
কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে রেকর্ড হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ২০২২ সালে ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। ২০২১ সালের তুলনায় এটি ৩৮ দশমিক ৭১ শতাংশ বেশি।
গতকাল বুধবার ঢাকায় কোরিয়ান দূতাবাস কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের পরিসংখ্যান সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
২০২১ সালে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১০৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, ২০২২ সাল শেষে ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৭ কোটি ৯০ লাখ ডলারের বেশি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিউন বলেন, ২০২৩ সাল কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী।
কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের পরিসংখ্যানমতে, কোরিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি ২২ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ৬৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। কোরিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো ১০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছিল। ২০১১ সালে ২০ কোটি ডলার এবং ২০১৩ সালে ৩০ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল।
২০২১ সালে কোরিয়ার পণ্য বাংলাদেশে আমদানি করার আর্থিক পরিমাণ ছিল ১৬৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ২০২২ সালে তা বেড়ে ২৩৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার হয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে কোরিয়া বাংলাদেশে ৪৪ দশমিক ১ শতাংশ বেশি রপ্তানি করেছে।
কোরিয়াতে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি আইটেমের মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক, খেলাধুলার সরঞ্জাম ও অবকাশযাপনের সামগ্রী, ব্রোঞ্জস্ক্র্যাপ প্রভৃতি। দেশটিতে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ৮৩ দশমিক ২ শতাংশই তৈরি পোশাক। পোশাক রপ্তানিতে ২০২২ সালে ৫৩ কোটি ৬০ লাখ ডলারের রেকর্ড হয়েছে। এক বছরে বেড়েছে ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ। এ ছাড়া কাগজপণ্য এবং খাদ্যপণ্যের রপ্তানি যথাক্রমে ১৬৮ দশমিক ৬ শতাংশ ও ১৬৫ শতাংশ বেড়েছে। ব্রোঞ্জস্ক্র্যাপের রপ্তানি ১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার।
বাংলাদেশে কোরিয়ার রপ্তানি ২০১১ সালে ছিল ১৬৩ কোটি ডলার। প্রায় এক দশক ধরে ১২০ কোটি ডলারে সীমাবদ্ধ ছিল। ২০২০ সালে কভিড মহামারী চলাকালে এটি নিম্নমুখী হয়ে ১০৩ কোটি ডলারে নেমে যায়। এক দশক স্থবিরতার পর ২০২১ সালে রপ্তানি আবার ১৬৩ কোটি ৬০ লাখ ডলারে এসে পৌঁছায়। ২০২২ সালে রপ্তানি ২৩৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার বেড়ে রেকর্ড গড়েছে।
২০২১ ও ’২২ সালে বাংলাদেশে কোরিয়ার রপ্তানি বাড়ার প্রধান কারণ ছিল কোরিয়া থেকে বাংলাদেশের ডিজেল আমদানিবৃদ্ধি, যার হার ছিল ৭০৩.৮ শতাংশ। ২০২২ সালে যা ৯৭২ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ২০২১ সালে কোরিয়া বাংলাদেশে ডিজেল রপ্তানি করে ৪৫০ শতাংশ বেশি। ১২ কোটি ১০ লাখ ডলারের ডিজেল আমদানি করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে কোরিয়ার প্রধান রপ্তানিপণ্য হলো যন্ত্রপাতি, পেট্রো কেমিক্যালপণ্য, ইস্পাত ও কীটনাশক। এগুলো ২০২২ সালে কমেছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর মূলত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের কারণে বাংলাদেশ সরকার আমদানিতে বিধিনিষধ আরোপ করার ফলে এমনটা হয়েছে বলে মনে করা হয়।
রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে যানবাহন ও যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ১১৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে। অপরিকল্পিতাভাবে রেট শিডিউল দিয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন পাওয়ার পর দেখা গেল ঠিকাদারের দেওয়া দর প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা কম। এর পুরোটাই বেঁচে গেছে। দেশের এ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও বেঁচে যাওয়া এই অর্থ ফেরত দিতে নারাজ রংপুর সিটি করপোরেশন। এ টাকা দিয়ে তারা নতুন যন্ত্রপাতি কিনতে চায়। এজন্য পরিকল্পনা কমিশনে আবেদনও করেছে তারা।
অবশ্য সংকটের এ সময়ে মন্ত্রণালয় অনুমোদন না দিলে নির্দিষ্ট কাজের মধ্যেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।
‘রংপুর সিটি করপোরেশনের জন্য যানবাহন ও যন্ত্রপাতি ক্রয় প্রকল্প’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন পায় ২০২০ সালের শুরুতেই। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এ পর্যন্ত প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি মাত্র ৫০ শতাংশ। এ জন্য প্রকল্পের ব্যয় ৫ লাখ টাকা কমিয়ে আরও এক বছর সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে রংপুর সিটি করপোরেশন।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশনের যন্ত্রপাতি কেনার প্রকল্পটিতে ঠিকাদারদের সঙ্গে যে চুক্তিমূল্য তা প্রকল্প প্রস্তাবে দেওয়া মূল্যের চেয়ে অনেক কম। ফলে বেঁচে গেছে ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। তবে তা মন্ত্রণালয়ে ফেরত না দিয়ে আরও ৯টি নতুন যন্ত্রপাতি কেনার আবেদন করেছে তারা। একইসঙ্গে ৫ লাখ ২১ হাজার টাকা ব্যয় কমিয়ে এক বছর সময় বাড়ানোর প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশে ঠিকাদার বা মন্ত্রণালয়গুলোর প্রকল্পে বেঁচে যাওয়া অর্থ ফেরত দেওয়ার তেমন একটা নজির নেই। তবে নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৭ মাস আগেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দির দ্বিতীয় মেঘনা-গোমতী সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করার উদাহরণ তৈরি করেছিল জাপানের তিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালে এ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলো মোট ৭৩৮ কোটি টাকা সরকারকে ফেরত দেওয়ার নজির রেখেছিল।
রংপুর সিটির বেঁচে যাওয়া অর্থ ফেরত না দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক মো. আবু তালেব সরকার গতকাল বুধবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা যে টেন্ডার দিয়েছিলাম তাতে অর্থ ব্যয় কম হয়েছিল। সাচিবিক দপ্তর থেকে বলা হয়েছে এ টাকা ফেরত দেওয়া যাবে না, কারণ আমাদের যন্ত্রপাতির দরকার আছে। আমাদের বলা হয়েছে, প্রকল্পের সংশোধনী দিয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠান, যদি অনুমোদন হয় তবে পরবর্তী ব্যবস্থা। আর যদি অনুমোদন না হয়, তাহলে মূল প্রকল্প প্রস্তাবে যেভাবে আছে সে আলোকেই কাজ শেষ করা হবে।’
প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হচ্ছে না কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ঠিকাদারকে যথারীতি ওয়ার্কঅর্ডার (কার্যাদেশ) দিয়েছিলাম, কিন্তু সে সময় তাদের কাছে ডলার সংকট থাকায় তারা ঠিক সময়ে ঋণপত্র খুলতে পারেনি। পরবর্তী সময়ে আবার কভিড মহামারীর কারণেও দেরি হয়েছে। আর ভৌত অগ্রগতি ৫০ শতাংশ হলেও, আর্থিক অগ্রগতি অনেক কম। নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন এ সিটিতে, উনি খুব শিগগিরই অর্থছাড় করবেন বলে আশা করছি।’
অর্থনৈতিক এ সংকটের সময়ে নতুন যন্ত্রপাতি আমদানি করার যৌক্তিকতা কী? এ প্রশ্নের জবাবে আবু তালেব সরকার বলেন, ‘আমাদের কাছে লেস মানি (অব্যয়িত অর্থ) ছিল, সেজন্য তা ফেরত না দিয়ে নতুন করে যন্ত্রপাতি কেনার আবেদন করেছি। মন্ত্রণালয় অনুমোদন না দিলে কিছু করার নেই।’
প্রকল্পটির মাধ্যমে সিটি করপোরেশনের যানবাহন ও যান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালীকরণ, সড়ক ও নর্দমা উন্নয়ন, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাকে দক্ষ ও কার্যকরকরণ, বর্জ্য পরিবহনের দক্ষতা বাড়ানো ও বর্গা ব্যবস্থাপনা সহজতরকরণ এবং পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটির সংশোধন প্রস্তাবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য স্টিয়ারিং কমিটির সভায় পেশ করা হয়েছে।
