
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হটানোর জন্য অতি বাম, অতি ডান মিলেমিশে একাট্টা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের তুলনায় আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ভালো আছি। বিশ্বের কোথায়ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নেই। সুতরাং সেদিকে যাওয়ার সুযোগ নেই। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ফেনী হয়ে নিজ জেলা নোয়াখালী যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত মতবিনিময়কালে এ কথা বলেছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপির মাঠে সংঘাত করে লাভ নেই। নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সরকার শুধু রুটিনওয়ার্ক করবে। নির্বাচনে সরকারের কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ থাকবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি-জামায়াতের উসকানিমূলক অপতৎপরতা, সরকার পতনের দিবাস্বপ্ন সফল হবে না। আমরা বিশ্বাস করি তারা নির্বাচনে আসবে, সব নিবন্ধিত দলকে আমরা স্বাগত জানাই।
এ-সময় তিনি রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, আমরা অশান্তি ও সংঘাত চাই না। কাউকে উসকানি দিতে চাই না। বিএনপিসহ ৩৩ দলের গণমিছিল কর্মসূচি হয়েছে। ওই ৩৩ দল ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দার অবস্থার দল। নিবন্ধিত সব দলকে আমি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য স্বাগত জানাই।
কূটনীতিকদের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জেনেভা কনভেনশনের আলোকে কূটনীতিকরা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাথা ঘামাতে পারেন না। আমরা তো কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাথা ঘামাই না। আমাদের দেশের বিষযে বলার আগে তারা নিজেদের দিকে তাকানো উচিত।
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, রংপুরের কথাটা আলাদা, সেখানে এরশাদ সাহেবের প্রভাব আছে। তাদের প্রার্থীও প্রভাবশালী। আমরা একজন নারীকে মনোনয়ন দিয়েছি। দলের অনেকে তার জন্য ভালোভাবে কাজ করেনি। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের প্রার্থী কম ভোট পেয়েছে।
শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ওবায়দুল কাদের হেলিকপ্টারযোগে ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজে অবতরণ করেন। এ সময় ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীর নেতৃত্বে প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মী রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে ওবায়দুল কাদেরকে পুষ্পমাল্য দিয়ে অভিনন্দন জানান।
২০০৯ সাল থেকে প্রাক প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের সব শিক্ষার্থীকে বছরের প্রথম দিনে উৎসবের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যের পাঠ্যবই। ইতিমধ্যে এই উৎসব সার্বজনীনে রূপ নিয়েছে। এ বছরও এর ব্যতিক্রম নয়। দেশের প্রায় প্রতিটি স্কুলেই নেওয়া হয়েছে উৎসবের প্রস্তুতি। আজ রবিবার দেওয়া হচ্ছে নতুন বই। বই উৎসবের সঙ্গে দেশে যাত্রা শুরু হচ্ছে নতুন কারিকুলামেরও।
ইতিমধ্যে গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বই উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন। আজ ঘরে ঘরে সেই উৎসব গিয়ে পৌঁছবে। এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় রাজধানীর বাইরে গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে বই উৎসবের আয়োজন করেছে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। অন্যদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বই উৎসবের আয়োজন করেছে। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। এ ছাড়া দেশের জেলা, উপজেলা ও মফস্বল পর্যায়ের সব স্কুলের উৎসবেও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেবেন।
জানতে চাইলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের কিছু বই এখনো বাকি আছে, যা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে পৌঁছে যাবে বলে আমরা আশা করছি। দেশের সব উপজেলায়ই বই পৌঁছানো হয়েছে। সব শিক্ষার্থীর হাতেই নতুন বই তুলে দেওয়া হবে। সাধারণত প্রথম দিনেই সবাই স্কুলে আসে না। তাই যারা আসবে তাদের সবাই বই পাবে। কাগজ সংকটের মধ্যেও আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি, যত বেশি সম্ভব বই স্কুলে পৌঁছানোর। আর এতে সকলেই আন্তরিক ছিলেন।’
এনসিটিবি সূত্র জানায়, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের প্রায় ৪ কোটি শিক্ষার্থীর জন্য প্রায় ৩৪ কোটি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাক প্রাথমিকে প্রায় ৬৬ লাখ ২৯ হাজার বই, প্রাথমিকে ৯ কোটি ৬৬ লাখ এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রাক-প্রাথমিক এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে ২ লাখ ১২ হাজার ১৭৭টি বই বিতরণ করা হবে। আর মাধ্যমিক স্তরে প্রায় ২৪ কোটি ৬৩ লাখ কপি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। তবে গতকাল পর্যন্ত মাধ্যমিকে প্রায় ৮০ শতাংশ এবং প্রাথমিকে প্রায় ৭১ শতাংশ বই স্কুল পর্যায়ে পৌঁছেছে।
আজ বই উৎসবের সঙ্গে দেশে যাত্রা শুরু করছে নতুন কারিকুলাম। তবে এ বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলামের বই দেওয়া হবে। ২০২৪ সালে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি এবং অষ্টম ও নবম শ্রেণি এ শিক্ষাক্রমের আওতায় আসবে। ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণি যুক্ত হবে। ২০২৬ সালে একাদশ ও ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণি যুক্ত হবে। ফলে এ বছর থেকেই শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে নতুন বই নিয়ে উৎসাহ ও কৌতূহল আগের চেয়েও বেশি।
জানা যায়, নতুন কারিকুলামে সমষ্টিক মূল্যায়নের চেয়ে শিখনকালীন মূল্যায়নে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের এত বেশি পরীক্ষায় বসতে হবে না। নতুন কারিকুলামের আওতায় ২০২৪ সাল থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বিভাগ বিভাজন উঠে যাচ্ছে। অর্থাৎ নবম শ্রেণিতে ওঠার পর একজন শিক্ষার্থীকে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগ বেছে নিতে হবে না। একজন শিক্ষার্থীকে সব বিষয়ই পড়তে হবে। একাদশ শ্রেণিতে ওঠার পর শিক্ষার্থীরা কোন বিভাগে পড়বে তা বেছে নেবে।
নতুন কারিকুলামে প্রাথমিকে পড়তে হবে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, ধর্মশিক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং শিল্পকলা। মাধ্যমিকে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ধর্মশিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ে পড়তে হবে। তবে সব বিষয়েই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে হবে না। আর যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরীক্ষা হবে সেখানেও কিছুটা অংশ থাকবে শিখনকালীন মূল্যায়ন আর কিছুটা অংশ থাকবে সমষ্টিক মূল্যায়ন।
শিক্ষকদের নতুন কারিকুলাম সম্বন্ধে ধারণা দিতে ইতিমধ্যে এক দিনের অনলাইন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আর ৬, ৭, ১৩, ১৪ ও ২১ জানুয়ারি সব শিক্ষককে সরাসরি নতুন কারিকুলামের ওপর পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। উপজেলা পর্যায়ে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
