
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘জনগণ রাজনীতিবিদদের বিশ্বাস করে। আশায় বুক বাঁধে। তাদের সঙ্গে প্রতারণা করার মতো এত বড় পাপ, এত বড় অপরাধ বোধহয় আর কিছু নেই। আর এ সরকার জনগণের সঙ্গে সেই প্রতারণা করছে। আমাদের সংবিধানে সমাজতন্ত্রের কথা বলা আছে, কিন্তু আমরা মুক্ত বাজার অর্থনীতি চর্চা করছি।’
গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনে শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী সভাপতি ও নজরুল ইসলামকে মহাসচিব ঘোষণা করা হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে আন্দোলনে জয়ী হওয়া যায় না, ক্ষমতায় যাওয়া যায় না। এ বিষয়টি আওয়ামী লীগ জানার পরও তারা একই ভুল করছে। ক্ষমতা কি মানুষকে এতই অন্ধ করে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে কত কী করা হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ করা হবে। এখন স্মার্ট বাংলাদেশ করা হবে শুনেছি। যে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখেছি, অনাচার দেখেছি, অব্যবস্থাপনা দেখেছি। শেষ পর্যন্ত সে দেশে গণতন্ত্রহীনতা দেখেছি। একদলীয় শাসনব্যবস্থা দেখেছি। এগুলোর কোনোটাও সোনার মতো মূল্যবান নয়।’
সাবেক এ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বলা হচ্ছে দেশে গণতন্ত্র রয়েছে, কিন্তু গণতন্ত্র চর্চা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় ব্যবস্থা কায়েম করেছে, তারাই এখন গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন বলে দাবি করে। তখন কষ্ট হয়। গণতন্ত্র তো ক্ষমতায় যাওয়ার বাহন না। গণতন্ত্রের বাহন হলো নির্বাচন। নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। আপনারা সেই নির্বাচন ধ্বংস করে বলবেন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব; এটা বলতে পারেন না।’ তিনি বলেন, ‘সারা দেশে আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাত্র তিন মাসের মধ্যে আমাদের ১২-১৩ জন হত্যা করা হয়েছে। তারপরও আমাদের প্রত্যেকটা প্রোগ্রাম সফল হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী। কাউন্সিলে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ইবরাহীম, গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু প্রমুখ।
নদ-নদী, খাল-বিল কিংবা সাগরের পানি বাষ্পীভবন হয়ে তৈরি হয় মেঘ। তারপর হাওয়ায় উড়ে উড়ে যেখানে ঘনীভবনের অনুকূল পরিবেশ পায়, সেখানেই বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে মেঘ। প্রচুর গাছপালা আছে এমন পরিবেশ সৃষ্টি হয় বলেই সেখানে নিয়ম মেনে বৃষ্টি হয়। আর মরু অঞ্চলের আকাশে সারা বছর মেঘের ওড়াওড়ি থাকলেও ঘনীভবন হয় না বলে বৃষ্টি হয় খুবই কম। তবে বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির বিকাশের এ যুগে প্রকৃতির ওপর নির্ভর না করে বৃষ্টি নামাচ্ছে মানুষ। চীন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশেই অনেক আগে থেকে এমন চেষ্টা হচ্ছে। বড় পরিসরে না হলেও মেঘের ওপর লবণ ছিটিয়ে বৃষ্টি নামাতে পারছেন বিজ্ঞানীরা। কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি নামানোর এ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া আরেকটি দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। গত ১৫ বছর ধরে দেশটির রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে চলছে ইউএই রেইন এনহ্যান্সমেন্ট রিসার্চ প্রোগ্রাম। এর কারণে দেশটিতে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় ২৩ শতাংশ বেড়েছে।
দেশটির আবুধাবির জাতীয় আবহাওয়াবিদ্যা কেন্দ্রের আহমেদ আল কামালি নেতৃত্ব দিচ্ছেন এ প্রকল্পে। কামালি তার টিমকে আবহাওয়া সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য দিয়ে মেঘের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে স্পষ্ট পূর্বাভাসের দুঃসাহস দেখাচ্ছেন। তার নির্দেশনা মেনে বৃষ্টি নামানোর রসদ নিয়ে উড়োজাহাজ উড়িয়ে মেঘের দেশে যাচ্ছেন পাইলটরা। তেমনই এক পাইলট আন্ডার্স মার্ড। সুইডিশ এই বৈমানিক এখন মরুর দেশে বৃষ্টি নামানোর বিশাল কর্মযজ্ঞের এক অংশ। তার চেষ্টায় যখন উড়তে থাকা মেঘদল মরুর বুকে বৃষ্টি হয়ে ঝরে তখন এক ধরনের ভালোলাগা কাজ করে মার্ডের।
৫৭ বছর বয়সী সুইডিশ পাইলট জানান উড়োজাহাজের মাধ্যমে মেঘের ওপর সোডিয়াম ক্লোরাইড ও পটাশিয়াম ক্লোরাইড নিক্ষেপ করা হয়। সেই লবণের কণা মেঘের কণায় যোগ হয়ে ওজন বাড়ায়। ফলে বৃষ্টিপাত ঘটে। তিনি বলেন, পেশাদারি জীবনের বেশিরভাগ সময় আমি যাত্রীদের সুবিধার স্বার্থে মেঘ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি বলে ক্লাউড সিডিং আমার মতো মানুষের জন্য কিছুটা অস্বাভাবিক। এখন আমি মেঘের মধ্যে বিমান ওড়াই না, মেঘের ঠিক সীমানায় থাকি। তবে বিমান বেশ কেঁপে ওঠে। মার্ড বলেন, বিষয়টি আমার কাছে রোমাঞ্চকর, একই সঙ্গে একাধিক ঘটনা ঘটছে। বিমান চালাতে হবে, হিসাব করে মেঘের চারদিকে ঘুরতে হবে, যাতে ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় উপস্থিত থাকা যায়। এছাড়া মেঘের আকার ও বাতাসের দিক অনুযায়ী দিকনির্ণয় করাও জরুরি। এসব বিষয় মিলে গেলে বৃষ্টি হয়। এটা আমার জন্য সুখের বিষয়। মার্ড বলেন, এই কৌশলের কার্যকারিতা সম্পর্কে আমি নিশ্চিত। বলছি না যে ভবিষ্যতে অন্য কোনো পদ্ধতি সৃষ্টি হবে না, যা হয়তো আরও ভালো হবে। তবে এই মুহূর্তে আমার বর্তমান প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা রয়েছে।
