
চার দিন বাংলা একাডেমি মুখরিত ছিল ঢাকা লিট ফেস্টের দশম আয়োজনে। পর্দা নামল রবিবার সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতে। দেশি-বিদেশি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক-সাহিত্যিক-বিজ্ঞানী-খেলোয়াড়-অভিনয়শিল্পী নিয়ে প্রায় ১৫০টি সেশনে শিল্প-সাহিত্য নিয়ে বিবিধ আলোচনা হয় চার দিনে। বিভিন্ন দেশের এবং বিভিন্ন ভাষার লেখক-সাহিত্যিকদের পাশাপাশি বাংলাদেশি প্রায় শ তিনেক লেখক-সাহিত্যিক-শিল্পী অংশগ্রহণ করেন আলোচিত ঢাকা লিট ফেস্টের আলোচিত এই আয়োজনে। ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে গত দিনগুলোতে খুব অল্প সময়ের জন্য উপস্থিত থাকতে পেরেছি এবং বোঝার চেষ্টা করেছি এই উৎসব নিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাস, ভালো লাগা বা খারাপ লাগার বিষয়গুলো। কিছু কিছু সেশনে উপস্থিত থেকে একজন লেখক হিসেবে উপকৃত হইনি, এটাও নির্দ্বিধায় বলতে পারি না।
মূলত চতুর্থ দিনের অভিজ্ঞতা নিয়েই লিখব। এর আগে লিট ফেস্ট নিয়ে উত্থাপিত কিছু প্রাসঙ্গিক আলোচনা করে নিতে চাই। দশ বা তারও কিছু বেশি সময় ধরে ঢাকা লিট ফেস্টের এ আয়োজনটি হয়ে আসছে। যদিও করোনার কারণে মাঝের দুই বছর বন্ধ ছিল। প্রতিবারই আয়োজনের সময় বিভিন্ন প্রকাশমাধ্যমে এই আয়োজন আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এবারের আয়োজন তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে একটা বিষয়ে, সেটা হলো অনুষ্ঠানে প্রবেশমূল্য রাখাকে কেন্দ্র করে। এবারই প্রথম এন্ট্রি ফি বা প্রবেশমূল্য রাখা হয়, যা নিয়ে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এমনকি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক একপর্যায়ে ‘এন্ট্রি ফি নেওয়া হবে জানেন না’ এমনও বলেন। তবে দ্বিতীয় দিন থেকেই ছাত্রদের এন্ট্রি ফি না নিয়ে আইডি কার্ড দেখিয়ে প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়। যা হোক এ নিয়ে পড়াশোনা করে দেখলাম, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বড় বড় সাহিত্য উৎসবে প্রবেশমূল্য রাখার ব্যবস্থা আছে। এমনকি সেশন অনুযায়ী এন্ট্রি নেওয়ার ব্যবস্থাও আছে। না জেনে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি করার কোনো মানেই হয় না। তবে বিতর্ক তো করা যায়! লিট ফেস্ট কী শুধু এলিটদের বা উচ্চবিত্তের অনুষ্ঠান, এতে বাংলা সাহিত্যের কি লাভ হচ্ছে, এমন বিতর্কও উঠেছে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে প্রচুর মানুষের সমাগমে সব বিতর্কের অবসান ঘটে।
রবিবার সকালের ঠাণ্ডা আবহাওয়া অবশ্য এই সমাগমে কোনো বিঘœ ঘটাতে পারেনি। ১১টা ১৫ মিনিটের সেশন সঞ্চালনের দায়িত্ব আমার ঘাড়ে এসে পড়ে। দুজন গেস্ট ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা এবং পশ্চিমবঙ্গের কবি গৌতম গুহ রায়।
বাংলা একাডেমির লনে ‘বিশ্বায়নের কালে ভবিষ্যতের কবিতা’ শিরোনামে সেশনটি সঞ্চালনা করি। আলোচনায় জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা ও পশ্চিমবঙ্গের কবি গৌতম গুহ রায়, তিনি পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমি কর্র্তৃক বিনয় মজুমদার স্মৃতি পুরস্কার এবং লিটল ম্যাগাজিন পুরস্কারের মতো অনেক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
বাংলা ভাষার জন্য যারা লড়াই করছেন, তাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য দেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মায়ের ভাষা বাংলা ভাষা। সব ভাষার মূলে হচ্ছে চেতনা। ভাষার কোনো বৈরিতা নেই। বাংলা আমার প্রকৃতির ভাষা। বাংলা ভাষায় আমি স্বতঃস্ফূর্ত। অনুবাদ হচ্ছে ট্রানজিট। অনুবাদের মধ্য দিয়ে এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় রূপান্তরিত হয়।’
আলোচনায় গৌতম গুহ রায় বলেন, ‘আজকের দিনে মানুষ কিন্তু একক হয়ে গেছে। অধিকাংশ ভাষা লুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। ভাষা যখন বিপন্ন, মানুষ যখন বিপন্ন, তখন কবিতা কী হবে? মানুষকে জনবিচ্ছিন্ন করার যে প্রক্রিয়া, সেখানে কবিতাও বিপন্ন করতে পারে?’
‘বিশ্বায়নের কবিতা হবে মুক্ত কবিতা’ উল্লেখ করে কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ‘বাংলাকে আমার কাছে মনে হয় পৃথিবীর শক্তিশালী ভাষা। একটা সময় বোধ হয়, ১০টি ভাষার মধ্যে বাংলা দুই-তিনের মধ্যে থাকবে। আমাদের যা কিছু লিখেছি, সব অনুবাদ করে বিশ্বের সামনে আনতে হবে। তার মানে এই নয়, নিজের ভাষাকে ভুলে যেতে হবে।’
গৌতম গুহ রায় বলেন, ‘সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে প্রাণবন্ত থাকা। মুক্ত কবিতা মানে শেকড়হীন নয়। দিন দিন ভাষা সম্পর্ক নিবিড় হচ্ছে, এটা মননকে আরও পাশাপাশি আনবে।’
লিট ফেস্টের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে কথা বলেছিলাম এই সময়ের তিনজন লেখকের সঙ্গে। আলাপকালে কথাসাহিত্যিক প্রশান্ত মৃধা বলেন, ‘একে মেলা, জমায়েত বা উৎসব যা-ই বলি না কেন, এখানে এসে কারও লাভ বা ক্ষতি হচ্ছে কি না, সেটা বড় কথা নয় বড় কথা, এখানে এসে অনেকের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, পরিচয় হচ্ছে নতুন মানুষের সঙ্গে, পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে অনেক দিন পরে দেখা করার সুযোগ মিলছে। ভিন দেশি লেখকদের ব্যাপারে জানার সুযোগ হচ্ছে। সেশনগুলোয় হয়তো লেখকদের তেমন সুবিধা হচ্ছে না, কিন্তু সাধারণ শ্রোতারা তো উপকৃত হচ্ছেন! এদিক থেকে কোনো ক্ষতি তো কারও হচ্ছে না।’
একই প্রশ্নের উত্তরে কবি কথাসাহিত্যিক বিভাস রায় চৌধুরী বলেন, ‘সাহিত্য নিয়ে এ দেশে উন্মাদনা হয়, বিতর্ক হয়, প্রচুর মানুষ যুক্ত হয়, এসব তো কোনো না কোনোভাবে সাহিত্যের উপকারই করে, আমি এমন একটা উৎসবে আসতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি।’
কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক আফসানা বেগম বলেন, এই উৎসবে তরুণ শ্রোতাদের প্রশ্ন শুনে তিনি আশাবাদী, কারণ তারা প্রচুর পড়েন এবং তাদের পাঠ নিয়ে চিন্তা করেন। অনেকেই অভিযোগ করেন, এখনকার ছেলেমেয়েরা বই পড়ে না, এটা একদম মিথ্যা। এ ধরনের সাহিত্য উৎসব এসব তরুণকে উৎসাহিত করে।
অন্য আরেকটি শেসনে নৃজাতিগোষ্ঠীর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক আধিপত্যের বিরুদ্ধতায় সেশনে বক্তব্য দেন আখতার হোসেন, জ্যোতি সিনহা, মৃত্তিকা চাকমা, জিল্লুর রহমান এবং হাফিজ রশিদ খান। বক্তারা নৃজাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক আধিপত্য ঠেকাতে না পারলে অনেক ভাষা হারিয়ে যাবে। এই আধিপত্য রুখতে সবার একসঙ্গে কাজ করা উচিত।
নাট্যব্যক্তিত্ব বন্যা মির্জার সঞ্চালনায় ‘পুরুষত্ব এবং পুরুষতন্ত্র’ শীর্ষক সেশনে উপস্থিত ছিলেন ইরেশ জাকের, সায়িদ আহমেদ, মাহরীন সুলতান, নবনীতা চৌধুরী, আজমেরী হক বাঁধন, তাকবীর হুদা এবং তাসাফি হোসেন। বক্তারা সবাই নারীর নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নুরুদ্দিন ফারাহ, গীতাঞ্জলি শ্রী, মাসরুর আরেফিন এবং সাদাফ সায। নির্ধারিত বক্তব্যে নুরুদ্দিন ফারাহ এই উৎসবের ধরন নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। কারণ এই উৎসব গতানুগতিক সাহিত্য উৎসবের মতো নয়। এখানে সাহিত্যিকের পাশাপাশি বিজ্ঞানী, খেলোয়াড়, সংগীতজ্ঞ, অভিনয়শিল্পীর উপস্থিতি তাকে আনন্দিত করেছে বলেও মত প্রকাশ করেন।
শিমের জন্য বিখ্যাত চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড। এখানের বেশিরভাগ জমিতে বছরের এ সময়ে প্রচুর শিমের চাষ হয়। কিন্তু গত কিছুদিন ধরে অতিরিক্ত কুয়াশায় কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। কুয়াশা বেশি পড়লে শিমের ফুলে পোকার উপদ্রব বেড়ে যায় এবং ফুল ঝরে যায় বলে জানান সীতাকুন্ডের ইদুলপুর গ্রামের মোহাম্মদ মামুন। ৪৫ বছর বয়সী মামুন গত ১২ বছর ধরে শিম চাষ করে আসছেন। কৃষক মামুনের এই বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়া অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের কথায়। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ছোট শিশুরা যেমন অতিরিক্ত শীতে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়, ঠিক তেমনিভাবে বেশি কুয়াশায় বীজতলার চারাগুলো এবং যেসব সবজিতে ফুল এসেছে সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উদ্ভিদগুলোর বৃদ্ধিও থমকে যায়। শুধু তাই নয়, শীতকালীন ফসলগুলোতে পোকামাকড়ের উপদ্রবও বেড়ে যায়।