গত শতকের আশির দশকে ছাত্ররাজনীতির বাঁক বদলে দেওয়া ছাত্রদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। চার দশক পর ছাত্রসংগঠনটি খেই হারিয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামের সামনের সারিতে দেখা গেলেও একসময়ের ‘স্মার্ট’ ছাত্রসংগঠনটি ছাত্রদের দাবি আদায়ের আন্দোলনে তেমনটি দৃশ্যমান নয়। বিএনপি দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় এর ভ্যানগার্ড হিসেবে পরিচিত ছাত্রদলও গতিহারা। কমিটি বাণিজ্যসহ নানা কারণে সংগঠনের সংগ্রামী ঐতিহ্যও ঢাকা পড়ে যাচ্ছে।
জানতে চাইলে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান মনে করেন, ছাত্ররাজনীতি গতি হারিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কারণে। তার মতে, ‘১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে ছাত্ররাজনীতি স্বাভাবিক ছিল। ক্যাম্পাসগুলোতে সহাবস্থান ছিল। কিন্তু ’৯৬ সালের পরই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে ভিন্নমতের ছাত্রদের হল থেকে বের করে দেয় ছাত্রলীগ। যার ধারা এখনো চলছে। ফলে মেধাবী ছাত্ররা এখন আর রাজনীতিতে আসতে চাচ্ছে না।’
১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি গঠন করা হয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা তখনকার রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সেই সময়কার ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা মুস্তাফিজুর রহমান মূলত তিনটি ছাত্রসংগঠন যথাক্রমে ন্যাপ (ভাসানী) ছাত্রসংগঠন জাতীয় ছাত্রদল, ইউনাইটেড পিপলস পার্টির (ইউপিপি) বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন ও জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) ছাত্রসংগঠন জাগ ছাত্রদল থেকে বেশ কিছু নেতাকে নিয়ে ছাত্রদল গঠন করেন।
নিজেদের সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু দেশ রূপান্তরকে বলেন শিক্ষা, ঐক্য ও প্রগতির স্লোগান নিয়ে প্রতিষ্ঠার এক বছরের মধ্যেই ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫টি হল সংসদে ছাত্রদের ভোটে জেতে ছাত্রদল। পরবর্তী বছর ১৯৮১ সালের ডাকসু নির্বাচনে ইকবাল হল ও জগন্নাথ হল ছাড়া বাকি সব হলে একচেটিয়া বিজয় অর্জন করে ছাত্রদল। এই সর্বজনপ্রিয়তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা শহরের গন্ডি পেরিয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। স্বৈরাচারী এরশাদের সময়ে ডাকসু (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), রাকসু (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়), চাকসুসহ (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়) বিভিন্ন কলেজ পর্যায়ে ৩০৮টি সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ২২১টি সংসদেই জয় পায় ছাত্রদল।
ছাত্রদলের সাবেক নেতারা আরও বলেন, ছাত্রদলের এই উত্থান কোনো অঘটন ছিল না। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আদর্শ ধারণ করে দীর্ঘ প্রায় চার দশক ধরে পথ চলছে সংগঠনটি। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা প্রবল থাকলেও সেটা ভ্রাতৃঘাতী হয়নি। যার ফলে সুদীর্ঘ সময়েও একবারের জন্যও ভাঙনের মুখে পড়েনি এই সংগঠনটি।
ছাত্রদলের চার দশকের পথচলায় সবচেয়ে বড় অর্জন ১৯৯০-এর গণঅভ্যুত্থান। ছাত্রদলের ওপর ভিত্তি করে খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে দেশের জনগণের ম্যান্ডেট লাভ করেন। ২০০৭ সালের ১/১১-খ্যাত অস্বাভাবিক সরকারের সময় প্রথম রুখে দাঁড়ানোসহ ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনসহ বর্তমানে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সামনের কাতারে আছে ছাত্রদল।
বিএনপির ক্ষমতার রাজনীতিতে ছাত্রদল প্রথম সারিতে থাকলেও ছাত্রদের দাবি আদায় কিংবা কোনো সাংস্কৃতিক আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় দেখা যায়নি সংগঠনটিকে। একসময় স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের ছাত্রসংগঠন শিবিরের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ছিল এই ছাত্রসংগঠনটির। কিন্তু এখন দলীয় রাজনীতি করতে গিয়ে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মিছিল করতে হচ্ছে।
আন্দোলন-সংগ্রামে সামনের সারিতে দেখা গেলেও কমিটি বাণিজ্যসহ নানা কারণে অতীত ঐহিত্য হারাচ্ছে বিএনপির সহযোগী সংগঠনটি। ৪৪ বছরেও একটি পূর্ণাঙ্গ গঠনতন্ত্র করতে পারেনি। ১৯৯৭-৯৮ সালের কমিটির সময় করা ‘খসড়া’ গঠনতন্ত্র দিয়ে চলছে সংগঠনটির কার্যক্রম। যদিও ওই ‘খসড়া’ গঠনতন্ত্র ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে সংগঠনটির নেতারা দাবি করেছেন। ছাত্রদলকে দেখভালের জন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদকের পদও রয়েছে। কিন্তু ৬ বছর ধরে সে পদও ফাঁকা আছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সরাসরি নির্দেশে ছাত্রদল কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ছাত্রদল প্রতিষ্ঠার পর ২৪টি কমিটি হয়েছে। এর মধ্যে ছয়বার নির্বাচনের মাধ্যমে সরাসরি ভোটে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। সর্বশেষ গত ১৭ এপ্রিল কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে সভাপতি, সাইফ মাহমুদ জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫ সদস্যের কমিটি দেওয়া হয়। পরে ১১ সেপ্টেম্বর ৩০২ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয়। যদিও এর মধ্যে বিবাহিতসহ নানা অভিযোগে ৩২ জন নেতার পদ স্থগিত রাখা হয়েছে।
ছাত্রদলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ছাত্রদলের খসড়া গঠনতন্ত্র রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ গঠনতন্ত্রের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। খসড়া গঠনতন্ত্র দিয়ে আমরা কাজ করছি।’
বর্তমানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ৫০২। এর মধ্যে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে অনেকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সম্পাদক ও সহসম্পাদক পদ পেয়েছেন। এ ছাড়া বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দলের নেতৃত্বেও রয়েছেন কয়েকজন সাবেক ছাত্রনেতা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বেপারি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘স্বাধীনতার আগে রাজনীতি নির্ধারণ করত ছাত্ররা। স্বাধীনতার পর ছাত্রলীগ ও অ্যান্টি ছাত্রলীগের যে ধারা তৈরি হলো, তাতে রাজনীতিতে ছাত্রনেতাদের ভূমিকা আস্তে আস্তে স্তিমিত হতে লাগল। এরশাদের সময় ছাত্ররা জোরালো ভূমিকা রাখলেও ১৯৯১ সালের পর থেকে ছাত্রদের সংগ্রামী ভূমিকা চরিত্র হারাতে লাগল, যা ২০১৪ সালে এসে একেবারেই শেষ হয়ে গেল। ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা আজ জঞ্জাল ও আতঙ্কের নাম।’
তার মতে, ‘ছাত্ররাজনীতির হাত ধরে স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল। কিন্তু সেই ছাত্ররাজনীতি এখন অনেকটাই গতিহারা। সেই গতিহারা ছাত্ররাজনীতির অংশ হিসেবে সক্রিয় রয়েছে ছাত্রদল।’