সভায় প্রকল্প সংশোধনের কারণ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে জানানো হয়, প্রাক্কলিত ব্যয়ের অব্যয়িত অর্থ দিয়ে নতুন খাত যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ২টি স্কিড স্টিয়ার লোডার খাতে ২ কোটি ৪০ লাখ, ২টি হাইড্রোলিক বিম লিফটার খাতে ৩ কোটি ২০ লাখ, ২টি সার্চলাইট উইথ জেনারেটর ক্যারি অন দি ট্রাক চ্যাসিস মাউন্টেড ২ কোটি ৬০ লাখ, ১টি হুইল লোডার ৩ কোটি এবং ২টি মিনি ভাইব্রেটর রোলার খাতে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় সার্বিকভাবে ৫ লাখ ২১ হাজার টাকা কমেছে।
নতুন এ ৯টি যন্ত্রপাতি কেনার প্রস্তাবের বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক বলছেন, এতে প্রকল্পের উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়ক হবে এবং প্রকল্পের মোট অনুমোদিত প্রাক্কলিত ব্যয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। তবে প্রস্তাবিত সংশোধিত ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) খাতভিত্তিক ব্যয় এবং নতুন যন্ত্রপাতি কেনার যৌক্তিকতাসহ প্রকল্প সংশোধনের কারণ সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে বলেছে কমিশন।
মূল প্রকল্প প্রস্তাব ঘেঁটে জানা গেছে, রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে রংপুর সিটি করপোরেশনের জন্য যানবাহন ও যন্ত্রপাতি ক্রয় প্রকল্প হাতে নিয়েছিল পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।
২০১০ সালে বিভাগ ঘোষণার পর ২০১২ সালের ২৮ জুন রংপুর সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে এই সিটির রাস্তাঘাট, ড্রেন ও ফুটপাতের অবস্থা খুবই খারাপ। এছাড়া বর্জ্য ও পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনাও নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এরমধ্যে একটি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে কিছু রাস্তার উন্নয়ন করা হয়েছে এবং সম্প্রতি অনুমোদিত অন্য একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বেশ কিছু রাস্তা, ফুটপাত ও ড্রেনের উন্নয়ন করা হচ্ছে।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে একটি অ্যাসফল্ট মিক্সিং প্ল্যান্ট, দুটি রেডি মিক্স কংক্রিট ক্যারিয়ার, একটি পেভার ফিনিশার, একটি মোটর গ্রেডার, দুটি এক্সাভেটর, একটি ভেকুয়াম সেপটিক ট্যাংক ক্লিনার, ১০টি গারবেজ, একটি ড্রেন ক্লিনিং জেট অ্যান্ড সাকার মেশিন এবং টায়ার রোড রোলার করা হবে।
পাট ও পাটজাত পণ্যের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা খালেদা সুলতানা যখন কথা বলছিলেন, তখন খুশিতে তার চোখ-মুখ ঝলমল করছিল। বললেন, ‘আমাদের তৈরি পাটের পণ্য নিউইয়র্কে যাবে। এটি আমাদের জন্য দারুণ একটি সুযোগ। সেখানে সরাসরি মেলায় উপস্থিত থাকব। এক অন্য রকম মুহূর্ত হবে আমাদের জন্য।’ শুধু খালেদা নন, অনেক ত্যাগ আর কষ্টে স্বপ্নপূরণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানোর কথা শোনালেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা প্রতিমা চক্রবর্তী, সামিউন নাহার, হাকিম আলী সরদার। তারা জানালেন নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা, লড়াই আর সংগ্রামের গল্প। সবার কণ্ঠে একই সুর, পাট ও প্রাকৃতিক আঁশ জাতীয় পণ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে পরিচিত করে তোলা। কিছুদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যাচ্ছে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের তৈরি পাট ও প্রাকৃতিক আঁশ থেকে উৎপাদিত পণ্য। আগামী ৫ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্ক সিটিতে ‘এনওয়াই নাও উইন্টার শো’ নামে বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেখানে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের ১৪টি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করা হবে। এতে সহযোগিতা করছে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসআইডি), কানাডার ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অফিস (টিএফও) এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বিস্তারিত অবহিত করতে গতকাল বুধবার রাজধানীর গুলশান-২-এর একটি হোটেলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মফিজুর রহমান, ইউএসএআইডির ইকোনমিক গ্রোথ অফিসের ভারপ্রাপ্ত অফিস পরিচালক জোসেফ লিজার্ড, ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ হর্টিকালচার অ্যাকটিভিটির উপদেষ্টা আনোয়ার ফারুকসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা।
তবে আমিন্ত্রত অতিথিদের অনেকের কণ্ঠে দুঃখবোধও ঝরেছে। তারা বলেন, একসময় পাটকে বলা হতো বাংলাদেশের সোনালি আঁশ। কিন্তু এখন আর পাটকে সোনালি আঁশ বলে না। উদ্যোক্তারা বললেন, পাটের সেই সুসময়টি তারা আবারও দেখতে চান। দেখাতে চান বিশ্ববাসীকে।
এই উদ্যোগের সহযোগীরা বলেন, পাটজাত পণ্য পরিবেশবান্ধব ও আন্তর্জাতিক বাজারে এর চাহিদা ক্রমবর্ধমান। বাংলাদেশে প্রচুর পাট উৎপাদন হলেও পাটজাত পণ্য প্রস্তুতকারকদের মধ্যে বৈশি^ক বাজারের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও এর প্রয়োগের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। একই সঙ্গে পাটের উৎপাদনও কমছে। ফলে অনেক এসএমই উদ্যোক্তা পাটভিত্তিক পণ্য উৎপাদন করলেও বিশ^বাজারে তাদের প্রবেশাধিকার সীমিত। বাংলাদেশ হর্টিকালচার অ্যাকটিভিটির এই উদ্যোগের মাধ্যমে স্থানীয় এসএমই প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক বাজার উপযোগী পণ্য দেখার, এ-সম্পর্কে শেখার এবং পণ্যের ডিজাইন করা ছাড়াও আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফরমে বাংলাদেশি পণ্য প্রদর্শনের সুযোগ পাবেন। এটি হবে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় পাওয়া।
কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন উন্নতির দিকে যাচ্ছে। এ দেশের পার্টের তৈরি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে। এটি এ দেশের অর্থনীতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করছে। বহির্বিশে^ বাংলাদেশকে আরও ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে এটি ভূমিকা রাখবে এবং এটি একটি চমৎকার সুযোগ বলে মনে করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে এই আয়োজনে সহযোগিতা করছে। এর অংশীদার হতে পেরে আমরা গর্বিত।’
এসএমই ফাউন্ডেশনের এমডি মফিজুর রহমান বলেন, ‘এটি একটি নতুন যাত্রার শুরু। এই উদ্যোগের অংশ হতে পেরে আমরা খুবই খুশি। আমার মনে হয়, এটি বাংলাদেশের ভিতকে আরও সবল করবে এবং এ দেশকে আরও ভালো অবস্থানে নিয়ে যাবে। এ দেশের পরিচিতি বাড়াবে। আমাদের এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ^ব্যাপী এ রকম ট্রেড শোতে আমরা দেখতে চাই। এ জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।’
জোসেফ লিজার্ড বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পাটপণ্য যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় যাচ্ছে এটি একটি ভালো উদ্যোগ। এই উদ্যোগ বাংলাদেশের বাজারব্যবস্থাকে আরও সুসংহত করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমি আশা করি, এই উদ্যোগের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ হর্টিকালচার অ্যাকটিভিটি, কানাডার টিএফও ও এসএমই ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ যৌথভাবে আয়োজিত ‘কানাডিয়ান অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট অ্যাকসেস ফর দ্য এসএমই’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী রপ্তানি প্রস্তুতি কর্মশালার মাধ্যমে এই উদ্যোগের সূত্রপাত। পাটজাত পণ্য খাতের ৩৪টি এসএমই প্রতিষ্ঠান এই কর্মশালায় অংশ গ্রহণ করে। এর মধ্যে ১৪টিকে নিউইয়র্কে শীতকালীন বাণিজ্য প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। এগুলো হলো এসিক্স ইন্টারন্যাশনাল, আদর্শলিপি, ডিজাইন বাই রুবিনা, গোল্ডেন জুট প্রোডাক্ট, জারম্যাটস লিমিটেড, জুট ল্যান্ড বাংলাদেশ, জুট মার্ট অ্যান্ড ক্রাফট, জুট মার্ট ইন্টারন্যাশনাল, কারুযোগ, প্রকৃতি, সামিস ওয়ার্ল্ড, সুতার কাব্য লিমিটেড, দ্য জুট ফাইবার বিডি এবং তুলিকা ইকো। নিউইয়র্কের মেলায় এসব প্রতিষ্ঠানের তৈরি পাটের হ্যান্ড ব্যাগ, ম্যাট, অন্যান্য ফ্যাশন পণ্যসহ বাড়ির সাজসজ্জা ও উপহারসামগ্রী প্রদর্শন করা হবে।