অবশ্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস দেশ রূপান্তরকে বলেন, আমাদের বীজতলার চারার বয়স এখন ২৫-৩০ দিন হয়েছে। অনেক জায়গায় চারা রোপণ শুরু হয়েছে। এই পর্যায়ে ক্ষতির মাত্রা খুবই কম। হয় না বললেই চলে। যেসব চারা মাঠে আছে সেগুলো পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া আমরা নিজেরাই মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং করছি। এখন পর্যন্ত ক্ষতির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে গত কয়েকদিন ধরেই ঘন কুয়াশায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। কোনো কোনো এলাকায় গতকাল রোদের দেখা মিলেছে চার-পাঁচ দিন পর। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য ছিল সামান্য। ফলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা ছিল জবুুথবু। কুয়াশায় ঢাকা ছিল আকাশ। যা মানুষের স্বাস্থ্যসহ ফল-ফসলের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছে।
কুয়াশা বাড়ার সঙ্গে পোকামাকড়ের উপদ্রবের বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা উইং-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ দাউদ হোসেন বলেন, ‘কুয়াশা কখনো কৃষির জন্য ভালো নয়। রোদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া কৃষির জন্য সবচেয়ে উপকারী। বেশি কুয়াশা পড়লে বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যায় এবং সব গাছের ফুলের মধ্যে এর প্রভাব পড়ে। আমগাছের মুকুল, শিমগাছের ফুল কিংবা অন্যান্য ফসলের ফুলে পোকামাকড়ের বসত গড়ে ওঠে। তখন কীটনাশক বেশি পরিমাণে স্প্রে করতে হয়।’
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, ভারতের দিল্লি থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত পুরো আকাশজুড়ে কুয়াশার চাদর রয়েছে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে প্রায় ৪০০ মিটার পর্যন্ত এই কুয়াশার স্তরের কারণে সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠে প্রবেশ করতে পারছে না। আর এতে সারা দেশে তীব্র শীত অনুভবের পাশাপাশি ঘন কুয়াশা বিরাজ করছে। কিন্তু এই ঘন কুয়াশার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি খাদ্য জোগানদাতা কৃষিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এতে বাতাসের আর্দ্রতা একটি অন্যতম ফ্যাক্টর। এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর পতেঙ্গা কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘গত কিছুদিন ধরে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় বাতাসে আর্দ্রতা বেশি হচ্ছে। সূর্যের আলো প্রবেশ করতে না পারলে বাতাসে আর্দ্রতা কমবে না।’
কিন্তু আবহাওয়া নিয়ে আপাতত কোনো সুসংবাদ নেই বলে জানালেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের ফোরকাস্টিং বিভাগের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক। তিনি গতকাল সন্ধ্যায় দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দুদিন পর শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে। তবে আজ ও কাল মঙ্গলবার সূর্যের আলো কিছুটা বাড়তে পারে।’
কিন্তু এভাবে কুয়াশা দীর্ঘায়িত হলে কৃষির উদ্ভিদগুলোর বৃদ্ধি কমে আসবে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের ট্রেনিং অফিসার নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘শীতকালে এক বা দুই দিন কুয়াশা পড়বে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু ঘন কুয়াশা দীর্ঘদিন অব্যাহত থাকলে বোরো ধানের বীজতলাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একেকটি চারা চার থেকে পাঁচ ইঞ্চি পর্যন্ত বড় হওয়ার কথা থাকলেও কুয়াশা বেশি পড়লে এসব চারার বৃদ্ধি থমকে যায়। তখন এগুলোর মধ্যে এক ধরনের লালচে দাগ আসে। এসব চারা থেকে পরবর্তী সময়ে ফলনে গিয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।’
শুধু বীজতলা নয়, সব ধরনের চারার ক্ষেত্রে এজন্য গ্রামাঞ্চলে পলিথিন দিয়ে ঢাকনা দিয়ে রাখা হয় বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়া অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কুয়াশা চারার মধ্যে পড়লে এগুলো বড় হতে পারে না। এছাড়া চারাগুলোকে সুস্থ রাখতে গভীর নলকূপের পানি চারার গোড়ায় দিনে দেওয়া হয়ে থাকে।’
উল্লেখ্য, মৌসুমের এ সময়ে মাঠে শীতকালীন ফসল আলু, টমেটো, বেগুন, মরিচ, সরিষা, শিমসহ বিভিন্ন জাতের সবজি রয়েছে। এছাড়া কোথাও কোথাও বোরোর বীজতলা রয়েছে আবার কোথাও বোরো চারা রোপণ করা হয়েছে।
একশ-দুইশ কিংবা হাজার বছর নয়, প্রায় ৫০ হাজার বছর পর পৃথিবীর পাশ দিয়ে যাবে সি/২০২২ ই৩ (জেটটিএফ) নামের একটি ধূমকেতু। আর বিরল এ দৃশ্য দেখা যাবে খালি চোখেই। ধূমকেতুটি ১ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছ দিয়ে যাবে। ভালো মানের দূরবীন ছাড়াও খালি চোখে এটি পর্যবেক্ষণ করা যাবে। তবে চাঁদ এবং শহরের আলোর উজ্জ্বলতা যদি বেশি হয় তাহলে খালি চোখে ধূমকেতুটির দেখা নাও মিলতে পারে।
পূর্ণিমার কারণে খালি চোখে দেখা না গেলেও, জানুয়ারির ২১-২২ তারিখে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য এটি পর্যবেক্ষণের ভালো একটি সুযোগ থাকবে বলে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন প্যারিসের জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিকোলাস বিভার। গত বছর মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক সংস্থা জুইকি ট্রানজিয়েন্ট ফ্যাসিলিটি প্রথমবার ধূমকেতুটি বৃহস্পতি গ্রহের পাশ দিয়ে যেতে দেখে। ২০২২ সালে প্রথমবার দেখা মেলায় এটির নামকরণ করা হয় সি/২০২২ ই৩ (জেটটিএফ)। জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিকোলাস জানিয়েছেন, ধূমকেতুটি ঈষৎ সবুজ রঙের আভায় ঘেরা।
২০২০ সালে শেষবার খালি চোখে কোনো ধূমকেতুর দেখা মেলে পৃথিবী থেকে। ওই ধূমকেতুটির নাম ছিল নিউওয়াইজ। অবশ্য এখন নতুন যেটির দেখা মিলবে সেটি নিউওয়াইজের তুলনায় ছোটো। নিকোলাস জানিয়েছেন, সি/২০২২ ই৩ (জেটটিএফ) ধূমকেতুটি নিউওয়াইজের চেয়ে পৃথিবীর আরও কাছ দিয়ে যাবে। ফলে এটি আকার নিয়ে খুব বেশি সমস্যা হবে না। তিনি আরও জানিয়েছেন, পৃথিবীর কাছ দিয়ে যেহেতু যাবে তাই এটির উজ্জ্বলতা আরও বেশি হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, এ ধূমকেতুটি এসেছে অর্ট মেঘ থেকে। এটি সৌরজগতের রহস্যময় বরফীয় বস্তুর কাছে অবস্থিত। সর্বশেষবার ধূমকেতুটি যখন পৃথিবীর কাছে এসেছিল তখন পৃথিবীতে ছিল পুরাতন প্রস্তর যুগে। ওই সময় পৃথিবীতে ছিল আদি মানবদের বিচরণ। নিকোলাস জানান, এবার পৃথিবীর পাশ দিয়ে যাওয়ার পর হয়তো এ ধূমকেতুটি সৌরজগৎ থেকে হারিয়ে যাবে। কারণ এটি অনেকটাই ক্ষয়ে গেছে।
দেশের মোট জনগোষ্ঠীর অন্তত ২৫ শতাংশ বা এক-চতুর্থাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ, বিশেষ করে হার্ট অ্যাটাক এবং হার্ট ফেইলিওর রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এ থেকে স্ট্রোক হতে পারে, যা থেকে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এরকম ক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে। স্ট্রোক থেকে অন্ধত্ব, শরীরের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ অবশ হয়ে যাওয়া, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
গতকাল রবিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘হারপারটেনশন’ শীর্ষক এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়।
সেমিনারে উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে পরামর্শ দিয়ে চিকিৎসকরা বলেন, অবশ্যই সবাইকে সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপতে হবে। এ ধরনের রোগীদের চিকিৎসকের দেওয়া নির্ধারিত প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।
চিকিৎসকরা আরও বলেন, উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধের জন্য ধূমপান গ্রহণ ও অ্যালকোহল খাওয়া বন্ধ করতে হবে। নিয়মিত শরীরচর্চা করা উচিত। এ ছাড়া ওজন কমানো, হৃদরোগ প্রতিরোধে খাবার লবণ কম খাওয়া, প্রতিদিন সবজি বা ফল খেতে হবে, খাদ্যে স্বাস্থ্যসম্মত তেল ব্যবহার, লাল মাংস কম খাওয়া, সুগার কম খাওয়া, মাছ খাওয়া এবং ওমেগা ও ফ্যাটি এসিডসমৃদ্ধ খাবার সপ্তাহে দুবার খেতে হবে।
এ ব্যাপারে বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, সব চিকিৎসকের হাইপারটেনশন সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। অপারেশন করার আগে ব্লাড প্রেশার বেশি থাকলে অপারেশন করা যায় না। যে রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, সে রোগীকে কত পর্যন্ত ব্লাড প্রেশার রাখা লাগবে তা অবশ্যই চিকিৎসককে জানতে হবে। যারা মোটা তাদের প্রেশার একরকম, স্মোকারদের প্রেশার একরকম হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের এক-চতুর্থাংশ মানুষ হাইপারটেনশনে ভুগছেন। হাইপারটেনশন যাতে না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। হাইপারটেনশন হলে হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিও মাইয়োপ্যাথি, নিউরোলজিক্যাল ডিস অর্ডার হয়ে স্ট্রোক এবং চোখে রেটিনোপ্যাথি ও নেত্রোপ্যাথি হবে। নিয়মিত রক্তচাপ মাপার পরামর্শ দিয়ে উপাচার্য বলেন, যারা বয়স্ক তাদের অবশ্যই নিয়মিত ব্লাড প্রেশার মাপতে হবে। যাদের বয়স ৩ থেকে ১০ বছর তাদের ব্লাড প্রেশার মাপতে হবে। যারা মোটা তাদের নিয়মিত ও যারা চিনি খান তাদের মাঝেমধ্যে প্রেশার মাপতে হবে। কাঁচা লবণ খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে।
