
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র জন্মের বিরোধিতা করেছিল তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্র সরকার। আরও সুনির্দিষ্ট করে বললে বাঙালি নিধনযজ্ঞে প্রকাশ্যে ইয়াহিয়া খানের মদদদাতা ছিলেন দেশটির তৎকালীন নিক্সন প্রশাসনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা, পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার। নিক্সন-কিসিঞ্জারের শীতল যুদ্ধকালীন কেন্দ্রীয় নীতি হয়ে উঠেছিল ভারত-সোভিয়েত ইউনিয়নকে (যার সবচেয়ে প্রভাবশালী অংশ ছিল রাশিয়া) ঠেকাতে বাংলাদেশের জন্মের বিরোধিতা করা। তাই বাংলাদেশের চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক আগে পাকিস্তানকে রক্ষায় শেষ পদক্ষেপ হিসেবে একদিকে জাতিসংঘে যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব, অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরে সপ্তম নৌবহর পাঠায় কিসিঞ্জারের বুদ্ধিতে চলা নিক্সন প্রশাসন। তবে তাদের হতাশ করে ভেঙে যায় পাকিস্তান, ১৬ ডিসেম্বর মুক্ত হয় বাংলাদেশ।
মুক্তিযুদ্ধের ৫১ বছর পর এবার ইউক্রেন যুদ্ধেও আলোচনায় সেই কিসিঞ্জার। তবে যুদ্ধবাজ এই নেতা এবার বলছেন যুদ্ধ বন্ধের কথা! রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ না হলে তৃতীয় বিশ^যুদ্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। আরেকটি বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি এড়াতে ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনার এখনই সময় বলে মন্তব্য তার। এমনকি রাশিয়াকে ভাঙার স্বপ্ন পারমাণবিক বিশৃঙ্খলার জন্ম দিতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। অবশ্য কিসিঞ্জারের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পডোলিয়াক টেলিগ্রামে বলেন, ‘জনাব কিসিঞ্জার, আপনি এই যুদ্ধের প্রকৃতি এবং বিশ্ব ব্যবস্থার ওপর এই যুদ্ধের প্রভাবের কিছুই বোঝেননি।’ ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত মে মাসে দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কিসিঞ্জার। সেসময় ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার সঙ্গে রাখার পক্ষে মত দেন।
এখন যুদ্ধ বন্ধের কথা বললেও অতীতে একাধিক দেশে যুদ্ধ ও প্রাণহানিতে মদদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ৯২ বছর বয়সী এই রিপাবলিকান নেতার বিরুদ্ধে। প্রায় এক যুগ আগে ‘হেনরি কিসিঞ্জারের বিচার’ নামে একটি বই লেখেন ব্রিটিশ লেখক ক্রিস্টোফার হিচেনস। সেই বইয়ের তথ্য অনুযায়ী ষাট-সত্তর দশকে ইন্দোচীনে নিরপরাধ নাগরিকদের সুপরিকল্পিত হত্যার মদদ দেওয়া, ১৯৭৩-এ চিলির সামরিক অভ্যুত্থান ও বামপন্থি রাজনৈতিক নেতাকর্মী হত্যার নীলনকশা করা, সাইপ্রাসের আর্চবিশপ ম্যাকারিয়সের হত্যা পরিকল্পনা, পূর্ব তিমুরে ইন্দোনেশীয় সেনাবাহিনীর গণহত্যায় সাহায্য করার কালিমা লেগে আছে হেনরি কিসিঞ্জার নামটির সঙ্গে।
চট্টগ্রাম বন্দরে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধার মধ্যে এখনই ভেড়ানো যাবে বড় দৈর্ঘ্যরে জাহাজ। শুধু দৈর্ঘ্য নয়, বেশি ড্রাফটের (গভীর) জাহাজ ভেড়াতেও কোনো সমস্যা নেই। চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে গত তিন বছর ধরে গবেষণা করা যুক্তরাজ্যের বিশ^খ্যাত প্রতিষ্ঠান এইচআর ওয়ালিংফোর্ড তাদের রিপোর্টে এ সুপারিশ করেছে। আর তাদের সুপারিশ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় অনুমোদনও পেয়েছে। সেই আলোকে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে (যেখানে জাহাজ ভেড়ানো হয়) বর্তমানে সর্বোচ্চ ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো হয়ে থাকে। এর চেয়ে বড় দৈর্ঘ্যরে জাহাজ ভেড়ানো নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে আলোচনা চলছিল। সেই আলোকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্ণফুলী নদী ও চ্যানেল (যেখান দিয়ে জাহাজ চলাচল করে) নিয়ে স্টাডি করার জন্য বিশ^ব্যাপী নেভিগেশন (জাহাজ) চ্যানেল নিয়ে গবেষণা করা যুক্তরাজ্যের এইচআর ওয়ালিংফোর্ডকে দায়িত্ব দেয়। প্রতিষ্ঠানটি গত সেপ্টেম্বরে তাদের রিপোর্ট বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়।
বন্দর কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এইচআর ওয়ালিংফোর্ডকে মূলত তিনটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে দেওয়া হয়েছিল। প্রথমত ছিল বিদ্যমান অবকাঠামোতে চট্টগ্রাম বন্দরে বেশি দৈর্ঘ্যরে জাহাজ ও বেশি গভীরতার জাহাজ ভেড়ানো যাবে কি না? দ্বিতীয়ত, চট্টগ্রাম বন্দরের বিদ্যমান অবস্থায় উভয়পাড়ের কোনো স্থানকে বন্দরের জেটি বা ইয়ার্ড সংক্রান্ত কাজে ব্যবহার করা যাবে কি না? তৃতীয়ত, চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘমেয়াদিভাবে সর্বোচ্চ কত বড় দৈর্ঘ্য ও বেশি ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো যাবে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে ওয়ালিংফোর্ড ২০২০ থেকে কর্ণফুলী নদী নিয়ে গবেষণা করে এবং রিপোর্ট প্রদান করে।
রিপোর্ট প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চিফ হাইড্রোগ্রাফার এম আরিফুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ওয়ালিংফোর্ড এখনই চট্টগ্রাম বন্দরে ২০০ মিটার দীর্ঘ ও ১০ মিটার জাহাজ ভেড়ানোর সুপারিশ করেছে। অর্থাৎ আমরা চাইলে এখনই ভেড়াতে পারব। তবে বন্দরের বহির্নোঙর (সাগর ও নদীর মিলিত স্থানের কাছে), গুপ্তা বেন্ড (গুপ্তা খালের কাছের বাঁক), কাটিং বেন্ড (নৌবাহিনীর জেটির কাছের বাঁক), বাকলিয়ার চর ও সদরঘাট এলাকায় ড্রেজিং করলে সর্বোচ্চ ২২৫ মিটার দীর্ঘ ও ১১ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো যাবে।’
বন্দরের হাইড্রোগ্রাফি ও মেরিন ডিপার্টমেন্টের একাধিক কর্মকর্তা জানান, এখন ২০০ মিটার দীর্ঘ ও ১০ মিটার ড্রাফটের একটি জাহাজ পরীক্ষামূলকভাবে ভেড়ানো যেতে পারে। প্রথমে একটি জেটিতে এবং পরবর্তীকালে বাকি জেটিগুলোতে ভেড়ানোর মাধ্যমে বন্দর এ লক্ষ্যে উন্নীত হতে পারে। আর পরীক্ষামূলকভাবে সফল হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়ে দৈর্ঘ্য ও ড্রাফটের বিষয়টি জানানো হবে। আর তা জানানো হলে বিদেশি শিপিং কোম্পানিগুলো বড় জাহাজ আনবে চট্টগ্রাম বন্দরে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র ও সচিব ওমর ফারুক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ওয়ালিংফোডের রিপোর্ট আমরা গ্রহণ করেছি। এখন সেই রিপোর্টের আলোকে কখন কোন সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হবে তা পর্যায়ক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বড় দৈর্ঘ্যরে জাহাজ ও বেশি ড্রাফটের জাহাজ ভিড়লে বেশি কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ আসবে উল্লেখ করে চিটাগং চেম্বারের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডেলিং সংস্থা সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বেশি কনটেইনার নিয়ে জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়তে পারলে জাহাজের ভাড়া কমে আসবে। আর ভাড়া কমে এলে পণ্যের দামও কমে আসবে এবং ভোক্তাপর্যায়ে জনগণ এর সুবিধা পাবে।’