যে ১৪টি প্রতিষ্ঠান নিউইয়র্কের মেলায় অংশ নিতে যাচ্ছে, তাদের কয়েকটি গতকাল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল।
সামিস ওয়ার্ল্ডের স্বত্বাধিকারী সামিউন নাহার বলেন, ‘বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যকে পরিচিত করতে আমাদের অফুরান চেষ্টা থাকবে। এ ধরনের সুযোগ আমাদের জন্য বিশাল প্রাপ্তি।’ জুট মার্ট অ্যান্ড ক্রাফটের প্রধান নির্বাহী খালেদা সুলতানা বলেন, ‘সহযোগীদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে, এই উদ্যোগ যেন শুধু এ বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। আমরা প্রতি বছরই যেন দেশের এই পণ্যকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে পারি।’ গোল্ডেন জুট প্রডাক্টের স্বত্বাধিকারী হাকিম আলী সরদার বলেন, ‘দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে, অনেক কষ্ট করে এ পর্যন্ত এসেছি। এখন আমার প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য মানুষ কাজ করে। এখন আমরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রদর্শনের সুযোগ পেয়েছি। এটি অবশ্যই গর্বের।’ জুট ল্যান্ড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রতিমা চক্রবর্তী বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য হবে একটি বিরল মুহূর্ত। বাংলাদেশের পাটশিল্পকে আমরা তুলে ধরতে চাই।’
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা আজ বৃহস্পতিবার। বিদ্যা, জ্ঞান, কলা ও শুদ্ধতার প্রতীক হিসেবে দেবী সরস্বতীর পূজা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
সনাতন শাস্ত্রমতে, চতুর্ভূজা ব্রহ্মার মুখ থেকে আভির্ভূতা শুভ্রবর্ণা বীনাধারিণী চন্দ্রের শোভাযুক্ত দেবীই হলেন সরস্বতী। বাংলা বর্ষের মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়। এ তিথি শ্রী পঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমী নামে পরিচিত।
আজ সরস্বতী দেবীর পূজা, আরাধনা করে তার চরণে পুষ্পাঞ্জলী দেবেন ভক্তরা। অজ্ঞতার অন্ধকার থেকে দূর করে আলোর পথ দেখাতে কল্যাণময়ী দেবীর পাদপদ্মে প্রণতি জানাবেন তারা। রাজধানীসহ সারদেশে মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্টানসহ পাড়া মহল্লায় অস্থায়ী মন্ডপে মহাসমারোহে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মন্দির ও ম-পগুলোকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে।
সরস্বতী পূজায় অভ্র, আবীর, আমের মুকুল, দোয়াত কলম যবের শিষ এসব উপাচারের প্রয়োজন হয়। পূজার দিনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শিশুদের হাতেখড়ি, ব্রাহ্মণভোজন ও পিতৃতর্পণ (পূর্ব পুরুষদের স্মরণ করা) করা হবে। প্রত্যুষে পূজার্চ্চনা, আরাধানা, পুষ্পাঞ্জলী অনুষ্টিত হবে। এছাড়া দিনব্যাপী প্রসাদ বিতরণ, ধর্মীয় আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা আরতি ও আলোকসজ্জার আয়োজন করা হয়েছে। রাজধানীর ঢাকেশ^রী জাতীয় মন্দিরে নানা আয়োজনে সরস্বতী পূজার আয়োজন করেছে ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি।
রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ, রমনা কালি মন্দির, সুপ্রিম কোর্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাষ্টিক সার্জারি ইনষ্টিটিউট, বিভিন্ন মন্দির ও অস্থায়ী মন্ডপে এ পুজার আয়োজন করা হয়েছে।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে আজ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে অবকাশ থাকবে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সারা দেশে মহাসমারোহে সরস্বতী পূজা উদপাপিত হচ্ছে। নির্বিঘেœ পূজা আয়োজনে নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করতে প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে।’
সম্প্রতি দেশের রিয়েল এস্টেট সেক্টরের অন্যতম সেরা আকর্ষণ প্রিমিয়াম মেগা গেটেড কমিউনিটি রূপায়ণ সিটি উত্তরা পরিদর্শন করেছে কুয়েতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল।
রাজধানীর উত্তরার ১২নং সেক্টরসংলগ্ন দিয়াবাড়িতে গড়ে ওঠা সর্বাধুনিক সুবিধা সন্নিবেশিত ও দৃষ্টিনন্দন আবাসন সিটি পরিদর্শন শেষে মুগ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কুয়েতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা।
প্রতিনিধিদলকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানান রূপায়ণ গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খাঁন মুকুল, রূপায়ণ গ্রুপের পরিচালক রোকেয়া বেগম নাসিমা এবং রূপায়ণ গ্রুপের উপদেষ্টা ক্যাপ্টেন অবসরপ্রাপ্ত পিজে উল্লাহ।
রূপায়ণ সিটি উত্তরা পরিদর্শনে আসেন কুয়েত বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মুকাই আলী লুৎফর রহমান, বিজয়নগর উপজেলা চেয়ারম্যান নাসিমা মুকাই আলী, ইঞ্জিনিয়ার মোর্শেদ হোসেন, মুজিবর রহমান লিটন ও আতাউর রহমান, খালেদ আল মুতাইরি ও জেসিকা জুংগাওসহ অন্যরা।
এ সময় তারা বলেন, বাংলাদেশে আবাসন ব্যবসায় রূপায়ণ সিটি উত্তরা একটি অনন্য মাইলফলক। বাইরে থেকে বোঝাই যায় না ভেতরটা কত সুন্দর। রূপায়ণ সিটি উত্তরাকে তারা আন্তর্জাতিক মানের আবাসন প্রকল্পের সঙ্গে তুলনা করেন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে চায়ের দোকানে পায়ের ওপর পা তুলে বসা নিয়ে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। গুরুতর আহত নাঈম নামের ওই ছাত্রলীগকর্মীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন নয়াবাজার এলাকায় চায়ের দোকানে পায়ের ওপর পা তুলে বসা নিয়ে ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রিশাদ ঠাকুর ও জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রব নাঈমের কথা-কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে রিশাদ ঠাকুর নাঈমকে থাপ্পড় মারলে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপুরের দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে আবার সংঘর্ষ হয়। এ সময় রিশাদ ঠাকুর, ইফতেখার আহমদ রানা ও ইউসুফ আহমেদ টিটুর নেতৃত্বে নাঈমকে স্টাম্প দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। তার মাথা ফেটে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে রিশাদ ঠাকুর সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটা ছোট বিষয় নিয়ে এক জুনিয়রের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়, তখন সে সিনিয়রের সঙ্গে বেয়াদবি করে। বিষয়টি আমার গ্রুপের জুনিয়ররা জানার পর সমাধানের জন্য বসলে তখন সে আবারও বেয়াদবি করে। তখন একটু হাতাহাতি হয়। পরে বিষয়টি দুই গ্রুপের সিনিয়র ও প্রভোস্টরা বসে সমাধান করে দেন।’
মারধরের শিকার নাঈমের গ্রুপ নেতা মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমার গ্রুপের এক জুনিয়রের সঙ্গে অন্য গ্রুপের এক কর্মীর ভুল বোঝাবুঝি থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। কী নিয়ে ঝামেলা হইছে, সেটা আমি জানি না। তবে বিষয়টি সমাধান করে দেওয়া হয়েছে।’
সার্বিক বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খান বলেন, ‘সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে সিনিয়র-জুনিয়রের মধ্যে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। পরে দুই গ্রুপের নেতাদের সঙ্গে বসে আমরা বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি।’
জুলাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ হারে বাংলাদেশ দল। যে সিরিজে চট্টগ্রামে ঘরের মাঠে টাইগাররা ২-১ ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। আর এই সিরিজে পরাজয়ের পেছনে বড় কারণ অধিনায়ক তামিম ইকবাল! এমনটাই মনে করেন বাংলাদেশ দলের বর্তমান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ শেষে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তামিম। একদিন পরে অবশ্য অবসর ভাঙলেও সেই সিরিজ আর খেলেননি তিনি। একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় কিস্তিতে সাকিব সেই সিরিজ হারের দায় দিলেন তামিমের ওপরই।
'আফগানিস্তানের সঙ্গে সিরিজ হারটা আমি পুরোপুরি একজনকে দায় দেব, অধিনায়ক। এক ম্যাচ পরে আমাদের হাতে আরও দুই ম্যাচ ছিল। আমরা তৃতীয় ম্যাচে ঠিকই কামব্যাক করেছি কিন্তু একটা ম্যাচ সময় লেগেছে আমাদের। সুতরাং এটা আর কারো দায় নয়, পুরো সিরিজটায় দায় একজনের ওপর। বিশ্বের কোথাও অন্তত দেখিনি যে এক ম্যাচ পরেই এরকম অধিনায়ক এসে ইমোশনালি বলে ফেলেন যে আমি ভাই খেলব না আর ক্রিকেট।’
সাকিব বলেন, 'আমার ধারণা যদি কোনো অধিনায়কের দায়িত্ববোধ থাকত, সে এটা করতে পারত না। আমার কাছে মনে হয়, এটা দলকে অনেক বাজে একটা পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে এবং আমার মনে হয় ওইটাই এখনো রিকভার করতে সময় লাগছে, যেটা আমি অনুভব করি।’
৯ দফার ভিত্তিতে ১৫টি ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ভোটাধিকার, সন্ত্রাস-দখলদারিত্বমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস, সর্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতৃত্বে 'ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য' আত্মপ্রকাশ করেছে।
আজ শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের মুখপাত্র হিসেবে এ ঘোষণা করেন। ছাত্র ঐক্যের সমন্বয়কারী করা হয়েছে ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানকে।
জোটভুক্ত হতে যাচ্ছে যেসব ছাত্রসংগঠন
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জেএসডি), গণতান্ত্রিক ছাত্রদল (এলডিপি), নাগরিক ছাত্র ঐক্য, জাগপা ছাত্রলীগ, ছাত্র ফোরাম (গণফোরাম মন্টু), ভাসানী ছাত্র পরিষদ, জাতীয় ছাত্রসমাজ (কাজী জাফর), জাতীয় ছাত্রসমাজ (পার্থ), জাগপা ছাত্রলীগ (লুৎফর) ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, বিপ্লবী ছাত্র সংহতি এবং রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলন।
ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের দাবিসমূহ
১. বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সংস্কারে আন্দোলনরত দলগুলোর ৩১ দফা বাস্তবায়ন করা।
২. শিক্ষা ব্যবস্থার লক্ষ্য হবে মানবিকতার বিকাশ, নৈতিকতা বোধের উন্নতি, মানুষে মানুষে বৈষম্যবিরোধী চিন্তার অনুশীলন এবং এই লক্ষ্য পূরণে শিক্ষাকাঠামো, পাঠদানপদ্ধতি, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক সমস্ত ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক চর্চাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে জিডিপির অন্তত ৫ ভাগ বরাদ্দ করে সকলের জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে করে শিক্ষার্থীরা জ্ঞান দক্ষতা ও সৃজনশীলতা বিকাশের উপযোগী হয়ে জাতীয় সম্পদে পরিণত হয়। একটি উৎপাদনমুখী অর্থনৈতিক পুনর্গঠন এর প্রয়োজন মেটাতে বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণায় সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষার বিকাশ। বুনিয়াদি শিক্ষাকে সার্বজনীন, অবৈতনিক ও মানসম্মত করার উদ্যোগ গ্রহণ।
৩. সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ নিবর্তনমূলক সকল আইন বাতিল করতে হবে।
৪. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্যাতনবিরোধী আইন করে শিক্ষাঙ্গনগুলোকে সন্ত্রাস ও দখলদারিত্ব মুক্ত করা, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন, প্রথম বর্ষ থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ছাত্রদের সিট পাওয়ার বৈধ অধিকারের স্বীকৃতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ। সর্বোপরি দলমত নির্বিশেষে সকল সংগঠনের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
৫. শিক্ষার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, শিক্ষকদের বেতন কাঠামোর পুনর্নির্ধারণ, মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধার পুনর্বিন্যাসসহ বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ। শিক্ষক সংখ্যা বৃদ্ধি করে পর্যাপ্ত উপকরণ ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের পুষ্টি ও মনোযোগের কথা মাথায় রেখে মিড ডে মিল চালু করতে হবে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভ্যাট (মূল্য সংযোজনী কর) আরোপ করা চলবে না। বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতন-ফি কমাতে হবে এবং অভিন্ন নীতিমালা ও বেতন কাঠামো নির্ধারণ করতে হবে।
৬. জ্ঞানকে গভীর করার জন্য মাতৃভাষায় শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। ফলে সারা বিশ্বের সমস্ত ধ্রুপদী সাহিত্য ও পাঠ্যপুস্তককে মাতৃভাষায় রূপান্তরের জন্য একটি জাতীয় অনুবাদ সংস্থা স্থাপন করে দ্রুততার সাথে এই কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
৭. বর্তমান সরকার যেভাবে ইতিহাসের ব্যক্তিকেন্দ্রিক বয়ান তৈরি করেছে এবং জনগণের ভূমিকাকে নির্বাসিত করেছে তার বদলে বাংলাদেশের জনগণের নির্ধারক ভূমিকাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং ইতিহাসে সকল ব্যক্তির যার যা অবদান আছে তার স্বীকৃতি দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকাকে প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের সামনে প্রকৃত ইতিহাস পৌঁছে দেওয়ার জরুরি কাজটি করার জন্য পাঠ্যপুস্তক সংস্কার করতে হবে।
৮. শিক্ষার্থীদের মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী শিক্ষা গ্রহণের সমস্ত ব্যবস্থা এবং শিক্ষা শেষে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সহজ শর্তে শিক্ষা ঋণ দিতে হবে। সকল শিক্ষার্থীকে স্বাস্থ্যবিমার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করার জন্য সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে।
৯. সকল জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থীর সুযোগের সমতা এবং নাগরিক অধিকারের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।
সরকারি চাকরিতে আবেদন করতে গিয়ে সত্যায়ন নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েননি দেশে এমন চাকরিজীবী কিংবা চাকরি প্রত্যাশী খুঁজে পাওয়া যাবে না। চাকরিতে আবেদনের ক্ষেত্রে ছবি, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, অভিজ্ঞতা সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বিভিন্ন কাগজপত্রে প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মাধ্যমে সত্যায়ন করার নিয়ম চালু রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।
বিড়ম্বনা এড়াতে অনেক চাকরি প্রত্যাশীরা নীলক্ষেতে গিয়ে কোনো এক গেজেটেড কর্মকর্তার নামে সিল-প্যাড তৈরি করেন। এসব সিল-প্যাড বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, মেসে ছড়িয়ে পড়ে। এসব সিল-প্যাডের ছাপ দিয়ে, স্বাক্ষর নকল করে নিজেরাই নিজেদের কাগজ সত্যায়িত করেন। ।
এ পরিস্থিতিতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, খুব দ্রুত চাকরিতে আবেদনের ক্ষেত্রে 'সত্যায়ন' প্রক্রিয়া বাতিল হচ্ছে। গত বুধবার দেশ রূপান্তরের সাথে একান্ত আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
ফরহাদ হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, চাকরি প্রত্যাশীদের বিড়ম্বনা এড়াতে খুব দ্রুতই সত্যায়ন প্রক্রিয়া বাতিল হবে। বিষয়টি নিয়ে আমরাও অনেক খোঁজ-খবর নিয়েছি। সত্যি বলতে সত্যায়নের কোনো দরকার নেই। এমনো হয়, যে শিক্ষার্থীরা নিজেই নিজের কাগজ সত্যায়িত করছেন, আবার যার নামে সিল তৈরি হয়েছে তিনি নিজেই হয়তো তা জানেন না।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, গ্রামের একটা ছেলে, যার আত্মীয়-স্বজন কেউ প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরি করেন না। আবার সরকারি চাকরী করেন এমন কেউ তার পরিচিত নন। এ ক্ষেত্রে ওই চাকরি প্রত্যাশী বিড়ম্বনায় পড়েন। ফলে বাধ্য হয়ে অপরিচিত কারও কাছে তিনি কাগজপত্র সত্যায়িত করতে নিয়ে যান। যার কাছে কাগজ নিয়ে যান তিনিও হয়তো আগ্রহ দেখান না, অনেক ক্ষেত্রে বিরক্ত হন।
ঠিক কবে নাগাদ এ সিদ্ধান্তের কার্যকর হবে এমন প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের চলতি মেয়াদেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।
