
এইচএসসি ও সমমানের ফল আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ হবে। গতকাল রবিবার দেশ রূপান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। তিনি বলেন, ‘আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ফল প্রকাশে প্রধানমন্ত্রী সময় দিয়েছেন। আমরা পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৫৭ দিনের মধ্যে এ বছরের ফল প্রকাশ করতে যাচ্ছি।’ জানা যায়, ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসার কথা ছিল গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু করোনার
প্রাদুর্ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাদের ঠিকমতো পড়ালেখা হয়নি। ফলে কিছুটা পিছিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু বন্যার ধাক্কায় সেই পরীক্ষা আরও পিছিয়ে যায়। এই ফল প্রকাশের ফলে শিক্ষার্থীদের অপেক্ষার অবসান হচ্ছে।
২০২২ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয় গত ৬ ডিসেম্বর। নয়টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, মাদ্রাসা বোর্ড ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষা শেষ হওয়ার দুই মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশের চেষ্টা করে শিক্ষাবোর্ডগুলো। সে হিসাবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি এ সময়সীমা শেষ হচ্ছে। কিন্তু ৫৭ দিনের মাথায় এই ফল প্রকাশ করতে যাচ্ছে বোর্ডগুলো।
রাজধানী ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ গত এক সপ্তাহ ধরে চরম বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছেছে। দিনের বেশিরভাগ সময় ধুলা ও ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকে পুরো শহর। যেখানে একিউআই স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে বাতাসের মান নিরাপদ বলে ধরে নেওয়া হয়। সেখানে সপ্তাহজুড়ে ঢাকার একিউআই স্কোর ছিল ২০০ এর বেশি। যা খুবই অস্বাস্থক্যর বলে ধরে নেওয়া হয়।
গতকাল রবিবারও বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে ছিল ঢাকা। সকাল ৯টায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ছিল ২০৬। যা খুব অস্বাস্থ্যকর। ১০১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর ৩০১ থেকে ৪০০ এর এর মধ্যে থাকা একিউআই ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
স্ট্যামফোর্ড বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৭ থেকে ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বায়ুমান সূচকের গড় হচ্ছে ২৮৬। গত বছর বায়ুর মান ছিল ২২১। যা এ-বছর ২৯ ভাগ বেশি। অন্যদিকে গত ৬ বছরের তুলনায় বায়ুদূষণ ১৭ ভাগ বেড়েছে। গত ছয় বছরে বায়ুদূষণের হার ছিল ২৪৪।
এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ২৯ দিনের ভেতরে ২০ দিন বায়ুর মান ছিল খুবই অস্বাস্থ্যকর। এর মধ্যে ৯ দিন ছিল দুর্যোগপূর্ণ। ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ঢাকায় জানুয়ারি মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছেÑ এর আগে কোনো বছরেই এত বেশিদিন অস্বাস্থ্যকর বায়ু সেবন করতে হয়নি ঢাকাবাসীকে। ক্যাপসের তথ্য বলছে, ২০২২ সালে বায়ুদূষণের দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা ছিল ১ দিন, ২০২১ সালে ছিল ৭ দিন, ২০২০ সালে ৪ দিন, ২০১৯ সালে ৪ দিন, ২০১৮ সালে ৪ দিন আর ২০১৭ সালে ৫ দিন ছিল।
গতকাল রবিবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর বাংলামোটরের আকাশ ছিল ধুলায় আচ্ছন্ন। দৃষ্টিসীমা নেমে আসে ৩০০ মিটারের নিচে। মোড়ে দাঁড়িয়ে অদূরের ফ্লাইওভারও দেখা যাচ্ছিল না। রাস্তার পাশের দোকান, পথচারীরা কিংবা যাত্রীরা মুখ চেপে অথবা মাস্ক পরে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।
হাবিব নামের এক মোটর মেকানিক দেশ রূপান্তরকে বলেন, গত এক মাসের বেশি সময় ধরে বাংলামোটর থেকে মগবাজারের রাস্তা ও ড্রেনের কাজ চলছে। খোঁড়াখুঁড়ির কারণে রাস্তায় প্রচণ্ড ধুলা। দিনের অর্ধেক সময় কাজ করলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। চোখও জ্বলছে। যদি দ্রুত কাজ শেষ করে তাহলে আমাদের জন্য ভালো হয়।
মোটর পার্টস ব্যবসা ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, এই সড়কে সারা বছর খোঁড়াখুঁড়ি লেগেই থাকে। গত বর্ষায় তারা ড্রেনের কাজ শুরু করেছে। এখনো শেষ হয়নি। সারা দিন মুখ ঢেকে রাখতে হয়। কিছুদিন শ্বাসকষ্টে ভুগেছি। ডাক্তার দেখানোর পর এখন ঠিক আছি। এখন আবার নতুন করে চোখ জ্বালা করছে। পানিও বের হয়। সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে হলেও এই কাজগুলো দ্রুত শেষ করা উচিত। শুধু বাংলামোটর বা পল্টনই নয় এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে, রাজধানীর তেজগাঁও, শাহবাগ, মিরপুর, গুলশান, ধানমন্ডি, আগারগাঁও, মতিঝিল ও সংসদ ভবন এলাকায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপরিকল্পিত ও সমন্বয়হীন খোঁড়াখুঁড়ি, উন্নয়ন প্রকল্পে ধীরগতি, সিটি করপোরেশনসহ সেবা সংস্থাগুলোর উদাসীনতায় নগরজুড়ে ধুলাবালুতে এমন দমবন্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে যানবাহন ও কল-কারখানার কালো ধোঁয়া। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, নির্বিচারে গাছপালা নিধনের কারণে নগরীতে বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়েই চলেছে।
রাজধানীতে কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব কাজের ধীরগতিতে এমনিতেই জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। অনেক এলাকায় চলছে সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ। ভাঙাচোরা সড়ক আর চলমান নির্মাণকাজের মধ্যে চলাচলের সময় যানবাহনের চাকায় উড়ছে ধুলা, বালু। চলন্ত যানবাহনের পেছনে কুণ্ডলী পাকিয়ে বাতাসে উড়ছে তা, খেসারত দিতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত বছরও ঢাকার মানুষের একদিনের জন্যও ভালো বায়ু সেবন করার সৌভাগ্য হয়নি। চলতি বছরেও একই অবস্থা। বায়ুমান বেশিরভাগ সময় ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় ছিল। ঢাকা শহরে বিকেল ৪টার পর থেকে বায়ুদূষণের মান খারাপ হতে শুরু করে এবং রাত ১১টা থেকে ২টার মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছায়।