এ বিষয়ে বিভিন্ন শিপিং কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ ২৪০০ একক কনটেইনারবাহী জাহাজ ভিড়তে পারে। এখন দৈর্ঘ্য ২০০ মিটার ও ড্রাফট ১০ মিটারে উন্নীত করা হলে সর্বোচ্চ ৩০০০ একক কনটেইনারবাহী জাহাজ ভিড়তে পারবে। এতে জাহাজের সংখ্যা কমে আসবে এবং পণ্য হ্যান্ডেলিংয়ে আরও সহজ হবে।
হাবিবুর রহমান পলাশের উপস্থাপনায় দেশ রূপান্তর-বসুন্ধরা কিংস প্রতিদিনের কুইজ ২৭-এর পুরস্কার তুলে দেন গোল্ডেন মিডিয়ার সিইও রায়হান মাসুদ, হাইপার টেগ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিউল আলম এবং দেশ রূপান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি আশরাফুল হক
বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে বিশেষ অভিযানের ১৭ দিনে সারা দেশে ৩৩ হাজার ৪২৯টি অভিযান চালিয়ে ১৫ হাজার ৯৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একই সময়ে মামলা হয়েছে ৫ হাজার ১৩২টি। আর ওইসব মামলায় ২৩ হাজার ৯৬৮ জন অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এ সময় ২৭টি দেশি-বিদেশি অস্ত্রের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ মাদকও উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন দেশ রূপান্তরকে বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে পুলিশের ব্যাপক সফলতা রয়েছে। ওয়ারেন্ট ও তালিকাভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। তবে কাউকে হয়রানি করতে অভিযান চালানো হয়নি।
সংশ্লিষ্টরা দেশ রূপান্তরকে জানায়, গত ২৯ নভেম্বর পুলিশ সদর দপ্তরের অপারেশন শাখার এক আদেশে দেশের সব পুলিশ ইউনিটের প্রধান ও সব জেলার পুলিশ সুপারদের বিশেষ অভিযান চালাতে বলা হয়। অভিযান শুরুর পর গ্রেপ্তার করা হয় ২৩ হাজার ৯৬৮ জনকে। এর মধ্যে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী আছে ৭২ জন। উদ্ধার করা হয় ২৭টি অস্ত্র। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য। এর মধ্যে ৮৬ হাজার ৫৯২ পিস ইয়াবা, ৫ হাজার ১১৫ বোতল ফেনসিডিল, ৭ হাজার ৫৮১ কেজি গাঁজা এবং ১১৭ গ্রাম ক্রিস্টাল ম্যাথ (আইস) রয়েছে। জঙ্গি ছিনতাইয়ের পাশাপাশি ওয়ারেন্টের আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ার কারণে পুলিশের ওপর চাপ ছিল আদালতের। এ কারণে বিশেষ অভিযানে ওয়ারেন্টের আসামি গ্রেপ্তারের জন্য বেশি নজর দেওয়া হয়। শুধু ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছেই ঝুলে আছে প্রায় ৩১ হাজার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি জিআর মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ঝুলে আছে পুলিশের মিরপুর বিভাগে (৬ হাজার ৪৮৫টি)। আর সবচেয়ে কম জিআর পরোয়ানা রয়েছে উত্তরা বিভাগে (৭২টি)। সবচেয়ে বেশি সিআর পরোয়ানাও মিরপুর বিভাগে (৩৩৫টি)। আর সবচেয়ে কম সিআর পরোয়ানা তেজগাঁও বিভাগে (১৪২টি)। মোট হিসাবে সবচেয়ে বেশি পরোয়ানা ঝুলে আছে তেজগাঁও বিভাগে। এখানে মোট মুলতবি পরোয়ানার সংখ্যা ৯ হাজার ২৮০। আর সবচেয়ে কম মুলতবি পরোয়ানার সংখ্যা উত্তরা বিভাগে (৮৯২টি)।
পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা ও দুজন পুলিশ সুপার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিরা আমাদের বেশি ভোগাচ্ছে। তারা নানারকমের অপরাধের সঙ্গে জড়িত। এমনকি ওইসব অপরাধী আদালত থেকে জামিন না নিয়ে প্রকাশ্য চলাফেরা করছে বলে আমরা তথ্য পাচ্ছি। কিছু দুর্নীতিবাজ পুলিশ সদস্যের সঙ্গে তারা আঁতাত করে অপকর্ম করছে। যারা তাদের সহায়তা করছে তাদেরও চিহ্নিত করা গেছে। যেকোনো সময় তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বিভিন্ন মামলার আসামিদের পাশাপাশি অপরাধী পুলিশ সদস্যদের বিষয়েও আলোচনা হয়। যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইজিপি নির্দেশনা দিয়েছেন।
