
কোনো কাজই হয়নি। কিন্তু সময় গুনে গুনে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ। মেয়াদ শেষে এবার প্রকল্পটির সংশোধনীর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। কাজ শেষ করার জন্য ব্যয় কিছুটা কমিয়ে সময় আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। দুই পৌরসভার ব্যয় এক পৌরসভাতেই করতে চায় সংস্থাটি। তাই প্রকল্পের ব্যয় কিছুটা কমিয়ে অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
প্রকল্পটি অনুমোদন হয়েছিল সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও কুলাউড়া পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য। ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৪৬ কোটি টাকা। কিন্তু ২০২০ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও জমি অধিগ্রহণ করতে না পারার অজুহাতে কোনো কাজই করেনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। তবে এ সংশোধনীতে গোলাপগঞ্জ পৌরসভাকে বাদ দিলেও নামমাত্র ২৭ লাখ টাকা ব্যয় কমিয়েছে সংস্থাটি। বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুই পৌরসভার জন্য নেওয়া প্রকল্পের ব্যয় শুধু এক পৌরসভাতেই খরচের আবদার করা হয়েছে এ সংশোধনীতে।
জমি অধিগ্রহণের জটিলতা ছিল শুধু গোলাপগঞ্জ পৌরসভায়। কুলাউড়া পৌরসভায় এ জটিলতা না থাকলেও কোনো কাজই করেননি প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এর কোনো স্পষ্ট জবাবও দিতে পারেননি প্রকল্প পরিচালক। তবে পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, প্রকল্পটি নিয়ে তাদেরও অসন্তোষ রয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান দেশ রূপান্তরকে জানান, আমি দুই পৌরসভার প্রাক্কলিত ব্যয় এক পৌরসভায় অনুমোদনের বিপক্ষে। তবে সব পক্ষের সম্মানের ভিত্তিতে এক পৌরসভা অর্থাৎ কুলাউড়ার জন্য ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ের সিদ্ধান্তে এসেছে কমিশন।
জমি জটিলতা নিয়ে এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, এর আগে ২০০ পৌরসভার উন্নয়নের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছিল। এ দুই পৌরসভা তারই অংশ। কিন্তু এ পৌরসভায় জায়গাটা কার তা নিয়ে সমস্যা ছিল। সেখানে নতুন মেয়র আসায় উনি জমি দিতে রাজি হননি। তিনি বলেন, এ প্রকল্পের সমস্যা হলো তারা প্রকল্পে পানির সংকট মেটানোর জন্য পৌরসভা থেকে ৬-৭ কিলোমিটার দূরের নদী থেকে পানি আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু সেখানে পানি থাকে বড়জোর ৬ থেকে ৭ মাস।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুই পৌরসভার উন্নয়নে মোট ৩০টির মতো খাত যুক্ত থাকলেও কাজ হয়েছে মাত্র তিনটি খাতের। তার মধ্যে নিজেদের পণ্য ও সেবার ব্যবহার শীর্ষক খাতে ৪৬ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের স্থানে প্রায় ১৩ লাখ টাকা ব্যয় করেছে তারা। আর দ্বিতীয় কাজটি হলো চারটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ। এ কাজটি শেষ করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল। এতে প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে ৬ লাখ টাকা কমে ৬২ লাখ টাকায় কাজ শেষ করা হয়েছে। তৃতীয়ত, এক কিলোমিটারের সেকেন্ডারি আরসিসি ড্রেন নির্মাণ করেছে সংস্থাটি, ব্যয় হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। যদিও প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ কোটি টাকা।
মাত্র তিন খাতে ২ কোটি ২৮ লাখ টাকার কাজ শেষ করেই মেয়াদ শেষ করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। সংশোধিত প্রকল্পটিতে অতিরিক্ত ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। যেমন, যেখানে তারা ১ কিলোমিটারের আরসিসি ড্রেন বানাতে খরচ হয়েছে দেড় কোটি টাকা, সংশোধনী প্রস্তাবে নতুন করে ৫ কিলোমিটারের একই কাজের জন্য ১০ কোটির প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রথম ডিপিপিতে না থাকলেও সংশোধনীতে কেন যুক্ত করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কমিশন।
প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব বিশ্লেষণে দেখা যায়, এতে মূল প্রকল্প প্রস্তাবে ১ হাজার ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগসহ খরচ ধরা হয়েছিল দেড় কোটি টাকা। কিন্তু সংশোধনীতে ২ হাজার ঘরের বিদ্যুৎ সংযোগসহ ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ঘরের সংখ্যা এক হাজার বাড়লেও টাকার অঙ্ক কমেছে ২২ লাখ টাকা!
শুধু তাই নয়, মূল ডিপিপিতে নলকূপ, উৎপাদক নলকূপ ও সাব-মার্সিবল পাম্পসহ গভীর নলকূপ, ওভারহেড ট্যাংক স্থাপনের বিষয়টি উল্লেখ না থাকলেও দ্বিতীয় সংশোধনীতে তা উল্লেখ করায় প্রশ্ন তুলেছে কমিশন।
জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের সিলেট সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. শেখ সাদী রহমতুল্লাহ দেশ রূপান্তরকে জানান, মন্ত্রণালয়ের পিএসসি বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেছিলেন এক মাসের মধ্যে জমি অধিগ্রহণ করতে পারবেন কিনা, কিন্তু এক মাসের মধ্যে ওই জমি পৌরসভার নামে নিবন্ধন করে দিতে পারেননি। পরে এ পৌরসভাকে বাদ দিয়েছে পিএসসি। দুই পৌরসভার ব্যয় এক পৌরসভায় প্রস্তাব করার যৌক্তিকতা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা আবেদন করেছি। এখন সেটি পরিকল্পনা কমিশনের ব্যাপার। তারা সেটি নাও দিতে পারে। কয়েকটি খাতের ব্যয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটির কিছুই হয়নি। এটার কাজ নতুন করে আরম্ভ হচ্ছে। কাজ আরম্ভ হলে পরে এটি নিয়ে তথ্য জানাতে পারব।
নারী নির্যাতন মামলার আসামিকে না ছাড়ায় এবার থানায় ঢুকে নারী ও শিশু হেল্প ডেস্কের সামনে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে মারধর করেছেন কোটালীপাড়া পৌর মেয়রের আপন ভাগ্নে। মারধর করার সময় সেখানে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। মারধর করে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ওই অভিযুক্ত ও তার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত রবিবার দুপুরে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থানায়।
এ ঘটনায় আহত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ জিয়াউল হক বাদী হয়ে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম সুজন (২৫) ও তার সহযোগী পৌর মেয়রের আরেক নিকটাত্মীয় রাসেল শেখকে (২৫) আসামি করে একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে দুজনকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে কোটালীপাড়া থানার ওসি জিল্লুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হওয়া একটি মামলার আসামি তানজিলুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয়। নারী ও শিশু হেল্প ডেস্কের সামনে বসিয়ে রেখে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন এসআই জিয়াউল হক। এ সময় অভিযুক্ত সুজন ও রাসেল হেল্প ডেস্কের সামনে এসে ওই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে আসামিকে ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু এসআই জিয়াউল হক তাদের তদবির নাকচ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা জিয়াউল হককে মারধর করে। তাদের মারধরে পুলিশ কর্মকর্তা সামান্য আহত হয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিক হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর থানার ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেছে দেখা যায়, তারা শুরু থেকেই পুলিশ কর্মকর্তার ওপর চড়াও হয়েছিলেন। একপর্যায়ে তারা পরিদর্শকের (তদন্ত) কক্ষের সামনে এসআইকে জিয়াউল হককে মারধর করেন।
এ প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘হামলাকারী সুজন কোটালীপাড়া পৌর মেয়র কামালউদ্দিন শেখের আপন ভাগ্নে। আমরা মেয়রকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। মেয়র পুলিশকে জানিয়েছেন যে, হামলাকারী যেই হোক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
থানায় করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার আসামি তানজিলুর নারী ও শিশু হেল্প ডেস্কে বসেছিলেন। এ সময় হেল্প ডেস্কের পাশের জানালা দিয়ে আসামির সঙ্গে সুজন ও রাসেল দীর্ঘ সময় কথা বলেন। দুপুর আড়াইটার দিকে তারা থানার ভেতর প্রবেশ করে হেল্প ডেস্কের সামনে আসেন। একপর্যায়ে তারা এসআই জিয়াউল হককে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এসআই জিয়াউলের শার্ট ছিঁড়ে ফেলেন। পরে তাকে উদ্ধার করে কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পুলিশ।
জানা গেছে, এ ঘটনার পর বিষয়টি পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পুলিশের ঊর্ধ্বতনরা। পরে আসামিপক্ষের উপস্থিতিতে থানার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হয়। সেখানে দেখা যায়, প্রথম পর্যায়ে সুজন জানালা দিয়ে কথা বলছিলেন ওই আসামির সঙ্গে। দীর্ঘসময় ধরে আলাপের কারণে তাকে চলে যেতে বলা হয়। এরপর তিনি পৌর মেয়রের ভাগ্নে পরিচয় দিয়ে থানায় প্রবেশ করেন এবং আসামি তানজিলকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেন। এ সময় এসআই জিয়াউল হক অপারগতা জানালে তিন দফা তাকে বেধড়ক মারধর করেন সুজন ও রাসেল। ফুটেজে দেখার পর সুজনের পরিবারের সদস্যরা থানা থেকে বেরিয়ে যান এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে সায় দিয়ে যান। এরপর গত সোমবার এসআই জিয়াউল হক বাদী হয়ে মামলা করেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপরাধ) মাশরুকুর রমান খালেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘অপরাধীর কোনো দল নেই। সে যেই হোক, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। এ ক্ষেত্রেও সেটিই হয়েছে।’
জানতে চাইলে সুজনের পরিবারের সদস্যরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেশ রূপান্তরকে জানান, কয়েক বছর আগে একটি দুর্ঘটনার পর থেকে সুজন অনেকটাই মানসিক ভারসাম্যহীন। মাঝেমধ্যেই সে উল্টোপাল্টা কাজ করে বসে।
দেশে গত ১০ বছরে শিশু ক্যানসার রোগী বেড়েছে ৫ গুণ। প্রতি বছর নতুন করে ক্যানসার শনাক্ত হচ্ছে ১০ হাজার শিশুর। কিন্তু সে অনুপাতে সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে চিকিৎসাব্যবস্থা বাড়েনি। সরকারি পর্যায়ে সারা দেশে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ৪৭ জন। আবার যেটুকু চিকিৎসাব্যবস্থা রয়েছে, তাও ঢাকাকেন্দ্রিক। ঢাকার বাইরে শিশু ক্যানসারের চিকিৎসা নেই বললেই চলে।
চিকিৎসাব্যবস্থার এসব প্রতুলতার কারণে ও মানুষের সচেতনতার অভাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে শিশুদের ক্যানসার থেকে সেরে ওঠার হারও অনেক কম। উন্নত দেশে যেখানে ৯০ শতাংশের বেশি শিশু ব্লাড ক্যানসার রোগী ভালো হয়, সেখানে বাংলাদেশে এর পরিমাণ মাত্র ৪০-৫০ শতাংশ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালসহ ক্যানসার চিকিৎসা হয় এমন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে দেশের শিশু ক্যানসার রোগ ও চিকিৎসাব্যবস্থার এই চিত্র পাওয়া গেছে।