রক্তচাপ মাপার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে সেমিনারে বলা হয়, শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের একটি বড় বোঝা হাইপারটেনশন। হাইপারটেনশনসহ সব রোগের চিকিৎসা শুরু হয় রোগ নির্ণয়ের প্যারামিটার বা পরিমাপ দিয়ে। এ জন্য পরিমাপটা যথাযথ হতে হয়। ব্লাড প্রেশার মাপার পূর্ব শর্ত হলো, সঠিক মাপের কাপ ব্যবহার করা। বয়সভিত্তিক কাপ ফলো করা উচিত। রক্তচাপ অবশ্যই দুই হাতের বাহুতে মাপতে হবে। যদি দুটি হাতের রক্তচাপের তারতম্য থাকে তবে অবশ্যই যেটির চাপ বেশি সেটি সঠিক পরিমাপ হিসেবে নিতে হবে। রক্তচাপ মাপার রোগীকে অবশ্যই তার পেছনে ভরের সাপোর্ট নিয়ে বসতে হবে, পা আড়াআড়ি করে বসা যাবে না। রক্তচাপ মাপার আগে অবশ্য পাঁচ মিনিট আরামে চুপচাপ বসে থাকতে হবে।
সেমিনারে আরও বলা হয়, রক্তচাপ মিলিমিটার মার্কারি (এমএমএইচজি) ইউনিটে পরিমাপ করা হয় এবং সিস্টোলিক প্রেশার এবং ডায়াস্টোলিক প্রেশারÑ এ দুটি মানের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। যার সংখ্যা বেশি, তাকে বলা হয় সিস্টোলিক চাপ এবং যার সংখ্যা কম, তাকে বলা হয় ডায়াস্টোলিক চাপ। সাধারণত একজন সুস্থ মানুষের আদর্শ রক্তচাপ ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি। এখানে ১২০ হলো সিস্টোলিক নম্বর এবং ৮০ হলো ডায়াস্টোলিক নম্বর।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনারের সেন্ট্রাল সাব-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সেন্ট্রাল সাব-কমিটির সদস্য সচিব নিউরোলজি বিভাগের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সবুজ ও রেসপেরিটোরি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সম্প্রীতি ইসলাম।
বগুড়ার শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর ২০ জনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল রবিবার দুপুরে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আম্বইল গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে গুরুতর আহতরা হলেন আম্বইল গ্রামের নুরুন্নবী সরকার, একই গ্রামের আবু সাঈদ, ফজলুল হক, জুয়েল সরকার, নুর হোসেন, আব্দুল বারিক, জসিম উদ্দিন সরকার, হায়দার আলী, মিলন সরকার, ফারুক হোসেন, আসফদৌল্লা খান, টুটুল মিয়া, নাদু সিং, প্রদীপ সিং, জাম্পু মেম্বার, জিরেন সিং, শান্ত সিং, রফিক মেম্বার, সন্তোষ সিং, গজেন সিং, নয়ন সিং, অর্জন সিং, কৃষ্ণ সিং, পরী সিং, সুকুমার সিং, সোহানা সিং ও দিলীপ সিং।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আম্বইল মৌজায় শতবিঘা জমির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও চার গ্রামবাসীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এমনকি ওইসব জমির দখলকে কেন্দ্র করে আদালতে একাধিক মামলাও বিচারাধীন। এর মধ্যে বিবদমান চার বিঘা জমি সোলায়মান আলী মাস্টার নিজের মালিকানা দাবি করে বসেন। এমনকি ওইসব জমিতে রবিবার সকালে তিনি গ্রামের লোকজন নিয়ে বোরো ধানের চারা লাগাতে শুরু করেন। আর এ খবর পেয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের বাধা দেন। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেই সঙ্গে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
শেরপুর থানার ওসি আতাউর রহমান খোন্দকার বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যাই এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। সেই সঙ্গে উভয়পক্ষকে শান্ত করে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ছাড়া কোনো পক্ষই লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্বর্ণ ‘চোরাকারবারি’ চট্টগ্রামের আবু আহমদকে অর্থ পাচারের মামলায় পুলিশে সোপর্দ করেছে উচ্চ আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রামের বিশেষ জজ আদালতে হাজির করতে শাহবাগ থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। গতকাল রবিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম আবুল হোসেন ও মো. হাবিবুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আমিন উদ্দিন মানিক দেশ রূপান্তরকে বলেছেন, ‘হাইকোর্টের পূর্বের দেওয়া আদেশ অনুযায়ী আবু আহমদকে তদবিরকারকেরমাধ্যমে আজ (গতকাল) হাজির করার কথা ছিল। আসামি নিজেই আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে হাজির হন। আদালত তাকে পুলিশে দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রামের বিশেষ জজ আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেন।’
ফটিকছড়ির জাফতনগর এলাকার আবু আহমদ প্রসাধনী সামগ্রীর ব্যবসার আড়ালে স্বর্ণ চোরাচালানের সাম্রাজ্য গড়ে তুলে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন। দেশে-বিদেশে গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা পাচারের প্রমাণ পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ২০২০ সালের ১৮ মার্চ আবু আহমদসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে সিআইডি। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন থানায় স্বর্ণ চোরাচালান, অর্থ পাচারসহ নানা অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের তথ্য মতে, গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন আবু আহমদ। হাইকোর্ট তাকে জামিন না দিয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে অধস্তন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়। ২২ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। তবে ওই দিন চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত মামলার নথি তলব করে ৫ মে আবেদনটি শুনানির জন্য ধার্য রাখে। নথি না আসায় একাধিকবার জামিন শুনানির জন্য তারিখ ধার্য করে আদালত। গত বছরের ১৩ নভেম্বর জামিন আবেদনের শুনানির দিন আবু আহমদ আবারও সময় আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। এরপর আসামি আবু আহমদ হাইকোর্টে হাজির হয়ে আগাম জামিন আবেদন করেন। গত ৫ ডিসেম্বর এক আদেশে আদালত ৬ ডিসেম্বর আদেশের জন্য রাখলেও আবু আহমদ হাজির না হওয়ায় তার আইনজীবীরা আবদেনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজের আবেদন করেন। আদালত আসামিকে গ্রেপ্তার ও তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
বাংলাদেশের ৫৩তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস রবিবার।
একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাঙালিদের ওপর অতর্কিত গণহত্যা অভিযান ‘অপারেশন সার্চলাইট’ শুরু করে এবং বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের পূর্বে বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ রাতের প্রথম প্রহরে ঢাকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালি বেসামরিক লোকের ওপর গণহত্যা শুরু করে।
তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল সকল রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা। ওই ঘোষণা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হয়।
বঙ্গবন্ধুকে তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেপ্তারের আগে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পাশাপাশি যে কোনো মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
মুহূর্তের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা ওয়্যারলেসের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই সময় বাস্তবতা ও নিরাপত্তা জনিত কারণে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার এই ঘোষণা নথি সংরক্ষণ করা সম্ভব ছিল না। পরবর্তী সময়ে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
তৎকালীন ইপিআর-এর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পরে। পরে চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ ও ২৭ মার্চ বেশ কয়েকজন শেখ মুজিবের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।
দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধর পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে একটি ভূখণ্ডের, যার নাম বাংলাদেশ।
দেশে ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে ফাইভজি ইন্টারনেট সেবা চালু করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক। অন্য অপারেটর গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক একই সেবা চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে সব মোবাইল অপারেটরই দেশের বেশিরভাগ স্থানে ফোরজি সেবা চালু করেছে। আর সে হিসেবেই তারা ইন্টারনেট প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণ করেছে। কিন্তু গ্রাহকরা ফোরজি ইন্টারনেট কিনলেও দেশের অনেক এলাকায় টুজি-থ্রিজি’র সেবা পাচ্ছেন। তারা অপারেটর কোম্পানিগুলোকে এ ব্যাপারে বারবার অভিযোগ জানালেও এর সুরাহা হচ্ছে না।
