
রূপায়ণ সিটি উত্তরা পরিদর্শন করেছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে টিম ফরচুন বরিশাল। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের প্রথম প্রিমিয়াম মেগা গেটেড কমিউনিটি রূপায়ণ সিটি উত্তরায় ফরচুন বরিশাল টিমকে ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে স্বাগত জানান রূপায়ণ সিটির সিইও এম মাহবুবুর রহমান।
এরপর ফরচুন বরিশালের ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসান, ভাইস ক্যাপ্টেন মেহেদী হাসান মিরাজ, আফগানিস্তানের ক্রিকেটার করিম জান্নাত, পাকিস্তানের ক্রিকেটার ইফতেখার আহমেদ ও ইবাদত হোসেনসহ টিম বরিশালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রূপায়ণ সিটি পরিদর্শন করান রূপায়ণ সিটি উত্তরার সিইও এম মাহবুবুর রহমান।
এরপর ক্রিকেটারদের হাতে শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন রূপায়ণ গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান মাহির আলী খাঁন রাতুল। এ সময় উপস্থিত কুয়েতের অ্যাম্বাসাডর গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান ওয়ালিদ মুকাই আলী এবং রূপায়ণ গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান নওরিন জাহান মিতুল এবং গ্রুপ মার্কেটিং ডিরেক্টর অমিত চক্রবর্ত্তী।
রূপায়ণ সিটিতে পরিদর্শন শেষে সাকিব আল হাসান বলেন, ‘রূপায়ণ সিটিতে এসে এর নানান সুযোগ-সুবিধা দেখে আমি মুগ্ধ। এখানে না এলে বিশ্বাসই হতো না এত সুন্দর একটা স্থাপনা রয়েছে আমাদের এই ঢাকা শহরে।’
অন্যদিকে মেহেদী হাসান মিরাজ বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে কেউ যদি আবাসস্থলের চিন্তা করেন তবে রূপায়ণ সিটি আদর্শ জায়গা।’
ক্রিকেটার ইবাদত হোসেন বলেন, ‘রূপায়ণ সিটির খোলামেলা জায়গা, সুপ্রশস্ত রাস্তা, বাচ্চাদের খেলার মাঠ, তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এ সবকিছুই আসলে এই সিটিকে আলাদা করেছে সবার থেকে।’
রূপায়ণ সিটি উত্তরা ঢাকার উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত বাংলাদেশের প্রথম লাক্সারি মেগা গেটেড কমিউনিটি যার একাংশ ইতিমধ্যেই ক্রেতাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং বাকি অংশগুলোও দ্রুত হস্তান্তরের উদ্দেশ্য প্রস্তুত হচ্ছে। স্কাই ভিলা, কন্ডো অ্যাপার্টমেন্ট এবং ম্যাক্সাসের মতো মিক্সড ইউজ এক্সপেরিয়েন্স মেগা মল নিয়ে তৈরি হচ্ছে এই মেগা গেটেড কমিউনিটি।
অমর একুশে বইমেলার সঙ্গে জঙিয়ে আছে বাঙালির নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নেওয়ার আবেগ অনুভব। নতুন বইয়ের টানে প্রতিদিন মেলায় ভিড় জমান হাজারো পাঠক দর্শনার্থী। মেলায় বইপ্রেমীদের প্রত্যাশা পূরণে প্রথম দিন থেকেই মেলায় যুক্ত হতে শুরু করেছে নতুন নতুন বই। প্রতিদিনই প্রকাশিত হচ্ছে তরুণ ও প্রতিষ্ঠিত লেখকদের বই।
গতকাল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনে মেলা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ স্টল সাজসজ্জা শেষ করেছে। স্টলগুলোতে শোভা পাচ্ছে থরে থরে বইয়ের স্তূপ, মানে সাজসজ্জা শেষ হলেও কার্টন থেকে বই নামিয়ে স্টলে সাজানো শেষ হয়নি। স্টলে প্রদর্শন করা হয়েছে কম বইই। গতকাল মেলায় এসেছে বিভিন্ন লেখকের গল্প, কবিতা, উপন্যাস আর প্রবন্ধের নানা বই। বেলা ৩টায় গেট খোলার পর থেকেই সারিবদ্ধভাবে মেলার জড়ো হতে থাকেন বইপ্রেমীরা। পরে বেলা গড়াতে থাকলে পাঠকের আনাগোনায় প্রাণের মেলায় নামে মানুষের ঢল।
মেলার বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে দেখা যায় স্টলে স্টলে ডিজাইনের বৈচিত্র্য। চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার মতো পরিবেশ। চলতে-ফিরতে দারুণ স্বাচ্ছন্দ্য পাচ্ছেন পাঠকরাও। প্রতিটি স্টলের মাঝে রয়েছে চলাফেরার প্রশস্ত পথ। তবে স্টল বিন্যাসে সাজসজ্জায় নতুনত্ব থাকলেও গতকাল মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, ধুলো ও নতুন ফেলা বালুর উৎপাত। মেলার চারপাশে মাস্ক পরে ঘুরতে দেখা গেছে দর্শনার্থীদের।