কুমিল্লার লাকসামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ৭ জনকে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) পৌর সদরের ৭নং ওয়ার্ডের গাজীমূড়া আলিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন— ফারুক, রাশেদ, শাহজাহান ও মনির হোসেন। প্রাথমিকভাবে এদের নাম জানা যায়। তবে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত ব্যক্তির নাম মনির হোসেন। আহত ব্যক্তিদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে অনুষ্ঠানের আয়োজক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারী ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল মান্নানের অভিযোগ করে বলেন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের অনুসারীরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে তিনি দাবি করছেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় গাজীমূড়া আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে মিলাদ ও বেলা তিনটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল মান্নান। সকালে শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠান হয়। তবে চারটার দিকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রীর অনুসারী ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দাবিদার জাহাঙ্গীর আলম, লাকসাম উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শিহাব খান এবং পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফ খানের নেতৃত্বে শতাধিক লোক মাদ্রাসার ফটকে তালা দেন। এ সময় আবদুল মান্নান তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে আবদুল মান্নানের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সেখানে হামলা হয়। এতে আহত হয়েছেন সাতজন। হামলার সময় রামদা দিয়ে মনির হোসেন নামের এক হকারের হাত ও পা কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। পরে দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারী (রাজনৈতিক)। বৃহস্পতিবার সকালে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) এর অনুষ্ঠান করি। বিকেলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে দোয়ার আয়োজন করি। এ সময় জাহাঙ্গীর, শিহাব ও স্বাধীনের নেতৃত্বে শতাধিক লোক আমার এলাকার লোকজনের ওপর হামলা করেন। মনির নামের এক হকার অনুষ্ঠান দেখতে আসেন। তাঁকে কোপানো হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। মন্ত্রীর লোকজন এই হামলা করেছেন। আমি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৯ (লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইব। সামাজিক এই কর্মসূচিতে হামলা চালানো হয়েছে, যা ন্যক্কারজনক ঘটনা।
এ ঘটনার অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর, শিহাব ও সাইফের মুঠো ফোনে বার বার কল দিও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে লাকসাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও লাকসাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইউনুস ভূঁইয়া বলেন, আমাদের স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাহাঙ্গীরকে প্রথমে মান্নান মারধর করে। এরপর সেখানে ঝামেলা হয়েছে বলে শুনেছি।
লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল মান্নানের কর্মসূচিতে একজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে এ নিয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করলে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতির আওতায় আসতে পারেন যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এমন কথাই জানিয়েছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
একইসঙ্গে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসসহ অন্য সকল কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিনের সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন ছাড়াও নাগরিকদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া স্টেট ডিপার্টমেন্টের এই ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রসঙ্গটিও উঠে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে ওই ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি এখন নির্দিষ্ট কোনও পদক্ষেপ ঘোষণা করতে যাচ্ছি না। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের ঘোষণা অনুসারে বাংলাদেশে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ করার কাজে দায়ী কিংবা জড়িত থাকার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সরকার এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর ভীসা নীতি কার্যকর করার পদক্ষেপ আমরা শুরু করেছি।
তিনি আরও বলেন, গত ২৪ মে ভিসা নীতি ঘোষণার সময় আমরা এটা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি। আমরা ভিসা নীতির কথা বলেছি তবে কারও নাম উল্লেখ করিনি। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দুর্বল ও বাধাগ্রস্থ করার কাজে দায়ী কিংবা জড়িত যেকোনও বাংলাদেশির ক্ষেত্রে এই ভিসা নীতি কার্যকর হবে। অন্য যেকোনও ব্যক্তির ক্ষেত্রে যদি আমরা মনে করি তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা প্রয়োজন, সেক্ষেত্রে আমরা এই নীতি প্রয়োগ করব।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিতে চায় তার পরিবার। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন জার্মান বিএনপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বিএনপি নেতারা।
তারা বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জার্মানিতে নেওয়ার কথা ছিল উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সে সময় শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। এবার চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে আনার কথা শুনছি। জার্মানিতে খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা দরকার তার আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা জার্মানিতে রয়েছে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি যদি চেয়ারপারসনকে জার্মানিতে আনা হয় তাহলে আমরা তার জন্য কিছু করার সুযোগ পাব। জার্মানিতে তার ভালো চিকিৎসা হবে।’
এর অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) জান রল্ফ জানোস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। জবাবে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানোস্কি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া যে ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তার সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে সম্ভব জার্মানি তার অন্যতম। বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিলে জার্মানিতে তার সুচিকিৎসা হতে পারে।’
গত ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় খালেদা জিয়া ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্র ও কিডনির জটিলতা বেড়েছে। তিনি হাসপাতালে কখনো কিছুটা ভালো থাকছেন, পরক্ষণেই তার স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। ফলে তাকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘লিভার সমস্যার কারণে ম্যাডামের শ্বাস কষ্ট হয়। ইতোমধ্যে তাকে দুইবার করোনারী কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছিল। লিভার প্রতিস্থাপন করতে পারলে শ্বাসকষ্টটা হতো না।’
এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতির লক্ষণ না থাকায় তার পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি এখন সামনে এসেছে।
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়া হতে পারে এমন খবরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও খোঁজখবর নিচ্ছেন জার্মান বিএনপি নেতারা।
জার্মান বিএনপির সভাপতি আকুল মিয়া বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জার্মানিতে ম্যাডামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আনা হতে পারে বলে জানতে পেরেছি। আমরা খুবই খুশি। কারণ জার্মানিতে আসলে আমরা তার চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করতে পারব। চেয়ারপারসনের যে চিকিৎসা দরকার তা সকল ব্যবস্থা জার্মানিতে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যাডামের মুক্তি, তার উন্নত চিকিৎসা ও গণতন্ত্র ফেরাতে দেশে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জার্মানিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। আগামী ৯ অক্টোবর আমাদের কর্মসূচি রয়েছে। জার্মান বিএনপির উদ্যোগে রোডমার্চ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করব জার্মান পার্লামেন্টের সামনে। ’