এমন অবস্থায় দেশে সরকারি পর্যায়ে শিশু ক্যানসার রোগের চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের শিশু রক্তরোগ ও ক্যানসার বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহ মোহাম্মদ রাশেদ জাহাঙ্গীর কবীর। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, দেশে শিশু ক্যানসার রোগের চিকিৎসা আছে। কিন্তু রোগীর তুলনায় চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা কম। বিছানা কম, ডাক্তার কম। অথচ রোগী বাড়ছে। তাই সরকারি পর্যায়ে চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। বড় বড় মেডিকেল কলেজগুলোতে পূর্ণাঙ্গ বিভাগ চালু করতে হবে। ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
আজ বিশ্ব শিশু ক্যানসার দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।
চিকিৎসা মূলত ঢাকাকেন্দ্রিক: চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকার পাঁচটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু ক্যানসার রোগের বিভাগ আছে ও চিকিৎসা হচ্ছে। এসব হাসপাতালে শয্যা আছে ১৪৬টি। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩১টি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০টি, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে (মিটফোর্ড হাসপাতাল) ১৫টি, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ৩০টি ও জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ৪০টি বেড রয়েছে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নতুন বিভাগ খোলা হলেও এখনো কোনো চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে, ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন অধ্যাপক, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন বিশেষজ্ঞ আছেন। কিন্তু তিনি মেডিকেল অফিসার হিসেবে আছেন। বাকি বিভাগীয় হাসপাতালগুলোর শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগ আছে শুধু কাগজে-কলমে। এর মধ্যে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন শিশু ক্যানসার চিকিৎসক আছেন। তবে তিনি শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগে নয়, অন্য বিভাগে কাজ করছেন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগে সংকটাপন্ন রোগী রাখা হয় না। রংপুর ও সিলেটে বিভাগীয় হাসপাতালের শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগে কোনো চিকিৎসকই নেই।
এ ব্যাপারে জাতীয় ক্যানসার হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. শাহ মোহাম্মদ রাশেদ জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, এখানে বাচ্চাদের জন্য ৪০টি বিছানা আছে। সারা দেশের রোগী বিবেচনায় এটা খুবই কম। শিশুদের ক্যানসারের চিকিৎসায় মূলত কেমোথেরাপি নিতে হয়। সরকারি হাসপাতালে ৯০ শতাংশ ওষুধ সরবরাহ আছে। কেমোথেরাপির ব্যবস্থা আছে। তবে এই ওষুধ খুবই ব্যয়বহুল। তাই বেসরকারি পর্যায়ে চিকিৎসা কঠিন। সে জন্য আমাদের হাসপাতালে চাপ বেশি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এটিএম আতিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ক্যানসার কোনো সাধারণ রোগ নয়। সারা দেশে এখন সরকারি পর্যায়ে ৪৭ ক্যানসার বিশেষজ্ঞ আছেন। ১৯৯৩ সালে ছিল একজন। প্রতি বছর বিএসএমএমইউ থেকে চারজন করে বিশেষজ্ঞ তৈরি হচ্ছেন। শিশু ক্যানসারের চিকিৎসা সরকারি পর্যায়ে খরচ কম। বর্তমানে সরকার অনেক ওষুধ বিনামূল্যে দিচ্ছে। অনেক ওষুধ দেশেই তৈরি হচ্ছে। মানুষের সচেতনতা ও মনের ইচ্ছা যাদের আছে, তারা ভালো হয়ে যাচ্ছে। বিএসএমএমইউতে শিশু ক্যানসারের ননপেয়িং বেড ৩১টি। এ ছাড়া তারা সাধারণ বেডেও ভর্তি হতে পারে। রোগীর যে চাপ ১০০ বেড হলে ভালো হয়।
রোগী বেড়েছে ৫ গুণ: অধ্যাপক ডা. শাহ মোহাম্মদ রাশেদ জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, প্রতি বছর সারা দেশে ৮-১০ হাজার নতুন রোগী পাওয়া যায়। আমাদের হাসপাতালে গত বছরে ২০২২ সালে নতুন রোগী দেখেছি ৯শ’র কিছু বেশি। নতুন ও পুরাতন রোগী মিলিয়ে চিকিৎসা দিয়েছি সাড়ে ১২ হাজার রোগী। নতুন রোগী কোনো বছরে গড়ে ১ হাজার, কোনো বছর ১১শ’, কোনো বছর ১২শ’এরকমই আসছে। সে হিসাবে বাংলাদেশে শিশু ক্যানসার রোগী বাড়ছে। ২০০৭ সালে দুই-তিন দিন পর একটা নতুন রোগী আসত। আর এখন প্রতিদিনই ৩-৪টি নতুন রোগী আসে। গড়ে ৫টা রোগী পাই। গত ১০ বছরে সে হিসাবে ৫ গুণ রোগী বেড়েছে। গত ৫ বছরে দ্বিগুণ বা তিনগুণ হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে অধ্যাপক ডা. এটিএম আতিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিশ্বে প্রতি বছর ৪ লাখ শিশু নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের দেশে এই সংখ্যা ৬-৮ হাজার। বিএসএমএমইউতে প্রতি মাসে প্রায় ১০০ নতুন রোগী ভর্তি হয়। এই হাসপাতালে ১৯৯৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়ে ১০ হাজার শিশু বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার থেকে সম্পূর্ণ ভালো হয়ে গেছে।
কেন শিশুরা ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে: অধ্যাপক ডা. শাহ মোহাম্মদ রাশেদ জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, শিশুদের ক্যানসারের বেশিরভাগ কারণই জেনেটিক বা বংশগত ত্রুটি। যখন মায়ের পেটে একটা ভ্রুণ তৈরি হয়, তখন ভ্রুণ তৈরি হওয়ার সময়ই কোনো একটা সমস্যা হয়। সেই সমস্যা থেকে যায় এবং সেখান থেকে ওই শিশুর ক্যানসার উৎপত্তি হয়। ৯৫ শতাংশ ক্যানসারই হয় জেনেটিক কারণ থেকে। এটা জানা যায় না। কিছু কারণ জিন পরীক্ষা করে বের করা হয়েছে। সেগুলো চিকিৎসার আওতায় থাকে।
অবশ্য শিশু ক্যানসার বাড়ার কারণ হিসেবে বিভিন্ন ধরনের দূষণকে দায়ী করেছেন অধ্যাপক ডা. এটিএম আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশেও শিশু ক্যানসার রোগী বাড়ছে। শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ, মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার, অপ্রয়োজনীয় এক্স-রে ও আল্ট্রাসনোগ্রাফি, ইলেকট্রনিকসামগ্রীর ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে। সে কারণে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে। এসব দূষণ কমানো না গেলে বাড়তেই থাকবে। তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে বাংলাদেশে ৭০-৮০ শতাংশ রোগী ভালো হয়ে যায়। কিন্তু যারা দেরি করে আসে, তাদের রোগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
লক্ষণ ও উপসর্গ: এ ব্যাপারে অধ্যাপক ডা. শাহ মোহাম্মদ রাশেদ জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, শিশুদের ক্যানসার আগে থেকেই কোনোভাবে বোঝা যায় না। বড়দের ক্যানসারের মতো না। ছোটবেলায় শিশুর চোখ বিড়ালের চোখের মতো জ্বললে, সেখান থেকে চোখের ক্যানসার হতে পারে। অবহেলা করলে সেই ক্যানসার ব্রেনে ছড়িয়ে যায়। তখনই যদি চোখের চিকিৎসকের কাছে যায়, চিকিৎসক বুঝে যাবে এটা চোখের ক্যানসার। তখন তাকে চোখের অপারেশন করে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেবে কেমোথেরাপি দেওয়ার জন্য। পেটের মধ্যে কোনো চাকা দেখা দিলে ও ব্যথা না থাকলেও বুঝতে হবে কিডনি বড় হয়ে গেছে। সেখান থেকে কিডনির ক্যানসার হতে পারে। অথবা শরীরের যেকোনো জায়গায় টিউমারের মতো দেখা গেলে, কোনো আঘাত পায়নি অথচ একটা জায়গায় ফুলে গেছে, এটাও একটা ক্যানসারের লক্ষণ। দাঁত ব্রাশ করতে গিয়ে দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ছে। অথবা গায়ের চামড়া মধ্যে মশার কামড়ের মতো লাল লাল দাগ উঠেছে, অথবা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাচ্ছে, অথবা অনেক দিন জ্বর, কোনো ওষুধ খেয়েই জ্বর কমছে না, বাচ্চার ওজন কমে যাচ্ছে, বাচ্চার গায়ের রং ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে, এই ধরনের উপসর্গ ক্যানসারের লক্ষণ। আবার ঘাড়ের দু’পাশের গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া ক্যানসারের লক্ষণ। এরকম হলে অবশ্যই পরীক্ষা করতে হবে।
যেহেতু শিশু ক্যানসারের চিকিৎসক নেই, তাই উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতালে যেতে হবে। সেখানে শিশুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আছেন। তারাও এসব উপসর্গের প্রাথমিকভাবে ধরতে পারেন। তখন তারা আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেবেন।
দিনাজপুর শহরের ঈদগাহ বস্তির ৬৬ বছর বয়সী আফরোজা সরকারের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল পবিত্র হজব্রত পালন করার। আগামী ২২ ফেব্র“য়ারি হজ পালনের জন্য টাকা জমা করার কথা রয়েছে। কিন্তু তার পাসপোর্টটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় নবায়ন করার প্রয়োজন হয়। সেই মোতাবেক তিনি পাসপোর্ট নবায়ন করার জন্য হাজির হন দিনাজপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে। কিন্তু সেখানে গিয়ে আকাশ থেকে পড়ার মতো অবস্থা হলো তার। কারণ তিনি বর্তমানে সৌদি আরবের জেদ্দায় অবস্থান করছেন। ইতিপূর্বে তার পাসপোর্ট নবায়নও হয়ে গিয়েছে। তার স্বাক্ষর, ঠিকানাসহ সব ধরনের কাগজপত্র জালিয়াতি করে তার নামের পাসপোর্টটি নবায়ন করে অজ্ঞাত এক নারী সৌদি আরবের জেদ্দায় অবস্থান করছেন।
গত রবিবার সকালে পাসপোর্ট নবায়ন করতে গেলে জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করে অজ্ঞাত ব্যক্তির জেদ্দায় অবস্থানের কথা জানতে পারেন আফরোজা সরকার। এ ঘটনায় গত সোমবার দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন আফরোজা সরকারের ছেলে আসফাক হোসেন সরকার।
আফরোজা সরকার বলেন, ‘অনেক দিনের ইচ্ছা হজে যাওয়ার। মাঝে তো আমার স্বামী মারা গেল। তারপর আমারও চোখের সমস্যা ধরা পড়ল। চোখের চিকিৎসা করতে করোনার আগে চেন্নাইতে গিয়েছিলাম। এখন ছেলে বলল হজের জন্য নিবন্ধন করতে। পাসপোর্ট চেক করে দেখি মেয়াদ শেষ। ইমারজেন্সি পাসপোর্ট করার জন্য আমার ছেলে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছে। এখন পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে দেখি আমার নাম ছবি ব্যবহার করে অন্য কে জানি সৌদি আরবের জেদ্দায় চলে গেছে। এখন তো আমি হজে যেতে পারব কি না আল্লাহই ভালো জানেন।’
আফরোজা সরকারের ছেলে আসফাক হোসেন সরকার বলেন, ‘আমার মায়ের আগের পাসপোর্টও আমার কাছে। তাহলে কীভাবে আরেকজন ব্যক্তি আমার মায়ের পাসপোর্ট ব্যবহার করে জেদ্দায় থাকতে পারে। কীভাবেই বা আমার মায়ের ছবি স্বাক্ষর ছাড়াই পাসপোর্ট নবায়ন করতে পারে সেটা বুঝছি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগের ওই পাসপোর্টটা ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি ইস্যু হয়েছিল যার মেয়াদ ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি শেষ হয়ে যায়। পাসপোর্ট নম্বর ছিল ইঘ০২০৯৪৩৮। নবায়ন করা জাল পাসপোর্টের নম্বর হলো ঊঔ০৪১৮৮৪২। এই পাসপোর্ট নবায়ন করা হয়েছে ২০২১ সালের ২২ জুলাই যার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালের ২১ জুলাইতে। এখন তো আমাদের ঢাকা পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করতে বলছেন- এখানে যারা আছেন। কিন্তু আমরা তো দিনাজপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করেছি, তাহলে ঢাকায় যাব কেন। তারা কীভাবে পাসপোর্ট পেল, এখানে অবশ্যই এই পাসপোর্ট অফিসের অবহেলা আছে।’
এ বিষয়ে দিনাজপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক আজিজুল হক বলেন, ‘উনাদের একাধিক পাসপোর্ট ছিল যার কোনো একটা দিয়ে কেউ পাসপোর্ট নবায়ন করেছে। আগের তো এমআরপি পাসপোর্ট ছিল যেটা পুরাতন পাসপোর্ট জমা দিলে ওই তথ্য অনুযায়ী পাসপোর্ট নবায়ন করা যেত। এটা তেমন কিছু না। আমাদের এখানে বলার কিছুই নেই। তারা ঢাকা অফিসে যোগাযোগ করছে। এটা নিয়ে হেড অফিসের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’