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, ধুলাবালির উৎপাতকে উপেক্ষা করে পাঠকদের বইয়ের প্রতি আগ্রহের কোনো কমতি ছিল না। স্টলে স্টলে গিয়ে পাঠকরা নেড়েচেড়ে দেখছেন নতুন নতুন বই। অনেকে খোঁজ করছেন প্রিয় লেখকটির বই এসেছে কি-না! এ ছাড়া একাডেমির নিজস্ব প্যাভিলিয়ন ছাড়াও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে মেলা শুরুর আগেই স্টল তৈরির বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও মেলার দ্বিতীয় দিনেও বেশ কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থা তাদের স্টল চালু করতে পারেনি।
সহপাঠীদের সঙ্গে মেলায় আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন,মেলার শুরুতেই বই কিনব বলে এসেছি। কারণ শেষের দিকে ভিড় বেড়ে যায়। এখন প্রতিটি স্টল ঘুরে ঘুরে দেখে বই কিনতে পারব। আমরা কয়েক বন্ধু এসেছি। আরও কয়েক দিন আসব। মেলাতে বই কিনলে একটা সুবিধা হলো লেখকের অটোগ্রাফ নেওয়া যায়। তবে মেলাতে আসার পর সমস্যা হচ্ছে এখানে প্রচুর ধুলো। মাস্ক ছাড়া হাঁটা যায় না। তারপরও বইমেলাতে না এলে মন ভরে না।
প্রকাশনা সংস্থা ‘বাংলা প্রকাশ’র প্যাভিলিয়নের সামনে এর বিক্রয়কর্মী আখতারুজ্জামান জানান, মেলার পরিধি গতবারের থেকে বাড়তি পাওয়ায় মেলা বেশ খোলামেলা পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ জন্য পাঠকরা বই দেখে কিনতে পারবে। স্টল বিন্যাস ও মেলার সার্বিক সাজসজ্জায় এসেছে নতুনত্ব। মেলা পাঠকের সুবিধার কথা বিবেচনা করে সাজানো হয়েছে। ফলে ভিড়ের বিড়ম্বনা সহ্য করতে হবে পাঠকদের। আশা করছি, এবারের মেলা অনেক ভালো হবে।
কোন কোন লেখকের কী কী নতুন বই এসেছে সেই তথ্য জানতে চাওয়া হলে বাংলা একাডেমির তথ্যকেন্দ্র থেকে জানানো হয়, গতকাল মেলায় ২১টি নতুন বই এসেছে। তবে এখনো সবকিছু গুছিয়ে ওঠেনি বলে বইয়ের লিস্টগুলো তারা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
প্রতিবছর বইমেলার জন্য আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করি। কখন বইমেলা শুরু হবে আর নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নেব শরীরে ফুসফুসে। আমার বই পড়ার নেশা বলতে পারেন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার মতো হয়ে দাঁডিয়েছে। সঙ্গী পুরুষের হাতে বিশ্বস্ততার হাত রেখে ঠিক এভাবেই দেশ রূপান্তরকে কথাগুলো বলছিলেন মেলায় আসা বদরুন্নেছা কলেজের মাস্টার্স -এর শিক্ষার্থী, খুলনার মেয়ে ফাহমিদা আক্তার।
বইমেলা একজন পাঠকের জন্য পুরো বছরের মনের খোরাক উল্লেখ করে তিনি বলেন, বইমেলা আমাদের জন্য সারা বছরের ফুয়েল বলা চলে। এ মাসটাতেই সারা বছরের মনের খোরাকি বই সংগ্রহ করে থাকি। ঠিক যেমন বুঝতে পারার পর থেকেই বাবার হাত ধরে বইমেলায় আসতাম বই সংগ্রহ করতে, এখন এই বয়সে এসে আসছি প্রিয় মানুষের হাত ধরে।
জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, প্রিয় লেখক বলতে আমাদের বরেণ্য প্রয়াত লেখকদের কথাই বলব, গল্পের মধ্যেই আমি পড়ার সুখ খুঁজে নিতে পছন্দ করি। আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, হুমায়ূন আহমেদ, শহীদুল জহির আআর প্রিয়, কিন্তু এখনকার লেখকদের লেখায় ঠিক প্রাণ খুঁজে পাই না।
অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ -এর এখনো অগোছালো স্টল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফাহমিদা আরও বলেন, বইমেলা মানেই লেখক পাঠকদের মিলনমেলা, কিন্তু মেলা শুরুর দ্বিতীয় দিনে এসেও খুব বেশি কবি সাহিত্যিকদের মেলায় না দেখতে পেয়ে ব্যথিত হয়েছি। তবে আশা করব, পাঠকের হৃদয় নিয়ে যারা শব্দ জাদুতে মাতেন তারা যেন বেশি বেশি পাঠকদের সান্নিধ্যে আসার জন্য অন্তত মেলাটাকে কাজে লাগান। লেখার ব্যাপারে যেন আরও সচেতন হন। আমাদের তরুণদের টার্গেট করেও যেন লেখেন, জাতিগতভাবে আমাদের পাঠ অভ্যাস বাড়ানো এখন খুব দরকার।