জানা গেছে, রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে মোটামুটিভাবে গ্রাহকরা ফোরজি সেবা পাচ্ছেন। তবে এসব এলাকায়ও অনেক সময় ফোরজি থাকে না, থ্রিজিতে নেমে আসে নেটওয়ার্ক। তবে জেলা পর্যায়ে বেশিরভাগ সময়েই থাকে থ্রিজি। আর মফস্বল ও গ্রামাঞ্চলে বেশিরভাগ সময় সেই থ্রিজিও থাকে না, তখন টুজি নেটওয়ার্কই ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে ইন্টারনেট প্যাকেজ যথাযথভাবে থাকার পর তা কাজ করে না, বাফারিং হয়। এতে গ্রাহকরা ত্যক্তবিরক্ত হয়ে উঠছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো সারা দেশের ব্যবসা একত্রে হিসাব না করে এলাকাভিত্তিক ব্যবসার হিসাব-নিকাশ করার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তারা দেখেন, কোন এলাকায় তাদের গ্রাহক সংখ্যা কত, সেখানে কত সিমে ইন্টারনেট চালু আছে। যদি দেখা যায়, তাদের হিসাব মতে তা সন্তোষজনক আছে তাহলে সেখানে ফোরজি সেবা চালুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বহাল রাখে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক টাওয়ার নির্মাণ করে। কিন্তু যদি দেখে সন্তোষজনক গ্রাহক নেই তাহলে সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় না, এতে সেই এলাকায় ফোরজি পাওয়া যায় না। অথচ শহর এলাকাগুলোতে তারা বেশি ব্যবসা করলেও সেটাকে হিসাবে ধরে না। কিন্তু মফস্বল এলাকা থেকে কল বাবদ প্রয়োজনের বেশি ব্যবসা হলেও তা ইন্টারনেটের সঙ্গে সমন্বয় করে না।
মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানিগুলোর ফেসবুক পেইজে প্রতিনিয়ত অসংখ্য অভিযোগ জানান গ্রাহকরা। অভিযোগ অনুযায়ী, অপারেটরদের মধ্যে টেলিটকের নেটওয়ার্কই বেশি দুর্বল। টেলিটকের ফেসবুক পেজের এক পোস্টে মো. ফয়জুল ইসলাম লেখেন, ‘ভাই, নেটওয়ার্ক পাই না সকাল থেকে। মিরপুর-২ নম্বরে বাসা স্টেডিয়ামের পশ্চিম পাশে। আর আমার গ্রামের কথা না হয় বাদ দিলাম।’ আরাফাত আলী লেখেন, ‘২জিবি নেট কিনলে দেড় জিবি নষ্ট হয়। মেয়াদ ১৫ দিন তাও ফুরাতে পারি না। তাহলে বুঝেন নেটওয়ার্ক কত ভালো।’ কার্জন চাকমা লেখেন, ‘পাহাড়ি এলাকায় ফোরজি নিশ্চিত করুন। আমাদের পার্বত্য এলাকাগুলোতে টেলিটকের গ্রাহক সবচেয়ে বেশি, কিন্তু শুধু থ্রিজি-টুজিতে সীমাবদ্ধ।’ রাসেল আহমেদ লেখেন, ‘গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাংগা গ্রামে থ্রিজি নেটওয়ার্ক তো নেই-ই। মাঝেমধ্যে টুজি’ও নেই। বুঝুন অবস্থাটা। আমাদের থ্রিজি সেবা দেওয়ার চেষ্টা করুন।’
টেলিটকের মহাব্যবস্থাপক (সিস্টেম অপারেশন) নুরুল মাবুদ চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ফাইভজি রেডিনেস প্রজেক্ট শুরু করেছি। যা শেষ হতে এক বছর বা তার কিছু বেশি সময় লাগতে পারে। এর ফলে আমাদের কাভারেজ এলাকাগুলোতে ফোরজি সেবা নিশ্চিত হবে। এছাড়া আমাদের কাভারেজ বাড়ানোরও বড় পরিকল্পনা রয়েছে।’
বাংলালিংকের পেজের একটি পোস্টে মাহাদী হাসান তালহা লেখেন, ‘আমার এলাকায় আপনাদের সিম ব্যবহার করতে হলে ফোন গাছের ডালে বেঁধে লাউডস্পিকার দিয়ে কথা বলা লাগে। এত্তো ফাস্ট কেন আপনাদের নেটওয়ার্ক।’ আকরাম হোসাইন লেখেন, ‘ভাই আপনাদের সবই ঠিক, তবে নেটওয়ার্ক সেøা।’
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অফিসার তৈমুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ফোরজি সেবার জন্য ২৩০০ মেগাহার্জের স্পেকটার্ম প্রয়োজন হয়। কিন্তু টুজিতে তা লাগে মাত্র ৯০০ মেগাহার্জ। আমরা ইতিমধ্যে ৯৫ শতাংশ কাভারেজ এলাকায় ফোরজি সেবা নিশ্চিত করেছি। তবে আমাদের আরও বেশি সাইট লাগবে। যদি সব অপারেটর মিলে আমরা টাওয়ার শেয়ার করতে পারি, তাহলে সব গ্রাহকের কাছে ভালো সেবা পৌঁছে দেওয়া সহজ হবে।’
রবির পেজে এক পোস্টে তানভীর আহমেদ লেখেন, ‘কলাপাড়া থানা শহরে যদি থ্রিজি নেটওয়ার্ক না পাওয়া যায়, এরচেয়ে দুঃখজনক কিছুই হতে পারে না।’ এইচএমএম ইসমাঈল লেখেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার চম্পকনগর ইউনিয়নে রবি সিমের থ্রিজি নেই। অথচ অনেক বছর আগে রবি টাওয়ার বসানো হয়েছে। আমরা রবি সিম দিয়ে ইন্টারনেট চালাতে অক্ষম।’
রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলটরি অফিসার শাহেদ আলম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের কাভারেজ এলাকায় ফোরজি সেবা রয়েছে। তবে দেখা যায়, অনেক ফোন ফোরজি সাপোর্ট করে না। আর কাভারেজ এলাকা থেকে যতদূরে যাওয়া যাবে, নেটওয়ার্ক তত কমতে থাকবে। এছাড়া আমাদের কিছু জায়গায় নেটওয়ার্কের কাজ চলছে। পাশাপাশি নতুন কিছু টাওয়ার তৈরির কাজও আমাদের চলছে।’
গ্রামীণের পেইজে একটি পোস্টে রহিদুল ইসলাম লেখেন, ‘ভাই আমি যখন গ্রামে যাই তখন নেটওয়ার্কের ঝামেলা হয়।’ সাইদুর রহমান লেখেন, ‘এমন সার্ভিস হলে চলবে? কলরেট, ইন্টারনেটের দাম তো ঠিকই বেশি আপনাদের, বাকি সব অপারেটরদের থেকে।’
গত বছরের ২৮ এপ্রিল টেলিকম অপারেটররা বহুল প্রতীক্ষিত ‘আনলিমিটেড’ ও ‘মেয়াদবিহীন’ ইন্টারনেট ডাটা প্যাক চালু করেছে। তবে এতে গ্রাহকদের খুব বেশি সুবিধা হচ্ছে না। কারণ এজন্য প্যাকেজের দাম বাড়িয়েছে অপারেটররা। আর মেয়াদহীন ইন্টারনেট পেতে প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একই প্যাকেজ চালু করতে হবে। কিন্তু গ্রাহকের সব সময় একই ধরনের ইন্টারনেট প্যাকেজ নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ফলে অব্যবহৃতই থেকে যাচ্ছে গ্রাহকের কেনা ইন্টারনেট। এছাড়া মেয়াদবিহীন হিসেবে মোবাইল অপারেটররা যে প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে গ্রাহকদের।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সূত্র জানায়, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে সচল সিমের সংখ্যা ১৮ কোটি ২০ লাখ ৬১ হাজার। এরমধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা ৭ কোটি ৯০ লাখ ৯৫ হাজার, রবির ৫ কোটি ৫০ লাখ ১৪ হাজার, বাংলালিংকের ৪ কোটি ৮৫ হাজার এবং টেলিটকের ৬০ লাখ ৬৭ হাজার। আর গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি ৫০ লাখ। এরমধ্যে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ১১ কোটি ৩০ লাখ ১৩ হাজার এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি ও পিএসটিএন)-এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ১১ লাখ ৮৭ হাজার গ্রাহক।
রপ্তানিতে ভালো প্রবৃদ্ধির মধ্যেই তৈরি পোশাক খাতের আকাশে দেখা দিয়েছে শঙ্কার মেঘ। কয়েক মাস ধরেই খাতটির উদ্যোক্তারা রপ্তানি আয় কমে যাওয়া নিয়ে নানা ধরনের শঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন। তারা বলছেন, রপ্তানির প্রধান প্রধান অঞ্চলগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি থাকায় আগামীতে ওই সব অঞ্চলে রপ্তানি ব্যাপক হারে কমে গেছে। তাদের ভাষ্য, ইতিমধ্যে তার প্রভাবও স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। অর্ডার কমে যাওয়ায় কমেছে মূলধনি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানিও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যও বলছে সে কথা। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে মূলধনি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির ঋণপত্র খোলার হার নেমেছে প্রায় অর্ধেকে।
দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। তবে এই খাতের কাঁচামাল ও মূলধনি যন্ত্রপাতির পুরোটাই আমদানিনির্ভর; যা চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যাপক হারে কমে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) টেক্সটাইল ফেব্রিক্স আমদানির এলসি বা ঋণপত্র খোলা কমেছে ২৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে ৬২৬ কোটি ডলারের এলসি খোলেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮৬৫ কোটি ডলার।
