কোটি ৭০ লাখ ৪ হাজার ৫০০ ডোজ। বিসিআরডিভি টিকার চাহিদা ছিল ১০ কোটি; উৎপাদন হয়েছে ১০ কোটি ৬৩ লাখ ৬৯ হাজার ২০০ ডোজ। ফাউল পক্স টিকার চাহিদা ছিল ২ কোটি; উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৯৫ লাখ ৯ হাজার ৬০০ ডোজ; পিজিয়ন পক্স টিকার চাহিদা ছিল ৫০ লাখ; উৎপাদন হয়েছে ৫১ লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ ডোজ। ফাউল কলেরা টিকার চাহিদা ছিল ১ কোটি ৬০ লাখ; উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ ৬৫ হাজার ৪০০ ডোজ।
এ ছাড়া গামবোরা টিকার চাহিদা ছিল ২ কোটি ২০ লাখ ডোজ; উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি ২০ লাখ ৫ হাজার ডোজ। ডাক প্লেগের টিকার চাহিদা ছিল ৩ কোটি ৫৪ লাখ; উৎপাদন করা হয়েছে ৩ কোটি ৫৪ লাখ ২৪ হাজার ৫০০ ডোজ। মারেক্স টিকার চাহিদা ছিল ৩০ লাখ; উৎপাদিত হয়েছে ৩৫ লাখ ৪১ হাজার ডোজ। সালমোনেলা টিকা উৎপাদিত হয়েছে ২ কোটি ৬ লাখ ২৪ হাজার; তড়কা টিকা উৎপাদিত হয়েছে ৭ লাখ ৮ হাজার ৭০০; গলাফোলা টিকা উৎপাদিত হয়েছে ১০ লাখ ৫ হাজার ৯০০; বাদলা টিকার উৎপাদন হয়েছে ১১ লাখ ৬ হাজার ৮৮০; ক্ষুরারোগের টিকা উৎপাদিত হয়েছে ২৪ লাখ ১৪ হাজার ৫৬০; পিপিআর টিকা উৎপাদিত হয়েছে ৯৭ লাখ ১০ হাজার; জলাতঙ্ক (এইপি) টিকা উৎপাদিত হয়েছে ৩ হাজার ২৫; জলাতঙ্ক (এইচইপি) টিকার উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৯ ও গোট পক্স টিকার উৎপাদন হয়েছে ২৫ লাখ ডোজ।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গবাদিপশুর মধ্যে হাঁস, মুরগি, কবুতরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখিকে পাঁচ দিন বয়স থেকে টিকা দেওয়া লাগে। গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীকে ছয় মাস বয়স থেকে টিকা দেওয়া হয়। দেশে সরকারি হিসাবে যে পরিমাণ গবাদিপশু আছে এবং যে পরিমাণ টিকা উৎপাদন করা হচ্ছে, তা দিয়ে সব গবাদিপশুর টিকার চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়।
পরিচালক ড. অমলেন্দু ঘোষ বলেন, ‘দেশের চাহিদা অনুসারে আমাদের প্রতিষ্ঠান টিকা উৎপাদন করে। গত দুই অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি টিকা উৎপাদন করা হয়েছে। তারপরও আমরা দেশের সব প্রাণীকে টিকা দিতে পারি না। কারণ আমাদের টিকার স্বল্পতা ও জনবলের ঘাটতি রয়েছে। কোনো অঞ্চলে কোনো রোগ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়লে সেই অঞ্চলে ব্যাপক হারে টিকা দেওয়া হয়, যাতে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রোগটি ছড়িয়ে না পড়ে।’
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও এপিডেমিওলজি ইউনিটের প্রধান ডা. মোজাফফর গনি উসমানি জুয়েল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান গবাদিপশুর যে পরিমাণ টিকা উৎপাদন করছে, তার চেয়ে অনেক বেশি টিকা আমাদের দেশে প্রয়োজন। প্রতি বছর কত টিকা দরকার তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের টিকা উৎপাদনে সক্ষমতা বেড়েছে। সরকারিভাবে টিকা দেওয়ার পর যেটুকু বাকি থাকে তা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কাভার করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘বাণিজ্যিক গবাদিপশুর খামারিরা টিকার গুরুত্ব বোঝে। পারিবারিকভাবে যারা গবাদিপশু লালনপালন করে, তারা গুরুত্ব এতটা বোঝে না। যে বছর যে রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ে সেই বছর সেই রোগের টিকার চাহিদা বেশি থাকে। তখন সেই টিকার ক্রাইসিস দেখা দেয়। সাধারণত গরু, ছাগল, হাঁস ও মুরগি বাণিজ্যিকভাবে লালনপালন করা হয়। গবাদি পশুর মধ্যে যেসব রোগবালাই বেশি হয়, সেসবের জন্যই টিকা উৎপাদন করা হয়ে থাকে।’।
বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রতিটি ম্যাচে উত্তেজনা ছড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আরও কিছু জিনিস ছড়িয়ে যায় গ্যালারিজুড়ে, এগুলো হলো দর্শকদের ফেলে যাওয়া আবর্জনা। আধা খাওয়া খাবার, কাপ, মোড়ক কিংবা টিস্যু পেপার পড়ে থাকে এখানে-সেখানে। এবারের বিশ্বকাপেও স্বাগতিক কাতার ও ইকুয়েডরের উদ্বোধনী ম্যাচের পর আল-বায়েত স্টেডিয়ামের গ্যালারির অবস্থা এ রকম রেখেই দর্শকরা যার যার মতো বেরিয়ে যান। কিন্তু সবাই নন। কয়েকজন দর্শককে দেখা যায় গ্যালারির ভেতর ছড়ানো-ছিটানো আবর্জনাগুলো সঙ্গে থাকা বড় ব্যাগে তুলছেন। তাদের দিকে এগিয়ে যান বাহরাইনের সুপরিচিত ইউটিউবার ওমর আল-ফারুক। একজনকে জিজ্ঞেস করেন, ‘এসব কেন করছেন?’ জবাবে স্মিত হেসে সেই ফুটবলভক্ত উত্তর দেন, ‘আমরা জাপানি, আর জাপানিরা কোথাও আবর্জনা ফেলে যায় না, আমরা একটি জায়গার মর্যাদা বুঝি।’ এদিন জাপানের ফুটবল দলের খেলা না থাকলেও উদ্বোধনী ম্যাচ দেখতে মাঠে হাজির ছিলেন সামুরাই ব্লুুর ভক্তরা। ওমরের ভিডিওতে দেখা যায়, তাদের কয়েকজন গ্যালারিতে পড়ে থাকা ছোট ছোট পতাকা সযত্নে তুলছেন। তাদের একজন বলেন, ‘পতাকার প্রতি শ্রদ্ধাটাও থাকা উচিত।’