আন্ডার্স মার্ডের মতো ক্লাউড সিডাররা যখন উড়োজাহাজ নিয়ে ওপরে ওঠে যান তখন ভূমি থেকে তাদের নির্দেশনা দেন আহমেদ আল কামালি। বেতার ব্যবস্থার মাধ্যমে পাইলটদের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি সম্ভাবনাময় কিউমুলাস মেঘ-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পাঠিয়ে দেন। তার নির্দেশ পেয়ে পাইলটরা কার্তুজ নিক্ষেপ করেন মেঘের রাজ্যে। তিনি জানান, গত ১৫ বছর ধরে এমন প্রচেষ্টার ফল যথেষ্ট উৎসাহব্যঞ্জক। ক্লাউড সিডিংয়ের দৌলতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বৃষ্টিপাত গড়ে প্রায় ২৩ শতাংশ বেড়েছে। সেরা পরিবেশ থাকলে সেই মাত্রা ৩৫ শতাংশও হতে পারে। কামালি, আন্ডার্স মার্ডরা হয়তো এই প্রক্রিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তন থামাতে পারবেন না, পানির সংকটও মেটাতে পারবেন না; তবে কঠিন সময়ে সামান্য পরিমাণ বাড়তি বৃষ্টির ব্যবস্থা করার মধ্যেও যথেষ্ট সার্থকতা রয়েছে, রয়েছে সুখও।
দেশে সদ্যবিদায়ী বছর ২০২২ সালে ৬ হাজার ৭৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ হাজার ৯৫১ জন প্রাণ হারিয়েছে। এ সময়ে আহত হয়েছে ১২ হাজার ৩৫৬ জন। এটি দেশে গত ৮ বছরের মধ্যে সড়কে সর্বোচ্চ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বলে জানিয়েছে যাত্রীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। একই সময়ে রেলপথে ৬০৬টি দুর্ঘটনায় ৫৫০ জন নিহত ও ২০১ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ২৬২টি দুর্ঘটনায় ৩৫৭ জন নিহত ও ৩৫৭ জন আহত এবং ৭৪৩ জন নিখোঁজ হয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌপথে ৭ হাজার ৬১৭টি দুর্ঘটনায় ১০ হাজার ৮৫৮ জন নিহত এবং ১২ হাজার ৮৭৫ জন আহত হয়েছে।
গতকাল সোমবার সংগঠনের দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের বার্ষিক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনার সংবাদ পর্যালোচনা করে প্রতি বছরের মতো এ প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ৬ হাজার ৭৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ হাজার ৯৫১ জন নিহত ও আহত হয়েছে ১২ হাজার ৩৫৬ জন। ২০২১ সালের চেয়ে গত বছর সড়কে দুর্ঘটনা ১৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ ও প্রাণহানি ২৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে। গত ৮ বছরে নিবন্ধিত যানবাহনের পাশাপাশি ছোট যানবাহন বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের সংখ্যা ৪ গুণ বেড়েছে। ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও ত্রি-হুইলার সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে অবাধে চলাচলের কারণে গত ৮ বছরের মধ্যে গত বছর সড়কে সর্বোচ্চ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, সড়কে নিহতদের মধ্যে ১১৪ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। তাদের মধ্যে ২৭ জন সেনাসদস্য, ৬৩ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন র্যাব সদস্য, ৯ জন বিজিবি সদস্য, ৫ জন নৌবাহিনীর সদস্য, ৮ জন আনসার সদস্য, ৩ জন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য, ১ জন বিমানবাহিনীর সদস্য, ১৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ২৪ জন সাংবাদিক, ৭০৩ জন নারী, ৫৮৮ জন শিশু, ৬৬৬ জন শিক্ষার্থী, ১১৭ জন শিক্ষক রয়েছেন। এ ছাড়া নিহতদের মধ্যে ২ হাজার ৩৮৩ জন চালক, ৪২১ জন পরিবহনশ্রমিক, ২৭ জন প্রকৌশলী, ৯ জন আইনজীবী, ৩১ জন চিকিৎসক এবং ১৩৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী রয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ৩ হাজার ৯০ জন চালক, ১ হাজার ৫০৩ জন পথচারী, ৭৪২ জন পরিবহনশ্রমিক, ৮৮৫ জন শিক্ষার্থী, ১৩২ জন শিক্ষক, ২৮৩ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ১ হাজার ১৫০ জন নারী, ৭৯৪ জন শিশু, ৪৪ জন সাংবাদিক, ৩১ জন চিকিৎসক, ১৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ৫ জন শিল্পী, ৯ জন আইনজীবী, ২৯ জন প্রকৌশলী এবং ১৬৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে সংগঠিত দুর্ঘটনায় ৯ হাজার ৬১৬টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এর মধ্যে ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ বাস, ২৪ দশমিক ৫০ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান ও লরি, ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ৬ দশমিক ২২ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ২৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১১ দশমিক ৪২ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৮ দশমিক ৩২ শতাংশ নসিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা রয়েছে।