আকুল মিয়া বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যখন বিদেশে নেওয়ার আলোচনা চলছিল তখনও জার্মানিতে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় তারেক রহমানের সেবা করতে না পারলেও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সেবা করতে পারব বলে আশা করছি। তার চিকিৎসা জার্মানিতে করতে পারলে আমরা ধন্য হবো।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার খালেদা জিয়ার ছোট ভাই সাঈদ ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি মতামত জানতে চেয়ে আবেদনের কপি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনটি অল্প সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত অভিযোগে দেশের কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টা বক্তব্য দিতেও শুরু করেছে। এতে বিরোধীপক্ষেরই ঝুঁকি দেখছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই সবপক্ষই চাপে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান নিয়ে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা হলেও মূলত নির্বাচনী রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন আসবে। একপক্ষ নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিলেও সেই পথ থেকে তাদেরও সরতে হবে। আবার সরকারপক্ষ যেনতেন নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসে যাবে সেই সুযোগও থাকছে না। যে যাই বলুক নির্বাচনী রাজনীতিতে সামনের দিনগুলোতে এ পরিবর্তন আসতেই হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সবপক্ষের জন্য। তাদের অবস্থানে বিএনপি উৎফুল্ল হয়ে যাবে, আর আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন নয়। বরং এতে এক ধরনের সমাধানের পথ খুলে যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ না দিলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছে। তাদের একাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করে সরকার ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে সমর্থনের কথা জানিয়ে গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রয়োগের কথা জানানো হলো গত শুক্রবার।
এর আগে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা ও র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিসানীতি প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অনড় অবস্থানের বিষয়টি আবার জানাল। দেশটির এ অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দেখছে দুভাবে। একটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা। দ্বিতীয়টি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করা বিএনপিকে নির্বাচনে আনা। এর বাইরে অন্য কোনো বিরূপ প্রভাব দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার এত দিন যেটা চেয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র সেটাই আশা করছে।
তবে বিএনপি ভিসানীতির জন্য সরকারকে দায়ী করেছে এবং সেটা তাদের নেতাকর্মীদের এক দফা আন্দোলনে আরও উজ্জীবিত করবে, এমন দাবি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কারণে আগামী নির্বাচন যেনতেনভাবে হয়ে যাবে সেটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রস্তুতি সবাইকে নিতে হবে। এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তা যেই হোক শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বা একপেশে করার চিন্তা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে চাইলে, পড়তে হবে ভিসানীতির আওতায়। যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থান এখন পর্যন্ত সেটাই ইঙ্গিত করে।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে এক দফা দিয়ে আন্দোলনে আছে বিএনপি। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার জন্য এক দফা ঘোষণা করেছে। তারাও শান্তি-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সেটা নিশ্চিত করতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ এটাও বলে আসছে, তাদের সরকারের চাওয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দুভাবে দেখলেও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে নানা রকম কানাঘুষা রয়েছে। ভেতরে-ভেতরে ‘ভেঙে পড়লেও’ ওপরে শক্ত মনোভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নতুন কিছু নয়। দুপক্ষের অবস্থান একই বলেও দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আমেরিকার যে অবস্থান তাতে বিএনপিরই ক্ষতি, কারণ তারা ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন হতে দেবে না।’ তিনি বলেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ও আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় সরকার। সেখানে সব দল নির্বাচনে আসুক সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত এবং সহযোগিতা করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা জোরালোভাবে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র তো বিএনপির দাবি সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান সেখানে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এসব বলা হয়নি। ফলে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করায় আওয়ামী লীগ বা সরকার কেন বেকায়দায় পড়বে? আমরা মনে করি, বিএনপিই তো বেকায়দায় রয়েছে। কারণ, তাদের দাবি অসাংবিধানিক। আর অসাংবিধানিক উপায় অবলম্বন করছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই অনড় অবস্থান বিএনপির বিরুদ্ধে গেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের দাবি, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি। তারা তো বিএনপির একটা দাবির কথাও বলে নাই।’ সরকার বা আওয়ামী লীগ ভীত ও শঙ্কিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উচিত বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানা।’
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আমরা যেমন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, আমেরিকারও একই রকম চাওয়া।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র যে এমন কিছু করবে এটা প্রত্যাশিতই ছিল। এটা সিম্পল ব্যাপার আমাদের জন্য।’
ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় বিরোধী দল আছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে বক্তব্য এসেছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিবৃতিতে কোন বিরোধী দলের কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট তার জন্য সরকার এককভাবে দায়ী। তা ছাড়া এর আগে বাইডেন প্রশাসন তাদের দেশে যে গণতন্ত্রের সম্মেলন করেছে তাতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি।’
ভিসানীতি প্রয়োগের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ বিগত দুটি বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন করার পর আবারও আগামী নির্বাচন একতরফা করতে যে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এর দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগকে নিতে হবে। আজকে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ আগের ঘোষণার ধারাবাহিকতা। প্রথমদিকে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে, সাধারণ মানুষের ভেতর যে বড় ধাক্কা মনে হয়েছিল, ঘোষণা আসার পর সেটা মনে হয়নি। তবে কোনো একটা সমীকরণ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর প্রভাব কত দূর যাবে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনে কী বার্তা যাবে সেটা পরিষ্কার নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তাদের বৈশি^ক চর্চারই অংশ। মূল কথা হলো, এটা সবার জন্যই চাপ।’
বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। রাতটা পোহালেই বাংলাদেশ দল উড়াল দেবে ভারতের গোয়াহাটিতে। তবে এখনও ঘোষণা করা হয়নি দল। বিসিবি জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে চলমান তৃতীয় ওয়ানডের ম্যাচ শেষেই জানানো হবে বিশ্বকাপের দল।
প্রচুর আলোচনা ও জল্পনা–কল্পনার পর আজ বিশ্বকাপে নিজেদের স্কোয়াড ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির ফেসবুক পেজে আজ দুপুর ১টা ২৮ মিনিটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায় বিসিবির লোগোসংবলিত বক্সে করে গুরুত্বপুর্ণ কিছু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভিডিও–র শেষে প্রশ্ন করা হয়েছে, বলুন তো ভেতরে কি?