ছাত্রসংগঠনগুলোকে বড় দলগুলো তাদের উপাঙ্গ ভাবে এমনটা দাবি করে নুরুল আমিন বেপারি বলেন, ‘এর ফলে বেড়েছে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, সিট দখলের রাজনীতি। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নানা ধরনের ভর্তিবাণিজ্য, নির্মাণ উপকরণ সরবরাহ ইত্যাদি।’
কর্মসূচি : ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে সংগঠনটি। সকালে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্র সমাবেশ হবে। সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন মারা গেছেন। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
প্রখ্যাত ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এই সাবেক সভাপতি ফুসফুসেরসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এক শোকবার্তায় মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।
৮৪ বছর বয়সী খন্দকার মাহবুব হোসেনকে গত ২৮ ডিসেম্বর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২৮ ডিসেম্বর তাকে হাসপাতালের ভেন্টিলেশন সাপোর্টে নেওয়া হয়। ৩০ ডিসেম্বর রাত থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। কিছুদিন আগে ব্যাংকক থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছিলেন তিনি।
১৯৩৮ সালের ২০ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন খন্দকার মাহবুব। বরগুনার বামনায় তার পৈতৃক বাড়ি। ১৯৬৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ¯œাতক ডিগ্রি অর্জন করে আইন পেশায় নিযুক্ত হন। ১৯৬৭ সালের জানুয়ারিতে হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৮৮ সালের ১৭ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন তিনি। পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে আইনি পেশায় ছিলেন খন্দকার মাহবুব। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ১৯৭৩ সালে দালাল আইনে গঠিত আদালতের প্রধান কৌঁসুলি ছিলেন। খন্দকার মাহবুব চার মেয়াদে (২০১০-১১, ২০১১-১২, ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইবার (২০০৭-৮ ও ২০১২-১৫) দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে বিএনপিতে যোগ দেন খন্দকার মাহবুব। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সাল থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে (২০২৩-২৪) সভাপতি পদে ফরিদা ইয়াসমিন আবারও নির্বাচিত হয়েছেন। নতুন সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন শ্যামল দত্ত। তারা দুজনই একই প্যানেল (ফরিদা ইয়াসমিন-শ্যামল দত্ত) থেকে নির্বাচন করেছিলেন।
গতকাল শনিবার এ নির্বাচনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতি ছাড়াই ভোটগ্রহণ চলে। রাতে ঘোষিত ফলে সভাপতি পদে প্রেস ক্লাবের বর্তমান সভাপতি ও ইত্তেফাকের সাংবাদিক ফরিদা ইয়াসমিন পেয়েছেন ৫৬৭ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল উদ্দিন সবুজ পেয়েছেন ৪০১ ভোট। আর সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত পেয়েছেন ৪৯৬ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেস ক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান পেয়েছেন ৪৭৪ ভোট। সবুজ ও ইলিয়াস একই প্যানেল (সবুজ-ইলিয়াস পরিষদ) থেকে নির্বাচন করেছিলেন।
অন্যান্য পদের মধ্যে সিনিয়র সহসভাপতি পদে সবুজ-ইলিয়াস পরিষদের হাসান হাফিজ পুনর্র্নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া সহসভাপতি পদে ফরিদা-শ্যামল পরিষদের রেজোয়ানুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আইয়ুব ভূঁইয়া ও মো. আশরাফ আলী এবং কোষাধ্যক্ষ পদে শাহেদ চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন।
এ ছাড়া ব্যবস্থাপনা কমিটির ১০টি সদস্য পদের মধ্যে সবুজ-ইলিয়াস পরিষদের ৬ জন সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন কাজী রওনক হোসেন, সৈয়দ আবদাল আহমদ, বখতিয়ার রাণা, শাহনাজ বেগম, সীমান্ত খোকন ও মোহাম্মদ মোমিন হোসেন। সদস্য পদে ফরিদা-শ্যামল পরিষদের তিনজন নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন ফরিদ হোসেন, কল্যাণ সাহা ও শাহনাজ সিদ্দিকী। এ ছাড়া সদস্য পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী জুলহাস আলম নির্বাচিত হয়েছেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাব নির্বাচন পরিচালনায় ৮ সদস্যের মধ্যে কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. মোস্তফা-ই-জামিল। এ ছাড়া নির্বাচন কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন জাফর ইকবাল, এস এ এম শওকত হোসেন, মিনার মনসুর, গৌতম অরিন্দম বড়ুয়া (শেলু বড়ুয়া), শামীমা চৌধুরী, মো. মনিরুজ্জামান এবং নবনীতা চৌধুরী।
পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজের একাডেমিক ভবনে ছাত্রীদের শ্রেণিকক্ষ দখল করে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ অধ্যাপক মাইনুর রহমান গড়ে তুলেছেন নিজের বাসস্থান। কলেজের তিনতলা অনার্স ভবনের তৃতীয় তলার একটি শ্রেণিকক্ষকে দুই কক্ষে ভাগ করে একটি অংশে তিনি আর অন্য অংশে কয়েকজন শিক্ষক থাকছেন। এসব শিক্ষক নিয়মিত সরকারি বাড়ি ভাড়া গ্রহণ করলেও তারা দিব্যি শ্রেণিকক্ষের ভেতরেই থাকা-খাওয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ শ্রেণিকক্ষের অভাবে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে অধ্যক্ষ মাইনুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগও উঠছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানপ্রধান হওয়ায় চাকরির ক্ষতি হওয়ার ভয়ে তার এসব অনিয়ম জেনেও প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানান না শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউই।
কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, পুরো জেলার অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজ। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৫ সালে জেলা শহরের ইসলামবাগ এলাকায় গড়ে ওঠে। ১৯৯৭ সালে কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উচ্চমাধ্যমিকের মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ ছাড়াও ৯টি বিষয়ে স্নাতকে পড়াশুনা করছেন প্রায় চার হাজার ছাত্রী। কলেজের পুকুরপাড় সংলগ্ন তিনতলা অনার্স ভবনটিতে বাংলা, ইংরেজি, ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি, গণিত, ভূগোল, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রেণিকক্ষ ছিল মাত্র ৮টি। শ্রেণিকক্ষের সংকটে পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। প্রায়ই মাঠে ক্লাস নিতে হয় শিক্ষকদের। কখনো আবার শিক্ষার্থীদের নিয়ে ফাঁকা শ্রেণিকক্ষের খোঁজ করে বেড়াতে হয়। ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন অধ্যাপক মো. মাইনুর রহমান। যোগদানের মাসখানেক পরই অনার্স ভবনের তিনতলায় ছাত্রীদের একটি শ্রেণিকক্ষ ও শৌচাগার দখল করে কলেজের খরচে নিজের মতো করে বাসস্থান তৈরি করে নেন। সেখানে দুটি কক্ষ করা হয়। একটিতে তিনি থাকেন, আরেকটিতে থাকেন নতুন যোগদান করা কয়েকজন শিক্ষক। এতে ছাত্রীদের আরেকটি শ্রেণিকক্ষ কমে যায়। এছাড়া শৌচাগার ব্যবহারের জন্য শিক্ষার্থীদের নিচতলায় নামতে হয়। অথচ শিক্ষকরা প্রতি মাসে বাড়ি ভাড়ার সরকারি টাকা উত্তোলন করলেও দখল করে রেখেছেন ছাত্রীদের শ্রেণিকক্ষ ও শৌচাগার। একাডেমিক ভবনে শ্রেণিকক্ষ দখল করে বাসস্থান করায় ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গেছে, আগে কলেজের সব ব্যাংক হিসাব অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ দুজনের স্বাক্ষরে পরিচালিত হলেও মাইনুর রহমান যোগদানের পর শুধুমাত্র তার স্বাক্ষরেই পরিচালিত করতে শুরু করেন ব্যাংক হিসাবগুলো। কলেজের বিভিন্ন সংস্কারের নামে বিভিন্ন কাজের কমিটি করে সেখানে অনৈতিকভাবে কাজের বরাদ্দের টাকা থেকে কমিটির সদস্যদের সম্মানি দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি। নিজেও নেন বড় অঙ্কের সম্মানী। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার শর্তে পিকনিকের নাম করে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৭০০ টাকা করে নিয়ে সেই টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নেন অধ্যক্ষ ও তার ঘনিষ্ঠ শিক্ষকরা। দিনের পর দিন এমন অনিয়ম চললেও প্রতিষ্ঠানপ্রধান হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের এক শিক্ষক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘অধ্যক্ষ মাইনুর রহমান নিজের মতো করে যা ইচ্ছে তাই করছেন। শ্রেণিকক্ষের সংকট থাকা সত্ত্বেও তিনি অবৈধভাবে শ্রেণিকক্ষ দখল করে বসবাস করছেন। অন্য শিক্ষকদেরও রাখছেন। আমরা বিষয়টিতে বারবার আপত্তি জানালেও তিনি কোনো কথা শোনেননি। এছাড়া দুই টাকার কাজে পাঁচ টাকার সম্মানীর নিয়ম করেছেন তিনি। এভাবে কাজ যাই হোক না কেন পকেট ভরছে তাদের।’
এ প্রসঙ্গে কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সদ্য অবসরে যাওয়া বিভাগীয় প্রধান হাসনুর রশিদ বাবু দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কলেজের শ্রেণিকক্ষ সংকট এতটাই যে আমরা ছাত্রীদের নিয়ে ঘুরে ঘুরে কোথায় খালি কক্ষ আছে তা খুঁজে সেখানে ক্লাস নিতাম। অনার্স ভবনে ৯টি বিভাগের ছাত্রীদের জন্য মাত্র ৮টি শ্রেণিকক্ষ ছিল। তার মধ্যে একটিতে বছরখানেক ধরে অধ্যক্ষ ও কয়েকজন শিক্ষক থাকছেন। ছাত্রীদের ওয়াশরুমটিও (শৌচাগার) তারাই ব্যবহার করছেন। শ্রেণিকক্ষকে আবাসিক না করার জন্য আমি অধ্যক্ষ মহোদয়কে বারবার নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু তিনি শোনেননি। বিষয়টি একদিকে যেমন অনৈতিক, তেমনি ছাত্রীদের শ্রেণিকক্ষ সংকটের মধ্যে আরেকটি কক্ষ তারা দখল করে রেখেছেন।’
ছাত্রীদের শ্রেণিকক্ষ দখলের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মাইনুর রহমান বলেন, ‘আমার চাকরিজীবনের ৩০ বছরে অনেক প্রতিষ্ঠানে ঘুরেছি। প্রায় সব কলেজেই দেখেছি বহিরাগত শিক্ষকদের থাকার জন্য একটা ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। এখানকার শিক্ষকরাই আমাকে ওই ভবনে (অ্যাকাডেমিক ভবন) থাকতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। যাতে আমি সবকিছু ভালোভাবে দেখাশুনা করতে পারি। সেটি শ্রেণিকক্ষ না, ওই বিল্ডিংয়ের এক কোনায় ছোট্ট একটা কক্ষ। এ ছাড়া দূরের শিক্ষকদের থাকার জন্য আলাদা পার্ট করে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর তা না হলে তারা তো কলেজ ছেড়ে চলে যেতে চাইবেন।’
আর নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়মের সব অভিযোগ অস্বীকার করেন অধ্যক্ষ মাইনুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সবকিছু তো নিয়মে চলে না। যিনি কাজ করছেন তাকে আমাদের সম্মানী দিতে হয়। না হলে তারা কাজ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। আর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে পিকনিকের জন্য টাকা নেওয়া হয়েছে। তারাই পিকনিক করবে। শিগগিরই পিকনিক হবে। এখানে আমাদের কোনো বিষয় নেই। গত ১০ বছরে এই কলেজের কোনো উন্নয়ন হয়নি। আমি অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। কিন্তু যারা উন্নয়ন চায় না তারাই আমার বিরুদ্ধে নানা রকম কথা বলছে।’
আগের ইনিংসের মতোই ব্যর্থ উসমান খাজা। পারেননি ডেভিড ওয়ার্নারও। প্রথম ইনিংসের দুই সেঞ্চুরিয়ানও ফিরে গেছেন। দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিংয়ে তাই খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থায় নেই অস্ট্রেলিয়া। তবুও তৃতীয় দিন শেষে এগিয়ে আছে তারা।
ওভালে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে ২৯৬ রানে আটকে দেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ১২৩ রান করে অসিরা। এগিয়ে আছে ২৯৬ রানে।
দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিংয়ের শুরুটা ভালো করেছে ভারত। অস্ট্রেলিয়াকে চেপে ধরেছে তারা।
দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও উসমান খাজা ফেরেন ২৪ রানের মধ্যেই। মারনাস লাবুশান ও স্টিভেন স্মিথের ৬২ রানের জুটি ভাঙেন রবীন্দ্র জাদেজা, পরে ট্রাভিস হেডকেও ফেরান এই স্পিনার। টেস্ট ক্যারিয়ারে অষ্টমবারের মতো স্মিথকে আউট করেছেন জাদেজা।
তৃতীয় দিন শেষে মারনাস লাবুশানের সঙ্গে অপরাজিত আছেন ক্যামেরুন গ্রিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: অস্ট্রেলিয়া: ৪৬৯ ও ৪৪ ওভারে ১২৩/৪ (লাবুশেন ৪১*, স্মিথ ৩৪; জাদেজা ২/২৫, উমেশ ১/২১)ভারত ১ম ইনিংস: ৬৯.৪ ওভারে ২৯৬ (রাহানে ৮৯, শার্দূল ৫১, জাদেজা ৪৮; কামিন্স ৩/৮৩, গ্রিন ২/৪৪, বোল্যান্ড ২/৫৯)।
আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিজের পালন করা সাড়ে ২১ মণ ওজনের গরু উপহার দিতে চেয়েছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার চরকাউনা গ্রামের সাধারণ কৃষক বুলবুল আহমেদ ও তার স্ত্রী ইসরাত জাহান। তাদের এই ভালোবাসার প্রতি সম্মান জানিয়ে উপহারের এই গরু গ্রহণে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার (৯ জুন) সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী উপহারের গরু গ্রহণে সম্মতি দেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী খুশি হয়েছেন এবং এই বিরল ভালোবাসার জন্য বুলবুল আহমেদ ও তার স্ত্রীকে ধন্যবাদ দেন।
হাসান জাহিদ তুষার জানান, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা এই গরু বুলবুল আহমেদের নিজ বাড়িতেই থাকবে এবং সেখানেই কোরবানি হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোরবানির গরুর মাংস স্থানীয় দরিদ্র-অসহায় জনগণের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
গরুটি ক্রস ব্রাহমা প্রজাতির। এতে আনুমানিক ৮০০ কেজি মাংস হতে পারে বলে জানিয়েছেন বুলবুল আহমেদ। বুলবুল জানান, ২০২০ সালে নেত্রকোনা জেলা থেকে আড়াই লাখ টাকায় প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়ার জন্য তিনি এই গরু কেনেন। গরু কেনার পর কিশোরগঞ্জের বিখ্যাত পাগলা মসজিদে পাঁচ হাজার টাকা মানতও করছিলেন তিনি যেন তার গরুটি সুস্থ থাকে।
তিনি আরও জানান, তিনি ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে মাঠকর্মী হিসেবে কর্মরত তার স্ত্রী ইসরাত জাহান আওয়ামী লীগ সরকারের একটি বাড়ি, একটি খামার প্রকল্প থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে এবং নিজের জমানো টাকা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য এই গরু কেনেন। তারা গত তিন বছর গরুটির নিবিড় পরিচর্যা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবেগ ও ভালবাসা থেকে তারা এই গরু ক্রয় ও লালন পালন করেছেন বলে জানান।