সড়কে দুর্ঘটনার কারণও প্রতিবেদনে আলাদাভাবে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘটিত দুর্ঘটনার ৫২ দশমিক ৫৫ শতাংশ পথচারীকে গাড়িচাপা দেওয়া, ২১ দশমিক ৬১ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, শূন্য দশমিক ৪০ শতাংশ যানবাহনের চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে, শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষে এবং ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ বিবিধ কারণে হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের তুলনায় গত বছর সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়া যানবাহনের ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ বাস, ৩ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক, ২ দশমিক ৫১ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং শূন্য দশমিক ৭৮ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস। এ ছাড়া ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-লরি, ১ দশমিক ৩২ শতাংশ নসিমন-মাহিন্দ্রা-লেগুনা দুর্ঘটনা ২০২১ সালের চেয়ে কমেছে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত বছর সংঘটিত দুর্ঘটনার ২৭ দশমিক ৭০ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৫২ দশমিক ০২ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ ফিডার রোডে হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে হওয়া দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১ দশমিক ৭১ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে, শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে ঘটেছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী বছরে এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের চেয়ে ছোট যানবাহনের সংখ্যা কয়েক গুণ বৃদ্ধি এবং সেগুলো জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে অবাধে চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা বেড়েছে। এর মধ্যে আঞ্চলিক মহাসড়কে ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশ, জাতীয় মহাসড়কে ৩ দশমিক ৮১ শতাংশ, রেলক্রসিংয়ে শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশ দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ফিডার রোডে ৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ দুর্ঘটনা কমেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সেইফ রোড অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট অ্যালায়েন্সের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ আবদুল হক, সংগঠনের সহসভাপতি তাওহিদুল হক লিটন প্রমুখ।
বান্দরবানের লামায় ম্রোপাড়ায় হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শীতের রাতে হামলার সময় পাড়ার নারী-পুরুষ ও শিশুরা পালিয়ে প্রাণে বাঁচলেও তাদের ঘরবাড়ি থেকে মূল্যবান সব মালামালের পাশাপাশি এমনকি কাপড়চোপড়ও হামলাকারীরা নিয়ে যায়। গত রবিবার মধ্যরাতে সরইয়ের রেংয়েনপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
পাড়াবাসীদের অভিযোগ, ট্রাকভর্তি শতাধিক লোক এসে তাদের ওপর হামলা চালায়। তাদের উচ্ছেদ করে জমি দখলের জন্য এ হামলা চালিয়েছে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ভাড়া করা লোকজন। তবে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের কর্মকর্তারা।
এর আগে গত বছর ২৬ এপ্রিল রেংয়েনপাড়া, লাংকমপাড়া ও জয়চন্দ্র ত্রিপুরাপাড়ায় ৩৫০ একর জুমের জমি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল লামা রবার ইন্ডাস্ট্রিজের বিরুদ্ধে। সে সময় কোম্পানিটির সংশ্লিষ্ট কর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলায় কয়েকজন গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার এবং ম্রো ও ত্রিপুরাদের পুনর্বাসনের জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছিল।
ম্রোপাড়ার বাসিন্দারা অভিযোগ করে জানান, রবিবার রাত ১টার দিকে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের ট্রাকভর্তি শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে আসে। তারা ‘ধর ধর, ম্রো ধর’ বলে চিৎকার করতে করতে পাড়ার বাড়িঘরে হামলা শুরু করে। ট্রাকের শব্দ ও হামলাকারীদের চিৎকার শুনে পাড়াবাসী ঘুম থেকে জেগে যে যেভাবে পারেন জঙ্গলে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। হামলাকারীরা পাড়ার বাসিন্দাদের ছাগল, হাঁস, মুরগি, কম্বল, সৌরবিদ্যুতের প্যানেলসহ যা পেয়েছে, সবই লুট করে নিয়ে যায়।
হামলার বর্ণনা দিয়ে ডলুছড়ি মৌজার হেডম্যান জোহান ত্রিপুরা বলেন, ‘গভীর রাতে ১০-১৫ জন মুখোশধারী সন্ত্রাসী রেয়াংপাড়ায় গিয়ে প্রথমে কামরুম মুরুং, চিংচং মুরুং ও রেঙইয়াং মুরুংয়ের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আরও ১০টি বসতঘর ভাঙচুর ও মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।’
পাড়ার আরেক বাসিন্দা রেঙয়েন কারবারি বলেন, ‘রাতে আমরা ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। পাড়াবাসীর চিৎকারে ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি কয়েকটি ঘরে আগুন জ্বলছে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে তখন বাড়ির পাশের ঝোপে লুকিয়ে থাকি। হামলাকারীরা অনেক কিছু লুট করে নিয়ে গেছে।’