বায়ুদূষণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন ক্যাপস প্রধান অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি- শুষ্ক মৌসুমের এ চার মাসে বছরের ৬০ ভাগের বেশি বায়ুদূষণ হয়ে থাকে। এর মধ্যে আবার জানুয়ারিতে দূষণের পরিমাণ থাকে সবচেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, অন্যান্য বছর জানুয়ারি মাসে যে পরিমাণ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ছিল তার মধ্যে চলতি বছরের মতো কখনই ছিল না। জানুয়ারি মাসে প্রায় ৩৩ শতাংশ দিন দুর্যোগপূর্ণ ছিল।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, পরিবেশ দূষণ রোধে ২০১৯ সালে হাইকোর্ট একটা রায় দিয়েছিল। কিন্তু তার কোনো বাস্তবায়ন আমরা দেখছি না। রাজধানীবাসীদের রক্ষা করতে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে। তবে সে জন্য সময় প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপৎকালীন সময়ের জন্য সংশ্লিষ্টদের জরুরি কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। যেসব এলাকায় দূষণের মাত্রা বেশি সেখানে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও সিটি করপোরেশন কিছু কিছু জায়গায় পানি দিচ্ছে কিন্তু সেটা অপর্যাপ্ত। এই মুহূর্তে ওয়াটার থেরাপি ছাড়া কোনো উপায় নেই।
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বেতন পাওয়ার মতো চাকরিও আছে পৃথিবীতে। আছে কেবল খাওয়ার চাকরিও। কোনো কাজ না করে কেবল ঘুমিয়ে বা খেয়ে মাস গেলে মেলে বিস্তর পয়সা। এবার একটি প্রতিষ্ঠান দিয়েছে অভিনব এক কাজের সুযোগ। ঘুমের আগে পনিরজাত খাবার খেলে মিলবে লাখ টাকা।
স্লিপ জাঙ্কি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে সম্প্রতি দেওয়া হয়েছে এ ঘোষণা। গেল সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছে, আপনি কি পনিরপ্রেমী? তাহলে ঘুমানোর আগে বিভিন্ন স্বাদের পনির খেয়ে ১ হাজার ডলার বা ১ লাখ টাকা জেতার সুযোগ আছে আপনারও।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ইউপিআইয়ের এক খবরে বলা হয়েছে, ম্যাট্রেস রিভিউ প্রতিষ্ঠান স্লিপ জাঙ্কি আসলে দুগ্ধজাত খাবার ঘুমে কেমন প্রভাব রাখে সে-সংক্রান্ত একটি গবেষণা করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আগ্রহীরা এ কাজের জন্য আবেদন করতে পারবেন। গবেষণা চলবে তিন মাস ধরে। গবেষণার মাধ্যমে পাঁচজন ‘ডেইরি ড্রিমার’ খুঁজে বের করবে তারা। আর সেই সঙ্গে ঘুমানোর আগে পনির বা অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবার খেলে মানুষ দুঃস্বপ্ন দেখে বলে যে প্রচলিত বিশ্বাস আছে তা ভাঙতে চায়।
স্লিপ জাঙ্কির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, তিন মাস ধরে অংশগ্রহণকারীদের ঘুমাতে যাওয়ার আগে পনির দিয়ে তৈরি খাবার খেতে হবে। এর মাধ্যমে আমরা দেখতে চাই ভালো ঘুমের ক্ষেত্রে পনিরজাত খাবার কতটুকু প্রভাব ফেলে বা অন্য খাবার কেমন প্রভাব রাখে, সেটি।
স্লিপ জাঙ্কি বলছে, বেছে নেওয়া পাঁচজন ডেইরি ড্রিমারকে তাদের ঘুমের ট্র্যাক করতে বলা হবে এবং তাদের ঘুমের গুণমান, সারা দিনের শক্তির স্তরের লিখিত মূল্যায়ন এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে বিভিন্ন পনির পণ্য খাওয়ার পরে স্বপ্ন এবং দুঃস্বপ্নের প্রতিবেদন দিতে বলা হবে।
জাঙ্কির মুখপাত্র ডরোথি চেম্বার্স বলেছেন, ‘আমরা আসলে দেখতে চাই রাতের ঘুমকে ধ্বংস করতে বিভিন্ন ধরনের পনির এবং অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কি না? এটি হয়তো অনিদ্রা রোগ থেকে মুক্তির একটা পথ বাতলে দিতে পারে।’
আবারও বির্তকে জড়িয়েছেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল। সরকারি জমি দখল, সংখ্যালঘুদের হুমকি ও মারধরসহ নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে সমালোচিত এ আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে এবার চৌকিদার পাঠিয়ে এক দম্পতিকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল রবিবার চেয়ারম্যান শ্যামলকে প্রধান আসামি করে গ্রাম পুলিশ সদস্যসহ দশ জনের নামে মামলা হয়েছে হাতীবান্ধা থানায়।
স্থানীয়রা জানান, গড্ডিমারী গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে শাহ আলম বিভিন্ন সময় ফেইসবুকে চেয়ারম্যান শ্যামলের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে লেখালেখি করতেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত শনিবার ভোরে চেয়ারম্যান শ্যামল শাহ আলমকে ধরে নেওয়ার জন্য তার বাড়িতে ৮-১০ জন গ্রাম পুলিশের (চৌকিদার) সদস্য পাঠান। তারা শাহ আলমকে নির্যাতন ও মারধর করেন। এ সময় তারা শাহ আলমের স্ত্রী হাসিনা বেগমকেও বেধড়ক মারধর শুরু করেন। তবে স্থানীয়রা জড়ো হলে চৌকিদাররা চলে যান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মশিয়ার রহমান বলেন, চৌকিদাররা শাহ আলমকে টেনেহিঁচড়ে অটোতে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। আমরা কারণ জানতে চাইলে কোনো জবাব না দিয়ে তাকে ফেলেই চলে যান চৌকিদাররা। পরে ওই দম্পতিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আল আকসা বলেন, আহতদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার শাহ আলম বলেন, শ্যামল চেয়ারম্যান আমার বাড়িতে চৌকিদার পাঠিয়ে আমাকে আর আমার স্ত্রীকে নির্যাতন ও মারধর করেছেন। হাসিনা বেগম বলেন, আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। হাতীবান্ধা থানার ওসি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে অভিযুক্ত চৌকিদার পাভেল বলেন, আমরা শাহ আলমকে মারধর করিনি। শ্যামল স্যার তাকে পরিষদে নিয়ে আসতে বলেছিলেন তাই আমরা তার বাড়ি থেকে তাকে নিয়ে আসতে যাই।
আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম আসনের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা। তিনি হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য। এর আগে তিনি এক মুক্তিযোদ্ধা সন্তানকে মারধর করে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের করে দেন। তার বিরুদ্ধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারি জমি দখলের অভিযোগও আছে। এছাড়া সংখ্যালঘুদের হুমকি-ধামকি, কটূক্তি, বেফাঁস বক্তব্য দিয়ে একাধিকবার বিতর্কে জড়ান তিনি। তবে এবারের বিষয়ে কথা বলতে চেয়ারম্যান শ্যামলের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ঠিকাদারদের হাতে মার খেলেন প্রকৌশলী। শুধু মেরেই ক্ষান্ত হননি ক্ষুব্ধ ঠিকাদাররা। প্রকৌশলীর কক্ষটি ভাঙচুরও করেন এবং ভেঙে ফেলেন কক্ষের বাইরের নামফলকও। গতকাল রবিবার বিকেলে স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একটি প্রকল্পের পরিচালক মো. গোলাম ইয়াজদানীর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ২২০ কোটি টাকার ৩৭টি উন্নয়নকাজ তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ভাগবাটোয়ারা করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে একদল ঠিকাদার এ কা- ঘটান।