উপহার হিসেবে তার গরুটি গ্রহণ করার সম্মতি দেওয়ায় বুলবুল আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। বুলবুল আহমেদ কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
ষাটের দশকে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের আগুন তরুণদের বুকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠান ক্ষেত্র তৈরি করতে গড়ে তুলেছিলেন ‘নিউক্লিয়াস’। স্বাধীনতার পর তিনি সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের বাঁধভাঙা ঢেউ তুলেছিলেন। কিন্তু নব্বইয়ের দশকে সবকিছু থেকে দূরে আড়ালে চলে যান। রাজনীতিতে তাকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল রহস্য। সেই রহস্য নায়ক সিরাজুল আলম খান চলে গেলেন চিররহস্যের দেশে।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এ সংগঠক গতকাল শুক্রবার দুপুর আড়াইটার কিছু পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুর বিষয়টি দেশ রূপান্তরকে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক।
সিরাজুল আলম খানের ব্যক্তিগত সহকারী রুবেল দেশ রূপান্তরকে বলেন, অসুস্থ অবস্থায় তাকে রাজধানীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে প্রথমে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে গত ১ জুন নেওয়া হয় আইসিইউতে। এরপর গত বৃহস্পতিবার রাতে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।
বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন সিরাজুল আলম খানের জন্ম নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলীপুর গ্রামে, ১৯৪১ সালের ৬ জানুয়ারি। তার বাবা খোরশেদ আলম খান ছিলেন স্কুল পরিদর্শক। মা সৈয়দা জাকিয়া খাতুন গৃহিণী ছিলেন। ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে দ্বিতীয় সিরাজুল আলম খান।
১৯৬১ সালে ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক হন সিরাজুল আলম খান। ১৯৬৩ সালে তিনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭২ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠন করেন।
সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান (মান্না), জনসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক (নুর)।
সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তার আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি। শোক জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন সংগঠন।
প্রয়াত সিরাজুল আলম খানের ঘনিষ্ঠ ও নাট্য পরিচালক সাকিল সৈকত দেশ রূপান্তরকে বলেন, সিরাজুল আলম খানের মরদেহ বিকেলে হাসপাতাল থেকে মোহাম্মদপুরের আল-মারকাজুলে নেওয়া হয়েছে। সেখানে গোসল শেষে রাতে শমরিতা হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে। আজ শনিবার সকাল ১০টায় বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে জানাজা শেষে নোয়াখালীতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে পুনরায় জানাজা শেষে বেগমগঞ্জের আলীপুরে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে রাজনীতির এ নায়ককে।
১৯৪১ সালে জন্ম নেওয়া এ কিংবদন্তি রাজনীতিককে বিগত কয়েক বছর ধরে নিয়মিত হাসপাতালে যেতে হয়েছে। দেশে এবং বিদেশে দীর্ঘ সময় চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।
জন্মের কয়েক বছর পর পিতার চাকরির সুবাদে সিরাজুল আলম খুলনায় চলে যান। ১৯৫৬ সালে খুলনা জিলা স্কুল থেকে এসএসসি ও ১৯৫৮ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। অনার্স ডিগ্রি অর্জনের পর কনভোকেশন মুভমেন্টে অংশ নেওয়ার কারণে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।
স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনায় ১৯৬২ ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদের নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা স্বাধীনতার ‘নিউক্লিয়াস’ গঠিত হয়। পরে ছাত্র-তরুণদের আন্দোলন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তারা। বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে ছিলেন এ ছাত্রনেতারা। ছয় দফার সমর্থনে জনমত গঠনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন সিরাজুল আলম খান। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বাতিল ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-শ্রমিকদের সম্পৃক্ত করতে প্রধান ভূমিকা পালন করেন তিনি।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির সঙ্গে বিরোধের জের ধরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ভেঙে দুই ভাগ হয়। এরপর ১৯৭২ সালে সিরাজুল আলম খানের উদ্যোগে রাজনৈতিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ প্রতিষ্ঠা হয়। তিনি কখনো নেতৃত্বে না এলেও জাসদ নেতাদের পরামর্শ দিয়ে তাদের ‘তাত্ত্বিক গুরু’ হিসেবে খ্যাতি পান। অনুসারী সবাই তাকে ‘দাদা ভাই’ নামেই ডাকতেন।
মূলত নব্বইয়ের দশকে সিরাজুল আলম খান কখনো জনসমক্ষে আসতেন না এবং বক্তৃতা-বিবৃতি দিতেন না; আড়ালে থেকে তৎপরতা চালাতেন বলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে পরিচিতি পান। নব্বই পর্যন্ত একাধিকবার জেল-জুলুম খেটেছেন তিনি।
দাদা ভাইয়ের মৃত্যুত গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চেয়ারপারসন অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা, গণফোরাম একাংশে সভাপতি মোস্তফা মোহসিন মন্টু ও সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান।
বেশ ক'দিন তীব্র তাপদাহের পর গতকাল রাজধানী ঢাকাজুড়ে হয়েছে স্বস্তির বৃষ্টি। এতে তাপমাত্রা এসেছে কমে, পরিচ্ছন্ন হয়েছে পরিবেশ। তবুও আজ সকালে বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষ পাঁচে আছে ঢাকা। বৃষ্টিধোয়া রাজধানী ঢাকা আজ সকাল সাড়ে ৮টায় ১৫৫ স্কোর নিয়ে দূষণের তালিকায় চতুর্থ।
আজ শনিবার (১০ জুন) সকাল সাড়ে ৮টায় বায়ুমানের সূচক (একিউআই) অনুযায়ী ঢাকায় বাতাসের স্কোর ছিল ১৫৫। বায়ুর মান বিচারে এ মাত্রাকে 'অস্বাস্থ্যকর' বলা হয়। একই সময়ে একিউআই স্কোর ১৬৮ নিয়ে প্রথম অবস্থানে আছে পাকিস্তানের লাহোর। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভিয়েতনামের হ্যানয়, স্কোর ১৫৬। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইসরায়েলের তেলআবিব। আর পঞ্চম স্থানে আছে চীনের শেংডু, স্কোর ১৪৯।
একইসময়ে ১৩৮ স্কোর নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহেনেসবার্গ। ১৩২ স্কোর নিয়ে সপ্তম স্থানে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই। অষ্টম নেপালের কাঠমান্ডু, স্কোর ১২৭। ১১৮ স্কোর নিয়ে নবম স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েট আর ১১৭ স্কোর নিয়ে দশম সৌদি আরবের রিয়াদ।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার দূষিত বাতাসের শহরের এ তালিকা প্রকাশ করে। প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই স্কোর একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানায়।