পাড়াবাসীর অভিযোগ, পাড়ার বেশিরভাগ মানুষ জুমচাষ, বাগান ও দিনমজুরি করে সংসার চালায়। তাদের চাষ করা জমিগুলো দখলের জন্য কয়েক বছর ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা সদস্য মো. আবদুল মালেক বলেন, ‘ম্রোদের সঙ্গে আমাদের ভূমির বিরোধ আছে সত্য। কিন্তু গভীর রাতে আমাদের পক্ষে ঘটনাস্থলে যাওয়া তো দূরে থাক, ম্রোদের সশস্ত্র পাহারার কারণে আমরা দিনের বেলায় পর্যন্ত ওখানে যেতে পারি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদিন থেকে ম্রো ও ত্রিপুরারা লামা রাবার লিমিটেডের সৃজিত বাগানের নানা প্রজাতির বৃক্ষ নিধন করে বসতি নির্মাণ করছিলেন। আমরা এ বিষয়ে লামা থানায় অভিযোগ দাখিল করলে পুলিশ তাদের বাগানের গাছ কেটে বসতি নির্মাণ করতে বাধা দেন। এ কারণে হয়তো তারা নিজেরা অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে লামা রাবার কোম্পানিকে ফাঁসাতে চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাই।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে লামা থানার ওসি শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘পাড়ার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া ও লুটপাটের বিষয়টি ম্রোরা জানিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পূর্বাচল উপশহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের স্থায়ী প্যাভিলিয়নে বসেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৭তম আসর। গতবারের চেয়ে এবারের আসর আরও বেশি জাঁকজমকপূর্ণভাবে সাজিয়েছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। গত পহেলা জানুয়ারি মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেলা উদ্বোধনের পর দর্শনার্থী উপস্থিতি তেমন না থাকলেও দ্বিতীয় দিন গতকাল সোমবার দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে দ্বিতীয় দিনেও ৩০ শতাংশ স্টলের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। যে কারণে হতাশা নিয়ে মেলা থেকে ফেরেন দর্শনার্থীরা।
ইবিপির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গত বছর বাণিজ্যমেলার ২৬তম আসরে মোট ২২৫টি দোকান বরাদ্দ দেওয়া হলেও এ বছর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩৩১টি। যার মধ্যে ছোট-বড় মিলিয়ে প্যাভিলিয়ন রয়েছে ৫৭টি। এবারের মেলায় ভারত, পাকিস্তান, হংক ও তুরস্কসহ অন্তত ১২টি দেশের ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করছেন। এবার মেলার প্রধান ফটক করা হয়েছে মেট্রোরেলের আদলে। এই আসরে মেলার আয়তনও বাড়ানো হয়েছে অনেকটা। সবমিলিয়ে মেলা সফল করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইপিবি। মেলায় প্রবেশ ফি ৪০ টাকা, শিশুদের জন্য তা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা। শারীরিক প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোনো প্রবেশ ফি নেই। নিরাপত্তার স্বার্থে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে মেলার প্রতিটি অংশে।
সরেজমিনে গতকাল দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতেই মেলায় দর্শনার্থীর ভিড় দেখা গেছে। তবে মেলার মূল ভবনের পশ্চিমাংশের বেশিরভাগ স্টলের নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। হাতুড়ির ঠুব ঠাক শব্দে মুখরিত ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। মূল ভবনের পূর্বপাশে ইলেকট্রনিকস, কসমেটিকস ও ফার্নিচারের শো-রুমের জন্য জায়গা দেওয়া হয়েছে। এখনো বেশকিছু ফার্নিচারের দোকানের নির্মাণকাজ চলছে। এছাড়া বেশকিছু দোকানের নির্মাণকাজ শেষ হলেও মালামাল সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায় কর্মীদের। মেলার মূল ভবনের পেছনে নির্মাণকাজের জন্য ব্যবহৃত কাঠ-বাঁশসহ বিভিন্ন সামগ্রী পড়ে থাকতে দেখা যায়। যে কারণে মেলার সৌন্দর্য অনেকটাই নষ্ট হচ্ছে। তবে আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে সবগুলো স্টলের নির্মাণকাজ শেষ হয়ে যাবে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
মেলায় আসা একাধিক দর্শনার্থী দেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রতি বছরই অপ্রস্তুত অবস্থায় মেলা শুরু করা হয়। মেলা শুরু হয়ে যাওয়ার পরও নির্মাণকাজ চলে, যা খুবই হতাশাজনক। দর্শনার্থীরা দূরদূরান্ত থেকে মেলায় ঘুরতে আসেন। কিন্তু টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ভেতরে ঢুকে মেলা প্রাঙ্গণ অপ্রস্তুত দেখতে পাওয়াটা দুঃখজনক। মেলা শুরুর আগেই সব স্টলের নির্মাণকাজ যাতে শেষ হয় সে বিষয়ে কড়া নজরদারি রাখা উচিত ইপিবি কর্র্তৃপক্ষের।
মেলার মাঠে এই প্রতিবেদকের কথা হয় রাজধানীর উত্তরা থেকে আসা আদনানুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে আজ মেলায় ঘুরতে এসেছিলাম। মেলার সামনের দিকের পরিবেশ অনেক চাকচিক্যময় ও সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। তবে মেলার অনেক অংশে এখনো অনেক দোকানের নির্মাণকাজ চলছে। যা আমাদের জন্য খুবই হতাশাজনক। মেলা উদ্বোধনের পরও যদি নির্মাণকাজ চালাতে হয় তাহলে মেলা শুরুর আগে তারা কী করেছে?’
কথা হয় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থেকে আসা আনিশার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বান্ধবীদের সঙ্গে মেলায় ঘুরতে এসেছি। এসে দেখি মেলার মাঠ এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত না। তাই হতাশা নিয়েই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। এছাড়া মেলার দোকানগুলোতে কসমেটিকস ও অন্যান্য পণ্যের দাম তুলনামূলক অনেক বেশি মনে হচ্ছে। যেটি হতাশ করেছে আমাদের। এছাড়া মেলায় আসতে এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাসে দীর্ঘ যানজট পেয়েছি।’
দোকানের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, ঢাকা থেকে মেলা পূর্বাচলে স্থানান্তর হওয়ায় তাদের জন্য কিছুটা অসুবিধা হয়েছে। দোকানের জন্য কর্মচারী নিয়োগ এবং মালামাল আনা-নেওয়ার ঝামেলার কারণে অনেকেরই দোকান নির্মাণে কিছুটা দেরি হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ইপিবির সচিব ইফতেখার আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, ‘প্রতি বছরই মেলা শুরুর দুই-তিনদিন পর স্টল নির্মাণ সম্পন্ন হয়। আশা করি শুক্রবারের মধ্যে মেলার সব স্টল নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে যাবে। তবে গত পহেলা ডিসেম্বরেই আমি সব স্টল মালিককে নির্মাণকাজ শুরু করে দিতে বলেছিলাম। তারা দেরি করেছে। আমরা এ বছর সঠিক সময়েই সব কাজ সম্পন্ন করেছি।’