একাধিক পাসপোর্টের বিষয়ে আফরোজা সরকারের ছেলে আসফাক হোসেন সরকার বলেন, ‘আমার মায়ের একাধিক পাসপোর্ট নেই। ২০১৭ সালেই শুধু একটাই পাসপোর্ট করা হয়েছিল যা দিয়ে আমার মায়ের চোখের চিকিৎসা করাতে ভারতে গিয়েছিলেন। পুরাতন পাসপোর্টও আমার কাছে।’
নিজেকে জঙ্গি দলের সদস্য দাবি করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আত্মসমর্পণের আকুতি জানিয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করেন এক যুবক। ওই কল পেয়ে তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে রাজধানীর উত্তরখান থানা পুলিশ। পরে ওই যুবককে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরখান থানা এলাকায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার জানান, গত বছর ২৭ ডিসেম্বর তথাকথিত হিজরতের উদ্দেশ্যে কুমিল্লা থেকে ঘর ছেড়েছিলেন এই যুবক। টাকা-পয়সা চুরি করে তিনি নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ায় যোগ দিয়েছিলেন। এরপর ঢাকার বসুন্ধরা, উত্তরখান ও দক্ষিণখানের বিভিন্ন মেসে অবস্থান করেন। প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য তার কক্সবাজার যাওয়ার কথা ছিল। একপর্যায়ে তিনি নিজের ভুল বুঝতে পেরে পালিয়ে যান। পরে উত্তরখান থানা এলাকায় এক ব্যক্তির কাছে আশ্রয় নেন। তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাচ্ছিলেন। তবে তার দলের সদস্যদের হাতে ধরা পড়লে খুন হতে পারেন বলে ভয় পাচ্ছিলেন। তিনি আইনের কাছে আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি গতকাল বেলা পৌনে ১২টায় ৯৯৯-এ কল করেন।
কলটি রিসিভ করেন ৯৯৯-এর কলটেকার কনস্টেবল জয় বিশ্বাস। তিনি তাৎক্ষণিক পুলিশের উত্তরখান জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ইয়াসির আরাফাতকে বিষয়টি জানান। এরপর উত্তরখান থানা পুলিশের একটি দল উত্তরখানের কোটবাড়ী আটিপাড়া এলাকায় যায়। তারা ২৬ বছর বয়সী ওই যুবককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গতকাল রাতে উত্তরখান থানার ওসি আবদুল মজিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ওই যুবক নিজেকে জঙ্গি বলে দাবি করেছে। সে অনেক বিষয়ে তথ্য দিয়েছে। তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের সিটিটিসি ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
ভারতে বিবিসির দিল্লি ও মুম্বাই অফিসে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে দেশটির আয়কর বিভাগ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে বিবিসির ওই দুই কার্যালয়ে তল্লাশির জন্য ঢোকেন আয়কর কর্মকর্তারা। তারা কয়েকজন সাংবাদিকের মুঠোফোন, ল্যাপটপও কেড়ে নেন। ধারণা করা হচ্ছে, গুজরাট দাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র সম্প্রচারের জেরেই তল্লাশি চালানো হয়েছে। যদিও আয়কর বিভাগের দাবি, আন্তর্জাতিক কর ও স্থানান্তর মূল্যের অনিয়মে বিবিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে একটি জরিপ চালিয়েছিল তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতেই তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
এদিকে আয়কর বিভাগের তল্লাশিকে অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী আখ্যা দিয়েছে দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠনও এ তল্লাশিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে ক্ষমতাসীন বিজেপি বিবিসিকে বিশ্বের সব থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত সংস্থা বলে উল্লেখ করেছে।
গতকাল বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে সমালোচনামূলক একটি তথ্যচিত্র যুক্তরাজ্যে প্রকাশের কয়েক সপ্তাহ পরেই বিবিসির নয়া দিল্লি এবং মুম্বাই অফিসে এ তল্লাশির ঘটনা ঘটল। তল্লাশির পর বিবিসি এক বিবৃতিও প্রকাশ করেছে। তাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, তারা কর্র্তৃপক্ষের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করছে। বিবিসির আশা যত দ্রুত সম্ভব এ পরিস্থিতির সমাধান হয়ে যাবে।
গুজরাটে ২০০২ সালে মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রী মোদির ভূমিকা ঘিরে ‘ইন্ডিয়া : দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’ নামের তথ্যচিত্রটি শুধু যুক্তরাজ্যের টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। তবে পরে সেটি অনলাইনেও ছড়িয়ে পড়ে। ভারতে সেটির অনলাইনে প্রচার বা শেয়ারিং বন্ধ করতে পদক্ষেপ নেয় দেশটির সরকার। গত মাসে ওই তথ্যচিত্রটি দেখার জন্য জড়ো হওয়া একদল শিক্ষার্থীকে আটক করেছিল দিল্লির পুলিশ।
বিবিসির ওই তথ্যচিত্রে দেখানো হয়েছিল যে, মোদি কীভাবে রাজনীতিতে এসেছিলেন এবং ভারতীয় জনতা পার্টিতে কীভাবে ক্রমান্বয়ে ওপরে উঠে পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্য গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে বিবিসির সংগ্রহ করা একটি অপ্রকাশিত প্রতিবেদন সেখানে তুলে ধরা হয়েছিল, যেখানে ধর্মীয় দাঙ্গা চলার সময় মোদির কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল।
হিন্দু তীর্থযাত্রীদের বহনকারী একটি রেলে আগুন লাগানোর পর অনেক মানুষ হতাহত হলে ওই দাঙ্গা শুরু হয়েছিল। এর পরের কয়েক দিনের সহিংসতায় এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল, যাদের বেশিরভাগ ছিলেন মুসলমান।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মোদি সেই সময় ‘দায়মুক্তির পরিবেশ’ তৈরি করার জন্য ‘সরাসরি দায়ী’ ছিলেন, যা সহিংসতাকে উসকে দিয়েছিল।
তখনকার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাক স্ট্রর নির্দেশে করা একটি তদন্তের অংশ হিসাবে ওই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়, ‘সহিংসতা মাত্রা প্রকাশিত খবরের চেয়ে অনেক বেশি ছিল’ এবং ‘দাঙ্গার লক্ষ্য ছিল হিন্দু এলাকাগুলো থেকে মুসলমানদের নির্মূল করা’।
মোদি দীর্ঘদিন ধরেই তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছেন এবং দাঙ্গার জন্য কখনো ক্ষমা চাননি। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি প্যানেলও বলেছে, তার বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
আর বর্তমান মোদি সরকারের ভাষ্য, তথ্যচিত্রটি ঔপনিবেশিক মানসিকতায় তৈরি ভারতবিরোধী প্রপাগান্ডা ও আবর্জনা। ভারতীয় জনতা পার্টির একজন মুখপাত্র গৌরভ ভাটিয়া বিবিসিকে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত সংস্থা হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, ভারত এমন একটি দেশ যা সব সংস্থাকেই সুযোগ দেয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা বিষ ছড়ায়।
তবে বিরোধী কংগ্রেস পার্টির সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপাল বলেছেন, মঙ্গলবারের এ তল্লাশি হতাশা তৈরি করছে এবং মোদি সরকার যে সমালোচনাকে ভয় পায়, সেটাই দেখিয়ে দিচ্ছে। তিনি এক টুইটে লিখেছেন, আমরা এই ভয় দেখানোর কৌশলকে কঠোর ভাষায় নিন্দা জানাই। এ অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী মনোভাব আর চলতে পারে না।
ভারতের এডিটরস গিল্ড বলেছে, এ তল্লাশির ঘটনায় তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এসব সরকারি নীতি বা সংস্থাগুলোর সমালোচনাকারী সংবাদমাধ্যমগুলোকে ভয় দেখানো এবং হয়রানি করতে সরকারি সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করার অব্যাহত প্রবণতার অংশ।
বিবিসি বলছে, ভারতে সরকারের সমালোচনাকারী বিভিন্ন সংস্থাকে লক্ষ্যবস্তু করা অস্বাভাবিক কিছু নয়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০২০ সালে ভারতে কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল। এ ছাড়া গত বছর বেসরকারি আরও কয়েকটি সংস্থার পাশাপাশি অক্সফামেও তল্লাশি চালানো হয়েছিল।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি এক বছরেরও কম। সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে অথবা আগামী বছরের জানুয়ারিতে নির্বাচন হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে সংসদ থেকে পদত্যাগ করা দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো আন্দোলন করছে।
এ ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের চাপ রয়েছে বিদেশিদের। গত বছরের মাঝামাঝি থেকে এই চাপ ক্রমশ বাড়ছে। বিদেশিদের মধ্যে এবার যুক্তরাষ্ট্রের চাপ অনেক বেশি। এর আলামত দেখা যাচ্ছে কয়েক মাস ধরে। নির্বাচন ছাড়াও দেশটি মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীন প্রশ্নে অনেক সোচ্চার। ২০২১ সালের ডিসেম্বর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটি।
সরকারের তরফ থেকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য তারা বিদেশিদের উদ্যোগ নিতে বলছে। একই সঙ্গে সরকার যেকোনো চাপে নতি স্বীকার করবে না, সেটাও বলেছে।
কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৯৯০ সালে দেশে সংসদীয় সরকার পদ্ধতি আসার পর থেকেই বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক আগ্রহ বাড়ছে। নির্বাচনের এক বছর আগে থেকেই প্রভাবশালী দেশগুলো বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে নানা সবক দিতে থাকে। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি।
তাদের মতে, বরং নির্বাচন ঘিরে পরাশক্তিগুলোর প্রভাব লক্ষণীয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকেই প্রতিবেশী দেশ এবং বড় দেশ হিসেবে বাংলাদেশের রাজনীতি এবং সরকার নিয়ে সবচেয়ে বেশি আধিপত্য দেখিয়ে আসছিল ভারত। ১৯৯০ সাল থেকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পশ্চিমাদের প্রভাব। আর তিন দশক ধরে বিভিন্ন কূটনৈতিক জোট, আঞ্চলিক জোট এবং সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আগ্রহ বেড়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রভাবশালী দেশগুলোর নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ যতই থাক না কেন, এর মূল কারণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা। তারা মনে করছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির সমাধান যদি নিজেরা না করতে পারি, তাহলে বাইরের প্রভাব বাড়তে থাকবে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওয়ালী উর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন ভূ-রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশকে তাদের প্রভাব বলয়ে রাখতে চায়। তাদের নিজেদের দেশেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। বর্তমান সরকারও অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করছে। তাদের এই চাপ কাজে দেবে না।’ আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন মহলের অভিমত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা, ইন্দো প্যাসিফিক কৌশল এবং ভূ-রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশ অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে এবং আঞ্চলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের কারণও তাই। কূটনীতিকরা বলছেন, ভারত, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ থাকলেও এক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক তৎপরতা লক্ষণীয়। এ ক্ষেত্রে সরকারবিরোধী বিএনপির পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মহলের কাছে বারবার নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি কিছুটা হলেও গুরুত্ব পাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি নির্বাচন পদ্ধতি এবং নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র অনেক বেশি সোচ্চার হলেও তাদের কূটনীতি সরকারবিরোধী দলগুলোর পক্ষে যাবে এমন ধারণা করার কোনো কারণ নেই। যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। এটা যেমন সত্য, তেমনি ইন্দো প্যাসিফিক এবং এ অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব বিস্তারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তাদের বোঝাপড়াটা বেশি জরুরি। আর সে কারণেই বিএনপি যতই তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের কথা বলুক যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি নিয়ে কথা বলছে না। তাদের বক্তব্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন এবং নির্বাচনে বিরোধীপক্ষের জন্য সুষ্ঠু ও অবাধ পরিবেশ তৈরি করা।