রংপুরের তারাগঞ্জে অ্যাম্বুলেন্স, অটোরিকশা ও ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষে পাঁচ জন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের ন্যাংটিছিরা ব্রিজ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। একই দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাজীপুর, গোপালগঞ্জ ও ময়মনসিংহে পৃথক পৃথক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে আরও চার জনের।
রংপুর প্রতিনিধি জানান, তারাগঞ্জে নিহতরা হলেন হাবিব উল্লা (৪৫), আজানুর রহমান (৪৪), শুকলাল বাসফোর (৫০), খাদেমুল (৩৮) ও সহিত উদ্দিন (৪)। তারা সবাই উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার পর তারাগঞ্জ থেকে ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশা প্রায় ১০ জন যাত্রী নিয়ে সৈয়দপুরের চিকলীর দিকে যাচ্ছিল। পথে ন্যাংটিছিরা ব্রিজ নামক স্থানে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অ্যাম্বুলেন্স অটোরিকশাটিকে ধাক্কায় দেয়। এ-সময় একই দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগতির ট্রাক অটোরিকশাটিকে আবারও ধাক্কা দিলে সেটি দুমড়ে-মুচড়ে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন মারা যান। পরে আহতদের উদ্ধার করে তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে রমেক হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনিও মারা যান। দুর্ঘটনার বিষয়টি দেশ রূপান্তরকে মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মাহবুব মোর্শেদ। তিনি জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করেন এবং আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, লরিচাপায় মো. আনিস (২৮) নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এ-সময় আহত হয়েছেন আরও দুজন। গতকাল সকালে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের আহরন্দ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। মো. আনিস সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের ঘাটুরা গ্রামের আমীর হোসেনের ছেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাহিদ হোসেন জানান, মোটরসাইকেলটি উল্টোপথে যাওয়ার সময় লরির সঙ্গে ধাক্কা খায়। এ-সময় এক যুবক নিহত হন।
এদিকে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে মোটরসাইকেলে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় হেদায়েত উল্যাহ (২০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন। নিহত হেদায়েত উল্যাহ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের ডোমরাকান্দি গ্রামের এনায়েত উল্যাহর ছেলে। ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে থানার এসআই সিরাজুল ইসলাম দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, গতকাল সকাল পৌনে ৮টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া কলম্বিয়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে বাসচাপায় এক পোশাক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। নিহত পোশাক শ্রমিকের নাম আইয়ুব আলী (২৬)। তিনি দিনাজপুরের খানাসামা থানার সাহাপাড়া গ্রামের মৃত আফতাব উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্থানীয় মোগড়খাল এলাকার বিসু মিয়া বাড়িতে ভাড়া থেকে গাছা এলাকায় টেক্স সোয়েটার কারখানায় চাকরি করতেন।