আগামীকাল বুধবার গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হবে। এ উপনির্বাচনে কেন্দ্রেগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ থেকে ১৭ জন মোতায়েন করা হবে। গতকাল সোমবার ইসির যুগ্মসচিব এসএম আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
আসাদুজ্জআমান জানান, ভোটকেন্দ্র পাহারায় পুলিশ, অঙ্গীভূত আনসার ও গ্রাম পুলিশ ভোটের আগে-পরে চারদিনের জন্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের ছয়টি ভ্রাম্যমাণ ও চারটি স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটের মাঠে থাকবে। অন্যদিকে চার প্লাটুন বিজিবি ও র্যাবের ৯টি টিম আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া ৯জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দুজন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ সম্পন্ন করবেন।
এদিকে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটের এলাকায় তিন দিনের (৭২ ঘণ্টা) জন্য মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইসি । গতকাল রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। এছাড়া ট্রাক, পিকআপ ভ্যান চলাচল বন্ধ থাকবে ৩ জানুয়ারি রাত ১২ টা থেকে ৪ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে প্রার্থী ও তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল থাকবে।
এছাড়া সাংবাদিক, নির্বাচনে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পরিদর্শক, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কাজের জন্য যানবাহন চলাচলে ওই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনেও সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা শিথিলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।
এ উপনির্বাচনে মাহমুদ হাসান রিপন (আওয়ামী লীগ), এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু (জাতীয় পার্টি), অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম (বিকল্প ধারা), নাহিদুজ্জামান নিশাদ (স্বতন্ত্র) ও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান (স্বতন্ত্র) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সাঘাটা ও ফুলছড়ি দুটি উপজেলা নিয়ে এ সংসদীয় আসন গঠিত। এ আসনে ভোটার ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে ফুলছড়ির সাতটি ইউনিয়নে ১ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৬ জন এবং সাঘাটার ১০টি ইউনিয়নে ২ লাখ ২৫ হাজার ৭০ জন।
গত ১২ অক্টোবর এ আসনের উপনির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের কারণে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেয় ইসি। পরে ৪ জানুয়ারি ভোটের নতুন তারিখ দেয় সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৫ আসনটি শূন্য হয়।
নির্ধারিত সময় পেরিয়েছে। ১০ জনের ব্রাজিল। তবুও এগিয়ে ২-০ গোলে। খেলা গড়ায় ইঞ্জুরি টাইমে। তখনই যেন বেড়ে যায় সেলেসাওদের গতি। মিনিট কয়েকের মুহূর্তে ব্যবধান দাঁড়ায় ৪-০ গোলে। তবে প্রতিপক্ষ তিউনিশিয়াও কম যায় না। হাল ছাড়েনি তারা। শেষ মুহূর্ত অবধি লড়ে গেছে। তাতে আদায় করেছে একটি গোল। যদিও সেই গোল তাদের নিয়ে যেতে পারেনি পরের ধাপে।
যুব বিশ্বকাপে আন্দ্রে সান্তোসের জোড়া গোলে ম্যারাডোনার মাঠে উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিশিয়ার বিপক্ষে ৪-০ গোলের জয় পেয়েছে ব্রাজিল। এতে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে সেলেসাওরা।
ডিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা মাল্টি পারপাস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত শেষ ষোলোর খেলার পুরোটা সময় বলের দখলটা বেশি ছিল তিউনিশিয়ার পায়েই। আক্রমণের ধারও ছিল ভালো। গোলের সুযোগও অনেকগুলো সৃষ্টি হয়েছিল। তবু ফিনিশারদের ছিল ব্যর্থতা। আর সেটা কাজে লাগিয়েছেন ব্রাজিলের যুবারা। শুরুটা অবশ্য তিউনিশিয়ার কল্যাণেই।
খেলার ১১ মিনিটে পেনালটি পেয়ে যায় ব্রাজিল যুবারা। সেখান থেকে গোল আদায় করে নেন মার্কোস লিওনার্দো। ৩১ মিনিটে এই লিওনার্দো ফের দলকে এগিয়ে দেন। তবে এবার আর তিনি গোল করেননি, তবে করিয়েছেন। তার পাস থেকে পায়ে বল নিয়ে তিউনিশিয়ার জালে জড়ান আন্দ্রে সান্তোস।
২-০ গোলের ব্যবধান পেয়ে হৈ হৈ করতে করতে বিরতিতে যেতে পারত ব্রাজিল। কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ বাঁশিটা বাজার আগ মুহূর্তেই লাল কার্ড দেখেন রবার্ট রেনান। তার এমন কাণ্ডে ১০ জনের দলে পরিণত হয় ব্রাজিল।