কূটনীতিক সূত্রগুলো বলছে, আগের কয়েক দফা যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহী থাকলেও ভারতের সঙ্গে একধরনের সমঝোতা করে বা আলোচনা করে তাদের মতামত দিয়েছে। কিন্তু ইন্দো প্যাসিফিক কৌশল এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে দিয়েছে। এবার যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি নির্বাচন নিয়ে পরামর্শ এবং তাদের চাওয়া-পাওয়ার বিষয়ে বেশি সোচ্চার।
বাংলাদেশের মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক চর্চার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগের বিষয়টি প্রথম প্রকাশ পায় ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার মধ্য দিয়ে। এরপর থেকেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সংলাপও হয়েছে। এক বছরের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন সময় যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল এবং প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ সফর করেছেন। তাদের সফরে আগামী নির্বাচন, বিরোধীপক্ষের প্রতি সরকারের আচরণ, মানবাধিকার ও সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে সরকার, আওয়ামী লীগ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
গত ২১ মার্চ নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের উদ্ধৃত করে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছে, নির্বাচনে জাল ভোট দেওয়া হয়েছে এবং বিরোধীদলীয় পোলিং এজেন্ট ও ভোটারদের ভয় দেখানোসহ গুরুতর অনিয়ম রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র নিয়মিত সম্মান ও অংশীদারিত্বের মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে মানবাধিকারের বিষয়গুলো উত্থাপন করে। এটা তারা চালিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এমন আগ্রহের কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এশিয়ায় নিজেদের প্রভাব বলয় বাড়াতে চায় দেশটি। এরই মধ্যে দেশটি এশিয়ায় তাদের বন্ধু দেশগুলোকে নিয়ে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি’ (আইপিএস) পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। এর আওতায় ইন্দো-প্যাসিফিক ফোরাম গঠন করা হয়েছে। একই কৌশলের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ভারত সামরিক সহযোগিতা বাড়াতে কোয়াড গঠন করেছে। এগুলোর লক্ষ্য হলো চীনের বিরুদ্ধে এ অঞ্চলে একটি শক্তিশালী বলয় গঠন করা। ভারতের পাশাপাশি এ বলয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকেও চায়। বাংলাদেশ যেন কোনোভাবেই চীনের বলয়ে না যেতে পারে, সেই কৌশলের অংশ হিসেবেও আগামী নির্বাচন ঘিরে চাপ তৈরির কৌশল নিয়েছে দেশটি। যদিও বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত কোনো জোটেই যায়নি। আবার ‘বার্মা অ্যাক্ট’ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রস্তাবে তারা বাংলাদেশকে পাশে চায়। এসব কারণে বাংলাদেশকে চাপে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ নানা ইস্যুতে সোচ্চার হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুসহ ঢাকায় সফররত দেশটির কর্মকর্তারা বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের পাশাপাশি দুই দেশের সম্পর্ক নিয়েও ইতিবাচক কথা বলেন। এ ছাড়া ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের বিভিন্ন বক্তব্যেও নির্বাচনের পরিবেশ ও স্বচ্ছতা নিয়ে আলোচনা প্রাধান্য পেয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে ঢাকা সফরে এসে যুক্তরাষ্ট্রের উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তারও বলেছিলেন, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে তারা সরকারকে এবং এই দেশকে সহযোগিতা করেব। তিনি সেই সময় দেশটির যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা দূতাবাস ও ইউএসএইডের বাংলাদেশ কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব তুলে ধরেন।
গত বছরের অক্টোবরে ঢাকায় এসেই এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সাংবাদিকদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন দেখতে চায়। এরপর থেকে তিনি নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রায় অভিন্ন বক্তব্য দিয়ে আসছেন। পাশাপাশি তিনি এ-ও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনো একটি দলকে সমর্থন করে না। তারা চান জনগণ তাদের পছন্দের সরকার নির্বাচন করবে।
এর আগে গত বছরের জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসহ ১৪টি দেশের কূটনীতিকরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন নিয়ে তাদের মনোভাব তুলে ধরেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অভিনন্দন বার্তায়ও বাংলাদেশে সবার জন্য উন্মুক্ত, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। দিবসটি উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শুভেচ্ছা বার্তায় অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। শেখ হাসিনাকে লেখা বাইডেনের এ বার্তায় বর্তমান সরকার ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসাও করা হয়েছে।
এর আগে ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সিলর ডেরেক এইচ শোলে তার ঢাকা সফরে বলেছিলেন, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে, অর্থাৎ যারা পরাজিত হবেন, তারাও যেন মনে করেন নির্বাচনটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ হয়েছে এমনটাই তারা চান। তিনি বলেছিলেন, শক্তিশালী সুশীল সমাজ, মুক্ত গণমাধ্যম এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক পরিবেশ চায় যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে নেতিবাচক প্রশ্ন উঠবে না। এই পরিবেশ তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও শোলে জানান।
ডেরেক শোলে চলে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, সরকারপক্ষ থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিকে বলা হয়েছে তারা অবাধ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। তারা সরকারের প্রতিশ্রুতিতে আশ্বস্ত। তবে মানবাধিকার পরিস্থিতি ও পূর্ববর্তী নির্বাচন নিয়ে তারা তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। যখনই প্রয়োজন হবে, তারা সেটা জানাবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বিদেশিদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর সুযোগ নেই। এই সুযোগটা আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোই করে দিয়ে আসছে। এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র একটি শক্তিশালী অবস্থান চায়। এ জন্যই তারা কথা বলছে।’
রমজানের সম্মান ও পবিত্রতা রক্ষায় সবার দায়িত্ব রয়েছে। কারও কোনো অবহেলা কিংবা গর্হিত কাজে রোজাদারের রোজা পালনে অসুবিধা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা। রমজানের পবিত্রতা রক্ষার পাশাপাশি মুসলমানরা যেন নির্বিঘেœ ইবাদত-বন্দেগি করতে পারে, সেই পরিবেশ সৃষ্টি করা। মাহে রমজান ও রোজাদারের প্রতি সম্মান বজায় রাখা। সকল প্রকার গোনাহ পাপাচার এবং অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকা।
রোজাদারদের কষ্ট লাঘবে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করা। তারা যেন সুন্দরভাবে মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারে, সে জন্য মসজিদের আশপাশের রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ করা। ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং সাহরি ও ইফতারে পচা-বাসি খাবার বিক্রি না করার বিষয়ে নজরদারি করা। মশার কামড় রোধে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া।
নানা কারণে অনেকে রোজা রাখতে পারেন না। এ কারণে ব্যক্তিভেদে মাসয়ালা প্রয়োগ হবে। কিন্তু রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করা, রোজা ও রোজাদারের প্রতি সম্মান না দেখানো অনেক বড় ধৃষ্টতা। এগুলো থেকে বিরত থাকা চাই। প্রকাশ্যে ইসলামের কোনো বিধানের অমর্যাদা, রোজার মূল চেতনা ক্ষুণœ হয় এমন বিষয়ে লিপ্ত থাকা নাফরমানির অন্তর্ভুক্ত। জেনেবুঝে সংঘবদ্ধভাবে এমন নাফরমানি আল্লাহর ক্রোধ বাড়িয়ে দেয় এবং অনেক বড় দুর্গতি ডেকে আনে। আল্লাহর ওয়াস্তে রমজানের সম্মান ও পবিত্রতা রক্ষার স্বার্থে এসব গর্হিত আচরণ থেকে নিবৃত্ত থাকা চাই।
মনে রাখতে হবে, রমজান তাকওয়া (আল্লাহভীতি) অর্জনের মাস। এ মাসে করণীয় হলো তাকওয়া অর্জনে এগিয়ে আসা। কিয়ামুল লাইলের (তারাবি ও তাহাজ্জুদের নামাজ) প্রতি যতœবান হওয়া। কোরআন নাজিলের মাস হিসেবে তেলাওয়াতে কোরআন, তাদাব্বুরে কোরআন (কোরআনের আয়াত ও হেদায়েত নিয়ে চিন্তাভাবনা) এবং আমল বিল কোরআনের (কোরআনের আমল) প্রতি মনোযোগী হওয়া। যাদের কোরআন তেলাওয়াত সহিহ নেই তেলাওয়াত সহিহ করা। বেশি বেশি নফল ইবাদত, দোয়া-দরুদ, তওবা-ইস্তিগফার, জিকির-আজকার ইত্যাদিতে সময় ব্যয় করা। সর্বাবস্থায় সহনশীলতা ও ভ্রাতৃত্ব চর্চায় মনোযোগী হওয়া। অধিক পরিমাণে দান-সদকা করা এবং সব ধরনের কল্যাণকর কাজে এগিয়ে আসা। সংযম বজায় রাখা। প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ করা। নিজের ও পরিবারের সদস্যদের আত্মিক উৎকর্ষের প্রতি মনোনিবেশ করা।
রমজানের বিশেষ বিশেষ মুহূর্তগুলোর ব্যাপারে যতœবান হওয়া। যেমন সাহরি, ইফতার, তারাবি, তাহাজ্জুদ, শবেকদর ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোর ব্যাপারে বিশেষভাবে খেয়াল রাখা। এ মুহূর্তগুলোর যে বিশেষ আমল রয়েছে তাতে আত্মনিয়োগ করা। বাসাবাড়ি, অফিস-আদালতে ইবাদতের পরিবেশ গড়ে তোলা। মসজিদগুলো ইবাদতের মাধ্যমে আবাদ রাখা। মোদ্দা কথা, এই এক মাসে তাকওয়ার মেহনতের মাধ্যমে গোটা বছরের ইমানি, আমলি এবং রুহানি জিন্দেগির পাথেয় সংগ্রহ করা।
আলেমরা বলে থাকেন, রোজা রেখে ক্লান্ত হয়ে গেলে প্রয়োজনে বিশ্রাম করুন। কিন্তু অনর্থক গল্পে লিপ্ত হবেন না। কারণ কথায় কথা টানতে থাকে এবং আল্লাহ না করুন, বেশি কথা বললে তা ধীরে ধীরে মিথ্যা, গীবত-শেকায়েত ইত্যাদি বিভিন্ন দিকে ছুটতে থাকে।