এদিকে করপোরেশনের প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ে হামলার ঘটনার গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন বলে জানান খুলশী থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা। তিনি বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি। ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেল পৌনে ৪টার দিকে টাইগারপাসে সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী প্রধান কার্যালয়ে নিজের দপ্তরে আসেন প্রকল্প পরিচালক গোলাম ইয়াজদানী। এ সময় ২০-২২ জন ঠিকাদার অনুমতি না নিয়ে কক্ষে ঢুকে অতর্কিতভাবে তার ওপর চড়াও হন। ইয়াজদানীকে তারা কিলঘুষি মারতে থাকেন। এ সময় তাকে রক্ষা করতে এলে অফিস সহকারী তিলক দেও মারধরের শিকার হন।
তিলক দে সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্যারের অনুমতি না নিয়ে ১০ থেকে ১২ জন লোক ঢুকে কথা বলার একপর্যায়ে স্যারকে মারধর করতে থাকে। তাকে উপর্যুপরি কিলঘুষি মারতে থাকেন কয়েকজন। স্যারের নামফলক ও টেবিলের কাচ ভেঙে ফেলে তারা। আমি স্যারকে রক্ষা করতে গেলে তারা আমাকেও বেধড়ক মারধর করে। প্রায় ১০-১২ মিনিট তান্ডব চালিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা।’
গোলাম ইয়াজদানী সাংবাদিকদের কাছে দাবি করে বলেন, ‘তদবির করে সড়কের কাজ না পাওয়ায় কিছু ঠিকাদার (নাজিম, সুভাষ, শাহাব উদ্দিন, সঞ্জয় ভৌমিক কঙ্কন, হাবিব ও মোহাম্মদ ফেরদৌসের নেতৃত্বে অন্তত ১০-১২ জন) আমার কার্যালয়ে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। আমাকে কিলঘুষি মেরে আহত করেছে।’
প্রকৌশলীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ক্ষুব্ধ মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ন্যক্কারজনক কাজ যারা ঘটিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সম্পদহানি ও কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় মামলা করা হবে। একই সঙ্গে এসব ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। সিটি করপোরেশন কারও “মামা বাড়ি” নয় যে চাইলেই কাজ দেওয়া হবে। কাজ না পেলে তারা (ঠিকাদার) আমাকে বলতে পারত অথবা অভিযোগ জানাতে পারত।’
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ২ হাজার ৩৯২ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের আওতায় গত ডিসেম্বরে ২২০ কোটি টাকার ৩৭টি কাজের দরপত্র দেওয়া হয়। ইজিপি পদ্ধতিতে দেওয়া দরপত্রে চূড়ান্ত পর্যায়ে তিনজন ঠিকাদার পান ৩৪টি কাজ। এর মধ্যে ঠিকাদার রোকন উদ্দিনের ইকবাল ব্রাদার্স ২২টি, মো. আলাউদ্দিন মোল্লার দ্য কনস্ট্রাকশন ট্রেড আটটি এবং কাশেম কনস্ট্রাকশন চারটি কাজ পায়। এর বাইরে তিনটি কাজ পায় কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এক প্রতিষ্ঠানকে একাধিক কাজ না দেওয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন রয়েছে। ইতিপূর্বে অনেক কাজ যথাসময়ে শেষ করতে না পারা এবং প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর এ অনুশাসন। নগরীর পোর্ট কানেকটিং সড়কসহ অতীতে একাধিক কাজ কয়েকজন ঠিকাদার পাওয়ায় এ নিয়ে নগরবাসীকে নজিরবিহীন ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আর এতেই ঠিকাদারদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধে বলে জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট একাধিক ঠিকাদার ও প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইজিপি পদ্ধতিতে দরপত্র দেওয়া হলেও কাজ বরাদ্দের পুরো প্রক্রিয়াটিই প্রকল্পসংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে তাদের পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পেতে সুবিধা হয়।
হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে একজন ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা প্রকল্প পরিচালকের কক্ষে গিয়ে বলেছি কাজ যেহেতু দেননি আমাদের পে অর্ডার ফেরত দেন। তখন তিনি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং তখন আমাদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। কিন্তু আমরা ভাঙচুর করিনি।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আদর, স্নেহ, ভালোবাসার পাশাপাশি শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রতিটি শিশুর একটা ব্যক্তিত্ব আছে এবং এই ব্যক্তিত্ব প্রকাশের সুযোগ তৈরি করে দিন।
গকাল রবিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা-২০২০ ও ২০২১’-এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।
শিশুরা যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অবদান রাখতে পারে, এ লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যদেরও এগিয়ে আসার তাগিদ দেন আবদুল হামিদ ।
শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তারাই বহন করবে দেশের দায়িত্বভার। এজন্য শিশুদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, সৃজনশীল মেধাসম্পন্ন প্রজন্ম গড়তে সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রভাব অপরিসীম। বিদ্যার্জনের পাশাপাশি শিল্প-সাহিত্য ও ক্রীড়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিশুদের সম্পৃক্ত করে তাদের মানসিক বিকাশের পথ সুগম করা জরুরি। তিনি বলেন, শুধু অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের শিশু নয় সকল স্তরের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কল্যাণে বৈষম্যহীন মনোভাব নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের খুব ভালোবাসতেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, তিনি সময় পেলেই শিশুদের সঙ্গে মিশে যেতেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও শিশুদের উন্নয়নে অত্যন্ত আন্তরিক।
রাষ্ট্রপতি বলেন, শিশুদের আলোকিত নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব পরিবার থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ সমাজের প্রত্যেকের। শিশুর মেধা বিকশিত করতে প্রয়োজন উপযুক্ত পরিবেশ, পরিচর্যা ও অনুপ্রেরণা।
আবদুল হামিদ বলেন, দেশের আনাচেকানাচে ছড়িয়ে থাকা কোমলমতি মেধাবী শিশুদের খুঁজে এনে সঠিক প্রশিক্ষণ ও পরিচর্যার মাধ্যমে মানসম্পন্ন শিল্পী, আঁকিয়ে বা ক্রীড়াবিদ তৈরি করতে হবে যাতে তারা দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিম-লেও সফলতা লাভ করতে পারে।
সরকারের নানামুখী কর্মকান্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে অনুস্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসেবে এবং বাংলাদেশের সংবিধানে সন্নিবেশিত মৌলিক অধিকার ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির আলোকে শিশুর সার্বিক অধিকার নিশ্চিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় শিশুর স্বাস্থ্য-পুষ্টি, শিক্ষা-বিজ্ঞান প্রযুক্তি ইত্যাদিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের উন্নয়নের জন্যও রয়েছে নানা কর্মসূচি ও পরিকল্পনা। তিনি শিশুদের জন্য যেন গবেষণা ও চাহিদাভিত্তিক নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে খেয়াল রাখারও নির্দেশ দেন, কেননা এ প্রক্রিয়ায় শিশুদের মতামতেরও প্রতিফলন ঘটাতে হবে।
অভিভাবকদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, শিশুদের সঠিক শিক্ষা যেমন ন্যায়নীতি, সত্য-মিথ্যার বিভেদ, সততা, দয়া, দেশপ্রেম, জীবপ্রেম ইত্যাদি প্রদানের মূল কাজ আপনাদের।
বর্তমান বিশ্বায়ন ও তথ্যপ্রযুক্তির যুগে শিশুদের নৈতিক শিক্ষা দেওয়ার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন রাষ্ট্রপতি।
হামিদ বলেন, ‘এখন প্রত্যেক ঘরে শিশুদের হাতে মোবাইল, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক ডিভাইস, ফলে শিশুরা আজ মোবাইলে আসক্ত। তারা খেলার মাঠে বেশি যায় না, শিল্প-সাহিত্যচর্চা করে না, প্রকৃতি-পরিবেশ চেনে না।’ তিনি প্রযুক্তির ক্ষতিকর দিক থেকে সন্তানদের রক্ষা করে নিয়মিত লেখাপড়ার পাশাপাশি শিশুদের সৃজনশীল কাজে সম্পৃক্ত করতে অভিভাবকদের প্রতিও অনুরোধ করেন।
শিশুদের তিনি উপদেশ দিয়ে বলেন, দেশকে ভালোবাসতে হবে, দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে উন্নত, সমৃদ্ধ, আধুনিক ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে তোমরা সবসময় সচেষ্ট থাকবে।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ২০২০ এবং ২০২১ সালের জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় প্রায় সাড়ে ৬ লাখ শিশু অংশগ্রহণ করে। ৩০টি বিষয়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিজয়ী ৪৭৪ শিশু পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। ২০২২ সালের ৬ জন ও ২০২১ সালের ৬ জন মোট ১২ জন রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানে শিশুর উন্নয়ন, বিকাশ ও সুরক্ষা বিষয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এ উপলক্ষে স্মারক গ্রন্থ ‘আলোর ফুল’ প্রকাশিত হয়।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল প্রমুখ।
রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন সুলতান মাহমুদ। ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে ধানমন্ডি এলাকায় ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন এ শিক্ষক। এখনো সেই ফ্ল্যাটের ঋণ পুরোপুরি পরিশোধ হয়নি। সুলতানের ব্যবহৃত ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা দুটি। একটি বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংক আর অন্যটি প্রাইম ব্যাংকের।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা জানতে চাইলেন তিনি জানান, ফ্ল্যাটের কিস্তি পরিশোধ, সন্তানদের বেতন আর ফ্যামিলি খরচ পরিশোধ সব মিলিয়ে প্রায় প্রতি মাসের শেষেই আর্থিক সংকট তৈরি হয়। এ সংকট থেকে বাঁচতেই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করছেন। তবে মাসের শুরুতে বেতন পেয়েই পরিশোধ করে দিচ্ছেন ক্রেডিট কার্ডের বিল। এতে অতিরিক্ত সুদও গুনতে হচ্ছে না তাকে।
সুলতান মাহমুদ বলেন, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার না করলে হয়তো প্রতি মাসেই আমার বিভিন্নজনের কাছ থেকে ধার করে চলতে হতো। এতে সম্মানহানিরও ঝুঁকি থাকে। কিন্তু এখন ব্যাংক থেকে স্বল্প সময়ের জন্য ধার নিয়ে তা আবার ফেরত দিচ্ছি। এতে কারও কাছে হাত পাততে হচ্ছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, একসময় মানুষ ক্রেডিট কার্ডের প্রতি কম আগ্রহী হলেও বর্তমানে এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে দেশের ৩৯টি ব্যাংক কার্ড সেবা দিচ্ছে। গত মার্চ শেষে এসব ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১ লাখ ৭৮ হাজারটি। ঠিক চার বছর আগে ২০১৯ সালে মার্চ শেষে এ কার্ডের পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ৪৯ হাজারটি। অর্থাৎ মাত্র চার বছরের ক্রেডিট কার্ড বেড়েছে ৮ লাখ ২৮ হাজার বা ৬১ দশমিক ৪২ শতাংশ। এই একই সময়ে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। গত মার্চে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের মার্চে এ লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৮৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ চার বছরের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ১৪৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
শুধু সুলতানই নন, ব্যবসায়ী আমিরুল, সাংবাদিক আক্তার আর চাকরিজীবী তারিকুলও একই কারণে ব্যবহার করছেন দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নেওয়া ক্রেডিট কার্ড। তাদের মতে, ক্রেডিট কার্ডের কারণে সহজ হয়েছে তাদের জীবনযাত্রা। তবে উল্টো চিত্রও আছে। করোনা মহামারীর সময় চাকরি হারানো আজাদুল ইসলাম ক্রেডিট কার্ডে ধার নিয়ে এখন বিপাকে রয়েছেন। তিনি বলেন, করোনার সময় প্রথম দিকে আমাদের বেতন কমিয়ে অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়। সে সময় সংসারের খরচ বহন করতে ক্রেডিট কার্ডের সহায়তা নিয়েছেন। যে ঋণ এখন পর্যন্ত টানতে হচ্ছে তাকে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ হবে বলে আশাবাদী এ গ্রাহক।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ক্রেডিট কার্ড জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে এর ‘ধার’ নেওয়ার পদ্ধতির জন্য। পাশাপাশি পণ্যের দামে ডিসকাউন্টের পাশাপাশি কিস্তিতে পরিশোধের পদ্ধতিও এ ব্যাপ্তি বাড়াতে ভূমিকা রাখছে। যেটি গ্রাহককে এককালীন বেশি দামের পণ্য কিনতে সহায়তা করে। এবার জেনে নেওয়া যাক ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা-অসুবিধাগুলো।
পণ্য কিনতে কিস্তি সুবিধা : ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কিস্তিতে পণ্য কিনতে একসঙ্গে সব টাকা পরিশোধ করতে হবে না। বিনা সুদে বা নির্দিষ্ট পরিমাণ সুদে গ্রাহক কয়েক মাসের সমান কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করতে পারবেন। যদিও গ্রাহক তার ক্রেডিট লিমিটের চেয়ে বেশি দামি পণ্য কিনতে পারবেন না। আর কিস্তির টাকাও পরিশোধ করতে হবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। এতে কারও কাছে টাকা ধার করার ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে পরিশোধের ক্ষেত্রে সময়সীমা পার হয়ে গেলে জরিমানা গুনতে হতে পারে।
ঋণের সুবিধা : কিছু ক্রেডিট কার্ড, বিশেষ করে বিদেশে শূন্য শতাংশ সুদে ঋণ দেয়। এসব ক্ষেত্রে মাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ মূল্য পরিশোধ করতে হয়, যা বেশ সুবিধাজনক। আবার কোনো কোনো কার্ডে ঋণে সুদের হার অনেক থাকে। এ ক্ষেত্রেও একটা সুবিধা আছে। বোঝা এড়াতে দ্রুত ঋণ পরিশোধ করা হয়। নিজস্ব ঋণ থাকে না।