নির্বাচিত শব্দের নতুন শৃঙ্খলার সারিগুচ্ছে কবিতা রচনা করেন তিনি। আর কবিতা লিখছেন মানুষের যেন মনের ভাব প্রকাশে সহায়তা হয় মানুষের মনে উঁকি দেওয়া কথাগুলোই লিখতে চান তিনি। নিয়মিত লিখে চলেছেন দুই দশকের বেশি সময় ধরে। বলছি, কবি পিয়াস মজিদের কথা। এবারের বইমেলাতেও তার তিনটি কবিতার বই প্রকাশিত হচ্ছে। এছাড়া বৈতরণী পুনঃপ্রকাশ করছে তার প্রথম কবিতার বই নাচপ্রতিমার লাশ। এ নিয়ে ১৫টি মৌলিক কবিতার বই প্রকাশিত হলো তার।
জানতে চাইলে পেশায় বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা কবি পিয়াস মজিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, এবারের বইমেলায় আমার একক কবিতার দুটি বই এসেছে। এর মধ্যে ঐতিহ্য প্রকাশিত ‘‘ভুলে যাওয়া স্কার্টের সিঁড়ি’’ একটি। এই বইয়ের কবিতাগুলো সব বয়সী পাঠকদের কথা চিন্তা করে লিখেছিলাম। প্রতিবছর পাঠকদের থেকে লেখার মান নিয়ে অভিযোগ আসে। কিন্তু আমি এই সময় ও ভবিষ্যৎ পৃথিবীর কথা চিন্তা করে লিখি কবিতা। আমি চাই প্রস্তুত পাঠক যতে্ন পড়ুক আমার কবিতা। এছাড়া পাঞ্জেরী প্রকাশ করছে আমার আরেকটি কবিতার বই, এ সকাল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। এছাড়া মাওলা ব্রাদার্স এক মলাটে দুজন কবির বই করছে, আমার আর কবি সাকিরা পারভীন সুমার বই বেরুচ্ছে এক মলাটে, আমারটির নাম ‘মেহজাবিনের ছাতার লোভে’।
মানহীন লেখকের বই ক্রয় করে পাঠকরা যেন প্রতারিত না হন সে বিষয়ে পাঠকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে পিয়াস মজিদ আরও বলেন, এখন একটা বই বের করতে তেমন কোনো বাধা পেরুতে হয় না। তবে উচিত হবে, পাঠকের কথা চিন্তা করে লেখকদের ভালো লেখার দিকে যাওয়া এবং নিজে মান নিয়ে নিশ্চিত না হলে বই প্রকাশ না করা।
এবারের মেলার প্রত্যাশা নিয়ে এই কবি বলেন, করোনার প্রথম দুই বছর আমাদের উলটপালট করে দিয়েছে। অনেক আপন মানুষকে আমরা হারিয়েছি। কোনোরকম ঝামেলা না থাকায় সঠিক সময়ে এবার অমর একুশে বইমেলা শুরু হয়েছে। সেই হিসাবে মেলার প্রথম দিকে পাঠকদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ারমতো ছিল। আশা করছি সময় বাড়ার সঙ্গে মেলা আরও জমে উঠবে।
কেমন পাঠক চান জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি চাই এমন পাঠক, যে শুধু আমার নয় বা নামের কারণে নয়, কবিতাকে ভালোবেসে হৃদয়ঙ্গম করে কবিতা পড়বে।
কিন্তু, সে পাঠক কজন কোথায়? প্রশ্ন করেই আলাপ শেষ করে বইমেলার আড্ডায় আবারো যুক্ত হলেন কবি পিয়াস মজিদ।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জাল বিস্তারকারী মানব পাচারকারী চক্রে জড়িয়ে পড়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কিছু অসাধু কর্মচারী। তারা ভুক্তভোগীদের ভ্রমণ ভিসায় নির্বিঘে্ন বিমানবন্দর পার করে দেওয়ার কাজে সহায়তা করছে। এর জন্য জনপ্রতি নিচ্ছে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। এসব টাকার ভাগ বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের অনেকেই ভাগ পাচ্ছে।
এ চক্রে সরাসরি জড়িত রয়েছে বেবিচকের বেশ কয়েকজন নিরাপত্তা প্রহরী। তারা ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছে। এছাড়া বিমানবন্দরে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া কর্মীরাও জড়িত রয়েছে মানব পাচার চক্রে।
