
ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভা প্রদেশে মাঝারি মাত্রার এক ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১৬২ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে ৫ শতাধিক। গতকাল সোমবার ঘটা এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৬। এতে প্রদেশের শত শত বাড়িঘর ধসে গেছে বলে জাভার এক কর্মকর্তা জানান। দেশটির টেলিভিশন চ্যানেল মেট্রো টিভি বলেছে, সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১টা ২০ মিনিটের দিকে পশ্চিম জাভায় এ ভূমিকম্প হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিম জাভার সিয়ানজুর অঞ্চল ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল। রাজধানী জাকার্তায়ও এই কম্পন অনুভূত হয়। আতঙ্কিত বাসিন্দারা ভবনের বাইরে নেমে আসেন। ভূমিকম্পে সিয়ানজুর শহর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখানকার স্থানীয় প্রশাসনের প্রধান হেরমান সুহেরমান স্থানীয় টেলিভিশনকে জানিয়েছেন, আহত ব্যক্তিদের অধিকাংশই ভবনের ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়ে শরীরে আঘাত পেয়েছে। টেলিভিশনগুলোর সম্প্রচারিত খবরে দেখা যায়, সিয়ানজুরে কয়েকটি ভবন একেবারে ধসে পড়েছে এবং সেগুলোর ধ্বংসাবশেষ সড়কে পড়ে আছে। সিয়ানজুর শহরের স্থানীয় প্রশাসনের মুখপাত্র আদম এএফপিকে বলেন, ভূমিকম্পে কয়েক হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ায় প্রায়ই ভূমিকম্প হয়। গত কয়েক সপ্তাহে দেশটিতে প্রায় প্রতিদিনই মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প হয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরের কল্পিত ‘রিং অব ফায়ারে’ অবস্থান হওয়ায় দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা দেখা যায়। এখানে টেকটোনিক প্লেটগুলোর সংঘর্ষ ঘটে। শুধু ইন্দোনেশিয়া নয়, ফিলিপাইন, জাপানসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় সব দেশই এ কারণে ভূমিকম্পের অত্যধিক ঝুঁকিতে আছে। ২০০৯ সালে পাদাংয়ে শক্তিশালী ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। সেই সময় প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে এক হাজার ১শ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং আহত হয় আরও অনেকে। এছাড়া ভূমিকম্পে বাড়িঘর ও বিভিন্ন স্থাপনাও ধ্বংস হয়ে যায়। ২০০৪ সালে সুমাত্রার উপকূলে ৯ দশমিক ১ মাত্রার মাত্রার ভয়াবহ একটি ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের পরপর আঘাত হানে সুনামি। তখন ওই অঞ্চলে ভূমিকম্প ও সুনামির কারণে ইন্দোনেশিয়ায় ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল।
গবাদিপশুর টিকা উৎপাদনে রেকর্ড হয়েছে। আগের রেকর্ড ভেঙে গত অর্থবছরে (২০২১-২২) ৩২ কোটির বেশি টিকা উৎপাদন করেছে সরকারের প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান। আগের অর্থবছরে টিকা উৎপাদন করতে পেরেছিল ৩১ কোটির কিছু বেশি। প্রতিষ্ঠার পর প্রতিষ্ঠানটি কোনো অর্থবছরেই এত টিকা উৎপাদন করতে পারেনি।
প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, গবাদিপশুর ১৭ ধরনের টিকা উৎপাদন করা হচ্ছে। গরু, ছাগল, মহিষ, হাঁস, মুরগি প্রভৃতি পশুপাখির বিভিন্ন রোগের জন্য আরডিভি, বিসিআরডিভি, ফাউল পক্স, পিজিয়ন পক্স, ফাউল কলেরা, গামবোরা, ডাক-প্লেগ, মারেক্স, সালমোনেলা, তড়কা, গলাফোলা, বাদলা, ক্ষুরারোগ, পিপিআর, জলাতঙ্ক (এইপি), জলাতঙ্ক (এইচইপি) ও গোটপক্স টিকা প্রয়োগ করে সাফল্যও পাওয়া গেছে।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, প্রত্যেক উপজেলা থেকে টিকার চাহিদা আসে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সেই চাহিদা মূল্যায়ন করে রাজধানীর মহাখালীর প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পাঠায়। প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান টিকা উৎপাদন করে পূর্বনির্ধারিত চাহিদা অনুসারে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে।
প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক ড. অমলেন্দু ঘোষ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গবাদিপশুর ১৭ ধরনের টিকা উৎপাদন করে প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান। আমাদের গবেষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরলস প্রচেষ্টার ফলে এ পরিমাণ উৎপাদন হয়েছে। টিকার উৎপাদন কীভাবে আরও বাড়ানো যায় সেই লক্ষ্যে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে গবাদিপশুর টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩২ কোটি ডোজ; টিকা উৎপাদিত হয়েছে ৩২ কোটি ৪ লাখ ৭২ হাজার ২৭৪ ডোজ। ২০২০-২১ অর্থবছরে টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮ কোটি ৫০ লাখ; উৎপাদিত হয়েছে ৩১ কোটি ২ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৭ ডোজ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮ কোটি ৫০ লাখ; উৎপাদিত হয়েছে ২৭ কোটি ৭৪ লাখ ৮৪ হাজার ১৮০ ডোজ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭ কোটি; উৎপাদিত হয়েছে ২৭ কোটি ২৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬৯৮ ডোজ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ কোটি ২০ লাখ; উৎপাদিত হয়েছে ২৪ কোটি ৬২ লাখ ৬৩ হাজার ৫১ ডোজ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ কোটি ১৭ লাখ ৮৮ হাজার; উৎপাদিত হয়েছে ২৫ কোটি ৩৭ লাখ ৩৩ হাজার ৪৬০ ডোজ।