পরিবর্তনযোগ্য : এসব ক্ষেত্রে সঠিক কার্ডটি বেছে নিতে পারা জরুরি। একটি ভুল কার্ড দিনের পর দিন ব্যবহার করলে ঋণের বোঝা শুধু বাড়তেই থাকবে। তবে এটা বুঝতে ব্যাংকের পুরো শর্তাবলি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। যদিও কার্ডের ধরন পরিবর্তন করা যায় খুব সহজে। কারণ প্রতিটি ব্যাংকে বিভিন্ন প্রকারের ক্রেডিট থাকে। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী কার্ড যেমন নিতে পারবেন তেমনি পরবর্তী সময়ে সেটির ধরন পরিবর্তনও করতে পারবেন। আবার নির্দিষ্ট পরিমাণ লেনদেন করলে বাৎসরিক ফি এড়ানো যায়। যেমন অনেক ব্যাংকের কার্ডে অন্তত ১৮ বার কেনাকাটা করলে বাৎসরিক ফি দিতে হয় না। ব্যাংকভেদে এ নিয়মের ভিন্নতা রয়েছে। দেশের বাইরেও ব্যবহার করা যায় : ক্রেডিট কার্ড ইন্টারন্যাশনাল হলে সেটি ব্যবহার করা যাবে বিশ্বের অনেক দেশেই। টাকার পাশাপাশি ডলারও ধার করে ব্যবহার করা যায়। হোটেল বুকিং, বিমানভাড়া, রেস্টুরেন্ট ও কেনাকাটায় মেলে নানা ছাড় ও পয়েন্ট জেতার সুযোগ। বিদেশে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে যা খরচ করবেন, মাস শেষে আপনার সেই পরিমাণ বিল হিসেবে ইস্যু করবে ব্যাংক। তারপর সুদ বা জরিমানা এড়াতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই বিল পরিশোধ করতে হবে।
অফারের ছড়াছড়ি
বিভিন্ন সময়ে ক্রেডিট কার্ডে বিভিন্ন অফার দেওয়া হয়। যেমন ‘ক্যাশ ব্যাক অফার’, ‘স্পেশাল ডিসকাউন্ট’। দেশের বাইরে বেড়াতে গেলে, হোটেলে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারে অনেক সময়ই মূল্যছাড় দেওয়া হয়। প্লেনের টিকিট কাটতেও অনেক সময় পাওয়া যায় বিশেষ মূল্যছাড়। আর অনলাইন কেনাকাটার জন্যও এখন ক্রেডিট কার্ড বেশ জনপ্রিয়। বিভিন্ন সময়ে দেখা যায়, নামিদামি হোটেল ও রেস্তোরাঁয় খাওয়াদাওয়ায় ছাড় এবং অফার দিয়ে থাকে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। আবাসিক হোটেলগুলোও ক্রেডিট কার্ডে বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে থাকে। একটি কিনলে একটি ফ্রি (বাই ওয়ান গেট ওয়ান) অফারও দেওয়া হয়। এ ছাড়া রয়েছে মূল্যছাড়সহ নানা অফার। অনেকেই পরিবার নিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে ঘুরতে যান। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও হোটেলের নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে হোটেল বুক করা যায়। এ ক্ষেত্রেও আপনি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারেন। তবে বিদেশে হোটেল বুকিংয়ের টাকা পরিশোধের ক্ষেত্রে ডুয়েল কারেন্সি ক্রেডিট কার্ড প্রয়োজন হবে।
অসুবিধা
ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা যেমন রয়েছে, তেমনি অসুবিধাও কম নয়। এজন্য বেশ সতর্ক হতে হবে গ্রাহককে। একটু বেখেয়ালি হলেই পড়তে পারেন ঋণের ফাঁদে।
ঋণের ফাঁদ
ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার সবসময়ই একটি ঋণ নেওয়ার মাধ্যম। মনে রাখতে হবে অর্থ খরচের ৪৫ দিনের মধ্যে সেটি পরিশোধ করতেই হবে। অন্যথায় ঋণের ওপর সুদ শুরু হবে। যা ঋণের পরিমাণ প্রতিদিন বাড়িয়ে দেবে। তাই কিছুটা ঝুঁকি থেকেই যায়।
লুক্কায়িত ব্যয়
সুদের হার পরিশোধই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের একমাত্র ব্যয় নয়। সময়মতো মাসিক বিল পরিশোধ না করলে গ্রাহককে জরিমানা গুনতে হতে পারে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে নগদ অর্থ তুলতে এর জন্য নির্দিষ্ট হারে ফি দিতে হতে পারে। সরাসরি বুথ থেকে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে নগদ অর্থ উত্তোলন করতে গেলে বাড়তি ফি এবং ওইদিন থেকেই (এ ক্ষেত্রে ৪৫ দিন সময় দেওয়া হয় না) সুদ গণনা শুরু হয়। এ ক্ষেত্রে চেক দিয়ে টাকা সঞ্চয় হিসেবে স্থানান্তর করে তারপর সেটি নগদায়ন করলে ৪৫ দিন সময় পাওয়া যাবে।
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে খেলতে নেমে হিটস্ট্রোকে মাঠেই রিয়া আক্তার (১০) নামের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার দুপুরে উপজেলার সহদেবপুর ইউনিয়নের দ্বীমুখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে মঙ্গলবারের (৩০ মে) খেলায় সদর উপজেলার এক ছাত্রী মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
নিহত রিয়া আক্তার কালিহাতীর ছুনুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী এবং একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে।
ছুনুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের সঙ্গে দ্বীমুখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলা ছিল। রিয়া মাঠে খেলতে নেমে হঠাৎ মাটিতে পড়ে যায়। পরে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোঘণা করেন।
প্রধান শিক্ষক বলেন, মরদেহ সোমবারই দাফন করা হয়েছে। আমরা রিয়ার বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা প্রকাশ করছি।
টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রচণ্ড গরমে খেলতে গিয়ে মেয়েটি মারা গেছে। মঙ্গলবারের খেলায় সদর উপজেলার একটি মেয়ে মাঠে বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বঙ্গমাতা টুর্নামেন্টটি আগামী ১২ জুনের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে।
প্রচণ্ড রোদে ছাত্রীদের খেলতে অসুবিধার বিষয়টি আমরা ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাকে অবগত করেছি।
রিয়া আক্তারকে খেলতে নামতে বাধ্য করা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি অস্বীকার করেছেন।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সুজা উদ্দিন তালুকদার বলেন, এখনকার বাচ্চারা রোদের মধ্যে এ ধরনের খেলায় অভ্যস্ত নয়। প্রচণ্ড রোদে হঠাৎ করে মাঠে খেলতে নামলে তাদের জীবন ঝুঁকি থাকে। রোদের তাপে অতিরিক্ত ঘাম, ডিহাইড্রেশন এমনকি হিটস্ট্রোকে তাৎক্ষণিক মৃত্যু হতে পারে। তাই রোদের মধ্যে এভাবে বাচ্চাদের দিয়ে খেলানো উচিত নয়। বিষয়টি নীতি নির্ধারকদের বিবেচনা করা দরকার।
মহামারী করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বের প্রায় সব দেশই অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি থেকে জনসাধারণকে কিছুটা স্বস্তি দিতে ঋণের সুদের হার বাড়িয়ে দেওয়াসহ নীতিনির্ধারণী নানা ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে। বাংলাদেশও এমন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। বিদেশি মুদ্রার সংকটসহ মূল্যস্ফীতি সামাল দিতে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে শর্তসাপেক্ষে ধার নেওয়া ছাড়াও আমদানি ব্যয় কমিয়ে আনার পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু এখনো এর সুফল মেলেনি। এমন সংকটের মধ্যেই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ বাজেট উপস্থাপন হতে যাচ্ছে।
