
ছুটির দিনের বইমেলা পরিণত হয় উৎসবে। গতকাল শনিবার সকাল থেকেই বাড়তে থাকে পাঠক-দর্শনার্থীর সমাগম; বিশেষ করে এ দিন স্কুল, কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তরুণদের আধিক্যে মেলা হয়ে ওঠে তারুণ্যের মেলা। তরুণদের কয়েকটি দলকে হাঁটতে হাঁটতে সমস্বরে গানও গাইতে দেখা যায়।
জানতে চাইলে কবি আসাদ চৌধুরী এসব দর্শনার্থী নিয়ে বলেন, ‘এরাই তো মেলার প্রাণ। তারুণ্যের পদচারণ না থাকলে তো মেলা জমবে না।’ কাকলী প্রকাশনীর ম্যানেজার ইমরান আহমেদ বলেন, ‘গত দুদিনে আমাদের এখানে যারা এসেছেন, তাদের অধিকাংশই হুমায়ূন সাহিত্যপ্রেমী। আর তাদের মাঝে ৯০ শতাংশই তরুণ।’
তবে এত দর্শনার্থী থাকলেও মেলায় বই বিক্রি নিয়ে সন্তুষ্ট নন প্রকাশকরা। অ্যাডর্ন পাবলিকেশনের সৈয়দ জাকির হোসেন বলেই ফেললেন, ‘সবাই একটা করে বই কিনলেও আজ সব স্টল খালি হয়ে যেত।’
এদিকে মেলার চতুর্থ দিনেও নানা অব্যবস্থাপনা দেখা গেছে। মেলার ভেতরে অতিরিক্ত ধুলাবালির কারণে মাস্ক পরে ঘুরতে দেখা গেছে দর্শনার্থীদের। এ ছাড়া মেলার প্রবেশপথগুলোতে পর্যাপ্ত আলো না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে তাদের। এ নিয়ে কথা হয় কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা রেজা ঘটকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বইমেলার ভেতরের ডিজাইন ও লে-আউট এবার যতটা ভালো হয়েছে, ঠিক তার উল্টো হয়েছে গেট ব্যবস্থাপনায়। প্রথম শুক্রবারই গেট ব্যবস্থাপনার সেই দুর্বলতা সুস্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে!’
প্রাণবন্ত শিশুপ্রহর : এদিকে অমর একুশে বইমেলার শিশুপ্রহরের দ্বিতীয় দিন ছিল গতকাল। এদিন বেলা ১১টায় বইমেলার দুয়ার খুলতেই শিশু কর্নার প্রাণবন্ত হতে শুরু করে শিশু-কিশোরদের পদচারণে। শিশুপ্রহর জমজমাট হয়ে ওঠে টিভি পর্দার জনপ্রিয় অনুষ্ঠান সিসিমপুরের আয়োজনে। মেলায় বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ছাড়াও অনেক শিশুকে দেখা গেছে শিশুপ্রহরে। এ ছাড়া মা-বাবার সঙ্গে বই কিনতে দেখা যায় শিশুদের।
মেলায় আসা শিশু-কিশোরদের বইয়ের পছন্দের তালিকায় রয়েছে কমিকস, রূপকথা, গল্প, সায়েন্স ফিকশন, গণিত নিয়ে মজার খেলা ও ছড়ার বই।
এ ছাড়া শিশুদের বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দু সিসিমপুরের মঞ্চ ছিল নানা বয়সী শিশুদের কোলাহলে মুখর। কারণ সেখানে ছিল টুকটুকি, শিকু, ইকরি ও হালুমের পরিবেশনা। এ সময় পছন্দের চরিত্রগুলোর ছবি তোলার হিড়িক পড়ে শিশুদের মাঝে। বাচ্চাদের ছোটাছুটি আর দুরন্তপনায় শিশুচত্বর প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
মেলায় শিশু-কিশোরদের আগমনে বিক্রি বেড়েছে শিশুচত্বরের স্টলগুলোতে। এই অংশের স্টল মালিকরা জানান, ছুটির দিন ও শিশুপ্রহর ছাড়া অন্য দিন মেলায় শিশু-কিশোরদের উপস্থিতি কম থাকে। তাই এ সময় শিশুচত্বরে বইয়ের বেচাকেনাও কম হয়। শুক্র-শনিবার অভিভাবকরা শিশু-কিশোরদের মেলায় নিয়ে আসেন। এই দুদিন বিক্রিও অন্যান্য দিনের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
মেলায় নায়ক ফেরদৌসের উপন্যাস
এবারের বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে ফেরদৌসের প্রথম বই ‘এই কাহিনি সত্য নয়’। প্রকাশ করেছে প্রথমা। শুক্রবার বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে আনুষ্ঠানিকভাবে বইটি পাঠকের সামনে আনা হয়। এ সময় ফেরদৌসের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন লেখক আনিসুল হক, গীতিকবি কবির বকুলসহ অনেকে। ফেরদৌস জানান, কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার সময়কার একটি ঘটনা থেকে তার উপন্যাসের গল্পের সূচনা। এরপর সেখানে কল্পনার জগৎ বিস্তৃত করেছেন তিনি; অর্থাৎ সত্য এবং কল্পনার মিশেলে উপন্যাসটি সাজিয়েছেন নবীন এ লেখক। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন চিত্রশিল্পী মাশুক হেলাল।
নতুন বই
গতকাল মেলা চলে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। নতুন বই এসেছে ১১৩টি।
মূল অনুষ্ঠান
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ : ড. আকবর আলি খান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া। আলোচনায় অংশ নেন ফারুক মঈনউদ্দীন, মো. মোফাখখারুল ইকবাল ও কামরুল হাসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ সাদিক।
আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘ড. আকবর আলি খান প্রশাসনের বহু পদে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। মুজিবনগর সরকারে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ছিলেন; পাকিস্তান সরকার তার বিরুদ্ধে জেলদণ্ডও ঘোষণা করেছিল। বহুকাল তিনি অর্থসচিব হিসেবে কাজ করেছেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন, বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টাও ছিলেন। সরকারি প্রশাসনিক কর্মে এসব সাফল্য সত্ত্বেও মনে করা যায় যে আকবর আলি খানের মূল পরিচয় তার পাণ্ডিত্যপূর্ণ লেখাজোখায় ছড়িয়ে আছে। পণ্ডিত হিসেবে তিনি অত্যন্ত উচ্চমানের সৃষ্টি রেখে গেছেন।’