বিকেল ৫টা ৪৩ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় সন্ধ্যা পৌণে ৬টায় ঘোষণা করা হবে দল। কিন্তু ৫টা ৪০ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় তৃতীয় ওয়ানডের শেষেই দল ঘোষনা করা হবে।
তার নাম শেখ মোহাম্মদ আসলাম। একসময় সুইডেন ছিলেন বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্ইুডেন আসলাম নামে। তেজগাঁও এলাকার এই শীর্ষ সন্ত্রাসী একসময় ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড বা অপরাধ জগৎ কাঁপাতেন। ২৭ বছর ধরে আছেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে। হত্যাসহ ১৭ মামলার একটি ছাড়া বাকিগুলোতে জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বহু দিনের পুরনো প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ হারানোর শঙ্কায় জামিনের জন্য আবেদন করছেন না তিনি।
মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালও জামিনের আবেদন করছেন না। প্রায় ২০ বছর ধরে কারাগারে থাকা হেলালের বিরুদ্ধে আছে অন্তত এক ডজন মামলা। বেশিরভাগ মামলায় জামিন হয়ে গেছে। এই দুজনের মতোই কারা হাজতে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন না। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষ্যও দিতে আসেন না আদালতে। তারা বছরের পর বছর ধরে কারাগারে থাকলেও সমস্যা হচ্ছে না। অনেকেই অসুস্থ না হয়েও বছরের পর বছর হাসপাতালে আরামে
থাকছেন। বাইরে থাকা তাদের সহযোগীদের সঙ্গেও যোগাযোগ থাকছে। এই সহযোগীরাই তাদের হয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করছেন।
পুলিশের তালিকায় ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম আছে যাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। অবশ্য এই তালিকায় সুইডেন আসলাম নেই। তালিকা করা হয় ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর। এদের মধ্যে ১৩ জন বিদেশে আত্মগোপন করে আছেন। কারাগারে আছেন ৬ জন, মারা গেছেন ৩ জন। একজনের কোনো হদিস নেই।
এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আটজনকে ১ লাখ টাকা এবং ১৫ জনকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মধ্যে পিচ্চি হান্নান র্যাবের ক্রসফায়ার, গণপিটুনিতে আলাউদ্দিন ও কামাল পাশা ওরফে পাশা কারাগারে মারা গেছেন। কালা জাহাঙ্গীর বেঁচে আছেন নাকি আত্মগোপনে, কেউ বলতে পারছেন না। পিচ্চি হেলাল, টিটন, ফ্রিডম সোহেল ও কিলার আব্বাস কারাগারে আছেন। খোরশেদ আলম ওরফে রাশু কিছুদিন আগে ছাড়া পেলেও কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আবার আটক করেছে। মশিউর রহমান কচি, সুব্রত বাইন, আমিন রসুল সাগর. ইমাম হোসেন, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, মোল্লা মাসুদ, শামীম আহমেদ, হারিস আহমেদ, তানভিরুল ইসলাম জয়, জাব্বার মুন্না, জাফর আহমেদ, কামরুল হাসান হান্নান ওরফে ছোট হান্নান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাদের ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তাদের ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আন্ডারওয়ার্ল্ডে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গাড়ি থামিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও গুলিবিদ্ধ এক পথচারী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আন্ডারওয়ার্ল্ড উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও। দেশের বাইরে থাকা সন্ত্রাসীরা নিজেদের সহযোগীদের মাধ্যমে নতুন করে আধিপত্য বিস্তারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হতে চাইছে। যে কারণে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদর দপ্তর সব কটি ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার এসপিদের বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সদর দপ্তরে আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের বিষয়ে নতুন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কারাগার কর্তৃপক্ষকেও হাজতি ও বন্দি সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক আছে, তাদের একটি তালিকা করেছে একটি সংস্থা। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তারা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছে না। তারা কারাগারকেই নিরাপদ মনে করছে।
কারা সূত্র জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম একটি মামলায় জামিন না নেওয়ায় কারাগারে আছেন। বাকি সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। ২৭ বছরের কারাজীবনে তার দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বেশিরভাগ সময় কেটে যাচ্ছে হাসপাতালে থেকেই। হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করেন সব সময়। মোবাইল ফোনে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ করেন সহযোগীদের সঙ্গে। তার স্ত্রী আয়েশা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
সুইডেন আসলামের বিষয়ে তার এক আত্মীয় দেশ রূপান্তরকে বলেন, এলাকায় তার যখন একক আধিপত্য ছিল, তখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। তারাই এখন তার বিরুদ্ধে। সুইডেন আসলাম বের হয়ে এলে প্রতিপক্ষরাই তাকে মেরে ফেলবে, এমন শঙ্কা আছে। এসব দিক বিবেচনা করেই তিনি বের হতে চাইছেন না। কারাগারেই তিনি ভালো আছেন।
জানা গেছে, সুইডেন আসলামের বিরুদ্ধে মামলাগুলোতে কোনো সাক্ষীও পাওয়া যায় না। ১৯৮৬ সালে তিনি অপরাধ জগতে যুক্ত হন। ওই বছর পূর্ব রাজাবাজারে স্কুলের সামনে কিশোর শাকিলকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারপর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যাকা-সহ নানা অপরাধের তথ্য বের হয়ে আসে। এরই মধ্যে নিজেকে রক্ষা করতে সুইডেন চলে যান। বছর পাঁচেক ওই দেশে থেকে আবার ফিরে আসেন দেশে। তারপর সুইডেন শব্দটি নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ গালিব খুন হন। এ ঘটনায় আসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২৪ সাক্ষীর মধ্যে পুলিশ চারজনকে আদালতে হাজির করতে পেরেছে। বাকিরা আর আসেননি এবং এই মামলায় তিনি জামিনও নেননি।
দীর্ঘদিন কারাগারে থাকলেও আসলাম মোবাইল ফোনে সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। স্ত্রী আয়েশা আকতার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বলা চলে রাজার হালেই আছেন তিনি।
মিরপুর ও কাফরুল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ২২ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা ১১টি মামলার জামিন হয়েছে। একটি মামলার জামিন হতে বাকি আছে। তা ছাড়া কমিশনার নিউটন হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ হলেও উচ্চ আদালতে খালাস পেয়েছেন তিনি। আরেকটি মামলার শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিলার আব্বাসের এক সহযোগী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভাইয়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে দেখা করে আসি। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছেন না। জামিন চাইলে তিনি জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু ভাই তা করবেন না। কারণ প্রতিপক্ষ সক্রিয় আছে। তার প্রাণ শঙ্কা আছে। আমরা ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় জামিন নিয়ে ভাইকে বের করে আনতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেক সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালেরও প্রায় সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। শুধু একটা মামলার জামিন বাকি আছে। তিনি যখন কারাগারে, তখন বিএনপি তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছিল। অথচ হেলাল বিএনপির রাজনীতি করেন। জেলে বসেই মোহাম্মদপুর, আদাবর ও ধানম-ি, মিরপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড দখল ও চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন। তার সঙ্গে মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদতের ভালো যোগাযোগ। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলেন তারা। তার আরেক সহযোগী হাবিবুর রহমান তাজ ১৩ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। মামলার সাক্ষীদের হাজির করতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষ। ইচ্ছে করে জামিনও নিচ্ছেন না তাজ। গ্রেপ্তারের আগে দীর্ঘদিন ভারত পালিয়ে ছিলেন। ২০০৮ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস পর তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজধানীর কাফরুলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনকে হত্যা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তা ছাড়া কলেজছাত্র কামরুল ইসলাম ওরফে মোমিন হত্যার সঙ্গেও জড়িত তাজ। মতিঝিল থানার সাবেক ওসি এ কে এম রফিকুল ইসলামের আশ্রয়-প্রশয়ে থাকতেন তিনি। কয়েক বছর আগে ওসি রফিক মারা যান।’
মতিঝিলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার দুই কর্মকর্তাকে হত্যা করে আলোচনায় আসে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী ঈদুল। প্রায় ১৫ বছর ধরে কাশিমপুর কারাগারে আটক আছেন তিনি। একবার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আটক করে ফেলে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা থাকলেও দুটি মামলা বাদে সব কটিতে জামিন পেয়েছেন। বাকি মামলাগুলোতে ইচ্ছা করে জামিন নিচ্ছেন না বলে তার এক স্বজন জানিয়েছেন।