এবারের বাজেট সব দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে সামনে নির্বাচন, অন্যদিকে বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক চাপে চিড়েচেপ্টা দেশের অর্থনীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া, নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক দাম, আইএমএফের শর্তের জাল নানান বাস্তবতার মধ্যে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বিশাল বাজেট প্রস্তাব পেশ করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) জন্য বরাদ্দ করা অর্থ পুরোপুরি খরচ করতে না পারার শঙ্কার মধ্যেই আরও বড় বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি। যদিও অর্থনীতিবিদরা এ বাজেটকে বাস্তবতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় বলে মনে করছেন।
এবারের বাজেটের স্লোগান ‘উন্নয়নের দীর্ঘ অগ্রযাত্রা পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’। এটি মুস্তফা কামালের দায়িত্বকালে পঞ্চম, আওয়ামী লীগ সরকারের ২৩তম ও বাংলাদেশের ৫২তম বাজেট। ১ জুন সংসদে বাজেট প্রস্তাব পেশ করার কথা রয়েছে অর্থমন্ত্রীর। আজ বুধবার থেকে বাজেট অধিবেশন শুরু হতে যাচ্ছে।
দেশের অর্থনীতি যখন চাপের মুখে, তখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছে ঋণ চেয়েছিল বাংলাদেশ। নানান চড়াই-উতরাই শেষে গত ৩০ জানুয়ারি ৪৭ কোটি ডলার ছাড়ও করে ঋণদাতা সংস্থাটি। কিন্তু ঋণ দেওয়ার আগে নানান শর্ত জুড়ে দেয় তারা। এর মধ্যে ‘দুর্বল’ এনবিআরকে সবল করার বিশেষ শর্ত ছিল। জিডিপির তুলনায় বাংলাদেশের কর আদায়ের হার ৯ শতাংশের মধ্যে। ৩৮টি শর্তের মধ্যে কর আদায় বাড়ানোর অন্যতম শর্ত ছিল তাদের। এবারের বাজেটেও কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, কোনো ধরনের প্রস্তুতি ছাড়াই কর আদায়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আদতে কতটুকু বাস্তবসম্মত তা নিয়েও সন্দিহান তারা।
বাজেটের আয়ের খাত বিশ্লেষণে দেখা যায়, রাজস্ব থেকে আয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদানসহ এর আকার দাঁড়াবে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। রাজস্ব বোর্ডের কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা প্রতি বছরের মতো এবারও বাড়ছে। এবারের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
এনবিআরবহির্র্ভূত কর ২০ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কর ব্যতীত অন্য আয় হবে ৫০ হাজার কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদানের লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
জানতে চাইলে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বাজেটের যে লক্ষ্যমাত্রার হিসাব ধারা হয়েছে তা বাস্তবসম্মত নয়। গত বছরের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল সেটি থেকে বাড়িয়ে তারা বাজেট ধরছে। তবে আমি মনে করি, বাজেটে পাস হওয়ার পর তা কতটুকু কার্যকর হয়েছে সেই হিসাবে লক্ষ্যমাত্রা হওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রার কতটা আদায় হয়েছে তা বিবেচনা করে নতুন করে বেশি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা বাস্তবসম্মত নয়। সম্পদ আছে মনে করে যদি ব্যয় কাঠামো তৈরি করা হয়, তাহলে যে অর্থ নেই তাকে ব্যয় মনে করে দেখানো হবে। তার মানে হলো, সম্পদ না থাকলে ব্যয়ও হবে না।’
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘এই মুহূর্তে লোক দেখানোর মতো একটা হিসাব দেখা যায়। আয়ও হবে না, ব্যয়ও হবে না। আমার ভাষায় এটি পরাবাস্তব বাজেট।’
ব্যয়ের খাত : অন্যান্য বারের মতো এবারও আয়ের তুলনায় ব্যয়ের খাত বেশি হচ্ছে। এবারের ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বাজেটে পরিচালন ব্যয় অর্থাৎ আবর্তক ব্যয়, মূলধন ব্যয়, অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ও বৈদেশিক ঋণের সুদসহ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ২৮১ কোটি টাকা। তাছাড়া এবারের বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের (এডিপি) ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। এডিপিবহির্ভূত বিশেষ প্রকল্পগুলোর ব্যয় ৭ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হওয়ায় অনুদানসহ ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।
ঘাটতি মেটানো হবে যেভাবে : বাজেটের ঘাটতি মেটানো হবে মূলত অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে। এবারের বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা প্রথমবারের মতো ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। বিদেশিক ঋণদাতাদের কাছ থেকে ঋণ আনার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।
অভ্যন্তরীণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের ভরসা এবারও ব্যাংক খাত। বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক খাত থেকেই নেওয়া হবে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকার ঋণ। ব্যাংক থেকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নেবে ৮৬ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। স্বল্পমেয়াদি ঋণ নেবে ৪৫ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা।
তাছাড়া ব্যাংক থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হলেও এবারের বাজেটে ব্যাংকবহির্ভূত ঋণের লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে। এবারের ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে সরকার ঋণ নেবে ২৩ হাজার কোটি টাকা। গত বছরও এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫ হাজার কোটি টাকা। এবারের সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ নেবে ১৮ হাজার কোটি টাকা, আগের অর্থবছরে যা ছিল ২০ হাজার কোটি টাকা।
জিডিপি : আগামী অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৫০ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের বাজেটে সংশোধিত জিডিপির চেয়ে ১৩ শতাংশ বেশি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে জিডিপির আকার ৪৪ লাখ ৩৯ কোটি ২৭৩ কোটি টাকা। এবারের বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ আর ভোক্তা মূল্যসূচক বা মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। বর্তমান পরিস্থিতিতে জিডিপি ও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