আলোচকরা বলেন, ড. আকবর আলি খানের কাজের পরিধি ছিল বিস্তৃত। প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে থেকেও সৎ ও নির্ভীক আকবর আলি খান কঠোর ভাষায় অন্যায়, অদক্ষতা ও দুর্নীতির সমালোচনা করেছেন। এ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির কথা ভাবতেন তিনি। সামাজিক বৈষম্য ও দারিদ্র্য দূর করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি তার মেধা ও মননকে কাজে লাগিয়েছেন। অর্থনীতি, ইতিহাস ছাড়াও নৃবিজ্ঞান ও সাহিত্য-সমালোচনার ক্ষেত্রেও তিনি তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। বিচিত্র বিষয়ে আগ্রহ তাকে একজন বহুমাত্রিক পণ্ডিতের পর্যায়ে উন্নীত করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ সাদিক বলেন, অর্থনীতি, ইতিহাস নৃবিজ্ঞান ও সাহিত্য নিয়ে গভীর জ্ঞানতাত্ত্বিক আলোচনা ড. আকবর আলি খানকে যেমন অমর করেছে, তেমনি বাঙালি জাতিকে করেছে ঋদ্ধ। এমন একজন বিবেকবান, স্পষ্টভাষী, সৎ ও নির্মোহ মানুষ আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য নিঃসন্দেহে অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবেন।
লেখক বলছি
গতকাল ‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন ফারুক হোসেন, আবদুল বাছির, ইসহাক খান এবং আফরোজা সোমা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি অসীম সাহা, অঞ্জনা সাহা ও ফরিদ কবির। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মো. রফিকুল ইসলাম, অলোক কুমার বসু ও মিজানুর রহমান সজল। এ ছাড়া ছিল গোলাম কুদ্দুছের নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বহ্নিশিখা’র পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী দিল আফরোজ রেবা, চন্দনা মজুমদার, আব্দুল লতিফ শাহ এবং শাহ আলম দেওয়ান। যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন তুলসী সাহা (তবলা), ডালিম কুমার বড়ুয়া (কিবোর্ড), রতন কুমার রায় (দোতারা), মো. ফায়জুর রহমান (বাঁশি)।
আজকের সময়সূচি
আজ অমর একুশে বইমেলার ৫ম দিন। মেলা শুরু হবে বেলা ৩টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। আলোচনা বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে হবে স্মরণ : সমরজিৎ রায় চৌধুরী শীর্ষক আলোচনা। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জাহিদ মুস্তাফা। আলোচনায় অংশ নেবেন মইনুদ্দীন খালেদ, মুস্তাফা জামান ও আনিসুজ্জামান সোহেল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন শিল্পী হাশেম খান।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খারের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তারা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গতিশীল হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। শ্রীলঙ্কার ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে যোগ দিতে দেশটিতে সফরে আছেন মোমেন ও হিনা। গতকাল শনিবার সেখানে তাদের মধ্যে সাইডলাইন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
রেডিও পাকিস্তান ও নিউজ নেটওয়ার্কের প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার পাকিস্তান-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে অর্থনীতি ও বাণিজ্যে পারস্পরিক উপকারী দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংযোগ জোরদার করার এবং পর্যটন ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। অনেক আন্তর্জাতিক ইস্যুতে বিশেষ করে মুসলিম উম্মাহ সংক্রান্ত বিষয়ে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে মতের মিল রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সহযোগিতা জোরদারের আশা : এদিকে গত শুক্রবার বিকেলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদুজানা পেরামুনা পার্টির দিনেশ গুনাবর্ধনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এ সময় তারা দুই দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীর মধ্যে চলমান সেক্টরাল সহযোগিতা আরও বাড়ানোর গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন। বিশেষ করে বাণিজ্য সহজীকরণ, ব্যবসা ও বিনিয়োগ, পর্যটন ও সংযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতার ওপর জোর দেন তারা।
গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এর আগে সেদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী সাবরির দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মর্যাদাপূর্ণ ‘লক্ষ্মণ কাদিরগামার স্মারক বক্তৃতা’ শিরোনামে ‘শেয়ারড প্রসপারটি : এ ভিশন ফর সাউথ এশিয়া’ প্রদান করেন। সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দক্ষিণ এশীয় সম্প্রদায়ের সম্মিলিত আকাক্সক্ষা এবং যৌথ সমৃদ্ধির জন্য দক্ষিণ এশিয়া সম্মিলিতভাবে যে লক্ষ্যগুলো অনুসরণ করতে পারে সে সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। শ্রীলঙ্কার ঐতিহ্যবাহী পারফরমিং আর্ট সমন্বিত ঐতিহাসিক ইন্ডিপেন্ডেন্স হলে সাংস্কৃতিক উৎসব ‘লঙ্কারলঙ্কা’তে অংশগ্রহণ করেন।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, শ্রীলঙ্কার ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে অংশগ্রহণের জন্য দেশটিতে সফর করছেন ড. মোমেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি সকালে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ সফরে তিনি প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী সাবরি, নেপালের সদ্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করা বিমলা রায় পাওডেলের সঙ্গে এবং মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খারের সঙ্গেও বৈঠক করেন। আশা করা হচ্ছে, সফর শেষে আজ ঢাকায় পৌঁছাবেন ড. মোমেন।