তাতে অবশ্য পরের অর্ধের নির্ধারিত সময়ে কোনো ছাপ পড়তে দেখা যায়নি। ব্যবধানটা যে তখনও ২-০ তেই ছিল। তবে ৯১ মিনিটে ফের গোল আদায় করে ফেলে ব্রাজিল। এবার ম্যাথুস মার্টিনস। তার ৯ মিনিট পর আন্দ্রে সান্তোস নিজের দ্বিতীয় গোল আদায় করে নেন। চার গোলে এগিয়ে থেকে ব্রাজিল যখন জয়ের অপেক্ষা করছিল, ঠিক তখনই ১০৩ মিনিটের সময় প্রথম গোলটি হজম করে সেলেসাওরা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপ আর নির্বাচনী তাপের মধ্যেই আজ জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব পেশ করা হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদের শেষ বাজেট এটি। অনেক যোগ-বিয়োগ কষে বাজেট প্রণয়নের শেষ সময়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রস্তাবিত বাজেটে নির্বাচনী চমক হিসেবে বড় মাপের ব্যবসায়ীদের খুশি করতে সম্পূর্ণ নতুন পথে হেঁটেছেন। ভর্তুকি নাম দিয়ে বড় অঙ্কের ‘কর ছাড়’ দিয়েছেন। অথচ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে রাজস্ব জাল বিছিয়ে সাধারণ আয়ের মানুষকে আটকে ফেললেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো প্রস্তাবিত বাজেট সারসংক্ষেপ, ভর্তুকির নামে ‘কর ছাড়’কে বৈশি^ক মন্দা মোকাবিলার ঢাল হিসেবে উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী। এ পদক্ষেপের পরোক্ষ প্রভাবে বাজারে পণ্যের দাম কমার গতিরোধ করবে বলেও সরকারপ্রধানকে জানিয়েছেন।
তবে অর্থনীতির বিশ্লেষকরা বলেছেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটে ছোটদের কর পরিশোধে চেপে ধরলেও কৌশলে বড় মাপের ব্যবসায়ীদের ঠিকই খুশি করলেন অর্থমন্ত্রী। এ পদক্ষেপের ফলে বাজারে জিনিসপত্রের দাম কমায় খুব বেশি প্রভাব পড়বে এমন আশা করা কঠিন।
এনবিআরের সাবেক সদস্য কর-বিশ্লেষক ড. আমিনুল করিম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আইএমএফের কাছ থেকে কর অব্যাহতি ও কর অবকাশ সুবিধা কমানোর চাপ আছে। এ শর্ত না মানলে ঋণের কিস্তি দেওয়া বন্ধ করা হতে পারে। অন্যদিকে নির্বাচনের আগের বাজেট হওয়ায় বড় মাপের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার চাপ আছে। বিভিন্নমুখী চাপে সরকার সব পক্ষকে খুশি করতেই আগামীতে কৌশলে কর ছাড় রাখছে ভর্তুকির নাম দিয়ে। অন্যদিকে সাধারণ আয়ের মানুষের ওপর কিন্তু ন্যূনতম কর ধার্য করার কথা শুনছি। অনেক মানুষকে রাজস্বের আওতায় আনার কথাও শুনেছি। এভাবে ছোটদের ওপর ঠিকই কর পরিশোধে চাপ বাড়াল।’
একই মত জানিয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের দেশের বড় মাপের ব্যবসায়ীদের অনেকে সরাসরি রাজনীতি করেন। অনেকে রাজনীতি না করলেও সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রেখে চলেন। এরা সমাজের প্রভাবশালী। বাজেট প্রণয়নকালেই এরা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করে নিজেদের পক্ষে সুবিধামতো অনেক কিছু আদায় করে নেন। এবারও তাই হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কৌশলে বড় মাপের ব্যবসায়ীদের খুশি করার চেষ্টা করা হয়েছে। এভাবে আইএমএফের জেরার মুখে বলার সুযোগ থাকছে যে কর ছাড় ও ভর্তুকি দুই হিসাব এক করেছি।’
সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেকে আশায় আছেন এবারের বাজেটে অর্থমন্ত্রী হয়তো জীবনযাত্রার ব্যয় কমাতে সূত্র কষবেন। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার এ বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বড় কোনো রক্ষাকবচ রাখলেন না। কৌশলী অর্থমন্ত্রী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে দেওয়া কথা রেখেছেন। সাধারণ মানুষকে রাজস্ব জালে আটকে ফেলার ছক করেছেন। মূল বাজেটের আকার বাড়ানোর সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারের আয়ের হিসাবও বাড়ানো হয়েছে। রাজস্ব আয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। এখানে কর খাত থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছ থেকে চলতিবারের তুলনায় ৬০ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা করলেন। এনবিআরবহির্ভূত খাত থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে করবহির্ভূত খাত থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা আদায় করা হবে। শেষ সময়ের হিসাবকষে শত সংকটের বাজেটে অর্থমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের খুশি করার চেষ্টা করেছেন।
আগামী বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী কর ছাড়সহ ২ লাখ ৮৯ হাজার ২২৮ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব করবেন। জাতীয় বাজেটে নিয়মিত ভর্তুকি হিসাবে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা রাখার কথা আছে। বাকিটা প্রত্যক্ষ কর ছাড় দিয়ে ভর্তুকি খাতে অন্তর্ভুক্তি হিসেবে রাখা হয়েছে। প্রত্যক্ষ কর ব্যয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বেতনসহ অন্য খাতে ৭৭ হাজার ২১৮ কোটি বা মোট কর ছাড়ের ক্ষুদ্রঋণ খাতে ১২ শতাংশ বা ১৫ হাজার ৩১৫ কোটি, প্রবাসী আয় খাতে ৯ শতাংশ বা ১১ হাজার ২৮৭ কোটি, বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি খাতে ৭ শতাংশ বা ৮ হাজার ৩৮০ কোটি, অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাই-টেক শিল্প খাতে ৪ শতাংশ বা ৪ হাজার ৬১২ কোটি, গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল ৩ শতাংশ বা ৩ হাজার ৪৩৮ কোটি, পোলট্রি ও মৎস্য খাতে ২ শতাংশ বা ৩ হাজার ১২০ কোটি, আইটি এবং সফটওয়্যার খাতে ১ শতাংশ বা ১ হাজার ৪৭৭ কোটি এবং পুঁজিবাজার খাতে ১ শতাংশ বা ৯৬৬ কোটি টাকা।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইস মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এ যেন পুরনো বোতলে নতুন পানীয়। বড়দেরই বিভিন্ন কৌশলে সুবিধা দেওয়া হলো।’