তবে প্রস্তুত কাপড়ের চেয়ে বেশি আমদানি কমেছে কাঁচামালের। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে কাঁচা তুলা বা কটন আমদানির এলসি খোলা কমেছে ৪৩ দশমিক ৬ শতাংশ। এ সময়ে কাঁচা তুলা আমদানিতে ১৫৩ কোটি ডলারের এলসি খোলেন ব্যবসায়ীরা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে তুলা আমদানিতে ২৭২ কোটি ডলারের এলসি খোলা হয়েছিল। আবার তুলার চেয়ে সুতা আমদানি আরও কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে সুতা আমদানিতে এলসি খোলা হয় ১০৭ কোটি ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৪২ কোটি ডলার। এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে সুতা আমদানির এলসি খোলা কমেছে ৫৬ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের আট মাসে শিল্পের যন্ত্রপাতি আমদানির এলসি খোলা কমেছে ৫৪ দশমিক ১১ শতাংশ। এই সময় টেক্সটাইল যন্ত্রপাতির এলসি খোলা কমেছে ৭০ দশমিক ৪২ শতাংশ। আর গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রির যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে ৬৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি করে উদ্যোক্তারা সাধারণত নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপন বা কারখানার সম্প্রসারণ করে থাকেন। অর্থাৎ শিল্প খাতে বিনিয়োগ বাড়ে। বিনিয়োগ বাড়লে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে। সামগ্রিক অর্থনীতিতে গতিশীলতা আসে। আর এটি কমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে, ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা ব্যবসা সম্প্রসারণ কিংবা নতুন কলকারখানা স্থাপন অনেক কমিয়ে দিয়েছেন। এতে দেশে বিনিয়োগ ও উৎপাদনে ‘ধস’ নামার একটা অশনিসংকেত পাওয়া যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে কাঁচামাল ও জাহাজভাড়া অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার ব্যাপক পতন, বিভিন্ন দেশে মন্দার শঙ্কাসহ নানা কারণে দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এর মধ্যে উচ্চ আমদানি ব্যয়ের কারণে দেশে ডলার সংকট দেখা দিলে এলসি খোলায় কড়াকড়ি আরোপ করে সরকার। এতে ডলারের ওপর চাপ কিছুটা কমানো গেলেও আমদানি জটিলতায় পড়েছে তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য খাত।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানির ক্রয়াদেশ কিছুটা কমেছে। কিন্তু উচ্চমূল্যের পণ্য রপ্তানি বাড়ায় রপ্তানি আয়ে এখন পর্যন্ত কোনো প্রভাব পড়েনি। যেহেতু সাধারণ পোশাক রপ্তানি কমেছে সে কারণে কাঁচামাল ও মেশিনারিজ আমদানিও কমেছে। পাশাপাশি ডলার সংকটও আমদানি কমে যাওয়াতে ভূমিকা রেখেছে। ফারুকের আশঙ্কা, উন্নত দেশগুলোতে ব্যাংকিং খাতে যে সংকট দেখা দিয়েছে, তার কারণেও রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তবে এসব বিষয় মোকাবিলায় পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সহসভাপতি ফজলে শামীম এহসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ব্যাংকগুলোতে বিনিয়োগ করার মতো অর্থের সংকট রয়েছে। এ কারণে ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করতে পারছে না। পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে টাকার বড় অবমূল্যায়নের কারণে মালিকরা খুব বেশি প্রয়োজন না হলে মূলধনি যন্ত্রপাতি আনছেন না। অবশ্য আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম কমায় আমদানির পরিমাণে প্রভাব পড়েছে বলেও মনে করেন ফজলে শামীম এহসান।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মন্দার আশঙ্কায় কেউ নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। এ কারণে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে। তবে কাঁচামাল আমদানি কমে যাওয়াটাকে তারাও আসন্ন সংকট হিসেবে দেখছেন। গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এবং ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান এইচ মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, দেশে ডলারের সংকটের কারণে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে। ডলার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা কাঁচামাল আমদানি করতেই হিমশিম খাচ্ছেন। এটা খুব ভালো লক্ষণ নয়। তবে তিনি আশাও দেখছেন। তার ভাষ্য, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম কমে যাওয়ায় মূলত আমদানি ব্যয় কম হয়েছে। আমদানির পরিমাণ খুব একটা কমেছে বলে মনে করেন না তিনি।
পুলিশ ভেরিফিকেশন না হওয়ায় চাকরি স্থায়ীকরণ হচ্ছিল না। কিন্তু তার দেরি সয়নি। নিজের তত্ত্বাবধানে থাকা সার্ভিস বইয়ের পাতায় কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে স্থায়ী করে নিলেন নিজের চাকরি। এই ব্যক্তি হলেন ঢাকা মশক নিবারণী দপ্তরের উচ্চমান সহকারী মো. মনোয়ার হোছাইন। স্থানীয় সরকার বিভাগ তদন্তের পর থানায় মামলা হয়। এরপর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগের চারটির প্রমাণ মিলে। দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট আইনের দুটি ধারায় তার ১২ বছর সাজা ও অর্থদ- হয়েছে। পুলিশ মনোয়ারকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ১৯ মে ‘ক্রু’ বা মশককর্মী পদে যোগ দেন মনোয়ার হোছাইন। দপ্তরের চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী, এলডিএ কাম টাইপিস্ট হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু অসম্ভবকে সম্ভব করে তিনি ওই পদও বাগিয়েছেন। ওই পদ থেকে উচ্চমান সহকারী (হেড ক্লার্ক) পদেও পদোন্নতি নিয়েছেন। এরপর দপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তার পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে নেন। তথ্য গোপন করে পদোন্নতি নেওয়া এই কর্মকর্তার বাদ ছিল চাকরিতে স্থায়ী হওয়া। প্রথমবার কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে বিধিবহির্ভূত পদোন্নতি নেওয়ার পর তার উচ্চাকাক্সক্ষা বেড়ে যায়। ২০১০ সালের ২৬ জানুয়ারি তিনি দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল স্বাক্ষর করে চাকরি স্থায়ী করেন। এর আগে দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. রওশন আরা তালুকদারকে চাকরি স্থায়ী করার জন্য চাপ দেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি।
এ ঘটনার পর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্থানীয় সরকার বিভাগ ও দুদকের তদন্ত কমিটির কাছে লিখিতভাবে তার স্বাক্ষর জাল করার বিষয়ে অভিযোগ করেন। ২০১১ সালে মনোয়ারকে বরখাস্ত করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. রওশন আরা তালুকদার তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগের পক্ষে বিভিন্ন প্রমাণও জমা দেন। তিনি লিখিত বক্তব্যে জানান, অভিযুক্ত মনোয়ার হোছাইনের চাকরি স্থায়ীকরণ সংক্রান্ত চাকরি বইয়ের দ্বিতীয় খ-ের নবম পৃষ্ঠায় যে স্বাক্ষর রয়েছে তা তার নয়। ২০১০ সালের ২৬ জানুয়ারি তারিখের স্বাক্ষরটি মনোয়ারের সৃজনকৃত। চাকরিকালীন তার বিষয়ে কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন করানো হয়নি। এ জন্য তার চাকরিও স্থায়ী করা হয়নি। আর সার্ভিস বইয়ে যে সিল ব্যবহার করা হয়েছে তা তার সময়ে ব্যবহৃত সিল থেকে ভিন্ন। সিলের নিচে যে স্বাক্ষর রয়েছে তিনি বলতে পারবেন সেটা কীভাবে হলো। ইস্যু রেজিস্টার খাতায় ৪৬ নম্বর দিয়ে যে চিঠিটি তৈরি করা হয়েছে তার কোনো কপি কার্যালয়ে পাওয়া যায়নি। ৪৬ নম্বর ক্রমিকটি ২০১০ সালের ২৬ জানুয়ারি লেখা রয়েছে। অন্যান্য কলাম খালি রয়েছে। পরের পাতায় ২০১০ সালের ২৫ জানুয়ারি ২৬ নম্বর ক্রমিক দিয়ে একটি বদলির চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরও জানান, ঢাকা মশক নিবারণী দপ্তরের উচ্চমান সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন মনোয়ার হোছাইন। দপ্তরের বিধি-বিধান অনুযায়ী নথি, রেকর্ডপত্র, সার্ভিস বই তার কাছে রক্ষিত ছিল। এ কারণে জাল স্বাক্ষরের দায় তিনি কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। দপ্তরে জমা দেওয়া তার এলএলবি পাসের সনদও সঠিক ছিল না। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় থেকে তার ওই সনদ সঠিক নয় বলে লিখিতভাবে দপ্তরকে জানানো হয়েছে।
মনোয়ারের বিরুদ্ধে অনিয়মতান্ত্রিক কার্যকলাপ, নিয়োগ বাণিজ্য, স্বাক্ষর জাল, নিজেই নিজের চাকরি স্থায়ীকরণ এবং নথি, রেকর্ডপত্র, সার্ভিস বইয়ে ত্রুটি ঘটানোসহ পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে চারটি অভিযোগের প্রমাণ মেলে।
ঢাকা মশক নিবারণী দপ্তর সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশে ২০১৩ সালের ১৮ জুন দপ্তরের পক্ষ থেকে চকবাজার থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা (নম্বর-৪) করা হয়। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য দুদকে পাঠানো হয়। দুদক তদন্ত করে মনোয়ারের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর তাকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট আইনের একটি ধারায় তার পাঁচ বছরের কারাদ- হয়। পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের সশ্রম কারাদ- দেয় আদালত। আরেকটি ধারায় সাত বছরের কারাদন্ড দেওয়ার পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে ঢাকা মশক নিবারণী দপ্তরের বরখাস্ত উচ্চমান সহকারী মনোয়ার হোছাইন দেশ রূপান্তরকে বলেন, একটি চক্র তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলেছে। তাদের চক্রান্তের শিকার হয়ে তিনি কর্মস্থল থেকে বরখাস্ত হয়েছেন। কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল এবং আদালতের সাজার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা কত কিছু করছে। কোথায় আবার কী করেছে বুঝতে পারছি না। এ প্রসঙ্গটি বারবার উত্থাপন করলেও তিনি এড়িয়ে যান।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গণহত্যা নিয়ে পাকিস্তান যা বলে, তারাও (বিএনপি) তাই বলে। কারণ তারা পাকিস্তানি ভাবধারায় উজ্জীবিত, তাদের হৃদয়ে পাকিস্তানি চেতনা।