তথ্যমতে, একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়। আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত 'অস্বাস্থ্যকর' হিসেবে বিবেচিত হয়। একইভাবে একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে থাকলে 'খুব অস্বাস্থ্যকর' এবং স্কোর ৩০১ থেকে ৪০০ এর মধ্যে থাকলে 'ঝুঁকিপূর্ণ' বলে বিবেচিত হয়।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় ১২ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মো. রহুল আমিন (৫৬) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৯ জুন) শিশুটির বাবা বাদী হয়ে বরুড়া থানায় মামলা করলে তাকে আটক করা হয়।
আটক মো. রহুল আমিন উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের বেওলাইন গ্রামের মৃত আব্দুল হকের ছেলে।
ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে বরুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফিরোজ হোসেন বলেন, ধর্ষণের শিকার শিশুটির বাবা বাদী হয়ে বরুড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রুজু করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষককে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ মার্চ ভোর আনুমানিক ৬টায় দিকে উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের বেওলাইন গ্রামে ১২ বছরের শিশুকে গোয়ালঘরের পেছনে ধর্ষণ করেন মো. রহুল আমিন। এবিষয়ে এতোদিন জানাজানি না হলেও ৪ জুন (রোববার) হঠাৎ শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে পরিবারের লোকজন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখানে পল্লী চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়ার পর পরীক্ষা করে কর্তবরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসা জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হন। তারপর ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারকে বিষয়টি জানান। ভুক্তভোগী শিশুটি এখন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বাসায় তেলাপোকা মারার ওষুধ দেওয়ার পর বিষক্রিয়ায় মারা গেছে রাজধানীর বারিধারা এলাকার ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন তুষারের দুই ছেলে। তার মেয়ে এখনো অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। গত শনিবার ‘ডিসিএস অরগানাইজেন লিমিটেড’ নামের একটি পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ওই ব্যবসায়ী। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা বাসায় ওষুধ দিয়ে ছয় ঘণ্টা পরে ঢুকে ঘর পরিষ্কার করতে বলেছিলেন। পরিবারটি ৯ ঘণ্টা পরে বাসায় ঢুকে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়। এ সময় তাদের সবারই পেট খারাপ, বমির মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
ওই পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, সেই পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানি পোকামাকড় নিধনের জন্য অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট (গ্যাস ট্যাবলেট) ব্যবহার করেছিল, যেটা থেকে বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। সেই গ্যাসের বিষক্রিয়াতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠানের ৫ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এদিকে রাজধানীতে গত পাঁচ বছরে এই বিষক্রিয়ায় বেশ কয়েকজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চমাত্রার এই কীটনাশক বাসায় ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অথচ বিভিন্নভাবে সাধারণ কীটনাশক হিসেবে দেদার বিক্রি হচ্ছে সারা দেশে।
সূত্র বলছে, রাজধানীসহ সারা দেশে কয়েক শতাধিক পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব কোম্পানির প্রায় ৯৫ ভাগের কোনো অনুমোদন নেই। কৃষি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের এসব দেখভাল করার কথা থাকলেও তারাও খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না।
পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান সেবা নিন প্ল্যাটফর্ম লি.-এর চেয়ারম্যান শামসুল আলম বলেন, দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। অধিক মুনাফার আশায় তারা এক ধরনের নিষিদ্ধ ট্যাবলেট ব্যবহার করে। আবার অনেকে লিকুইড কেমিক্যাল ব্যবহার করে। কিন্তু কোন মাত্রায় এসব ব্যবহার করতে হয় তার প্রশিক্ষণ নেই। সরকারের পক্ষ থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিত।
রাজধানীর বেশ কিছু বাজার ঘুরে দেখা যায় অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে। ফুটপাত থেকে শুরু করে দেয়াল লিখন ও অনলাইনের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে চটকদার বিজ্ঞাপন। অথচ চাষাবাদ ছাড়া অন্য কাজে যার ব্যবহার নিষিদ্ধ। বদ্ধ ঘরে এই ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করলে যে কারও বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মাইকিং করে এসব কীটনাশক বিক্রি করছিলেন কাঞ্চন মিয়া। এ ধরনের কীটনাশক বিক্রির অনুমতি তার আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের অনুমতি লাগে না। দশ বছর ধরে এই ব্যবসা করি। কেউ তো কিছু বলে না। কোথা থেকে এসব পণ্য সংগ্রহ করা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশিরভাগ পুরান ঢাকা থেকে সংগ্রহ করি। গাজীপুর সাভার থেকেও এসে দিয়ে যায়। এসব ব্যবহারে মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে তা জানেন না বলে জানান তিনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন কীটনাশক জাতীয় একপ্রকার ওষুধের জেনেটিক বা গ্রুপ নাম হলো অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড। বাজারে অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট আকারে ফসটক্সিন, সেলফস, কুইকফস, কুইকফিউম, ডেসিয়াগ্যাস এক্সটি ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়। অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট গ্যাস ট্যাবলেট নামেও পরিচিত। বাতাসের সংস্পর্শে এসে জীবনবিনাশী ভয়াবহ টক্সিক গ্যাস ফসফিন উৎপাদন করে। এই ট্যাবলেট সাধারণত গুদামজাত শস্যের পোকা দমন, ধান ক্ষেতের পোকা দমন, কলাগাছের পোকা দমন ও ইঁদুর দমনে ব্যবহার হয়ে থাকে। গত এক দশকে দেশে এই বিষাক্ত কীটনাশক মানুষের বাসাবাড়িতে ব্যবহার বাড়ছে। দেশের বাজারে ট্যাবলেট আকারে সহজলভ্য। রাজধানীতে ছারপোকা দমনে প্রায় যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে এই ট্যাবলেট।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে বালাইনাশক গ্রহণ করলে সেটা দ্রুত ফুসফুসে শোষিত হয় এবং রক্তে মিশে যায়। যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ বালাইনাশক শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয় তাহলে নাক, গলা ও ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারের যে দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান রয়েছে এসব বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে কোন কোন কীটনাশক কোন মাত্রায় কোন কোন কীটপতঙ্গের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে সেটি নির্দিষ্ট করে নিশ্চিত করতে হবে। আমদানির সময়ও বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। অথবা দেশেই যদি তৈরি করতে হয় তাহলে যথাযথ কর্র্তৃপক্ষের লাইসেন্স নিয়ে উৎপাদন করতে হবে। এটির গুণগত মান থাকছে কি না তারও পরীক্ষা করতে হবে।