অর্থমন্ত্রী রাজস্ব আদায়ের কৌশল হিসেবে বড় সুবিধা দিলেও ইটিআইএন গ্রহণ ও রিটার্ন দাখিলে কঠোরতা এনেছেন। ইটিআইএন না নিলে ৪০ ধরনের সেবা এবং রিটার্ন দাখিলের সিøপ না নিলে ৩৮ ধরনের সেবা দেওয়া হবে না। এতদিন ইটিআইএন নিয়েও অনেকে করযোগ্য আয় না থাকলে শুধু রিটার্ন দাখিল করেছে, একটি টাকার কর দিতে হয়নি। আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত অর্থ বিল বিশ্লেষণ করে বলা যায়, ১ জুলাই থেকে করযোগ্য আয় না থাকলেও ২ হাজার টাকা ন্যূনতম কর দিতে হবে।
সাধারণ আয়ের অনেক করদাতা বলেছেন, খাবারের খরচ অনেক বেড়েছে। বাসা ভাড়া, যাতায়াত, চিকিৎসা সবকিছুই এখন বেশি। এর মধ্যে সাধারণ আয়ের ওপর কর পরিশোধে চাপ দেওয়া হলে ভোগান্তি বাড়বে। সাধারণ মানুষকে কর পরিশোধে বাধ্য করলেও সম্পদশালীদের রাজস্ব ফাঁকি কমাতে, বকেয়া আদায়ে এবং অর্থ পাচার রোধে জোরালো কিছু রাখা হয়নি। এনবিআরের সক্ষমতা বাড়াতেও পুরনো পথেই হেঁটেছেন অর্থমন্ত্রী।
আগামী অর্থবছর থেকে রিটার্ন জমা দিতে দেরি হলে বেশি হারে জরিমানা দিতে হবে। বাজেটে আইন করে জরিমানার পরিমাণ প্রদেয় করের পরিমাণ দ্বিগুণ ৪ শতাংশ নির্ধারণে প্রস্তাব করা হয়েছে।
বড়রা সুবিধা দিয়ে রাজস্ব আদায়ে চাপ বাড়ানোয় জীবনযাত্রার অনেক খাতেই খরচ বাড়বে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি কমাতেও বাজেটে রাখা হয়নি কিছু। আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজারের অস্থিরতা কবে কমবে তা নিয়ে রয়েছে অশ্চিয়তা। তাই গত মাস ছয়েক থেকে বেশি দামে বিক্রি হওয়া চাল, ডাল, আট, ময়দা, ভোজ্য তেল, লবণ, চিনি, মাছ, মাংসসহ সব ধরনের খাবারের দাম আপাতত কমছে না। চিকিৎসা, যাতায়াত, শিক্ষাসহ খাদ্যবহির্ভূত ব্যয়ও কমবে না। গত (নভেম্বর ২০২২-এপ্রিল ২০২৩) ছয় মাসের সাধারণ মূল্যস্ফীতির গড় হার ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বিশেষ কোনো চাপ নেই, অর্থনৈতিক উন্নয়ন গতিশীল রাখতে এবারের বাজেটে থাকছে ধারাবাহিকতা।
আজ বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেলে ঘোষিত হতে যাওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটকে 'গরিববান্ধব' উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আরও বলেন, সবাইকে নিয়ে সবার জন্য বাজেট ঠিক করা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তার আকার বড় হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১ জুন) রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে জাতীয় সংসদ ভবনে যাত্রার প্রাক্কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাজেট সম্পর্কে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিকেলে জাতীয় সংসদে সাত লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করবেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের লক্ষ্য স্থির করেছে সরকার। সেখানে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে মোট বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা জিডিপির ৩৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে, এমন আশা করছেন অর্থমন্ত্রী।
বাজেটে ৫ লাখ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেট ঘাটতি হতে পারে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। রবিবার (৪ জুন) থেকে সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হবে।
রোমাঞ্চকর ফাইনালে মোহামেডানকে ১৪ বছর পর ফেডারেশন কাপ শিরোপা এনে দেওয়ার অন্যতম নায়ক আহসান আহমেদ বিপু। দীর্ঘদিন সাদা-কালোদের হয়ে খেলা এই গোলরক্ষক কাল দেশ রূপান্তরের শিহাব উদ্দিনকে জানালেন আবাহনীর বিপক্ষে উত্তেজনার ম্যাচে চাপ মাথায় নিয়ে নামা ও পেনাল্টি ভাগ্যে জয়ী হওয়ার পেছনের গল্প…
এত বড় ফাইনালে হঠাৎ করে বদলি হিসেবে নামলেন। এটা কি আপনার জন্য চাপ হয়েছিল?
বিপু : চাপ তো অবশ্যই। গোল আর গোল, ফাইনাল, প্রতিপক্ষ আবাহনী। মানসম্মানের ব্যাপার। এটা কিন্তু একটা ফাইনাল না শুধু, সম্মানেরও ব্যাপার। চাপ তো অবশ্যই ছিল।
তো এই চাপটা সামলালেন কীভাবে?
বিপু : সত্যি বলতে আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস ছিল যে আমরা কামব্যাক করতে পারব। শুধু আমি একা না পুরো দল, হাফটাইমে যখন ২ গোল হয়, আমরা ডাগআউটে একজনও হতাশার কথা বলিনি। আমরা চরম বিশ্বাসী ছিলাম যে এখান থেকে ম্যাচ ঘুরানো সম্ভব। আমাদের অধিনায়ক দিয়াবাতে আত্মবিশ্বাসী ছিল যে ম্যাচে ফেরা সম্ভব।
কিন্তু নামার পরপরই তো একটা গোল হজম করলেন। তাতে কি চাপ বাড়েনি?
বিপু : না বাড়েনি কারণ গতকাল যে ৮টা গোল হয়েছিল তার মধ্যে সবচেয়ে সেরা গোল ছিল ওটা। গোলটা সত্যি বলব আমি নিজের ভুলে হজম করেছি। হাতেও লেগেছিল কিন্তু আটকাতে পারিনি।
পরে তো পেনাল্টি মানে ভাগ্য পরীক্ষাতেও নামতে হলো? তার মানে আপনার ওপর সবার বিশ্বাস ছিল?
বিপু : ওটা জানি না, এটুক বলতে পারি আমাদের কোচিং স্টাফ আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছিল। যেহেতু ফাইনাল, পেনাল্টির একটা সম্ভাবনা তো থাকেই। তো আমাদের আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া ছিল, গোলরক্ষক কোচ কানন ভাই আমাদের নিয়ে পেনাল্টির আলাদা কাজ করেছিলেন। কিছু বিষয় যেমন শুট নেওয়ার আগ মুহূর্ত মানে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করা। আর নিজেও একটু চিন্তাভাবনা রেখেছিলাম। তো প্রস্তুতি আগে থেকেই ছিল। চাপ নেওয়ার ব্যাপারটা আসলে আমি স্বাভাবিক ছিলাম। বেশি কিছু চিন্তা করিনি। এমন সময়গুলোতে বেশি চিন্তা করলে উল্টো চাপে পড়ে যেতে হয়।
পেনাল্টি নিয়ে প্রস্তুতির কথা বলছিলেন। আগে থেকেই কি পেনাল্টির প্রস্তুতি ছিল?