সামাজিক মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ওমরের এই ভিডিওতে অনেকেই পরিচ্ছন্নতার উদাহরণ হয়ে ওঠা সামুরাই ব্লু ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়েছে, শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। জাপানের ফুটবল দল সামুরাই ব্লু নামে পরিচিত। গত কয়েকটি বিশ্বকাপে নীল সামুরাইরা যে দেশেই খেলতে গেছে, সেখানেই দলের ভক্ত, জাপানি দর্শকরা পরিচ্ছন্নতার নজির স্থাপন করে গেছেন। ২০১৪, ২০১৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আসরে পরিচ্ছন্নতার জন্য গণমাধ্যমে আলোচনায় এসেছিল সামুরাই ব্লু এবং তাদের ভক্তরা। এসব আসরে জাপানের খেলা শেষে সমর্থকদের স্টেডিয়াম পরিষ্কার করার ঘটনা বিশ্বকে আলোড়িত করেছিল। খেলোয়াড়রাও ড্রেসিংরুম ছাড়ার আগে সেটি পরিষ্কার করে রেখেছিলেন। সে বছর জাপানিদের এই পরিচ্ছন্নতার কথা তুলে ধরে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে জাপানভিত্তিক ক্রীড়া সাংবাদিক স্কট ম্যাক্লান্টায়ার বলেছিলেন, ‘এটা কেবল জাপানি ফুটবল সংস্কৃতি নয়; বরং গোটা জাপানের সংস্কৃতি। অনেকে বলে, ফুটবল বিশ্বকাপের মতো আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসরে খেলার সঙ্গে সঙ্গে একেকটি দেশের সংস্কৃতিও প্রতিফলিত হয়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা জাপানি সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, ক্রীড়াক্ষেত্রে, বিশেষ করে ফুটবলের মাঠেও এর ব্যতিক্রম হয় না।’ তারা আসলে ফুটবল মাঠে পরিচ্ছন্নতা-সংস্কৃতির পথপ্রদর্শক, গত ফুটবল বিশ্বকাপে সেনেগালের ভক্তদেরও তাদের অনুসরণ করতে দেখা যায়।
এবার শিডিউল জটিলতার কারণে ঢাকা সফরে আসতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। তবে খুব শিগগিরই তিনি বাংলাদেশে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে টেলিফোন আলাপে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ভারত মহাসাগরীয় দেশগুলোর জোট ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) মন্ত্রিপর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে আগামীকাল বুধবার ঢাকায় আসার কথা ছিল ল্যাভরভের। প্রথমবারের মতো রাশিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এ সফরে ল্যাভরভের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতেরও কথা ছিল।
গতকাল সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, টেলিফোনে আলাপের সময় দুই মন্ত্রী বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে আলোকপাত এবং এ সম্পর্ককে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকার কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সব সময় কৃতজ্ঞতার সঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা মনে রাখবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
জাতিসংঘ ও অন্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার সহযোগিতা নিয়েও দুই মন্ত্রী কথা বলেন। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশকে সহযোগিতার জন্য রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
গাজীপুরের টঙ্গীতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত এক যুবলীগ নেতার মৃত্যুকে দুর্ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বজনদের ভাষ্য, গত রবিবার রাতে আউচপাড়ার সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি রোডে হামলার শিকার হন সাইফুল ইসলাম (৪৮) নামে ওই যুবলীগ নেতা। আহত অবস্থায় স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে সাইফুল ইসলামের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা টঙ্গী পশ্চিম থানার এসআই শুভ মন্ডল বলছেন, নিহত সাইফুলের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্নিত পাওয়া যায়নি
নিহত সাইফুল ইসলাম গাজীপুর মহানগরের টঙ্গীর ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
স্বজনরা জানান, রবিবার রাত ৮টার দিকে ব্যবসায়িক কাজে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন সাইফুল। রাত সোয়া ৮টার দিকে সফিউদ্দিন একাডেমি রোডে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজুর রহমানের বাড়ির সামনে পৌঁছালে কয়েকজন যুবক তার ওপর চড়াও হয়। তাদের হামলায় আহত সাইফুলকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় পুলিশ পাশের একটি বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। তাতে দেখা যায়, দুই যুবক মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে সাইফুলের কাছে যাচ্ছে। ঘটনাস্থলে কয়েকটি রিকশা আটকা পড়ে এবং লোকজন জড়ো হয়। ফুটেজে পথচারীদেরকে ভয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল অতিক্রম করতেও দেখা গেছে।
ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা লোকজন জানায়, ওই মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবক টঙ্গী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সদস্য। তাদের মধ্যে চালকের আসনে ছাত্রলীগ নেতা রাতুল ও পেছনের ছিটে ছাত্রলীগ নেতা তামীমকে স্থানীয়রা চিনতে পেরেছে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে রাতুলের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ছাত্রলীগ নেতা তামীম বলেন, ‘আমরা মোটরসাইকেলে যাওয়ার পথে সাইফুল ভাইয়ের সাথে দুই যুবককে তর্ক করতে দেখি। পরে আমরা মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে চলে যাই।’ সাইফুলের সঙ্গে তর্কে জড়ানো যুবকদের তিনি চিনতে পারেননি বলেও দাবি করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঘটনাস্থলের পাশের একটি দোকানের মালিক বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘সাইফুল জোরে মোটরসাইকেলের হর্ন বাজালে এক যুবক প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সাইফুল ওই যুবককে থাপ্পড় মারেন। এর প্রতিশোধ নিতে ওই যুবক ও তার সহযোগীরা সাইফুলকে মারধর করে।’
প্রতিবেশী মো. জালাল জানান, সাইফুলকে ঘটনাস্থলে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পরিচিত একজন তাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। তখন তিনি সাইফুলদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারীকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় পান এবং তার নাক দিয়ে রক্ত ও মুখ দিয়ে লালা বের হতে দেখেন। পরে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা একটি রিকশায় উঠিয়ে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় ঢাকা ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালটির আইসিইউতে স্থানান্তরের কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান সাইফুল। হাসপাতালে নেওয়ার সময় ওই রিকশাচালক তাদের জানান, সাইফুলকে অজ্ঞাতপরিচয় যুবকরা মারধর করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
সাইফুলের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা টঙ্গী পশ্চিম থানার এসআই শুভ ম-ল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নিহত সাইফুলের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। যে রক্তের কথা বলা হচ্ছে সেটি মুখ দিয়ে বের হওয়া পানের পিক।’
তবে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শাফি মোহাইমেন বলেন, ‘নিহতের ময়নাতদন্তকালে শরীরে আঘাতের চিহ্ন ও বুকের নিচে জমাটবদ্ধ রক্ত পাওয়া গেছে।’
নিহতের চাচাতো ভাই হাজী বাবলু বলেন, ‘পুলিশ ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল থেকে আমাদেরকে বের করে দিয়ে ঘটনাটি সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ডাক্তারি সনদ নিয়েছে।’
নিহত সাইফুল ইসলামের বড় ভাই মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। লাশ দাফন শেষে আত্মীয়স্বজনের সাথে পরামর্শ করে থানায় অভিযোগ দেব।’
ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভা প্রদেশে মাঝারি মাত্রার এক ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১৬২ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে ৫ শতাধিক। গতকাল সোমবার ঘটা এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৬। এতে প্রদেশের শত শত বাড়িঘর ধসে গেছে বলে জাভার এক কর্মকর্তা জানান। দেশটির টেলিভিশন চ্যানেল মেট্রো টিভি বলেছে, সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১টা ২০ মিনিটের দিকে পশ্চিম জাভায় এ ভূমিকম্প হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিম জাভার সিয়ানজুর অঞ্চল ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল। রাজধানী জাকার্তায়ও এই কম্পন অনুভূত হয়। আতঙ্কিত বাসিন্দারা ভবনের বাইরে নেমে আসেন। ভূমিকম্পে সিয়ানজুর শহর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখানকার স্থানীয় প্রশাসনের প্রধান হেরমান সুহেরমান স্থানীয় টেলিভিশনকে জানিয়েছেন, আহত ব্যক্তিদের অধিকাংশই ভবনের ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়ে শরীরে আঘাত পেয়েছে। টেলিভিশনগুলোর সম্প্রচারিত খবরে দেখা যায়, সিয়ানজুরে কয়েকটি ভবন একেবারে ধসে পড়েছে এবং সেগুলোর ধ্বংসাবশেষ সড়কে পড়ে আছে। সিয়ানজুর শহরের স্থানীয় প্রশাসনের মুখপাত্র আদম এএফপিকে বলেন, ভূমিকম্পে কয়েক হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ায় প্রায়ই ভূমিকম্প হয়। গত কয়েক সপ্তাহে দেশটিতে প্রায় প্রতিদিনই মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প হয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরের কল্পিত ‘রিং অব ফায়ারে’ অবস্থান