ইরানের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র পরিচালক জাফর পানাহি কারামুক্ত হয়েছেন। গত শুক্রবার তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। নিজের আটকাদেশের বিরুদ্ধে দুদিন ধরে কারাগারে অনশনে ছিলেন ৬২ বছর বয়সী জাফর পানাহি। এর পরই তাকে প্রথমে জামিন ও পরে মুক্তি দেওয়া হলো।
গত বছরের জুলাইয়ে ইরানে দুজন চলচ্চিত্র পরিচালকের গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র সমালোচনা করেন জাফর পানাহি। পরে তাদের মুক্তির বিষয়ে খোঁজখবর নিতে গিয়ে তিনি নিজেও গ্রেপ্তার হন। সাত মাস তাকে কারাগারে থাকতে হয়।
জাফর পানাহির মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে টুইট করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস ইন ইরান’ (সিএইচআরআই)।
পরে ইরানের সংস্কারবাদী পত্রিকা ‘শার্গে’ প্রকাশিত ছবিতে জাফর পানাহিকে কারাগারের বাইরে ভক্তদের আলিঙ্গন করতে ও গাড়ি চালাতে দেখা গেছে। এছাড়া তার স্ত্রী তাহেরেহ সাঈদিও ইন্সটাগ্রামে একই ছবি পোস্ট করেছেন।
ইরানি সিনেমা অঙ্গনের তারকা পরিচালক জাফর পানাহি বর্তমানে বিশ্ব চলচ্চিত্র অঙ্গনেরও পরিচিত নাম। তিনি ‘দ্য হোয়াইট বেলুন’, ‘অফসাইড’, ‘দ্য মিরর’, ‘দ্য সারকেল’সহ বিভিন্ন সিনেমা বানিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পান। ২০১৫ সালে ‘ট্যাক্সি’ সিনেমা বানিয়ে বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে সবচেয়ে বড় পুরস্কার ‘গোল্ডেন বিয়ার’ জয় করেন জাফর পানাহি। ২০১৮ সালে ‘থ্রি ফেইসেস’ সিনেমা বানিয়ে কান চলচ্চিত্র উৎসবে জেতেন শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যের পুরস্কার।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দেশে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৫ জন নিহত হয়েছেন। এতে ৮৯৯ জন আহত হন। একই সময় রেলপথে ৪৪টি দুর্ঘটনায় ৪৬ জন নিহত ও ৭৮ জন আহত হয়েছেন। আর নৌপথে ১৩টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত ও ১ জন আহত হন। নৌপথের এসব দুর্ঘটনায় ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৬৫০টি দুর্ঘটনায় ৬৪২ জন নিহত এবং ৯৭৮ জন আহত হয়েছেন। এই মাসে ২১৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২০৫ জন নিহত ও ১১৪ জন আহত হন। গতকাল শনিবার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনার সংবাদ পর্যবেক্ষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
এতে দেখা যায়, গত বছরের জানুয়ারি মাসের চেয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সড়কে দুর্ঘটনা ৫.৩ শতাংশ ও দুর্ঘটনায় আহত ১০.০৪ শতাংশ বাড়লেও প্রাণহানি ৪.৬ শতাংশ কমেছে।
এই সময়ে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়া সর্বমোট ৮১৬টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে, যার ১২.৫ শতাংশ বাস, ২৪.৭৫ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান ও লরি, ৫.০২ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ৫.৮৮ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ২৭.৩২ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৪.৫৮ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক এবং ৯.৯২ শতাংশ নসিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা ।
সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫১.৬০ শতাংশ পথচারীকে গাড়িচাপা দেওয়ার ঘটনা, ২২.২৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১২.৪৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১১.৯৭ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০.৬৭ শতাংশ যানবাহনের চাকায় ওড়না পেঁছিয়ে এবং ১.০১ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই মাসে মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ২৯.৫১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩৮.৬১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৪.৪৫ শতাংশ ফিডার রোডে হয়েছে। এ ছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫.২২ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.১৮ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে এবং ১.০১ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।