রমজানে গোনাহের ধারা অব্যাহত রাখা খুবই খারাপ কথা। যেখানে ঘোষণা হতে থাকে নেকির কাজে অগ্রসর হতে, অনিষ্ট থেকে নিবৃত্ত হতে, সেখানে গোনাহের ধারা অব্যাহত রাখা অনেক বড় বঞ্চনার কারণ। বিশেষ করে অনাচার-পাপাচার ও অশ্লীলতা এবং এমন গোনাহ, যা আল্লাহর ক্রোধকে বাড়িয়ে দেয়, এমনসব বিষয় পুরোপুরি বর্জন করা। কারণ ফিরে আসার এটাই মোক্ষম সময়। কিন্তু ফিরে না এসে এর অনুভূতিও জাগ্রত না হওয়া বহুত বড় ক্ষতির বিষয়।
আজ রমজানের ৯ তারিখ। দেখতে দেখতে শেষ হয়ে যাচ্ছে রমজান মাস। এভাবে মানুষের জীবনও একদিন শেষ হয়ে যাবে। বুদ্ধিমান তো সে, যে আগ থেকেই প্রস্তুতি নিতে থাকে। কাজে লাগায় রমজানের বরকতময় প্রতিটি মুহূর্ত। সে অগ্রগামী হয় নেকি ও কল্যাণের পথে, তাকওয়া হাসিলের পথে এবং ব্রত হয় গোনাহ থেকে পাক-পবিত্র হয়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করার মেহনতে।
লেখক : খতিব, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ
রাজধানীর পল্লবীতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীরা স্থানীয় যুবদলের নেতা। শুক্রবার ইফতারের আগে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য চলাকালে যুবদলের নেতাকর্মীরা সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেন।
হামলায় বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভির বিশেষ প্রতিনিধি ইমরুল আহসান জনি, চ্যানেল আইয়ের প্রতিবেদক আখতার হাবিবসহ বেশ কয়েকটি চ্যানেলের ক্যামেরাপারসন আহত হন। দুটি ক্যামেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জানা গেছে, ইফতার অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীদের বিপুল উপস্থিতিতে গণমাধ্যমকর্মীদের দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে দলের কিছু কর্মী কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর চড়াও হন।
উপস্থিত নেতাকর্মীরা জানান, যুবদল নেতাদের হামলা থামাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঞ্চ থেকে নেমে এলেও তাদের নিবৃত্ত করতে পারছিলেন না। পরে তিনি নেতাকর্মীদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ভিডিওতে দেখা যায় হামলায় অংশ নেন পল্লবী থানার ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, পল্লবী থানা যুবদলের পিয়াস, পল্লবী থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি রাজিব হোসেন পিন্টু, রূপনগর থানা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মো. আসিফ, পল্লবী থানা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মো. মাসুদ এবং পল্লবী থানা ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের মো. মনির।
নেতাকর্মীরা জানান, এসব নেতা যুবদল কেন্দ্রীয় সংসদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টনের অনুসারী। তবে এ বিষয়ে জানতে মিল্টনের মোবাইলে ফোন করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হকের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও সাড়া দেননি তিনি।
তবে ঘটনার পর সংবাদকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনার পর আমিনুল হক দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ক্ষমা চান। মিল্টন ও আমিনুল উভয়ই ঢাকা-১৬ আসনের বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী।
এ ঘটনায় সংবাদকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপির প্রায় অনুষ্ঠানে সংবাদকর্মীদের হেনস্তা হতে হয়। ক্ষমতায় না আসতেই সাংবাদিকদের এ অবস্থা। ক্ষমতায় আসলে তো আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি নির্যাতন করবে। এমন কোনো প্রোগ্রাম নেই যে সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়নি।
তারা আরো বলেন, ‘এর আগে বিএনপির কর্মীরা মাই টিভির সাংবাদিক ইউসুফের ওপর হামলা করেছে। আজকের (শুক্রবার) ঘটনা যে ঘটিয়ে থাকুক, এর দায় উত্তরের শীর্ষ দুই নেতার। আপনারা নিজেরা নিজেরা মারামারি করেন, কিন্তু সাংবাদিকদের ওপর হাত তোলা বরদাশত করা যায় না। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিন, ব্যাখ্যা দিন, ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেন। একই সঙ্গে আর এমন হবে না, সেটি প্রকাশ্যে বলুন। মনে রাখবেন, এই সাংবাদিকরাই আপনাদের বছরের পর বছর সার্ভ করছে। তারা এভাবে মার খেলে আখেরে আপনারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সব হারাবেন’।
এ বিষয়ে বিএনপির মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির ভাই সাংবাদিকদের বলেন, ‘জনি ভাইসহ আহত সাংবাদিকদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি বিএনপির মহাসচিব মহোদয়ের প্রতি তিনি নিজে গিয়ে জনি ভাইকে উদ্ধার করেছেন। তবে ফুটেজে দেখলাম হামলাকারীদের ছবি আছে। তাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া উচিত। দলের না হলেও চিহ্নিত করে পরিষ্কার করা উচিত তারা কারা’।
জানা গেছে, শুক্রবার রাতে হামলায় আহত সাংবাদিকদের বাসায় গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও সদস্য সচিব আমিনুল হক।
এ ঘটনায় মির্জা ফখরুল এক বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘মনে হয় না তারা (নেতাকর্মীরা) দলকে ভালোবাসে। তারা অতিথিদের সম্মান রক্ষা করতে জানে না।’
এ সময় নেতাকর্মীদের শৃঙ্খলার মধ্যে আসার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারের দালালেরা অনুষ্ঠানে ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে।’
আয়োজকদের পক্ষ থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে এর সমাধান করা হয়েছে। সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমাও চাওয়া হয়েছে।’
এ বছর ভারতের মাটিতে বসবে ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর। তবে পাকিস্তান নিজেদের ম্যাচগুলো ভারতে না খেলে বাংলাদেশে খেলতে চায় বলে খবর প্রকাশিত ছড়িয়েছিল। যে খবরকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রধান নাজাম শেঠি।
এমন কোনো আলোচনাই হয়নি বলে দাবি করে শেঠি বলেন, ‘বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে কোনো পর্যায়ে আমি আইসিসির প্রসঙ্গ কিংবা অক্টোবরে অনুষ্ঠেয় ২০২৩ বিশ্বকাপ নিয়ে কোনো মন্তব্য করিনি। এখন পর্যন্ত আইসিসির কোনো সম্মেলনে এই বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।’
বিশ্বকাপের আগে সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানে বসবে এশিয়া কাপ। কিন্তু এই টুর্নামেন্টে খেলতে প্রতিবেশী দেশে যেতে রাজি নয় ভারত। তাই তাদের ম্যাচগুলো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে আয়োজনের কথা ভাবছে এসিসি। নাজাম জানিয়েছেন এখনো বিষয়টি আলোচনার টেবিলে আছে।
এদিকে পাকিস্তানের বিশ্বকাপ ম্যাচ বাংলাদেশে হওয়ার খবর প্রসঙ্গে শুক্রবার মুখ খুলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে এ নিয়ে কোনো কথা হয়নি। আসলে আমি এটা টিভিতে দেখেছি। আইসিসি বা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড কেউ আমাদের কিছু বলেনি।’
রুতুরাজ গয়কোয়াডের দাপুটে ব্যাটিংয়ে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি গড়ল চেন্নাই সুপার কিংস। যা তাড়া করতে নেমে শুভমন গিলের পর রাহুল তেওয়াতিয়া ও রশিদ খানের নৈপুণ্যে জয় তুলে নিল গুজরাট টাইটান্স।
আহমেদাবাদে শুক্রবার আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন গুজরাট। ১৭৯ রানের লক্ষ্য তারা ৪ বল হাতে রেখে ছুঁয়েছে।
গিল সর্বোচ্চ ৩৬ বলে ৬৩ রান করেছেন ৬ চার ও ৩ ছক্কায়। শেষ দিকে তেওয়াতিয়ার ১৪ বলে অপরাজিত ১৫ ও রশিদ খানের ৩ বলে অপরাজিত ১০ রান দলকে জয় এনে দেয়।
চেন্নাইয়ের পক্ষে রাজবর্ধন হাঙ্গার্গেকর ৩৬ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা চেন্নাই নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৮ রান সংগ্রহ করে। রুতুরাজ সর্বোচ্চ ৯২ রান করেন। তার ৫০ বলের ইনিংসে ছিল ৪ চার ও ৯ ছক্কা।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। তাকে প্রায়ই বিভিন্ন ভাইরাল ইস্যু নিয়ে ফেসবুক লাইভে কথা বলতে দেখা যায়। যুবলীগে পদ পেয়েও পরে অব্যাহতি পেয়েছেন। সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে দেশ রূপান্তরের সাথে মুখোমুখী হয়েছিলেন ব্যারিস্টার সুমন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আব্দুল্লাহ আল তোফায়েল।
সামাজিক যোগাযাগ মাধ্যমে আপনি যে ভিডিও আপলোড করেন এর প্রধান উদ্দেশ্য কি টাকা ইনকাম করা?
বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে টাকা ইনকামের সুযোগ আসার কয়েক বছর আগে থেকেই আমি ভিডিও আপলোড করি। আমার প্রথম যে কয়েকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল তখন মনিটাইজেশন নামে কোন শব্দের সাথে আমরা পরিচিত ছিলাম না। আমার ফেসবুক থেকে যে ইনকাম হয়, ব্যারিস্টারি থেকে যে আয় হয় এবং বিদেশে থাকা আমার পরিবারের মানুষেরা যে টাকা পাঠান তার সব আমি মানুষের জন্য খরচ করি। এর প্রমাণ হিসাবে দেশে বিদেশে আমার নামে কিংবা আমার পরিবারের কারও নামে কোন ফ্ল্যাট নেই।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া স্যার ইস্যু নিয়ে আপনার অবস্থান কি?
স্যার ম্যাডাম মহোদয় এইগুলো নাম নাম মাত্র। আমার প্রশ্ন হচ্ছে কাজে কতটুকু এগোলাম আমরা। একজন মানুষ যে কাজে সরকারী অফিসে যান সেই কাজ টা যদি ঠিক মত হয় তাহলে কি নামে ডাকলেন সেটা কোন সমস্যা বলে আমার কাছে মনে হয়না। এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা কেবল সময়ের অপচয় মাত্র।
আপনি নমিনেশন চাইবেন আওয়ামী লীগ থেকে?
আমি আওয়ামী লীগ থেকে নমিনেশন চাইব। দল যদি আমাকে নমিনেশন দেয় আমি নির্বাচন করব। না হলে দল যাকে নমিনেশন দেবে আমি তার হয়ে কাজ করব।
যুবলীগ থেকে আপনাকে বহিষ্কারের পর আপনার কেমন লেগেছিল, আপনার অবস্থানে কি আপনি অনড়?
আমার কাছে একদম খারাপ লাগেনি। নেতা যাকে ইচ্ছে নিতে পারেন, আবার প্রয়োজন না হলে ফেলে দিতে পারেন। আমাকে যখন যুবলীগে নেওয়া হয়েছিল, তখন হয়তো আমাকে প্রয়োজন ছিল, এখন মনে হয় হয়তোবা আমি যেভাবে কাজ করি তা উনাদের পছন্দ না। তবে যে বক্তব্য দিয়েছিলাম সে বিষয়ে আমি অনড়। একজন ওসি কখনো নির্দিষ্ট এমপি কে খুশি করার জন্য স্লোগান দিতে পারেন না।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আপনাকে কথা বলতে কম দেখা যাচ্ছে কেন ?
দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি তা বিশ্ব পরিস্থিতির অংশ। শ্রীলংকা, পাকিস্তানের মত দেশ দেউলিয়া হয়ে গেছে। আমরা টিকে আছি। আমাদের অধিকাংশ জিনিস আমদানি করতে হয়। তাই এ সমাধান আমাদের হাতে নেই। তবে আমি দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি নিয়ে কথা না বললেও দুর্নীতি নিয়ে কিন্তু প্রতিদিন কথা বলতেছি। দুর্নীতি আর টাকা পাচার যদি বন্ধ করা যেত তাহলে জিনিস পত্রের দাম এত বাড়ত না। তাই বলতে পারেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা আমার অন্য সবকিছুকে কাভার করে।
শোনা যায় অনেকেই রাজনীতি করে কানাডায় বাড়ি কিনছেন, এ বিষয়ে আপনি কি বলবেন?
রাজনীতিকে এখন ওনারা ধারণ করেন না। এমপি পদ টাকে তারা আরও সম্পদ উপার্জনের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করছেন। ওনারা মনে করেন পরেরবার এমপি মন্ত্রী হতে পারেন বা না পারেন টাকা বানিয়ে ফেলি যাতে আর অসুবিধা না হয়।
আব্দুস সালাম মুর্শেদিকে নিয়ে বানানো ভিডিও সরিয়ে ফেলতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন।এটা কি আপনার পরাজয়?