মানব পাচার নিয়ে কাজ করতে গিয়ে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে এসব তথ্য। তদন্তকারী পুলিশের একাধিক সদস্য দেশ রূপান্তরকে বলেন, যে কেউ চাইলেই ভ্রমণ ভিসায় যে কোনো দেশে যেতে পারেন না। ফলে মানব পাচার চক্রগুলো ভ্রমণ ভিসায় ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন দেশে পাঠাতে গেলে বাধার মুখে পড়ে। সেই সব বাধা অতিক্রম করতে চক্রগুলো বিমানবন্দরের কর্মীদের ব্যবহার করছে।
সম্প্রতি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মানব পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে বেবিচকের এক নিরাপত্তা প্রহরী ও অগ্রগামী ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এ কর্মী আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া।
জানতে চাইলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (সিরিয়াস ক্রাইম) মো. নজরুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মানব পাচার চক্রে বিমানবন্দরের দুই কর্মীর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। গত দুই বছরে তারা অসংখ্য বাংলাদেশিকে পাচার করেছে বলে স্বীকারও করেছে। এই চক্রের সদস্যরা ইরান, দুবাই, তুরস্ক, আরব আমিরাত, ওমানসহ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশন ও আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কাজ করা বেশ কিছু কর্মীর জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।’
এদিকে বিভিন্ন সময় মানব পাচার চক্রের অনেকে গ্রেপ্তার হলেও অধরা থাকছে হোতারা। আবার বিমানবন্দরের নিম্ন পদের কর্মীরা গ্রেপ্তার হলেও ধরা পড়ছে না রাঘব-বোয়ালরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও বলছে, চক্রের বেশিরভাগ হোতাই দেশের বাইরে অবস্থান করে মানব পাচার করছে। এমনই একজন আব্দুল হান্নান। দুবাইতে পাচারকারী হিসেবে তাকে সবাই এক নামে চেনে। তার চক্রের নেটওয়ার্ক রয়েছে বিভিন্ন দেশে।
সিআইডির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া বেবিচকের নিরাপত্তা প্রহরী লালমনিরহাটের বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদশা (৪১) মানব পাচার চক্রে জড়িয়েছেন প্রায় দুই বছর। তিনি ভুক্তভোগীদের ভ্রমণ ভিসায় বিমানবন্দর পার করে উড়োজাহাজে ওঠা পর্যন্ত সার্বিক কাজ করে থাকেন। তার সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত রয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের একজন লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন পশ্চিম লতিফপুরের বাসিন্দা মিনহাজুর রহমান ফাহিম। তিনি গ্রিসে যাওয়ার চেষ্টা করে মানব পাচারকারী চক্রের ফাঁদে পা দেন। টাকা খোয়ানোর পাশাপাশি জীবনই হারাতে বসেছিলেন তিনি। তাকেও ভ্রমণ ভিসায় দুবাই পাঠাতে বিমানবন্দর পার করে দিয়েছিল জাহাঙ্গীর।
ফাহিম দেশ রূপান্তরকে জানান, ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল তিনিসহ চারজনকে ভ্রমণ ভিসায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দুবাই পাঠায় মানব পাচারকারী একটি চক্র। সে সময় দালাল চক্রটি বিমানবন্দরে গিয়ে এক নিরাপত্তা প্রহরীর কাছে বুঝিয়ে দেয় তাদের। ওই প্রহরীই সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের বিমানে তুলে দেন। দুবাইতে গিয়ে ছয় থেকে সাত দিন রাখার পর সমুদ্র ও স্থলপথে ইরানে নেওয়া হয় ফাহিমকে। এ সময় বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে তার পরিবারের কাছ থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা আদায় করে মানব পাচারকারী চক্রটি। নির্যাতনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফাহিম হাসপাতালেও ভর্তি থাকেন কিছুদিন। এরপর চক্রের হাত থেকে পালিয়ে দেশে ফেরার উদ্দেশ্যে তুরস্ক যান। সেখানে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জেল খেটে অবশেষে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তায় গত বছরের ২৮ এপ্রিল দেশে ফেরেন তিনি। পরে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় একটি মামলাও করেন ফাহিম।