প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৭ ধরনের টিকা উৎপাদিত হয়েছে ৩২ কোটি ৪ লাখ ৭২ হাজার ২৭৪ ডোজ। আরডিভি টিকার চাহিদা ছিল ৮ কোটি ৭০ লাখ; উৎপাদিত হয়েছে ৮ কোটি ৭০ লাখ ৪ হাজার ৫০০ ডোজ। বিসিআরডিভি টিকার চাহিদা ছিল ১০ কোটি; উৎপাদন হয়েছে ১০ কোটি ৬৩ লাখ ৬৯ হাজার ২০০ ডোজ। ফাউল পক্স টিকার চাহিদা ছিল ২ কোটি; উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৯৫ লাখ ৯ হাজার ৬০০ ডোজ; পিজিয়ন পক্স টিকার চাহিদা ছিল ৫০ লাখ; উৎপাদন হয়েছে ৫১ লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ ডোজ। ফাউল কলেরা টিকার চাহিদা ছিল ১ কোটি ৬০ লাখ; উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ ৬৫ হাজার ৪০০ ডোজ।
এ ছাড়া গামবোরা টিকার চাহিদা ছিল ২ কোটি ২০ লাখ ডোজ; উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি ২০ লাখ ৫ হাজার ডোজ। ডাক প্লেগের টিকার চাহিদা ছিল ৩ কোটি ৫৪ লাখ; উৎপাদন করা হয়েছে ৩ কোটি ৫৪ লাখ ২৪ হাজার ৫০০ ডোজ। মারেক্স টিকার চাহিদা ছিল ৩০ লাখ; উৎপাদিত হয়েছে ৩৫ লাখ ৪১ হাজার ডোজ। সালমোনেলা টিকা উৎপাদিত হয়েছে ২ কোটি ৬ লাখ ২৪ হাজার; তড়কা টিকা উৎপাদিত হয়েছে ৭ লাখ ৮ হাজার ৭০০; গলাফোলা টিকা উৎপাদিত হয়েছে ১০ লাখ ৫ হাজার ৯০০; বাদলা টিকার উৎপাদন হয়েছে ১১ লাখ ৬ হাজার ৮৮০; ক্ষুরারোগের টিকা উৎপাদিত হয়েছে ২৪ লাখ ১৪ হাজার ৫৬০; পিপিআর টিকা উৎপাদিত হয়েছে ৯৭ লাখ ১০ হাজার; জলাতঙ্ক (এইপি) টিকা উৎপাদিত হয়েছে ৩ হাজার ২৫; জলাতঙ্ক (এইচইপি) টিকার উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৯ ও গোট পক্স টিকার উৎপাদন হয়েছে ২৫ লাখ ডোজ।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গবাদিপশুর মধ্যে হাঁস, মুরগি, কবুতরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখিকে পাঁচ দিন বয়স থেকে টিকা দেওয়া লাগে। গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীকে ছয় মাস বয়স থেকে টিকা দেওয়া হয়। দেশে সরকারি হিসাবে যে পরিমাণ গবাদিপশু আছে এবং যে পরিমাণ টিকা উৎপাদন করা হচ্ছে, তা দিয়ে সব গবাদিপশুর টিকার চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়।
পরিচালক ড. অমলেন্দু ঘোষ বলেন, ‘দেশের চাহিদা অনুসারে আমাদের প্রতিষ্ঠান টিকা উৎপাদন করে। গত দুই অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি টিকা উৎপাদন করা হয়েছে। তারপরও আমরা দেশের সব প্রাণীকে টিকা দিতে পারি না। কারণ আমাদের টিকার স্বল্পতা ও জনবলের ঘাটতি রয়েছে। কোনো অঞ্চলে কোনো রোগ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়লে সেই অঞ্চলে ব্যাপক হারে টিকা দেওয়া হয়, যাতে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রোগটি ছড়িয়ে না পড়ে।’
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও এপিডেমিওলজি ইউনিটের প্রধান ডা. মোজাফফর গনি উসমানি জুয়েল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান গবাদিপশুর যে পরিমাণ টিকা উৎপাদন করছে, তার চেয়ে অনেক বেশি টিকা আমাদের দেশে প্রয়োজন। প্রতি বছর কত টিকা দরকার তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের টিকা উৎপাদনে সক্ষমতা বেড়েছে। সরকারিভাবে টিকা দেওয়ার পর যেটুকু বাকি থাকে তা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কাভার করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘বাণিজ্যিক গবাদিপশুর খামারিরা টিকার গুরুত্ব বোঝে। পারিবারিকভাবে যারা গবাদিপশু লালনপালন করে, তারা গুরুত্ব এতটা বোঝে না। যে বছর যে রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ে সেই বছর সেই রোগের টিকার চাহিদা বেশি থাকে। তখন সেই টিকার ক্রাইসিস দেখা দেয়। সাধারণত গরু, ছাগল, হাঁস ও মুরগি বাণিজ্যিকভাবে লালনপালন করা হয়। গবাদি পশুর মধ্যে যেসব রোগবালাই বেশি হয়, সেসবের জন্যই টিকা উৎপাদন করা হয়ে থাকে।’।
বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রতিটি ম্যাচে উত্তেজনা ছড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আরও কিছু জিনিস ছড়িয়ে যায় গ্যালারিজুড়ে, এগুলো হলো দর্শকদের ফেলে যাওয়া আবর্জনা। আধা খাওয়া খাবার, কাপ, মোড়ক কিংবা টিস্যু পেপার পড়ে থাকে এখানে-সেখানে। এবারের বিশ্বকাপেও স্বাগতিক কাতার ও ইকুয়েডরের উদ্বোধনী ম্যাচের পর আল-বায়েত স্টেডিয়ামের গ্যালারির অবস্থা এ রকম রেখেই দর্শকরা যার যার মতো বেরিয়ে যান। কিন্তু সবাই নন। কয়েকজন দর্শককে দেখা যায় গ্যালারির ভেতর ছড়ানো-ছিটানো আবর্জনাগুলো সঙ্গে থাকা বড় ব্যাগে তুলছেন। তাদের দিকে এগিয়ে যান বাহরাইনের সুপরিচিত ইউটিউবার ওমর আল-ফারুক। একজনকে জিজ্ঞেস করেন, ‘এসব কেন করছেন?’ জবাবে স্মিত হেসে সেই ফুটবলভক্ত উত্তর দেন, ‘আমরা জাপানি, আর জাপানিরা কোথাও আবর্জনা ফেলে যায় না, আমরা একটি জায়গার মর্যাদা বুঝি।’ এদিন জাপানের ফুটবল দলের খেলা না থাকলেও উদ্বোধনী ম্যাচ দেখতে মাঠে হাজির ছিলেন সামুরাই ব্লুুর ভক্তরা। ওমরের ভিডিওতে দেখা যায়, তাদের কয়েকজন গ্যালারিতে পড়ে থাকা ছোট ছোট পতাকা সযত্নে তুলছেন। তাদের একজন বলেন, ‘পতাকার প্রতি শ্রদ্ধাটাও থাকা উচিত।’