বিদায়ী জানুয়ারি মাসে, সড়ক দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি হয়েছে ১৭ জানুয়ারি। এই দিনে ৩৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত ও ৩১ জন আহত হন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২ জানুয়ারি। এই দিনে ১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ২১ জন আহত হন। সড়ক দুর্ঘটনায় এক দিনে সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছে ১১ জানুয়ারি। এই দিনে ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত ও ১৭ জন আহত হয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি আহত হয়েছে ৫ জানুয়ারি। এই দিনে ১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত ও ৭১ জন আহত হন।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে : বেপরোয়া গতি, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধ চলাচল, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা এবং চালকের অদক্ষতা।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সড়কে দিনের পর দিন দুর্ঘটনা ঘটছে। ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও ট্রাফিক আইন অমান্য করার জন্য অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটছে। তাছাড়া ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন রাস্তায় নামানোর ফলে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। আর এখনো চালকদের নিয়োগ ও কর্মঘণ্টা সুনির্দিষ্ট না থাকায় চালকদের মধ্যে বেশি গাড়ি চালানোর প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশব্যাপী নিরাপদ ও আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থার পরিবর্তে টুকটুকি-ইজিবাইক-ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশানির্ভর গণপরিবহন ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হওয়ার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বেপরোয়াভাবে বাড়ছে। তাই সরকারের উচিত এগুলো মনিটরিং করে দ্রুত সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো।’
সরকারি তিতুমীর কলেজের ইংরেজি বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জাহারা জেবীন তন্নী। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে পছন্দের লেখকের বই কিনতে অমর একুশে বইমেলায় এসেছিলেন তিনি। পড়তে পছন্দ করেন বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির ইতিহাস, ভ্রমণ এবং রোমান্টিক উপন্যাস।
দেশ রূপান্তরের সঙ্গে আলাপ হলে তিনি বলেন, ‘মেলায় সব সময় আম্মুর সাথেই আসি, তবে এবার বন্ধুদের সাথে এসেছি। এরা শুধু আমার বন্ধু নয়, এরা আমার সাংস্কৃতিক আড্ডারও সঙ্গীও।’
বইমেলা একটা আবেগের জায়গা জানিয়ে জাহারা আরও বলেন, ‘এখানে এলে এমনিতেই ভালো লাগে, সব সময় বইমেলাটা বেশ উপভোগ করি।’
পছন্দের লেখক উচ্চারণ করতেই তিনি বলে উঠলেন, ‘লেখক হিসেবে প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ স্যারের স্থান অন্য কাউকে দিতে পারব না। তবে একজন সংস্কৃতিকর্মী হিসেবে অন্যান্য লেখকের বইও পড়ি আমি, বিশেষ করে অ্যাডভেঞ্চার।’
সম্প্রতি কাগজের দাম বাড়ায় সাধ্যের মধ্যে বই কিনতে পারছেন নাÑ অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘কাগজের দাম বাড়ায় এবারে বইয়ের দামটা আমাদের নাগালে নেই। যেখানে অন্যবারের ৫টা বইয়ের টাকা দিয়ে এবারে ৩টা বই সংগ্রহ করতে হচ্ছে।’
এই পাঠক বইমেলার খাবারের মান নিয়ে বলেন, ‘মেলা ঘিরে যেসব খাবারের স্টল বসেছে, সেগুলোতে দামে যতটা স্পেশালিটি রয়েছে, তা খাবারের মানের দিক থেকে খুবই নিম্নমানের।’
তবে মেলায় আসা দর্শকদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে জাহারা তন্নী বলেন, ‘বইমেলায় শুধু ছবি তুলতে নয়, অন্তত দু-একটা বই সংগ্রহ করতেও আসুন।’
একটা ভালো বই বদলে দিতে পারে একটা জীবন। যদি সে বই নতুন চিন্তার জন্ম দেয়। কবি, কথাকার ও সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী লিখছেন দীর্ঘদিন ধরে। জীবনের প্রথম পাওয়া সাহিত্য পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার। পুরস্কার প্রাপ্তির অভিনন্দন জানিয়ে তার কাছে জিজ্ঞাসা ছিল, কাদের জন্য লেখেন? শাহনাজ মুন্নী বললেন, মানুষের জন্য লিখি তারপর লিখি সেই মানুষের জন্য যারা অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন,অক্ষরজ্ঞান থাকলেই তো আবার হয় না, বোধ থাকতে হয়, বোধ যাদের আছে, চিন্তা করতে পারে এবং পড়ার অভ্যাস আছে, তাদের জন্য লিখি। এ সবকিছুর পর এবং আগেও, লিখি নিজের জন্য।
শাহনাজ মুন্নী একাধারে সাংবাদিকতায়, সাহিত্যে এবং কবিতায় দ্যুতি ছড়াচ্ছেন। তারই স্বীকৃতি অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার। পুরস্কার পেয়ে কেমন লাগছে জানতে চাইলে বললেন, পুরস্কারের প্রত্যাশা নিয়ে যেহেতু লিখিনি, পেয়েও তেমন বিশেষ কিছু লাগছে না, তবে পুরস্কার উপলক্ষে মা এসেছেন, পরিবারের মানুষেরা এসেছেন, সে এক দারুণ প্রাপ্তি, ভালো লাগছে।
বই নিয়ে পাঠকের আগ্রহের বিষয়ে শাহনাজ মুন্নী বললেন, বইমেলা আমাদের একটি বড় উৎসবে পরিণত হয়েছে। মানুষ বই কিনছে। তবে বই পড়ার অভ্যাস কেড়ে নিয়েছে স্মার্ট ফোন। সেখান থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। বিশেষ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বইমুখী করা জরুরি। আমি তরুণ প্রজন্মের কথা মাথায় রেখেও লিখি।
প্রকাশকরা বলছেন ছুটির দিনে এত এত মানুষের সমাগম, সবাই একটি করে বই কিনলেও তো মেলার কোনো স্টলে বই থাকত না। শাহনাজ মুন্নী মনে করেন, সব পাঠকের মেলায় যে তিনি এসেছেন সেই স্মারক হিসেবেও অন্তত একটি বই কিনে বাড়ি ফেরা দরকার। শুধুমাত্র ঘোরাঘুরি নয়, মেলা হবে চিন্তা বিনিময়ের একটি জায়গা এমন আশাবাদ যত্নে পুষে রাখেন এই লেখক।
ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়েই চলছে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান। নেতৃত্ব পরিবর্তন হয়েছে, তারপরও যেন ভাগ্যটা ফেরানো যাচ্ছিল না। পরাশক্তির তকমাটা খসে যায় গেল এক যুগে। লিগ শিরোপা তাদের কাছে শুধুই মরীচিকা। সাদা-কালোদের কাছে টুর্নামেন্টের শিরোপাও দূর আকাশের তারায় রূপ নিয়েছিল। সেখান থেকে মোহামেডানকে বলতে গেলে একাই শিরোপার স্বাদ দিয়েছেন ‘ঘরের ছেলে’ সুলেমান দিয়াবাতে। মালির এই স্ট্রাইকার টানা পাঁচ মৌসুম ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন মাঝারি মানের মোহামেডানকে। তার জাদুতে গতকাল ফেডারেশন কাপের মহা-ফাইনালে আবাহনীকে হারিয়েছে সাদা-কালোরা। এই অর্জন এসেছে অনেক অপেক্ষার পর। তাই তো এই শিরোপাকে মোহামেডানের ঘুরে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন দিয়াবাতেও। বিশ্বাস করেন, এই শিরোপা বদলে দেবে মোহামেডানের চিন্তাধারাকে।
টাইব্রেকারে শিরোপা জয়ের পর ড্রেসিং রুমে সতীর্থদের হুল্লোড়ের মধ্যে ম্যাচসেরা, টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার নিয়ে এক কোনায় বসে দেশে পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন দিয়াবাতে। সেই ফাঁকেই সাংবাদিকদের কাছে জানালেন প্রতিক্রিয়া, ‘পেনাল্টি শুটআউটের আগ পর্যন্ত ম্যাচটা ভীষণ কঠিন ছিল আমাদের জন্য। আল্লাহ আমাদের সহায়তা করেছেন এই ট্রফিটি জিততে। তাই আমি অনেক খুশি। আমার ক্যারিয়ারে কোনো ফাইনালে প্রথমবারের মতো চার গোল করলাম। তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।’ দিয়াবাতে বলেন, ‘৯ বছর পর আমি একা নই, সব খেলোয়াড় মিলে মোহামেডানকে একটা শিরোপা এনে দিয়েছি। বিশ্বাস ছিল ম্যাচে ফিরতে পারলে আমরাই শিরোপা জিতব, সেটাই হয়েছে। আমি এই অর্জন মালিতে থাকা আমার পরিবার, বিশেষ করে আমার মাকে উৎসর্গ করছি।’ শিরোপাটা মোহামেডানের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ আলফাজ আহমেদের জন্যও বিশেষ অর্জন। ফুটবল ক্যারিয়ারে অসংখ্য আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ খেলেছেন এবং জিতেছেন। তবে এই জয়টাকে আলাদা করে রাখছেন তিনি, ‘আজকের খেলাটা অনেক বড় অর্জন। ব্যাকফুটে থেকে ফিরে আসা, ম্যাচ দেখে বোঝা যাচ্ছিল না কে জিতবে। দিয়াবাতে আসাধারণ ফুটবল খেলেছে। মুজাফ্ফারভের হাত ভেঙে দিয়েছিল, ওই অবস্থায়ও সে খেলা চালিয়ে গেছে। খেলোয়াড়দের কমিটম্যান্ট ছিল অসাধারণ। খেলোয়াড় হিসেবে আমি শিরোপা জিতেছি, এবার কোচ হিসেবে শীর্ষ পর্যায়ে প্রথম শিরোপা জিতলাম। তাই শিরোপাটাকেই আমি এগিয়ে রাখব।’ প্রথমার্ধে ২ গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও হাল ছাড়েননি আলফাজ। শিষ্যদের শিখিয়েছেন মাথা ঠান্ডা রেখে পাল্টা জবাব দেওয়ার মন্ত্র, ‘প্রথমার্ধের খেলা শেষে শিষ্যদের বলেছি, তোমরা মাথা ঠা-া রেখে খেলো। তারা সেটাই করেছে।’
চোটে পড়ে মাঠ ছাড়া গোলকিপার সুজন সতীর্থ বিপুকে টাইব্রেকারে দারুণ পারফরম্যান্সের জন্য প্রশংসায় ভাসিয়েছেন, ‘মাঠ ছাড়ার এক মিনিটের মধ্যে আবাহনী যখন গোল পরিশোধ করল, তখন ভীষণ খারাপ লাগছিল। মনে হচ্ছিল আমরা আর পারব না। তবে আমার ধারণা ভুল প্রমাণ করেছে বিপু। আমি তাই অনেক বেশি খুশি।’
বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশের প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম উম্মাহকে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে তাদের সন্তানদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার ক্ষেত্রে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) ক্যাম্পাসে ৩৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য আরও বেশি পরিমাণে বিনিয়োগ করতে হবে।’
মুসলমানদের যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়নে যথাযথভাবে এই সম্পদ ব্যবহার করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা এটা করতে পারব।’ তিনি আরও বলেন, ‘যখনই আমি ওআইসি সদস্য দেশে যাই, তাদের আমি এই অনুরোধই করি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘ইসলামের স্বর্ণযুগে বিশ^সভ্যতা, বিজ্ঞান, ইতিহাস, সাহিত্য, দর্শন, রসায়ন, গণিত, চিকিৎসা, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূগোলসহ জ্ঞানের আরও অনেক শাখায় মুসলিম স্কলারদের ব্যাপক অবদান রয়েছে, যা আমাদের মুসলিমদের ঐতিহ্যের গৌরবময় ইতিহাস গড়েছে। সেই যুগের মুসলিম স্কলাররা সংস্কৃতি, জ্ঞান অর্জন, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং সমসাময়িক সাহিত্যে বিশে^ আধিপত্য বিস্তার করেছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেই অবস্থান থেকে বর্তমানে মুসলিম উম্মাহর এই পিছিয়ে থাকার কারণগুলো আমাদের বিশ্লেষণ করা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির অভাব, জ্ঞান-বিজ্ঞানের অভাব এবং অন্য অনেক বিষয় মুসলিম উম্মাহর পতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি এই হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের মুসলিম উম্মাহকে মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি মুসলিম দেশগুলোকে, বিশেষ করে তাদের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও বিজ্ঞান এবং আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, আধুনিক যুগে মুসলিমরা মাত্র তিনটি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে এটাই এই আধুনিক যুগে গবেষণা, প্রযুক্তি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহর অবদানের প্রকৃত উদাহরণ। তিনি অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, ‘মুসলিম জাতির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে জোরালো প্রচেষ্টা প্রয়োজন, যাতে করে তারা এ ক্ষেত্রে আরও অবদান রাখতে পারেন।’