আগামী অর্থবছরের বাজেট সরকারের জন্য সব দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফের যে ৩৮টি শর্ত রয়েছে, অর্ধেকের বেশিই বাস্তবায়ন করতে হবে এ অর্থবছরে। সরকারকে বেঁধে দেওয়া শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে রিজার্ভের যথাযথ গণনা পদ্ধতি প্রণয়ন, প্রতি তিন মাস অন্তর জিডিপির হার নির্ধারণ, সুদের হারে করিডোর পদ্ধতি তৈরি, মুদ্রা বিনিময় হারের একটি দর রাখাসহ কয়েকটি শর্ত পূরণের দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কিত। এগুলোর কিছু বাস্তবায়নের ঘোষণা আসবে আগামী জুন মাসে মুদ্রানীতি ঘোষণার সময়, কিছু আসবে জুলাইয়ে। আইএমএফের চাওয়ার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণ।
আকাশযাত্রা নিরাপদ ও শান্তিময় করাই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রুদের একমাত্র ব্রত। ফ্লাইট ছাড়ার পর মধ্য আকাশে আপনার পাশে দাঁড়িয়ে যিনি স্মিত হেসে অভ্যর্থনা জানিয়ে বলেন, স্যার আপনার সিট বেল্ট বাঁধতে হবে। এর কিছুক্ষণ পর আরেকজন এসে বলবেন, চা কফি, কিংবা অন্য কিছু? এরপর যারা খাবার দেবেন, আবার সুনিপুণভাবে সেগুলো গুছিয়ে নিয়ে যাবেন, আপনার ঘুম পাড়ানোর জন্য পরিবেশ নিশ্চিত করবেন, সেটাই কেবিন ক্রুদের পেশা।
তারাই কেবিন ক্রু। যারা উড্ডয়ন থেকে অবতরণ পর্যন্ত সময়টুকু সার্বক্ষণিক সেবা শুশ্রূষা নিশ্চিত করেন। ছোটখাটো অসুখ-বিসুখ করলে কিংবা ঘরে অসুস্থ স্বজন রেখে আসলেও আপনার সামনে হাসিমুখে দাঁড়াতে হয়। এটাই তাদের মূল দায়িত্ব। বিশ্বব্যাপী এটাকে বলা হয় ‘গ্লামার জব ইন দ্য স্কাই‘।
আজ ৩১ মে আন্তর্জাতিক কেবিন ক্রু দিবস। কানাডা ইউনিয়নের উদ্যোগে ২০১৫ সালে বিশ্বে প্রথম কেবিন ক্রু দিবস পালন করা হয়। প্রথম ৪৮০ জন কেবিন ক্রু নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি উদযাপন করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স একমাত্র রাষ্ট্রীয় বিমান সেবা প্রতিষ্ঠান- যেখানে কাজ করছেন এক ঝাঁক অভিজ্ঞ ও নবীন কেবিন ক্রু। যারা পরিবার আত্মীস্বজনকে দূরে রেখে বিভিন্ন উৎসব, ছুটি ও বিশেষ দিনেও নিজেদের আনন্দকে বিসর্জন দিয়ে সাধারণ কর্মঘণ্টার বিপরীতে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই যাত্রীসেবা নিশ্চিত করে যাচ্ছেন।
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী উড়োজাহাজ নিয়ে দেশ বিদেশে বিভিন্ন গন্তব্যে নানা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও সাহসিকতার স্বাক্ষর রাখছেন প্রতিনিয়ত। অতীতে বিমানের দেশে ও দেশের বাইরে জরুরি অবতরণে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ক্রুদের প্রচেষ্টায় সকল যাত্রীদের নিরাপদে রাখা সম্ভব হয়েছে।
সম্প্রতি বিমান ছিনতাই ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধেও বিমান কেবিন ক্রুরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। এছাড়া অসুস্থ যাত্রীদের বিশেষ সেবা প্রদান, আকাশপথে প্রসূতি যাত্রীদের সন্তান প্রসবে সহযোগিতা ও গুরুতর আহত যাত্রীদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতার স্বাক্ষর তারা রেখেছেন। আকাশপথে কেবিন ক্রুদের নিবিড় সেবায় অসংখ্যা অসুস্থ যাত্রী সুস্থতার সঙ্গে তাদের গন্তব্যে অবতরণ করতে সক্ষম হয়েছে। এজন্য কেবিন ক্রু একটি অনন্য সাধারণ পেশা হিসেবে পরিচিত।
দিবসটি উপলক্ষে আজ সীমিত পরিসরে বিশেষ আয়োজন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কেবিন ক্রু অ্যাসোসিয়েন। এবার হজের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থাকায় তারা সীমিত করেছে সব কর্মসূচি। সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ গোলাম দস্তগীর বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের সমস্ত কেবিন ক্রুকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, এ উপলক্ষে আজ বুধবার কেবিন ক্রু অ্যাসোসিয়েশন অফিসে একটি কেক কেটে সব সদস্যকে শুভ্চ্ছো জানানো হবে। দিবসটিতে তাৎপর্য নিয়ে মতবিনিময় ও সবার কুশলাদি বিনিময় করে করোনার মাঝেও এই কঠিন দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে সবাইকে ব্রতী হওয়ার আহ্বান জানানো হবে। পেশা আকর্ষণীয় ও সম্মানজনক হিসেবে বিবেচিত।
সুশিক্ষিত ও আলট্রা মডার্ন তরুণ-তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে থাকা এই পেশার প্রতি সাধারণ মানুষের কৌতূহলও লক্ষ্যণীয়। বিমানে কেবিন ক্রুদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে দস্তগীর বলেন, বিশ্বব্যাপী এটা অবশ্যই মর্যাদাসম্পন্ন পেশা। বিমান সেই মর্যাদা সমুন্নত রেখেছে। এখন আমাদের দাবি ২০১৮ সালের এডমিন অর্ডার অনুযায়ী আমাদের সকল সুযোগ-সুবিধা পুরোপুরি প্রদান করা হোক।
কেবিন ক্রুদের পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ববোধ সম্পর্কে গোলাম দস্তগীর জানান, কেবিন ক্রুদের দুইভাবে চিহ্নিত করা যায়। প্রথমত ফেস অব দ্য এয়ারলাইন হিসেবে। কারণ কেবিন ক্রুদের আচরণ ও পেশাদারিত্বই এয়ারলাইনসগুলোর যাত্রী ধরে রাখা এবং নতুন যাত্রীদের আকৃষ্ট করা। দ্বিতীয়ত, লাস্ট লাইন অব দ্য ডিফেন্স হিসেবে। কারণ আকাশে উড্ডয়নের পরে যে কোনো জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য কেবিন ক্রু ছাড়া আর কোনো সিকিউরিটি পার্সোনাল থাকেন না। সমগ্র পৃথিবীতে ঝুঁকিপূর্ণ যেসব পেশা রয়েছে তন্মধ্যে কেবিন ক্রু অন্যতম। বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ক্রুরা বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪৩ হাজার ফুট উচ্চতায় স্বল্প সুবিধা সংবলিত পরিবেশে কেবিন ক্রুরা তাদের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
একজন ভ্রমণকারীর ভ্রমণকে সর্বোচ্চ বিবেচনায় নিরাপদ করে তোলাই কেবিন ক্রুদের মূল কর্তব্য। প্রতিটি সফল উড্ডয়ন ও অবতরণ একজন কেবিন ক্রুকে নতুন প্রাণের সঞ্চার করে। আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে পৃথিবীতে ভ্রমণপিপাসু মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবসায়িক ভ্রমণ, রাজনৈতিক ভ্রমণ, চিকিৎসার জন্য ভ্রমণ, আনন্দ ভ্রমণ ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে আকাশযাত্রা বেড়েই চলেছে। শিশু থেকে শুরু করে বয়োজ্যেষ্ঠ সবাই থাকেন কেবিন ক্রুদের ভ্রমণসঙ্গী। কেবিন ক্রুদের বলা হয়, ফার্স্ট রেসপনডার।
দস্তগীর বলেন, কেবিন ক্রুদের হার্টঅ্যাটাক, হাইপোক্সিয়া, হাইপারভেন্টিলেশন, হাইপোগ্লাসেমিয়া, হাইপারগ্লোসিমায়, চকিং, নোজ ব্লিডিং এবং প্রেগন্যান্ট ডেলিভারির দায়িত্বও পালন করতে হয় অনেক ক্ষেত্রে। পেশাদারিত্বের এই দক্ষতায় সত্যিকার অর্থেই আকাশ হয়ে উঠুক শান্তির নীড়। বিমান আকাশে ওড়ার একঘণ্টা আগে ক্যাপ্টেন কেবিন ক্রুদের আবহাওয়া ও অন্যান্য বিষয় সংক্রান্ত তথ্য জানিয়ে দেয়।