পরিবেশ গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি ওই বাসায় পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠানটি অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ব্যবহার করেছে। যদিও আমরা এ বিষয়ে নিশ্চিত না। আমার মতে এটা আরও বেশি তদন্ত করা উচিত। সরকারের যে প্রতিষ্ঠান এসব বিক্রির অনুমোদন দেয় তাদের এই তদন্ত করে জানানো দরকার কী ধরনের কেমিক্যাল সেখানে ব্যবহার করা হয়েছিল। কারণ পেস্ট কন্ট্রোলের নামে কী ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় এটা জানাটা জরুরি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোন ধরনের কীটনাশক কীভাবে ব্যবহার করা হবে তার কোনো নীতিমালা নেই। কীটনাশকগুলো সাধারণ কৃষিজমিতে ব্যবহৃত হয়। ঢাকা শহরে এরকম বিষ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা উচিত। তাছাড়া রাস্তাঘাটে এসব জিনিস অহরহ বিক্রি হচ্ছে। এসবও তদন্তের আওতায় আনতে হবে।
আরও এক কর্মী গ্রেপ্তার : দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় টিটু মোল্লা নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি বালাইনাশক কোম্পানিটির কর্মকর্তা। গত সোমবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ভাটারা থানার ওসি আবুল বাসার মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, ওই ঘটনায় করা মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের মেয়ে অর্পিতা শাহরিয়ার কবির মুমুর (৪১) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত্যুর আগে তিনি চিরকুট লিখে গেছেন। তবে সেখানে কি লেখা আছে তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর মহাখালীর আমতলী এলাকার বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রাতেই পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়ায় মরদেহ হস্তান্তর করেছে পুলিশ। বিষয়টি দেশ রূপান্তরকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম। পুলিশের ধারণা, অর্পিতা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহীদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে। পরে স্বজনের অনুরোধে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।
জানা গেছে, লন্ডনে আইন বিষয়ে পড়ালেখা করতেন অর্পিতা। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মা ফাতেমা কবিরের মৃত্যুর কারণে তিনি দেশে আসেন। এরপর দেশেই ছিলেন। মায়ের মৃত্যুর পর মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্থ ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার তার লণ্ডনে ফেরার কথা ছিল। মৃত্যুর আগে লিখে যাওয়া একটি চিরকুটে (সুইসাইড নোট) তিনি আত্মহত্যার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
মেয়ের মৃত্যুতে শোকে বিবহবল লেখক–কলামিস্ট শাহরিয়ার কবির গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। তবে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল বলেন, রাজধানীর মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে অর্পিতাকে তাঁর মায়ের কবরে দাফন করা হয়েছে। রবিবার তাঁর কুলখানি অনুষ্ঠিত হবে।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের মেয়ে অর্পিতা শাহরিয়ার কবির মুমুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাতে বনানীর বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। রাতেই পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
তবে কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
শুক্রবার সকালে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বনানীর একটি বাসা থেকে অর্পিতা শাহরিয়ার কবির মুমুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়, যা ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। পরে রাতেই পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে স্ত্রী হারান শাহরিয়ার কবির।
নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার সকালে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। এরপর দুপুরে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে। এই বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মহাপরিচালক উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তিন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এখানে মূলত আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে দেশের রাজনীতিতে যে উত্তাপ দেখা দিয়েছে তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে আনিসুল হক গণমাধ্যমে বলেছেন, তাদের এ বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মূলত শ্রম আইন নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের শ্রম আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরামর্শ ছিল। বৈঠকে সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একটি সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এ মাসেই জেনেভা যাওয়ার কথা রয়েছে।
পরে বেলা ১টা ১০ মিনিটে মার্কিন দূতাবাসে প্রবেশ করেন বিএনপি মহাসচিব। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে তিনি দূতাবাস থেকে বের হন। রাতে মির্জা ফখরুল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসানীতি ঘোষণা করেছে তার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই নীতি দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়ক হবে আমরা মনে করি বলে রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রদূতকে আমি জানিয়েছি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া আওয়ামী লীগের অধীনে দেশে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। দেশের জনগণও তাই মনে করে। এ ছাড়া নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার নিয়ে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমাদের কোনো আলাপ হয়নি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সম্প্রতি আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছিলেন, “নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করবেন।” তার এমন বক্তব্য নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠলে পরে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেয় আইন মন্ত্রণালয়। এরপর গতকাল মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া কীভাবে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশের সংবিধানে কী আছে তা-ও জানতে চেয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।’
আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে। কোনো ধরনের রাখঢাক ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করছেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আরও বেশি দৌড়ঝাঁপ শুরু করছেন। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের দূরত্ব এখন স্পষ্ট। আলোচনা আছে, সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পশ্চিমা এ দেশটি হঠাৎ আরও ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের মতপার্থক্য ছিল না। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করছে দেশটি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও এ নিয়ে কোনো দ্বিমত করেনি। এরই মধ্যে, ভিসানীতি ঘোষণা করে সরকারকে বড় চাপ দেওয়ার পূর্বাভাস দেয় যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা করে। তবে ভিসানীতি যে সরকারের ও আওয়ামী লীগের ওপরই বেশি চাপ তৈরি করেছে, সেটা ভেতরে-বাইরে আলোচনা আছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায় ও কূটনীতি-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থান পাল্টে নির্বাচনের স্বার্থে প্রয়োজনে সংবিধানের বাইরে যেতে হবে সরকারকে এমন প্রস্তাব দিতে চলেছে। ওই সূত্রগুলো দাবি করেছে, গত মাসের শেষের দিকে অথবা চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বাসভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পিটার হাস ওই বৈঠকে রাজনৈতিক সমঝোতায় না আসলে সব দলের অংশগ্রহণে জাতীয় সরকারের আদলে একটা কিছু করার বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন। তা না হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বার্থে সংবিধানসম্মত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব করেন। এ প্রস্তাব সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও দেওয়া হয়েছে। আনিসুল হকের সঙ্গে শ্রম আইন নিয়েও দীর্ঘ আলাপ করেন এ রাষ্ট্রদূত।
আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন নেতা দেশ রূপান্তরকে বলেন, পিটার হাসের ওই প্রস্তাব নিয়ে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে গেলে তাতে বড় আপত্তি তোলা হয়। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা পাওয়া যাবে না এটা ধরেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরুর বার্তা দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। তারা স্বীকার করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ক্রমেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে। তবে নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের অসহযোগিতা করবে ধরে নিয়েই সরকারি দল আওয়ামী লীগ প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পিটার হাস সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গেও নির্ধারিত-অনির্ধারিত বৈঠক করা শুরু করেছেন। গত সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে পিটার হাসকে উদ্দেশ্য করে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, রাষ্ট্রদূতরা সীমা লঙ্ঘন করলে আইনি ব্যবস্থা নেবে সরকার।
আগামী নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় হয়ে ওঠার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এক সদস্য দেশ রূপান্তরকে বলেন, পিটার হাসের দৌড়ঝাঁপ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘নাহি ছাড়ি’ অবস্থান আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে।
সরকারের দুই মন্ত্রীও দেশ রূপান্তরের কাছে স্বীকার করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সরকারের বিপক্ষে যেতে শুরু করেছে। ‘অন্যায় হস্তক্ষেপ’ বেড়েছে পিটার হাসের।
আওয়ামী লীগের কূটনীতিসম্পৃক্ত এক নেতা বলেন, সরকার বিকল্প হিসেবে শক্তিশালী দেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে কাজ করে চলেছে। বিকল্প দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠলে নির্বাচন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে মাইনাস করে চলার এক ধরনের কৌশল গ্রহণ করা হবে। এ কৌশলে নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রর সঙ্গে সম্পর্ক ঝালাই করা হবে নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর আরেক সদস্য দেশ রূপান্তরকে বলেন, ভিসানীতি মূলত সরকারের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। অনেকেই ভিসানীতিকে সব গেল বলে ধরে নিয়ে অবস্থান টলমলে করে তুলতে চায়। এরকম অবস্থা আওয়ামী লীগকে একটু চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। দলের নেতাকর্মীরা যেন সাহস হারিয়ে না ফেলে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করার কৌশল গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সমালোচনা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এমন কথা শোনা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগ কি তাদের অবস্থান থেকে সরতে শুরু করবে? আবার প্রশ্নও আছে যে, নির্বাচন কি হবে? জাতীয় সরকার আসবে খুব শিগগিরই, এমন গুঞ্জনও রয়েছে জোরালোভাবে। শুধু তাই নয়, বাতিল হওয়া নির্বাচন পদ্ধতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এমন গুঞ্জনও শুরু হয়েছে। যদিও এসবে কোনো ভিত্তি রয়েছে মনে করেন না আওয়ামী লীগ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। তারা দাবি করেন, সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হবে। এ ইস্যুতে কোনো শক্তির সঙ্গেই আপস করবেন না আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দলটির সভাপতিম-লীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, কোনো দেশের চাওয়ায় বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন হবে না। দেশের মানুষের চাওয়া অনুযায়ী সংবিধানসম্মতভাবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, সবার মতো করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে বদ্ধপরিকর।
কূটনীতিসম্পৃক্ত আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের আরেক নেতা বলেন, দৃশ্যত যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সরকারের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে মনে করা হলেও সেপ্টেম্বরের আগে পশ্চিমা এ দেশটি তার চূড়ান্ত অবস্থান পরিষ্কার করবে না বলে তারা মনে করছেন। ওই নেতা বলেন, সেপ্টেম্বরে ভারত সফর রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। মূলত সেই সফরেই বোঝা যাবে সরকার কোনদিকে যাবে। এ নেতা আরও বলেন, ‘আমাদের ডিপ্লোম্যাসি (পররাষ্ট্রনীতি) পরস্পরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের নীতি। কূটনীতিতে প্রধানমন্ত্রী দেশি-বিদেশি অনেক নেতাকে ছাড়িয়ে গেছেন। সেই আস্থা-বিশ্বাসও প্রধানমন্ত্রীর ওপর আমাদের রয়েছে।’
এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিষ্কার হয়ে না ওঠায় সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতারা দাবি করতেন, দেশটিকে তারা বোঝাতে পেরেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সমালোচনা প্রমাণ করে না যে, ক্ষমতাধর দেশটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের বোঝাপড়া ঠিক আছে। যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি ঘোষণার পরই দেশটির অবস্থান আওয়ামী লীগের পক্ষে আছে এমন কথা কেউ আর বিশ্বাস করছে না।
আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা দেশ রূপান্তরকে বলেন, আমেরিকাকে মাইনাস ধরেই এগিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলটির শীর্ষ পর্যায়ের দুই নেতা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আগের চেয়ে বেশি স্পষ্ট হয়ে ওঠায় রাজনীতিতে তারা ‘ব্যাকফুটে’ চলে যাচ্ছেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমি একটাই বুঝি, একটাই জানি, আগামী নির্বাচন সংবিধানসম্মতভাবেই হবে। এ জায়গা থেকে একটুও নড়বে না সরকার।’