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব দ্বারা উপস্থাপিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া উচিত নয়; বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিকস, ইন্টারনেট অব থিংস, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ও অন্যান্য খাতে।
ওআইসির মহাসচিব ও ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) চ্যান্সেলর হিসেন ব্রাহিম তাহার সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন আইইউটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনিও বক্তব্য দেন।
সমাবর্তনে ২০২১ এবং ২০২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের স্নাতক, মাস্টার্স, পিএইচডি এবং ডিপ্লোমা ডিগ্রি দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অসামান্য ফলাফলের জন্য দুই ধরনের স্বর্ণপদক আইইউটি স্বর্ণপদক এবং ওআইসি স্বর্ণপদক দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আইইউটির ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তার অর্থায়নে আইইউটির নবনির্মিত মহিলা হলেরও উদ্বোধন করেন।।
ক্রেডিট কার্ড একটি লাইফস্টাইল পণ্য। বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যাংক এখন ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করছে। বাংলাদেশে ইস্যুকৃত মোট ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ২২ লাখ কিন্তু একক (ইউনিক) গ্রাহক সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম। ক্রেডিট কার্ড পুরোপুরি জামানতবিহীন পার্সোনাল ঋণ হলেও ঋণ পরিশোধের হার খুব সন্তোষজনক। গ্রাহক পর্যায়ে একটি ক্রেডিট কার্ড দিতে গেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী বেশ কিছু অত্যাবশ্যক কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। এটিকে ঋণ হিসেবে না দেখে লাইফস্টাইল পণ্য হিসেবে দেখে এর আবশ্যকীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা কিছুটা শিথিল করা হলে ক্রেডিট কার্ড ব্যাপ্তি অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। তখন নিম্ন আয়ের মানুষরাও ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন, যা ক্যাশলেস সোসাইটি গঠনের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করবে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা দ্রুতগতিতে ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনে রূপান্তরিত হচ্ছে। ক্যাশলেস বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেনে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে যেমন পিওএস, এটিএম, সিআরএম, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, কিউআর কোড ইত্যাদি। বিগত বছরগুলোতে ডিজিটাল লেনদেনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২১ সালের মার্চ মাসে ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং ই-কমার্সের মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার কোটি টাকা, ২০২২ সালে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩১ হাজার কোটি টাকা এবং ২০২৩ সালের মার্চ মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। তাই বলা যায়, প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুতগতিতে অত্যন্ত শক্তিশালীভাবে প্রথাগত আর্থিক লেনদেনের পাশাপাশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা।
তুলনামূলক কম ব্যবহারকারী
আমাদের দেশে তুলনামূলকভাবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক কম। দেশে ইস্যুকৃত ডেবিট কার্ডের সংখ্যা ৩ কোটি ১০ লাখ যেখানে ইস্যুকৃত ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা প্রায় ২২ লাখ। ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যার মধ্যে যে বড় ব্যবধান, এর প্রধান এবং অন্যতম কারণ হলো ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে কাগজপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা। এছাড়া রয়েছে ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে গ্রাহকদের প্রচলিত বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণা।
ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে হলে আগে কার্ড ব্যবহারের ইকোসিস্টেম প্রসারিত করতে হবে। কিউ-আরকোড এবং অ্যাপসভিত্তিক লেনদেন বৃদ্ধি পেলে পুরো দেশে ক্রেডিট কার্ড তথা সামগ্রিকভাবে কার্ডের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়বে।
ব্যবহারকারী কারা