এদিকে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মক্তব থেকে বাড়ি ফেরার পথে অটোরিকশার চাপায় লামিয়া আক্তার (৬) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। সে উপজেলার গফরগাঁও ইউনিয়নের উথুরী গ্রামের ছুবান মিয়ার মেয়ে।
গফরগাঁও থানার ওসি ফারুক আহম্মেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপির ছেড়ে দেওয়া আসনে উপনির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর । তিনি বলেন, বিএনপির ৫ আসন শূন্য হবে এটা অপ্রত্যাশিত ছিল। তা ছাড়া এই বিষয়ে বাজেটও ধরা হয়নি। তবে নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহারে কোনো সমাধান নয় বলে মনে করেন তিনি। গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর এ কথা জানান।
বাজেটস্বল্পতায় বিএনপির ছেড়ে দেওয়ার কারণে শূন্য আসনের উপনির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, অনেক নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ছিল না, অথচ কোনো অঘটন ঘটেনি। এবার নির্বাচনে প্রতিযোগিতা হবে, এতে ব্যালান্স হবে। ফলে নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা লাগবে না। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিবি) থোক বরাদ্দ দিয়ে সিসি ক্যামেরা কেনা যায় কি না, এমন প্রশ্নে মো. আলমগীর বলেন, এটি দিয়ে কেনা সম্ভব নয়। এডিপির টাকা প্রকল্পে খরচ করা যায়। সিসি ক্যামেরা রেভিনিউয়ের টাকায় কিনতে হয়। তারপরও ভোট হতে বাকি আছে। যদি প্রয়োজন হয় তবে কমিশন বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতেও পারে।
রাজনৈতিক দল হিসেবে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার নেতৃত্বাধীন তৃণমূল বিএনপিকে নিবন্ধন দেওয়ার বিষয়ে আলমগীর বলেন, আদালতের রায় অফিশিয়ালি পেলে কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে। সব সিদ্ধান্ত কোর্টের আদেশ দেখে নিতে হবে।
২০১৮ সালের ১৪ জুন নির্বাচন কমিশন এক নোটিশের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিবন্ধনের জন্য আবেদন ও চালান জমা না দেওয়াসহ কয়েকটি কারণে তৃণমূল বিএনপিকে নিবন্ধিত না করার বিষয়টি জানালে, ওই নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন নাজমুল হুদা। পরে ১৪ আগস্ট তৃণমূল বিএনপিকে নিবন্ধন দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। এরপর ৪ নভেম্বর এ বিষয়ে রায় দেওয়া হয়। পরে এ নিয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে নির্বাচন কমিশন।
রাজধানীর সরকারি কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তার বন্ধুরা। শুক্রবার (০২ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে চানখারপুলের একটি বাসায় তার বন্ধুরা তাকে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রানার বন্ধু ইমরান হোসেন বাবু জানান, 'রানা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায়। কয়েক দিন যাবৎ রানার খু্ব মন খারাপ ছিল। একাকী থাকতে চাইত। চুপচাপ থাকত। তবে কী চিন্তা করত সে ব্যাপারে কিছু বলত না। তাই আমি তাকে বলেছিলাম- বন্ধু, তুমি কিছুদিনের জন্য কক্সবাজার ঘুরে আস।'
ঘটনার পরপরই রানার স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে রাত দেড়টার সময় সানজিদা নামে এক মেয়েকে আহাজারি করতে দেখা যায়। সানজিদা আক্তার (জান্নাতি) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
সানজিদা আক্তারের প্রতিবেশী মাইদুল ইসলাম জানান, 'সানজিদা আপুকে আমরা জান্নাতি আপু বলে ডাকি। রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে অনেকদিন আগে। রাজনৈতিক কারণে বিষয়টি জানাজানি হয়নি। জান্নাতি আপু ডেমরা রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহসভাপতি বলেন, 'আমরা জানতাম, সানজিদার সঙ্গে প্রেম ছিল। বিয়ে হয়েছিল কি-না তা সঠিক জানি না।' মৃত্যুর কারণ যা-ই হোক, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উন্মোচন করে বিচারের দাবি জানান তিনি।