হওয়ায় দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা দেখা যায়। এখানে টেকটোনিক প্লেটগুলোর সংঘর্ষ ঘটে। শুধু ইন্দোনেশিয়া নয়, ফিলিপাইন, জাপানসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় সব দেশই এ কারণে ভূমিকম্পের অত্যধিক ঝুঁকিতে আছে। ২০০৯ সালে পাদাংয়ে শক্তিশালী ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। সেই সময় প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে এক হাজার ১শ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং আহত হয় আরও অনেকে। এছাড়া ভূমিকম্পে বাড়িঘর ও বিভিন্ন স্থাপনাও ধ্বংস হয়ে যায়। ২০০৪ সালে সুমাত্রার উপকূলে ৯ দশমিক ১ মাত্রার মাত্রার ভয়াবহ একটি ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের পরপর আঘাত হানে সুনামি। তখন ওই অঞ্চলে ভূমিকম্প ও সুনামির কারণে ইন্দোনেশিয়ায় ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল।
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার বালুচর গ্রামে ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত সেতুর রেলিং ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন টানা হয়েছে। বিদ্যুৎ লাইন টানতে গিয়ে ৩৬০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুর পুরো রেলিংকে বৈদ্যুতিক খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
গত শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর একপাশে বালুচর গ্রাম ও অপর পাশে চরবালুচর গ্রাম। সেতুর পূর্বপাশের রেলিং ব্যবহার করে চলে গেছে বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন। সেতুর ওপর দিয়ে পণ্যবাহী যানবাহন ছাড়াও সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক ও ভ্যান চলাচল করছে। সেতু পারাপার হতে দেখা গেছে অসংখ্য পথচারীকে।
বিদ্যুতের লাইন টানার কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন চরবালুচর গ্রামের আলম মিয়া। তিনি জানান, উপজেলার বালুচর ইউনিয়নসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এ সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করেন। অথচ সেতুর রেলিংয়ে লোহার ক্যাপ লাগিয়ে বিদ্যুতের লাইন টানা হয়েছে। এতে পুরো সেতুই এখন বৈদ্যুতিক খুঁটিতে পরিণত হয়েছে।
অটোরিকশাচালক হোসেন মিয়া বলেন, সেতুর ওপর যানবাহন দুর্ঘটনাকবলিত হতেই পারে। তার মধ্যে রেলিংয়ের সঙ্গে বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন টানার কারণে তা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। তাছাড়া রেলিংয়ে হাত রেখেই অনেক শিশু-কিশোর চলাফেরা করে থাকে। সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যেকোনো সময়।
ধলেশ্বরী নদীর ওপর ওই সেতু নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করেছে এলজিইডি। ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সেতু নির্মাণ করা হয়। অথচ সেতু ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন টানার খবর এলজিইডি কর্তৃপক্ষই জানে না।
সিরাজদীখান উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, সেতুতে পল্লীবিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন রয়েছে, তা আমার জানা নেই। আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। যদি সেতুর ওপর দিয়ে বৈদ্যুতিক লাইন টানা হয়ে থাকে, তবে তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিরাজদীখান পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম খন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, শিগগিরই আমরা বিদ্যুতের লাইন সরিয়ে ফেলব। মুন্সীগঞ্জ পল্লীবিদ্যুতের ডিজিএম (কারিগরি) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, সেখানে বিকল্প বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন টানা হয়েছে। খুব শিগগিরই সেতু থেকে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন সরিয়ে নেওয়া হবে।
ঢাকাসহ সারা দেশে তীব্র দাবদাহ চলছে। দফায় দফায় বিদ্যুৎ থাকছে না বাসা-বাড়ি, অফিস আদালত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে।
বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে একটি মহল পরিস্থিতি ঘোলা করার চেষ্টায় আছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য এসেছে। আর ওই তথ্য পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তর নড়েচড়ে বসেছে। পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ শীর্ষ কর্তারা বৈঠক করেছেন। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সোমবার পুলিশের সব রেঞ্জ অফিস ও ইউনিট প্রধানদের কাছে বিশেষ নির্দেশনা পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