এছাড়া পরিচ্ছন্নতা, সি পকেট সংক্রান্ত তথ্য, খাবার-দাবারের সরঞ্জাম পৌঁছানো, জরুরি ইক্যুইপমেন্ট, ফার্স্ট এইড প্রভৃতি ঠিকঠাক আছে কিনা এসব কেবিন ক্রুদের দেখে নিতে হয়।
বিমানে ওঠার পর যাত্রীদের টিকিট মিলিয়ে দেখা, কেবিন লাগেজ সিটে পৌঁছাতে সহায়তা করা, যাত্রীদের সিট দেখিয়ে দেওয়া এবং বিমান আকাশে ওড়ার আগে যাত্রীদের সিট বেল্ট লাগাতে বলাও কেবিন ক্রুদের কাজের পর্যায়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, বিমান ওঠানামা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় পাইলটের হয় কেবিন ক্রুদের বলতে হয়। এই পেশার যে লাইফ স্টাইল এবং রোমাঞ্চকর অনুভূতি।
আজ বুধবার বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। বিকল্প খাদ্য ফসল উৎপাদন ও বিপণনের সুযোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং টেকসই ও পুষ্টিকর ফসল চাষে তামাক চাষিদের উৎসাহিত করতে এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘গ্রো ফুড, নট টোব্যাকো’।
তামাক উৎপাদনে কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচনও এবারের বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। ‘তামাক নয়, খাদ্য ফলান’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে দিবসটি উদযাপিত হবে। দিবসটি উদযাপন উদযাপন উপলক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের আওতাধীন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) প্রতিবছরের মত এবারও যথাযথ গুরুত্বের সাথে দিবসটি উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে সকাল ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়য়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
তামাক চাষ কৃষকের স্বাস্থ্য, মাটির স্বাস্থ্য এবং সার্বিকভাবে গোটা জনস্বাস্থ্য ও পৃথিবীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি সাধন করে। দীর্ঘমেয়াদে বৈশ্বিক প্রতিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং খাদ্য সংকট সৃষ্টিতেও ভুমিকা রাখে তামাক। বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান খাদ্য সংকটের পিছনে সংঘাত-যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কোভিড-১৯ মহামারির অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবের পাশাপাশি তামাক চাষের একটি প্রভাব রয়েছে। বর্তমানে, পৃথিবীর ১২৫টিরও বেশি দেশের প্রায় ৪ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয় এবং শীর্ষ তামাক উৎপাদনকারী দেশগুলোর অধিকাংশই নিম্ন ও মধ্যম আয়ভুক্ত দেশ।
অন্যদিকে পৃথিবীব্যাপী উৎকৃষ্ট মানের জমি ক্রমবর্ধমানহারে তামাকচাষে ব্যবহৃত হওয়ায় খাদ্য ফসলের জমি ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। এসব জমি খাদ্যফসল ফলানোর কাজে ব্যবহার করা গেলে লাখ লাখ মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তার সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব।
বাংলাদেশে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ খুবই কম, মাত্র ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৭ হাজার একর। অথচ তামাক চাষে ব্যবহৃত মোট জমির পরিমাণের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম। বিশ্বের মোট তামাকের ১.৩ শতাংশই উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। তামাকচাষের কারণে খাদ্য ফসলের জমি ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশে রবি মৌসুমের প্রধান খাদ্য ফসলগুলোর মধ্যে বোরো, গম এবং আলু অন্যতম এবং এ মৌসুমেই তামাক চাষ হয়ে থাকে।
অন্যদিকে বাংলাদেশে তামাকজনিত অসুস্থতায় প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। দেশে মৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের প্রধান চারটি কারণের একটি তামাক। তামাকজনিত রোগের চিকিৎসা ব্যয় ও কর্মক্ষমতা হ্রাসের আর্থিক ক্ষতি প্রায় ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। তামাকের এসব ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করেই তামাক নিয়ন্ত্রণকে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের অন্তর্ভুক্ত (টার্গেট ৩এ) করা হয়েছে। কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তামাকের সরবরাহ এবং চাহিদা কমিয়ে আনাই হতে পারে তামাকের নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে ওঠার সঠিক উপায়।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, তামাক চাষে অতিরিক্ত যে লাভের কথা প্রচার করা হয়, তার প্রায় সবটাই বানোয়াট। আপাতদৃষ্টিতে তামাক চাষে বেশি আয় উপার্জন হলেও এই আয় থেকে পারিবারিক শ্রমের পারিতোষিক, জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত নিজস্ব গাছের বা কাঠের দাম, পরিবেশের ক্ষতি, স্বাস্থ্য ব্যয় ইত্যাদি বাদ দিলে তামাক চাষে লাভের বদলে ক্ষতি হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, তামাক চাষে নেট সোশ্যাল রিটার্ন ঋণাত্মক, প্রতি একরে ক্ষতি ৯১৬.১১ ডলার।
টোব্যাকো অ্যাটলাসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ৩১ শতাংশ বন নিধনের পেছনে তামাক চাষ দায়ী। গবেষণায় দেখা গেছে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার তিনটি উপজেলায় তামাকপাতা শুকানোর (কিউরিং) কাজে এক বছরেই প্রায় ৮৫ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি কাঠ ব্যবহৃত হয়েছে। স্থানীয় বন থেকে এইসব কাঠ সংগ্রহ করায় পাহাড়গুলো বৃক্ষহীন হয়ে পড়ছে এবং সেখানকার অধিবাসীরা আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধ্বসের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া তামাক চাষে ব্যবহৃত অতিরিক্ত কীটনাশক ও সার বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে নিকটস্থ জলাশয়ে মিশে মৎস্য উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তামাক বিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, তামাক চাষের ক্ষতি থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য তামাক কোম্পানিগুলো প্রায়শই নিজেদের অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব হিসেবে উপস্থাপন করে। তথাকথিত সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কর্মসূচির (সিএসআর) মাধ্যমে তামাক কোম্পানিগুলো তাদের ঘটানো ক্ষতি আড়াল করে এবং দায় এড়ানোর চেষ্টা করে।
তিনি বলেন, তামাক জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনীতির জন্য হুমকি। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করণের মাধ্যমেই এসব ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের ঘোষণা বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।