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বিদেশ যাওয়ার জন্য ফাহিম গ্রিসে থাকা তার পাশের মো. শাহাদাৎ হোসেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। শাহাদাৎ সুনামগঞ্জের আলী হোসেনের সঙ্গে তার যোগাযোগ করিয়ে দেন। আলী হোসেন সাড়ে ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে ফাহিমকে তুরস্ক পর্যন্ত নিতে পারবে বলে জানান। তার মাধ্যমেই দুবাই অবস্থানকারী আব্দুল হান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ হয় ফাহিমের। আব্দুল হান্নানের কথামতো ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল ভ্রমণ ভিসায় দুবাই যান তিনি।
ফাহিমের মতো অসংখ্য ভুক্তভোগী রয়েছেন। তবে তাদের বেশিরভাগই মামলার ঝামেলায় যেতে চান না। এমনকি ফাহিমও প্রথম পর্যায়ে চক্রের ভয়ে মামলা করতে রাজি হচ্ছিলেন না।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, চক্রটি বিদেশগামীদের প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ের শারজাহতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে হরমুজ প্রণালী দিয়ে ইরানের বন্দর আব্বাসে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ইরানের সিরাজ এলাকা হয়ে নিয়ে যায় তুরস্কে। আর সেখান থেকেই গ্রিসে নেওয়ার চেষ্টা চলে।
সিআইডি বলছে, এই মানব পাচার চক্রের প্রধান সুনামগঞ্জের আব্দুল হান্নান। তার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পেয়েছে সিআইডি। হান্নান দীর্ঘদিন দুবাইতে থেকে মানব পাচার করে আসছেন। তার সহযোগী আব্দুস সালামকে গ্রেপ্তার করলেও তাকে ধরা যাচ্ছে না। এই সালামকে দিয়ে হান্নান বিমানবন্দরের কর্মীদের সঙ্গে চুক্তি করত।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলছেন, আব্দুস সালাম চক্রের অন্যদের সহায়তায় ভুক্তভোগীদের দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে। তাদের বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে ভ্রমণ ভিসায় অবৈধ আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে দুবাই পাঠায়। দুবাইয়ে নিয়ে মারধর করে কাগজপত্র কেড়ে নিয়ে ইরানের দালাল চক্রের কাছে তুলে দেয়। ইরানের ওই চক্র বাংলাদেশের দালালদের সহযোগিতায় সমুদ্রপথে ভুক্তভোগীদের ইরানে নিয়ে একইভাবে আটকে রেখে মারধর করে এবং দেশে তাদের আত্মীয় স্বজনকে মারধরের ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে টাকা দিতে বাধ্য করে।
আব্দুল হান্নানের আরেক সহযোগী সুনামগঞ্জের আলী হোসেন বর্তমানে গ্রিসে আছেন। দেশে থাকা তার স্ত্রী রশিয়া বেগমের মাধ্যমে টাকা নিতেন হান্নান। রশিয়া বেগমকেও সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে কলম্বো গেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি।
কূটনৈতিক সূত্র এ তথ্য জানিয়ে বলছে, এ সফরে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে ও প্রধানমন্ত্রী দিনেশ গুনাবর্ধনের সঙ্গে বৈঠক করবেন ড. মোমেন। এছাড়া শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী সাবরি ও নেপালের সদ্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করা বিমলা রায় পাওডেল এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খারের সঙ্গেও বৈঠক করবেন তিনি।
সফরসূচি অনুযায়ী, সফরকালীন আবাসস্থল হিলটন কলম্বোতে সফরসঙ্গীদের নিয়ে উঠেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলাদেশ হাউজের আমন্ত্রণে গতকাল সন্ধ্যায় নৈশভোজে যোগ দেন তিনি।
সফরের দ্বিতীয় দিন আজ শুক্রবার দুপুরে শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী সাবরির দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিকেলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী দিনেশ গুনাবর্ধনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সন্ধ্যায় একটি লেকচার সিরিজে ও রাতে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