সামাজিক মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ওমরের এই ভিডিওতে অনেকেই পরিচ্ছন্নতার উদাহরণ হয়ে ওঠা সামুরাই ব্লু ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়েছে, শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। জাপানের ফুটবল দল সামুরাই ব্লু নামে পরিচিত। গত কয়েকটি বিশ্বকাপে নীল সামুরাইরা যে দেশেই খেলতে গেছে, সেখানেই দলের ভক্ত, জাপানি দর্শকরা পরিচ্ছন্নতার নজির স্থাপন করে গেছেন। ২০১৪, ২০১৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আসরে পরিচ্ছন্নতার জন্য গণমাধ্যমে আলোচনায় এসেছিল সামুরাই ব্লু এবং তাদের ভক্তরা। এসব আসরে জাপানের খেলা শেষে সমর্থকদের স্টেডিয়াম পরিষ্কার করার ঘটনা বিশ্বকে আলোড়িত করেছিল। খেলোয়াড়রাও ড্রেসিংরুম ছাড়ার আগে সেটি পরিষ্কার করে রেখেছিলেন। সে বছর জাপানিদের এই পরিচ্ছন্নতার কথা তুলে ধরে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে জাপানভিত্তিক ক্রীড়া সাংবাদিক স্কট ম্যাক্লান্টায়ার বলেছিলেন, ‘এটা কেবল জাপানি ফুটবল সংস্কৃতি নয়; বরং গোটা জাপানের সংস্কৃতি। অনেকে বলে, ফুটবল বিশ্বকাপের মতো আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসরে খেলার সঙ্গে সঙ্গে একেকটি দেশের সংস্কৃতিও প্রতিফলিত হয়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা জাপানি সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, ক্রীড়াক্ষেত্রে, বিশেষ করে ফুটবলের মাঠেও এর ব্যতিক্রম হয় না।’ তারা আসলে ফুটবল মাঠে পরিচ্ছন্নতা-সংস্কৃতির পথপ্রদর্শক, গত ফুটবল বিশ্বকাপে সেনেগালের ভক্তদেরও তাদের অনুসরণ করতে দেখা যায়।
এবার শিডিউল জটিলতার কারণে ঢাকা সফরে আসতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। তবে খুব শিগগিরই তিনি বাংলাদেশে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে টেলিফোন আলাপে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ভারত মহাসাগরীয় দেশগুলোর জোট ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) মন্ত্রিপর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে আগামীকাল বুধবার ঢাকায় আসার কথা ছিল ল্যাভরভের। প্রথমবারের মতো রাশিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এ সফরে ল্যাভরভের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতেরও কথা ছিল।
গতকাল সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, টেলিফোনে আলাপের সময় দুই মন্ত্রী বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে আলোকপাত এবং এ সম্পর্ককে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকার কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সব সময় কৃতজ্ঞতার সঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা মনে রাখবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
জাতিসংঘ ও অন্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার সহযোগিতা নিয়েও দুই মন্ত্রী কথা বলেন। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশকে সহযোগিতার জন্য রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
গাজীপুরের টঙ্গীতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত এক যুবলীগ নেতার মৃত্যুকে দুর্ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বজনদের ভাষ্য, গত রবিবার রাতে আউচপাড়ার সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি রোডে হামলার শিকার হন সাইফুল ইসলাম (৪৮) নামে ওই যুবলীগ নেতা। আহত অবস্থায় স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে সাইফুল ইসলামের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা টঙ্গী পশ্চিম থানার এসআই শুভ মন্ডল বলছেন, নিহত সাইফুলের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্নিত পাওয়া যায়নি
নিহত সাইফুল ইসলাম গাজীপুর মহানগরের টঙ্গীর ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
স্বজনরা জানান, রবিবার রাত ৮টার দিকে ব্যবসায়িক কাজে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন সাইফুল। রাত সোয়া ৮টার দিকে সফিউদ্দিন একাডেমি রোডে বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজুর রহমানের বাড়ির সামনে পৌঁছালে কয়েকজন যুবক তার ওপর চড়াও হয়। তাদের হামলায় আহত সাইফুলকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় পুলিশ পাশের একটি বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। তাতে দেখা যায়, দুই যুবক মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে সাইফুলের কাছে যাচ্ছে। ঘটনাস্থলে কয়েকটি রিকশা আটকা পড়ে এবং লোকজন জড়ো হয়। ফুটেজে পথচারীদেরকে ভয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল অতিক্রম করতেও দেখা গেছে।
ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা লোকজন জানায়, ওই মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবক টঙ্গী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সদস্য। তাদের মধ্যে চালকের আসনে ছাত্রলীগ নেতা রাতুল ও পেছনের ছিটে ছাত্রলীগ নেতা তামীমকে স্থানীয়রা চিনতে পেরেছে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে রাতুলের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ছাত্রলীগ নেতা তামীম বলেন, ‘আমরা মোটরসাইকেলে যাওয়ার পথে সাইফুল ভাইয়ের সাথে দুই যুবককে তর্ক করতে দেখি। পরে আমরা মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে চলে যাই।’ সাইফুলের সঙ্গে তর্কে জড়ানো যুবকদের তিনি চিনতে পারেননি বলেও দাবি করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঘটনাস্থলের পাশের একটি দোকানের মালিক বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘সাইফুল জোরে মোটরসাইকেলের হর্ন বাজালে এক যুবক প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সাইফুল ওই যুবককে থাপ্পড় মারেন। এর প্রতিশোধ নিতে ওই যুবক ও তার সহযোগীরা সাইফুলকে মারধর করে।’
প্রতিবেশী মো. জালাল জানান, সাইফুলকে ঘটনাস্থলে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পরিচিত একজন তাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। তখন তিনি সাইফুলদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারীকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় পান এবং তার নাক দিয়ে রক্ত ও মুখ দিয়ে লালা বের হতে দেখেন। পরে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা একটি রিকশায় উঠিয়ে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় ঢাকা ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালটির আইসিইউতে স্থানান্তরের কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান সাইফুল। হাসপাতালে নেওয়ার সময় ওই রিকশাচালক তাদের জানান, সাইফুলকে অজ্ঞাতপরিচয় যুবকরা মারধর করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
সাইফুলের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা টঙ্গী পশ্চিম থানার এসআই শুভ ম-ল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নিহত সাইফুলের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। যে রক্তের কথা বলা হচ্ছে সেটি মুখ দিয়ে বের হওয়া পানের পিক।’
তবে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শাফি মোহাইমেন বলেন, ‘নিহতের ময়নাতদন্তকালে শরীরে আঘাতের চিহ্ন ও বুকের নিচে জমাটবদ্ধ রক্ত পাওয়া গেছে।’
নিহতের চাচাতো ভাই হাজী বাবলু বলেন, ‘পুলিশ ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল থেকে আমাদেরকে বের করে দিয়ে ঘটনাটি সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ডাক্তারি সনদ নিয়েছে।’
নিহত সাইফুল ইসলামের বড় ভাই মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। লাশ দাফন শেষে আত্মীয়স্বজনের সাথে পরামর্শ করে থানায় অভিযোগ দেব।’
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার বালুচর গ্রামে ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত সেতুর রেলিং ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন টানা হয়েছে। বিদ্যুৎ লাইন টানতে গিয়ে ৩৬০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুর পুরো রেলিংকে বৈদ্যুতিক খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
গত শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর একপাশে বালুচর গ্রাম ও অপর পাশে চরবালুচর গ্রাম। সেতুর পূর্বপাশের রেলিং ব্যবহার করে চলে গেছে বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন। সেতুর ওপর দিয়ে পণ্যবাহী যানবাহন ছাড়াও সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক ও ভ্যান চলাচল করছে। সেতু পারাপার হতে দেখা গেছে অসংখ্য পথচারীকে।
বিদ্যুতের লাইন টানার কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন চরবালুচর গ্রামের আলম মিয়া। তিনি জানান, উপজেলার বালুচর ইউনিয়নসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এ সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করেন। অথচ সেতুর রেলিংয়ে লোহার ক্যাপ লাগিয়ে বিদ্যুতের লাইন টানা হয়েছে। এতে পুরো সেতুই এখন বৈদ্যুতিক খুঁটিতে পরিণত হয়েছে।
অটোরিকশাচালক হোসেন মিয়া বলেন, সেতুর ওপর যানবাহন দুর্ঘটনাকবলিত হতেই পারে। তার মধ্যে রেলিংয়ের সঙ্গে বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন টানার কারণে তা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। তাছাড়া রেলিংয়ে হাত রেখেই অনেক শিশু-কিশোর চলাফেরা করে থাকে। সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যেকোনো সময়।
ধলেশ্বরী নদীর ওপর ওই সেতু নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করেছে এলজিইডি। ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সেতু নির্মাণ করা হয়। অথচ সেতু ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন টানার খবর এলজিইডি কর্তৃপক্ষই জানে না।
সিরাজদীখান উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, সেতুতে পল্লীবিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন রয়েছে, তা আমার জানা নেই। আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। যদি সেতুর ওপর দিয়ে বৈদ্যুতিক লাইন টানা হয়ে থাকে, তবে তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিরাজদীখান পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম খন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, শিগগিরই আমরা বিদ্যুতের লাইন সরিয়ে ফেলব। মুন্সীগঞ্জ পল্লীবিদ্যুতের ডিজিএম (কারিগরি) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, সেখানে বিকল্প বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন টানা হয়েছে। খুব শিগগিরই সেতু থেকে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন সরিয়ে নেওয়া হবে।
ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়েই চলছে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান। নেতৃত্ব পরিবর্তন হয়েছে, তারপরও যেন ভাগ্যটা ফেরানো যাচ্ছিল না। পরাশক্তির তকমাটা খসে যায় গেল এক যুগে। লিগ শিরোপা তাদের কাছে শুধুই মরীচিকা। সাদা-কালোদের কাছে টুর্নামেন্টের শিরোপাও দূর আকাশের তারায় রূপ নিয়েছিল। সেখান থেকে মোহামেডানকে বলতে গেলে একাই শিরোপার স্বাদ দিয়েছেন ‘ঘরের ছেলে’ সুলেমান দিয়াবাতে। মালির এই স্ট্রাইকার টানা পাঁচ মৌসুম ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন মাঝারি মানের মোহামেডানকে। তার জাদুতে গতকাল ফেডারেশন কাপের মহা-ফাইনালে আবাহনীকে হারিয়েছে সাদা-কালোরা। এই অর্জন এসেছে অনেক অপেক্ষার পর। তাই তো এই শিরোপাকে মোহামেডানের ঘুরে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন দিয়াবাতেও। বিশ্বাস করেন, এই শিরোপা বদলে দেবে মোহামেডানের চিন্তাধারাকে।
টাইব্রেকারে শিরোপা জয়ের পর ড্রেসিং রুমে সতীর্থদের হুল্লোড়ের মধ্যে ম্যাচসেরা, টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার নিয়ে এক কোনায় বসে দেশে পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন দিয়াবাতে। সেই ফাঁকেই সাংবাদিকদের কাছে জানালেন প্রতিক্রিয়া, ‘পেনাল্টি শুটআউটের আগ পর্যন্ত ম্যাচটা ভীষণ কঠিন ছিল আমাদের জন্য। আল্লাহ আমাদের সহায়তা করেছেন এই ট্রফিটি জিততে। তাই আমি অনেক খুশি। আমার ক্যারিয়ারে কোনো ফাইনালে প্রথমবারের মতো চার গোল করলাম। তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।’ দিয়াবাতে বলেন, ‘৯ বছর পর আমি একা নই, সব খেলোয়াড় মিলে মোহামেডানকে একটা শিরোপা এনে দিয়েছি। বিশ্বাস ছিল ম্যাচে ফিরতে পারলে আমরাই শিরোপা জিতব, সেটাই হয়েছে। আমি এই অর্জন মালিতে থাকা আমার পরিবার, বিশেষ করে আমার মাকে উৎসর্গ করছি।’ শিরোপাটা মোহামেডানের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ আলফাজ আহমেদের জন্যও বিশেষ অর্জন। ফুটবল ক্যারিয়ারে অসংখ্য আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ খেলেছেন এবং জিতেছেন। তবে এই জয়টাকে আলাদা করে রাখছেন তিনি, ‘আজকের খেলাটা অনেক বড় অর্জন। ব্যাকফুটে থেকে ফিরে আসা, ম্যাচ দেখে বোঝা যাচ্ছিল না কে জিতবে। দিয়াবাতে আসাধারণ ফুটবল খেলেছে। মুজাফ্ফারভের হাত ভেঙে দিয়েছিল, ওই অবস্থায়ও সে খেলা চালিয়ে গেছে। খেলোয়াড়দের কমিটম্যান্ট ছিল অসাধারণ। খেলোয়াড় হিসেবে আমি শিরোপা জিতেছি, এবার কোচ হিসেবে শীর্ষ পর্যায়ে প্রথম শিরোপা জিতলাম। তাই শিরোপাটাকেই আমি এগিয়ে রাখব।’ প্রথমার্ধে ২ গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও হাল ছাড়েননি আলফাজ। শিষ্যদের শিখিয়েছেন মাথা ঠান্ডা রেখে পাল্টা জবাব দেওয়ার মন্ত্র, ‘প্রথমার্ধের খেলা শেষে শিষ্যদের বলেছি, তোমরা মাথা ঠা-া রেখে খেলো। তারা সেটাই করেছে।’
চোটে পড়ে মাঠ ছাড়া গোলকিপার সুজন সতীর্থ বিপুকে টাইব্রেকারে দারুণ পারফরম্যান্সের জন্য প্রশংসায় ভাসিয়েছেন, ‘মাঠ ছাড়ার এক মিনিটের মধ্যে আবাহনী যখন গোল পরিশোধ করল, তখন ভীষণ খারাপ লাগছিল। মনে হচ্ছিল আমরা আর পারব না। তবে আমার ধারণা ভুল প্রমাণ করেছে বিপু। আমি তাই অনেক বেশি খুশি।’
বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশের প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম উম্মাহকে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে তাদের সন্তানদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার ক্ষেত্রে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) ক্যাম্পাসে ৩৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য আরও বেশি পরিমাণে বিনিয়োগ করতে হবে।’
মুসলমানদের যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়নে যথাযথভাবে এই সম্পদ ব্যবহার করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা এটা করতে পারব।’ তিনি আরও বলেন, ‘যখনই আমি ওআইসি সদস্য দেশে যাই, তাদের আমি এই অনুরোধই করি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘ইসলামের স্বর্ণযুগে বিশ^সভ্যতা, বিজ্ঞান, ইতিহাস, সাহিত্য, দর্শন, রসায়ন, গণিত, চিকিৎসা, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূগোলসহ জ্ঞানের আরও অনেক শাখায় মুসলিম স্কলারদের ব্যাপক অবদান রয়েছে, যা আমাদের মুসলিমদের ঐতিহ্যের গৌরবময় ইতিহাস গড়েছে। সেই যুগের মুসলিম স্কলাররা সংস্কৃতি, জ্ঞান অর্জন, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং সমসাময়িক সাহিত্যে বিশে^ আধিপত্য বিস্তার করেছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেই অবস্থান থেকে বর্তমানে মুসলিম উম্মাহর এই পিছিয়ে থাকার কারণগুলো আমাদের বিশ্লেষণ করা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির অভাব, জ্ঞান-বিজ্ঞানের অভাব এবং অন্য অনেক বিষয় মুসলিম উম্মাহর পতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি এই হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের মুসলিম উম্মাহকে মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি মুসলিম দেশগুলোকে, বিশেষ করে তাদের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও বিজ্ঞান এবং আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, আধুনিক যুগে মুসলিমরা মাত্র তিনটি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে এটাই এই আধুনিক যুগে গবেষণা, প্রযুক্তি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহর অবদানের প্রকৃত উদাহরণ। তিনি অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, ‘মুসলিম জাতির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে জোরালো প্রচেষ্টা প্রয়োজন, যাতে করে তারা এ ক্ষেত্রে আরও অবদান রাখতে পারেন।’