বিশেষ বার্তা পেয়ে ইউনিট প্রধান, রেঞ্জ ডিআইজি ও ৬৪ জেলার পুলিশ সুপাররা আলাদাভাবে বৈঠক করেছেন। বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তা দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছে পুলিশ।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিদ্যুতের সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে সরকার নানাভাবে চেষ্টা করছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি। এরই মধ্যে যেকোনো পরিস্থিতি এড়াতে আমরা সতর্ক আছি। বিদ্যুৎ স্টেশনগুলো নিরাপত্তার আওতায় আনা হচ্ছে। এই জন্য আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সোমবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পুলিশের সব ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও পুলিশ সুপারদের কাছে বিদ্যুৎ স্টেশনে নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি নজরদারি বাড়াতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। একটি মহল লোডশেডিংয়ের অজুহাতে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। যেসব এলাকায় বেশি বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে তারও একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
কয়েকটি জেলার পুলিশ সুপার দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন, পুলিশ সদর দপ্তরের চিঠি পাওয়ার পর আমরা বিশেষ বৈঠক করছি। এলাকায় বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে তা সত্য। এ জন্য আমরা বেশ সতর্ক আছি। বিদ্যুৎ অফিস ও স্টেশনগুলোর বিষয়ে থানার ওসিদের দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা দেশ রূপান্তরকে বলেন, লোডশেডিংয়ের অজুহাত তুলে বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে একটি বিশেষ মহল। প্রতিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাড়তি পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে থানার ওসিদের নানা দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন জেলার পুলিশ সুপাররা। এমনকি বাড়তি ফোর্সও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তা ছাড়া রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোও নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।
বিদ্যুৎ অফিসের পাশাপাশি ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তুলতে ৫০ থানার ওসিদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
খন্দকার গোলাম ফারুক দেশ রূপান্তরকে জানান, বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে যাতে কেউ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে সে জন্য আমরা সতর্ক আছি। বিদ্যুৎ স্টেশনগুলোর পাশাপাশি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো বাড়তি নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে সবাইকে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎসহ যেকোনো সমস্যা নিয়ে কোন মহল যাতে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে। আশা করি বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটবে না। তারপরও পুলিশ সতর্ক আছে।
সূত্র জানায়, লোডশেডিংকে পুঁজি করে কেউ যাতে অপ্রীতিকর কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ নিতে না পারে, সে বিষয়ে নজর রাখতে বলা হয়েছে। নির্দেশনার পর সারা দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র, বিদ্যুৎ অফিস, সাবস্টেশনসহ কেপিআই স্থাপনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের চেয়ে বৃদ্ধি করা হয়েছে। গোয়েন্দা কার্যক্রম ও পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা সমিতি বা কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকেও পুলিশকে চিঠি দিয়ে বাড়তি নিরাপত্তাও চাওয়া হয়েছে।
বছরে ৪০ কোটি ডলার পারিশ্রমিকের প্রস্তাব নিয়ে লিওনেল মেসির সংগে যোগাযোগ করছে আলো হিলাল। তারা মংগলবার চুক্তির ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে বলে জানিয়ে রেখেছে। কিন্তু মেসি তাদেরকে ২০২৪ পর্যন্ত প্রস্তাবটা পিছিয়ে দিতে বলেছেন বলে খবর দিয়েছে ফুটবল বিষয়ক ওয়েব পোর্টাল গোল ডটকম।
তবে সৌদি ক্লাব এ-ই প্রস্তাব এখনই গ্রহন না করলে আগামী বছর তা একই রকম থাকবে না বলে জানিয়েছে।
মেসি আসলে তার শৈশবের ক্লাবে আরো অন্তত এক বছর খেলতে চান। তাতে তার পারিশ্রমিক সৌদি ক্লাবের প্রস্তাবের ধারে কাছে না হলেও ক্ষতি নেই। জানা গেছে, বার্সা তাকে এক বছরে ১৩ মিলিয়েন ডলার পারিশ্রমিক প্রস্তাব করতে যাচ্ছে।