সালাম মুর্শেদিকে নিয়ে আমি অনেকগুলো ভিডিও বানিয়েছি। এর মধ্যে মাত্র ২টা ভিডিও সড়াতে হয়েছে। মামলা চলাকালীন সময়ে মামলার মেরিট যেন নষ্ট না হয় এর জন্য ভিডিও সড়াতে বলা হয়েছে। এটাকে আমি পরাজয় মনে করি না।
বর্তমান সরকারকে অনেকে অনির্বাচিত বলেন, এ বিষয়ে আপনার অবস্থান কি?
সংবিধান মেনে একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। প্রক্রিয়া নিয়ে অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে। রাজনৈতিক বিষয়ে যা ঘটেছে বা ঘটছে তা সবাই দেখতে পাচ্ছেন। এ নিয়ে আমার আলাদা করে বলার কিছু নেই।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুতে আপনার অবস্থান কি?
পারস্পরিক আস্থার অভাব হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের দেশের রাজনীতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ওপর বিশ্বাস কতটুকু সেটাও ভেবে দেখতে হবে। একটা সময় আওয়ামী লীগ এই দাবিতে আন্দোলন করেছিল তখন কিন্ত বিএনপি এই দাবি মেনে নেয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিলেই যে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বিষয়টা এমন নয়।
রাজনীতির চেয়ে সামাজিক ইস্যুতে আপনাকে বেশি কথা বলতে দেখা যায়। এটা কি সুবিধাজনক অবস্থান?
একজন সাধারণ মানুষ হিসাবেই আমার রাজনীতিতে আসা। আমার বাবা বা অন্য কেউ এমপি মন্ত্রী নয়। যে আমি এমনি এমনি রাজনীতিতে আসছি। আমি সামাজিক কাজ করতে করতে এ জায়গায় আসছি। আমি যদি রাজনীতিতে পুরোদমে প্রবেশ করি তখনও দেখবেন আমি সামাজিক বিষয় নিয়ে কথা বলব কাজ করব।
সাকিব আল হাসানকে নিয়ে আপনার অবস্থান?
একটা ভিডিওতে তিন লাখ টাকা সাকিবকে দেওয়া নিয়ে আমার মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে সোনারগাঁ হোটেলের লবিতে সাকিব আমাকে মারতে আসেন। আমি মনে করি, সাকিবকে কোটি মানুষ অনুসরণ এখন তিনি যদি জুয়ার এম্বাসেডর হন টাকার লোভে মার্ডারের আসামীর দাওয়াতে যান তাহলে আমাদের দুর্ভাগ্য।
ফুটবল ফেডারেশন নিয়ে আপনার মন্তব্য কি?
আমি সরাসরি বলব বাংলাদেশের ফুটবল ধ্বংস করার কারিগর কাজী সালাউদ্দীন ও আব্দুস সালাম মোর্শেদি। তারা ফুটবল কে এগিয়ে নিয়ে যেতে না পারলেও নিজেরা এগিয়ে গিয়েছেন। ফুটবলকে সিঁড়ি করে তারা নিজেকে সমৃদ্ধ করছেন।
ফুটবল নিয়ে অনেক আগ্রহ আপনার , অগ্রগতি কতদূর?
আমার ক্লাবের অগ্রগতি অনেক। গত দেড় বছরে ১২ জন খেলোয়াড় ঢাকার বিভিন্ন লীগে খেলছেন। ৩ জন খেলোয়ার ব্রাজিলে প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছেন। পাশাপাশি সি টিমে থাকা ২/৩ জন ( যাদের বয়স ১২-১৩) আগামীতে জাতীয় দলে খেলবেন এটা আমি চ্যালেঞ্জ করে বলে দিতে পারি।
বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করায় বিদ্যুৎ বিভাগের ১২টি প্রতিষ্ঠান নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে কর্মীদের ‘ইনসেনটিভ বোনাস’ প্রদান করলেও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ক্ষেত্রে এ সুবিধা দিতে অপারগতা জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষ বিরাজ করছে।
প্রতি অর্থবছরে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো কী কী কাজ করবে তা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে অন্য সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা দলিল হলো বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থাগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা জোরদার করার পাশাপাশি সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতেই এ চুক্তি করা হয়।
সূত্রমতে, বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থা ও কোম্পানির ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য গত ২৯ ডিসেম্বর এক সভায় ইনসেনটিভ বোনাসের সুপারিশ করা হলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী তা অনুমোদন দেয়। গত ২ জানুয়ারি বিদ্যুৎ বিভাগের সহকারী সচিব মোহাম্মদ লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এপিএ অর্জনের সামগ্রিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে ইনসেনটিভ বোনাস প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শতকরা ৯৯ দশমিক ৩২ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। প্রতিষ্ঠানটিকে তার কর্মীদের ১ দশমিক ৫টি ইনসেনটিভ বোনাস দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া ডিপিডিসি এবং ওজোপাডিকোকে ১ দশমিক ৫টি ইনসেনটিভের সুপারিশ করা হয় যাদের প্রাপ্ত নম্বর যথাক্রমে ৯৬ দশমিক ৬৯ এবং ৯৫ দশমিক ২৩। নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড এবং পিজিসিবি এ চারটি প্রতিষ্ঠানকে ১ দশমিক ২৫টি ইনসেনটিভ বোনাসের সুপারিশ করা হয়েছে। ১টি ইনসেনটিভ বোনাসপ্রাপ্তরা হলো বাংলাদেশ বিদ্যুতায়ন বোর্ড (৯২.০৮), নেসকো (৯২.২৫) এবং আরপিসিএল (৯৩)। এ ছাড়া ডেসকো, ইজিসিবি এবং বি-আর পাওয়ারজেন শূন্য দশমিক ৫টি ইনসেনটিভ বোনাসের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পরিচালনা বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে সুপারিশ অনুযায়ী কর্মীদের বোনাস প্রদান করে। তবে পিডিবির কর্মীরা এখনো ইনসেনটিভ বোনাস পাননি। আদৌ তা পাবেন কি না তা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
ইনসেনটিভ বোনাস পরিশোধের অনুমোদনের প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে গত ২ জানুয়ারি পিডিবির সচিব মোহাম্মদ সেলিম রেজা বিদ্যুৎ বিভাগে চিঠি পাঠান। এতে বলা হয়, ১টি ইনসেনটিভ বোনাস হিসেবে পিডিবির প্রত্যেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ পিডিবির রাজস্ব বাজেটে সংস্থান আছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে অর্থ বিভাগের এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানোর পর গত ২১ মার্চ তা নাকচ করে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ বিভাগ তাদের চিঠিতে বলেছে, এপিএ অর্জনের জন্য কর্মসম্পাদন সূচক রয়েছে, যা সরকারের প্রতিটি সংস্থার ‘রুটিন’ কাজ। রুটিন কাজের জন্য ইনসেনটিভ বোনাস দাবি করা যৌক্তিক নয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, দেশে অনেক সংস্থা আছে, যাদের বেতনভাতাসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয় সরকারের অনুদানে পরিচালিত হয়। এসব সংস্থা বা দপ্তরগুলো এপিএ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে থাকে। এখন যদি পিডিবিকে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বোনাস দেওয়া হয়, তাহলে প্রতিটি সংস্থা থেকে একই দাবি আসবে। এতে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা বিঘিœত হতে পারে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পিডিবির ২০২১-২২ অর্থবছরের এপিএর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিপরীতে ইনসেনটিভ বোনাস প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করা হলো।
বিদ্যুৎ বিভাগের সাবেক সচিব ফাওজুল কবির খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিদ্যুৎ খাতের অগ্রগতি সন্তোষজনক না। তারপরও এ খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন কোম্পানি বা সংস্থাকে ইনসেনটিভ বোনাস দেওয়া যেতে পারে তাদের কাজের পারফরম্যান্স বিবেচনায়। শুধু পুরস্কার দিলেই হবে না। পাশাপাশি কেউ যদি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয় তাহলে শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে। তবেই কাজের গতি বাড়বে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে যদি ইনসেনটিভ বোনাসের কথা উল্লেখ থাকে তাহলে তারা যদি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে তবে এটা তাদের প্রাপ্য।
এ বিষয়ে পিডিবির একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, এর আগেও তারা এপিএর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে বোনাস পেয়েছেন। এবারও বোনাসের আশায় বাড়তি কাজ করেছেন। হঠাৎ বোনাস না পাওয়ার খবর শুনে সবার ভেতর চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
প্রতিষ্ঠানের দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন সব কোম্পানি এমনকি পিডিবির সমমনা প্রতিষ্ঠান আরইবি তাদের পরিচালনা পর্যদের সিদ্ধান্তে অন্তত এক মাস আগে এ বোনাস প্রদান করেছে। তাদের কর্মীদের ওই টাকা খরচও হয়ে গেছে। আর আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুমোদন চাওয়ার নিয়ম রক্ষা করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছি। অন্যরা পেলেও পিডিবির কর্মীরা কেন বঞ্চিত হবে? সবার জন্য একই নিয়ম থাকা দরকার।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে একজন নির্বাহী প্রকৌশলী দেশ রূপান্তরকে বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমাদের অনেক সময় অফিসের নির্ধারিত সময়ের বাইরেও কাজ করতে হয়। এ জন্য অনেক সময় পরিবারকে সময় দিতে পারি না। এরপরও যদি বোনাস থেকে বঞ্চিত করা হয় তাহলে কর্মীরা বাড়তি কাজ করতে উৎসাহ হারাবে।’
ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ভাড়া ৫৩ হাজার টাকা। এ রুটের অন্যসব এয়ারলাইনস আরও কম দামে যাত্রী বহন করলেও বিমান করে না। খালি যাবে, তাও কম ভাড়ায় যাত্রী নেয় না বিমান।
ঢাকা থেকে বিমান কত বেশি ভাড়া নেয় তা স্পষ্ট বোঝা যায় নিকটতম প্রতিবেশী শহর কলকাতার দিকে চোখ বোলালে। কলকাতার নেতাজি সুভাষ বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানের তিন ভাগের এক ভাগ ভাড়া দিয়ে কুয়ালালামপুর যাওয়া যায়।
ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে উড়ে যাওয়া এয়ারলাইনসগুলোর মধ্যে বিমানের ভাড়া বেশি। বিমানের ভাড়া শুধু বেশিই নয়, এই এয়ারলাইনস ভাড়া বাড়ানোর নেতৃত্ব দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রথমে বিমান ভাড়া বাড়ায় পরে প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য এয়ারলাইনসগুলো সেই সুযোগ নেয়।
অন্য এয়ারলাইনসের তুলনায় বিমানের ভাড়া বেশি এ অভিযোগ ছিল মূলত জনশক্তি রপ্তানিকারক ও ট্রাভেল এজেন্টদের। তাদের সঙ্গে সম্প্রতি যোগ হয়েছেন সাধারণ যাত্রীরাও। কুয়ালালামপুর, রিয়াদ বা জেদ্দার মতো বাংলাদেশি শ্রমিকপ্রবণ শহরগুলোতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ব্যবহারকারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, দেশের বেসরকারি টেলিভিশন এমনকি খবরের কাগজগুলোতে যেচে এসে বলে যাচ্ছেন বিমান অনেক বেশি ভাড়া নিচ্ছে।
কীভাবে বিমান ভাড়া বাড়ায় জানতে চাইলে একজন জনশক্তি রপ্তানিকারক জানান, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স অর্থনীতিতে কী ভূমিকা রাখে তা নতুন করে বলার দরকার নেই। তাদের কর্মস্থলে পাঠাতে বা ফিরিয়ে আনতে বিমানের বিশেষ কোনো উদ্যোগ নেই। বিমান কোনো দিন কোনো ঘোষণায় বলেনি ‘এ উদ্যোগটি শুধু রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য’। এই শ্রমজীবীদের জন্য বিমানের কোনো ছাড় নেই। বরং যখন যে ‘আদম বাজার’ চাঙ্গা হয় তখন সেখানে ভাড়া বাড়িয়ে দেয় বিমান। বর্তমানে মালয়েশিয়ায় প্রচুর শ্রমিক যাচ্ছে। সেখানে ভাড়া বাড়িয়েছে সংস্থাটি। শ্রমিক এবং ওমরাহর কারণে জেদ্দার টিকিটই পাওয়া যায় না। পাওয়া গেলেও তা অনেক বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়।
এ অবস্থা থেকে বিমান কীভাবে বের হয়ে আসতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিমান নানা পলিসি নিতে পারে। বিকল্প রুট চালু করতে পারে। ট্রানজিট দিয়ে যাত্রীদের গন্তব্যে নিতে পারে। এতে যাত্রীরা কম দামে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ যাত্রী যেহেতু শ্রমজীবী তাই তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর বিষয়টিই গুরুত্বপূর্ণ। কত সময় ট্রানজিট নিয়ে গেল তা মুখ্য নয়। ঠিক এ জায়গাটিতেই এগিয়ে আছে আমাদের নিকটবর্তী শহর কলকাতা। ঢাকার তুলনায় অনেক কম দামে কলকাতার যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন। সেখান থেকে পরিচালিত এয়ারলাইনসগুলো সরাসরি বা এক-দুটি ট্রানজিট দিয়ে অনেক কমে যাত্রী বহন করে। বিমান কেন পারে না সেই প্রশ্নটি কেউ তুলছে না।
এক সপ্তাহ পর আগামী ৪ এপ্রিল ফ্লাই (যাত্রা) করার জন্য গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা কুয়ালালামপুর রুটের বিমান টিকিটের দাম ছিল ৫৩ হাজার ২৭ টাকা। থাই এয়ারওয়েজ ৪১ হাজার ৭৬ টাকায়, ইন্ডিগো এয়ার ৪৩ হাজার ৬৪৪, ইউএস-বাংলা ৪৭ হাজার ১৯, এয়ার এশিয়া ৪৯ হাজার ৪৪৫, মালিন্দো এয়ারওয়েজ ৫৯ হাজার ১৯০ এবং মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের ভাড়া ছিল ৬১ হাজার ৪৭২ টাকা।
অথচ কলকাতা থেকে এয়ার এশিয়া একই দিনে একই গন্তব্যে নন-স্টপ ফ্লাইটে মাত্র ১৭ হাজার ৩৭৯ টাকায় পৌঁছে দেওয়ার অফার ছিল অনলাইনে। এয়ারক্রাফটের মানভেদে একই দিনে বিভিন্ন সময়ে টিকিটটির দাম ২৬ হাজার টাকা পর্যন্ত ছিল। ইন্ডিগো এয়ার চেন্নাইয়ে একটি স্টপেজ দিয়ে ২০ হাজার ৩৩৭ টাকায় অফার দেয়। কলকাতা থেকে কুয়ালালামপুরে যাওয়ার জন্য এয়ার ইন্ডিয়ার টিকিটের দাম ছিল ২৯ হাজার ৬৩৯ টাকা। মুম্বাই এবং সিঙ্গাপুরে দুই স্টপেজ দিয়ে এয়ারলাইনসটি এ ভাড়া নির্ধারণ করে। মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনস মুম্বাইয়ে এক স্টপেজ দিয়ে কলকাতা থেকে ৫৪ হাজার ৩২৬ টাকায় যাত্রীদের নিয়ে যায় কুয়ালালামপুর।
ঢাকা রিয়াদ রুটে আগামী ৩ এপ্রিলের এয়ার অ্যারাবিয়ার ভাড়া ৫৪ হাজার ৯৫১ টাকা। শারজায় একটি স্টপেজ দিয়ে তারা যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছে দেবে। কলম্বোতে একটি স্টপেজ দিয়ে শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনস রিয়াদ নিয়ে যাবে ৫৬ হাজার ৫৪৫ টাকায়। জাজিরা কুয়েত সিটিতে এক স্টপেজ দিয়ে ৬৫ হাজার টাকায়, গালফ এয়ার বাহরাইনে এক স্টপেজ দিয়ে ৬৭ হাজার ৬৭৭ টাকায়, সৌদিয়া এয়ারলাইনস ৭১ হাজার ৭১১ টাকায় সরাসরি, কুয়েত এয়ারওয়েজ কুয়েত সিটিতে এক স্টপেজ দিয়ে ৭৩ হাজার ২৪৭ টাকায়, ওমান এয়ার মাস্কটে এক স্টপেজ দিয়ে ৭৪ হাজার ২৩২ টাকায়, ফ্লাই দুবাই দুবাইয়ে এক স্টপেজ দিয়ে ৭৪ হাজার ২৬৩ টাকায়, কাতার এয়ারওয়েজ দোহায় এক স্টপেজ দিয়ে ৮২ হাজার ৫৫৭ টাকায়, এমিরেটস দুবাইয়ে এক স্টপেজ দিয়ে ৮৪ হাজার ২৩১ টাকায় রিয়াদ নিয়ে যাচ্ছে। আর ঢাকা-রিয়াদ রুটে বিমানের ভাড়া ১ লাখ ৫৫ হাজার ১৪৭ টাকা। ৩ এপ্রিল কলকাতা থেকে রিয়াদ যাওয়ার ভাড়াও ঢাকা রিয়াদের তুলনায় অনেক কম।
কলকাতা থেকে মাত্র ৩৫ হাজার ৩২৪ টাকায় রিয়াদ নিয়ে যাচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়া। মুম্বাইতে মাত্র একটি স্টপেজ দিয়ে তারা যাত্রীদের সেখানে পৌঁছে দিচ্ছে। ওইদিন সময়ভেদে তাদের ভাড়া ৪১ হাজার টাকা পর্যন্ত ওঠানামা করছে। এক স্টপেজ দিয়ে ফ্লাই দুবাই নিয়ে যাচ্ছে ৪১ হাজার ৫৬০ টাকায়। ইতিহাদ এয়ারওয়েজের ভাড়া ৪১ হাজার থেকে ৪২ হাজার টাকা। এয়ার ইন্ডিয়া দিল্লিতে একটি স্টপেজ দিয়ে ভাড়া নিচ্ছে ৪১ হাজার ৪১৯ টাকা। গালফ এয়ার মুম্বাই এবং বাহরাইনে দুই দফা স্টপেজ দিয়ে নিচ্ছে ৪৫ হাজার ৫৮৭ টাকা। ইন্ডিগো এয়ার দিল্লিতে এক স্টপেজ দিয়ে ভাড়া নিচ্ছে ৪৮ হাজার ১৮৭ টাকা। দুবাইতে এক দফা বিরতি দিয়ে এমিরেটস কলকাতা থেকে রিয়াদের ভাড়া নিচ্ছে ৫৪ হাজার ৬৪৬ টাকা। কাতার এয়ারওয়েজ ৫৯ হাজার ১৩৮ টাকায় এবং এমিরেটস ৬০ হাজার ১০৮ টাকায় একটি বিরতি দিয়ে কলকাতা থেকে রিয়াদ নিয়ে যাচ্ছে।
এসব রুটে বিমানের উচ্চমূল্য নির্ধারণই ভাড়া বৃদ্ধির মূল কারণ বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। এর সঙ্গে আছে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর ফ্লাইট কমানো এবং উচ্চ দামের সুযোগ নিতে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের কারসাজি এবং ২০২৩ সালে ডলারের বর্ধিত বিনিময় দর। জেট ফুয়েলের দাম বৃদ্ধিও টিকিটের দাম বৃদ্ধির কারণ।
বিমানের এমডি শফিউল আজিম বিমান ভাড়া বৃদ্ধিতে নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়টি না মানলেও রিক্রুটিং এজেন্ট, ট্রাভেল এজেন্ট বা হজ এজেন্সির তরফ থেকে বরাবরই এ অভিযোগ করা হচ্ছে। অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) সাবেক মহাসচিব মাজহার ইসলাম ভূঁইয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, যখন বিমান ভাড়া বাড়ায় তখন অন্য এয়ারলাইনসগুলোও ভাড়া বাড়ায়। বিমান যখন বাড়ায় তখন কোনো সীমা মানে না। তারা ইচ্ছামতো ভাড়া বাড়ায়।
৩৫ বছরের পেশাজীবনের কথা উল্লেখ করে মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিমানের ভাড়ার সঙ্গে কুলাতে পারছি না। একজনকে বাইরে পাঠানোর সব খরচ অনুমান করা যায়, বিমান ভাড়া ছাড়া। কারণ ৫ ডলারের ভিত্তিভাড়া তারা ৩০ ডলার থেকে শুরু করে। বিমান ধারাবাহিকভাবে জ্বালানি খরচ বৃদ্ধির কথা বলে। কিন্তু জ্বালানি খরচ কমছে। যখন কমে তখন বিমান ভাড়া কমায় না। বিমান যেভাবে ভাড়া বাড়ায় তাতে ব্যবহারকারীদের নাভিশ্বাস উঠেছে। এ অবস্থায় সরকারের হস্তক্ষেপ দরকার বলে তিনি মনে করেন।
বিমানের ভাড়া প্রায় মহামারীর সময়ের মতো অবস্থায় চলে গেছে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্টরা । বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে শ্রম আমদানিকারক দেশের গন্তব্যগুলোতে ভাড়া বেড়েছে। ঢাকা-জেদ্দা রুটে টিকিট পাওয়াই সৌভাগ্য। এ মাসের শুরুতে যে ভাড়া ছিল ৫০ হাজার তা এখন ৮০ হাজারেও পাওয়া যাচ্ছে না।
বিমান ভাড়া বৃদ্ধির সবচেয়ে বেশি খেসারত দিচ্ছেন প্রবাসী শ্রমিকরা। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি)-ওয়েবসাইট তথ্য দিচ্ছে, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে ২ লাখ ১৩ হাজার শ্রমিক বিদেশে গেছে। যাদের বেশিরভাগই গেছেন মালয়েশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে।
গত বছরের শেষদিকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলা হয়। বাজার নতুন করে শুরু হওয়ার পর ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে টিকিটের দাম আকস্মিকভাবে বেড়েছে। ব্যাংকক, কলম্বো বা অন্যান্য শহরে ট্রানজিট ফ্লাইট দিয়েও অনেক এয়ারলাইন কুয়ালালামপুরে যাত্রী বহন করছে। এতে টিকিটের দাম কমেছে ৩০-৪০ হাজার টাকা।
এবার হজ প্যাকেজে বিমান ভাড়া বেড়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। এ টাকা বাড়িয়ে হজ প্যাকেজ ঘোষণার পর সংশ্লিষ্টরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। হজযাত্রী এবং হাবের ধারাবাহিক বিরোধিতা উপেক্ষা করে বিমান ভাড়া বাড়িয়ে যচ্ছে। এবারও বাড়িয়েছে। গত ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হজবিষয়ক এক সভায় হাবের সিনিয়র সহসভাপতি ইয়াকুব শরাফতি হজে বিমান ভাড়া কমানোর অনুরোধ করেন। কিন্তু সেখানে উপস্থিত বিমানের এমডি ভাড়া কমানোর সুযোগ নেই বলে জানান। বৈঠকে হজে কেন বিমান ভাড়া বাড়নো হলো তার যৌক্তিকতা জনসমক্ষে তুলে ধরার নির্দেশনা দেওয়া হয় এমডিকে।
ইয়াকুব শরাফতি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করেছি হজের বিমান ভাড়া কমানোর জন্য। বিমান কোনোভাবেই কমাতে রাজি হয়নি।’
বিমানের বর্ধিত ভাড়ার সুযোগে সৌদিয়া দেশ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে যাচ্ছে। কারণ বিমান যে ভাড়া নির্ধারণ করে সৌদিয়াও একই ভাড়ায় হজযাত্রী বহন করে। হজের চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশি হজযাত্রীদের অর্ধেক বহন করবে সৌদি আরবের এয়ারলাইনস।