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব দ্বারা উপস্থাপিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া উচিত নয়; বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিকস, ইন্টারনেট অব থিংস, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ও অন্যান্য খাতে।
ওআইসির মহাসচিব ও ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) চ্যান্সেলর হিসেন ব্রাহিম তাহার সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন আইইউটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনিও বক্তব্য দেন।
সমাবর্তনে ২০২১ এবং ২০২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের স্নাতক, মাস্টার্স, পিএইচডি এবং ডিপ্লোমা ডিগ্রি দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অসামান্য ফলাফলের জন্য দুই ধরনের স্বর্ণপদক আইইউটি স্বর্ণপদক এবং ওআইসি স্বর্ণপদক দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আইইউটির ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তার অর্থায়নে আইইউটির নবনির্মিত মহিলা হলেরও উদ্বোধন করেন।।
ক্রেডিট কার্ড একটি লাইফস্টাইল পণ্য। বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যাংক এখন ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করছে। বাংলাদেশে ইস্যুকৃত মোট ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ২২ লাখ কিন্তু একক (ইউনিক) গ্রাহক সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম। ক্রেডিট কার্ড পুরোপুরি জামানতবিহীন পার্সোনাল ঋণ হলেও ঋণ পরিশোধের হার খুব সন্তোষজনক। গ্রাহক পর্যায়ে একটি ক্রেডিট কার্ড দিতে গেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী বেশ কিছু অত্যাবশ্যক কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। এটিকে ঋণ হিসেবে না দেখে লাইফস্টাইল পণ্য হিসেবে দেখে এর আবশ্যকীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা কিছুটা শিথিল করা হলে ক্রেডিট কার্ড ব্যাপ্তি অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। তখন নিম্ন আয়ের মানুষরাও ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন, যা ক্যাশলেস সোসাইটি গঠনের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করবে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা দ্রুতগতিতে ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনে রূপান্তরিত হচ্ছে। ক্যাশলেস বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেনে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে যেমন পিওএস, এটিএম, সিআরএম, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, কিউআর কোড ইত্যাদি। বিগত বছরগুলোতে ডিজিটাল লেনদেনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২১ সালের মার্চ মাসে ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং ই-কমার্সের মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার কোটি টাকা, ২০২২ সালে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩১ হাজার কোটি টাকা এবং ২০২৩ সালের মার্চ মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। তাই বলা যায়, প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুতগতিতে অত্যন্ত শক্তিশালীভাবে প্রথাগত আর্থিক লেনদেনের পাশাপাশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা।
তুলনামূলক কম ব্যবহারকারী
আমাদের দেশে তুলনামূলকভাবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক কম। দেশে ইস্যুকৃত ডেবিট কার্ডের সংখ্যা ৩ কোটি ১০ লাখ যেখানে ইস্যুকৃত ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা প্রায় ২২ লাখ। ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যার মধ্যে যে বড় ব্যবধান, এর প্রধান এবং অন্যতম কারণ হলো ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে কাগজপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা। এছাড়া রয়েছে ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে গ্রাহকদের প্রচলিত বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণা।
ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে হলে আগে কার্ড ব্যবহারের ইকোসিস্টেম প্রসারিত করতে হবে। কিউ-আরকোড এবং অ্যাপসভিত্তিক লেনদেন বৃদ্ধি পেলে পুরো দেশে ক্রেডিট কার্ড তথা সামগ্রিকভাবে কার্ডের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়বে।
ব্যবহারকারী কারা