রানার মৃত্যুর খবরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং তারা শোক জানান। আজ (০৩ জুন) শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ করে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রকাশিত গেজেটে কয়েকটি আসনে পরিবর্তন এসেছে।
গত বৃহস্পতিবার ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত গেজেট শনিবার (৩ জুন)বিজি প্রেসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১-এর ধারা ৬-এর উপধারা (৩)-এর অধীনে সংসদের পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার প্রাথমিক তালিকা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয় এবং ওই বিজ্ঞপ্তির অনুচ্ছেদ ৩-এর অধীন পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার বিষয়ে দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত আহ্বান করা হয়।
আরও বলা হয়, পরে নির্ধারিত সময়সূচি মোতাবেক প্রাপ্ত দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামতের ওপর কমিশন কর্তৃক প্রকাশ্য শুনানি গ্রহণ করা হয়। নির্বাচন কমিশন উক্ত আইনের ধারা ৬-এর উপধারা (৪) অনুযায়ী দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত পর্যালোচনা করে প্রাথমিক তালিকায় প্রকাশিত নির্বাচনী এলাকার প্রয়োজনীয় সংশোধন করে সংযুক্ত তপশিল মোতাবেক জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করল।
চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চাপ চাপ রক্ত, ছেঁড়া জামাকাপড়, খাবার, ব্যাগপত্র, রক্তমাখা দেহ। এসবের মাঝেই ভাঙা লাইনের উপর পাওয়া গেলো ছোপ ছোপ রক্তমাখা একটি কবিতার খাতা।
খাতায় লেখা বিভিন্ন রকমের ভালোবাসার কবিতা, মাঝে মাঝে আবার নকশাও আঁকা। হাতে নিয়ে পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল,
‘‘অল্প অল্প মেঘ থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি হয়, ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়....’’
পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল আরও একটি কবিতা। তার শুরুতে লেখা,
‘ভালোবাসা এই মন তোকে চায় সারাক্ষণ,
আছিস তুই মনের মাঝে
পাশে থাকিস সকাল সাঁঝে।
কী করে তোকে ভুলবে এই মন,
তুই যে আমার জীবন...’
কবিতাটি লেখক কে, কার জন্য এই কবিতা লিখা, তা জানার উপায় নেই। সম্ভবত, কবিতার খাতার মালিক দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটিতেই ছিলেন। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই বেশি ছিল যে, সেই কবিতার খাতা ছিটকে এসে পড়েছে ভাঙা লাইনে।
কবিতার খাতার মালিক সুস্থ, আহত না মৃত, তাও জানা সম্ভব হয়নি। যিনি লিখেছেন, তিনি পুরুষ না মহিলা তা-ও জানা সম্ভব হয়নি। তবে লেখা পড়ে বোঝা যায়, কবিতাটি প্রিয় কারও উদ্দেশে লেখা। যাঁর উদ্দেশে এই কবিতা লেখা, এই কবিতার খাতা কি তাঁর কাছেও কোনও দিন পৌঁছাবে! তাও জানার উপায় নেই।
ভারতের ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলে এই কবিতার খাতা হাতে পায় আনন্দবাজারের প্রতিনিধি। এভাবেই এক প্রতিবেদনে বর্ণনা তুলে ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির তথ্যমতে, শনিবার ভোর পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩৩। আহত ৯০০ জনের বেশি। ভেতরে এখনও আটকে আছে অনেক মানুষ।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।