লা লিগা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়ায় মেসিকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেবে বার্সা। ধারনা করা হচ্ছে বুধ-বৃহস্পতিবারের মধ্যে এ ব্যাপারে একটা স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য নতুন অর্থবছরে (২০২৩-২৪) ৩৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে ৩৩ হাজার ৮২৫ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং জ্বালানি খাতে ৯৯৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা নতুন বাজেটে এই বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে বরাদ্দ ছিল ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে সংশোধিত বাজেটে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৭ হাজার ৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ নতুন অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ছে ৭ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বাজেট বক্তৃতায় বলেন, উৎপাদন ও বিতরণ সক্ষমতা সম্প্রসারণের ফলে দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠী বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২০০৯ সালে ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট থেকে বর্তমানে ২৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। জ্বালানির ব্যবহার বহুমুখীকরণের জন্য গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পাশাপাশি কয়লা, তরল জ্বালানি, দ্বৈত জ্বালানি, পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, রামপালে কয়লাভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিট ও পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। মাতারবাড়ীতে ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা-সুপার ক্রিটিক্যাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে মোট ১২ হাজার ৯৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৩৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন এবং ২ হাজার ৪১৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়া, ১০ হাজার ৪৪৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরও ৩৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে পাশর্^বর্তী দেশগুলো থেকে প্রায় ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে ভারত থেকে ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পাশাপাশি ঝাড়খ-ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৭৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। নেপালের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য বাংলাদেশ, ভুটান ও ভারতের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক সই হতে যাচ্ছে শিগগিরই। তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে পারব বলে আশা করছি।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ শতাংশ পরিচ্ছন্ন জ্বালানি থেকে সংগ্রহ করতে চাই। এরসঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, ৬০ লাখ সোলার সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে অফ গ্রিড এলাকায় বসবাসকারী জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে ডিজেলচালিত পাম্পের জায়গায় সৌরচালিত পাম্প স্থাপন করার অংশ হিসেবে সেচকাজে ইতিমধ্যে ২ হাজার ৫৭০টি পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৮৯৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। সর্বোপরি, রাশিয়ার সহায়তায় রূপপুরে ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।’
উৎপাদিত বিদ্যুৎ জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে গত ১৪ বছরে ৬ হাজার ৬৪৪ সার্কিট কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সঞ্চালন লাইন ১৪ হাজার ৬৪৪ কিলোমিটারে উন্নীত হয়েছে। এছাড়া বিতরণ লাইন ৩ লাখ ৬৯ হাজার থেকে ৬ লাখ ৬৯ হাজার কিলোমিটারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিদ্যুতের সিস্টেমলস ১৪ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৭ দশমিক ৭ শতাংশে। ২০৩০ সালের মধ্যে সঞ্চালন লাইনের পরিমাণ ২৮ হাজার কিলোমিটারে সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুতের অপব্যবহার রোধের লক্ষ্যে গত ৫ বছরে প্রায় ৫৩ লাখ প্রি-পেইড স্মার্ট মিটার স্থাপন করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী কামাল বলেন, ২০০৯ সালের তুলনায়, জ্বালানি তেলের মজুদ ক্ষমতা ৮ লাখ ৯৪ হাজার মেট্রিক টন থেকে বৃদ্ধি করে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ লাখ ৬০ হাজার টন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এই মজুদ ক্ষমতা ৩০ দিনের পরিবর্তে ৬০ দিনে বাড়ানোর বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি উদ্বোধন করা ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইনের মাধ্যমে আমদানি করা জ্বালানি তেল (ডিজেল) দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় এবং সৈয়দপুরে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ‘একমাত্র তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারির পরিশোধন ক্ষমতা ১৫ লাখ টন থেকে ৪৫ লাখ টনে উন্নীত করার চেষ্টা চলছে। পায়রা সমুদ্রবন্দর এলাকায় একটি বৃহৎ সমন্বিত তেল শোধনাগার স্টোরেজ ট্যাংক নির্মাণের সিদ্ধান্ত আছে। সম্প্রতি ভোলার ইলিশা গ্যাসক্ষেত্রে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুদ আবিষ্কৃত হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার সময় প্রতিদিন গ্যাসের উৎপাদন ছিল ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়ানোর পর দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ৯৮৪ মিলিয়ন ঘনফুট বেড়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে আরও ৪৬টি কূপ খনন করা হবে। এতে অতিরিক্ত ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মুস্তাফা কামাল বলেন, ‘সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন হওয়ায় আমরা বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি। ক্রমবর্ধমান জ্বালানির চাহিদা মেটাতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি এবং স্পট মার্কেট থেকেও কেনা হচ্ছে। এছাড়া কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে প্রতিদিন ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন ল্যান্ড বেইজড এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
বাজেট বক্তৃতায় আরও বলা হয়, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ১৫৮ কিলোমিটার গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের উত্তরাঞ্চল ও অন্যান্য এলাকায় ২১৪ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের কাজ চলছে। ২০২৬ সালের মধ্যে পায়রা ও ভোলা থেকে গ্যাস সঞ্চালনের জন্য আরও ৪২৫ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি অপচয় রোধে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের কাজও চলছে।
চলতি অর্থবছরের চেয়ে আগামী অর্থবছরের সামগ্রিক বাজেট আকারে ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ বড় হলেও আগামী বছরের শিক্ষা-বাজেট দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে। তবে টাকার অঙ্কে শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ৬ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা বেড়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে মোট বাজেটের ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। শুধু শিক্ষা খাত হিসাব করলে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষায় বরাদ্দ ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। টাকার অঙ্কে তা ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি। চলতি অর্থবছরে শিক্ষায় বরাদ্দ ছিল ১২ দশমিক ০১ শতাংশ বা ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা।
ইউনেস্কো, শিক্ষাবিদ বা অংশীজনরা অনেক দিন ধরেই শিক্ষায় জিডিপির কমপক্ষে ৪ শতাংশ বরাদ্দের কথা বলছেন। এটাকে তারা বরাদ্দ হিসেবে না দেখে আগামী দিনের বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে বলছেন। গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষায় বরাদ্দ ১২ শতাংশের আশপাশে ঘুরপাক খাচ্ছিল। জিডিপির হিসাবে তা ছিল ২ শতাংশের কাছাকাছি। চলতি অর্থবছরে শিক্ষা খাতে মোট বরাদ্দ জিডিপির ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২ দশমিক ০৮ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়াচ্ছে জিডিপির ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগামী বাজেটে যে লক্ষ্য ধরা হয়েছে, তার সঙ্গে শিক্ষায় বরাদ্দের সংগতি নেই। বাজেটে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছে। এজন্য দক্ষ ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠী প্রয়োজন। কিন্তু এ জনগোষ্ঠী তৈরির জন্য প্রয়োজন শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ। বরাবরের মতো এবারও শুভংকরের ফাঁকি লক্ষ করছি। শিক্ষার সঙ্গে প্রযুক্তি মিলিয়ে আকার বড় করা হলেও চলতি অর্থবছরের চেয়েও বরাদ্দ কমেছে। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নেও বাজেটে দিকনির্দেশনা দেখছি না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘শিক্ষায় জিডিপির ২ শতাংশের নিচে বরাদ্দ কাক্সিক্ষত নয়। আগামী অর্থবছরে অন্তত ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ বরাদ্দ দিলে ভালো হতো। কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষায় আরও বেশি নজর দেওয়া উচিত ছিল। সেটা আগামী অর্থবছরের বাজেটে দেখা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘আগামী বছরের বাজেটে মিড ডে মিলের জন্য বরাদ্দ রাখার কথা বলা হয়েছে, যা খুবই ভালো। যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ ও তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণে জোর দিতে হবে। শিক্ষায় বরাদ্দের সঠিক ব্যবহারের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।’