ব্যাংকগুলো চাকরিজীবী এবং ব্যবসায়ী উভয় শ্রেণির গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করছে, তবে এক্ষেত্রে চাকরিজীবীদের বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ক্রেডিট কার্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ঋণের সহজলভ্যতা এবং সুবিধাজনক পরিশোধ ব্যবস্থা। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রমোশনাল অফার যেমন ইএমআই, ক্যাশব্যাক ডিসকাউন্টসহ বাই ওয়ান গেট ওয়ান, ইন্স্যুরেন্স, রিওয়ার্ড পয়েন্ট, মিট অ্যান্ড গ্রিট, লাউঞ্জ সুবিধা ইত্যাদি।
ঋণ শোধের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয়
ক্রেডিট কার্ড আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য পণ্য হয়ে উঠেছে। এটি নিতে হলে ঋণ পরিশোধের যোগ্যতার প্রমাণের সঙ্গে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণও দাখিল করতে হয়। দেশে এখন রিটার্ন জমা দেওয়ার হার বেড়েছে। সবাই প্রতি বছর তার আয়কর রিটার্ন জমা দেয়। কিন্তু অনেকে অসাবধানতাবশত আয়কর রিটার্ন জমা দেয় না। তাছাড়া অনেকের করযোগ্য আয় না থাকায় তারাও রিটার্ন জমা দেয় না। যা ক্রেডিট ইস্যু করার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও প্রভাব বিস্তার করছে বলে মনে করি।
জীবন সহজ করছে ক্রেডিট কার্ড
ক্রেডিট কার্ড আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। এটির ব্যবহারও অত্যন্ত সহজ। ক্রেডিট কার্ড বিলম্বিত বিল পরিশোধের ভিত্তিতে কাজ করে, যার অর্থ আপনি এখন আপনার প্রয়োজনে কার্ড ব্যবহার করে অর্থ ব্যয় করতে পারেন এবং পরে তা সুবিধামতো সময়ে পরিশোধ করতে পারেন। ব্যবহৃত অর্থ গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে ডেবিট হয় না। এভাবে গ্রাহক প্রতিবার তার প্রয়োজনে কার্ড ব্যবহার করতে পারেন, যা আমাদের জীবনযাত্রাকে অত্যন্ত সহজ ও সাবলীল করে তুলেছে। একজন গ্রাহক যদি নিয়মিত সঠিক সময়ে তার ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ করেন তাহলে কখনোই সেই গ্রাহক ঋণগ্রস্ত হবেন না। ব্যাংকগুলোর শক্তিশালী মনিটরিং ও রিকভারি ব্যবস্থা থাকার কারণে এই সেক্টরের খেলাপি ঋণের হার তুলনামূলক অনেক কম।
নিরাপত্তায় প্রয়োজন সচেতনতা
ডিজিটাল পেমেন্টগুলো সাধারণত বিভিন্ন ব্যবহারিক কারণে অফলাইন পেমেন্টের চেয়ে বেশি নিরাপদ। যেমন নগদ অর্থ বহনের ঝুঁকি না থাকা, চুরি, জালিয়াতির আশঙ্কা কম থাকা। ডিজিটাল লেনদেনে গ্রাহকের যে ধরনের সচেতনতা প্রয়োজন
কার্ড নম্বর, কার্ডের পেছনের ৩ সংখ্যার কার্ড ভেরিফিকেশন ভ্যালু (CVV2), ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (OTP), মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ এবং নিরাপত্তা পিন কারও সঙ্গে বিনিময় না করা।
সন্দেহজনক কোনো ওয়েবসাইটে ই-কমার্স লেনদেন থেকে বিরত থাকা ও কার্ডের তথ্য সংরক্ষণ থেকে বিরত থাকা।
সন্দেহজনক কোনো ই-মেইল অথবা এসএমএসে থাকা লিঙ্কে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকা।
সাইবার সংক্রান্ত ঝুঁকি বিবেচনায় ডিজিটাল ডিভাইসের সব সফটওয়্যার হালনাগাদ রাখা এবং নিরাপত্তা সফটওয়্যার ব্যবহার করা।
যেকোনো সন্দেহজনক লেনদেন অতিসত্বর ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ব্রাঞ্চ অথবা ব্যাংকের কল সেন্টারে অবহিত করা।
কার্ড হারানোর পরপরই ব্যাংকের কল সেন্টারে অবহিত করা।
সাধারণত, অধিকাংশ ব্যাংকই নির্দিষ্ট লেনদেনের পরিমাণের ভিত্তিতে ক্রেডিট কার্ডের বার্ষিক ফি সম্পূর্ণ বা আংশিক মওকুফ করে দিয়ে থাকে, যার ফলে এটি গ্রাহকের ওপর বাড়তি কোনো চাপ সৃষ্টি করে না। ক্রেডিট কার্ড একটি লাইফস্টাইল পণ্য, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ক্রেডিট কার্ডের সুদের হারের তুলনায় বাংলাদেশে তা অপেক্ষাকৃত অনেক কম। তবে ব্যাংকগুলো সেটেলমেন্টের দিন থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ দিন পর্যন্ত বিনাসুদে বিল পরিশোধের সুযোগ দিয়ে থাকে। তাই যদি কোনো গ্রাহক বুঝে সচেতনভাবে নিয়মিত বিল পরিশোধ করে তবে এটা কিন্তু গ্রাহকদের জন্য একটি চমৎকার সুযোগ।
গ্রাহকদের বিভিন্ন চাহিদার কথা মাথায় রেখে ব্যাংকগুলো বিভিন্ন উৎসবে নানা ধরনের অফার দিয়ে থাকে যার ফলে গ্রাহক বেশি বেশি লেনদেন করতে উদ্বুদ্ধ হয় যা ব্যবসায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এ যেন ২০২২ বিশ্বকাপের ফাইনাল! সুলেমান দিয়াবাতে যেন কিলিয়েন এমবাপ্পে। না, ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ফরাসি যুবরাজ এমবাপ্পের মতো ট্র্যাজিক হিরো হতে হয়নি দিয়াবাতেকে। হয়েছেন বিজয়ী দলের গর্বিত সেনাপতি। দুই ঐতিহ্যবাহী দল মোহামেডান ও আবাহনীর মধ্যে ফেডারেশন কাপের ফাইনালটা হয়ে উঠেছিল এক বাঁক বদলের লড়াই। যতবার আবাহনী এগিয়ে গেছে ততবারই দিয়াবাতে জ্বালিয়েছেন মোহামেডানের আশার প্রদীপ। নির্ধারিত ৯০ মিনিট ৩-৩। অতিরিক্ত সময়ে ৪-৪। আবাহনীর চার গোল চার জনের; কিন্তু মোহামেডানের চারটাই দিয়াবাতের। এরপর টাইব্রেকারের ভাগ্য পরীক্ষার শুরুটাও মালির ফরোয়ার্ডের লক্ষ্যভেদে। শেষ পর্যন্ত ভাগ্য পরীক্ষাটা ৪-২ গোলে জিতে ৯ বছর পর কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপার স্বাদ পেল মোহামেডান।
ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতে এগিয়ে ছিল আবাহনীই। তাদের সামনে প্রথমার্ধে বড্ড অগোছালো মনে হয়েছে আলফাজ শিষ্যদের। মারিও লেমস তুণের সব সেরা তীরদের জড়ো করে একাদশ সাজিয়েছিলেন। যার নেতৃত্ব দেন হাফ-ফিট রাফায়েল আগুস্তো। আক্রমণভাগে তার দুপাশে ছিলেন দানিয়েল কলিনদ্রেস ও তরুণ ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। আর ঠিক ওপরে এমেকা ওগবাহ। আকাশির আক্রমণ ঠেকাতে তখন নাজেহাল সাদা-কালোরা। উপর্যুপরি আক্রমণ থেকে আবাহনীকে ১৬ মিনিটে এগিয়ে নেন ফাহিম। কলিনদ্রেসের কাছ থেকে বল পেয়ে এমেকা ওগবাহ ডিফেন্সচেড়া পাস বাড়ান। চলন্ত বলে ফাহিমের বাঁ পায়ের শট মোহামেডান কিপার সুজন হোসেনের গ্লাভস ছুঁয়ে জালে জড়ায়। মোহামেডান অসহায়ত্বের সুযোগ ৪৩ মিনিটে কাজে লাগান কোস্টারিকার বিশ্বকাপার কলিনদ্রেস। নিজেদের অর্ধ থেকে হৃদয়ের বাড়ানো বল আয়ত্তে নিয়ে মার্কার হাসান মুরাদকে কোনো সুযোগ না দিয়ে ডান পায়ের জোরালো শটে বল দূরের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ান এই তারকা।
বিরতি থেকে মাঠে ফিরে অন্যরকম এক মোহামেডান। আলফাজ তিনটি পরিবর্তন করে মাঠে পাঠান জাফর ইকবাল, শাহরিয়ার ইমন ও আলমগীর রানাকে। তাতেই গতি পায় সাদা-কালোর আক্রমণ। ৫৬ মিনিটে ২-১ করেন দিয়াবাতে। কামরুলের ক্রস হেড করে ক্লিয়ার করতে গিয়ে ডিফেন্ডার আলমগীর মোল্লা বল দিয়ে দেন দিয়াবাতের কাছে; দুর্দান্ত সাইডভলিতে বল জালে জড়ায় দিয়াবাতে। চার মিনিট পর সমতাসূচক গোল করেন তিনি। উজবেক মিডফিল্ডার মোজাফফরভের জোরালো ভলি আবাহনী কিপার রুখলেও বাঁদিকে জাফর পেয়ে দ্রুত ক্রস ফেলেন গোলমুখে। মার্কারদের ছাপিয়ে দারুণ হেডে সোহেলকে পরাস্ত করে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন দিয়াবাতে। ৬৫ মিনিটে এমেকা ওগবাহর হেড পোস্টে লেগে ফিরলে হতাশ হতে হয় আবাহনীকে। পরের মিনিটে ডান দিক থেকে ফাহিমের শট সুজন কোনোমতে সেভ করলেও আলতো ট্যাপে গোল করে আবাহনীর লিড পুনরুদ্ধার করেন এমেকা (৩-২)। তবে ৮৩ মিনিটে কামরুলের কর্নারে দিয়াবাতে হ্যাটট্রিক করে মোহামেডানকে আবার ম্যাচে ফেরান।
অতিরিক্ত সময়ের শুরুতে দুটি অসাধারণ সেভ করেন মোহামেডান কিপার সুজন। ৯৬ মিনিটে রহমতের কর্নার ঘুরে ফিরে রাফায়েলের কাছে এলে তাতে দারুণ শট নেন। তবে সুজন ঝাঁপিয়ে তা রুখে দেন। পরের মিনিটে কলিনদ্রেসের কর্নারে আসাদুজ্জামান বাবলুর হেড ফিস্ট করে বিপদমুক্ত করে মোহামেডানকে ম্যাচে রাখেন সুজন। ১০৬ মিনিটে মোহামেডানকে পেনাল্টি উপহার দেন সোহেল। শাহরিয়ার ইমনের ঠেলে দেওয়া বল ধরতে ছুটছিলেন দিয়াবাতে। তার এক টাচে বলটা চলে যাচ্ছিল গোললাইনের বাইরে। তবে সোহেলের পা ধরে টান দিলে পড়ে যান দিয়াবাতে। পেনাল্টি থেকে সোজাসুজি শটে প্রথমবারের মতো মোহামেডানকে লিড এনে দেন দিয়াবাতে। এই ম্যাচটা সেখানেই শেষ হয়ে যেতে পারত। তবে বিধাতা যে ফাইনালের চিত্রনাট্য লিখেছেন অন্যভাবে। ম্যাচের ১১৬ মিনিটে মোহামেডানের তেকাঠীর আস্থা সুজনকে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। মাঠে এসে অপ্রস্তুত আহসান হাবিব বিপুকে পরের মিনিটেই গোল হজম করতে হয়। রয়্যালের কাছ থেকে আড়াআড়ি পাস পেয়ে বক্সের অনেক বাইরে থেকে ডানপায়ের জোরালো শটে গোল করেন এই ডিফেন্ডার। তাতে ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টিতে।
ভাগ্য পরীক্ষায় অবশ্য বিপু মোহামেডানের বিজয়ের নায়ক হয়ে ওঠেন বিপু। শুরুতেই ঠেকিয়ে দেন রাফায়েলের শট। অন্যদিকে দিয়াবাতে, আলমগীর কবির রানা, রজার দুরাতে টানা ৩ গোল করেন। আবাহনীর হয়ে এমেকা ও ইউসেফ গোল করলে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-২। এরপর মোহামেডানের শাহরিয়ার ইমনের শট সোহেল ঠেকিয়ে দিলে আবাহনীর ফেরার আশা জাগে। তবে বিপু কলিনদ্রেসের শট রুখে দিলে উত্তাল হয়ে ওঠে মোহামেডান গ্যালারি। আর কামরুল হাসান ঠিকঠাক লক্ষ্যভেদ করে অনেক চাওয়ার শিরোপা নিশ্চিত করেন মোহামেডানের।
অভিনেত্রী দর্শনা বণিক আবারও শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করবেন। যদিও কলকাতার বেশ কিছু ছবিতে পর পর কাজ করেছেন দর্শনা। তবুও শাকিব খানের সঙ্গে দর্শনার নতুন কাজকে ঘিরে শুরু হয়েছিল নানা রকমের জল্পনা। ওপার বাংলার একের পর এক সিনেমায় সই করে চলেছেন দর্শনা। কিছু দিন আগে অভিনেতা আজাদ আদরের সঙ্গে একটি ছবিতে স্বাক্ষর করেছেন নায়িকা। এরপর আবার শাকিবের সঙ্গে জুটি বাঁধতে চলেছেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি ‘দিদি নম্বর ১’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই অনুষ্ঠানেই বাংলাদেশের কাজের পরিবেশ, শাকিবের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন দর্শনা। ইদানীং কি টালিগঞ্জের থেকে ওপার বাংলায় বেশি গুরুত্ব পাচ্ছেন তিনি? দর্শনার স্পষ্ট জবাব, ‘এখানেও অনেক কাজ করছি। টালিগঞ্জের কাজের জন্যই তো বাইরে বিভিন্ন কাজের সুযোগ আসছে। দুই বাংলাই আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।’
বাংলাদেশে শাকিবের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে অনেক অভিনেতারই। সেখানে পদ্মা পাড়ের প্রথম ছবিতেই নায়ক হিসেবে পেয়েছেন তাকে। শাকিব প্রসঙ্গে দর্শনা বলেন, ‘খুবই ভালো অভিজ্ঞতা। শাকিব ওখানে এক বিশাল নাম। তবে সেটে তেমনটা কখনো মনে হয়নি।’ তবে নতুন কাজের প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে নারাজ অভিনেত্রী। এই মুহূর্তে কলকাতাতেই রয়েছেন। খুব শিগগিরই বাংলাদেশে আসছেন এমনটাই আভাস দিলেন এই নায়িকা।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।