ব্যাংকগুলো চাকরিজীবী এবং ব্যবসায়ী উভয় শ্রেণির গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করছে, তবে এক্ষেত্রে চাকরিজীবীদের বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ক্রেডিট কার্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ঋণের সহজলভ্যতা এবং সুবিধাজনক পরিশোধ ব্যবস্থা। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রমোশনাল অফার যেমন ইএমআই, ক্যাশব্যাক ডিসকাউন্টসহ বাই ওয়ান গেট ওয়ান, ইন্স্যুরেন্স, রিওয়ার্ড পয়েন্ট, মিট অ্যান্ড গ্রিট, লাউঞ্জ সুবিধা ইত্যাদি।
ঋণ শোধের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয়
ক্রেডিট কার্ড আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য পণ্য হয়ে উঠেছে। এটি নিতে হলে ঋণ পরিশোধের যোগ্যতার প্রমাণের সঙ্গে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণও দাখিল করতে হয়। দেশে এখন রিটার্ন জমা দেওয়ার হার বেড়েছে। সবাই প্রতি বছর তার আয়কর রিটার্ন জমা দেয়। কিন্তু অনেকে অসাবধানতাবশত আয়কর রিটার্ন জমা দেয় না। তাছাড়া অনেকের করযোগ্য আয় না থাকায় তারাও রিটার্ন জমা দেয় না। যা ক্রেডিট ইস্যু করার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও প্রভাব বিস্তার করছে বলে মনে করি।
জীবন সহজ করছে ক্রেডিট কার্ড
ক্রেডিট কার্ড আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। এটির ব্যবহারও অত্যন্ত সহজ। ক্রেডিট কার্ড বিলম্বিত বিল পরিশোধের ভিত্তিতে কাজ করে, যার অর্থ আপনি এখন আপনার প্রয়োজনে কার্ড ব্যবহার করে অর্থ ব্যয় করতে পারেন এবং পরে তা সুবিধামতো সময়ে পরিশোধ করতে পারেন। ব্যবহৃত অর্থ গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে ডেবিট হয় না। এভাবে গ্রাহক প্রতিবার তার প্রয়োজনে কার্ড ব্যবহার করতে পারেন, যা আমাদের জীবনযাত্রাকে অত্যন্ত সহজ ও সাবলীল করে তুলেছে। একজন গ্রাহক যদি নিয়মিত সঠিক সময়ে তার ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ করেন তাহলে কখনোই সেই গ্রাহক ঋণগ্রস্ত হবেন না। ব্যাংকগুলোর শক্তিশালী মনিটরিং ও রিকভারি ব্যবস্থা থাকার কারণে এই সেক্টরের খেলাপি ঋণের হার তুলনামূলক অনেক কম।
নিরাপত্তায় প্রয়োজন সচেতনতা
ডিজিটাল পেমেন্টগুলো সাধারণত বিভিন্ন ব্যবহারিক কারণে অফলাইন পেমেন্টের চেয়ে বেশি নিরাপদ। যেমন নগদ অর্থ বহনের ঝুঁকি না থাকা, চুরি, জালিয়াতির আশঙ্কা কম থাকা। ডিজিটাল লেনদেনে গ্রাহকের যে ধরনের সচেতনতা প্রয়োজন
কার্ড নম্বর, কার্ডের পেছনের ৩ সংখ্যার কার্ড ভেরিফিকেশন ভ্যালু (CVV2), ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (OTP), মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ এবং নিরাপত্তা পিন কারও সঙ্গে বিনিময় না করা।
সন্দেহজনক কোনো ওয়েবসাইটে ই-কমার্স লেনদেন থেকে বিরত থাকা ও কার্ডের তথ্য সংরক্ষণ থেকে বিরত থাকা।
সন্দেহজনক কোনো ই-মেইল অথবা এসএমএসে থাকা লিঙ্কে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকা।
সাইবার সংক্রান্ত ঝুঁকি বিবেচনায় ডিজিটাল ডিভাইসের সব সফটওয়্যার হালনাগাদ রাখা এবং নিরাপত্তা সফটওয়্যার ব্যবহার করা।
যেকোনো সন্দেহজনক লেনদেন অতিসত্বর ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ব্রাঞ্চ অথবা ব্যাংকের কল সেন্টারে অবহিত করা।
কার্ড হারানোর পরপরই ব্যাংকের কল সেন্টারে অবহিত করা।
সাধারণত, অধিকাংশ ব্যাংকই নির্দিষ্ট লেনদেনের পরিমাণের ভিত্তিতে ক্রেডিট কার্ডের বার্ষিক ফি সম্পূর্ণ বা আংশিক মওকুফ করে দিয়ে থাকে, যার ফলে এটি গ্রাহকের ওপর বাড়তি কোনো চাপ সৃষ্টি করে না। ক্রেডিট কার্ড একটি লাইফস্টাইল পণ্য, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ক্রেডিট কার্ডের সুদের হারের তুলনায় বাংলাদেশে তা অপেক্ষাকৃত অনেক কম। তবে ব্যাংকগুলো সেটেলমেন্টের দিন থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ দিন পর্যন্ত বিনাসুদে বিল পরিশোধের সুযোগ দিয়ে থাকে। তাই যদি কোনো গ্রাহক বুঝে সচেতনভাবে নিয়মিত বিল পরিশোধ করে তবে এটা কিন্তু গ্রাহকদের জন্য একটি চমৎকার সুযোগ।
গ্রাহকদের বিভিন্ন চাহিদার কথা মাথায় রেখে ব্যাংকগুলো বিভিন্ন উৎসবে নানা ধরনের অফার দিয়ে থাকে যার ফলে গ্রাহক বেশি বেশি লেনদেন করতে উদ্বুদ্ধ হয় যা ব্যবসায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এ যেন ২০২২ বিশ্বকাপের ফাইনাল! সুলেমান দিয়াবাতে যেন কিলিয়েন এমবাপ্পে। না, ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ফরাসি যুবরাজ এমবাপ্পের মতো ট্র্যাজিক হিরো হতে হয়নি দিয়াবাতেকে। হয়েছেন বিজয়ী দলের গর্বিত সেনাপতি। দুই ঐতিহ্যবাহী দল মোহামেডান ও আবাহনীর মধ্যে ফেডারেশন কাপের ফাইনালটা হয়ে উঠেছিল এক বাঁক বদলের লড়াই। যতবার আবাহনী এগিয়ে গেছে ততবারই দিয়াবাতে জ্বালিয়েছেন মোহামেডানের আশার প্রদীপ। নির্ধারিত ৯০ মিনিট ৩-৩। অতিরিক্ত সময়ে ৪-৪। আবাহনীর চার গোল চার জনের; কিন্তু মোহামেডানের চারটাই দিয়াবাতের। এরপর টাইব্রেকারের ভাগ্য পরীক্ষার শুরুটাও মালির ফরোয়ার্ডের লক্ষ্যভেদে। শেষ পর্যন্ত ভাগ্য পরীক্ষাটা ৪-২ গোলে জিতে ৯ বছর পর কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপার স্বাদ পেল মোহামেডান।
ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতে এগিয়ে ছিল আবাহনীই। তাদের সামনে প্রথমার্ধে বড্ড অগোছালো মনে হয়েছে আলফাজ শিষ্যদের। মারিও লেমস তুণের সব সেরা তীরদের জড়ো করে একাদশ সাজিয়েছিলেন। যার নেতৃত্ব দেন হাফ-ফিট রাফায়েল আগুস্তো। আক্রমণভাগে তার দুপাশে ছিলেন দানিয়েল কলিনদ্রেস ও তরুণ ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। আর ঠিক ওপরে এমেকা ওগবাহ। আকাশির আক্রমণ ঠেকাতে তখন নাজেহাল সাদা-কালোরা। উপর্যুপরি আক্রমণ থেকে আবাহনীকে ১৬ মিনিটে এগিয়ে নেন ফাহিম। কলিনদ্রেসের কাছ থেকে বল পেয়ে এমেকা ওগবাহ ডিফেন্সচেড়া পাস বাড়ান। চলন্ত বলে ফাহিমের বাঁ পায়ের শট মোহামেডান কিপার সুজন হোসেনের গ্লাভস ছুঁয়ে জালে জড়ায়। মোহামেডান অসহায়ত্বের সুযোগ ৪৩ মিনিটে কাজে লাগান কোস্টারিকার বিশ্বকাপার কলিনদ্রেস। নিজেদের অর্ধ থেকে হৃদয়ের বাড়ানো বল আয়ত্তে নিয়ে মার্কার হাসান মুরাদকে কোনো সুযোগ না দিয়ে ডান পায়ের জোরালো শটে বল দূরের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ান এই তারকা।
বিরতি থেকে মাঠে ফিরে অন্যরকম এক মোহামেডান। আলফাজ তিনটি পরিবর্তন করে মাঠে পাঠান জাফর ইকবাল, শাহরিয়ার ইমন ও আলমগীর রানাকে। তাতেই গতি পায় সাদা-কালোর আক্রমণ। ৫৬ মিনিটে ২-১ করেন দিয়াবাতে। কামরুলের ক্রস হেড করে ক্লিয়ার করতে গিয়ে ডিফেন্ডার আলমগীর মোল্লা বল দিয়ে দেন দিয়াবাতের কাছে; দুর্দান্ত সাইডভলিতে বল জালে জড়ায় দিয়াবাতে। চার মিনিট পর সমতাসূচক গোল করেন তিনি। উজবেক মিডফিল্ডার মোজাফফরভের জোরালো ভলি আবাহনী কিপার রুখলেও বাঁদিকে জাফর পেয়ে দ্রুত ক্রস ফেলেন গোলমুখে। মার্কারদের ছাপিয়ে দারুণ হেডে সোহেলকে পরাস্ত করে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন দিয়াবাতে। ৬৫ মিনিটে এমেকা ওগবাহর হেড পোস্টে লেগে ফিরলে হতাশ হতে হয় আবাহনীকে। পরের মিনিটে ডান দিক থেকে ফাহিমের শট সুজন কোনোমতে সেভ করলেও আলতো ট্যাপে গোল করে আবাহনীর লিড পুনরুদ্ধার করেন এমেকা (৩-২)। তবে ৮৩ মিনিটে কামরুলের কর্নারে দিয়াবাতে হ্যাটট্রিক করে মোহামেডানকে আবার ম্যাচে ফেরান।
অতিরিক্ত সময়ের শুরুতে দুটি অসাধারণ সেভ করেন মোহামেডান কিপার সুজন। ৯৬ মিনিটে রহমতের কর্নার ঘুরে ফিরে রাফায়েলের কাছে এলে তাতে দারুণ শট নেন। তবে সুজন ঝাঁপিয়ে তা রুখে দেন। পরের মিনিটে কলিনদ্রেসের কর্নারে আসাদুজ্জামান বাবলুর হেড ফিস্ট করে বিপদমুক্ত করে মোহামেডানকে ম্যাচে রাখেন সুজন। ১০৬ মিনিটে মোহামেডানকে পেনাল্টি উপহার দেন সোহেল। শাহরিয়ার ইমনের ঠেলে দেওয়া বল ধরতে ছুটছিলেন দিয়াবাতে। তার এক টাচে বলটা চলে যাচ্ছিল গোললাইনের বাইরে। তবে সোহেলের পা ধরে টান দিলে পড়ে যান দিয়াবাতে। পেনাল্টি থেকে সোজাসুজি শটে প্রথমবারের মতো মোহামেডানকে লিড এনে দেন দিয়াবাতে। এই ম্যাচটা সেখানেই শেষ হয়ে যেতে পারত। তবে বিধাতা যে ফাইনালের চিত্রনাট্য লিখেছেন অন্যভাবে। ম্যাচের ১১৬ মিনিটে মোহামেডানের তেকাঠীর আস্থা সুজনকে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। মাঠে এসে অপ্রস্তুত আহসান হাবিব বিপুকে পরের মিনিটেই গোল হজম করতে হয়। রয়্যালের কাছ থেকে আড়াআড়ি পাস পেয়ে বক্সের অনেক বাইরে থেকে ডানপায়ের জোরালো শটে গোল করেন এই ডিফেন্ডার। তাতে ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টিতে।
ভাগ্য পরীক্ষায় অবশ্য বিপু মোহামেডানের বিজয়ের নায়ক হয়ে ওঠেন বিপু। শুরুতেই ঠেকিয়ে দেন রাফায়েলের শট। অন্যদিকে দিয়াবাতে, আলমগীর কবির রানা, রজার দুরাতে টানা ৩ গোল করেন। আবাহনীর হয়ে এমেকা ও ইউসেফ গোল করলে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-২। এরপর মোহামেডানের শাহরিয়ার ইমনের শট সোহেল ঠেকিয়ে দিলে আবাহনীর ফেরার আশা জাগে। তবে বিপু কলিনদ্রেসের শট রুখে দিলে উত্তাল হয়ে ওঠে মোহামেডান গ্যালারি। আর কামরুল হাসান ঠিকঠাক লক্ষ্যভেদ করে অনেক চাওয়ার শিরোপা নিশ্চিত করেন মোহামেডানের।
অভিনেত্রী দর্শনা বণিক আবারও শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করবেন। যদিও কলকাতার বেশ কিছু ছবিতে পর পর কাজ করেছেন দর্শনা। তবুও শাকিব খানের সঙ্গে দর্শনার নতুন কাজকে ঘিরে শুরু হয়েছিল নানা রকমের জল্পনা। ওপার বাংলার একের পর এক সিনেমায় সই করে চলেছেন দর্শনা। কিছু দিন আগে অভিনেতা আজাদ আদরের সঙ্গে একটি ছবিতে স্বাক্ষর করেছেন নায়িকা। এরপর আবার শাকিবের সঙ্গে জুটি বাঁধতে চলেছেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি ‘দিদি নম্বর ১’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই অনুষ্ঠানেই বাংলাদেশের কাজের পরিবেশ, শাকিবের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন দর্শনা। ইদানীং কি টালিগঞ্জের থেকে ওপার বাংলায় বেশি গুরুত্ব পাচ্ছেন তিনি? দর্শনার স্পষ্ট জবাব, ‘এখানেও অনেক কাজ করছি। টালিগঞ্জের কাজের জন্যই তো বাইরে বিভিন্ন কাজের সুযোগ আসছে। দুই বাংলাই আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।’
বাংলাদেশে শাকিবের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে অনেক অভিনেতারই। সেখানে পদ্মা পাড়ের প্রথম ছবিতেই নায়ক হিসেবে পেয়েছেন তাকে। শাকিব প্রসঙ্গে দর্শনা বলেন, ‘খুবই ভালো অভিজ্ঞতা। শাকিব ওখানে এক বিশাল নাম। তবে সেটে তেমনটা কখনো মনে হয়নি।’ তবে নতুন কাজের প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে নারাজ অভিনেত্রী। এই মুহূর্তে কলকাতাতেই রয়েছেন। খুব শিগগিরই বাংলাদেশে আসছেন এমনটাই আভাস দিলেন এই নায়িকা।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।