আটাবের সাবেক মহাসচিব মাজহার ইসলাম ভূঁইয়া জানান, প্রধান এয়ারলাইনসগুলোর পাশাপাশি এয়ার অ্যারাবিয়ান, ফ্লাই দুবাই, সালাম এয়ারের মতো বাজেট ক্যারিয়ার বলে পরিচিত সংস্থাগুলো তাদের প্রিমিয়াম প্রতিযোগীদের তুলনায় কম ভাড়া নেওয়ার কথা। অথচ কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের চেয়ে বেশি নিচ্ছে। বাজেট ক্যারিয়ার বলে পরিচিত সংস্থাগুলোও তাদের প্রিমিয়াম প্রতিযোগীদের চেয়ে মাত্র ৫০০ বা ১০০০ টাকা কম নিচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম প্রতিযোগীদের চেয়ে বেশি ভাড়া নিচ্ছে। অথচ সরকারের কাছে তাদের প্রজেকশন ছিল তারা বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে অর্ধেক মূল্যে যাত্রী নেবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার মনিটরিং কম থাকায় তারা ইচ্ছেমতো ভাড়া নিচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
সময়ের আলোচিত চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। একাধারে উপস্থাপিকা, নায়িকা এবং সংগীতশিল্পীও। সিনেমার বাইরে তিনটি গান প্রকাশ পেয়েছে তার। সে ধারাবাহিকতায় এবারের ঈদে নতুন গান নিয়ে আসছেন তিনি।
গানের শিরোনাম ‘বুঝি না তো তাই’। বাঁধনের লেখা এ গানটির সংগীতায়োজন করেছেন বলিউড র্যাপার মুমজি স্ট্রেঞ্জার। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ফারিয়া। বাবা যাদবের কোরিওগ্রাফিতে ভিডিওতে অংশ নিয়েছেন ফারিয়া ও মুমজি। আসছে ঈদে উন্মুক্ত হবে গানটি। গানটি প্রকাশ করবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ভেঙ্কটেশ ফিল্মস।
সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে গানটির টিজার, যা দর্শকমহলে প্রশংসা কুড়াচ্ছে। এরমধ্যে সোমবার বিকেলে নিজের ফেসবুকে গান ভিডিওর দৃশ্যের একটি ছবি পোস্ট করেন এ গায়িকা। সেখানে ক্যাপশনে লিখেন, মাই হাইট ইজ ৫' ৩'' বাট অ্যাটিচিউড ৬' ১''।
গানটি প্রসঙ্গে নুসরাত ফারিয়া জানিয়েছিলেন, ‘নতুন এ গানটি বেশ আনন্দের সঙ্গে করেছি। আমার আগের তিনটি গানের মতো এটিও বেশ মজার। আমার বিশ্বাস এটি সবার পছন্দ হবে।’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ‘পটাকা’ গানের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ঘরানার গানে প্রথম আত্মপ্রকাশ করেন নুসরাত ফারিয়া। এরপর ২০২০ ও ২০২১ সালে প্রকাশ পায় ‘আমি চাই থাকতে’ ও ‘হাবিবি’। আসছে ঈদুল ফিতরে এ অভিনেত্রী গায়িকা হিসাবে চতুর্থবার হাজির হচ্ছেন দর্শক শ্রোতাদের সামনে।
দেশে ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে ফাইভজি ইন্টারনেট সেবা চালু করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক। অন্য অপারেটর গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক একই সেবা চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে সব মোবাইল অপারেটরই দেশের বেশিরভাগ স্থানে ফোরজি সেবা চালু করেছে। আর সে হিসেবেই তারা ইন্টারনেট প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণ করেছে। কিন্তু গ্রাহকরা ফোরজি ইন্টারনেট কিনলেও দেশের অনেক এলাকায় টুজি-থ্রিজি’র সেবা পাচ্ছেন। তারা অপারেটর কোম্পানিগুলোকে এ ব্যাপারে বারবার অভিযোগ জানালেও এর সুরাহা হচ্ছে না।
জানা গেছে, রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে মোটামুটিভাবে গ্রাহকরা ফোরজি সেবা পাচ্ছেন। তবে এসব এলাকায়ও অনেক সময় ফোরজি থাকে না, থ্রিজিতে নেমে আসে নেটওয়ার্ক। তবে জেলা পর্যায়ে বেশিরভাগ সময়েই থাকে থ্রিজি। আর মফস্বল ও গ্রামাঞ্চলে বেশিরভাগ সময় সেই থ্রিজিও থাকে না, তখন টুজি নেটওয়ার্কই ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে ইন্টারনেট প্যাকেজ যথাযথভাবে থাকার পর তা কাজ করে না, বাফারিং হয়। এতে গ্রাহকরা ত্যক্তবিরক্ত হয়ে উঠছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো সারা দেশের ব্যবসা একত্রে হিসাব না করে এলাকাভিত্তিক ব্যবসার হিসাব-নিকাশ করার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তারা দেখেন, কোন এলাকায় তাদের গ্রাহক সংখ্যা কত, সেখানে কত সিমে ইন্টারনেট চালু আছে। যদি দেখা যায়, তাদের হিসাব মতে তা সন্তোষজনক আছে তাহলে সেখানে ফোরজি সেবা চালুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বহাল রাখে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক টাওয়ার নির্মাণ করে। কিন্তু যদি দেখে সন্তোষজনক গ্রাহক নেই তাহলে সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় না, এতে সেই এলাকায় ফোরজি পাওয়া যায় না। অথচ শহর এলাকাগুলোতে তারা বেশি ব্যবসা করলেও সেটাকে হিসাবে ধরে না। কিন্তু মফস্বল এলাকা থেকে কল বাবদ প্রয়োজনের বেশি ব্যবসা হলেও তা ইন্টারনেটের সঙ্গে সমন্বয় করে না।
মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানিগুলোর ফেসবুক পেইজে প্রতিনিয়ত অসংখ্য অভিযোগ জানান গ্রাহকরা। অভিযোগ অনুযায়ী, অপারেটরদের মধ্যে টেলিটকের নেটওয়ার্কই বেশি দুর্বল। টেলিটকের ফেসবুক পেজের এক পোস্টে মো. ফয়জুল ইসলাম লেখেন, ‘ভাই, নেটওয়ার্ক পাই না সকাল থেকে। মিরপুর-২ নম্বরে বাসা স্টেডিয়ামের পশ্চিম পাশে। আর আমার গ্রামের কথা না হয় বাদ দিলাম।’ আরাফাত আলী লেখেন, ‘২জিবি নেট কিনলে দেড় জিবি নষ্ট হয়। মেয়াদ ১৫ দিন তাও ফুরাতে পারি না। তাহলে বুঝেন নেটওয়ার্ক কত ভালো।’ কার্জন চাকমা লেখেন, ‘পাহাড়ি এলাকায় ফোরজি নিশ্চিত করুন। আমাদের পার্বত্য এলাকাগুলোতে টেলিটকের গ্রাহক সবচেয়ে বেশি, কিন্তু শুধু থ্রিজি-টুজিতে সীমাবদ্ধ।’ রাসেল আহমেদ লেখেন, ‘গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাংগা গ্রামে থ্রিজি নেটওয়ার্ক তো নেই-ই। মাঝেমধ্যে টুজি’ও নেই। বুঝুন অবস্থাটা। আমাদের থ্রিজি সেবা দেওয়ার চেষ্টা করুন।’
টেলিটকের মহাব্যবস্থাপক (সিস্টেম অপারেশন) নুরুল মাবুদ চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ফাইভজি রেডিনেস প্রজেক্ট শুরু করেছি। যা শেষ হতে এক বছর বা তার কিছু বেশি সময় লাগতে পারে। এর ফলে আমাদের কাভারেজ এলাকাগুলোতে ফোরজি সেবা নিশ্চিত হবে। এছাড়া আমাদের কাভারেজ বাড়ানোরও বড় পরিকল্পনা রয়েছে।’
বাংলালিংকের পেজের একটি পোস্টে মাহাদী হাসান তালহা লেখেন, ‘আমার এলাকায় আপনাদের সিম ব্যবহার করতে হলে ফোন গাছের ডালে বেঁধে লাউডস্পিকার দিয়ে কথা বলা লাগে। এত্তো ফাস্ট কেন আপনাদের নেটওয়ার্ক।’ আকরাম হোসাইন লেখেন, ‘ভাই আপনাদের সবই ঠিক, তবে নেটওয়ার্ক সেøা।’
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অফিসার তৈমুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ফোরজি সেবার জন্য ২৩০০ মেগাহার্জের স্পেকটার্ম প্রয়োজন হয়। কিন্তু টুজিতে তা লাগে মাত্র ৯০০ মেগাহার্জ। আমরা ইতিমধ্যে ৯৫ শতাংশ কাভারেজ এলাকায় ফোরজি সেবা নিশ্চিত করেছি। তবে আমাদের আরও বেশি সাইট লাগবে। যদি সব অপারেটর মিলে আমরা টাওয়ার শেয়ার করতে পারি, তাহলে সব গ্রাহকের কাছে ভালো সেবা পৌঁছে দেওয়া সহজ হবে।’
রবির পেজে এক পোস্টে তানভীর আহমেদ লেখেন, ‘কলাপাড়া থানা শহরে যদি থ্রিজি নেটওয়ার্ক না পাওয়া যায়, এরচেয়ে দুঃখজনক কিছুই হতে পারে না।’ এইচএমএম ইসমাঈল লেখেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার চম্পকনগর ইউনিয়নে রবি সিমের থ্রিজি নেই। অথচ অনেক বছর আগে রবি টাওয়ার বসানো হয়েছে। আমরা রবি সিম দিয়ে ইন্টারনেট চালাতে অক্ষম।’
রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলটরি অফিসার শাহেদ আলম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের কাভারেজ এলাকায় ফোরজি সেবা রয়েছে। তবে দেখা যায়, অনেক ফোন ফোরজি সাপোর্ট করে না। আর কাভারেজ এলাকা থেকে যতদূরে যাওয়া যাবে, নেটওয়ার্ক তত কমতে থাকবে। এছাড়া আমাদের কিছু জায়গায় নেটওয়ার্কের কাজ চলছে। পাশাপাশি নতুন কিছু টাওয়ার তৈরির কাজও আমাদের চলছে।’
গ্রামীণের পেইজে একটি পোস্টে রহিদুল ইসলাম লেখেন, ‘ভাই আমি যখন গ্রামে যাই তখন নেটওয়ার্কের ঝামেলা হয়।’ সাইদুর রহমান লেখেন, ‘এমন সার্ভিস হলে চলবে? কলরেট, ইন্টারনেটের দাম তো ঠিকই বেশি আপনাদের, বাকি সব অপারেটরদের থেকে।’
গত বছরের ২৮ এপ্রিল টেলিকম অপারেটররা বহুল প্রতীক্ষিত ‘আনলিমিটেড’ ও ‘মেয়াদবিহীন’ ইন্টারনেট ডাটা প্যাক চালু করেছে। তবে এতে গ্রাহকদের খুব বেশি সুবিধা হচ্ছে না। কারণ এজন্য প্যাকেজের দাম বাড়িয়েছে অপারেটররা। আর মেয়াদহীন ইন্টারনেট পেতে প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একই প্যাকেজ চালু করতে হবে। কিন্তু গ্রাহকের সব সময় একই ধরনের ইন্টারনেট প্যাকেজ নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ফলে অব্যবহৃতই থেকে যাচ্ছে গ্রাহকের কেনা ইন্টারনেট। এছাড়া মেয়াদবিহীন হিসেবে মোবাইল অপারেটররা যে প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে গ্রাহকদের।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সূত্র জানায়, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে সচল সিমের সংখ্যা ১৮ কোটি ২০ লাখ ৬১ হাজার। এরমধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা ৭ কোটি ৯০ লাখ ৯৫ হাজার, রবির ৫ কোটি ৫০ লাখ ১৪ হাজার, বাংলালিংকের ৪ কোটি ৮৫ হাজার এবং টেলিটকের ৬০ লাখ ৬৭ হাজার। আর গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি ৫০ লাখ। এরমধ্যে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ১১ কোটি ৩০ লাখ ১৩ হাজার এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি ও পিএসটিএন)-এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ১১ লাখ ৮৭ হাজার গ্রাহক।