আগামী অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৩৪ হাজার ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে তা ছিল ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৪২ হাজার ৮৩৮ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ১০ হাজার ৬০২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার।
বাজেট ঘিরে প্রতি বছরই বেসরকারি শিক্ষকদের অন্যতম দাবি থাকে শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণ, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়া ও শতভাগ উৎসব-ভাতা প্রদান। নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণের প্রক্রিয়া চলমান রাখাও তাদের অন্যতম দাবি। কিন্তু সেসব বিষয়ে বাজেটে স্পষ্ট কিছু উল্লেখ নেই। তবে এমপিওভুক্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে আগামী অর্থবছরে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
স্বাস্থ্য খাতে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে এই খাতে এবার বরাদ্দ ১ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়লেও মোট বাজেটের তুলনায় তা কমেছে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে খাতটিতে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। আগামী বাজেটে তা ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সংসদে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ খাতে ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৯ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় মাত্র ১৫০ কোটি টাকা বেশি। এর মধ্যে পরিচালন ব্যয় ১৭ হাজার ২২১ কোটি টাকা ও উন্নয়ন ব্যয় ১২ হাজার ২১০ কোটি টাকা। এছাড়া স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ৮ হাজার ৬২১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই বরাদ্দ থেকেই নতুন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যয় নির্বাহ করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, এবার টাকার অঙ্কে গত বছরের তুলনায় (বর্তমান ২০২২-২৩ অর্থবছর) ১ হাজার একশ কোটির মতো বেড়েছে। কিন্তু বাজেট শেয়ারে সেটা কমেছে। সামগ্রিক বাজেটের গ্রোথ বা বৃদ্ধি ১২ শতাংশ, কিন্তু স্বাস্থ্যের বাজেটের বৃদ্ধি ৩ শতাংশ। তারমানে রাষ্ট্রীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের গুরুত্ব কমেছে। সেই কারণে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
এই স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ বলেন, এবার কমার যৌক্তিক কারণ আছে। সেটা হলো স্বাস্থ্য বিভাগের সেক্টর প্রোগ্রামে উন্নয়ন বাজেট থেকে অর্থ আসে। সেই সেক্টর প্রোগ্রাম এই অর্থবছরে শেষ হয়ে প্রস্তাবিত অর্থবছর থেকে নতুন সেক্টর প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চলমান সেক্টর প্রোগ্রাম সময়মতো বাস্তবায়ন করতে না পারায় সেটার সময় আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। এই এক বছরের জন্য নতুন বাজেট থাকে না, পুরনো বাজেট থেকেই ব্যয় করতে হয়। ফলে বরাদ্দ না বাড়িয়ে পাঁচ বছরের বাজেট যদি ছয় বছরে গিয়ে ঠেকে, তাহলে প্রতি বছর টাকা কমে যায়। মূলত এ কারণে এবার টাকা কমে গেছে।
সরকার স্বাস্থ্য খাতে এবারও কিছু থোক বরাদ্দ রাখতে পারত বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অর্থনীতির এই শিক্ষক। তিনি বলেন, কভিড ছাড়াও আমাদের অনেক জরুরি খাত আছে। এখন ডেঙ্গু চলছে। এটি ইমার্জেন্সি হয়ে যাবে। ফলে এটার জন্য যে ফান্ড দেওয়া আছে হাসপাতালে, রোগী বাড়লে সেটা দিয়ে হবে না। এরকম ইমার্জেন্সি আরও আসতে পারে। এরকম একটা থোক বরাদ্দ রাখলে স্বাস্থ্যের ইমার্জেন্সিতে সেখান থেকে ব্যয় করা যেত। কিন্তু সেটাও নেই। তার মানে কভিডের শিক্ষা থেকে আমরা কিছুই শিখিনি। প্রস্তাবিত বাজেটে সেটার প্রতিফলন নেই।
সামগ্রিকভাবে বাজেটে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবার খরচ বেড়ে যাবে বলেও মনে করছেন এই স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, এতে স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধসহ সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।
যদিও এবারের বাজেটে ওষুধ, চিকিৎসাসামগ্রী ও স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসা আরও সুলভ করার জন্য ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ, আইভি ক্যানুলা উৎপাদনের অন্যতম প্রধান উপাদান সিলিকন টিউবসহ আরও কিছু বিদ্যমান ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। তামাক জাতীয় পণ্য যেমন তরল নিকোটিন, ট্রান্সডারমাল ইউস নিকোটিন পণ্যের বিপরীতে ১৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।