সেভেন স্টার গ্রুপের একসময়ের সদস্য ফ্রিডম সোহেল ধানম-ি ৩২ নম্বরে গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার আসামি। সাজা কমিয়ে কারাগারেই থাকার চেষ্টা করছেন সোহেল। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা আছে। ৯টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। একটি মামলায় সাজা হয়েছে। আরেকটি মামলায় জামিন নিচ্ছেন না।
তার সহযোগী পুরস্কারঘোষিত সন্ত্রাসী রাশু কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে। তার এক স্বজন দেশ রূপান্তরকে জানান, মাস দুয়েক আগে সর্বশেষ মামলায় জামিন হয় রাশুর। তার কোনো ইচ্ছা ছিল না কারাগার থেকে বের হওয়ার। আর এ কারণে ইচ্ছা করেই একটি সংস্থাকে কারাগার থেকে বের হওয়ার তথ্য দিয়ে আবার গ্রেপ্তার হন। কারণ তিনি বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মেরে ফেলবে এমন আশঙ্কা ছিল। আরেক সন্ত্রাসী লম্বু সেলিম একটি মামলা বাদে সব মামলায় জামিনে আছেন। ভারতের কলকাতা থেকে তাকে পুশব্যাক করা হয়েছিল। প্রায় আট বছর ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। বেশিরভাগ সময় হাসপাতালে থাকেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে জেল থেকে বের হচ্ছেন না তিনি।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সন্ত্রাসীদের কর্মকা- রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা কৌশলে কাজ করছে। তারা সরগরম হলেও কাজ হবে না। যারা দেশের বাইরে আছে, তাদের চিহ্নিত করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ধরার চেষ্টা চলছে। যারা দেশে আছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে পুলিশ-র্যাব কাজ করছে। তবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কেউ বিশ্ঙ্খৃলা তৈরি করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসী জামিন না নিলে এটা আমাদের করার কিছু নেই। তবে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’
পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, চোরাকারবারিসহ ভিন্ন ধরনের অপরাধীরা দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছেন। তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক কর্মকা- চালিয়ে আসছেন। তাদের নির্দেশে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছেন তারা। মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকান্ডের পেছনে বিদেশ কানেকশন।
২০০৩ সালে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ডিবি পুলিশের দুই সদস্যকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে আত্মগোপন করে আছেন। টিপু হত্যাকান্ডের পর তিনি আলোচনায় এসেছিলেন। দুবাইয়ে থাকলেও ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে বেশি প্রভাব তার। জিসানের সহযোগী জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক ভারতে পালিয়ে আছেন। কিন্তু দেশে তার দখলবাজি, টেন্ডারবাণিজ্য ও চাঁদাবাজিতে নিয়ন্ত্রণ এখনো আছে। মোল্লা মাসুদ ও সুব্রত বাইন ভারতে থেকে সক্রিয় আছেন। তানভীর ইসলাম জয়ও সক্রিয় আছেন। কলকাতা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ঘুরে তার অবস্থান এখন থাইল্যান্ডে। সেখানে বসেই তিনি কলকাঠি নাড়ছেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে পুলিশ। নির্বাচনে কী উপায়ে নিরাপত্তা দেওয়া হবে তার চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। তবে সরকারের হাইকমান্ড থেকে পুলিশ সদর দপ্তরে তথ্য এসেছে, ঘাপটি মেরে থাকা পুলিশের কিছু কর্মকর্তা ও সদস্য সরকারবিরোধীদের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখছে। পুলিশের একটি প্রতিবেদনেও তথ্য এসেছে সারা দেশে অন্তত আড়াইশো কর্মকর্তা আছেন তারা সরকারবিরোধী হিসেবে পরিচিত। তাদের পুরো কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এদিকে, চলতি মাস ও আগামী মাসের মধ্যে পুলিশে আরও বড় ধরনের রদবদল করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে তালিকাও করা হয়েছে। পাশাপাশি উন্নতমানের আগ্নেয়াস্ত্রসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদিও কেনার চেষ্টা করছে পুলিশ সদর দপ্তর।
সংশ্লিষ্টরা দেশ রূপান্তরকে জানান, সামনের দিনগুলোতে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা। এ নিয়ে কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা আগাম সতর্কবার্তাও দিয়েছে। যেকোনো বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ করতে কিছুদিন আগে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পুলিশের সবকটি ইউনিট প্রধান ও জেলার এসপিদের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে। বার্তায় বলা হয়েছে রাজনৈতিক দুবৃর্ত্তায়নের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি পুলিশের মধ্যে কোনো সদস্য সরকারবিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার তথ্য পেলে জানাতে বলা হয়েছে। ঢাকাসহ সারা দেশেই সব পুলিশ সদস্যকে সতর্ক থাকতে হবে। নির্বাচনকালীন যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। পেশাদার সন্ত্রাসীসহ অন্য অপরাধীদের ধরতে বিশেষ অভিযান চালাতে হবে।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ঘাপটি মেরে থাকা পুলিশের কিছু সদস্যের কর্মকান্ড নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে। এই সংখ্যা প্রায় আড়াইশো মতো হবে। সংখ্যা আরও বাড়তেও পারে। ইতিমধ্যে তালিকা করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে সরকারের হাইকমান্ডকে অবহিতও করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যেকোনো পরিস্থিতির জন্য পুলিশকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় পুলিশে উদ্বেগ আছে। বৈধ অস্ত্রের সংখ্যার খোঁজ নেওয়া, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও অস্ত্র কারবারিদের গ্রেপ্তার করতে বিশেষ অভিযান চালাতে ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযানের নির্দিষ্ট তারিখ এখনো ঠিক হয়নি। হুট করেই আমরা বিশেষ অভিযান শুরু করব। কেপিআই স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন যথাসময়ে হবে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। নির্বাচন নিয়ে যাতে কোনো মহল বা চক্র নাশকতামূলক কর্মকান্ড চালাতে না পারে সে জন্য মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সতর্ক আছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (অপারেশন) আনোয়ার হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশের সবধরনের প্রস্তুতি আছে। দাগি সন্ত্রাসীসহ অন্য অপরাধীদের ধরা ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে দ্রুত সময়ের মধ্যে বড় ধরনের অভিযান চালানোর পরিকল্পনা আছে আমাদের।
পুলিশ সূত্র জানায়, আড়াইশো পুলিশ কর্মকর্তার কর্মকান্ড নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। তাদের মোবাইল নম্বর সার্বক্ষণিক ট্র্যাকিং করা হচ্ছে। এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যদেরও খোঁজ রাখা হচ্ছে। নজরদারির মধ্যে থাকা বেশ কয়েকজন পুলিশ সুপার, অ্যাডিশনাল পুলিশ সুপার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টর আছেন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দপ্তরের অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল বা নেতাদের সাপোর্ট দেওয়া আমাদের কাজ না। জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আমাদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের জন্য উন্নতমানের আগ্নেয়াস্ত্র ও যানবাহন ক্রয় করা হচ্ছে। পাশাপাশি ৫০ লাখের মতো রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড কেনা হচ্ছে। আগামী মাসের মধ্যে এসব সরঞ্জাম বাংলাদেশে আসবে বলে আশা করছি। ডিএমপি, সিএমপি, কেএমপি, আরএমপি, বিএমপি, এসএমপি, আরপিএমপি, জিএমপি কমিশনার, বিশেষ শাখা (এসবি), র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), অপরাধ তদন্ত বিভাগ, পিবিআই, টুরিস্ট পুলিশ, এটিইউ, রেলওয়ে পুলিশ, নৌপুলিশ, এপিবিএন, হাইওয়ে, শিল্পাঞ্চল পুলিশ প্রধান, সব অ্যাডিশনাল আইজিপি, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও রংপুর রেঞ্জে নতুন আগ্নেয়াস্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি পাঠানো হবে। ইতিমধ্যে ইউনিট প্রধানরা পুলিশ সদর দপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছেন। বিষয়টি আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকারবিরোধীরা নানা ষড়যন্ত্র করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে উঠেপড়ে লেগেছে তারা। বিএনপি আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও করছে। তারা পুলিশের ওপর হামলা করছে। যানবাহনে আগুন দিচ্ছে। আর এসব মোকাবিলা করতে পুলিশকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে পুলিশ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। অপরাধীদের ধরতে পুলিশের বিশেষ অভিযান শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।