আজ রবিবার (২৬ মার্চ) ভোরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের দাবি 'আওয়ামী লীগের ভুলের জন্য গণহত্যা হয়েছিল'- এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, তাদের (বিএনপি) হৃদয়ে পাকিস্তানি চেতনা। তারা এমনটা বলবে, এটাই সমীচীন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার শত্রুরা সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ; এমন নানা পোশাকে স্বাধীনতাকে চ্যালেঞ্জ করে। এই অপশক্তিকে পরাস্ত করতে হবে। কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ সোনার বাংলা গড়ার পথে রয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া এখন অন্যতম অঙ্গীকার।
এর আগে, জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুলউল আলম হানিফ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক নেতাকে রড দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটানোর অভিযোগে পাঁচ নেতাকর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
বহিষ্কৃতরা হলেন আইন ও বিচার বিভাগের ইমরুল হাসান অমি, বাংলা বিভাগের আহমেদ গালিব, দর্শন বিভাগের কাইয়ূম হাসান ও আরিফুল ইসলাম এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তানভিরুল ইসলাম। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং মীর মশাররফ হোসেন হলে থাকেন।
এদের মধ্যে অমি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক, গালিব ও কাইয়ূম সহসম্পাদক, আরিফুল ইসলাম কার্যকরী সদস্য এবং তানভিরুল কর্মী বলে পরিচিত। বহিষ্কৃতরা হলে অবস্থান করতে পারবে না বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভা শেষে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলামকে রড দিয়ে পেটানো হয়। আহত সাইফুলকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সাইফুলের মাথায় তিনটি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার পলাশ চন্দ্র দাশ।
ভুক্তভোগী সাইফুল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, এ মারধরের ঘটনার পাশাপাশি গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণ এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ কমিটি গত রোববার (১৯ মার্চ) সাভারের একটি রেস্টুরেন্টে বসাকে কেন্দ্র করে মীর মশাররফ হোসেন হল ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের ছাত্রলীগের মধ্যে পাল্টাপাল্টি দুটি মারধরের ঘটনারও তদন্ত করবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান হলেন ১৯ নম্বর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শফি মুহাম্মদ তারেক। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আলবেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সিকদার মোহাম্মদ জুলকারনাইন, শহীদ রফিক-জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহেদ রানা, জাহানারা ইমাম হলের প্রাধ্যক্ষ মোরশেদা বেগম এবং সদস্যসচিব ডেপুটি রেজিস্ট্রার মাহতাব উজ জাহিদ।
শৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান সাংবাদিকদের বলেন, মারধর এবং সাম্প্রতিক ঘটনা বিবেচনায় চিহ্নিত পাঁচজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ‘সততার বুলি’ আওড়ান। অনলাইন প্রক্রিয়ার বাইরে কোনো বদলি হয় না এ কথাই জোর দিয়ে বলেন তারা।
দেশ রূপান্তরের অনুসন্ধানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বদলির বিষয়ে জানা গেছে ভয়ংকর তথ্য। ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর অনলাইন-বদলির সুযোগ না থাকলেও, টাকা হলেই বদলি হওয়া যায়। আগের কোনো তারিখে বদলির অনুমোদন দেখিয়ে জারি করা হচ্ছে আদেশ। এসব আদেশ অবশ্য ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত হয় না। নিয়মিত রাজধানীসহ সারা দেশে শিক্ষক বদলি করা হচ্ছে। তারা যোগদানও করেছেন। অনলাইন প্রক্রিয়ার বাইরেই এসব হচ্ছে।
গত তিন মাসে অনলাইন-ছাড়াই শতাধিক শিক্ষক বদলি হয়েছেন। এমন আটটি বদলির আদেশের কপি দেশ রূপান্তরের হাতে রয়েছে। কয়েকজনের যোগদানপত্রও দেশ রূপান্তরের কাছে আছে। বদলির এসব আদেশের বেশিরভাগ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি অ্যান্ড অপারেশন) মনীষ চাকমা স্বাক্ষরিত। কোনো কারণে তার ছুটিতে থাকার সময় দায়িত্বে থাকা পরিচালক মো. হামিদুল হক স্বাক্ষরিত কিছু আদেশও রয়েছে।
যেহেতু অনলাইন ছাড়া শিক্ষক বদলি বন্ধ, তাই আগের কোনো তারিখে বদলির অনুমোদন দেখিয়ে এখন শুধু আদেশ জারি করা হচ্ছে। বদলির আদেশ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। গত তিন মাসের কোনো বদলির আদেশ ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়নি। যারা বদলি হচ্ছেন তারা সশরীরে অধিদপ্তরে এসে আদেশপত্র নিয়ে যাচ্ছেন। সরাসরি বদলির আদেশ জারির বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার কাছেও কিছু আদেশের কপি এসেছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আমাকে জানিয়েছেন, এসব বদলির আদেশ গত বছর ২২ ডিসেম্বর সংশোধিত বদলির নির্দেশিকা জারির আগেই অনুমোদন করানো ছিল। পরে বদলির আদেশ জারি হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে, আদেশের সংখ্যা বেশি নয়। ১০-২০টি হতে পারে। সংশোধিত নির্দেশিকা জারির পর সরাসরি নতুন কোনো বদলির ফাইল অনুমোদনের সুযোগ নেই। এখন বদলি করতে হলে অনলাইন আদেশের মাধ্যমেই করতে হবে।’
সচিব বলেন, ‘অনলাইনে গত ১৫ সেপ্টেম্বর বদলি শুরু হলেও তাতে কিছু সমস্যা ছিল। সমস্যা কাটিয়ে গত ২২ ডিসেম্বর সংশোধিত বদলির নির্দেশিকা জারি হয়েছে। এরপর আর অনলাইনের বাইরে বদলির সুযোগ নেই।’
গাজীপুরের কাপাসিয়ার ঝাউয়াদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ফরহাদের বদলির আদেশ জারি হয় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি। তিনি একই উপজেলার উত্তর পেলাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হয়েছেন। তার বদলির আদেশটি মনীষ চাকমা স্বাক্ষরিত। ২৮ ফেব্রুয়ারি যোগদানও করেছেন তিনি। আগে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মূলাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংযুক্ত ছিলেন। গত ৮ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক আদেশে সব সংযুক্তির আদেশ বাতিল হয়। তিনি অনলাইন-ছাড়াই বদলির আদেশ করিয়ে নিয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ফরহাদ গাজীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অন্যতম সহযোগী। স্কুলে তেমন ক্লাস নেন না। সারাক্ষণ ডিপিইওর অফিসে থাকেন। শিক্ষক নেতার পরিচয়ে তদবিরবাণিজ্য করেন। জেলার আট-নয় হাজার শিক্ষকের কাছ থেকে নানা অজুহাতে প্রায়ই চাঁদা আদায় করেন। সহকারী শিক্ষক হয়েও মাসে তার আয় কয়েক লাখ টাকা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর চাচাতো ভাই পরিচয়দানকারী হাসান আলীর মাধ্যমে তার বদলির আদেশ করিয়েছেন বলে গল্প করেন। এ কাজে তিন-চার লাখ টাকার লেনদেনের কথাও বলেন। হাসান আলীকে প্রায়ই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দেখা যায়। তিনি মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরের আশপাশেই থাকেন।
গত ১৩ মার্চ চাঁদপুরের কচুয়ার নোয়ার্দ্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে রাজধানীর সূত্রাপুরের শহীদ নবী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে এসেছেন সহকারী শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসী। তার সরাসরি বদলির আদেশে স্বাক্ষর করেছেন মনীষ চাকমা। সম্প্রতি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের দিগচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফাতেমা বেগমও রাজধানীর মিরপুরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে এসেছেন।
গত ১৭ জানুয়ারি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বোররচর বনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে একই উপজেলার সানকিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হন সহকারী শিক্ষক খাদিজা আক্তার। তার বদলির আদেশে স্বাক্ষর রয়েছে মো. হামিদুল হকের।
সানকিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘খাদিজা আক্তার আমার স্কুলে ১৯ মার্চ যোগ দিয়েছেন। তিনি আমাকে বলেছেন, অনলাইনে আগে আবেদন করা ছিল। পরে অধিদপ্তর থেকে সরাসরি বদলির আদেশ করিয়ে নিয়ে এসেছেন।’
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার তিলকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোসাফিকুর রহমান গত ১০ মার্চ বদলি হয়ে যান একই জেলার সদর উপজেলার সেনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তার আদেশটিও মনীষ চাকমা স্বাক্ষরিত।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ময়মনসিংহ সদরের আজমতপুর পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হন সহকারী শিক্ষক তাসমিনা নার্গিস। একই তারিখে স্বাক্ষরিত আরেকটি আদেশে সহকারী শিক্ষক জেসমিন আক্তার ময়মনসিংহের নান্দাইলের গলগ-া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চকনজু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হন। এসব বদলির আদেশ মো. হামিদুল হক স্বাক্ষরিত।