বিপু : সে রকম না। কারণ ফাইনালে আগে থেকেই তো বলা যায় না যে পেনাল্টি হবেই। তবে আমাকে খেলার আগে থেকেই মানে ফাইনালের আগেই বলা হয়েছিল যে খেলা যদি ড্রয়ের দিকে যায় তাহলে নামতে হতে পারে। সেই প্রস্তুতি নেওয়া ছিল। তবে পেনাল্টির একটু আগে নামতে হয়েছিল আরকি।
পেনাল্টিতে দুটো সেভ করলেন। এটা কীভাবে সম্ভব হলো। কী ভাবছিলেন ডাইভ দেওয়ার আগে?
বিপু : সত্যি বলছি আমার কোনো চিন্তাই ছিল না। হয়ে গেছে। আল্লাহ মিলিয়ে দিয়েছেন, এখানে আমার কিছু নেই।
বিশ্বকাপ ফাইনালেও তো পেনাল্টি হয়েছিল। তা তো দেখেছেন। নিজের পেনাল্টি মুখোমুখি হওয়ার সময় ওই রকম কিছু মনে হচ্ছিল?
বিপু : না, ওরকম কিছু না। আমি আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রেখেছিলাম। আর মনে মনে ভাবছিলাম যে দলের জন্য কিছু করতেই হবে। আমি বলতে পারি এই দলটার মধ্যে সবচেয়ে পুরনো খেলোয়াড় কিন্তু আমি। আমি দীর্ঘদিন মোহামেডানে খেলেছি। মোহামেডান থেকে সুপার কাপ জিতেছি, স্বাধীনতা কাপ জিতেছি। তো ক্লাবের জন্য কিছু করার তাগিদটা ছিল।
পেনাল্টিতে প্রথম সেভ করার পর আপনার সাহস কি বেড়ে গিয়েছিল?
বিপু : সাহস তো বেড়েছেই। প্রথম সেভটা যখন করি তখন আমার টিম মেটরাও মানসিকভাবে এগিয়ে গেছে। এরপর আমাদের অধিনায়ক গোল করল। প্রথম গোল করা মানে মানসিকভাবে এগিয়ে থাকা। রাফায়েল কিন্তু আবাহনীর অনেক বড় ব্র্যান্ড। হতে পারে কলিনদ্রেস নামের বিচারে ভারী কিন্তু রাফায়েল এগিয়ে।
প্রথমটা তো সেভ করলেন দ্বিতীয় পেনাল্টি সেভের আগে কী ভাবনা হচ্ছিল আপনার। দ্বিতীয়টা সহজ হয় না কঠিন?
বিপু : ওটা ফিফটি-ফিফটি ছিল। কলিনদ্রেস একটু অপেক্ষা করছিল মারার সময় তাই আমিও ওয়েট করলাম। আর সফল হই। কলিনদ্রেসের শটটা কিন্তু যথেষ্ট পাওয়ারফুল ছিল। আমি সঠিক দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। আর রাফায়েল একটু স্লো শট নেয় সবসময়। আর সবসময় একটু জার্ক করে বাঁদিকে শট নেয়, কাল নিয়েছিল ডানদিকে। আমি অপেক্ষা করায় সঠিক দিকে ডাইভ দিতে পেরেছি।
আচ্ছা আপনার পছন্দের গোলকিপার কে?
বিপু : পিওতর চেক।
বিশেষ কোনো কারণ আছে ওকে পছন্দ করার?
বিপু : ঠিক কেন সেটা বলতে পারব না। তবে ওর সেভগুলো আমার ভালো লাগে। এখন অনেক গোলরক্ষক থাকতে পারে, চেক আমার কাছে এখনো সেরা। বিশেষ করে একটা সেভ দেখেছিলাম ও মাটিতে পড়ে গিয়েও কীভাবে যেন হাত দিয়ে বল ফিরিয়েছিল। চেলসিতে থাকা অবস্থায় সম্ভবত। এছাড়া শুধু একটা না আরও অনেক সেভ করেছে সে। আর একটা ব্যাপার হলো তার ইনজুরির পরও যেভাবে সে খেলা চালিয়ে গেছে এটা আমাকে উজ্জীবিত করে। আমিও ইনজুরির পর খেলছি, ২০১৮-১৯ এ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বসুন্ধরার সঙ্গে ফেডারেশন কাপের ম্যাচ খেলার সময় আমার হাত ভেঙেছিল। এখনো হাতে প্লেট লাগানো আছে।
নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
বিপু : আমার কোনো নিজস্ব লক্ষ্য নেই। আমি খেলে যেতে চাই। কোচরা জানেন আমাকে কোথায় খেলাবেন। জাতীয় দলে খেলার ইচ্ছা তো সবারই থাকে কিন্তু আমি সেই লক্ষ্য নিয়ে আগাতে চাই না। হলে এমনিতেই হবে।
অনেক বছর পর মোহামেডান শিরোপা জিতল। এই ধারা অব্যাহত রেখে সামনেরবার কী লক্ষ্য রাখছেন?
বিপু : গত বছর আমরা সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়ে গিয়েছিলাম সেখানে রেফারিংয়ের কিছু ব্যাপার ছিল আপনারা সবাই দেখেছেন। ইনশাআল্লাহ এই ধারা অব্যাহত থাকবে। আমাদের ফল তো আগের থেকে ভালো হচ্ছে। এটা বড় আত্মবিশ্বাসের কারণ।
দেশের ৬০টি জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এতে দিনের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। এ ছাড়া দেশজুড়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ আরও দুই দিন থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আজ বৃহস্পতিবার (১ জুন) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, ঢাকা বিভাগের ১৩টি, খুলনার ১০টি, রাজশাহীর আটটি, বরিশালের ছয়, রংপুরের আটটি, সিলেটের চার ও ময়মনসিংহ বিভাগের চারটি জেলাসহ চট্টগ্রাম, সীতাকুণ্ড, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা বিস্তার লাভ করতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
আগামী দুই দিনে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু টেকনাফ উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে এবং বিদ্যমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানান এই আবহাওয়াবিদ।
তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।