সফরের তৃতীয় দিন আগামীকাল শনিবার সকালে গালে ফেস গ্রিন গার্ডেনে আয়োজিত শ্রীলঙ্কার ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে যোগ দেবেন ড. মোমেন। এ দিন দুপুরে সফরকালীন আবাসস্থল হিলটন কলম্বোতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খারের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। এরপর শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী সাবরির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
বিকেলে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের সঙ্গে বৈঠক করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর নেপালের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিমলা রায় পাওডেলের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। সন্ধ্যায় শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট আয়োজিত সংবর্ধনায় যোগ দেবেন ড. মোমেন। একই দিন সফরসঙ্গীদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে শ্রীলঙ্কা ত্যাগ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
রিয়াল মাদ্রিদের সংগে ১৪ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলছেন। ৪০ কোটি ইউরো চুক্তিতে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আলো ইত্তিহাদে যোগ দিচ্ছেন।
ক'দিন ধরে এমন কথা শোনা যাচ্ছিল করিম বেনজেমাকে নিয়ে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন -এমন কথাও চাউর হয় স্পেনের সংবাদ মাধ্যমে।
কিন্তু সব কিছুতে জল ঢাললেন ব্যালন ডি অর জয়ী। স্পেনের গণমাধ্যম মার্কার দেয়া মার্কা লিজেন্ড এওয়ার্ড নিতে গিয়ে বললেন, 'আমি যখন রিয়ালেই আছি তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে কেনো বলবো। ইন্টারনেটে যা প্রচার হচ্ছে তা ঠিক না। আমি এখানে ভালো আছি। শনিবার রিয়ালের ম্যাচ আছে, সব ফোকাস আমার সেই ম্যাচকে নিয়ে।'
ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে তাকে রিয়ালে আনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বেনজেমা বলেন, '২১ বছরের আমি এই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলাম। এই ক্লাবে খেলার মতো আর কিছু হয় না, সান্তিয়াগো বার্নাবু দারুন এক জায়গা।'
রিয়ালের সংগে চুক্তির মেয়াদ এ মাসেই শেষ হচ্ছে বেনজেমার।
পাকিস্তানের প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলে নয়, এশিয়া কাপ হবে একটি দেশে। আর সেটা শ্রীলংকা। পাকিস্তান তাতে অংশ না নিতে চাইলে তাদেরকে ছাড়াই হবে এশিয়া কাপ।
ভারতের তরফ থেকে পাকিস্তানকে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে কলকাতাভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক দা টেলিগ্রাফ।
বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ যিনি এসিসিরও প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে বলেছেন, শ্রীলংকায় এশিয়া কাপ খেলতে রাজি আছে ভারতসহ চার পূর্ণ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে এসিসির নির্বাহী সভায় আলোচনা করা হবে। পাকিস্তান রাজি না হলে ৫ দল নিয়েই হবে এশিয়া কাপ।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচ অন্য কোনো দেশে আয়োজনে পিসিবি চেয়ারম্যান নাজমা শেঠির দাবিও নাকচ করে দিয়েছেন জয় শাহ। টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে ভারতেই খেলতে হবে, না হলে না খেলবে। এ বার্তা পিসিবি এবং আইসিসির দুই কর্মকর্তা যারা সম্প্রতি পাকিস্তান সফর করেন তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।