গত ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহ সদরের কুঠুরাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে একই উপজেলার গাঙ্গিনার পাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে আসেন সহকারী শিক্ষক আবিদা সুলতানা। আদেশটিতে স্বাক্ষর করেছেন মনীষ চাকমা।
গাঙ্গিনার পাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাকলী গোস্বামী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কীভাবে বদলি হয়েছে বলতে পারব না। তবে আবিদা সুলতানা বলেছে, অনলাইনে হয়েছে। আমার স্কুলে তিনি ২ জানুয়ারি যোগ দিয়েছেন।’
ময়মনসিংহের সদর উপজেলার রাজাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে গত ২৮ ডিসেম্বর সহকারী শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন একই উপজেলার বড় বিলারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হন। আদেশটিতে স্বাক্ষর করেন মনীষ চাকমা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কুমার ঘোষ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কীভাবে বদলি হয়েছে, তা বলতে পারব না। তবে সাবিনা ইয়াসমিন যোগ দিয়েছেন।’
দেশের কোনো জায়গা থেকে রাজধানীতে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি খুবই কঠিন। রাজধানীতে বদলির জন্য শিক্ষকরা ছয়-সাত লাখ টাকা খরচ করতেও দ্বিধা করেন না। আর অনলাইন প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পর দেশের অন্য জায়গায়ও বদলির রেট বেড়ে গেছে। এ জন্য তিন-চার লাখ টাকার লেনদেন হয় বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে সারা দেশে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ রাখা হয় সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলিও। এরপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রথমবারের মতো গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত একই জেলার মধ্যে বদলির জন্য অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু করে। ঘোষণা দেওয়া হয়, অনলাইনের বাইরে কোনো ধরনের বদলি কার্যক্রম চলবে না। ওই সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে বদলি হওয়া শিক্ষকদের সবাই অক্টোবরের মধ্যে বদলিকৃত স্কুলে যোগদান শেষ করেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথম দফায় বদলি হওয়া শিক্ষকদের সবাই যেহেতু অক্টোবরের মধ্যে যোগদান শেষ করেছেন, অতঃপর গত ফেব্রুয়ারির আগে আর কোনো বদলির আবেদনের সুযোগ ছিল না। দ্বিতীয় দফায় ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত একই জেলার মধ্যে বদলির আবেদন নেওয়া হয়। কারা বদলি হলেন তা প্রকাশ করা হয় ৯ মার্চ। গত ১৪ ও ১৫ মার্চ একই বিভাগের মধ্যে বদলির জন্য অনলাইন আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। আর এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে অনলাইনে বদলির আবেদন গ্রহণ এখনো শুরু হয়নি। মন্ত্রণালয় বলেছে, শিগগির তা শুরু হবে। ফলে এসবের বাইরে যে বদলি হয়েছে সেসব কোনোভাবেই অনলাইন বদলির মধ্যে পড়ে না।
অনলাইন বদলির আদেশের একাধিক কপিও দেশ রূপান্তরের কাছে রয়েছে। একই উপজেলার মধ্যে বদলির আদেশ উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্বাক্ষরিত। আর একই জেলার মধ্যে বদলির আদেশ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বাক্ষরিত। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে যেসব বদলির আদেশ জারি হয়েছে সেসব ‘অনলাইন বদলি’ নয়। মন্ত্রণালয় নির্দেশিকা জারি করে অনলাইনের বাইরে বদলি বন্ধ করেছে।
এ ব্যাপারে জানার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত ও পরিচালক (পলিসি অ্যান্ড অপারেশন) মনীষ চাকমাকে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার একাধিকবার ফোন দিয়ে এবং এসএমএস করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলির কাজ হবে পুরোপুরি অনলাইনে। বদলিপ্রত্যাশী শিক্ষক অনলাইনে আবেদন করার পর সেটি প্রাথমিকভাবে যাচাই করবেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে যাচাই করে আবেদনটি পাঠাবেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। তিনি যাচাই করে পাঠাবেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। এরপর সফটওয়্যারের মাধ্যমে বদলি নির্ধারণ করা হবে। এরপর আবার ডিপিইও সেটি মঞ্জুর করে পাঠাবেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। তিনি তখন বদলির আদেশ জারি করবেন এবং শিক্ষক সেটি অনলাইনেই জেনে যাবেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয় উপজেলাভিত্তিক। তাই সাধারণ নিয়মে উপজেলার মধ্যেই শিক্ষকদের বদলি হতে হবে। বিশেষ কারণে উপজেলা বা জেলা পরিবর্তনেরও সুযোগ আছে।
রংপুরের জেলা প্রশাসককে 'স্যার ডাকতে বাধ্য করার' অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক।
বুধবার (২২ মার্চ) রাত ৮টা থেকে তিনি প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে অবস্থান শুরু করেন বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশের অপরাধীরা আগে ভারতে গিয়ে আত্মগোপন করত। এরপর জানা গেল, সেখান থেকে দেশে অপরাধ ঘটায় তারা। কারও কারও নেপালে অবস্থানের কথাও জানা যায়। ভারতকে নিরাপদ মনে না করায় আরব আমিরাতের দুবাই বেছে নিচ্ছে অপরাধীরা। সেখানে তারা আস্তানা গেড়েছে।
পুলিশসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দেশের অপরাধজগতের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও তাদের সহযোগীরা অপরাধ করেই দুবাই চলে যাচ্ছে। সেখানে বসেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কলকাঠি নাড়ছে। এখন বিতর্কিত মডেল, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরাও দুবাইকে কেন্দ্র করে নানা কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। সেখানে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যও আছে। তাদের কেউ কেউ সোনার কারবারও করছেন। ওই দেশে ভারতের দুর্ধর্ষ অপরাধী দাউদ ইব্রাহিমের শিষ্যত্ব নেওয়ার কথাও শোনা যাচ্ছে।
এদিকে বাংলাদেশে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ওইসব অপরাধীর তথ্য জানার পরও তাদের ফেরত আনতে পারছেন না। আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিসের’ দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে পুলিশকে। তালিকাভুক্ত অপরাধীদের ধরতে রেড নোটিস জারি হচ্ছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। তারা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০১৮ সালে পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান হত্যাকাণ্ডের পর অনেকে পার পেয়ে গেছে। যদিও মামলাটি অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। তবে নতুন করে আলোচিত মামলাটির পুনঃতদন্ত করার কথা ভাবছে পুলিশ। এ নিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠক করছেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ রূপান্তরকে জানান, ২০২২ সালের ২৪ মার্চ সড়কে গুলি চালিয়ে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে হত্যা করা হয়। গুলিতে নিহত হন এক কলেজছাত্রী। চাঞ্চল্যকর এই জোড়া খুনের মূল হোতা সুমন শিকদার ওরফে মুসা ঘটনার রাতেই দেশ ছেড়ে চলে যায় দুবাইয়ে। সেখানে শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও জয়ের সঙ্গে তার বৈঠক হয়। কিন্তু তাদের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে মুসা চলে যায় ওমানে। জিসান ও জয় এখনো দুবাইতেই বসবাস করছে। যদিও ওমান থেকে মুসাকে ওই বছরের ৯ জুন ইন্টারপোলের মাধ্যমে ঢাকায় ফিরিয়ে আনে পুলিশ সদর দপ্তর। এ ঘটনার রেশ না কাটতেই ফের আলোচনায় আসে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও হিরো আলমের দুবাই সফরকে কেন্দ্র করে। তারা বনানীতে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের আসামি আরাভ খান নামধারী রবিউল ইসলামের সোনার দোকান উদ্বোধন করতে সেখানে যান। দুবাই যাওয়ার কারণে সাকিব ও হিরো আলমকে যেকোনো সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হতে পারে। এ ছাড়া ‘প্লেজার ট্যুরের’ জন্য এখন দেশের শিল্পপতিদের পছন্দের জায়গা হয়ে উঠেছে দুবাই। কারণ ঢাকাকে তারা নিরাপদ মনে করছেন না। পাশাপাশি দেশে আটক সোনার চালানের ৮০ শতাংশ জব্দ হচ্ছে দুবাইফেরত বিভিন্ন এয়ারলাইনস থেকে। সব মিলিয়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে দুবাই।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘অপরাধীরা যে দেশেই থাকুক না কেন, তাদের চিহ্নিত করে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে আটক করার পর দুবাই থেকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফেরত আনতে চেয়েছিল পুলিশ। সম্প্রতি আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আরাভকে দুবাই থেকে ফেরত আনতে ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করি অল্প সময়ে সুখবর দেওয়া সম্ভব হবে।’
পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশ রূপান্তরকে জানান, সম্প্রতি আলোচনায় আসা আরাভ খানকে দেশে ফেরাতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি ভারতের পাসপোর্টধারী। দেশে তার নামে ১২টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। ওইসব পরোয়ানার কপি ইন্টারপোলের সদর দপ্তরে পাঠানোর পর দ্রুতই তাকে ফেরানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও এর আগে জিসান ও জয়কে দুবাই থেকে ফেরত আনার উদ্যেগ নিয়েও আনতে পারেনি। টের পেয়ে তারা দুবাই ছেড়ে কানাডায় চলে যায়। তারা আবার দুবাই এসেছে বলে পুলিশের কাছে তথ্য আছে।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী থেকে শুরু করে বিতর্কিত মডেল, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা এই দেশে অপরাধ করে দুবাই গিয়ে আস্তানা গাড়েন। ইতিমধ্যে পুলিশ একটি তালিকা করেছে। ওই তালিকায় গুলশান ও বনানী এলাকার মডেলের সংখ্যা বেশি। বছরখানেক আগে গ্রেপ্তার হওয়া ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ বেশিরভাগ সময় দুবাই থাকেন। তাদের সঙ্গে অপরাধ জগতের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সখ্য আছে বলে পুলিশের কাছে তথ্য আছে। এমনকি বনানীতে পুলিশ কর্মকর্তা মামুন হত্যাকান্ডে তাদেরও সম্পৃক্ততা ছিল বলেও অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনার পর পিয়াসা, রাজ ও আরাভকে আটকও করা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের এক বড় মাপের নেতা ও পুলিশ কর্মকর্তার অনুরোধে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এসব বিষয় নিয়ে পুনরায় তদন্ত করা হতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংগীতশিল্পী, এক ব্যবসায়ীর স্ত্রী ও কয়েকজন মডেল নিয়মিত দুবাই আসা-যাওয়া করেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, ২০০১ সালে তৎকালীন সরকার ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসী ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। তাদের মধ্যে কয়েকজন ধরা পড়েছে। আবার কেউ ক্রসফায়ারে মারা গেছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার তাড়া খেয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপনে আছে কেউ কেউ। আত্মগোপনে থেকেই তারা অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই দুবাই রয়েছে।
পুলিশ সূত্র আরও জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। এ নিয়ে পুলিশ ও র্যাব কর্মকর্তারা কয়েক দফায় বৈঠক করেছেন। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও আলাদাভাবে বৈঠক হয়েছে। ওইসব বৈঠকে বলা হয়েছে, ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করার পরও কেন তারা ধরা পড়ছে না তা খতিয়ে দেখতে হবে। ২০০৩ সালে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ডিবি পুলিশের দুই সদস্যকে হত্যার পর শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাই চলে যায়। সেখান থেকেও ঢাকায় ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে আছে। তার সহযোগী জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোহেল শাহরিয়ার ওরফে শটগান সোহেল, কামরুল হাসান হান্নান, ইব্রাহীম, রবিন ও শাহাদৎ হোসেন বেশিরভাগ সময় দুবাই থাকে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্দিবিনিময় চুক্তি থাকায় বেশ কয়েকজন শীর্ষ অপরাধীকে বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়। শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, শাহাদৎ, নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার আসামি নুর হোসেনসহ অনেকেই কলকাতায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। নুর হোসেন ছাড়া অন্য সন্ত্রাসীদের দেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়নি। সুব্রত, মোল্লা মাসুদ ও শাহাদৎ ভারতে সুবিধা করতে না পেরে মুম্বাই হয়ে দুবাই চলে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকার অপরাধজগতের এক সন্ত্রাসী এ প্রতিবেদককে বলেন, অপরাধীরা এখন আর ভারত যেতে চায় না। কারণ ওই দেশে শান্তিতে থাকা যায় না। ফলে সবাই এখন দুবাইমুখী হচ্ছে। দুবাইয়ে সবাই নিরাপদে থাকতে পারছে।
রাজধানীর মিরপুরের একটি মাধ্যমিক-সংযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে সিফাত। একই এলাকায় বসবাসকারী তার বন্ধু সিয়াম পড়ে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে। সংযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার থেকে রোজার ছুটি। আর সরকারি প্রাথমিকে ছুটি ১৫ রোজা অর্থাৎ ৭ এপ্রিল থেকে।
এক দেশে একই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ভিন্ন নিয়মে ছুটি পাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এতে লেখাপড়ায় কেউ এগিয়ে যাবে, আবার কেউ পিছিয়ে পড়বে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সৈয়দ মামুনুল আলম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সরকার বা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিলে ভেবেচিন্তেই নেয়। তবে সব ধরনের স্কুলে একটা কো-অর্ডিনেশন থাকলে ভালো হয়। আমরা ছুটির ব্যাপারে আরও আলাপ-আলোচনা করব।’
জানা গেছে, চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে আগামী শুক্রবার শুরু হতে পারে রমজান মাস। বছরের শুরুতেই স্কুলগুলোর ছুটির তালিকা অনুমোদন করা হয়। সে অনুযায়ী পবিত্র রমজান, স্বাধীনতা দিবস, ইস্টার সানডে, বৈসাবি, নববর্ষ ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৩ মার্চ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি, বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছুটি ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি কলেজ, আলিয়া মাদ্রাসা ও টিটি (টিচার্স ট্রেনিং) কলেজেও একই সময়ে ছুটির ঘোষণা রয়েছে মন্ত্রণালয়ের।
তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ছুটির তালিকা ভিন্ন। তারা পবিত্র রমজান, ইস্টার সানডে, চৈত্র-সংক্রান্তি ও বাংলা নববর্ষ, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আগামী ৭ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ প্রায় ১৫ রমজান পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা থাকবে।
রাজধানীসহ বড় বড় শহরের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সংযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন। তাই এসব প্রতিষ্ঠানে প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও মাধ্যমিকের মতোই তাদের ছুটি থাকবে ২৩ মার্চ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের রোজার ছুটিও একই। তবে মাদ্রাসায় রোজার ছুটি শুরু এক দিন আগেই অর্থাৎ আজ বুধবার, ২২ মার্চ।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের সংযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান। তাই বুধবার ক্লাস করে বৃহস্পতিবার রোজার ছুটি শুরু হবে। তবে সব স্কুলে একই ধরনের ছুটি থাকা জরুরি। এতে একই সময়ে সিলেবাস শেষ করা যাবে, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও সন্তুষ্ট থাকবে।’
রমজানে মাধ্যমিকে স্কুল বন্ধ আর প্রাথমিকে খোলা রাখায় অসন্তোষ দেখা দিয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার লাখ শিক্ষকের মধ্যে। তারা বলছেন, যেসব অভিভাবকের সন্তান প্রাথমিক ও মাধ্যমিক দুই স্কুলেই পড়ে তাদের সমস্যা হবে। রমজান মাসে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। প্রাথমিকের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরাও রোজা রাখেন। তাই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে মিল রেখে প্রাথমিকের ছুটি নির্ধারণ করা যৌক্তিক হবে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাংগাঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আলী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এ বছর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সরকারি ছুটি ৭৬ দিন, কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাত্র ৫৪ দিন। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিন্ন ছুটি নির্ধারণের যুক্তি তুলে ধরে আমরা ইতিমধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে আবেদন করেছি। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এখনো সাড়া পাইনি।’